খুঁজুন
                               
শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫, ৬ বৈশাখ, ১৪৩২

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নির্দিষ্ট সরকারকেন্দ্রিক হওয়া উচিত নয়

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১:২৫ অপরাহ্ণ
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক নির্দিষ্ট সরকারকেন্দ্রিক হওয়া উচিত নয়

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্ক ‘নির্দিষ্ট সরকারকেন্দ্রিক’ হওয়া উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। আগামী এপ্রিলে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বৈঠকে বসতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন তিনি। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত এই সাক্ষাৎকারে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, ভারত থেকে শেখ হাসিনার বক্তব্য-বিবৃতি, সীমান্ত হত্যা এবং জেলেদের সাথে দুর্ব্যবহার, আদানি পাওয়ার প্রকল্পের ইস্যুগুলোসহ দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে উত্তাপ ছড়ানো বেশ কয়েকটি বিষয়ে কথা বলেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।

ওমানের রাজধানী মাস্কাটে অষ্টম ভারত মহাসাগরীয় সম্মেলনের ফাঁকে গত রোববার ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সাক্ষাৎ হয়। এর পরদিন দ্য হিন্দুকে এই সাক্ষাৎকার দেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। নিচে সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো—

দ্য হিন্দু: সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সাথে আপনার বৈঠক সম্পর্কে আমাদের বলুন…

তৌহিদ হোসেন: স্পষ্ট করে বলতে গেলে, সম্পর্ক খুবই উত্তেজনাপূর্ণ ছিল (যখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়)। এটি খুব উত্তেজনাপূর্ণ ভাবেই শুরু হয়েছিল, যেমনটি আমি দেখছি, কারণ ভারত ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে এমন এক ধরনের সম্পর্কে অভ্যস্ত ছিল এবং হঠাৎ করেই খুব দ্রুত সেটি ভেঙে পড়ে। হয়তো নতুন বাস্তবতার সাথে মানিয়ে নিতে কিছুটা সময় লেগেছে, তার সম্পর্কে বৈরি মনোভাব এবং অস্বস্তি অবশ্যই ছিল। কিন্তু আমি মনে করি ছয় মাস পরে, এটি আসলে শেষ হওয়া উচিত এবং আমাদের এমন একটি পরিবেশ দরকার যেখানে আমরা একে অপরের সাথে কাজ করতে পারি। ছয় মাস আগের তুলনায়, অবশ্যই আমরা এখন একে অপরের সাথে আরও ভালোভাবে যোগাযোগ করতে পারি।

দ্য হিন্দু: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ওয়াশিংটনে গিয়েছিলেন। তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে দেখা করেছেন এবং পররাষ্ট্র সচিবের মতে, বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের কিছু উদ্বেগ নিয়ে আলোচনা করেছেন। আপনি কি জয়শঙ্করকে এই উদ্বেগের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছেন?

তৌহিদ হোসেন: আসলেই না। আমি জিজ্ঞাসা করিনি, কারণ এটি ভারতের ব্যাপার (তারা অন্য দেশের সাথে কী আলোচনা করবে)। আমি মনে করি না খুব বেশি উদ্বেগ থাকা উচিত। আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়া উচিত, যা ইতোমধ্যে কিছু ক্ষেত্রে ঘটছে। উদাহরণস্বরূপ, বাণিজ্যে। বাণিজ্যে স্বল্প সময়ের জন্য কিছুটা সমস্যা ছিল, কিন্তু তা আবার বেড়েছে। সুতরাং এগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে যে— দুটি দেশ, অন্তত বেসরকারি খাত, লোকেরা একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে চায় এবং এতে আমাদের স্বার্থ রয়েছে। উভয় দেশেরই একে অপরের স্বার্থ আছে এবং আমাদের সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

দ্য হিন্দু: ভারত বারবার যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তা হলো বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতা নিয়ে। আপনি কি মনে করেন যে— আপনার সরকার এই সহিংসতা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে? আর ভারত কি একমত? কারণ এটি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ইস্যুতে পরিণত হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।

