খুঁজুন
                               
বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০২৫, ৯ মাঘ, ১৪৩১

মানবতা : সঙ্কটময় সময়ে সম্প্রীতিই একমাত্র পথ

উজ্জ্বল হোসাইন
প্রকাশিত: রবিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২৫, ১১:৪৩ অপরাহ্ণ
মানবতা : সঙ্কটময় সময়ে সম্প্রীতিই একমাত্র পথ

মানবতা একটি সর্বজনীন অনুভূতি, যা মানুষকে একে অপরের প্রতি ভালোবাসা, সহানুভূতি, এবং সহমর্মিতা দেখাতে উদ্বুদ্ধ করে। বর্তমান সময়ে মানবতার প্রয়োজনীয়তা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। প্রযুক্তি, আধুনিকতা, এবং ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণে মানুষ তার মানবিক গুণাবলি থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। তাই, সমাজ ও বিশ্বের কল্যাণে মানবতার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।

মানবতা এবং এর তাৎপর্য : মানবতা হলো একে অপরের পাশে দাঁড়ানোর শক্তি। এটি কোনো ধর্ম, বর্ণ বা জাতির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি সর্বজনীন। যখন একজন ব্যক্তি অন্যের কল্যাণে কাজ করে, তখন তিনি মানবতাকে এগিয়ে নিয়ে যান। এটি কেবল সাহায্য নয়, বরং একটি মনের অবস্থা যেখানে মানুষ অন্যদের প্রতি দয়া, উদারতা এবং সেবার মনোভাব দেখায়। মানবতার সেবা শুধু অন্যের উপকারের জন্য নয়, নিজের আত্মার শান্তি এবং সমাজের সামগ্রিক উন্নতির জন্য অপরিহার্য। এর মধ্যে রয়েছে : সমাজে সমতা প্রতিষ্ঠা-মানবতার সেবার মাধ্যমে ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে ব্যবধান কমানো যায়। সম্প্রীতি বজায় রাখা-একে অপরের সাহায্যে সমাজে শান্তি এবং সম্প্রীতি বজায় থাকে। মর্যাদা রক্ষা-প্রত্যেক মানুষের জীবনের গুরুত্ব উপলব্ধি করা এবং তাদের মর্যাদাকে সম্মান জানানো মানবতার অংশ। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবা প্রদান-শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত মানুষদের পাশে দাঁড়ানো মানবতাবাদী দায়িত্ব।

মানবতার সেবার ক্ষেত্রে প্রধান চ্যালেঞ্জ : মানবতার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করার পথে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ রয়েছে। নিজেদের স্বার্থ ছাড়া অন্যদের সাহায্য করার ইচ্ছা হারিয়ে ফেলেছেন। বৈষম্য এবং দারিদ্র্যের কারণে মানুষ একে অপরের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করে। সমাজে সচেতনতার অভাব অনেক সমস্যার মূল কারণ। ধর্ম, জাতি, এবং ভাষার ভিত্তিতে বিভাজন মানবতার সেবার পথে একটি বড় বাধা।

কীভাবে মানবতার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করা যায় : মানবতার সেবায় নিজেকে নিবেদিত করার জন্য প্রত্যেক ব্যক্তির সচেতন প্রচেষ্টা প্রয়োজন। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সাথে যুক্ত হয়ে সমাজের উন্নয়নে কাজ করা। অসহায় মানুষের জন্য খাদ্য, বস্ত্র, এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। অশিক্ষিত জনগণের মাঝে শিক্ষা ছড়িয়ে দেওয়া মানবতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ। দরিদ্র শিশুদের বিনামূল্যে শিক্ষা প্রদানের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। পরিবেশের সুরক্ষা মানবতারই একটি অংশ। বৃক্ষরোপণ, পুনর্ব্যবহারযোগ্য উপকরণের ব্যবহার, এবং পরিবেশবান্ধব কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করে মানবতা রক্ষা করা। থেকে বঞ্চিত মানুষদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। রক্তদান, অঙ্গদান এবং স্বাস্থ্য সচেতনতা কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া।অসহায় ও দরিদ্র মানুষের জন্য খাদ্য ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা। তাদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হলে তারা স্বাবলম্বী হতে পারবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্য যেকোনো বিপর্যয়ের সময়ে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানো। যেমন : বন্যা, ভূমিকম্প, কিংবা মহামারীর সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া। এ ক্ষেত্রে রোটারী, লায়ন, রেড ক্রিসেন্ট, ইনার হুইলসহ এ জাতীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে কাজগুলো করা।

