খুঁজুন
                               
বুধবার, ১৬ জুলাই, ২০২৫, ১ শ্রাবণ, ১৪৩২

ইসরাইলের হামলায় আরও ১১০ ফিলিস্তিনি নিহত

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫, ১০:৪৮ পূর্বাহ্ণ
ইসরাইলের হামলায় আরও ১১০ ফিলিস্তিনি নিহত

ইসরায়েলের হামলায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে একদিনে আরও কমপক্ষে ১১০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৩৪ জনই সহায়তাপ্রার্থী ছিলেন এবং খাবারের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকার সময় হওয়া হামলায় তারা প্রাণ হারান।
রোববার (১৩ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গাজায় শনিবার ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ১১০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সেখানকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নিহতদের মধ্যে ৩৪ জন দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরের হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ)-এর সামনে খাবারের জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। এই প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত একটি সহায়তা সংস্থা। রাফাহর আল-শাকুশ এলাকায় এই হামলায় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ইসরায়েলি সেনারা সরাসরি লাইনে দাঁড়ানো মানুষদের দিকে গুলি চালায়। জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো আগেই এই সহায়তা কেন্দ্রগুলোকে “মৃত্যুকূপ” বা “মানব হত্যাযন্ত্র” হিসেবে উল্লেখ করেছিল।

হামলা থেকে বেঁচে ফেরা সামির শায়াত নামে এক ব্যক্তি বলেন, “যে ব্যাগে খাবার নেওয়ার কথা ছিল, সেটাই হয়ে গেল মরদেহ মোড়ানোর কাপড়। ওরা আমাদের নিঃসন্দেহে মৃত্যুফাঁদে ফেলেছে।” মোহাম্মদ বারবাখ নামে আরেকজন জানান, গুলি চালিয়েছিল ইসরায়েলি স্নাইপাররা। তিনি বলেন, “ওরা আমাদের প্রতারিত করে। আগে খাবারের ব্যাগ হাতে দিতে দেয়, তারপর শিকারি যেমন হাঁসকে গুলি করে, তেমন করে গুলি চালায়।”
আল জাজিরার প্রতিবেদক তারেক আবু আজ্জুম জানান, ইসরায়েলি সেনারা কোনো ধরনের সতর্কতা ছাড়াই গুলি চালিয়েছে। বর্তমানে জিএইচএফ-এর শুধুমাত্র একটি কেন্দ্র চালু আছে রাফাহতে। ফলে হাজার হাজার মানুষকে সেখানেই সহায়তার আশায় যেতে হচ্ছে। গাজায় ডাক্তারদের তথ্যমতে, মে মাসের শেষ থেকে জিএইচএফ কেন্দ্রগুলোতে এখন পর্যন্ত ৮০০’র বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৫ হাজার মানুষ আহত হয়েছেন। অধিকাংশের মাথা ও পায়ে গুলি লেগেছে। আল-আকসা হাসপাতালের মুখপাত্র খালিল আল-দেগরান বলেন, “আমরা হাসপাতালে এত আহত মানুষের চাপ সামলাতে পারছি না। ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের ভয়াবহ ঘাটতি চলছে।”
এছাড়া গাজা শহরের তুফাহ এলাকায় জাফা স্ট্রিটে এক বাসায় বোমা হামলায় ৪ জনসহ মোট ১৪ জন নিহত হন। উত্তর গাজার জাবালিয়ায় দুটি আবাসিক ভবনে হামলায় ১৫ জন নিহত হন। শাতি শরণার্থী শিবিরে হামলায় আরও ৭ জন মারা যান। বেইত হানুন শহরে ইসরায়েলি বাহিনী উত্তর-পূর্ব অংশে ৫০টির মতো বোমা ফেলেছে। গত ৪৮ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় ২৫০ বার হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।

খালেদা জিয়ার কণ্ঠ নকল করে ১১ মাসে ২৬ কোটি টাকার প্রতারণা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ১৬ জুলাই, ২০২৫, ১১:৫৯ পূর্বাহ্ণ
খালেদা জিয়ার কণ্ঠ নকল করে ১১ মাসে ২৬ কোটি টাকার প্রতারণা