তৌহিদ হোসেন: আচ্ছা, আমি খুব স্পষ্ট করে বলি— বাংলাদেশে বসবাসকারী হিন্দু বা অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ মুসলমান বা সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের মতোই সমান নাগরিক। তারা সমান অধিকারের সাথে সমান নাগরিক এবং সুরক্ষার সমান অধিকার ভোগ করেন। এবং বাংলাদেশ সরকার তাদের কাজ করছে। সরকার তাদের রক্ষায় কাজ করছে, যেমন দেশের অন্য নাগরিকদের রক্ষা করাও সরকারের কাজ। দুর্ভাগ্যবশত, ৫ আগস্টের ঠিক পরে ভারতীয় মিডিয়ায় এই বিষয়টি নিয়ে সত্যিকার অর্থেই প্রায় ব্যাখ্যাতীত উন্মাদনা তৈরি হয়েছে, সেটিও আবার বেশিরভাগই মিথ্যার ওপর ভিত্তি করে। আমি আপনাকে জাতিসংঘের রিপোর্ট ও তাদের ফলাফল দেখার জন্য বলব, যা দুই দিন আগে প্রকাশিত হয়েছে এবং সেখানে বলা হয়েছে যে— (অন্তর্বর্তী সরকার সহিংসতার সাথে জড়িত ছিল না)। তারা আমাদের অনুরোধে এসেছিল কারণ আমরা পরিস্থিতির একেবারে নিরপেক্ষ জরিপ চেয়েছিলাম।

দ্য হিন্দু: আমি কমিটির রিপোর্ট পড়েছি, জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনে পূর্ববর্তী হাসিনা সরকারের কিছু বাড়াবাড়ির কথাও বলা হয়েছে, কিন্তু তাতে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর প্রভাবের কথা বলা হয়েছে। এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আপনার সরকার কি কোনও ধরনের ব্যবস্থা নিতে পারে?

তৌহিদ হোসেন: অবশ্যই, এমনকি জাতিসংঘের প্রতিবেদনের আগেই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। এটা বাংলাদেশ সরকারের দায়িত্ব এবং সরকার সেই ব্যবস্থা নিচ্ছে। এ বিষয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কথা বলা ঠিক হবে বলে আমি মনে করি না। এটা একেবারেই অভ্যন্তরীণ সমস্যা এবং বাংলাদেশ সরকার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিচ্ছে। আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে— আমাদের উপদেষ্টা পরিষদে অন্তত চারজন সদস্য রয়েছেন যারা মানবাধিকার কর্মী এবং তারা বহু, বহু বছর ধরে এই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছেন। তারা নিজেরাই সংখ্যালঘুদের অধিকারের বিষয়টি তুলে ধরেছেন।

দ্য হিন্দু: সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিষয়ে, ভারত ঠিক কী করবে বলে আপনি আশা করছেন?

তৌহিদ হোসেন: তার (হাসিনা) বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে এবং হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করতে আমরা ভারতকে তাকে পাঠাতে বলেছি। যতক্ষণ না ভারত সরকার এটি না করছে, আমরা আশা করব যে— তারা অন্তত তার ওপর কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে যাতে তিনি উস্কানিমূলক এবং মিথ্যা বিবৃতি না দিতে পারেন যা জনগণের মধ্যে ক্ষোভ জাগিয়ে তোলে, কারণ বিষয়গুলো এখনও খুব তরতাজা। ১৫ বছর ধরে তিনি (হাসিনা) ক্ষমতায় ছিলেন এবং লোকেরা তার কর্মকাণ্ডের জন্য খুব, খুব তীব্রভাবে ক্ষুব্ধ। তাই তিনি (হাসিনা) বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করবেন না, এমনটাই তারা দেখতে চায় মানুষ।

দ্য হিন্দু: তা সত্ত্বেও শেখ হাসিনার বক্তৃতাকে কেন্দ্র করে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাংচুর করার জন্য জনতাকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে, এটাকে আপনি কীভাবে দেখছেন?

তৌহিদ হোসেন: বিক্ষুব্ধ জনতা কিছু করতে পারে, কিন্তু তাতে সরকারের সমর্থন নেই।

দ্য হিন্দু: আপনার সরকার এখন পর্যন্ত শুধু মৌখিক নোট পাঠিয়েছে, যা হাসিনার প্রত্যাবর্তনের জন্য একটি কূটনৈতিক নোট। আনুষ্ঠানিকভাবে হাসিনাকে প্রত্যর্পণের অনুরোধ জানানো হবে?

তৌহিদ হোসেন: আমাদের (বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে) একটি প্রত্যর্পণ চুক্তি আছে এবং আমরা অনেক অভিযুক্তকে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য ভারতে ফিরিয়ে দিয়েছি এবং আমি মনে করি ভারতও তাকে (হাসিনা) বাংলাদেশে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য ফিরিয়ে দিতে পারে।

দ্য হিন্দু: কিন্তু সেই প্রত্যর্পণ চুক্তির জন্য আপনাকে বিচার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। এমএলএটি (পারস্পরিক আইনি সহায়তা) এর জন্য আপনার পর্যাপ্ত ওয়ারেন্ট থাকতে হবে। বাংলাদেশ কখন সেই প্রক্রিয়া শুরু করবে বলে আশা করছে?

