খুঁজুন
                               
রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫, ১২ শ্রাবণ, ১৪৩২

আগামী নির্বাচনে সাফল্যের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ২:০৬ অপরাহ্ণ
আগামী নির্বাচনে সাফল্যের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্য থাকলেও জনগণের পাশে আছি। আমার অবর্তমানে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, সিনিয়র নেতৃবৃন্দ আপনাদের সকলকে সঙ্গে নিয়ে নিরন্তর কাজ করে দলকে সুসংহত করেছেন।  দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি আপনারা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে আরো উজ্জীবিত হয়ে আগামী নির্বাচনে সাফল্যের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন। এমন কোনো কাজ করবেন না যাতে আমাদের এতদিনকার সংগ্রাম, আত্মত্যাগ বিফলে যায়। আমাদের সব সময় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সেই উক্তি মনে রাখা দরকার—  ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়। বিএনপির বর্ধিত সভায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি। জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় এ সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন নিহত সব শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন খালেদা জিয়া।

খালেদা জিয়া বলেন, দীর্ঘ ৬ বছর পর আপনার আবারও ফ্যাসিস্ট মুক্ত বাংলাদেশে একত্রিত হতে পেরেছেন। আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া আদায় করছি। দীর্ঘ ফ্যাসিবাদের আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন এবং সম্প্রতি জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে শাসকদের নির্মম দমন-নীপড়নের কারণে গণহত্যায় শহীদ হয়েছেন তাদের প্রতি আমি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। আহতদের প্রতি জানাচ্ছি আন্তরিক সমবেদনা।

চিকিৎসার কারণে যুক্তরাজ্যে থাকলে আমি সব সময় আপনাদের সঙ্গে আছি উল্লেখ করে খালেদ জিয়া বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর যারা গণতন্ত্রের জন্য ও আমার মুক্তির জন্য আমাদের অসংখ্য সহকর্মী প্রাণ দিয়েছেন, জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এবং প্রায় সোয়া লক্ষ্য মিথ্যা মামলায় জর্জরিত হয়ে এখনও আদালতের বারান্দায় ন্যায় বিচারের জন্য ঘুরে বেড়াচ্ছেন, আপনাদের এ ত্যাগ শুধু দল নয়, জাতি চিরকাল স্মরণে রাখবে।

দেশ আজ এক সংকটময় সময় অতিক্রম করছে বলে উল্লেখ করে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনাদের এবং ছাত্রদের সমন্বিত আন্দোলনের ফলে ফ্যাসিস্ট শাসকেরা বিদায় নিয়েছে। একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। তাদের কাছে জনগণের প্রত্যাশা রাষ্ট্র মেরামতের ন্যূনতম সংস্কার দ্রুত সম্পন্ন করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার জন্য সকলের কাছে
গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা। খালেদা জিয়ার আগে বক্তব্য রাখেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

খালেদা জিয়া আরও বলেন, বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষ, বিশেষ করে তরুণ সমাজ আজ এক ইতিবাচক গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সংকীর্ণতা ভুলে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে আমাদের কাজ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, এখনও ফ্যাসিস্টদের দোসররা ও বাংলাদেশের শত্রুরা গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্জনকে নস্যাৎ করার জন্য গভীর চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। ইস্পাত-কঠিন ঐক্যের মাধ্যমে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এ চক্রান্তকে ব্যর্থ করে দিতে হবে। গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য আমাদের সকলকে এক যোগে কাজ করতে হবে।

খালেদা জিয়া বলেন, আমি যুক্তরাজ্য থেকে অসুস্থ অবস্থায় আপনাদের আহ্বান জানাতে চাই— আসুন, জনগণকে সম্পৃক্ত করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে পূর্বের ন্যায় আন্দোলন, সংগ্রাম ও রাষ্ট্র পরিচালনায় নেতৃত্ব প্রদানে আরও ঐক্যবদ্ধ ও সুসংহতভাবে গড়ে তুলি। দেশবাসীর উদ্দেশ্য খালেদা জিয়া বলেন, আসুন প্রতিহিংসা, প্রতিশোধ নয়, পারস্পরিক ভালোবাসা ও ভ্রাতৃত্বের মাধ্যমে আমরা সকলে মিলে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থেই একটি বাসযোগ্য, উন্নত ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করি।

