খুঁজুন
                               
বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০২৫, ৯ মাঘ, ১৪৩১

কিশোরীর প্রেম : জীবনের পরিবর্তনশীল এক অধ্যায়

উজ্জ্বল হোসাইন
প্রকাশিত: সোমবার, ৬ জানুয়ারি, ২০২৫, ১২:১৮ পূর্বাহ্ণ
কিশোরীর প্রেম : জীবনের পরিবর্তনশীল এক অধ্যায়

কিশোরীর প্রেম একটি অত্যন্ত সূক্ষ্ম ও মনস্তাত্ত্বিক বিষয়, যা মানব জীবনের এক অনন্য অধ্যায়কে চিহ্নিত করে। এটি কিশোরী মেয়েদের মানসিক, সামাজিক, এবং শারীরিক পরিবর্তনের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। প্রেম, একটি অনুভূতি হিসেবে, এই বয়সে কিশোরীদের জীবনে বিশেষভাবে আবির্ভূত হয় এবং তাদের জীবনবোধ, মানসিক পরিপক্বতা, এবং ভবিষ্যৎ চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করে। এই প্রবন্ধে কিশোরীর প্রেমের নানা দিক বিশ্লেষণ করা হবে—মানসিক বিকাশ, সামাজিক প্রভাব, এবং এর ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিকগুলি নিয়ে।

কিশোর বয়স ১৩ থেকে ১৯ বছরের একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়, যখন একজন মেয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে দ্রুত পরিণত হতে থাকে। এই বয়সে প্রেম মূলত আবেগপ্রবণ, রোমাঞ্চকর এবং কৌতূহলনির্ভর হয়। এটি প্রথমবারের মতো একজন কিশোরীর জীবনে নতুন এক ধরনের আকর্ষণ, স্নেহ এবং সম্পর্ক গড়ার ইচ্ছা তৈরি করে। প্রেমের প্রতি এই আকর্ষণ স্বাভাবিকভাবেই তার বয়স ও অভিজ্ঞতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।কিশোরী বয়সের প্রেমের বৈশিষ্ট্যগুলো অন্য বয়সের প্রেম থেকে আলাদা। এখানে আবেগ প্রাধান্য পায়, যুক্তি নয়। কিশোরীরা সাধারণত তাদের অনুভূতির গভীরতায় ডুবে যায় এবং তাদের প্রেমের সম্পর্কগুলোকে জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে মনে করে।

মানসিক ও শারীরিক বিকাশের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক : কিশোরীদের মনের গঠন এ সময় দ্রুত পরিবর্তিত হয়। তাদের মানসিক বিকাশের অংশ হিসেবে, আত্মবিশ্বাস, স্বপ্ন এবং আকাঙ্ক্ষাগুলো প্রেমের অনুভূতির মাধ্যমে প্রকাশিত হতে পারে। প্রেমের মাধ্যমে তারা নতুন আবেগ এবং মানসিক জগতের সঙ্গে পরিচিত হয়। শারীরিক বিকাশও প্রেমের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে। এই বয়সে কিশোরীদের শরীরে হরমোনজনিত পরিবর্তন ঘটে, যা তাদের আবেগপ্রবণ করে তোলে। এই আবেগ, কখনও কখনও, তাদেরকে নতুন সম্পর্ক গড়তে বা একটি বিশেষ ব্যক্তির প্রতি আকৃষ্ট হতে প্রভাবিত করে।

কিশোরীর প্রেমের ইতিবাচক দিক : কিশোরীর প্রেমের কিছু ইতিবাচক দিক রয়েছে, যা তাকে মানসিক ও ব্যক্তিত্ব বিকাশে সাহায্য করে। প্রেম একটি কিশোরীর মনে আত্মবিশ্বাস ও আত্মমর্যাদার অনুভূতি জাগায়। একটি প্রেমময় সম্পর্ক কিশোরীর মানসিক শক্তি যোগাতে পারে। এটি তাকে একাকিত্ব থেকে মুক্তি দেয়। প্রেমের মাধ্যমে কিশোরীরা সম্পর্ক গড়ার কৌশল, সহযোগিতা এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতা অর্জন করে। এই বয়সে প্রেম কিশোরীদের আবেগ সম্পর্কে সচেতন হতে এবং তা নিয়ন্ত্রণ করতে শেখায়।

কিশোরীর প্রেমের নেতিবাচক দিক : তবে, প্রেমের আবেগ অতিমাত্রায় গভীর হলে তা কখনও কখনও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। প্রেমের আবেগে ডুবে গিয়ে অনেক কিশোরী পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারে না। সম্পর্কের জটিলতা ও প্রত্যাখ্যান অনেক কিশোরীর মধ্যে হতাশা বা মানসিক আঘাত তৈরি করতে পারে। প্রেমের কারণে অনেক কিশোরী পরিবারের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করে, যা সামাজিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিকর হতে পারে। আবেগের বশবর্তী হয়ে কিশোরীরা অনেক সময় ভুল সিদ্ধান্ত নেয়, যা তাদের ভবিষ্যতের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রভাব : কিশোরীদের প্রেম নিয়ে সমাজে নানা মতবিরোধ রয়েছে। অনেক সমাজে এটি নিষিদ্ধ বা ট্যাবু হিসেবে বিবেচিত হয়। এর ফলে, কিশোরীরা তাদের প্রেমের অনুভূতি প্রকাশ করতে সংকোচ বোধ করে। আবার কিছু সমাজে প্রেমকে প্রাকৃতিক ও স্বাভাবিক হিসেবে গ্রহণ করা হয়, যেখানে কিশোরীরা তাদের অনুভূতিগুলো সহজেই প্রকাশ করতে পারে।

পরিবারের ভূমিকা : পরিবারের ভূমিকা কিশোরীর প্রেমকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাবা-মা যদি কিশোরীর প্রেমের ব্যাপারে খোলামেলা আলোচনা করেন, তবে এটি কিশোরীর জন্য উপকারী হতে পারে। কিশোরীর অনুভূতিগুলোকে সম্মান জানিয়ে পরিবারের সদস্যরা তার প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করতে পারে। পরিবারের উচিত কিশোরীর কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করা, তবে তা কখনও যেন তার স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ণ না করে।

কিশোরীর প্রেমের নৈতিক শিক্ষা : প্রেমের আসল অর্থ বোঝানো। দায়িত্ববোধ জাগ্রত করা। জীবনের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যগুলো সম্পর্কে সচেতন করা। আবেগ নিয়ন্ত্রণ করার কৌশল শেখানো।

কিশোরীর প্রেম একটি স্বাভাবিক ও জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তবে, এটি সঠিকভাবে পরিচালিত না হলে তা কিশোরীর জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সমাজের সমন্বিত ভূমিকা কিশোরীর প্রেমের আবেগকে সঠিক পথে চালিত করতে সহায়তা করতে পারে। একমাত্র তখনই কিশোরীরা প্রেমের মাধ্যমে জীবনের গভীর অর্থ উপলব্ধি করতে সক্ষম হবে এবং তাদের স্বপ্ন পূরণের পথে এগিয়ে যাবে।

কিশোর বয়স জীবনের এক অপরিহার্য ও উত্তেজনাপূর্ণ সময়। এ সময় মেয়েরা ধীরে ধীরে শৈশব থেকে যৌবনে পদার্পণ করে। প্রেম, যা কিশোরীর জীবনে নতুন রঙ ও অনুভূতি নিয়ে আসে, তার মানসিক জগৎকে গভীরভাবে নাড়া দেয়। প্রেমের আবেগ শুধু তাদের ব্যক্তিত্ব গঠনের অংশ নয়, এটি জীবনের বহুমাত্রিক অভিজ্ঞতার শুরু।

প্রেমের আবেগের গভীরতা : কিশোরীদের প্রেম সাধারণত কল্পনাপ্রবণ ও আবেগনির্ভর হয়। তারা তাদের আদর্শ ব্যক্তিকে রোমান্টিক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখতে শুরু করে। কিশোরীদের প্রেমের সম্পর্ক অনেক সময় মনের গভীর চাহিদা, স্নেহ, এবং নিরাপত্তার খোঁজ থেকে আসে। প্রেমের এই অনুভূতি তাদের মনের গভীরে আশা ও আকাঙ্ক্ষার জন্ম দেয়।

এই বয়সে প্রেমের সঙ্গে কিশোরীদের স্বপ্ন এবং বাস্তবতার দ্বন্দ্বও কাজ করে। তারা প্রেমকে শুধু সম্পর্ক হিসেবে নয়, বরং জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ মনে করে। কিন্তু বাস্তবতার কঠিন দিক তাদের এই স্বপ্নকে ভেঙে দিতে পারে, যা তাদের আবেগের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে।

প্রেম ও শিক্ষার সমন্বয়  : প্রেম তাদের শিক্ষাজীবনের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। কিছু কিশোরী প্রেমের আবেগে মগ্ন হয়ে পড়াশোনার প্রতি উদাসীন হয়ে পড়ে। আবার কিছু কিশোরী প্রেমের অনুপ্রেরণায় নিজেদের জীবনে বড় কিছু অর্জনের জন্য চেষ্টা করে।

ইতিবাচক দিক : প্রেম কিশোরীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা আনতে পারে। অনেকে তাদের ভালোবাসার মানুষের অনুপ্রেরণায় জীবনে বড় কিছু করার জন্য উৎসাহ পায়।

নেতিবাচক দিক : প্রেমের আবেগে কিশোরীরা অনেক সময় পড়াশোনার গুরুত্ব উপেক্ষা করে। এটি তাদের একাডেমিক ফলাফল এবং ভবিষ্যৎ লক্ষ্যকে প্রভাবিত করতে পারে।

কিশোরীর প্রেমে বন্ধু ও সমাজের ভূমিকা : বন্ধুরা কিশোরীদের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দখল করে। এই বয়সে কিশোরীরা বন্ধুদের সঙ্গে তাদের প্রেমের অনুভূতি শেয়ার করে। বন্ধুরা অনেক সময় কিশোরীদের প্রেমের সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলে।

সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি কিশোরীর প্রেমকে অনেকভাবেই প্রভাবিত করে। কিছু সমাজে কিশোর বয়সে প্রেমকে নেতিবাচকভাবে দেখা হয়। ফলে কিশোরীরা তাদের অনুভূতি প্রকাশ করতে সংকোচবোধ করে। আবার, কিছু সংস্কৃতিতে প্রেমকে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করা হয়, যেখানে কিশোরীরা নিজেদের ইচ্ছা ও অনুভূতিগুলো নিয়ে খোলামেলা হতে পারে।

প্রেমের আবেগ নিয়ন্ত্রণে পারিবারিক ভূমিকা : পরিবার কিশোরীর প্রেমের বিষয়টি সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারে। পরিবার যদি কিশোরীর প্রতি সহানুভূতিশীল হয় এবং তার মনের কথা শোনার চেষ্টা করে, তাহলে অনেক সমস্যার সমাধান সহজেই সম্ভব।

বাবা-মা যদি কিশোরীর প্রেমের বিষয়টি নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন, তবে কিশোরী তার অনুভূতি নিয়ে স্বস্তি পাবে। এটি তার মধ্যে আত্মবিশ্বাস জাগায়।পরিবারের উচিত কিশোরীদের জীবনে শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সঠিক দিকনির্দেশনা দেওয়া। তবে এটি যেন তাদের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ না করে।

প্রেমের মাধ্যমে ব্যক্তিত্বের বিকাশ : কিশোরীর প্রেম শুধু আবেগের বিষয় নয়; এটি তার ব্যক্তিত্ব গঠনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। প্রেম কিশোরীদের মধ্যে দায়িত্ববোধ, আত্মবিশ্বাস, এবং সহনশীলতা গড়ে তোলে। প্রেমের মাধ্যমে কিশোরীরা নিজেদের ক্ষমতা ও সীমাবদ্ধতাগুলো উপলব্ধি করতে পারে। প্রেমের সম্পর্ক কিশোরীদের মধ্যে যোগাযোগ দক্ষতা এবং আন্তঃব্যক্তিক সম্পর্ক উন্নত করতে সাহায্য করে।

সম্পর্কের বিভিন্ন জটিলতার মধ্যে দিয়ে কিশোরীরা সমস্যা সমাধানের দক্ষতা অর্জন করে।

প্রেম ও প্রযুক্তির প্রভাব: বর্তমান যুগে প্রযুক্তি কিশোরীর প্রেমের ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে। সোশ্যাল মিডিয়া, মেসেজিং অ্যাপ, এবং ভিডিও কলের মাধ্যমে সম্পর্ক গড়ে ওঠা এখন একটি সাধারণ বিষয়। তবে, এটি যেমন সুবিধা দেয়, তেমনি বিপদও বয়ে আনতে পারে।

প্রযুক্তি প্রেমের মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে আনে। এটি সম্পর্ককে সহজ এবং আরও প্রাণবন্ত করে তোলে।

প্রযুক্তি-নির্ভর সম্পর্ক কখনও কখনও কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। গোপনীয়তার অভাব, অতিরিক্ত সময় ব্যয়, এবং প্রতারণার ঝুঁকি কিশোরীদের বিপদে ফেলতে পারে।

নৈতিক শিক্ষা ও সচেতনতা : কিশোর বয়সে প্রেমের বিষয়টি নিয়ে সঠিক নৈতিক শিক্ষা এবং সচেতনতা বাড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রেমের প্রকৃতি এবং দায়িত্ব সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া। জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রেমের ভূমিকা বোঝানো। সম্পর্কের সীমা এবং গোপনীয়তার গুরুত্ব বোঝানো

কিশোরীর প্রেম জীবনের একটি জটিল এবং গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এটি তাদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে প্রভাব ফেলে এবং তাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে একটি হতে পারে। প্রেমের এই অধ্যায় সঠিক দিকনির্দেশনা এবং সমর্থন পেলে কিশোরীরা জীবনে আরও সফল এবং পরিপক্ব হয়ে উঠতে পারে। বাবা-মা, শিক্ষক এবং সমাজের সহানুভূতি ও সমর্থন কিশোরীদের প্রেমের অনুভূতিকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে পারে। এর মাধ্যমে কিশোরীরা তাদের জীবনের ইতিবাচক লক্ষ্যগুলো অর্জনের পথে এগিয়ে যাবে।

লেখক: উজ্জ্বল হোসাইন, সংগঠক ও প্রাবন্ধিক। মোবাইল : 016751283, rtrujjal@gmail.com

চাঁদপুরে পানির অভাবে শুকিয়ে গেছে মাঠ, নষ্ট হচ্ছে বীজ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫, ১০:৪১ অপরাহ্ণ
চাঁদপুরে পানির অভাবে শুকিয়ে গেছে মাঠ, নষ্ট হচ্ছে বীজ

চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার খালগুলো শুকিয়ে হাজারো কৃষকদের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পানির অভাবে অধিকাংশ মাঠ শুকিয়ে ফেটে গেছে, বীজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন কৃষকরা। এ অবস্থায় স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে কৃষকরা দ্রুত পানির ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে খালে পানি না থাকার কারণে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এতে করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। সরকারিভাবে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হলে তাদের এই দুর্দশা অব্যাহত থাকবে। এই খাল খনন সঠিকভাবে হচ্ছে না বলেও দাবি করেন তারা।

কমলাপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল হান্নান খান বলেন, খালে পানি না থাকাতে আমরা ফসল চাষ করতে পারিনি। জলাবদ্ধতার কারণে আমাদের আমন ধান নষ্ট হয়ে গেছে। এখন বোরো ধান রোপণ করবো, কিন্তু পানি পাচ্ছি না। এখন আমরা খুবই কষ্টে আছি, সামনের দিনগুলোতে যে আমরা কি খাবো বা কীভাবে জীবন বাঁচাবো দিশেহারা হয়ে গিয়েছি। যদি আমাদেরকে দ্রুত পানি দেয় তাহলে আমরা বোরো ধান রোপণ করতে পারবো। আমাদের জীবন বাঁচাতে পারবো।

চাঁদপুর পওর শাখা-৩, হাইমচর উপসহকারী প্রকৌশলী মুহাম্মদ হাসান গাজী বলেন, হাইমচর উপজেলায় আমরা দুটি খাল খনন করছি। খালগুলো হচ্ছে বিফিফাইভ খালটি হচ্ছে কমলাপুর থেকে মহজমপুর ব্রিজ পর্যন্ত ৩ দশমিক ১৮৫ কিলোমিটার। অন্যটি ডব্লিউওয়াইসি খাল, এটি টেককান্দি থেকে জনতা বাজার পর্যন্ত ২ দশমিক ৫০ কিলোমিটার খাল খনন করা হবে। খাল দুটি হাইমচর উপজেলার প্রধান খাল। কাজ করতে গেলে কিছু প্রতিবন্ধকতা আসে, আমরা সেই প্রতিবন্ধকতা রেখে কাজ করে যাচ্ছি। আশা করি দু-চার দিনের মধ্যে খালের খনন কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্মকর্তা মো. শাকিল খন্দকার বলেন, বোরো মৌসুমে আমার কৃষক ভাইদের বোরো আবাদ করতে তাদের পানির প্রয়োজন হয়। আমাদের হাইমচরে যে দুটি খাল রয়েছে সেই খালগুলোতে দ্রুত পানি দেওয়ার জন্য আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে চিঠি দিয়েছি। সঠিক সময়ে যদি কৃষকরা পানি না পায় বোরো আবাদ বিঘ্নিত হবে। দ্রুত সময়ে যেন কৃষকরা পানি পায় সেজন্য আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দ্বিতীয়বার চিঠি প্রদান করেছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালমা নাজনীন তৃষা বলেন, আমরা বেশ কয়েকদিন যাবত অভিযোগ পেয়ে আসছি বিফিফাইভ খালটি খননে অনিয়ম হচ্ছে। তাই আজকে আমি সেখানে পরিদর্শনে গিয়েছি। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বলে দিয়েছি, যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে খাল খনন শেষ করেন এবং সঠিকভাবে খাল খনন করেন। আমি আশা করি, এই খাল খননের মাধ্যমে কৃষকদের দুঃখ-দুর্দশা দূর হবে এবং উপজেলার বিভিন্ন স্থানের জলাবদ্ধতা অনেকাংশেই কমে যাবে।

সারাদেশে বাড়বে দিনের তাপমাত্রা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫, ১২:৩৩ অপরাহ্ণ
সারাদেশে বাড়বে দিনের তাপমাত্রা

সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থটি। বুধবার (২২ জানুয়ারি) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. তরিফুল নেওয়াজ কবিরের দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। তবে শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে, তা কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। তবে শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে, তা কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া বন্ধ থাকতে পারে। তবে শেষ বাত থোকে সকাল পর্যন্ত মারাদেশে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া পাঁচদিনের প্রথম দিকে রাত ও দিনের তাপমাত্রা হ্রাস পেতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

হ্যাকিংয়ে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫, ১২:২৭ অপরাহ্ণ
হ্যাকিংয়ে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের অনুমোদিত খসড়া থেকে বিতর্কিত সাইবার বুলিংয়ের বিধান বাদ দেওয়া হয়েছে। নতুন করে কিছু বিষয়ও যুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে বেআইনি প্রবেশ বা হ্যাকিংয়ের ক্ষেত্রে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তারের বিধান রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। ‘সাইবার স্পেসকে সবার জন্য নিরাপদ করতে’ গত ২৪ ডিসেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৪-এর খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। এদিন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, এ সরকার সাইবার স্পেসকে সবার জন্য নিরাপদ করতে চায়। আপনারা জানেন যে সাইবার স্পেসে অনেক ধরনের ক্রাইম হয়। আমাদের মা-বোনরাসহ অনেকেই নানা ধরনের বুলিংয়ের শিকার হন। শিশুদের অনেক ধরনের বুলিংয়ের শিকার হতে হয়। সাইবার স্পেসকে নিরাপদ করা সরকারের দায়িত্ব।

খসড়ার ধারা ২৫-এ সাইবার বুলিংয়ের নামে একটি বিধান ছিল। এ বিধান নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এতে বাক স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হওয়ার সুযোগ তৈরি হবে বলে বিভিন্ন মহল থেকে দাবি করা হয়। ধারা ২৫-এ উল্লেখ করা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, বার্তা আদান-প্রদান প্ল্যাটফর্ম, ওয়েবসাইট বা সাইবার স্পেসে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে ভয়ভীতি প্রদর্শন, হুমকি প্রদান বা হয়রানি করা, মিথ্যা বা ক্ষতিকর তথ্য, অপমানজনক বার্তা, গালিগালাজ, গুজব বা মানহানিকর কনটেন্ট ছড়ানোর মাধ্যমে কোনো ব্যক্তির সুনাম বা মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত করা হলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

অবশেষে সমালোচনার মুখে খসড়া থেকে এটি বাদ দেওয়া হয়েছে। খসড়ায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) কনটেন্ট ব্লকের অনুরোধ করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তবে যেসব কনটেন্ট ব্লক হবে, সরকার তা জনস্বার্থে প্রকাশ করবে বলেও খসড়ায় উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া ধর্মীয় বিদ্বেষের সঙ্গে জাতিগত বিদ্বেষ ও ঘৃণার প্রসঙ্গও যুক্ত হয়েছে।