তৌহিদ হোসেন: ঠিক আছে, সেই প্রক্রিয়া ইতোমধ্যেই চলমান রয়েছে, কারণ মামলাগুলো এখন আদালতে রয়েছে। আমরা তাদের (তাড়াহুড়ো করে) কাজ করতে বাধ্য করতে পারি না। এবং আমরা এই বিষয়েও অবগত যে— তিনি (হাসিনা) ভারতীয় বিচার ব্যবস্থার আশ্রয় নিতে পারে। এতে সময় লাগতে পারে, কিন্তু আমরা যা চাই তা হলো— তিনি (হাসিনা) ভারতে থাকাকালীন কোনও ধরনের উস্কানিমূলক বক্তব্য দেবেন না।

দ্য হিন্দু: সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে বাংলাদেশের বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মধ্যে কয়েক দফা আলোচনা হয়েছে। জেলেদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছিলেন— তিনি বাংলাদেশের জেল থেকে মুক্তি পাওয়া জেলেদের মধ্যে কয়েকজনের সাথে কথা বলেছেন, যাদের মারধর করা হয়েছিল। আপনি কি মনে করেন যে— এটি খারাপ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ফলেই হয়েছে?

সীমান্তে বিএসএফের কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণে বিজিবির বাধা

তৌহিদ হোসেন: আমি তেমনটি মনে করি না। প্রথম সমস্যা হচ্ছে— সীমান্ত। ২০২৪ সালে — যে বছরের অর্ধেক আগের সরকারের অধীনে ছিল — ২৪ জন সীমান্তে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বিশ্বের কোথাও এটি করা হয় না। আমি মনে করি, আপনি এই বিষয়ে আমার সাথে একমত হবেন কারণ ভারতীয় পক্ষ থেকে প্রায়শই বলা হয় যে— যেহেতু অপরাধ কর্মকাণ্ড হচ্ছে, তাই এটি ঘটছে। পৃথিবীর প্রতিটি সীমান্তে অপরাধ আছে। কোথাও মানুষকে এভাবে গুলি করে মারা হয় না। যদি অপরাধ সংঘটিত হয়ে থাকে, আপনি তাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে, জেলে নিয়ে যান বা আদালতের সিদ্ধান্তে যেকোনও কিছু করেন, কিন্তু আপনি সীমান্তে তাদের কেবল হত্যা করতে পারবেন না। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে বিভিন্ন সরকারের অধীনেই সীমান্তে সেটাই হয়ে আসছে। এই ধরনের কর্মকাণ্ড অগ্রহণযোগ্য। এটি এমন একটি জিনিস যা আমি মনে করি ভারত যদি চায় তবে থামতে পারে এবং এটি বন্ধ হওয়া উচিত। আর অন্য ইস্যুটি হচ্ছে— সামুদ্রিক ইস্যু।

দ্য হিন্দু: কয়েক বছর আগে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সমুদ্রসীমা চুক্তি হয়েছে। তাহলে এখনও একে অপরের জেলেদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে…

তৌহিদ হোসেন: আমি এই বিষয়ের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলাম না, তবে যতদূর পর্যন্ত বিভিন্ন লোকের সাথে কথা বলে জেনেছি, আপনি জানেন— জেলেরা মাছকে অনুসরণ করে। এখন, প্রায়শই স্থলভাগে আপনার একটি নির্দিষ্ট সীমানা থাকে, আপনি জানেন যে এটাই সীমা। তবে সমুদ্রে, এটি এত সহজ নয়। প্রায়শই, উভয় দিক থেকে তারা প্রায়শই অন্য দেশের সামুদ্রিক অঞ্চলে প্রবেশ করে। আমাদের কিছু জেলে ভারতের হেফাজতে রয়েছে, আবার আমাদের হেফাজতে ভারতের কিছু জেলে আছে এবং আমরা উভয় দেশই পর্যায়ক্রমে তাদেরকে ছেড়ে দিই। দুর্ব্যবহার সম্পর্কে… আমরা ইতোমধ্যেই তদন্তের জন্য বলেছি এবং যদি আমরা দেখতে পাই যে— আসলেই নিরাপত্তা বাহিনীর কোনও লোক এই ঘটনায় জড়িত ছিল বা তারা যদি আইন ভঙ্গ করে থাকে, অবশ্যই আমরা তা বিবেচনা করব। কিন্তু এটা সাধারণত করা হয় না। আমি কলকাতায় চার বছরেরও বেশি সময় ধরে একজন কূটনীতিক হিসেবে ছিলাম… এবং এই ধরনের বিনিময়গুলো পরিচালনা করেছি এবং তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করা হয় না। যদি কোনও ব্যতিক্রম হয়ে থাকে, আমরা অবশ্যই তা দেখব।

দ্য হিন্দু: আদানি বিদ্যুৎ চুক্তির বিষয়ে সাম্প্রতিক কিছু প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে— বাংলাদেশ সরকার এই গ্রুপের কাছ থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ পেতে আলোচনা করছে। আপনি কি নিশ্চিত করতে পারেন যে— বাংলাদেশ সরকার বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য আদানি গ্রুপের সাথে চুক্তি অব্যাহত রাখতে চায়?