খালেদা জিয়ার কণ্ঠ নকল করে ১১ মাসে ২৬ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এক প্রতারক। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)-এর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য। তবে এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে প্রতারক মোতাল্লেছ হোসেন। বিএফআইইউ জানায়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে ‘আমি খালেদা জিয়া বলছি’- এমন কণ্ঠে ফোন করে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেন মোতাল্লেছ।
বিষয়টি সামনে আসে, যখন সিটি ব্যাংকের গুলশান শাখায় গত ৫ নভেম্বর থেকে ৩ মাসের ব্যবধানে মোতাল্লেছ হোসেন নামে জমা হয়, ৬ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। হঠাৎ এত টাকা জমা হওয়ায় তার তথ্য চায় ব্যাংকটি। এরপরই তার আর্থিক লেনদেন নিয়ে অনুসন্ধানে নামে বিএফআইইউ। এরপরেই জব্দ করা হয়, মোতাল্লেছ ও তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ৯ টি ব্যাংক হিসাব। অনুসন্ধান শেষে ৭টি একাউন্টে ২৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকার সন্ধান পায় বিএফআইইউ। এর মধ্যে নভেম্বর থেকে পরবর্তী তিন মাসে জমা হয় ১১ কোটি ১১ লাখ টাকা। তবে মোতাল্লেছের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের আয়কর রিটার্নের তথ্য বলছে, তার মাত্র ৩৪ লাখ টাকার সম্পদ রয়েছে।
বিএফআইইউ অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, রাজনৈতিক পরিচিতি ভাঙিয়ে খালেদা জিয়ার কণ্ঠ নকল করে অর্থ চেয়েছেন মোতাল্লেছ। যার ফলে সরল বিশ্বাসে অনেকেই টাকা পাঠিয়েছেন তার অ্যাকাউন্টে। এ ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক। বিষয়টি প্রতারণা উল্লেখ করে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী আসিফ হোসেন বলেন, “এটি স্পষ্ট প্রতারণা হলেও এখন পর্যন্ত কেউ কোনো মামলা করেনি।”
এদিকে, মোতাল্লেছের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের নমিনী হিসেবে আছেন তার ভাই, পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. কাইয়ুমুজ্জামান। তিনি বর্তমানে নৌ পুলিশে কর্মরত।

নীতি সুদহার কমালো বাংলাদেশ ব্যাংক: আজ থেকে কার্যকর

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ১৬ জুলাই, ২০২৫, ১১:৫০ পূর্বাহ্ণ
নীতি সুদহার কমালো বাংলাদেশ ব্যাংক: আজ থেকে কার্যকর

মুদ্রানীতির কাঠামো আরো কার্যকর করতে নীতি সুদের হার কমানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল মঙ্গলবার জারি করা এক সার্কুলারে জানানো হয়েছে, স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি (এসডিএফ) হার ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন এই হার আজ থেকে কার্যকর হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে কার্যক্রমে গতি আনা এবং সুদের হার কাঠামোর সুষ্ঠু পরিচালনার উদ্দেশ্যে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মুদ্রানীতির করিডোর ব্যবস্থার আওতায় সুদের নিম্নসীমা কমিয়ে আনা হচ্ছে, যাতে ব্যাংকগুলোর তারল্য ব্যবস্থাপনা সহজ হয় এবং বাজারে সুদের হার বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে।
সার্কুলারে আরো বলা হয়েছে, সুদের ঊর্ধ্বসীমা বা স্ট্যান্ডিং লাইন ফ্যাসিলিটি (এসএলএফ) হার ১১ দশমিক ৫০ শতাংশে অপরিবর্তিত থাকবে। একইভাবে, ওভারনাইট রিপো হারও ১০ শতাংশে অপরিবর্তিত থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ভাষ্য মতে, সুদের হার কমানোর মাধ্যমে ব্যাংক ব্যবস্থার মধ্যে স্বল্পমেয়াদি অর্থের প্রবাহ আরো সক্রিয় হবে এবং আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা বজায় রাখা সম্ভব হবে। এ সিদ্ধান্তের ফলে ব্যাংকগুলোর মুনাফার চাপ কিছুটা কমবে এবং তারল্য ব্যবস্থাপনা সহজ হবে, যা অর্থনীতির সামগ্রিক গতিপ্রবাহে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
উল্লেখ্য, এর আগে গত বছরের ২২ অক্টোবর নীতি সুদের হার সংশ্লিষ্ট সর্বশেষ সার্কুলার জারি করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকালে নতুন সিদ্ধান্ত সেই আগের সার্কুলারের ধারাবাহিকতায় হলেও এতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এসেছে এসডিএফ হারে।
বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করছে, নতুন এই সুদের হার কাঠামো দেশের অর্থনৈতিক নীতিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মুদ্রানীতির বাস্তবায়নকে আরো ফলপ্রসূ করবে। এই সিদ্ধান্তে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো আরো দক্ষতার সঙ্গে স্বল্পমেয়াদি তহবিল ব্যবস্থাপনা করতে পারবে বলেও মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

