খুঁজুন
                               
শুক্রবার, ৬ জুন, ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির বিকাশ ও চ্যালেঞ্জ

উজ্জ্বল হোসাইন
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২৫, ৮:২৩ অপরাহ্ণ
আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির বিকাশ ও চ্যালেঞ্জ

বর্তমান বিশ্ব প্রযুক্তির অভূতপূর্ব বিকাশের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। প্রযুক্তি মানবজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই গভীরভাবে প্রভাব ফেলেছে। শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসেবা, ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ ব্যবস্থা, এমনকি দৈনন্দিন জীবনের সাধারণ কাজগুলোতেও প্রযুক্তির উপস্থিতি স্পষ্ট। তবে প্রযুক্তির এই অগ্রগতির সঙ্গে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও তৈরি হয়েছে। এই প্রবন্ধে সমসাময়িক প্রযুক্তির বিকাশ এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জগুলো বিশ্লেষণ করা হবে। সমসাময়িক প্রযুক্তির অগ্রগতির ধারা এতটাই দ্রুত যে এটি মানবজীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলেছে। এই পরিবর্তন ইতিবাচক হলেও, এর সঙ্গে নানাবিধ সামাজিক, অর্থনৈতিক, এবং পরিবেশগত চ্যালেঞ্জও তৈরি হয়েছে। প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব। তবে ভবিষ্যতে উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন, দায়িত্বশীল ব্যবহার এবং নীতিগত কাঠামো তৈরির প্রয়োজনীয়তা আরও বেড়ে যাচ্ছে।