তৌহিদ হোসেন: আমি মনে করি আমরা দুটি পর্যায়ে আলোচনা করি, একটি চুক্তি স্বাক্ষরের আগে (এবং দ্বিতীয়টি) আমরা চুক্তি স্বাক্ষরের পর আলোচনা করি। আমাদের চুক্তি অনুসারে এগোতে হবে, কিন্তু যদি আমরা মনে করি যে চুক্তিটি সঠিকভাবে করা হয়নি, তাহলে আমরা সর্বদা এটি আবার খতিয়ে দেখার জন্য পারস্পরিকভাবে সম্মত হতে পারি। এবং আমার মতে, আমরা আদানি গ্রুপের সাথে এটি দেখব এবং চুক্তিটিকে আরও যুক্তিযুক্ত করার চেষ্টা করব। আমি কোনও টেকনিশিয়ান বা টেকনিক্যাল ব্যক্তি নই, তাই আমি সঠিক বিবরণে যেতে পারছি না, কিন্তু তারপরও অন্যান্য চুক্তির সাথে তুলনামূলক যে তুলনা করা হয়েছে এবং তাতে দেখা গেছে— বিদ্যুতের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেশি নেওয়া হয়েছে, মূলত চুক্তিতে বিদ্যুতের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেশি। তাই আমরা বিশ্বাস করি যে— আবার আলোচনা করা উচিত, বিশেষ করে কয়লা কেনার প্রশ্নে। যে কোনও যুক্তিবাদী ব্যক্তিই বলবেন, এই প্রকল্পের জন্য বিশ্ববাজারে সম্ভাব্য সর্বোত্তম মূল্যে কয়লা কেনা উচিত। সেটা করা হয়নি। সুতরাং এইগুলো এমন ইস্যু যেখানে আমরা সম্ভবত আদানির সাথে ভালোভাবে আলোচনা করতে পারি এবং আমরা তা করতে চাই। এই মুহূর্তে, আমরা বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে বলেছি কারণ আমাদের বিদ্যুতের প্রয়োজন এবং তাদের বিদ্যুৎ সরবরাহের ভিত্তিতে আমাদের পরিকল্পনা করা হয়েছে। তাই আমরা চাই তারা এই বিদ্যুৎ সরবরাহ করুক এবং তারপরে আমরা এর জন্য অর্থ প্রদান করব।

দ্য হিন্দু: আপনার সঙ্গে দুইবার আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দেখা হয়েছে, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূসের মধ্যে এখনও দেখা হয়নি। আপনি কি এপ্রিলে থাইল্যান্ডে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে তাদের মধ্যে বৈঠকের আশা করছেন?

তৌহিদ হোসেন: এখন পর্যন্ত দুই নেতা একই দিনে কোনও ভেন্যুতে না থাকায় তাদের দেখা করার সুযোগ হয়নি। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি, উভয় পক্ষের কাছ থেকেই অবাধে এবং খোলামেলাভাবে দেখা ও আলোচনা করার ইচ্ছা রয়েছে। এটা সহায়ক হয়। আমাদের এই অঞ্চলের সংস্কৃতিতে, যখন ‘শীর্ষ কর্তারা’ একসঙ্গে বসেন, তারা বছরের পর বছর ধরে আলোচনার জন্য আমাদের মতো লোকদের কাছে কোনও ইস্যু ছেড়ে না দিয়ে শুধুমাত্র এক কথায় একটি সমস্যা সমাধান করতে পারেন। আমি মনে করি, দুজনের মধ্যে একটি বৈঠক সেই অর্থে ঘটতে পারে। তারা এই সরকারের শুরুতে একবার টেলিফোনে কথা বলেছেন। তারা বিমসটেকের জন্য একই ভেন্যুতে থাকবেন, কারণ সমস্ত সরকার প্রধান সেখানে থাকবেন। যদি তারা সেখানে থাকেন, তাহলে তারা একে অপরের সাথে কথা বলবেন, এটাই স্বাভাবিক। কারণ এটি একটি ছোট গ্রুপ। উদাহরণস্বরূপ, সার্ক (সাউথ এশিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর রিজিওনাল কো-অপারেশন) শীর্ষ সম্মেলনে প্রতিটি রাষ্ট্র বা সরকার প্রধান সবসময় অন্য সাত রাষ্ট্র বা সরকার প্রধানের সাথে কথা বলতেন। তাই আমি মনে করি এরকম কিছু হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

দ্য হিন্দু: আপনি কি জয়শঙ্করের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন?