১১৪ বছর বয়সে থেমে গেল জীবনের দৌড়

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ১৬ জুলাই, ২০২৫, ১১:৪৮ পূর্বাহ্ণ
১১৪ বছর বয়সে থেমে গেল জীবনের দৌড়

এক শতক পেরিয়েছেন, তারপরও থামেননি। বিশ্বের সবচেয়ে প্রবীণ দৌড়বিদ হিসেবে দৌড়েছেন শতায়ুর পরও। সেই অনন্য অনুপ্রেরণার নাম ফৌজা সিং। এবার ১১৪ বছর বয়সে থেমে গেল তার জীবনের দৌড়। সোমবার ভারতের পাঞ্জাবের জলন্ধর-পাঠানকোট মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি। স্থানীয় সময় বিকেলে গাড়ির ধাক্কায় গুরুতর আহত হন। মাথায় আঘাত পান। তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে নেওয়া হলে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার মরদেহ রাখা হয়েছে জলন্ধরের একটি মর্গে। প্রবাসে থাকা সন্তানেরা দেশে ফিরলে হবে শেষকৃত্য।

দীর্ঘ জীবনজুড়ে শুধু দৌড়েই নয়, সমাজের নানা কর্মকাণ্ডে ছিলেন সচেতন মুখ। তার মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন পাঞ্জাবের রাজ্যপাল গুলাব চাঁদ কাটারিয়া। শোকবার্তায় তিনি বলেন, ‘ফৌজা সিংজির প্রয়াণে আমরা একজন অসাধারণ মানুষকে হারালাম। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে নেশামুক্ত পাঞ্জাব অভিযানে তার সঙ্গে হাঁটার অভিজ্ঞতা আমার জন্য আজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’

১৯১১ সালের ১ এপ্রিল, পাঞ্জাবের জলন্ধরের বেয়াস গ্রামে জন্ম ফৌজা সিংয়ের। জীবনের মধ্যভাগে স্ত্রী ও সন্তান হারানোর পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। জীবনের অর্থ খুঁজতে গিয়ে ৮৯ বছর বয়সে শুরু করেন দৌড়। ২০০০ সালে লন্ডন ম্যারাথনের মাধ্যমে প্রতিযোগিতামূলক দৌড়ে পা রাখেন তিনি। এরপর লন্ডন, নিউইয়র্ক, টরন্টোসহ নয়টি আন্তর্জাতিক ম্যারাথনে অংশ নিয়েছেন। ২০০৩ সালের টরন্টো ম্যারাথনে ৫ ঘণ্টা ৪০ মিনিট ৪ সেকেন্ডে দৌড় শেষ করেন, যা ছিল তার দীর্ঘতম সময়ের দৌড়।

কেবল ক্রীড়াবিদ হিসেবে নয়, ফৌজা সিং ছিলেন বিশ্বব্যাপী মানবিক মূল্যবোধের প্রতীক। ২০০৪ সালের এথেন্স ও ২০১২ সালের লন্ডন অলিম্পিকে অলিম্পিক মশাল বহনের সম্মান পান। ডেভিড বেকহ্যাম ও কিংবদন্তি মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞাপনেও অংশ নিয়েছেন এই প্রবীণ দৌড়বিদ।