মানবতার সেবা এবং ধর্ম : প্রত্যেক ধর্ম মানবতার সেবার উপর গুরুত্বারোপ করে। ইসলাম বলে, মানবতার সেবা করা মহান কাজ। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা একে অপরের প্রতি দয়া প্রদর্শন করো। হিন্দু ধর্মে মানবসেবা পরম ধর্ম হিসেবে বিবেচিত। খ্রিস্টধর্ম বলে, তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মতো ভালোবাসো। বৌদ্ধধর্মে সহমর্মিতা এবং দয়াকে সর্বোচ্চ মূল্য দেওয়া হয়।

উদাহরণস্বরূপ মহান ব্যক্তিত্ব ; ইতিহাসে বহু ব্যক্তিত্ব মানবতার সেবায় নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। মাদার তেরেসা-তিনি তার পুরো জীবন দরিদ্র ও অসহায়দের সেবায় কাটিয়েছেন। নেলসন ম্যান্ডেলা, তিনি বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন এবং মানুষের অধিকার রক্ষায় কাজ করেছেন। বেগম রোকেয়া, নারীদের শিক্ষা এবং অধিকারের জন্য আজীবন সংগ্রাম করেছেন। আব্রাহাম লিংকন, দাসত্ব প্রথার অবসান ঘটিয়ে মানবতার সেবা করেছ।

মানবতার সেবা এবং আধুনিক প্রজন্ম : বর্তমান প্রজন্মের কাছে মানবতার সেবা করার অনেক সুযোগ রয়েছে। প্রযুক্তি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মাধ্যমে তারা দ্রুত সমাজের প্রয়োজনীয়তা চিহ্নিত করতে পারে। তরুণদের উচিত তাদের প্রতিভা এবং শক্তি মানবতার কল্যাণে ব্যবহার করা। এসো মানবতার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করি এই আহ্বান কেবল একটি বাক্য নয়; এটি একটি দায়িত্ব, একটি নৈতিক আদর্শ। মানবতার সেবা আমাদের সমাজকে সুন্দর, শান্তিপূর্ণ এবং উন্নত করতে সাহায্য করে। আমরা যদি একে অপরের পাশে দাঁড়াই, তবে একটি মানবিক পৃথিবী গড়া সম্ভব। তাই আসুন, ব্যক্তিগত স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে মানবতার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করি এবং সমাজে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে কাজ করি।মানবতার সেবা কেবল দয়া প্রদর্শন নয়। এটি সমাজের ভিত্তি গড়ে তোলার একটি প্রক্রিয়া। এটি ব্যক্তি থেকে শুরু করে পুরো জাতির উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পারে। একজন মানুষ যখন মানবতার কল্যাণে কাজ করেন, তখন তার প্রভাব সরাসরি অথবা পরোক্ষভাবে অনেকের জীবনে পড়ে। মানবতার সেবা কেবল আর্থিক সাহায্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; এটি সময়, জ্ঞান, এবং সহানুভূতি প্রদানের মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

দৈনন্দিন জীবনে মানবতার সেবা : মানবতার সেবা বড় কিছু করতে হবে এমন নয়; এটি দৈনন্দিন ছোট ছোট কাজের মাধ্যমেও করা সম্ভব। অন্যকে সাহায্য করা : রাস্তায় অসহায় কারো পাশে দাঁড়ানো বা অসুস্থ ব্যক্তিকে হাসপাতালে পৌঁছাতে সাহায্য করা। সময় দান : বৃদ্ধাশ্রম বা এতিমখানায় সময় কাটানো। সচেতনতা বৃদ্ধি : জনগণের মধ্যে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, এবং পরিবেশ সংক্রান্ত সচেতনতা তৈরি করা। পরিচ্ছন্নতা : সমাজের পরিবেশ সুন্দর ও স্বাস্থ্যকর রাখতে পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করা।

