খুঁজুন
                               
বৃহস্পতিবার, ৫ জুন, ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

ফের বন্ধ তিতাসের ১৪ নম্বর কূপ, গচ্চা ৭৫ কোটি টাকা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ২৪ মার্চ, ২০২৫, ১০:২৪ পূর্বাহ্ণ
ফের বন্ধ তিতাসের ১৪ নম্বর কূপ, গচ্চা ৭৫ কোটি টাকা

তিতাস গ্যাসফিল্ডের ১৪ নম্বর কূপের সংস্কারকাজের (ওয়ার্কওভার) পর মাত্র ৪৮ দিন গ্যাস তোলা গেছে। এরপরই এটি ফের বন্ধ হয়ে যায়। কূপটি কবে নাগাদ পুনরায় চালু করা যাবে সে সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো তথ্য নেই কর্তৃপক্ষের কাছে। অভিযোগ উঠেছে, ভালো করে যাচাই না করেই বন্ধ কূপটি ওয়ার্কওভার প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করেছিল বাংলাদেশ গ্যাসফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড (বিজিএফসিএল)।

বিজিএফসিএল’র এমডি সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর ঘনিষ্ঠজন প্রকৌশলী ফজলুল হক এবং প্রকল্প পরিচালকের অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে এমনি হয়েছে। জানা গেছে, বিজিএফসিএল পরিচালিত তিতাস গ্যাসফিল্ডের ২৭টি কূপের মধ্যে বর্তমানে ৫টি কূপ বন্ধ রয়েছে। বাকি ২২টি কূপ থেকে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ৩শ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন হচ্ছে। মূলত কূপগুলোতে মজুত কমতে থাকায় ক্রমাগত কমছে গ্যাসের উৎপাদন। গ্যাসের উৎপাদন বাড়াতে ৫২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন গ্যাসফিল্ডের ৭টি কূপের সংস্কারকাজ হাতে নেয় বিজিএফসিএল। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল-বিশ্বরোড এলাকায় অবস্থিত তিতাসের ১৪ নম্বর কূপটির সংস্কারকাজ শুরু হয় গেল বছরের ১৯ মার্চ। ৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ওয়ার্কওভার শেষে একই বছরের ২১ মে কূপটি থেকে পরীক্ষামূলকভাবে গ্যাস উত্তোলন শুরু হয়। এরপর ২৫ মে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয় কূপটি থেকে।

জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন তৎকালীন জ্বালানি সচিব মো. নুরুল আলম। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ওয়ার্কওভার প্রকল্পের পরিচালক ইসমাইল মোল্লা সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, কূপটি থেকে আগামী ১০ বছর পর্যন্ত ৪০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা যাবে। যার বাজারমূল্য প্রায় ২৬শ কোটি টাকা। প্রতিদিন গড়ে ১২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে বলেও জানান তিনি। কিন্তু ৪৮ দিনে মাত্র ২৫৭ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হয় ১৪ নম্বর কূপ থেকে। এরপর এটি বন্ধ হয়ে যায়। জানা গেছে, এক সময় কূপটি থেকে দৈনিক ২৯ দশমিক ৫০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস উত্তোলন হতো। তবে গ্যাসের সঙ্গে অতিমাত্রায় পানি ওঠার কারণে ২০০৯ সালে কূপটি ওয়ার্কওভার করে দৈনিক ১৯ দশমিক ৫০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস উৎপাদন করা হয়। তবে গ্যাসের সঙ্গে পানি ওঠার হার বৃদ্ধির কারণে ২০২১ সালের নভেম্বরে কূপটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।

১৪ নম্বর কূপের ব্যর্থতার মধ্যেই গেল বছরের শেষদিকে ১৬ নম্বর কূপের ওয়ার্কওভার কাজ শুরু করে বিজিএফসিএল। যদিও কূপটি আগে থেকেই সচল ছিল। এ কূপটি থেকে আগে প্রতিদিন ১৯ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন হলেও ত্রুটিপূর্ণ ওয়ার্কওভারের পর তা এখন গড়ে ৪ মিলিয়নে নেমে এসেছে। ফলে কূপটি পুনরায় ওয়ার্কওভারের জন্য নতুন করে আরও ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। ওয়ার্কওভার প্রকল্পের পরিচালক মো. ইসমাইল মোল্লা মুঠোফোনে জানান, কারিগরি ত্রুটির কারণে ১৪ নম্বর কূপটি বন্ধ হয়ে গেছে। এত দ্রুত কারিগরি ত্রুটির কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে মিটিংয়ে আছেন জানিয়ে অপারেশন বিভাগে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি। এই প্রতিবেদক পরিচয় দিয়ে পরপর তিন দিন ইসমাইল মোল্লাকে ফোন দেন। প্রতিদিনই তিনি মিটিংয়ে আছেন বলে এড়িয়ে যান। অথচ অন্য মাধ্যমে খবর নিয়ে জানা যায়, ওই সময় তিনি কোনো মিটিংয়ে ছিলেন না।