তৌহিদ হোসেন: আমি এইমাত্র উল্লেখ করেছি। বৈঠকের ব্যাপারে কোনো মতৈক্য হয়নি… এখনও অনেক সময় বাকি। প্রোগ্রামটি চূড়ান্ত হয়ে গেলে এবং সম্পূর্ণ হয়ে গেলে আমরা মাত্র কয়েক দিন আগে এই জিনিসগুলো ঠিক করি। দেখা যাক কি হয়।

দ্য হিন্দু: পররাষ্ট্রনীতি এবং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের বিষয়ে একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি হিসেবে, বিশেষ করে ২০০৯ সাল থেকে দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় থাকায়, আপনি কি মনে করেন ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক আবারও সেই অবস্থায় ফিরে আসতে পারে?

তৌহিদ হোসেন: আচ্ছা, কিন্তু শুধু গত ১৫ বছরের দিকে তাকান কেন? বিএনপির (বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল) সময়েও (২০০১-২০০৬) দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পেয়েছিল। আমি মনে করি না— (উভয় দেশের) সম্পর্কটি নির্দিষ্ট সরকারকেন্দ্রিক হতে হবে। ১৯৯৬-১৯৯৭ সালে আমাদের গঙ্গা পানি চুক্তি হয়েছিল। তাই আমি মনে করি, আমাদের দুই রাজধানীতে যে সরকার, যে দলই ক্ষমতায় থাকুক না কেন, আমাদের সম্পর্ককে প্রভাবিত করা উচিত নয়, কারণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে পারস্পরিক স্বার্থ এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার ওপর। এবং আমি বিশ্বাস করি, আমাদের উভয় পক্ষই বুঝতে পারে যে তাদের স্বার্থ কী এবং আমরা ভারতের সাথে খুব ভালো সম্পর্ক রাখতে পারি।

ঈদে নতুন জামা : স্বপ্ন আর ভালোবাসা জড়ানো

উজ্জ্বল হোসাইন
প্রকাশিত: শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫, ১২:২২ পূর্বাহ্ণ
ঈদে নতুন জামা : স্বপ্ন আর ভালোবাসা জড়ানো

ঈদ মানেই আনন্দ, উৎসব, মিলন এবং নতুন করে বাঁচার প্রেরণা। এই দিনে সবাই চায় নিজেকে সাজিয়ে নিতে, নতুন কাপড় পরে প্রিয়জনের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নিতে। কিন্তু এমন অনেকের মধ্যেও থাকে এমন কেউ, যার জন্য একটি নতুন জামা শুধু পোশাক নয়, বরং স্বপ্ন, গর্ব, আত্মমর্যাদা এবং একটি আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। এই প্রবন্ধে আমরা এমন এক নতুন জামার কথা বলব, যে জামার শুধু দামী কাপড় বা ডিজাইনের গর্ব নেই, বরং রয়েছে আত্মার গভীরে জমে থাকা এক মানুষের স্বপ্নের গল্প।

শহরের এক কোণায় বাস করে ছোট্ট ছেলেটি রিয়াদ। বয়স প্রায় দশ। তার বাবা একজন দিনমজুর, মা গৃহিণী। সংসারে অভাব-অনটনের মধ্যে কোনোভাবে দিন কাটে তাদের। বছরের প্রতিটি দিন কাটে সংগ্রামের মাঝে, কিন্তু ঈদ আসে স্বপ্নের আলো নিয়ে। ঈদে নতুন জামা পাবে, এই আশায় রিয়াদ এক মাস রোজা রাখে, নিজের মনকে শক্ত করে।

তবে এই জামা আসবে কি না, তা নিয়ে কোনো নিশ্চয়তা নেই। কারণ, বাবার মুখে ভাঁজ আর চিন্তার ছাপ স্পষ্ট। মা বারবার বলেন, “এবার হয়তো পুরনো জামাতেই ঈদ করতে হবে।” কিন্তু রিয়াদ বিশ্বাস করে—আল্লাহ যদি রোজা কবুল করেন, তাহলে একটা নতুন জামা হয়তো আসবেই।