মানবতার সেবায় প্রযুক্তির ব্যবহার : প্রযুক্তি এবং ইন্টারনেট মানবতার সেবায় নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে। উদাহরণস্বরূপ : অনলাইন দান প্ল্যাটফর্ম : বিভিন্ন দাতব্য সংস্থায় অনলাইনের মাধ্যমে অর্থ প্রদান করা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম : দারিদ্র্যপীড়িত মানুষদের অবস্থা তুলে ধরে সমাজের সচেতনতা বাড়ানো। মানবিক উদ্যোগের প্রচার : অ্যাপ এবং ওয়েবসাইটের মাধ্যমে মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা। ডিজিটাল শিক্ষা : অনলাইন শিক্ষা প্রদান করে শিক্ষার সুযোগ বিস্তৃত করা।

মানবতার সেবা এবং নারীর ভূমিকা : নারীরা সমাজের অর্ধেক। তারা মানবতার সেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ : শিক্ষা ক্ষেত্রে নারী শিক্ষকরা সমাজে শিক্ষার আলো ছড়াতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। স্বাস্থ্যসেবায় নারী ডাক্তার, নার্স, এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা মানুষের জীবন বাঁচাতে দিন-রাত কাজ করেন। পরিবারে মানবিক মূল্যবোধ, একজন মা সন্তানের মধ্যে মানবিক গুণাবলী গড়ে তোলার প্রধান ভূমিকা পালন করেন।

সংকটময় সময়ে মানবতার সেবা : সংকটকালীন সময়ে মানবতার সেবা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। কোভিড-১৯ এর সময় ডাক্তার, নার্স, এবং স্বেচ্ছাসেবীরা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। ভূমিকম্প, কিংবা ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের খাদ্য, আশ্রয়, এবং চিকিৎসা প্রদান করা। যুদ্ধ ও শরণার্থী সঙ্কট, যুদ্ধবিধ্বস্ত মানুষদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।

সমাজের উন্নয়নে মানবতার সেবার অবদান : মানবতার সেবার মাধ্যমে সমাজে দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন সম্ভব। দারিদ্র্য দূরীকরণ-দারিদ্র্যের চক্র থেকে মানুষকে বের করে এনে তাদের স্বাবলম্বী করা। শিক্ষা ও কর্মসংস্থান-দরিদ্রদের শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা। সমাজের অগ্রগতি-মানবতার সেবা সমাজের মধ্যে পারস্পরিক সম্মান এবং সমঝোতা বৃদ্ধি করে।

মানবতার সেবার নৈতিক দিক : মানবতার সেবা কোনো প্রতিদান পাওয়ার প্রত্যাশায় করা হয় না। এটি আত্মিক এবং নৈতিক দায়িত্ব।অন্যের কল্যাণে কাজ করার মাধ্যমে যে মানসিক তৃপ্তি পাওয়া যায়, তা অন্য কিছুতে পাওয়া সম্ভব নয়। সমাজে বসবাসকারী প্রতিটি মানুষের উচিত নিজের ভূমিকা পালন করা।: মানবতার সেবা আমাদের নৈতিক চরিত্রকে উন্নত করে এবং সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতার শিক্ষা দেয়।

শিক্ষার্থীদের মানবতার সেবায় অংশগ্রহণ : শিক্ষার্থীরা সমাজের ভবিষ্যৎ। তারা মানবতার সেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সমাজসেবা প্রকল্প বা ক্লাবের সাথে যুক্ত হয়ে কাজ করা। স্কুল, কলেজে পরিবেশ রক্ষায় ভূমিকা রাখা। স্থানীয় বা জাতীয় পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাথে কাজ করা।