প্রযুক্তির বিকাশ
১. কৃত্রিম বুদ্ধিমত্ত (AI) : কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সবচেয়ে প্রভাবশালী উদ্ভাবনগুলোর মধ্যে একটি। মেশিন লার্নিং ও ডীপ লার্নিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি বিশাল সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। উদাহরণস্বরূপ, চ্যাটবট, অটোনোমাস গাড়ি, রোগ নির্ণয় সিস্টেম, এবং ভাষা অনুবাদ সফটওয়্যার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাফল্যকে স্পষ্ট করে তোলে।
২. ইন্টারনেট অব থিংস (IoT) : IoT এমন একটি প্রযুক্তি যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের ডিভাইসগুলোকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে সংযুক্ত করে। ঘরের নিরাপত্তা ক্যামেরা, স্মার্ট হোম ডিভাইস, এবং শিল্পখাতে প্রোডাকশন মনিটরিং সিস্টেম IoT-র উদাহরণ। এটি মানুষের জীবনকে আরও সহজ ও কার্যকর করেছে।
৩. ৫জি প্রযুক্তি : গত এক দশকে ৫জি প্রযুক্তি যোগাযোগ খাতে বিপ্লব ঘটিয়েছে। উচ্চ গতির ইন্টারনেট এবং কম ল্যাটেন্সি সংযোগের মাধ্যমে ভিডিও স্ট্রিমিং, গেমিং, এবং ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মতো প্রযুক্তিগুলো আরও উন্নত হয়েছে।
৪. ব্লকচেইন প্রযুক্তি : ব্লকচেইন প্রযুক্তি শুধু ক্রিপ্টোকারেন্সি নয়, বরং ডেটা নিরাপত্তা, সরবরাহ চেইন ম্যানেজমেন্ট, এবং চুক্তি ব্যবস্থাপনায়ও ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি নিরাপদ এবং স্বচ্ছ ডেটা পরিচালনার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।
৫. জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি : জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজির উন্নতি চিকিৎসা খাতে বিপ্লব ঘটিয়েছে। রোগ নিরাময়ের জন্য উন্নত ওষুধ আবিষ্কার এবং জিন এডিটিংয়ের মাধ্যমে জটিল রোগের সমাধান করা হচ্ছে।
প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবিধা
১. উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা : প্রযুক্তির উন্নতির ফলে সারা বিশ্ব আজ একটি “গ্লোবাল ভিলেজ”-এ পরিণত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ই-মেইল, এবং ভিডিও কলের মাধ্যমে দূরত্বের বাধা দূর হয়েছে।
২. দক্ষ উৎপাদন ব্যবস্থা : রোবোটিক্স এবং অটোমেশনের মাধ্যমে উৎপাদন খাতে দক্ষতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে উৎপাদনের খরচ কমেছে এবং পণ্যের গুণগত মান বৃদ্ধি পেয়েছে।
৩. স্বাস্থ্যখাতে উন্নয়ন : কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, টেলিমেডিসিন, এবং আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম চিকিৎসা ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে। দ্রুত রোগ নির্ণয় এবং সঠিক চিকিৎসা প্রদান সম্ভব হচ্ছে।
৪. শিক্ষার প্রসার : ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম, ভার্চুয়াল ক্লাসরুম এবং বিভিন্ন অনলাইন কোর্স প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিশ্বব্যাপী শিক্ষার বিস্তার ঘটিয়েছে।
প্রযুক্তি নিয়ে চ্যালেঞ্জ
১. সাইবার নিরাপত্তা : প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে ব্যক্তিগত তথ্য ও ডেটা হ্যাকিং, ফিশিং, এবং সাইবার আক্রমণের ঝুঁকি বেড়েছে। এই ঝুঁকি ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এবং সরকারের জন্য উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
২. গোপনীয়তার সমস্যা : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ব্যক্তিগত তথ্যের ব্যবহার ও শেয়ারিং গোপনীয়তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে। তথ্য চুরির ঘটনাও ক্রমবর্ধমান।
৩. প্রযুক্তির অপব্যবহার : ডিপফেক ভিডিও, ভুয়া খবর, এবং ম্যালওয়্যার তৈরি প্রযুক্তির অপব্যবহারের অন্যতম দৃষ্টান্ত। এটি সমাজে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতায় প্রভাব ফেলছে।
৪. পরিবেশগত প্রভাব : প্রযুক্তি উৎপাদনের ফলে ইলেকট্রনিক বর্জ্য এবং কার্বন নিঃসরণ পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। ই-ওয়েস্টের সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাব পরিবেশগত সমস্যা বাড়িয়ে তুলছে।
৫. বেকারত্বের ঝুঁকি : অটোমেশন এবং রোবোটিক্সের ব্যবহারের ফলে অনেক ক্ষেত্রে মানুষের শ্রমের প্রয়োজনীয়তা কমেছে। এতে বেকারত্বের হার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
৬. ডিজিটাল বৈষম্য : প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে একটি বড় পার্থক্য রয়েছে। অনেক উন্নয়নশীল দেশ এখনও আধুনিক প্রযুক্তির সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি ও সম্ভাবনা : প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা অত্যন্ত উজ্জ্বল। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, এবং রিনিউএবল এনার্জির উন্নয়ন বিশ্বকে নতুন দিগন্তে নিয়ে যেতে পারে। তবে এর সঙ্গে চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে হবে।
১. নীতিমালা তৈরি : প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কঠোর নীতিমালা তৈরি করা প্রয়োজন।
২. প্রযুক্তির ন্যায়সঙ্গত বন্টন : প্রযুক্তিগত সুবিধা বিশ্বের সকল মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে।
৩. পরিবেশ-বান্ধব প্রযুক্তি :প্রযুক্তি ব্যবহারে পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব কমাতে পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তি এবং টেকসই উৎপাদন পদ্ধতির উন্নয়ন জরুরি।
৪. দক্ষ মানবসম্পদ গঠন : বেকারত্বের ঝুঁকি এড়াতে প্রযুক্তির সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