কালি ও কলম পুরস্কার পেলেন মুহাম্মদ ফরিদ হাসানসহ পাঁচ তরুণ লেখক

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫, ৮:৫৩ পূর্বাহ্ণ
কালি ও কলম পুরস্কার পেলেন মুহাম্মদ ফরিদ হাসানসহ পাঁচ তরুণ লেখক

দেশের নবীন কবি ও লেখকদের সাহিত্যচর্চাকে অনুপ্রাণিত ও গতিশীল করার লক্ষ্যে মাসিক সাহিত্যপত্র কালি ও কলম ২০০৮ সাল থেকে প্রবর্তন করে কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার। সেই স্রোতধারায় শনিবার প্রদান করা হলো সিটি ব্যাংক নিবেদিত ২০২৪ সালের কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার। কবিতা, কথাসাহিত্য, প্রবন্ধ ও গবেষণা, মুক্তিযুদ্ধ ও বিপ্লব এবং শিশু-কিশোর সাহিত্য অবদানের জন্যে পাঁচ তরুণ কথাশিল্পী পেয়েছেন এই পুরস্কার। এরমধ্যে চাঁদপুরের লেখক মুহাম্মদ ফরিদ হাসান প্রবন্ধ ও গবেষণা শাখায় ‘শতবর্ষে চা শ্রমিক আন্দোলন : ডেডলাইন ২০ মে ১৯২১’ গ্রন্থের জন্যে পুরস্কার পেয়েছেন।
‘সতীতালয়’ কাব্যগ্রন্থের কবিতা শাখায় পুরস্কার জয় করেছেন অস্ট্রিক ঋষি। ‘নির্বাচিত দেবদূত’ গ্রন্থের জন্য কথাসাহিত্যে পুরস্কার পেয়েছেন সাজিদ উল হক আবির। মুক্তিযুদ্ধ ও বিপ্লব শাখায় ‘একাত্তরে অবরুদ্ধ দিনের দুঃসাহস : সাগাই ফোর্ট এস্কেপ’ গ্রন্থের জন্যে স্বরলিপি এবং শিশু সাহিত্যে তিলকুমারের যাত্রা গ্রন্থের জন্যে পুরস্কার পেয়েছেন নিয়াজ মাহমুদ।
ধানমন্ডির বেঙ্গল শিল্পালয়ে এই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কালি ও কলমের সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি এমেরিটাস অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও প্রাবন্ধিক এমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাসরুর আরেফিন এবং কালি ও কলমের প্রকাশক আবুল খায়ের। পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করে গানের দল ও কৃষ্ণকলি।
প্রসঙ্গত, কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার তরুণদের জন্যে প্রবর্তিত সর্বোচ্চ সম্মানজনক পুরস্কার।পুরস্কারটির অর্থমূল্য দুই লাখ টাকা। এ বছরের জানুয়ারি মাসে পুরস্কারের জন্যে বই আহ্বান করা হয়। কবিতা, কথাসাহিত্য, প্রবন্ধ ও গবেষণা, মুক্তিযুদ্ধ ও বিপ্লব এবং শিশু-কিশোর সাহিত্য এই পাঁচটি বিষয়ে বই জমা নেয়া হয়েছে। বই জমা দেওয়ার পর বিজ্ঞ বিচারকমণ্ডলীর পর্যবেক্ষণ-পর্যালোচনার ভিত্তিতে শ্রেষ্ঠ গ্রন্থসমূহ নির্বাচন করা হয়।

টিএইচএম জাহাঙ্গীর গণফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও গণমাধ্যম বিষয়ক সম্পাদক মনোনিত

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫, ৮:৪৬ পূর্বাহ্ণ
টিএইচএম জাহাঙ্গীর গণফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও গণমাধ্যম বিষয়ক সম্পাদক মনোনিত