দৃষ্টান্তমূলক উদ্যোগ : বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থা মানবতার সেবায় অসাধারণ অবদান রেখেছেন। রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট : দুর্যোগকালীন সময়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। রোটারী ও রোটার‌্যাক্ট-বিভিন্ন সময়ে দেশে প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও মহামারিসহ সঙ্কটকালীন সময়ে রোটারী ও রোটার‌্যাক্ট মানবতার সেবায় কাজ করছে। গ্রামীণ ব্যাংক : ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। আশা সংস্থা : গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।

সর্বোপরি-এসো মানবতার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করি—এই আহ্বানকে বাস্তবায়িত করার জন্য আমাদের প্রত্যেককে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে।

লেখক : উজ্জ্বল হোসাইন, সংগঠক, লেখক ও সাংবাদিক, চাঁদপুর। যোগাযোগ : 01710802899, rtrujjal@gmail.com

চাঁদপুরে পানির অভাবে শুকিয়ে গেছে মাঠ, নষ্ট হচ্ছে বীজ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫, ১০:৪১ অপরাহ্ণ
চাঁদপুরে পানির অভাবে শুকিয়ে গেছে মাঠ, নষ্ট হচ্ছে বীজ

চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার খালগুলো শুকিয়ে হাজারো কৃষকদের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পানির অভাবে অধিকাংশ মাঠ শুকিয়ে ফেটে গেছে, বীজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন কৃষকরা। এ অবস্থায় স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে কৃষকরা দ্রুত পানির ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে খালে পানি না থাকার কারণে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এতে করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। সরকারিভাবে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হলে তাদের এই দুর্দশা অব্যাহত থাকবে। এই খাল খনন সঠিকভাবে হচ্ছে না বলেও দাবি করেন তারা।

কমলাপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল হান্নান খান বলেন, খালে পানি না থাকাতে আমরা ফসল চাষ করতে পারিনি। জলাবদ্ধতার কারণে আমাদের আমন ধান নষ্ট হয়ে গেছে। এখন বোরো ধান রোপণ করবো, কিন্তু পানি পাচ্ছি না। এখন আমরা খুবই কষ্টে আছি, সামনের দিনগুলোতে যে আমরা কি খাবো বা কীভাবে জীবন বাঁচাবো দিশেহারা হয়ে গিয়েছি। যদি আমাদেরকে দ্রুত পানি দেয় তাহলে আমরা বোরো ধান রোপণ করতে পারবো। আমাদের জীবন বাঁচাতে পারবো।

চাঁদপুর পওর শাখা-৩, হাইমচর উপসহকারী প্রকৌশলী মুহাম্মদ হাসান গাজী বলেন, হাইমচর উপজেলায় আমরা দুটি খাল খনন করছি। খালগুলো হচ্ছে বিফিফাইভ খালটি হচ্ছে কমলাপুর থেকে মহজমপুর ব্রিজ পর্যন্ত ৩ দশমিক ১৮৫ কিলোমিটার। অন্যটি ডব্লিউওয়াইসি খাল, এটি টেককান্দি থেকে জনতা বাজার পর্যন্ত ২ দশমিক ৫০ কিলোমিটার খাল খনন করা হবে। খাল দুটি হাইমচর উপজেলার প্রধান খাল। কাজ করতে গেলে কিছু প্রতিবন্ধকতা আসে, আমরা সেই প্রতিবন্ধকতা রেখে কাজ করে যাচ্ছি। আশা করি দু-চার দিনের মধ্যে খালের খনন কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্মকর্তা মো. শাকিল খন্দকার বলেন, বোরো মৌসুমে আমার কৃষক ভাইদের বোরো আবাদ করতে তাদের পানির প্রয়োজন হয়। আমাদের হাইমচরে যে দুটি খাল রয়েছে সেই খালগুলোতে দ্রুত পানি দেওয়ার জন্য আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে চিঠি দিয়েছি। সঠিক সময়ে যদি কৃষকরা পানি না পায় বোরো আবাদ বিঘ্নিত হবে। দ্রুত সময়ে যেন কৃষকরা পানি পায় সেজন্য আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দ্বিতীয়বার চিঠি প্রদান করেছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালমা নাজনীন তৃষা বলেন, আমরা বেশ কয়েকদিন যাবত অভিযোগ পেয়ে আসছি বিফিফাইভ খালটি খননে অনিয়ম হচ্ছে। তাই আজকে আমি সেখানে পরিদর্শনে গিয়েছি। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বলে দিয়েছি, যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে খাল খনন শেষ করেন এবং সঠিকভাবে খাল খনন করেন। আমি আশা করি, এই খাল খননের মাধ্যমে কৃষকদের দুঃখ-দুর্দশা দূর হবে এবং উপজেলার বিভিন্ন স্থানের জলাবদ্ধতা অনেকাংশেই কমে যাবে।