বিজিএফসিএলের একটি সূত্র বলছে, নসরুল হামিদ বিপুর ঘনিষ্ঠজন হওয়ার সুবাদে জ্যেষ্ঠতা ভেঙে বাপেক্সের তৎকালীন মহাব্যবস্থাপক, অপেক্ষাকৃত জুনিয়র কর্মকর্তা প্রকৌশলী ফজলুল হককে বিজিএফসিএলের এমডি হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। নিয়োগ পাওয়ার পর নিজের পছন্দের এবং আওয়ামী লীগপন্থি কর্মকর্তাদের নিয়ে সিন্ডিকেট গড়ে অনিময়-দুর্নীতি করছেন তিনি। বিজিএফসিএলের সিবিএ সভাপতি নূর আলম বলেন, শুধু কোম্পানির এমডির অদক্ষতায় উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর সুফল মিলছে না। ১৪ নম্বর কূপের ওয়ার্কওভার কাজটি ভালোভাবে করতে পারেনি বিধায় বেশিদিন গ্যাস উত্তোলন করা যায়নি। অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে বিজিএফসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী ফজলুল হক বলেন, আমি কোনো সিন্ডিকেট করিনি। আর আমার সঙ্গে নসরুল হামিদ বিপুর কোনো ঘনিষ্ঠতা ছিল না। আমার মাথাতে এগুলো কখনো আসেইনি। আমি এমডি হয়ে আসার পর উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বা ব্যক্তিস্বার্থে কিছুই করিনি।

বাজেট প্রতিক্রিয়া : শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে এডিপি বরাদ্দ কমানো উদ্বেগজনক: সিপিডি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫, ২:৩৮ অপরাহ্ণ
বাজেট প্রতিক্রিয়া : শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে এডিপি বরাদ্দ কমানো উদ্বেগজনক: সিপিডি

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির বরাদ্দ কমানো উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। আজ সোমবার সিপিডি কার্যালয়ে আয়োজিত তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘বাজেটের যে কাঠামো উপস্থাপন করা হয়েছে, সেখানে বাজেটের আকার সামান্য ছোট করা হয়েছে। পাশাপাশি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি, সেখানেও কিছুটা কাটছাঁট করা হয়েছে। বাজেটের আকার নিয়ে অনেকদিন ধরে আলোচনা হয়েছে, সেটার অন্যতম কারণ হচ্ছে, আমাদের যে চলমান অর্থনৈতিক সংকট, অর্থাৎ উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগ স্থবিরতা, কর্মসংস্থানে সমস্যা এবং রাজস্ব আহরণের সমস্যা বিবেচনায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা বাজেট প্রস্তাব করেছে বলে আমাদের মনে হয়েছে।’

ড. ফাহমিদা বলেন, ‘বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির দিকে তাকালে দেখা যাবে, চলতি অর্থবছরের তুলনায় ১৩ দশমিক ২ শতাংশ কমানো হয়েছে এবং ১৫টি খাতের মধ্যে ১৪টি খাতেই কমানো হয়েছে। এখানে উল্লেখযোগ্য এবং চিন্তার বিষয় হচ্ছে, তিনটি খাত—শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষিতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে টাকার অংকে বরাদ্দ কমানো হয়েছে। সেটা আমাদের কাছে উদ্বেগজনক মনে হয়, কারণ শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে আমরা সব সময় বরাদ্দ বাড়ানোর কথা বলে আসছি এবং কৃষি খাতে, বিশেষত খাদ্য নিরাপত্তার দিকে এখানে বরাদ্দ অনেক গুরুত্বপূর্ণ।’ তিনি বলেন, ‘ভৌত অবকাঠামো, বিশেষ করে পরিবহন ও বিদ্যুৎ-জ্বালানি বরাবরের মতো উপরের দিকে আছে যুক্তিযুক্তভাবে।’

এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, কর কাঠামোর মধ্যে করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ দশমিক ৫ লাখ, অর্থাৎ সাড়ে ৩ লাখ টাকা থেকে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করা হয়েছে, এটা একটা ভালো পদক্ষেপ। কিন্তু প্রায় ৩ বছরের মতো সময় ধরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের উপরে রয়েছে, ১০-১১ শতাংশে উঠে গেছে। সেদিক থেকে যে খুব একটা উল্লম্ফন হয়েছে সেটা না। তবে এটাকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, যারা জুলাই যোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত, তাদের জন্য করমুক্ত আয়সীমা ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা করা হয়েছে, সেটাও আমরা ভালো পদক্ষেপ মনে করি।’

‘করের বিভিন্ন স্ল্যাবগুলোতে পরিবর্তন করা হয়েছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে যারা নিম্ন মধ্যআয়ের যারা পড়েছেন, কর দেওয়ার ক্ষেত্রে হারটা তাদের মধ্যেই বেশি পড়বে। আবার যারা আয়ের উচ্চ পর্যায়ে রয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রে অনেক কম পড়বে। এখানে বৈষম্যের চিত্র দেখা যাচ্ছে। অঞ্চলভিত্তিক ন্যূনতম কর ধরা হয়েছে ৫ হাজার টাকা, এখানে আমরা মনে করছি বৈষম্য রয়েছে। কারণ রাজধানী ঢাকা কিংবা অন্য আরেকটি জেলার সবাইকে এক করে দেখানো; সরকারি সেবা সব জায়গায় সবাই কিন্তু সমানভাবে নেয় না। এখানে পুনর্বিবেচনার সুযোগ রয়েছে বলে আমরা মনে করি,’ যোগ করেন তিনি।

ফাহমিদা বলেন, ‘শুল্ক যৌক্তিকরণ হয়েছে এবং আমদানি শিল্প যৌক্তিকিকরণ করতে গিয়ে হয়তো কিছু কিছু শিল্প চাপে পড়তে পারে। বিশেষ করে যখন মূল্যস্ফীতি বেশি, কস্ট অব ডুইং বিজনেস বেশি। এটাকে শুল্কের যৌক্তিকিকরণ করতেই হবে, কারণ বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বেরিয়ে যাবে। আস্তে আস্তে ট্যারিফ কমানোর দিকে নজর দিতে হবে। যে প্রতিঘাত আসবে, সেটা মোকাবিলা করার জন্য কস্ট অব ডুইং বিজনেসের ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ-জ্বালানি সাশ্রয়ী মূল্যে কিংবা সহজ শর্তে ঋণ কিংবা আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমিয়ে কস্ট অব ডুইং বিজনেস কমানোর উদ্যোগ নিতে হবে।’

প্রস্তাবিত বাজেটে কিছু ভালো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ই-কমার্সের সুযোগ-সুবিধা এবং ই-কমার্সকে ফরমাল সেক্টরে আনা; এখানে করের আওতায় আনা এবং পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের অধীনে যে ৫ হাজার ৪০ কোটি টাকার ফান্ড গঠন হয়েছে। আমরা মনে করি, আগেও পিপিপি মডেলের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, সেগুলো কিন্তু খুব একটা এগোয় নাই।

নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ১ হাজার কোটি টাকার ফান্ড গঠনকে স্বাগত জানিয়েছে সিপিডি।

কালো টাকা সাদা করার সুযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কালো টাকা সাদার করার সুযোগটা রয়ে গেছে। যদিও এখানে রেট বাড়ানো হয়েছে কিন্তু আমরা আগেও বলেছি, কালো টাকার ব্যাপারে আমাদের অবস্থান হচ্ছে, এই সুযোগ দিয়ে যারা নৈতিকভাবে প্রতি বছর স্বচ্ছ আয় করে, স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতার সঙ্গে কর দিয়ে থাকেন, তাদের প্রতি নৈতিক আঘাত। কারণ তাদের আদর্শিকভাবে নিরুৎসাহিত করা হয়। দুটি জিনিস সমান্তরালভাবে চলতে পারে না!’