প্রযুক্তির বিভিন্ন ক্ষেত্রের উন্নতি : বিশ্বব্যাপী যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নতি দ্রুততর হয়েছে। ইন্টারনেট ও মোবাইল প্রযুক্তি মানবসমাজকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। ৫জি প্রযুক্তি উচ্চ গতির ইন্টারনেট এবং নির্ভুল সংযোগ প্রদান করছে, যা স্মার্ট শহর নির্মাণে সহায়ক। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার এবং মেটাভার্সের মতো প্ল্যাটফর্ম মানুষকে নতুন উপায়ে একত্রিত করছে।ই-লার্নিং এবং ভার্চুয়াল ক্লাসরুম শিক্ষার ধরন বদলে দিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ-অনলাইন কোর্সের মাধ্যমে যে কেউ বিশ্বের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্ঞান অর্জন করতে পারে। শিক্ষার্থীদের জন্য কাস্টমাইজড লার্নিং প্ল্যাটফর্ম তৈরি করছে।স্বাস্থ্যখাতে প্রযুক্তির উদ্ভাবন রোগ নির্ণয় থেকে শুরু করে চিকিৎসা প্রদান পর্যন্ত সবক্ষেত্রে উন্নতি করেছে। টেলিমেডিসিন-দূরবর্তী স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া সম্ভব হচ্ছে। জিন এডিটিং প্রযুক্তি (CRISPR)-জিনগত সমস্যাগুলো সমাধান করতে সহায়ক। রোবোটিক্স এবং স্বয়ংক্রিয়তা-অটোমেশন এখন শিল্প ও কৃষিখাতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। স্বয়ংক্রিয় মেশিন উৎপাদন ও পরিচালনা আরও দ্রুত ও নির্ভুল করেছে। উদাহরণ: কৃষিতে ড্রোন: ফসলের অবস্থা পর্যবেক্ষণ এবং কীটনাশক ছিটানোর জন্য ব্যবহৃত। স্বয়ংচালিত যানবাহন: উবার এবং টেসলা স্বয়ংচালিত গাড়ির উদাহরণ। পরিবেশ সুরক্ষা প্রযুক্তি : পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি: সৌরবিদ্যুৎ, বায়ু শক্তি এবং জিওথার্মাল শক্তি ব্যবহার করে পরিবেশবান্ধব শক্তির বিকাশ।
কার্বন ক্যাপচার প্রযুক্তি: বায়ুমণ্ডলে কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনার উদ্যোগ।

প্রযুক্তির অপব্যবহার ও এর চ্যালেঞ্জ : প্রযুক্তির মাধ্যমে ভুয়া খবর ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এটি সামাজিক অস্থিরতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া কখনো কখনো মতভেদ ও বিভক্তি বাড়িয়ে দেয়। এছাড়া আসক্তি এবং মানসিক সমস্যার জন্যও এটি দায়ী। স্বয়ংক্রিয়তা অনেক কাজকে অপ্রয়োজনীয় করে তুলেছে, যার ফলে শ্রমশক্তির চাহিদা কমছে। বিশেষত উৎপাদন এবং পরিষেবা খাতে এই চ্যালেঞ্জ প্রবল। প্রযুক্তির উন্নয়ন বিশ্বজুড়ে সমানভাবে ছড়িয়ে পড়েনি। ধনী ও উন্নত দেশগুলো প্রযুক্তির সুবিধা ভোগ করছে, কিন্তু দরিদ্র দেশগুলো এখনও অনেক পিছিয়ে। ডিজিটাল যুগে হ্যাকিং, পরিচয় চুরি, এবং অর্থনৈতিক প্রতারণার ঝুঁকি বেড়েছে।

টেকসই ভবিষ্যতের জন্য প্রযুক্তি ব্যবস্থাপনা : প্রযুক্তির সম্ভাবনাকে পূর্ণমাত্রায় কাজে লাগাতে গেলে কিছু পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি।প্রযুক্তির উদ্ভাবন এমনভাবে করতে হবে যাতে এটি মানুষের কল্যাণে ব্যবহৃত হয়। পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং ইলেকট্রনিক বর্জ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডিজিটাল যুগের চাহিদা অনুযায়ী কর্মীদের প্রশিক্ষণ এবং পুনঃস্কিলিং করা প্রয়োজন। সাইবার নিরাপত্তা এবং তথ্যের গোপনীয়তা নিশ্চিত করতে সুনির্দিষ্ট আইনি কাঠামো প্রয়োজন। প্রযুক্তির সমতাভিত্তিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সহযোগিতার ভিত্তি আরও মজবুত করতে হবে।
সমসাময়িক প্রযুক্তি মানবসভ্যতার সামনে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। তবে এর সঙ্গে নানাবিধ চ্যালেঞ্জও জড়িত। প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার, দায়িত্বশীল উদ্ভাবন, এবং ন্যায্য বন্টনের মাধ্যমে আমরা একটি টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারি। ভবিষ্যতের জন্য প্রযুক্তির ইতিবাচক দিকগুলোকে কাজে লাগিয়ে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার দায়িত্ব মানবজাতির। সমসাময়িক প্রযুক্তির বিকাশ মানবজীবনে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। যদিও এর সঙ্গে অনেক চ্যালেঞ্জ জড়িত, সঠিক পরিকল্পনা এবং দায়িত্বশীল ব্যবহারের মাধ্যমে এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করা সম্ভব। প্রযুক্তির অগ্রগতিকে ইতিবাচকভাবে কাজে লাগিয়ে একটি উন্নত, টেকসই এবং সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের সবার।