সারাদেশে বাড়বে দিনের তাপমাত্রা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫, ১২:৩৩ অপরাহ্ণ
সারাদেশে বাড়বে দিনের তাপমাত্রা

সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থটি। বুধবার (২২ জানুয়ারি) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. তরিফুল নেওয়াজ কবিরের দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। তবে শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে, তা কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। তবে শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে, তা কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া বন্ধ থাকতে পারে। তবে শেষ বাত থোকে সকাল পর্যন্ত মারাদেশে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া পাঁচদিনের প্রথম দিকে রাত ও দিনের তাপমাত্রা হ্রাস পেতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

হ্যাকিংয়ে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫, ১২:২৭ অপরাহ্ণ
হ্যাকিংয়ে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের অনুমোদিত খসড়া থেকে বিতর্কিত সাইবার বুলিংয়ের বিধান বাদ দেওয়া হয়েছে। নতুন করে কিছু বিষয়ও যুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে বেআইনি প্রবেশ বা হ্যাকিংয়ের ক্ষেত্রে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তারের বিধান রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। ‘সাইবার স্পেসকে সবার জন্য নিরাপদ করতে’ গত ২৪ ডিসেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৪-এর খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। এদিন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, এ সরকার সাইবার স্পেসকে সবার জন্য নিরাপদ করতে চায়। আপনারা জানেন যে সাইবার স্পেসে অনেক ধরনের ক্রাইম হয়। আমাদের মা-বোনরাসহ অনেকেই নানা ধরনের বুলিংয়ের শিকার হন। শিশুদের অনেক ধরনের বুলিংয়ের শিকার হতে হয়। সাইবার স্পেসকে নিরাপদ করা সরকারের দায়িত্ব।

খসড়ার ধারা ২৫-এ সাইবার বুলিংয়ের নামে একটি বিধান ছিল। এ বিধান নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এতে বাক স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হওয়ার সুযোগ তৈরি হবে বলে বিভিন্ন মহল থেকে দাবি করা হয়। ধারা ২৫-এ উল্লেখ করা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, বার্তা আদান-প্রদান প্ল্যাটফর্ম, ওয়েবসাইট বা সাইবার স্পেসে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে ভয়ভীতি প্রদর্শন, হুমকি প্রদান বা হয়রানি করা, মিথ্যা বা ক্ষতিকর তথ্য, অপমানজনক বার্তা, গালিগালাজ, গুজব বা মানহানিকর কনটেন্ট ছড়ানোর মাধ্যমে কোনো ব্যক্তির সুনাম বা মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত করা হলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

অবশেষে সমালোচনার মুখে খসড়া থেকে এটি বাদ দেওয়া হয়েছে। খসড়ায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) কনটেন্ট ব্লকের অনুরোধ করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তবে যেসব কনটেন্ট ব্লক হবে, সরকার তা জনস্বার্থে প্রকাশ করবে বলেও খসড়ায় উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া ধর্মীয় বিদ্বেষের সঙ্গে জাতিগত বিদ্বেষ ও ঘৃণার প্রসঙ্গও যুক্ত হয়েছে।