ফাহমিদা আরও বলেন, ‘আগে করের হারটাও কম রাখা হতো, এখন করের হার বেশি রাখা হয়েছে। তারপরও এটা থেকে খুব একটা আদায় হয় না। যদি এখান থেকে সত্যি আদায় করার ইচ্ছা থাকে, তাহলে কিন্তু সক্রিয় পদক্ষেপ নিতে হবে। এছাড়া দুএকবার সুযোগ দিয়ে চিরতরে বন্ধ করে দেওয়া উচিত।’ উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময় কর রেয়াত কিংবা বিভিন্ন জায়গা থেকে কমানো এবং পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা ও পরিমাণ বাড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি।

‘সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির অধীনে ১৪০টির মতো কার্যক্রম একসঙ্গে চলতো, সেগুলো কমিয়ে ৯৫টি করা হয়েছে এবং সেখানে অর্থ বরাদ্দ কম করা হয়েছে। খুব কম না কিন্তু বাজেটের তুলনায় ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ এবং মোট বাজেটের ১ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকার মতো।’ ‘আমরা বারবার বলেছি, এখানে কতগুলো উপাদান যুক্ত করা হয়, যেগুলো সামাজিক নিরাপত্তা বা সামাজিক সুরক্ষার অধীনে দেওয়া যুক্তিযুক্ত নয়। কারণ এটা একেবারেই অতি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য। সরকারি কর্মচারীদের পেনশন, সেখানে আছে ৩৫ হাজার ২৮২ কোটি টাকা। কৃষি ভর্তুকি আছে ১৭ হাজার কোটি টাকা। এই দুটি মিলিয়ে ৫২ হাজার কোটি টাকার বেশি হয়, সেটা বাদ দিয়ে রয়ে যায় ৬৪ হাজার কোটি টাকার মতো। সেটা অনেকখানি কমে আসে। এগুলো বাদ দিয়ে যে নেট সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, সেটাকে দেখাতে হবে। সেটা দেখে তুলনা করা যেতে পারে যে আসলেই দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য কী করা হলো,’ যোগ করেন তিনি।

ফাহমিদা বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে বলতে চাই, কিছু কিছু পদক্ষেপ ভালো নেওয়া হয়েছে বিচ্ছিন্নভাবে। কিন্তু সামগ্রিক কাঠামোগত পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে যে একই কাঠামোর মধ্যে এখানে একটু বেশি, ওখানে একটু কম—এ রকম করে নেওয়া হয়েছে। বাজেটের যে দর্শন, এখানে বৈষম্যহীন সমাজের কথা বলা হয়েছে, সেই উদ্দেশ্যের সঙ্গে যে বাস্তব পদক্ষেপগুলো নেওয়া হয়েছে, সব ক্ষেত্রে সেটা সাযুজ্যপূর্ণ হয়নি।’

ফেব্রুয়ারি অথবা এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছি: জামায়াতের আমির

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫, ২:৩৬ অপরাহ্ণ
ফেব্রুয়ারি অথবা এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছি: জামায়াতের আমির

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি বা এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন দলটির আমির শফিকুর রহমান।

মঙ্গলবার (৩ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে জামায়াতের নিবন্ধন ফিরে পাওয়া উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

শফিকুর রহমান বলেন, ‘ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি অথবা এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচনের দাবি আমরা জানিয়েছি। রোজার আগে অথবা যদি কোনো কারণে সম্ভব না হয়, তাহলে যেন এপ্রিলের মধ্যেই নির্বাচন দেওয়া হয়। কারণ আবহাওয়ার কারণে মে মাসের পর নির্বাচন করা সম্ভব নয়।’

এ সময় তিনি বলেন, ‘আজকেও যদি সমতল মাঠ তৈরি হয়, ফেয়ার ইলেকশন যদি সম্ভব হয়, তাহলেও আমরা প্রস্তুত রয়েছি। কিন্তু ফেয়ার ইলেকশনের মাঠ তৈরি না হলে এপ্রিলে নির্বাচন হলেও তো কোনো লাভ নেই।’

প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোট দেওয়ার বিষয়ে জামায়াতের আমির বলেন, ‘প্রবাসীদের অবশ্যই ভোটের ব্যবস্থা করতে হবে, এ বিষয়ে আমরা ছাড় দিতে রাজি নই।’