লেখক : উজ্জ্বল হোসাইন, বিএসসি, এলএলবি, এমসিএস, গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতায় মাস্টার্স; আইটি কর্মকর্তা, চাঁদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতাল, চাঁদপুর।

বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে

চাঁদপুরে “হুইলস অব পিস”-এর বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৬ জুন, ২০২৫, ১২:৪৩ অপরাহ্ণ
চাঁদপুরে “হুইলস অব পিস”-এর বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি

মিশন গ্রিন বাংলাদেশ-এর সহায়তায়, এসডিজি ভিত্তিক পিস প্রজেক্টের পরিবেশবান্ধব পদক্ষেপ । বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৫ উপলক্ষে চাঁদপুর সদর উপজেলার চাঁদপুর জেলা স্কাউটস ভবনের সামনের প্রাঙ্গণে আয়োজিত হলো এক ব্যতিক্রমধর্মী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি। আয়োজনটি করেছে “প্রজেক্ট হুইলস অব পিস”, যা একটি এসডিজি (SDG) ভিত্তিক স্কাউট পিস প্রজেক্ট।

এই উদ্যোগে সহায়তা করে মিশন গ্রিন বাংলাদেশ, এবং সহযোগিতা করে মেঘনাপাড় ওপেন স্কাউট গ্রুপ। সারাদেশে ৬৪ জেলায় ৫ জুন একসাথে বৃক্ষরোপণের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে ৪০ জন তরুণ স্বেচ্ছাসেবক সক্রিয়ভাবে অংশ নেন, যারা শুধু গাছ লাগিয়ে দায়িত্ব শেষ করেননি, বরং পরিবেশ সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে মাঠে-ময়দানে কাজ করেছেন।

পরিবেশ দূষণ ও প্লাস্টিকের অপব্যবহার প্রতিরোধে আয়োজনস্থল এবং আশেপাশের এলাকায় সচেতনতামূলক পোস্টার লাগানো হয়। এছাড়াও স্থানীয় বাজার ও জনবহুল স্থানে লিফলেট বিতরণ করে সাধারণ মানুষের মাঝে বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়—”সবুজ পৃথিবী, নিরাপদ ভবিষ্যৎ”।

বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমে ফলজ গাছ যেমন আম, কাঁঠাল, পেয়ারা, জামসহ স্থানীয় প্রজাতির চারা রোপণ করা হয়। এসব গাছ একদিকে পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা করবে, অন্যদিকে স্থানীয় মানুষের উপকারে আসবে।

উক্ত কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন প্রজেক্ট হুইলস অব পিস এর প্রতিষ্ঠাতা ওমর তামীম সাফি। তিনি বলেন:
**”পরিবেশ রক্ষা আমাদের দায়িত্ব নয়, বরং এটা আমাদের অস্তিত্বের প্রশ্ন। একটি গাছ মানে শুধু ছায়া বা ফল নয়—এটি জীবনের ধারক। আজকের এই বিশ্ব পরিবেশ দিবসে আমরা শপথ করছি, সবুজের জন্য কাজ করব—শুধু শহরে নয়, প্রত্যন্ত অঞ্চলেও সচেতনতার আলো ছড়িয়ে দেব।

এই কর্মসূচি সফল করতে যারা পাশে ছিলেন, বিশেষ করে মিশন গ্রিন বাংলাদেশ, মেঘনাপাড় মুক্ত স্কাউট গ্রুপ এর সদস্যবৃন্দ। আমরা বিশ্বাস করি, সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে, এ ধরনের পরিবেশবান্ধব কর্মকাণ্ড আরও সংগঠিতভাবে, বৃহৎ পরিসরে এবং টেকসইভাবে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব। আমাদের সবার সম্মিলিত প্রয়াসেই একটি পরিচ্ছন্ন, সবুজ ও বাসযোগ্য বাংলাদেশ গড়ে তোলা যাবে।”**