এই জামার অপেক্ষা শুধু রিয়াদের নয়, এটি যেন তার মন-প্রাণের আকুতি। এই জামা তার জন্য স্বপ্নপূরণ, আত্মমর্যাদা, শ্রেষ্ঠত্বের অনুভব।

আমরা অনেক সময় বুঝি না, একটি নতুন জামা একজন শিশুর জন্য কতটা অর্থবহ হতে পারে। ধনী পরিবারের শিশুর কাছে এটি হয়তো একটি চমকপ্রদ পোশাক, কিন্তু রিয়াদের কাছে এটি স্বপ্ন পূরণের মতো। সে ভাবে, ঈদের দিন সবার মতো তাকেও যদি নতুন জামায় দেখা যায়, তাহলে সে আর অবহেলিত হবে না, তার বন্ধুরা তাকে হাসবে না। তারও মুখে হাসি ফুটবে, তারও ছবি উঠবে মোবাইল ক্যামেরায়।

এই জামা তার আত্মবিশ্বাস, যেটা সে স্কুলে পড়ার সময় খুঁজে বেড়ায়, যখন ক্লাসের অন্য ছেলেরা নতুন জামা পরে আসে আর সে পড়ে থাকে একঘেয়ে মলিন কাপড়।

এখানে জামার একটি কল্পিত স্বর ও ভাষা কল্পনা করা যাক—যেখানে জামাটি যেন নিজের মনে নিজের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করছে: “আমি কোনো বিলাসী দোকানের শেলফে ঝুলে থাকা দামি জামা নই। আমি সেই জামা, যাকে এক দরিদ্র বাবার কষ্টের টাকায় কিনে আনা হবে তার ছেলের মুখে এক চিলতে হাসি ফোটাতে।
আমি হয়তো রঙিন নই, হয়তো আমার ডিজাইনে জাঁকজমক নেই, কিন্তু আমি গর্বিত। কারণ আমি হব একটি শিশুর ঈদের স্বপ্ন পূরণের বাহক। আমি হব আত্মমর্যাদার প্রতীক, আমি হব ঈদের প্রাপ্তির প্রতিচ্ছবি।”

এই ভাবনার মধ্যেই ফুটে ওঠে জামার স্বপ্ন—সে চায়, তাকে কেউ ভালোবাসুক, পরিধান করুক, আর আনন্দ পাক।

রিয়াদের মা হয়তো নিজের জন্য কোনো কাপড় কিনবেন না, বাবা হয়তো একজোড়া চপ্পল না কিনে সেই টাকায় ছেলের জামা কিনে দেবেন। কারণ, সন্তানের হাসির চেয়ে বড় কিছু তাদের কাছে নেই। একটি নতুন জামার পেছনে লুকিয়ে থাকে একটি পরিবারের নীরব ত্যাগ, ভালোবাসা আর গোপন কান্না।

ঈদের নতুন জামা এই পরিবারগুলোর কাছে শুধু পোশাক নয়—এটা এক সম্মান, ভালোবাসা এবং আত্মতৃপ্তির চিহ্ন। অনেক সময় বাবা-মায়েরা নিজেদের প্রয়োজন বিসর্জন দিয়ে সন্তানের মুখে হাসি দেখতে চান। নতুন জামা যেন সেই আত্মত্যাগের স্বাক্ষর হয়ে উঠে।

ঈদের দিন আমরা যখন দেখি কেউ চকচকে কাপড় পরে বেরিয়েছে, আর কেউ পুরনো জামা পরে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে, তখন সামাজিক বৈষম্যের চিত্র স্পষ্ট হয়ে ওঠে। নতুন জামার গুরুত্ব সেখানে দ্বিগুণ। এটি একধরনের সামাজিক মর্যাদা।

রিয়াদ হয়তো তার বন্ধুর পাশে দাঁড়িয়ে ভাবে—আমারও যদি এমন একটা জামা থাকত! শুধু ঈদের দিনটা নয়, পুরো জীবনজুড়ে সেই হাহাকার থেকে যায়। এই এক টুকরো জামাই তার স্বপ্নকে উঁচুতে নিয়ে যেতে পারে, আর না থাকলে আত্মবিশ্বাসে ভাটা পড়ে।

দরিদ্র শিশুদের জন্য ঈদে জামার প্রাপ্তি মানে কী? সমান মর্যাদা – অন্যদের মতো তাকেও দেখা হয় একজন ‘পূর্ণ’ শিশুর মতো।  আত্মবিশ্বাস – নতুন জামা পরে সে খুশি মনে বন্ধুদের সঙ্গে মিশে যেতে পারে। পরিবারের প্রতি ভালোবাসা বৃদ্ধি – সে উপলব্ধি করে, তার মা-বাবা তাকে কত ভালোবাসে।