তিনি বলেন, ‘প্রবাসীরা তাদের নাগরিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারেন না। আমরা ইসির কাছে দাবি জানিয়েছি, প্রবাসীরা যেন ভোট দিতে পারেন, তার ব্যবস্থা করার জন্য। এটা কোনো কঠিন বিষয় নয়। কিন্তু ইসির পক্ষ থেকে আমরা কোনো অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি না।’

এর আগে গতকাল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহেরও বলেন, বৈঠকে তারা বলেছেন, জুলাইয়ের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে। আর নির্বাচন হতে পারে ডিসেম্বর থেকে এপ্রিলের মধ্যে।

তাহের বলেন, ‘আমরা বলেছি জুলাইয়ের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে। বেশিরভাগ বিষয়ে সবাই একমত হয়েছে। সামান্য কিছু বিষয়ে মতানৈক্য রয়েছে। জুলাইয়ের মধ্যে সংস্কার শেষ হবে। এরপর একটি জুলাই সনদ হবে। সেখানে আমরা সব দল স্বাক্ষর করব।’

জুলাই সনদ করব, এটাই আমাদের লক্ষ্য : প্রধান উপদেষ্টা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫, ৯:৩১ পূর্বাহ্ণ
জুলাই সনদ করব, এটাই আমাদের লক্ষ্য : প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‌জুলাই সনদ করব এটাই আমাদের লক্ষ্য। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার আজকে প্রথম পর্ব শেষ হলো, দ্বিতীয় পর্ব শুরু হলো। সোমবার (২ জুন) বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে অংশ নিতে বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে যান বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। বিকেল সাড়ে ৪টার পর থেকে এ বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টা।  ড. ইউনূস বলেন, আমি সারা দিনে যত মিটিং করি, যত মিটিং করে এসেছি, সবচাইতে আনন্দ পাই যখন এরকম বসার সুযোগ পাই। এখানে সবাই মিলে বাংলাদেশের প্রকৃত ভবিষ্যৎ রচনা করা হচ্ছে। এটা আমাকে শিহরণ জাগায় যে, এরকম কাজে আমি যুক্ত হতে পেরেছি।

তিনি বলেন, সংস্কার করার জন্য আমার ওপর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। আমরা বুঝতে পারছিলাম না কোথা থেকে শুরু করব। প্রথমে নানা আলাপের মাধ্যমে ঠিক হলো যে, আমরা কয়েকটি কমিশন করে দেব। তারা ভেতরে গিয়ে প্রকৃত জিনিসটা তৈরি করবে। আমরা কমিশন গঠন করলাম। দ্রুত গতিতে কাজ করার জন্য তাদেরকে ৯০ দিন আমরা সময় বেঁধে দিয়েছিলাম। আমরা খুব আনন্দিত তারা করতে পেরেছে। কয়েকটা কমিশন বেশি সময় নিয়েছে, তাতে কোনো অসুবিধা নেই। ‘কমিশন থেকে রিপোর্ট এল। তারপর কথা হলো আমরা ঐকমত্য গঠন করতে চাচ্ছি, এটা কীভাবে হবে? সেখান থেকে একটা আইডিয়া আসল যে আলাদা একটা ঐকমত্য কমিশন দরকার। সেটা ফলপ্রসূ হয়েছে। আলী রীয়াজ সাহেব যখনই আমার সঙ্গে বৈঠক করেন তখনই খুব আনন্দিত হই।’

ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার দ্বিতীয় পর্বে কী হবে তা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‌অনেকগুলো বিষয় কাছাকাছি এসে গেছে। আরেকটু হলে আমাদের তালিকায় আরেকটি সুপারিশ যুক্ত হবে, সেটা হচ্ছে ঐকমত্যের সুপারিশ। সেই সুযোগ যেন আমরা হারিয়ে না ফেলি। আমাদের জুলাই সনদের যতগুলো বিষয় আছে তাতে যদি আরও কিছু যুক্ত করতে পারি, দেখতে সুন্দর লাগবে। জাতীয় একটা সনদ হলো, অনেকগুলো বিষয়ে আমরা এক হতে পেরেছি, জাতি হিসেবে আমরা গর্বিত হতে পারি। আমরা দেশের উন্নতির জন্য, দেশের মঙ্গলের জন্য ঐক্যবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করেছি।