প্রজেক্ট হুইলস অব পিস, জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDG)-এর বিভিন্ন দিক যেমন পরিবেশ সুরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, যুবসম্প্রদায়ের ক্ষমতায়ন এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এই ইনিসিয়েটিভ এর মাধ্যমে স্কাউট এবং নন স্কাউট দের সাথে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে । ১৭ টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ৮ টি লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করে চলেছে প্রজেক্ট হুইলস অব পিস । প্রকৃতি, পরিবেশ সংরক্ষণ, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক, ছেলে ও মেয়েদের বয়:সন্ধিকালের শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন, এলাকা ভিত্তিক ভাবে পরিবেশ দূষণরোধে সচেতনতা সৃষ্টি এছাড়া প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে, প্লাস্টিকের পুন:ব্যবহার বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মসূচী পরিচালনা করে যাচ্ছে । কর্মসূচীতে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রজেক্ট হুইলস অব পিসের সদস্য রুমাইয়া বিনতে রহিম, সাব্বির আহমেদ, নূর মোহাম্মদ, তাসফিয়া সুলতানা সহ আরোও অনেক সদস্যবৃন্দ।

এই কর্মসূচি তাদের চলমান সবুজ উদ্যোগেরই একটি অংশ। আয়োজকরা জানান, ভবিষ্যতে দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও তারা একই রকম কার্যক্রম ছড়িয়ে দিতে চান।

বাজেট প্রতিক্রিয়া : শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে এডিপি বরাদ্দ কমানো উদ্বেগজনক: সিপিডি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫, ২:৩৮ অপরাহ্ণ
বাজেট প্রতিক্রিয়া : শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে এডিপি বরাদ্দ কমানো উদ্বেগজনক: সিপিডি

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির বরাদ্দ কমানো উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। আজ সোমবার সিপিডি কার্যালয়ে আয়োজিত তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘বাজেটের যে কাঠামো উপস্থাপন করা হয়েছে, সেখানে বাজেটের আকার সামান্য ছোট করা হয়েছে। পাশাপাশি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি, সেখানেও কিছুটা কাটছাঁট করা হয়েছে। বাজেটের আকার নিয়ে অনেকদিন ধরে আলোচনা হয়েছে, সেটার অন্যতম কারণ হচ্ছে, আমাদের যে চলমান অর্থনৈতিক সংকট, অর্থাৎ উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগ স্থবিরতা, কর্মসংস্থানে সমস্যা এবং রাজস্ব আহরণের সমস্যা বিবেচনায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা বাজেট প্রস্তাব করেছে বলে আমাদের মনে হয়েছে।’

ড. ফাহমিদা বলেন, ‘বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির দিকে তাকালে দেখা যাবে, চলতি অর্থবছরের তুলনায় ১৩ দশমিক ২ শতাংশ কমানো হয়েছে এবং ১৫টি খাতের মধ্যে ১৪টি খাতেই কমানো হয়েছে। এখানে উল্লেখযোগ্য এবং চিন্তার বিষয় হচ্ছে, তিনটি খাত—শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষিতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে টাকার অংকে বরাদ্দ কমানো হয়েছে। সেটা আমাদের কাছে উদ্বেগজনক মনে হয়, কারণ শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে আমরা সব সময় বরাদ্দ বাড়ানোর কথা বলে আসছি এবং কৃষি খাতে, বিশেষত খাদ্য নিরাপত্তার দিকে এখানে বরাদ্দ অনেক গুরুত্বপূর্ণ।’ তিনি বলেন, ‘ভৌত অবকাঠামো, বিশেষ করে পরিবহন ও বিদ্যুৎ-জ্বালানি বরাবরের মতো উপরের দিকে আছে যুক্তিযুক্তভাবে।’

এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, কর কাঠামোর মধ্যে করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ দশমিক ৫ লাখ, অর্থাৎ সাড়ে ৩ লাখ টাকা থেকে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করা হয়েছে, এটা একটা ভালো পদক্ষেপ। কিন্তু প্রায় ৩ বছরের মতো সময় ধরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের উপরে রয়েছে, ১০-১১ শতাংশে উঠে গেছে। সেদিক থেকে যে খুব একটা উল্লম্ফন হয়েছে সেটা না। তবে এটাকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, যারা জুলাই যোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত, তাদের জন্য করমুক্ত আয়সীমা ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা করা হয়েছে, সেটাও আমরা ভালো পদক্ষেপ মনে করি।’