সিনিয়র সাংবাদিক ও যুব গণফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য টি এইচ এম জাহাঙ্গীর গণফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও গণমাধ্যম বিষয়ক সম্পাদক মনোনিত হয়েছেন। অদ্য ২৬ জুলাই ২০২৫ শনিবার সকালে তোপখানাস্হ শিশু কল্যাণ পরিষদের মিলনায়তনে অনুষ্টিত গণফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। গণফোরামের সভাপতি মন্ডলির সিনিয়র সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম আলতাফ আহমদ এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ডা: মিজানুর রহমান এর পরিচালনায় অনুষ্টিত সভায় কেন্দ্রীয় কমিটির শুন্য এই পদে সর্বসম্মতিক্রমে এ মনোনয়ন প্রদান করা হয়। এসময় গণফোরামের সভাপতি মোস্তফা মোহসীন মন্টুর মৃত্যুতে শুন্য পদে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি পদে মনোনিত হন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সিনিয়র আইনজীবী এড.সুব্রত চৌধুরী।
মহান মুক্তিযোদ্ধের চেতনায় উজ্জিবিত, অসাম্প্রদায়িক ও বৈষম্যশীন সমাজ ব্যবস্হা প্রতিষ্ঠার মানবিক কর্মী টি এইচ এম জাহাঙ্গীর বাংলাদেশ রিপোর্টার্স কাউন্সিলের সভাপতি, চ্যানেল এস এর জয়েন্ট নিউজ এডিটর ও দৈনিক নতুন আশা পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনরত। এর আগে তিনি দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার এর নির্বাহী সম্পাদক ছিলেন। এছাড়াও তিনি সিটিজেন রিসার্চ কমিউনিকেশনের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ স্টাডি ট্রাস্টের মহাসচিব, সিলেট রত্ন ফাউন্ডেশন ও স্পীকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী স্মৃতি পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা,জালালাবাদ এসোসিয়েশন, ঢাকার কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য,  স্বাস্হ্য-শিক্ষা অধিকার আন্দোলনের সভাপতি, সিলেট বিভাগ উন্নয়ন পরিষদ, কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ও জালালাবাদ জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দেশ ও জনগণের কল্যাণে গুরুত্বপুর্ণ ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছেন।
টি এইচ এম জাহাঙ্গীর ১৯৭৬ সালের ২০ জুলাই সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলায়  জন্মগ্রহণ করেন। হাইস্কুল জীবন থেকেই তিনি ছাত্র রাজনীতির পাশাপাশি সাংবাদিকতা পেশায় সক্রিয় হন। ১৯৯০ সালে টি এইচ এম জাহাঙ্গীর সিলেট থেকে প্রকাশিত দৈনিক আজকের সিলেট পত্রিকার  দক্ষিণ ছাতক প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ পান। পরবর্তীতে সিলেট মদনমোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে পড়াকালিন সময়ে দৈনিক মানচিত্র, দৈনিক যুগভেরী পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং সিলেট বিভাগের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, অবহেলিত মুক্তিযোদ্ধাদের অসহায় জীবন- যাপন ও মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাঁথা  নিয়ে গবেষণা ও সাক্ষাতকার নিয়ে উল্লেখিত পত্রিকাগুলোতে নিয়মিত নিবন্ধন লিখেন। তৎকালীন সময়ে সিলেটের সাংবাদিকতা, সাহিত্য,সংস্কৃতি, ইতিহাস চর্চা সংগঠক হিসেবে টি এইচ এম জাহাঙ্গীর ছিলেন ব্যাপক পরিচিত। তিনি চেতনায়-৭১ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক, কচিকাঁচার মেলা, উদিচী, যুব রেডক্রস, লিও ক্লাব, সিলেট যুব পরিষদ, মুক্তিযোদ্ধ চর্চা কেন্দ্র, ভোরের কাগজ পাঠক ফোরাম, ছড়া মঞ্চে ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ও পরবর্তীতে বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের সক্রিয় সংগঠক ছিলেন। ১৯৯৪ সালের ডিসেম্বরে “রক্তাক্ত স্বাধীনতা” ও ১৯৯৮ সালের মার্চে “মুক্তিযোদ্ধার শেষ কথা” নামে তাঁর প্রকাশিত গ্রন্হ দুটি পাঠক ও সুধিমহলে ব্যাপক প্রসংশিত হয়।
২০০২ সালে তিনি ঢাকায় কর্মজীবন শুরু করেন সাংবাদিকতার পাশাপাশি সামাজিক সংগঠনে। ঢাকায় বসবাসকারী সিলেট বিভাগবাসীর ঐক্য, যোগাযোগ ও সম্প্রীিতর লক্ষে ২০০৪ সালে প্রকাশ করেন জালালাবাদ ডাইরেক্টরী, সিলেট বিভাগের গুণীজনদের জীবনী নিয়ে ২০০৫ সালে প্রকাশ করেন রত্নগর্ভা সিলেট ও একনজরে সিলেট বিভাগের গুণীজন গ্রন্হ। বই দুটি প্রকাশিত হলে তিনি সর্বমহলে ব্যাপক পরিচিতি ও প্রসংশিত হন। টিএইচএম জাহাঙ্গীর সিলেট রত্ন ফাউন্ডেন প্রতিষ্ঠা করে ঢাকায় সিলেট বিভাগের জীবীত গুণীজনদের সিলেট রত্ন এ্যাওয়ার্ড, সম্মাননা, সংর্বধনা, রত্নগর্ভা মা এ্যাওয়ার্ড ও বিষয় ভিত্তিক আলোচনা আয়োজন করে গুণীজন মহলে ব্যাপক প্রশংসিত হন এবং তিনি আনুষ্ঠানিক ভাবে সিলেটরত্ন উপাধি গ্রহণ করেন।তার লেখা ও সম্পাদিত গ্রন্হের সংখ্যা ১৯ টি।তিনি লায়ন্স ইন্টারন্যাশনাল ক্লাব, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, বাংলাদেশ রাইফেলস ক্লাব, এশিয়া সোসাইটি, বাংলাদেশ লেখক ফোরাম, কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশ- আমেরিকা সোসাইটির আজীবন সদস্য।
উল্লেখ্য যে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন কমিটির চেয়ারম্যান ও স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পররাষ্ট্র মন্রী ড.কামাল হোসেন ১৯৯২ সালের ২৯ আগষ্ট মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ, আইনের সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও ভোটাধিকার নিশ্চিত করণের প্রয়োজনে গণফোরাম প্রতিষ্ঠা করেন।

বাংলাদেশের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ যুক্তরাষ্ট্রের

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ২৬ জুলাই, ২০২৫, ১:০৮ অপরাহ্ণ
বাংলাদেশের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ যুক্তরাষ্ট্রের

বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইউনাইটেড স্টেটস কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম’ (ইউএসসিআইআরএফ) নামের একটি ফেডারেল সংস্থা। জুলাই মাসে নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক রিপোর্টে বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তারা। চলতি বছরের মে মাসে ঢাকায় সংস্থাটির সফরের ভিত্তিতে রিপোর্টটি তৈরি করা হয়। তখন তারা সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে। পুরো রিপোর্টটি লিখেছেন সীমা হাসান, যিনি ইউএসসিআইআরএফ-এর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক বিশ্লেষক।
রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে দেশে রাজনৈতিক পরিবর্তন ঘটে এবং আগস্টে সেনাবাহিনীর সমর্থনে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেন। যদিও নতুন সরকার বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংস্কার প্রস্তাব করেছে, তারপরও দেশে ধর্মীয় সহনশীলতা এবং সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা এখনো অনিশ্চিত ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
রিপোর্টে বলা হয়, ২০২৪ সালের ৫ থেকে ৮ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগ ও সরকার পতনের সময় দেশে কার্যকর কোনো প্রশাসন না থাকায় ভয়াবহ সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে। এ সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর একাধিক হামলার খবর পাওয়া যায়, যেগুলো মূলত আওয়ামী লীগের সমর্থক বা সদস্য ভেবে প্রতিশোধমূলকভাবে চালানো হয়।
পুলিশের একটি রিপোর্টের উদ্ধৃতি দিয়ে ইউএসসিআইআরএফ জানায়, ৫ থেকে ২০ আগস্টের মধ্যে মোট ১,৭৬৯টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ১,২৩৪টি রাজনৈতিক, ২০টি সাম্প্রদায়িক ও ১৬১টি ভুয়া অভিযোগের ভিত্তিতে সংঘটিত হয়। এই সময়ে অনেক মুসলিম শিক্ষার্থী ও নাগরিক সংখ্যালঘু মালিকানাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয় পাহারা দিয়ে সংহতি প্রকাশ করেন।
রিপোর্টে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার সংবিধান সংস্কারের জন্য একটি কমিশন গঠন করেছে, যার সুপারিশ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। কমিশন সংবিধানের প্রস্তাবনা থেকে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ শব্দটি বাদ দিয়ে ‘বহুসংস্কৃতিবাদ’ বা ‘বহুত্ববাদ’ শব্দ ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছে। এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি। দলটি প্রস্তাবিত শব্দের পরিবর্তে ‘আল্লাহর ওপর অবিচল আস্থা’ শব্দবন্ধ অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছে। অন্যদিকে ইসলামভিত্তিক রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামী ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের গড়া জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আংশিক সমর্থন জানিয়ে ‘বহুত্ববাদ’-এর পরিবর্তে বাংলা বিকল্প ‘বহুসংস্কৃতিবাদ’ ব্যবহারের পক্ষে মত দিয়েছে।
২০২৪ সালের আগস্টে নারী সংস্কার কমিশন গঠনের পর চলতি বছরের মে মাসে কমিশনটি ৪৩৩টি সুপারিশ দেয়। এর মধ্যে একটি হলো ধর্মনিরপেক্ষ নাগরিক আইন প্রণয়নের প্রস্তাব, যা ধর্মভিত্তিক পারিবারিক আইনকে সম্পূরক করবে। এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ করেছে ইসলামপন্থি সংগঠন হেফাজতে ইসলাম। তারা কমিশনকে ‘ইসলামবিরোধী’ আখ্যা দেয় এবং কমিশনের সদস্যদের নিয়ে অশালীন মন্তব্য করে। নারীদের উদ্দেশ করে কটূক্তি করার অভিযোগে ৬ নারী হেফাজতের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ দেন। পরে সংগঠনটি ক্ষমা চায়। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ফেব্রুয়ারিতে একটি নারী ফুটবল ম্যাচ বাতিল করতে বাধ্য করে এবং নাদিরা ইয়াসমিন নামের এক নারী অধ্যাপককে হুমকির মুখে কলেজ বদল করতে হয়।
যুক্তরাষ্ট্র সরকার পরিচালিত এই সংস্থার রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশে এখনো ব্লাসফেমি সংক্রান্ত ধারা (দণ্ডবিধি ১৯৫এ) বলবৎ রয়েছে, যেখানে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করাকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। ২০২৩ সালের সাইবার সিকিউরিটি আইন অনুযায়ী, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে এমন ডিজিটাল কনটেন্ট প্রকাশ করলে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। এসব বিষয় নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউএসসিআইআরএফ।
সংস্থাটির মতে, বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং ধর্মীয় সহনশীলতার ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর উদ্বেগ রয়েছে। সংবিধান সংস্কারে সংখ্যালঘুদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত না হলে, এই প্রক্রিয়া দীর্ঘমেয়াদে বৈষম্য আরও গভীর করতে পারে। ইউএসসিআইআরএফ-এর মতে, বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহনশীলতা রক্ষায় একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন। সংবিধান সংস্কারের এই পর্যায়ে রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও সামাজিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই দীর্ঘস্থায়ী শান্তির মূল চাবিকাঠি হতে পারে।