৪. ভবিষ্যতের স্বপ্ন – একজন শিশু জানে, সে যদি চেষ্টার মধ্যে থাকে, তার স্বপ্ন একদিন পূরণ হবেই।

ঈদের সকালে রিয়াদের ঘুম ভাঙে ভোরবেলা। মা হাসিমুখে এসে বলে—
“এই দেখ, তোমার নতুন জামা।”
রিয়াদ প্রথমে বিশ্বাস করতে পারে না। হাত বাড়িয়ে জামাটা নেয়, চোখে জল চলে আসে। “আমার?”
মা মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়, “হ্যাঁ বাবা, তোমার।”
রিয়াদ তার ছোট জামাটিকে বুকের সঙ্গে জড়িয়ে ধরে, যেন এটিই তার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।

সেই জামা তখন আর শুধু সুতা ও রঙের মিশ্রণ নয়, সেটি তখন একটি ‘স্বপ্ন’। একটি সন্তুষ্টির প্রতীক, একটি ছোট শিশুর গর্বের নিশান।

আমরা যারা সমাজের ভাগ্যবান অংশ, তাদের উচিত এই বৈষম্য দূর করতে সচেষ্ট হওয়া। প্রতিবছর ঈদের আগে আমরা অনেকেই প্রচুর জামা কিনি, কিন্তু ভাবি না পাশের দরিদ্র শিশুটার কথা। যদি আমরা একটি নতুন জামা কাউকে দিতে পারি, তাহলে তার ঈদটা হয়ে উঠতে পারে জীবনের সেরা দিন।সামাজিক সংগঠন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পরিবার—সবাই যদি চায়, তাহলে প্রত্যেক শিশুর ঈদে একটি নতুন জামা নিশ্চিত করা সম্ভব। এটি দান নয়, এটি মানুষের স্বপ্ন পূরণে সহযোগিতা।

“ঈদে একটি নতুন জামা যার স্বপ্ন” এই বাক্যটি শুধুমাত্র কোনো এক জামা বা একটি শিশুর গল্প নয়, এটি হাজারো রিয়াদের গল্প। এটি আমাদের সমাজে লুকিয়ে থাকা অসংখ্য মানুষের জীবনবোধের চিত্র। একটি নতুন জামা কেবল দেহ ঢাকার উপকরণ নয়, এটি মানুষের সম্মান, আত্মবিশ্বাস এবং ভালোবাসার প্রতীক। আমরা যদি এই একটুকরো জামার ভেতর মানুষের আবেগ, স্বপ্ন ও আত্মত্যাগ দেখতে পারি, তাহলে সমাজে সত্যিকার পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে। আসুন, এই ঈদে আমরা কেবল নিজেদের জন্য না, অন্যের মুখে হাসি ফোটানোর জন্যও একটি নতুন জামার স্বপ্ন বুনি।

লেখক পরিচিতি : উজ্জ্বল হোসাইন, সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক, চাঁদপুর।

চাঁদপুর জেলা সমবায় ইউনিয়নের সভাপতি ইকবাল আজম সম্পাদক দুলাল চন্দ্র দাস

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৫, ৯:৩৮ অপরাহ্ণ
চাঁদপুর জেলা সমবায় ইউনিয়নের সভাপতি ইকবাল আজম সম্পাদক দুলাল চন্দ্র দাস

