খুঁজুন
                               
শনিবার, ১৯ জুলাই, ২০২৫, ৪ শ্রাবণ, ১৪৩২

রক্ষকই যখন ভক্ষক

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন, ২০২৫, ১০:২৭ পূর্বাহ্ণ
রক্ষকই যখন ভক্ষক

সিলেটের ভোলাগঞ্জে রেলওয়ের জন্য সংরক্ষিত প্রস্তর কোয়ারি তথা ‘রেলের বাঙ্কার’ হইতে যেইভাবে প্রকাশ্যে প্রস্তর উত্তোলন এবং শত শত নৌকা পূর্ণ করিয়া লইয়া যাইতেছে, উহা লুণ্ঠনেরই নামান্তর। বুধবার বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত  প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংরক্ষিত এলাকাটির নজরদারির জন্য রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী-আরএনবি রহিয়াছে। ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকা হইবার কারণে তথায় বিজিবি সদস্যরাও সক্রিয়।

তথাপি এইরূপে সংঘবদ্ধ লুণ্ঠন কীভাবে চলিতে পারে, উহা মস্তিষ্কে ধারণ করিতে বিশেষজ্ঞ হইবার প্রয়োজন নাই। কেবল রেলওয়ের বাঙ্কারই নহে; খোদ ভোলাগঞ্জ কোয়ারি হইতেই লুট হইয়াছে প্রস্তর। বিগত ১০ মাসে ইহা এমন অধিক হারে ঘটিয়াছে, এই সাম্রাজ্যে এখন প্রস্তরের পরিবর্তে ছোট-বড় অসংখ্য গহ্বর দৃশ্যমান। সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক মদদেই এই অবিমৃষ্যকারিতা চলিতেছে। তবে রেলের বাঙ্কার এলাকা নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে থাকিলেও তথাকার লুটপাটের চিত্র সমস্ত এলাকার সংকটাপন্ন পরিস্থিতিরই সাক্ষ্যবহ।

সমকালের সচিত্র প্রতিবেদনে রেলওয়ের প্রস্তরক্ষেত্রের চতুর্দিকে ভিড় পরিলক্ষিত। সূর্যতাপ ও বৃষ্টিধারা হইতে রক্ষাকল্পে রীতিমতো বংশদণ্ডে ত্রিপল ও প্লাস্টিকের আচ্ছাদনও লাগানো হইয়াছে। রেলওয়ের মালিকানাধীন তথা সরকারি এই সম্পদের প্রহরীদিগের নিষ্ক্রিয়তাই প্রমাণ করিতেছে– রক্ষকই ভক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ। সংশ্লিষ্টদের সহিত সাক্ষাতে নিশ্চিত হইয়াছেন, প্রতিটি নৌকা হইতে আরএনবি সদস্যরা দুই-তিনশ টাকা বাম হস্তে গ্রহণ করিয়া থাকে। বিজিবি সদস্যদের তিনশত হইতে পাঁচশত টাকা দিতে হয় এবং প্রতি নৌকা তিন হইতে পাঁচ সহস্র টাকায় প্রস্তর বিক্রয় হয়। অর্থাৎ প্রস্তর লুণ্ঠন প্রক্রিয়ায় স্থানীয় ধলাই নদীর বিভিন্ন স্থানে গড়িয়া উঠিয়াছে চোরাই বিপণি!

প্রায় সাড়ে তিনশত একরের রেলওয়ের বাঙ্কারের প্রায় ৮০ শতাংশ প্রস্তর এই প্রকারে আহরণের কারণে টিলাসমূহ প্রায় সমতল ভূমিতে রূপ লইয়াছে। তথায় তৈয়ার হইয়াছে অসংখ্য গহ্বর, যেইগুলি বৃষ্টিধারায় ডোবায় পরিণত। এই প্রস্তর তুলিবার কারণে ভয়াবহ পরিবেশগত ও মানবিক বিপর্যয়ের শঙ্কা তৈয়ার হইয়াছে। যাহার ফলে জীববৈচিত্র্য ধ্বংস, তৎসহিত নদীভাঙন, ভূমিধস ও প্রাণহানির ন্যায় অঘটনও ঘটমান।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি-বেলার তথ্যানুযায়ী, সিলেট জেলার আটটি প্রস্তর কোয়ারি রহিয়াছে। এই সকল জায়গায় ‘বোমা মেশিন’ ব্যবহার করিয়া প্রস্তর উত্তোলন পরিবেশ ও জনপদে ভয়াবহ ক্ষতির কারণ হইয়া দাঁড়াইয়াছে। যেই কারণে উচ্চ আদালত যান্ত্রিক পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলন বন্ধ করিবার রায় দিয়াছেন। কিন্তু ৫ আগস্ট সরকারের পতন হইলে পূর্বোক্ত রায় উপেক্ষা করিয়াই স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনীতিকগণ পুনরায় প্রস্তর লুণ্ঠনের অশুভ সূচনা করিয়াছেন।