‘করের বিভিন্ন স্ল্যাবগুলোতে পরিবর্তন করা হয়েছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে যারা নিম্ন মধ্যআয়ের যারা পড়েছেন, কর দেওয়ার ক্ষেত্রে হারটা তাদের মধ্যেই বেশি পড়বে। আবার যারা আয়ের উচ্চ পর্যায়ে রয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রে অনেক কম পড়বে। এখানে বৈষম্যের চিত্র দেখা যাচ্ছে। অঞ্চলভিত্তিক ন্যূনতম কর ধরা হয়েছে ৫ হাজার টাকা, এখানে আমরা মনে করছি বৈষম্য রয়েছে। কারণ রাজধানী ঢাকা কিংবা অন্য আরেকটি জেলার সবাইকে এক করে দেখানো; সরকারি সেবা সব জায়গায় সবাই কিন্তু সমানভাবে নেয় না। এখানে পুনর্বিবেচনার সুযোগ রয়েছে বলে আমরা মনে করি,’ যোগ করেন তিনি।

ফাহমিদা বলেন, ‘শুল্ক যৌক্তিকরণ হয়েছে এবং আমদানি শিল্প যৌক্তিকিকরণ করতে গিয়ে হয়তো কিছু কিছু শিল্প চাপে পড়তে পারে। বিশেষ করে যখন মূল্যস্ফীতি বেশি, কস্ট অব ডুইং বিজনেস বেশি। এটাকে শুল্কের যৌক্তিকিকরণ করতেই হবে, কারণ বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বেরিয়ে যাবে। আস্তে আস্তে ট্যারিফ কমানোর দিকে নজর দিতে হবে। যে প্রতিঘাত আসবে, সেটা মোকাবিলা করার জন্য কস্ট অব ডুইং বিজনেসের ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ-জ্বালানি সাশ্রয়ী মূল্যে কিংবা সহজ শর্তে ঋণ কিংবা আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমিয়ে কস্ট অব ডুইং বিজনেস কমানোর উদ্যোগ নিতে হবে।’

প্রস্তাবিত বাজেটে কিছু ভালো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ই-কমার্সের সুযোগ-সুবিধা এবং ই-কমার্সকে ফরমাল সেক্টরে আনা; এখানে করের আওতায় আনা এবং পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের অধীনে যে ৫ হাজার ৪০ কোটি টাকার ফান্ড গঠন হয়েছে। আমরা মনে করি, আগেও পিপিপি মডেলের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, সেগুলো কিন্তু খুব একটা এগোয় নাই।

নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ১ হাজার কোটি টাকার ফান্ড গঠনকে স্বাগত জানিয়েছে সিপিডি।

কালো টাকা সাদা করার সুযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কালো টাকা সাদার করার সুযোগটা রয়ে গেছে। যদিও এখানে রেট বাড়ানো হয়েছে কিন্তু আমরা আগেও বলেছি, কালো টাকার ব্যাপারে আমাদের অবস্থান হচ্ছে, এই সুযোগ দিয়ে যারা নৈতিকভাবে প্রতি বছর স্বচ্ছ আয় করে, স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতার সঙ্গে কর দিয়ে থাকেন, তাদের প্রতি নৈতিক আঘাত। কারণ তাদের আদর্শিকভাবে নিরুৎসাহিত করা হয়। দুটি জিনিস সমান্তরালভাবে চলতে পারে না!’

ফাহমিদা আরও বলেন, ‘আগে করের হারটাও কম রাখা হতো, এখন করের হার বেশি রাখা হয়েছে। তারপরও এটা থেকে খুব একটা আদায় হয় না। যদি এখান থেকে সত্যি আদায় করার ইচ্ছা থাকে, তাহলে কিন্তু সক্রিয় পদক্ষেপ নিতে হবে। এছাড়া দুএকবার সুযোগ দিয়ে চিরতরে বন্ধ করে দেওয়া উচিত।’ উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময় কর রেয়াত কিংবা বিভিন্ন জায়গা থেকে কমানো এবং পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা ও পরিমাণ বাড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি।

