খুঁজুন
                               
বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫, ৮ মাঘ, ১৪৩১

ঈদুল ফিতর : ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতির প্রতীক

উজ্জ্বল হোসাইন
প্রকাশিত: শনিবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০২৫, ১২:২৭ পূর্বাহ্ণ
ঈদুল ফিতর  : ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতির প্রতীক

ঈদুল ফিতর ইসলামী সমাজের এক বিশেষ উৎসব যা ভ্রাতৃত্ব, সম্প্রীতি এবং মানবিকতার এক অনন্য উদাহরণ। এক মাস রমজানের সিয়াম সাধনার পর এই উৎসব আসে মুসলিম জীবনে আনন্দ ও খুশির বার্তা নিয়ে। এই দিনটি শুধু আনন্দের উৎসব নয়, বরং এটি ব্যক্তিগত, পারিবারিক এবং সামাজিক জীবনে এক গভীর তাৎপর্য বহন করে। ঈদুল ফিতর মানুষকে মিলনের, ভ্রাতৃত্বের এবং সহমর্মিতার শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ করে।

ঈদুল ফিতর শব্দের অর্থ হলো “রোজা ভঙ্গের উৎসব”। এই উৎসব ইসলামী হিজরি ক্যালেন্ডারের শাওয়াল মাসের প্রথম দিনে পালিত হয়। রমজান মাসে দীর্ঘ এক মাস ধরে মুসলমানরা সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোজা রাখেন। এই সময়ে তারা নিজেকে সংযম, আত্মশুদ্ধি, এবং আল্লাহর প্রতি আনুগত্যের মাধ্যমে আত্মশক্তিতে বলিয়ান করেন। ঈদুল ফিতর সেই সংযম ও আত্মশুদ্ধির একটি পুরস্কার স্বরূপ। এটি আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের একটি মাধ্যম, যা তিনি রোজাদারদের জন্য নির্ধারণ করেছেন।

ঈদুল ফিতরের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো “ফিতরা” প্রদান। ফিতরা একটি বাধ্যতামূলক দান যা প্রতিটি সামর্থ্যবান মুসলমান রমজানের শেষ সময়ে গরীব-দুঃস্থদের মধ্যে বিতরণ করে থাকেন। এটি শুধুমাত্র দানের বিষয় নয়; বরং এটি মুসলিম সমাজে সম্প্রীতি, সাম্য এবং ভ্রাতৃত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ চর্চা।

ঈদুল ফিতর এমন একটি উৎসব যা মানুষের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের অনুভূতি জাগিয়ে তোলে। ঈদের দিনে ধনী-গরীবের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ থাকে না। সবাই একত্রে ঈদের নামাজে অংশগ্রহণ করেন। এ সময় একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন, যা সমাজে সৌহার্দ্যের পরিবেশ সৃষ্টি করে।

ঈদের দিন সকালে ঈদের নামাজ আদায় করার আগে ফিতরা আদায় করা একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। এর মাধ্যমে গরিবদের মধ্যেও ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে দেওয়ার প্রয়াস নেওয়া হয়। এই দানের অর্থ হলো, কেউ যেন ক্ষুধার্ত থেকে ঈদের উৎসবে অংশ নিতে না পারে। এটি ইসলামের সেই সাম্যের বার্তাকে বহন করে, যা সকল মানুষকে সমান মর্যাদায় দেখার শিক্ষা দেয়।

ঈদুল ফিতর পারিবারিক বন্ধন দৃঢ় করার জন্য একটি বিশেষ দিন। পরিবার-পরিজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করা, একত্রে খাওয়া-দাওয়া করা এবং প্রিয়জনদের মধ্যে উপহার বিনিময় করার মাধ্যমে এই দিনটি স্মরণীয় হয়ে ওঠে।

এছাড়াও, ঈদুল ফিতরের দিন প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক সুদৃঢ় করারও একটি বিশেষ সুযোগ। প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন এবং বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে দেখা করা, তাদের ঘরে খাবার পাঠানো, এবং ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে এই সম্প্রীতি বৃদ্ধি পায়।

ঈদুল ফিতরের আরেকটি বড় দিক হলো এর আন্তর্জাতিকতা। সারা বিশ্বের মুসলমানরা একসঙ্গে এই দিনটি উদযাপন করেন। এটি বিশ্বের বিভিন্ন জাতি, ভাষা এবং সংস্কৃতির মুসলিমদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ তৈরি করে। ঈদুল ফিতর দেখায় যে, ভাষা বা সংস্কৃতির ভিন্নতা থাকা সত্ত্বেও সবাই একই ধর্মীয় চেতনার মধ্যে ঐক্যবদ্ধ।

১. ঈদগাহে নামাজ আদায়: ঈদের দিন সকলে একত্রে ঈদগাহে নামাজ আদায় করেন। এটি সমাজে ঐক্যের প্রতীক।
২. ফিতরা প্রদান: ফিতরা দিয়ে গরিবদের ঈদ উদযাপনে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়।
৩. সহমর্মিতা ও দান: ঈদুল ফিতর দানের গুরুত্ব শেখায়। দানশীলতা মানুষের মধ্যে সহানুভূতির জন্ম দেয়।
৪. পরিচ্ছন্নতা ও নতুন পোশাক: ঈদের দিন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পোশাক পরিধান করা ইসলামী সংস্কৃতির একটি অংশ।

ঈদুল ফিতর কেবল একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং এটি সমাজে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি ধনী ও গরীবের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে। ঈদের মাধ্যমে সমাজে সম্প্রীতি ও সহযোগিতার পরিবেশ তৈরি হয়। পাশাপাশি, এটি ব্যক্তি ও সমাজের মধ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।

ঈদুল ফিতর একটি বহুমাত্রিক উৎসব, যার গুরুত্ব ধর্মীয়, সামাজিক এবং মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে অনস্বীকার্য। এটি মুসলমানদের জীবনে শুধু আনন্দ নিয়ে আসে না; বরং নৈতিক, আধ্যাত্মিক এবং সামাজিক শিক্ষা প্রদান করে। চলুন আরও গভীরে গিয়ে ঈদুল ফিতরের বিভিন্ন দিক আলোচনা করি।

রমজান মাসে দীর্ঘ এক মাসের রোজা পালনের পর ঈদুল ফিতর আসে আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের একটি বিশেষ দিন হিসেবে। এটি মানুষের আত্মশুদ্ধি এবং সৃষ্টিকর্তার প্রতি আনুগত্যের প্রতীক। ঈদের দিনে যে নামাজ আদায় করা হয়, তা কেবল এক ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা নয়; বরং এটি আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতার প্রকাশ।

ঈদের নামাজে একত্রিত হওয়া এবং আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করার মাধ্যমে মুসলমানরা নিজেদের আত্মিক জীবনে এক নতুন প্রেরণা লাভ করে। এটি মানুষকে আল্লাহর করুণা ও দয়া অনুভব করতে সহায়তা করে।

ঈদুল ফিতর কেবল ধনী বা সামর্থ্যবানদের উৎসব নয়; এটি এমন একটি দিন যা গরীবদের প্রতিও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক। “ফিতরা” প্রদানের মধ্য দিয়ে সমাজে সমতা এবং সম্প্রীতির বার্তা প্রচারিত হয়। এই দানের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয় যে, ঈদের আনন্দে কোনো গরীব বা অসহায় মানুষ যেন বঞ্চিত না হয়।

ফিতরার মাধ্যমে মানুষ গরীবদের প্রতি যে সহানুভূতি ও দয়া দেখায়, তা মানবিকতার একটি উজ্জ্বল উদাহরণ। এটি সমাজের সকল স্তরের মানুষের মধ্যে সহমর্মিতা ও সহানুভূতির বন্ধন তৈরি করে।

ইসলাম সাম্যের ধর্ম। ধনী-গরীব, ছোট-বড়, জাতি-গোষ্ঠী—সবাই এক সৃষ্টিকর্তার কাছে সমান। ঈদুল ফিতর সেই সাম্যের বার্তাকেই আরও শক্তিশালী করে। ঈদের নামাজে সবাই একসঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নামাজ আদায় করেন। এখানে ধনী-গরীবের কোনো ভেদাভেদ থাকে না।

ঈদগাহে নামাজের পর মানুষ একে অপরকে কোলাকুলি করে এবং শুভেচ্ছা বিনিময় করে। এই কার্যক্রম সমাজে সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধ জাগ্রত করে। ঈদের দিনে ধনী-গরীব, শিশু-বৃদ্ধ, সবাই একত্রে আনন্দে মেতে ওঠে।

ঈদুল ফিতর কেবল একটি ধর্মীয় উৎসব নয়; এটি বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে মিশে এক বিশেষ রূপ ধারণ করেছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ঈদুল ফিতর উদযাপনের পদ্ধতি ভিন্ন হলেও এর মূল বার্তা এক।

বাংলাদেশে ঈদুল ফিতর উদযাপন

বাংলাদেশে ঈদুল ফিতর এক বিশাল উৎসব হিসেবে পালিত হয়। ঈদের কয়েকদিন আগে থেকেই মানুষ নতুন পোশাক কেনা, ঘরবাড়ি সাজানো এবং খাবার প্রস্তুত করার কাজ শুরু করে।

ঈদের সকালে সবাই নতুন পোশাক পরে ঈদগাহে যান। ঈদের বিশেষ খাবার, যেমন সেমাই, ফিরনি, পায়েস, এবং বিরিয়ানির মতো খাবার ঘরে ঘরে প্রস্তুত হয়। আত্মীয়-স্বজন এবং প্রতিবেশীদের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া এবং উপহার বিনিময়ের মধ্য দিয়ে ঈদের আনন্দ দ্বিগুণ হয়ে ওঠে।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ঈদুল ফিতর উদযাপনের ধরণ ভিন্ন হলেও এর আবেগ এবং উৎসবের আমেজ অভিন্ন। মধ্যপ্রাচ্যে বিশেষ খাবারের আয়োজন, তুরস্কে ঈদ মিছরি বিতরণ, এবং ইন্দোনেশিয়ায় বিশেষ প্রার্থনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন ঈদের উদযাপনে বৈচিত্র্য আনে।

ঈদুল ফিতর একটি সামাজিক এবং অর্থনৈতিক আন্দোলনের মতো। এই সময় ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিধি বৃদ্ধি পায়। ঈদের কেনাকাটায় দোকানপাট এবং বিপণি বিতানগুলো জমজমাট হয়ে ওঠে।

অন্যদিকে, ফিতরা, যাকাত, এবং দানের মাধ্যমে অর্থ সমাজের নিম্নস্তরে প্রবাহিত হয়। এর ফলে সমাজে অর্থনৈতিক বৈষম্য কিছুটা হলেও লাঘব হয় এবং দরিদ্ররা ঈদের আনন্দে সামিল হতে পারেন।

ঈদুল ফিতর শিশুদের জন্য এক বিশেষ আনন্দের দিন। নতুন পোশাক, ঈদ সালামি, এবং নানা ধরনের খাবার তাদের জন্য উৎসবকে রঙিন করে তোলে। ঈদের দিন শিশুরা বিভিন্ন ধরণের খেলাধুলা এবং বিনোদনে মেতে ওঠে।

শিশুদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব এবং সম্প্রীতির শিক্ষা দেওয়ার জন্য ঈদ একটি আদর্শ সময়। এই দিন তারা শিখতে পারে কীভাবে গরীব-অসহায়দের প্রতি দয়া এবং সহমর্মিতা প্রদর্শন করতে হয়।

ঈদুল ফিতর এমন একটি উৎসব যা ধর্মীয় গণ্ডি ছাড়িয়ে ভ্রাতৃত্ব, সাম্য, এবং মানবিকতার এক জ্বলন্ত প্রতীক। এটি মানুষকে সংযম, দানশীলতা এবং সহমর্মিতার শিক্ষা দেয়।

এই উৎসব আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, সমাজে ভ্রাতৃত্ব এবং সম্প্রীতির বন্ধন শক্তিশালী করার জন্য আমরা সবাই একত্রে কাজ করতে পারি। ঈদুল ফিতরের প্রকৃত সৌন্দর্য এর মূল চেতনায় নিহিত, যেখানে মানুষকে নিজের চেয়ে অন্যের কথা ভাবতে শেখানো হয়। ঈদুল ফিতরের শিক্ষা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে মেনে চলা উচিত, যাতে সমাজে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।

“ঈদ মোবারক” শব্দ শুধু আনন্দের নয়, এটি ভ্রাতৃত্ব, ভালোবাসা এবং সম্প্রীতির এক অনন্য বার্তা। এই বার্তাকে ধারণ করে আমরা যদি জীবনের প্রতিটি দিন উদযাপন করতে পারি, তবে আমাদের সমাজ হবে আরও সুন্দর এবং মানবিক।

ঈদুল ফিতর শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং এটি ভ্রাতৃত্ব, সম্প্রীতি এবং মানবিকতার এক অপূর্ব উদাহরণ। এটি মানুষকে দান, সংযম, এবং অন্যের প্রতি সহানুভূতির শিক্ষা দেয়। ঈদুল ফিতরের আনন্দ কেবলমাত্র ব্যক্তি পর্যায়ে সীমাবদ্ধ থাকে না; এটি সমাজের সকল স্তরে ছড়িয়ে পড়ে।

সুতরাং, ঈদুল ফিতর এমন একটি উৎসব যা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতি হলো মানবজীবনের অপরিহার্য অংশ। এই বিশেষ দিনে সকলের জন্য প্রার্থনা এবং ভালোবাসা ছড়িয়ে দেওয়াই এর মূল লক্ষ্য।

চাঁদপুরে পানির অভাবে শুকিয়ে গেছে মাঠ, নষ্ট হচ্ছে বীজ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫, ১০:৪১ অপরাহ্ণ
চাঁদপুরে পানির অভাবে শুকিয়ে গেছে মাঠ, নষ্ট হচ্ছে বীজ

চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার খালগুলো শুকিয়ে হাজারো কৃষকদের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পানির অভাবে অধিকাংশ মাঠ শুকিয়ে ফেটে গেছে, বীজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন কৃষকরা। এ অবস্থায় স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে কৃষকরা দ্রুত পানির ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে খালে পানি না থাকার কারণে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এতে করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। সরকারিভাবে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হলে তাদের এই দুর্দশা অব্যাহত থাকবে। এই খাল খনন সঠিকভাবে হচ্ছে না বলেও দাবি করেন তারা।

কমলাপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল হান্নান খান বলেন, খালে পানি না থাকাতে আমরা ফসল চাষ করতে পারিনি। জলাবদ্ধতার কারণে আমাদের আমন ধান নষ্ট হয়ে গেছে। এখন বোরো ধান রোপণ করবো, কিন্তু পানি পাচ্ছি না। এখন আমরা খুবই কষ্টে আছি, সামনের দিনগুলোতে যে আমরা কি খাবো বা কীভাবে জীবন বাঁচাবো দিশেহারা হয়ে গিয়েছি। যদি আমাদেরকে দ্রুত পানি দেয় তাহলে আমরা বোরো ধান রোপণ করতে পারবো। আমাদের জীবন বাঁচাতে পারবো।

চাঁদপুর পওর শাখা-৩, হাইমচর উপসহকারী প্রকৌশলী মুহাম্মদ হাসান গাজী বলেন, হাইমচর উপজেলায় আমরা দুটি খাল খনন করছি। খালগুলো হচ্ছে বিফিফাইভ খালটি হচ্ছে কমলাপুর থেকে মহজমপুর ব্রিজ পর্যন্ত ৩ দশমিক ১৮৫ কিলোমিটার। অন্যটি ডব্লিউওয়াইসি খাল, এটি টেককান্দি থেকে জনতা বাজার পর্যন্ত ২ দশমিক ৫০ কিলোমিটার খাল খনন করা হবে। খাল দুটি হাইমচর উপজেলার প্রধান খাল। কাজ করতে গেলে কিছু প্রতিবন্ধকতা আসে, আমরা সেই প্রতিবন্ধকতা রেখে কাজ করে যাচ্ছি। আশা করি দু-চার দিনের মধ্যে খালের খনন কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্মকর্তা মো. শাকিল খন্দকার বলেন, বোরো মৌসুমে আমার কৃষক ভাইদের বোরো আবাদ করতে তাদের পানির প্রয়োজন হয়। আমাদের হাইমচরে যে দুটি খাল রয়েছে সেই খালগুলোতে দ্রুত পানি দেওয়ার জন্য আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে চিঠি দিয়েছি। সঠিক সময়ে যদি কৃষকরা পানি না পায় বোরো আবাদ বিঘ্নিত হবে। দ্রুত সময়ে যেন কৃষকরা পানি পায় সেজন্য আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দ্বিতীয়বার চিঠি প্রদান করেছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালমা নাজনীন তৃষা বলেন, আমরা বেশ কয়েকদিন যাবত অভিযোগ পেয়ে আসছি বিফিফাইভ খালটি খননে অনিয়ম হচ্ছে। তাই আজকে আমি সেখানে পরিদর্শনে গিয়েছি। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বলে দিয়েছি, যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে খাল খনন শেষ করেন এবং সঠিকভাবে খাল খনন করেন। আমি আশা করি, এই খাল খননের মাধ্যমে কৃষকদের দুঃখ-দুর্দশা দূর হবে এবং উপজেলার বিভিন্ন স্থানের জলাবদ্ধতা অনেকাংশেই কমে যাবে।

সারাদেশে বাড়বে দিনের তাপমাত্রা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫, ১২:৩৩ অপরাহ্ণ
সারাদেশে বাড়বে দিনের তাপমাত্রা

সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থটি। বুধবার (২২ জানুয়ারি) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. তরিফুল নেওয়াজ কবিরের দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। তবে শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে, তা কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। তবে শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে, তা কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া বন্ধ থাকতে পারে। তবে শেষ বাত থোকে সকাল পর্যন্ত মারাদেশে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া পাঁচদিনের প্রথম দিকে রাত ও দিনের তাপমাত্রা হ্রাস পেতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

হ্যাকিংয়ে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫, ১২:২৭ অপরাহ্ণ
হ্যাকিংয়ে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের অনুমোদিত খসড়া থেকে বিতর্কিত সাইবার বুলিংয়ের বিধান বাদ দেওয়া হয়েছে। নতুন করে কিছু বিষয়ও যুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে বেআইনি প্রবেশ বা হ্যাকিংয়ের ক্ষেত্রে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তারের বিধান রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। ‘সাইবার স্পেসকে সবার জন্য নিরাপদ করতে’ গত ২৪ ডিসেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৪-এর খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। এদিন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, এ সরকার সাইবার স্পেসকে সবার জন্য নিরাপদ করতে চায়। আপনারা জানেন যে সাইবার স্পেসে অনেক ধরনের ক্রাইম হয়। আমাদের মা-বোনরাসহ অনেকেই নানা ধরনের বুলিংয়ের শিকার হন। শিশুদের অনেক ধরনের বুলিংয়ের শিকার হতে হয়। সাইবার স্পেসকে নিরাপদ করা সরকারের দায়িত্ব।

খসড়ার ধারা ২৫-এ সাইবার বুলিংয়ের নামে একটি বিধান ছিল। এ বিধান নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এতে বাক স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হওয়ার সুযোগ তৈরি হবে বলে বিভিন্ন মহল থেকে দাবি করা হয়। ধারা ২৫-এ উল্লেখ করা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, বার্তা আদান-প্রদান প্ল্যাটফর্ম, ওয়েবসাইট বা সাইবার স্পেসে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে ভয়ভীতি প্রদর্শন, হুমকি প্রদান বা হয়রানি করা, মিথ্যা বা ক্ষতিকর তথ্য, অপমানজনক বার্তা, গালিগালাজ, গুজব বা মানহানিকর কনটেন্ট ছড়ানোর মাধ্যমে কোনো ব্যক্তির সুনাম বা মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত করা হলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

অবশেষে সমালোচনার মুখে খসড়া থেকে এটি বাদ দেওয়া হয়েছে। খসড়ায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) কনটেন্ট ব্লকের অনুরোধ করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তবে যেসব কনটেন্ট ব্লক হবে, সরকার তা জনস্বার্থে প্রকাশ করবে বলেও খসড়ায় উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া ধর্মীয় বিদ্বেষের সঙ্গে জাতিগত বিদ্বেষ ও ঘৃণার প্রসঙ্গও যুক্ত হয়েছে।