ভোলাগঞ্জে প্রস্তর কোয়ারি হইতে এই লুণ্ঠনের পর আমরা দেখিতেছি সংরক্ষিত এলাকা রেল বাঙ্কারের প্রস্তরও নিষ্কৃতি পাইতেছে না।

আমরা মনে করি, নিরাপত্তা বাহিনী তৎপর হইলে এহেন লুণ্ঠনকর্ম রোধ করা দুষ্কর হইবে না। এতদিন ধরিয়া তাহারা কেন দায়িত্ব পালনে উদাসীনতা প্রদর্শন করিয়াছে, তজ্জন্য তাহাদের জবাবদিহি করিতে হইবে। প্রশাসন যথাযথ ভূমিকা পালন করিলে সিলেটের এই প্রস্তররাজ্য পুনরুদ্ধার সম্ভব। বিশেষত, শ্বেতপ্রস্তরের সৌন্দর্য দর্শন করিতে তথায় পর্যটক যেইভাবে ছুটিয়া যান, সেই পরিবেশ রক্ষা করিতে হইবে। প্রশাসন নিয়মিত অভিযান চালাইলে প্রস্তরের অবৈধ বাণিজ্য বন্ধ হইতে পারে। অন্যথায়, দেশের সম্পদের লুণ্ঠন যদ্রূপ বৃদ্ধি পাইবে, তদ্রূপ প্রতিবেশ ব্যবস্থাও পড়িবে ঝুঁকিতে।

আজ সারা দেশে এনসিপির বিক্ষোভ কর্মসূচি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই, ২০২৫, ১০:৩৮ পূর্বাহ্ণ
আজ সারা দেশে এনসিপির বিক্ষোভ কর্মসূচি

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপির) নেতাদের ওপর হামলার ঘটনায় আজ সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে দলটি। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) ফরিদপুরসহ সারা দেশের এনসিপির পূর্বঘোষিত পদযাত্রা অব্যাহত থাকবে। শুধুমাত্র মাদারীপুর ও শরীয়তপুরে বৃহস্পতিবারের যে কর্মসূচি ছিল সেটি স্থগিত করে পরবর্তীতে তারিখ ঘোষণা করা হবে। বুধবার (১৬ জুলাই) রাতে খুলনা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, সারা দেশে মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে এনসিপির এটি ছিল পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি। সেই লক্ষ্যে প্রশাসনকে জানিয়ে এবং প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার কথা জেনেই গোপালগঞ্জ সফরে গিয়েছিলাম। কিন্তু ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও মুজিববাদীরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে এ হামলা করেছে। গোপালগঞ্জে অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙে আওয়ামী লীগের বাইরেও যে অন্য কোনো দল কর্মসূচি করতে পারে সেটি এনসিপি প্রমাণ করে দিয়েছে।
সমাবেশের আগে ও পরে দফায় দফায় হামলার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এ হামলা পূর্ব পরিকল্পিত সেটি প্রমাণিত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আরও সতর্ক থাকতে পারতো উল্লেখ করে সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেভাবে সহায়তা দিয়েছে সেজন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গোপালগঞ্জের হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান নাহিদ ইসলাম। উল্লেখ্য, গোপালগঞ্জে এনসিপির পদযাত্রায় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের হামলার পর উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে বুধবার (১৬ জুলাই) সন্ধ্যায় এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা খুলনা এসে পৌঁছান।

গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশ ঘিরে হামলা-সংঘর্ষে নিহত ২

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই, ২০২৫, ১০:৩৫ পূর্বাহ্ণ
গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশ ঘিরে হামলা-সংঘর্ষে নিহত ২

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ ঘিরে হামলা–সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। হাসপাতাল ও পরিবার সূত্র এ কথা জানিয়েছে। নিহত দুজন হলেন গোপালগঞ্জ শহরের উদয়ন রোডের বাসিন্দা সন্তোষ সাহার ছেলে দীপ্ত সাহা (২৫) ও কোটালীপাড়ার রমজান কাজী (১৮)। আজ বুধবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জীবিতেষ বিশ্বাস বলেন, বিকেলে তিনজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তাঁরা গুলিবিদ্ধ ছিলেন।
স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে নিহত দুজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। অপরজনের মৃত্যুর বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। হাসপাতালের একজন কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ওই ব্যক্তির লাশ স্বজনেরা নিয়ে গেছেন। হাসপাতালের কর্মকর্তা জীবিতেষ বিশ্বাস বলেন, আরও ৯ জনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তাঁদের অস্ত্রোপচার চলছে।
মৃত্যুর তথ্য জানতে গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমানের মুঠোফোনে কল দিলে তিনি ধরেননি। তথ্য জানতে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মুহম্মদ কামরুজ্জামান ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. গোলাম কবিরকে কল দিলে তাঁরা কথা বলতে রাজি হননি। নিহত দীপ্ত সাহার চাচা বলেন, দীপ্ত দুপুরের খাবার খেয়ে তাঁর দোকানে যাচ্ছিলেন। শহরের চৌরঙ্গীতে তাঁর পেটে গুলি লাগে।
নিহত রমজান কাজীর বাবা কামরুল কাজী বলেন, ‘আমার ছেলেটাকে মেরে ফেলছে। আমার ছেলে তো কোনো দোষ করেনি। আমি আমার সন্তানকে কোথায় পাব?’ এর আগে গোপালগঞ্জের পৌর পার্কে এনসিপির সমাবেশ শেষে হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, এনসিপির সমাবেশ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একদল ব্যক্তি লাঠিসোঁটা নিয়ে নেতা-কর্মীদের ঘিরে হামলা চালান। এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা সাউন্ড গ্রেনেড ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। এনসিপির নেতা-কর্মীরা অন্যদিক দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। হামলার ঘটনার পর এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এই হামলা চালিয়েছেন। এ সময় পুলিশ-সেনাবাহিনী নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। তাদের (এনসিপি) বলা হয়েছিল, সবকিছু ঠিক আছে। কিন্তু তাঁরা সমাবেশস্থলে এসে দেখেন, পরিস্থিতি ঠিক নেই।

গোপালগঞ্জ কারফিউয়ে থমথমে, আটক ১৪

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই, ২০২৫, ১০:৩২ পূর্বাহ্ণ
গোপালগঞ্জ কারফিউয়ে থমথমে, আটক ১৪

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পদযাত্রা ও সমাবেশকে কেন্দ্র করে গতকাল বুধবার দফায় দফায় হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় কারফিউ জারি করে প্রশাসন। কারফিউয়ের মধ্যে যৌথ বাহিনী বুধবার রাতে অভিযান চালিয়ে ১৪ জনকে আটক করেছে। তাদের গোপালগঞ্জ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখনো মামলা দায়ের হয়নি বলে জানিয়েছেন গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মির মো. সাজেদুর রহমান।
এদিকে চলমান কারফিউয়ে জেলায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। গতকাল রাত থেকে সীমিত আকারে রিকশা চলাচল করলেও অন্য কোনো যানবাহন চলাচল করতে দেখা যায়নি, বন্ধ ছিল ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে বের হয়নি। রাতে শহরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের দেখা যায়নি। আজ বৃহস্পতিবার ভোর থেকে এখনো পর্যন্ত রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজারে মানুষের আনাগোনা নেই বললেও চলে। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কারফিউয়ের মধ্যে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সদস্যদের কোনো তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। নেই টহলও। তবে জেলা কারাগারের সামনে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রয়েছে।