‘সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির অধীনে ১৪০টির মতো কার্যক্রম একসঙ্গে চলতো, সেগুলো কমিয়ে ৯৫টি করা হয়েছে এবং সেখানে অর্থ বরাদ্দ কম করা হয়েছে। খুব কম না কিন্তু বাজেটের তুলনায় ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ এবং মোট বাজেটের ১ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকার মতো।’ ‘আমরা বারবার বলেছি, এখানে কতগুলো উপাদান যুক্ত করা হয়, যেগুলো সামাজিক নিরাপত্তা বা সামাজিক সুরক্ষার অধীনে দেওয়া যুক্তিযুক্ত নয়। কারণ এটা একেবারেই অতি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য। সরকারি কর্মচারীদের পেনশন, সেখানে আছে ৩৫ হাজার ২৮২ কোটি টাকা। কৃষি ভর্তুকি আছে ১৭ হাজার কোটি টাকা। এই দুটি মিলিয়ে ৫২ হাজার কোটি টাকার বেশি হয়, সেটা বাদ দিয়ে রয়ে যায় ৬৪ হাজার কোটি টাকার মতো। সেটা অনেকখানি কমে আসে। এগুলো বাদ দিয়ে যে নেট সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, সেটাকে দেখাতে হবে। সেটা দেখে তুলনা করা যেতে পারে যে আসলেই দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য কী করা হলো,’ যোগ করেন তিনি।

ফাহমিদা বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে বলতে চাই, কিছু কিছু পদক্ষেপ ভালো নেওয়া হয়েছে বিচ্ছিন্নভাবে। কিন্তু সামগ্রিক কাঠামোগত পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে যে একই কাঠামোর মধ্যে এখানে একটু বেশি, ওখানে একটু কম—এ রকম করে নেওয়া হয়েছে। বাজেটের যে দর্শন, এখানে বৈষম্যহীন সমাজের কথা বলা হয়েছে, সেই উদ্দেশ্যের সঙ্গে যে বাস্তব পদক্ষেপগুলো নেওয়া হয়েছে, সব ক্ষেত্রে সেটা সাযুজ্যপূর্ণ হয়নি।’

ফেব্রুয়ারি অথবা এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছি: জামায়াতের আমির

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫, ২:৩৬ অপরাহ্ণ
ফেব্রুয়ারি অথবা এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছি: জামায়াতের আমির

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি বা এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন দলটির আমির শফিকুর রহমান।

মঙ্গলবার (৩ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে জামায়াতের নিবন্ধন ফিরে পাওয়া উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

শফিকুর রহমান বলেন, ‘ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি অথবা এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচনের দাবি আমরা জানিয়েছি। রোজার আগে অথবা যদি কোনো কারণে সম্ভব না হয়, তাহলে যেন এপ্রিলের মধ্যেই নির্বাচন দেওয়া হয়। কারণ আবহাওয়ার কারণে মে মাসের পর নির্বাচন করা সম্ভব নয়।’

এ সময় তিনি বলেন, ‘আজকেও যদি সমতল মাঠ তৈরি হয়, ফেয়ার ইলেকশন যদি সম্ভব হয়, তাহলেও আমরা প্রস্তুত রয়েছি। কিন্তু ফেয়ার ইলেকশনের মাঠ তৈরি না হলে এপ্রিলে নির্বাচন হলেও তো কোনো লাভ নেই।’

প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোট দেওয়ার বিষয়ে জামায়াতের আমির বলেন, ‘প্রবাসীদের অবশ্যই ভোটের ব্যবস্থা করতে হবে, এ বিষয়ে আমরা ছাড় দিতে রাজি নই।’

তিনি বলেন, ‘প্রবাসীরা তাদের নাগরিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারেন না। আমরা ইসির কাছে দাবি জানিয়েছি, প্রবাসীরা যেন ভোট দিতে পারেন, তার ব্যবস্থা করার জন্য। এটা কোনো কঠিন বিষয় নয়। কিন্তু ইসির পক্ষ থেকে আমরা কোনো অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি না।’

এর আগে গতকাল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহেরও বলেন, বৈঠকে তারা বলেছেন, জুলাইয়ের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে। আর নির্বাচন হতে পারে ডিসেম্বর থেকে এপ্রিলের মধ্যে।

তাহের বলেন, ‘আমরা বলেছি জুলাইয়ের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে। বেশিরভাগ বিষয়ে সবাই একমত হয়েছে। সামান্য কিছু বিষয়ে মতানৈক্য রয়েছে। জুলাইয়ের মধ্যে সংস্কার শেষ হবে। এরপর একটি জুলাই সনদ হবে। সেখানে আমরা সব দল স্বাক্ষর করব।’