খুঁজুন
                               
মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৫, ১৬ বৈশাখ, ১৪৩২

পাকিস্তানের সাথে প্রধান সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দিলো ভারত

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৫, ৯:০১ পূর্বাহ্ণ
পাকিস্তানের সাথে প্রধান সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দিলো ভারত

ভারত-শাসিত কাশ্মিরে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার একদিন পর পাকিস্তানকে লক্ষ্য করে বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ভারত। সর্বশেষ দুই দেশের মধ্যে সংযোগকারী প্রধান সীমান্ত ক্রসিংও বন্ধ করে দিয়েছে নয়াদিল্লি। মূলত কাশ্মিরের এই হামলার জন্য পাকিস্তানের দিকেই আঙুল তুলেছে ভারত। তবে ভারতের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে পাকিস্তান। বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, কাশ্মিরের পেহেলগামে ভয়াবহ হামলার ঠিক একদিন পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে ভারত । এসব পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে— ভারত-পাকিস্তানের প্রধান সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দেওয়া, দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিত করা, পাকিস্তানি কূটনীতিকদের বহিষ্কার এবং ভারতে থাকা পাকিস্তানি নাগরিকদের কিছু ভিসা বাতিল ও দুই দিনের মধ্যে ভারত ছাড়ার নির্দেশ।

ভারত স্পষ্টভাবে দাবি করেছে, পাকিস্তান “সীমান্ত পেরিয়ে সন্ত্রাসবাদে সহায়তা” করছে। তবে পাকিস্তান তা অস্বীকার করেছে। মঙ্গলবারের হামলা গত কয়েক বছরের মধ্যে ভারতশাসিত জম্মু-কাশ্মিরে সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলাগুলোর একটি। এই হামলার সময় পর্যটকে ভরা হিমালয়ের বিখ্যাত পেহেলগাম ভ্যালিতে গুলিবর্ষণ করে হামলাকারীরা। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ধারণা, হামলার পেছনে রয়েছে “কাশ্মির রেজিস্ট্যান্স” নামের একটি সংগঠন, যদিও এই দাবি স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং জানিয়েছেন, “শুধু যারা সরাসরি হামলায় জড়িত, তাদের নয়—যারা এই হামলার পরিকল্পনা করেছে, যারা পেছনে বসে এই ষড়যন্ত্রে যুক্ত, তাদেরও খুঁজে বের করা হবে।”

এদিকে কাশ্মিরের এই ঘটনায় পাকিস্তান প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যটকদের মৃত্যুতে “উদ্বেগ ও শোক” প্রকাশ করে। বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের (এনএসসি) বৈঠক বসার কথা রয়েছে, যেখানে দেশটির সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা শাখার শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। হামলার এই ঘটনার পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দিল্লিতে নিযুক্ত পাকিস্তানি সামরিক উপদেষ্টাদের অবিলম্বে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে। এছাড়া আরও কূটনৈতিক বহিষ্কারের পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানিয়েছে মোদির সরকার। বিশ্লেষকদের মতে, এই হামলার প্রেক্ষিতে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত হতে পারে, বিশেষত দুই দেশই পারমাণবিক শক্তিধর হওয়ায় উত্তেজনা বাড়ার আশঙ্কা বাড়ছে।

সারাদেশে বজ্রপাতে প্রাণ গেল ১০ জনের

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫, ৭:২২ অপরাহ্ণ
সারাদেশে বজ্রপাতে প্রাণ গেল ১০ জনের

পাঁচ জেলায় বজ্রপাতে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (২৮ এপ্রিল) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে। কুমিল্লার দুই উপজেলায় চারজন, কিশোরগঞ্জের দুই উপজেলায় তিনজন এবং নেত্রকোণা, সুনামগঞ্জ ও চাঁদপুরে একজন করে মারা যান।