চাঁদপুর জেলা সমবায় ইউনিয়নের নির্বাচনী বিশেষ সাধারণ সভা (১৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ২০২৫) নির্বাচিত ব্যবস্থাপনা কমিটি (২০২৫-২০২৮) ঘোষণা করা হয়েছে। সমবায় সমিতি আইন ২০০১ (সর্বশেষ সংশোধন ২০১৩) ও সমবায় সমিতি বিধিমালা ২০০৪ (সর্বশেষ সংশোধন ২০২০) অনুযায়ী নির্বাচন কমিটির সভাপতি মোঃ আলমগীর হোসেন (পরিদর্শক, জেলা সমবায় কার্যালয়, চাঁদপুর) কোন পদে একাধিক প্রার্থী না থাকায়, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছয় সদস্য বিশিষ্ট ব্যবস্থাপনা কমিটি ঘোষণা করেন। নবনির্বাচিত ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি- মোঃ ইকবাল আজম (প্রতিনিধি, দি চাঁদপুর মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিঃ), সহ-সভাপতি- মোঃ আফজাল হোসেন খান (প্রতিনিধি, মিলেনিয়াম বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ), সম্পাদক- দুলাল চন্দ্র দাস (প্রতিনিধি, বাগড়া শিক্ষিত বেকার সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিঃ), সদস্য- মোঃ আক্কাস ফরাজী (প্রতিনিধি, রূপসী পল্লী বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ), সদস্য- খন্দকার ফখরুল আলম (প্রতিনিধি, আশার আলো মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিঃ), সদস্য- মোঃ খোরশেদ আলম (প্রতিনিধি, খাজুরিয়া বাজার সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিঃ)।
জেলার বিভিন্ন সমবায় সমিতির প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে ও নির্বাচন কমিটির সভাপতি মোঃ আলমগীর হোসেন এর সভাপতিত্বে নির্বাচনী বিশেষ সাধারণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুরের কৃতি সন্তান, জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত সমবায়ী ও বাংলাদেশ জাতীয় সমবায় ইউনিয়ন এর সাধারণ সম্পাদক মো. জসিম উদ্দিন শেখ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন জেলা সমবায় ইউনিয়ন, জেলার সমবায় সমিতি ও সমবায়ীদের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করার দায়িত্ব থাকলেও চাঁদপুর জেলা সমবায় ইউনিয়নে দীর্ঘদিন নির্বাচিত কমিটি ছিল না, যার কারণে এটি অকার্যকর হয়ে পড়ে। আমরা বাংলাদেশ জাতীয় সমবায় ইউনিয়ন থেকে চাঁদপুর জেলা সমবায় ইউনিয়নকে কার্যকর করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করি। সমবায় বিভাগ এতে অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থাপনা কমিটির গঠন করে, যার ফলশ্রুতিতে আজকে আমরা একটি নির্বাচিত ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করতে পেরেছি। এজন্য তিনি সমবায় বিভাগের সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান পাশাপাশি নবনির্বাচিত কমিটিকে অভিনন্দন জানান। সভায় তিনি বাংলাদেশ জাতীয় সমবায় ইউনিয়নের বিভিন্ন উদ্যোগ ও পরিকল্পনা সকলের সামনে উপস্থাপন করেন। সকলের সহযোগিতায় তা বাস্তবায়নের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। সভায় অন্যন্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাংকের সভাপতি মুরাদ হোসেন খান, জুন হাউজিং কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিঃ এর প্রতিনিধি এ ওয়াই এম জাকারিয়া, ওয়ারলেস বাজার বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ এর প্রতিনিধি মোঃ জিয়াউদ্দিন, ইসলামীয়া সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিঃ এর প্রতিনিধি নাজমুল হুদা প্রমূখ।
উল্লেখ্য প্রতি ৩ বছর পর পর নির্বাচনের মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনের বিধান থাকলেও ২০১২ সালের পর, দীর্ঘ ১৩ বছর পর এই ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠিত হলো।

আসছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫, ১০:৫১ পূর্বাহ্ণ
আসছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট

২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট দেওয়ার পরিকল্পনা করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আগামী ২ জুন নতুন অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

সম্প্রতি কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিল ও বাজেট ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

জানা গেছে, সংসদ না থাকায় এবার সংসদে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে না। অর্থ উপদেষ্টা টেলিভিশনে নতুন অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করবেন। ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হওয়ার আগেই বাজেট দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ কারণে ২ জুন বাজেট ঘোষণার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সাধারণত আগের অর্থবছরগুলোতে বৃহস্পতিবার বাজেট দেওয়া হতো, এবার সোমবার ঘোষণা করা হবে। বাজেট ঘোষণার পর আগের রীতি অনুযায়ী অর্থ উপদেষ্টা বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন।

সূত্রটি জানিয়েছে, সাধারণত প্রতি অর্থবছরে বাজেটের আকার আগের অর্থবছরের তুলনায় বড় রাখা হয়। তবে এবার বাজেট ঘাটতি কমিয়ে বাজেট ছোট কারার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। নতুন অর্থবছরের বাজেটে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে।

বাজেটের আকার কমানো হলেও সমাজে বৈষম্য কমানোর পাশাপাশি মূল্যস্ফীতির চাপে নিম্ন আয়ের মানুষদের স্বস্তি দিতে সামাজিকীকরণ সুরক্ষা কর্মসূচিতে উপকারভোগী ও কিছু ক্ষেত্রে ভাতার পরিমাণ বাড়ানোর উদ্যোগ থাকছে নতুন অর্থবছরের বাজেটে। একই সঙ্গে কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।

আগামী অর্থবছরের জন্য সরকার জিডিপির প্রবৃদ্ধি সাড়ে ৫ শতাংশ ধরতে পারে। চলতি অর্থবছরে যা ছিল ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আগামী অর্থবছর শেষে মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনতে চায় সরকার। চলতি অর্থবছরেও একই লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। যদিও গত মার্চ মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ।