খুঁজুন
                               
বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২৫, ৩১ আশ্বিন, ১৪৩২

ট্রাইব্যুনালের চার্জশিটে নাম আসা ১৫ সেনা কর্মকর্তা হেফাজতে : সেনাবাহিনী

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ১২ অক্টোবর, ২০২৫, ১০:৫০ পূর্বাহ্ণ
ট্রাইব্যুনালের চার্জশিটে নাম আসা ১৫ সেনা কর্মকর্তা হেফাজতে : সেনাবাহিনী

গুম-খুনে জড়িত থাকার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চার্জশিটে নাম আসা সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে ১৫ জনকে ঢাকায় সেনা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। হেফাজতে থাকা কর্মকর্তাদের মধ্যে ১৪ জন কর্মরত এবং একজন এলপিআর-এ আছেন। শনিবার (১১ অক্টোবর) ঢাকা সেনানিবাসের মেসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মামলা–সংক্রান্ত বিষয়ে সেনাবাহিনীর পদক্ষেপ সম্পর্কে অবহিত করতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
মেজর জেনারেল হাকিমুজ্জামান বলেন, যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চার্জশিট হয়েছে, তাদের মধ্যে ১৫ জন বর্তমানে সেনা হেফাজতে রয়েছেন। আমরা মোট ১৬ জনকে সেনা হেফাজতে আসার জন্য বলেছিলাম, তাদের মধ্যে ১৫ জন এসে হেফাজতে রয়েছেন। তিনি বলেন, গত ৮ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রথম দুটি চার্জশিট জমা পড়ে। এরপর তৃতীয় আরেকটা চার্জশিট জমা পড়ে। এই সংবাদটি আসা শুরু করে বেলা ১১টা থেকে ১টার মধ্যে। আমরা টিভি স্ক্রলের মাধ্যমে জানতে পেরেছি চার্জশিট জমা পড়েছে এবং ট্রাইব্যুনাল এক্সেপটেড হয়েছে। চার্জশিটগুলোর মধ্যে একটা ছিল গুম সংক্রান্ত, যারা তখন ডিজিএফআই এ কর্মরত ছিল তাদের একটা বড় অংশের বিরুদ্ধে অভিযোগ। আরেকটা ছিল র‍্যাবের টিএফআই নিয়ে, আর আরেকটা ছিল ৪-৫ আগস্টের রামপুরার ঘটনা নিয়ে।
এরপর সঙ্গে সঙ্গে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়ে গেল। গ্রেপ্তারি পরোয়ানার পর আইজিপির কাছে চলে যায়। নিয়ম অনুযায়ী এবং ২২ তারিখ পর্যন্ত সময় দেওয়া হয় (গ্রেপ্তার করে হাজির করার জন্য)। তবে আমরা (সেনাবাহিনী) এখন পর্যন্ত কোনো চার্জশিট কিংবা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পাইনি। চার্জশিটে প্রায় ২৫ জন সেনা কর্মকর্তার নাম এসেছে। এর মধ্যে অবসরে আছেন ৯ জন কর্মকর্তা, এলপিআরে আছেন ১ জন কর্মকর্তা এবং কর্মরত আছেন ১৫ জন কর্মকর্তা। যারা অবসরে চলে গেছেন তাদের প্রতি আমাদের সেনা আইন ওইভাবে খাটে না।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বাংলাদেশের সব আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৮ তারিখ কর্মরত ১৫ ও এলপিআরে থাকা ১ জন সেনা কর্মকর্তাকে সেনা হেফাজতে আসার জন্য একটা আদেশ সংযুক্তি করে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। আদেশে তাদের বলা হয়েছে, ৯ তারিখে তারা যেন ঢাকা সেনানিবাসে সেনা হেফাজতে চলে আসেন। আমরা কিন্তু এখনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পাইনি বা পুলিশও আমাদের কিছু জানায়নি। তারপরও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার কারণে স্বপ্রণোদিত হয়ে এসব কর্মকর্তাদের হেফাজতে আসার জন্য আদেশ দিয়ে দেয়।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এই ধরনের প্র্যাকটিস করে। সংবেদনশীল কেসে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, শুরুতে তাদের আমরা হেফাজতে নিয়ে থাকি। পরে প্রয়োজনমতো কোর্ট-মার্শাল বা অন্যান্য আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হয়। আমরা যাদেরকে হেফাজতে আসার জন্য বলেছি, তাদের অধিকাংশই সাড়া দিয়েছেন; তবে একজন সাড়া দেননি। ওই কর্মকর্তা ৯ তারিখ পর্যন্ত প্রতিক্রিয়া জানাননি। ১০ অক্টোবর আমরা তার সঙ্গে ও তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করি। জানতে পারি তিনি ৯ অক্টোবর সকালে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন, একজন আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করার কথা বলে বের হয়েছিলেন, কিন্তু পরে বাড়ি ফেরেননি এবং পরিবারের সঙ্গে তার মোবাইলফোনেও যোগাযোগ স্থাপন করা যায়নি। তিনি মেজর জেনারেল কবির।
তিনি বলেন, এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা নিয়ম অনুযায়ী তাকে ‘ইলিগ্যাল অ্যাবসেন্ট’ হিসেবে ঘোষণা করি। এছাড়া ১০ অক্টোবর আমরা এ বিষয়ে আরও কিছু আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। একই সঙ্গে ডিজিএফআই, এনএসআই ও বিজিবিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, স্থলবন্দর, বিমানবন্দর ও সমুদ্রবন্দর দিয়ে তিনি অবৈধভাবে দেশের বাইরে যেন যেতে না পারে- এর ব্যবস্থা করা হোক। আমরা তার গ্রামের বাড়ি নেত্রকোণায়ও লোক পাঠিয়েছি। তিনি দেশের বাইরে চলে যেতে পারেন- এই আশঙ্কাকে মাথায় রেখে কাঠামোগতভাবে অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে। আমি নিজে ডিজি ডিজিএফআই, ডিজি এনএসআই এবং ডিজি বিজিবির সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছি।
অভিযুক্তদের বিচার সামরিক আইনে নাকি আইসিটি আইনে হবে, এ বিষয়ে কোনো সাংঘর্ষিক অবস্থান আছে কিনা? এছাড়া অভিযুক্তরা সাজা পাওয়ার আগে তাদের চাকরি থাকবে কিনা— এই ধরনের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইসিটি আইন বনাম সেনা আইন এটা না বলাই ভালো। মুখোমুখি বিষয়টি না বলাই ভালো। দ্বিতীয় যে বিষয়টি হচ্ছে, আইসিটি আইনে বলা আছে যে অভিযোগপত্রে নাম উঠলে চাকরি চলে যাবে। এখানে প্রথম বিষয়টি হচ্ছে যে অভিযুক্ত সে কি আসলে সাজাপ্রাপ্ত? সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার পরও ওই ব্যক্তির আপিলের সুযোগ থাকে। আপিল নিষ্পত্তি হওয়ার পর যদি সাজা বহাল থাকে, তখন তাকে আমরা সাজাপ্রাপ্ত বলতে পারব।
‘আবার দেখা যাবে এই বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে একজন খালাস পেয়ে গেলেন। খালাস পেয়ে গেলে ট্রাইব্যুনালের আইন অনুযায়ী সে আবার তার সার্ভিসে ফিরে যেতে পারবে। কিন্তু এখন প্রশ্ন হলো এর ভিতর দিয়ে তার যে সামাজিক ও অর্থনৈতিক… দেখা গেল অনেকে মানসিক চাপ সহ্য না করতে পেরে অসুস্থ হয়ে গেলেন বা কেউ হার্ট অ্যাটাক করে ফেললেন, এগুলোর কি হবে। এগুলো কি বলা হচ্ছে মানবাধিকার।’
তিনি বলেন, এখন সেনাবাহিনীতে নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম আছে। কোনো কর্মকর্তার বিচার চলাকালীন সময়ে সেনাবাহিনীর নিয়মে বয়স শেষ হয়ে গেলে সে তো অবসরে চলে যাবেন। তখন সে খালাস হলেও তো তাকে আমরা চাকরিতে নিতে পারব না। তাই ট্রাইব্যুনালের ওই আইনের বিষয়ে আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে এর ব্যাখ্যা চাইব।
চার্জশিটে যেসব কর্মকর্তাদের নাম এসেছে তাদের বিরুদ্ধে সেনা আইনে কোনো কার্যক্রম চলছে কিনা— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গুম সংক্রান্ত আমাদের ন্যাশনাল একটা কমিশন আছে। এই কমিশনকে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছি। বাংলাদেশ আর্মি জাস্টিসের প্রতি অটল। যেটা জাস্টিস হবে বাংলাদেশ আর্মি সেটার পক্ষে থাকবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে সেনাবাহিনীর এই মেজর জেনারেল বলেন, গুম কমিশনের প্রতিবেদনে কিন্তু বলা হয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অর্গানাইজেশন হিসেবে এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত না। আমাদের কতিপয় অফিসার কেউ হয়তো র‍্যাবে ছিল, কেউ হয়তো ডিজিএফআইয়ে ছিল, কিন্তু তারা আর্মিতে থাকা অবস্থায় কিন্তু না। র‍্যাব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্ডারে, আর্মি সদর দপ্তরের আন্ডারে নয়। ডিজিএফআই সরাসরি প্রাইম মিনিস্টার অফিসের আন্ডারে, কখনোই আর্মির আন্ডারে নয়। বর্তমানেও ডিজিএফআই প্রধান উপদেষ্টার অফিসের আন্ডারে। যেহেতু তারা আমাদের সদস্য, তাই তারা আমাদের হেফাজতে আছেন। অভিযোগপত্র আমাদের কাছে আসলে আমরা বুঝতে পারব কে কতটুকু জড়িত।
ট্রাইব্যুনাল একটি নির্দিষ্ট ডেট দিয়েছে অভিযুক্তদেরকে হাজির করার বিষয়ে— প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এখানে যেটা আইনগতভাবে হওয়ার কথা সেটা হবে।
আইনগত প্রক্রিয়াটা কী হবে এবং ২২ তারিখে তাদেরকে আদালতে হাজির করা যাবে কিনা— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আইনের বিষয়ে আমরা একটা ব্যাখ্যা চাইব। ব্যাখ্যা পাওয়ার পর, ২২ তারিখের বিষয়টা আমরা আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেব।
নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, পুরো জাতি এখন নির্বাচনমুখী। গত ১৩-১৪ মাস ধরে সেনাবাহিনী মাঠে কাজ করছে। অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়নে সেনা সদস্যরা বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের পরিমাণ তিনগুণ পর্যন্ত বাড়ানো হবে বলে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। ট্রেনিং, পোস্টিং, প্রমোশনসহ সব ধরনের প্রস্তুতি চলছে। এমন সময় এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ঘটনাটি সেনা সদস্যদের মনোবলে কিছুটা প্রভাব ফেলেছে। তবে সবকিছুর ঊর্ধ্বে থেকে আমরা সবসময় ন্যায়ের পক্ষে থাকব।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অবসরে যাওয়া যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে, তাদের পুলিশ চাইলে গ্রেপ্তার করতে পারে। আমরা শুধু বলেছি, যদি তারা আমাদের হেফাজতে আসতে চায়, তাহলে সেটাও সম্ভব। তবে মনে রাখতে হবে, অবসরপ্রাপ্তরা সরাসরি সেনা সদর দপ্তরের অধীন নন।
প্রসঙ্গত, গত ৮ অক্টোবর গুম-খুনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে সাবেক ও বর্তমান ২৪ জন সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আগামী ২১ অক্টোবরের মধ্যে তাদের গ্রেপ্তার করে ২২ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালে হাজির করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সূত্র : ঢাকা পোস্ট।

‘শর্ত না মানলে এনসিপি জুলাই সনদে সই করবে না’

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২৫, ১:১৬ অপরাহ্ণ
‘শর্ত না মানলে এনসিপি জুলাই সনদে সই করবে না’

আদেশ জারিসহ দুই শর্ত না মানলে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে না বলে জানিয়েছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকালে দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা আইনিভিত্তি ছাড়া এবং অর্ডারের ব্যাপারে নিশ্চয়তা ছাড়া যদি সনদে স্বাক্ষর করি, সেটা মূল্যহীন হবে। পরের সরকার এলে কিসের পরিপ্রেক্ষিতে দেবে, কি টেক্সট হবে সে নিশ্চয়তা আমরা চাই। সেই বিষয়টা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা জুলাই সনদের স্বাক্ষরের যেই অনুষ্ঠান বা যেই আয়োজনটা চলছে, সেখানে আমরা নিজেরা অংশীদার হবো না।
জুলাই সনদে স্বাক্ষরের বিষয়ে নাহিদ বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ সনদ স্বাক্ষরের আগেই প্রকাশ করতে হবে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জনগণের সার্বভৌম অভিপ্রায় অনুসারে প্রধান উপদেষ্টা জারি করবেন। জুলাই সনদ স্বাক্ষরের আগেই সনদ বাস্তবায়নের যে আদেশটা হবে সে আদেশের খসড়ায় আমাদের ঐক্যমত হতে হবে। তার ওপর ভিত্তি করে আমরা জুলাই সনদে স্বাক্ষরের বিষয়টা বিবেচনা করব।
তিনি বলেন, আদেশের টেক্সট যেটা তার খসড়া আমরা আগে দেখতে চাই। ড. ইউনূস তিনি যেহেতু জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শক্তিতে সরকার গঠন করেছেন সেই জায়গা থেকে সেটা প্রেসিডেন্ট নয় বরং গভর্মেন্ট হিসেবে ড. ইউনূস জারি করবেন। তিনি আরও বলেন, জুলাই সনদে ৮৪টি সংস্কারের বিষয় একত্রে গণভোটে যাবে। গণভোটে নোট অব ডিসেন্টের আলাদা কোনো কার্যকারিতা থাকবে না। গণভোটের প্রশ্ন কি হবে তা আগেই চূড়ান্ত করতে হবে। আমাদেরকে সেটা দেখাতে হবে রাজনৈতিক দলগুলো।
এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, গণভোট দ্বারা জনগণ সনদ অনুমোদন করলে অর্থাৎ সনদের পক্ষে ভোট দিলে পরের সংসদকে কনস্টিটিউট পাওয়ার ডেলিগেট করা হবে। সনদ অনুযায়ী সংবিধান সংস্কার করার জন্য এই দাবির সঙ্গে মোটামুটি সবাই এখন একমত। আমাদের কাছে কিন্তু এখনো স্পষ্ট হয়নি, এটার কি সংশোধনী হবে?
যে কারণে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করছে না এনসিপি সেটি হলো- প্রথমত জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দেওয়া হচ্ছে না; দ্বিতীয়ত, এই সনদপত্রের মূল টেক্সটও দেখানো হয়নি তাদের। যার কারণে এই বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।

এইচএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশ, পাসের হার ৫৮.৮৩ শতাংশ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২৫, ১০:৫৬ পূর্বাহ্ণ
এইচএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশ, পাসের হার ৫৮.৮৩ শতাংশ

এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল ২০২৫ প্রকাশ করা হয়েছে। নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ড মিলিয়ে গড় পাসের হার ৫৮.৮৩ শতাংশ। এবার গত বছরের তুলনায় পাসের হার কমেছে ১৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ। এ বছর জিপিএ৫ পেয়েছেন ৩৯ হাজার ৯৭ জন শিক্ষার্থী।
২০২৪ সালে গড় পাসের হার ছিল ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ। ২০২৩ সালে গড় পাসের হার ছিল ৭৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১০টায় মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকা, রাজশাহী, কুমিল্লা, যশোর, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট, দিনাজপুর, ময়মনসিংহ, বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড এবং বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড একযোগে নিজেদের মতো করে ফল প্রকাশ করেছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে মোট ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার জন্য ফরম পূরণ করেন। তাদের মধ্যে ৬ লাখ ১৮ হাজার ১৫ জন ছাত্র এবং ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৯৬ জন ছাত্রী। সারা দেশে মোট ২ হাজার ৭৯৭টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তবে প্রায় ২৭ হাজার শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেননি। আর এবারও ফল তৈরি হয়েছে ‘বাস্তব মূল্যায়ন’ নীতিতে।
গত জুলাই মাসে প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষার মতো এবার এইচএসসির ফল প্রকাশ ঘিরে কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিকতা রাখা হয়নি।
৯ বোর্ডের এইচএসসি পরীক্ষার ফল দেখা যাবে যে পদ্ধতিতে
দেশের নয়টি বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত এইচএসসি পরীক্ষার ফল দেখতে শিক্ষার্থীরা www.educationboardresults.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে নিজের ফল দেখতে পারবে।
আবার মোবাইল থেকে ফল জানতে মেসেজ অপশনে গিয়ে লিখতে হবে — HSC [বোর্ডের প্রথম তিন অক্ষর] [রোল নম্বর] 2025—এবং পাঠাতে হবে ১৬২২২ নম্বরে (যেমন : HSC Dha 123456 2025)।
মাদ্রাসার ‘আলিম’ পরীক্ষার ফল দেখা যাবে যেভাবে
বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত ২০২৫ সালের আলিম পরীক্ষার পরীক্ষার ফল দেখা যাবে অনলাইন ও এসএমএস— উভয় মাধ্যমেই।
শিক্ষার্থীরা www.bmeb.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে ‘অনলাইন সেবা-১’ কর্নার থেকে ‘আলিম পরীক্ষা ২০২৫’ অপশনে ক্লিক করে জেলা ও কেন্দ্রভিত্তিক ফল দেখতে পারবে।
এ ছাড়া www.educationboardresults.gov.bd ওয়েবসাইটেও রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে ব্যক্তিগত ফলাফল জানা যাবে।
আবার, ফল জানতে আগ্রহী শিক্ষার্থীরা চাইলে মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে প্রি-রেজিস্ট্রেশন করে রাখতে পারবে। এজন্য মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে টাইপ করতে হবে— ALIM MAD রোল নম্বর 2025— এবং তা পাঠাতে হবে ১৬২২২ নম্বরে। যেমন : ALIM MAD 123456 2025। প্রি-রেজিস্ট্রেশন করা থাকলে ফল প্রকাশের পর সঙ্গে সঙ্গে ফল মোবাইলে পৌঁছে যাবে।
শুধু শিক্ষার্থী নয়, প্রতিষ্ঠানের ফলাফল জানার জন্যও আলাদা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানভিত্তিক ফলাফল জানতে https://eboardresults.com/v2/home ওয়েবসাইটে গিয়ে ‘Institution Result’ সিলেক্ট করে বোর্ড ও প্রতিষ্ঠানের ইআইআইএন (EIIN) নম্বর ব্যবহার করে পুরো ফল ডাউনলোড করা যাবে।
বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ফল দেখা যাবে যে পদ্ধতিতে
২০২৫ সালের এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) পরীক্ষার ফল শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং অনলাইনে দেখতে পারবে।
প্রথমত, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে www.bteb.gov.bd প্রবেশ করে ‘Result Corner’-এ ক্লিক করতে হবে। সেখানে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আইডি অথবা প্রতিষ্ঠান কোড এন্ট্রি করে প্রতিষ্ঠানভিত্তিক ফলাফলের ফলপত্র (Result Sheet) ডাউনলোড করা যাবে।
দ্বিতীয়ত, শিক্ষার্থীরা www.bteb.gov.bd অথবা www.educationboardresults.gov.bd ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে রোল নম্বর ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্রদান করে নিজের ফলাফলসহ গ্রেড ভিত্তিক ট্রান্সক্রিপ্ট (Grade-based Transcript) ডাউনলোড করতে পারবে।
তৃতীয়ত, মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে ফলাফল জানার সুযোগও রয়েছে। এ জন্য মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে টাইপ করতে হবে—
HSC TEC <রোল নম্বর> 2025 এবং পাঠাতে হবে ১৬২২২ নম্বরে।
উদাহরণস্বরূপ : SSC TEC 123456 2025 পাঠাতে হবে 16222 নম্বরে।

‘মা ইলিশ সংরক্ষণ-২০২৫’ উপলক্ষে চাঁদপুরে নৌবাহিনীর অভিযান অব্যাহত

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর, ২০২৫, ১০:৪৯ পূর্বাহ্ণ
‘মা ইলিশ সংরক্ষণ-২০২৫’ উপলক্ষে চাঁদপুরে নৌবাহিনীর অভিযান অব্যাহত

সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও ইলিশ প্রজনন মৌসুমে ‘ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার’ এর আওতায় সমুদ্র, উপকূলীয় অঞ্চল ও অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতে ‘মা ইলিশ সংরক্ষণ-২০২৫’ অভিযান পরিচালনা করছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। সরকারের ঘোষিত এ নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সমুদ্র, নদী ও উপকূলীয় এলাকায় মোতায়েন রয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। এরই ধারাবাহিকতায় আজ বৃহস্পতিবার (১৬-১০-২৫) কমান্ডার বিএন ফ্লীট  কমান্ডার এর জাহাজ বানৌজা ধানসিঁড়ি  কতৃক চাঁদপুর জেলার চাদপুর সদর, হাইমচর, মাঝেরচর, মাঝিরচর, হরিনা ফেরীঘাট, চর ভৈরবী এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে আনুমানিক ৩৫ লক্ষ  টাকা মূল্যের প্রায় ০১ লক্ষ মিটার অবৈধ জাল  জব্দ করা হয়। পরবর্তীতে অবৈধ জালসমূহ স্থানীয় প্রশাসন/ মৎস্য কর্মকর্তার উপস্থিতিতে বিধি মোতাবেক ধ্বংস করা হয়। ইতোমধ্যে চাঁদপুরে গত ০৪ অক্টোবর হতে ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত নৌবাহিনীর অভিযানে প্রায় ১০ লক্ষ মিটার অবৈধ জাল জব্দের মাধ্যমে ধ্বংস করা হয়েছে।
দেশের সমুদ্র, উপকূলীয় অঞ্চল ও অভ্যান্তরীণ নদ-নদীসহ জাতীয় সম্পদ ইলিশের প্রজনন সম্ভাব্য স্থানসমূহে নৌবাহিনী নিবিড়ভাবে নিরাপত্তা প্রদান করছে। শুধু নৌবাহিনীর জাহাজই নয়, বরং বিভিন্ন বোটের মাধ্যমে ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে প্রজননকালীন সময়ে ইলিশ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে নৌবাহিনীর সদস্যগণ। এর ফলে সমুদ্র, উপকূলীয় অঞ্চল ও অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতে অবৈধভাবে মাছ স্বীকার বহুলাংশে কমে এসেছে।
‘মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২৫০ বাস্তবায়নে নৌবাহিনীর নিয়োজিত জাহাজসমূহ সুবিশাল বঙ্গোপসাগর ও অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতে মৎস্য শিকার বন্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। গত ০৪ অক্টোবর। ২০২৫ থেকে শুরু হওয়া বাংলাদেশ নৌবাহিনীর এই অভিযান আগামী ২৫ অক্টোবর ২০২৫ পর্যন্ত থাকবে। বর্ণিত সময়ে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুদ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ রয়েছে। এছাড়া সামুদ্রিক মৎস্য আহরণ এলাকাতেও সকল প্রকার মৎস্য নৌযান কর্তৃক সকল প্রজাতির মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ রয়েছে। অভিযান পরিচালনাকালে নৌসদস্যগণ প্রজনন মৌসুমে ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ সংক্রান্ত সরকারি নিষেধাজ্ঞা ব্যস্তবায়ন ও গণসচেতনতা সৃষ্টিতে স্থানীয় প্রশাসনকে সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করবে। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর এ অভিযান পরিচালনার ফলে দেশের সমুদ্রসীমায় ও অভ্যন্তরীণ নদ-নদীতে জাতীয় সম্পদ ইলিশের প্রাচুর্য্য বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায়।