কুমিল্লা

বজ্রপাতে কুমিল্লার দুই উপজেলায় দুই স্কুলছাত্রসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও একজন। তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সোমবার সকাল ১০টা থেকে দুপুরের মধ্যে বরুড়া ও মুরাদনগর উপজেলায় পৃথক বজ্রপাতে তাদের মৃত্যু হয়। সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার কোরবানপুর পূর্ব পাড়া কবরস্থানের পাশের মাঠে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়। তারা হলেন- উপজেলার দেওড়া গ্রামের জসিম উদ্দিন ভূইয়াঁর ছেলে জুয়েল ভূইয়াঁ (৩৫) ও কোরবানপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়া (কালীবাড়ি) এলাকার মৃত বীরচরণ দেবনাথের ছেলে নিখিল দেবনাথ (৬০)।

অন্যদিকে দুপুরে বরুড়া উপজেলার খোশবাস ইউনিয়নের পয়ালগুচ্ছ গ্রামে বজ্রপাতে দুই স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলো- ওই এলাকার মৃত খোকন মিয়ার ছেলে ফাহাদ হোসেন (১৩) এবং আব্দুল বারেক মিয়ার নাতি সায়মন হোসেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুজনই উপজেলার বড় হরিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল। হালকা মেঘলা আবহাওয়ায় তারা মাঠে ঘুড়ি ওড়াচ্ছিল। আকস্মিক বজ্রপাতে মারাত্মক আহত হলে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেন। সেখানে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

কিশোরগঞ্জ

কিশোরগঞ্জের দুই হাওর উপজেলা অষ্টগ্রাম ও মিঠামইনে বজ্রপাতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকালে অষ্টগ্রামের হাওরে ধান কাটতে গিয়ে দুই কৃষক ও মিঠামইনে নিজের খলায় ধানের খড় ঢাকতে গেলে বজ্রপাতে এক নারীর মৃত্যু হয়।

নিহতরা হলেন-অষ্টগ্রাম উপজেলার কলমা ইউনিয়নের হালালপুর গ্রামের মৃত জতীন্দ্র দাসের ছেলে ইন্দ্রজিত দাস (৩৫), খয়েরপুর-আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের খয়েরপুর গ্রামের ইদ্রিছ মিয়ার ছেলে স্বাধীন মিয়া (১৪) ও মিঠামইন উপজেলার কেওয়ারজোড় ইউনিয়নের রানীগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা মৃত আশ্রব আলীর স্ত্রী ফুলেছা বেগম (৬৫)।

অষ্টগ্রাম থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন ও মিঠামইন থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) দেলোয়ার হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সুনামগঞ্জ

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় বজ্রপাতে রিমন তালুকদার (২২) নামে এক কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার সকালে উপজেলার আটগাঁও গ্রামের বুড়িগাঙ্গাল হাওরে এ ঘটনা ঘটে। নিহত রিমন তালুকদার শাল্লা কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের মতোই সকালে গরুকে ঘাস খাওয়াতে বাড়ির পাশের বুড়িগাঙ্গাল হাওরে যান রিমন। এ সময় হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হলে তিনি নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এর মধ্যেই বজ্রপাতের শিকার হন। ঘটনাস্থলেই রিমন ও তার সঙ্গে থাকা গবাদিপশুর মৃত্যু হয়।

চাঁদপুর

কালবৈশাখী ঝড়ে চাঁদপুরের কচুয়ায় বজ্রপাতের বিকট শব্দে হার্ট অ্যাটাক করে বিশকা রানী সরকার (৪৫) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার দুপুরে উপজেলার উত্তর কচুয়া ইউনিয়ন পরিষদের নাহারে গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত বিশকা রানী সরকার চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার ৩নং ইউনিয়নের নাহারা গ্রামের পূর্বপাড়া মন্দির ওয়ালা বাড়ির হরি স্বামী পদ সরকারের স্ত্রী।

কচুয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, মৃত বিশকা রানী সরকারের শরীরে বজ্রপাতের কোনো লক্ষণ পাওয়া যায় নাই। তার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে । মৃতদেহ নিজ বাড়িতে নিয়ে যায়। এ মৃত্যু নিয়ে কারো কোনো সন্দেহ না থাকায় সামাজিকভাবে সৎকারের জন্য অনুমতি প্রদান করা হয়।

হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। তবে বজ্রপাতে আতঙ্কিত হয়ে মারা যেতে পারেন। হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়।

কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন বলেন, ওই গৃহবধূ বজ্রপাতের বিকট আওয়াজে হার্ট অ্যাটাক করে মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত ডাক্তাররা। তবে এ নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।

নেত্রকোণা

নেত্রকোণার মদনে আরাফাত মিয়া (১০) নামে এক মাদরাসার ছাত্র মারা গেছেন। সোমবার ভোর ৬টার দিকে উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের তিয়শ্রী গ্রামে নিজ বাড়ির সামনেই বজ্রপাতে মৃত্যু হয় তার। আরাফাত উপজেলার তিয়শ্রী গ্রামের আব্দুস ছালামের ছেলে।

মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অলিদুজ্জামান জানান, আরাফাত নামে এক মাদরাসা শিক্ষার্থীর বজ্রপাতে মারা যাওয়ার খবর পেয়েছি। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী তার পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা করা হবে।

কাশ্মির সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের উত্তেজনা চরমে

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫, ৯:২৭ পূর্বাহ্ণ
কাশ্মির সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের উত্তেজনা চরমে

কাশ্মির সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে ফের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। রোববার (২৭ এপ্রিল) রাতে এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। তবে এতে হতাহতের কোনও খবর পাওয়া যায়নি। এনিয়ে টানা চাররাত ধরে কাশ্মির সীমান্তে ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটল। সোমবার (২৮ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। অবশ্য ভারতীয় গণমাধ্যমে গোলাগুলির বিষয়ে বরাবরের মতো পাকিস্তানকে দোষারোপ করা হলেও পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বা দেশটির সংবাদমাধ্যমে এখনও এ বিষয়ে কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।

এনডিটিভি বলছে, জম্মু ও কাশ্মিরে নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর টানা চতুর্থ রাতেও সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করে বিনা উসকানিতে পাকিস্তানি সেনারা গুলি চালিয়েছে বলে দাবি করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা। ভারতীয় সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, “২৭-২৮ এপ্রিল রাতের মধ্যে কুপওয়ারা ও পুঞ্চ জেলার বিপরীত পাশে পাকিস্তানের সেনাঘাঁটি থেকে বিনা উসকানিতে ছোট অস্ত্র দিয়ে গুলিবর্ষণ শুরু হয়। ভারতীয় সেনারা দ্রুত এবং কার্যকরভাবে তার ‘জবাব’ দিয়েছে।” এই প্রথমবারের মতো পুঞ্চ সেক্টরেও পাকিস্তানের সেনারা সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করল বলে দাবি করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।

এই গোলাগুলির ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটল যখন কয়েকদিন আগেই জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছেন। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর কাশ্মিরে এটিই সবচেয়ে বড় হামলা। এর আগে রোববারও কাশ্মির সীমান্তের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে ফের গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এদিনের গোলাগুলির বিষয়ে চীনের সংবাদসংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, কোনও ধরনের প্ররোচনা ছাড়াই নিয়ন্ত্রণরেখায় গুলি চালাতে শুরু করে ভারতীয় সেনারা, পরে পাকিস্তানও পাল্টা গুলি চালিয়ে জবাব দিয়েছে।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে কাশ্মিরের নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর দুই দেশের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলি হয়। সম্প্রতি অধিকৃত কাশ্মিরে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। এদিকে পেহেলগামের ভয়াবহ ওই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান। তাছাড়া, হামলার পরে দুই দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ভিসা বাতিল করে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। এতে ভারত ও পাকিস্তানের নাগরিকেরা নিজ নিজ দেশে ফিরে যেতে শুরু করেন।

কাঁচা আম নাকি পাকা আম, স্বাস্থ্যের জন্য কোনটি ভালো?

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৫, ১:৪৪ অপরাহ্ণ
কাঁচা আম নাকি পাকা আম, স্বাস্থ্যের জন্য কোনটি ভালো?

আসছে আমের মৌসুম। অনন্য স্বাদ ছাড়াও আম অসাধারণ পুষ্টিতে ভরপুর যা অন্ত্রের স্বাস্থ্য, শক্তির মাত্রা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিস্ময়কর কাজ করে। আম বিভিন্ন উপায়ে খাওয়া যেতে পারে। কেউ কেউ পাকা, রসালো এবং মিষ্টি আম পছন্দ করেন, আবার কেউ কেউ কাঁচা আমের স্বাদ টক এবং সুস্বাদু বলে মনে করেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কাঁচা এবং পাকা উভয় আমেরই নিজস্ব সুবিধা রয়েছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, কোনটি বেশি উপকারী-

কাঁচা আমের উপকারিতা

কাঁচা আমে ভিটামিন সি বেশি থাকে এবং পাকা আমের তুলনায় এটি বেশি অ্যাসিডিক। এটি তাদের হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। কাঁচা আমে প্রচুর ডায়েটারি ফাইবার থাকে যা হজমের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, নিয়মিত মলত্যাগের গতি বৃদ্ধি করে এবং অন্ত্রের সুস্থ মাইক্রোবায়োমকে সহায়তা করে।

কাঁচা আমে ভিটামিন সি-এর ঘনত্বও বেশি থাকে, যা একটি অপরিহার্য পুষ্টি উপাদান। যা এর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী বৈশিষ্ট্য, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রভাব এবং কোলাজেন সংশ্লেষণে ভূমিকা রাখার জন্য পরিচিত। কাঁচা আম কাঁচা প্রকৃতির কারণে বেশি অ্যাসিডিক। এই অ্যাসিডিটি হজমের সুবিধা দেয়, পাচক এনজাইম উৎপাদনকে উদ্দীপিত করে এবং খাদ্য ভাঙনে সহায়তা করে। কাঁচা আম অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্যের একটি সমৃদ্ধ উৎস যা ক্যান্সার এবং হৃদরোগের মতো দীর্ঘস্থায়ী রোগ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।

পাকা আমের উপকারিতা

পাকা আমে বিটা-ক্যারোটিনের মতো কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বেশি থাকে, যা এই ফলকে কমলা-হলুদ রঙ দেয়। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোষকে অক্সিডেটিভ ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমাতে পারে। এছাড়াও বিটা-ক্যারোটিনসহ এর ক্যারোটিনয়েডের পরিমাণ বেশ বৃদ্ধি পায়। এই ক্যারোটিনয়েড শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা বয়স-সম্পর্কিত ম্যাকুলার ডিজেনারেশন এবং নির্দিষ্ট ধরনের ক্যান্সার থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।

পাকা আমে ভিটামিন এ বেশি থাকে, যা সুস্থ দৃষ্টিশক্তি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য অপরিহার্য। তবে এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে পাকা আমে প্রাকৃতিক চিনির পরিমাণ বেশি থাকে, যা এই ফলকে মিষ্টি এবং আরও সুস্বাদু করে তোলে। এটি দ্রুত শক্তি সরবরাহ করে এবং মিষ্টির আকাঙ্ক্ষা পূরণ করে।

কাঁচা বনাম পাকা আম: কোনটি ভালো?

এটি ব্যক্তিগত খাদ্যতালিকাগত পছন্দ, স্বাস্থ্য লক্ষ্য এবং পুষ্টির প্রয়োজনীয়তার ওপর নির্ভর করে। তবে কিছু বিষয়ে বিবেচনা করতে পারেন- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য: কাঁচা আম বেশি ভিটামিন সি উপাদানের কারণে পছন্দনীয় হতে পারে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গ্রহণের জন্য: পাকা আম বিটা-ক্যারোটিনের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মাত্রা বৃদ্ধির কারণে আরও উপকারী হতে পারে।

হজমের স্বাস্থ্যের জন্য: কাঁচা এবং পাকা উভয় আমই ফাইবার সরবরাহ করে, তবে কাঁচা আম এই ক্ষেত্রে কিছুটা বেশি দিতে পারে। স্বাদের জন্য: পাকা আম অনেকের কাছে মিষ্টি এবং বেশি উপভোগ্য। পরিশেষে, কাঁচা এবং পাকা উভয় আমেরই নিজস্ব পুষ্টিগুণ রয়েছে। খাদ্যতালিকায় কাঁচা এবং পাকা আমসহ বিভিন্ন ধরনের ফল যোগ করলে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি এবং স্বাস্থ্য উপকারিতা নিশ্চিত করা যায়।