খুঁজুন
                               
শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৫, ৮ কার্তিক, ১৪৩২

নিরাপত্তা খাত সংস্কারে র‍্যাব বিলুপ্তি বিবেচনা করতে হবে: ডব্লিউজিইআইডি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ৯ জুলাই, ২০২৫, ১:৩১ অপরাহ্ণ
নিরাপত্তা খাত সংস্কারে র‍্যাব বিলুপ্তি বিবেচনা করতে হবে: ডব্লিউজিইআইডি

নিরাপত্তা খাতের সংস্কারের অংশ হিসেবে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) বিলুপ্ত করার বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারকে গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা উচিত—এমন সুপারিশ করেছে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের আওতাধীন জোরপূর্বক গুমসংক্রান্ত ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এনফোর্সড অর ইনভলান্টারি ডিজঅ্যাপিয়ারেন্সেস (ডব্লিউজিইআইডি)। একই সঙ্গে তারা বলেছে, যারা গুমের মতো গুরুতর অপরাধে জড়িত নন, র‍্যাবের সেই সদস্যদের নিজ নিজ বাহিনীতে ফেরত পাঠাতে হবে।
ডব্লিউজিইআইডির প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআইকে কেবলমাত্র সামরিক গোয়েন্দা কার্যক্রমে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। সংস্থাটির দায়িত্ব, কর্তৃত্ব এবং বাজেট কাঠামো স্পষ্ট ও সীমিত করার প্রস্তাবও উঠে এসেছে প্রতিবেদনে।
প্রসঙ্গত, গত জুনে বাংলাদেশ সফর করে ডব্লিউজিইআইডির কারিগরি প্রতিনিধি দল। সফরকালে তারা সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা, সেনাবাহিনী প্রধান, পুলিশ, গুম কমিশন এবং গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সফর শেষে ২৫ জুন তারা প্রতিবেদনটি সরকারকে পাঠায়।
এর আগে র‍্যাবের মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে বাহিনীটি বিলুপ্তির সুপারিশ করেছিল গঠিত গুম কমিশন, জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের তথ্যানুসন্ধানী দল এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।
ডব্লিউজিইআইডি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাংলাদেশে সংঘটিত অধিকাংশ গুমের ঘটনায় র‍্যাব প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত ছিল। ডিজিএফআইও কিছু ক্ষেত্রে সম্পৃক্ত ছিল বলে উল্লেখ করা হয়। তারা বলেছে, এসব বাহিনীর সদস্যদের একটি বড় অংশ এখনও নিজ নিজ পদে বহাল রয়েছেন, যা বিচারপ্রক্রিয়ার ওপর জনগণের আস্থা ক্ষুণ্ণ করছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর মধ্যে জবাবদিহির অভাব এবং দায়মুক্তির সংস্কৃতি গুমের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে প্রধান প্রতিবন্ধক। ডব্লিউজিইআইডি মনে করে, সংস্থাগুলোর প্রতি জনগণের আস্থা পুনঃস্থাপন করতে হলে, প্রকৃত অর্থে নিরপেক্ষ তদন্তে সহযোগিতা এবং অপরাধীদের অপসারণ নিশ্চিত করতে হবে।
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী বলেন, জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর র‍্যাবের অভ্যন্তরে সংস্কার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, ‘র‍্যাব একটি সরকারি আদেশে গঠিত বাহিনী, কাজেই সরকার চাইলে সদস্যরা নিজ নিজ বাহিনীতে ফিরে যাবে।’ তবে বাহিনীর অনেক ইতিবাচক ভূমিকা রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। তার মতে, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতের মাধ্যমে র‍্যাবকে কার্যকর রাখা সম্ভব।
জুলাই-পরবর্তী মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ‘আফটার দ্য মনসুন রেভল্যুশন: এ রোডম্যাপ টু লাস্টিং সিকিউরিটি সেক্টর রিফর্ম ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এ প্রতিবেদনটি ইউরোপ ও আমেরিকার কূটনীতিকদের কাছেও পৌঁছে দেওয়া হয়।
প্রতিবেদন প্রকাশের সময় কয়েকটি ইউরোপীয় রাষ্ট্রের কূটনীতিক র‍্যাব বিলুপ্তি নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করেন। গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন পশ্চিমা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘র‍্যাব গঠনের সময় মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু একইসঙ্গে তারা জঙ্গিবাদ ও গুরুতর অপরাধ দমনেও কার্যকর ভূমিকা রেখেছে। এখন বাহিনীটি বিলুপ্ত হলে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সমস্যা তৈরি হতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘র‍্যাব গঠনের পেছনে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের ভূমিকা ছিল। সে সময় বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় এ বাহিনীর প্রয়োজনীয়তা ছিল। তবে র‍্যাব পরবর্তীতে ভাড়াটে বাহিনীর মতোও ব্যবহৃত হয়েছে, যা দুঃখজনক।’
একই আলোচনায় অংশ নেওয়া আরেক কূটনীতিক মনে করেন, বাহিনীটি রাজনৈতিকভাবে ব্যবহারের কারণে জবাবদিহিহীন হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার চেষ্টা করলেও র‍্যাবকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করে পুনর্গঠনের কাজ কঠিন হবে। বাহিনীটি অতীতে ‘আয়নাঘর’ নামে পরিচিত নির্যাতনকেন্দ্র পরিচালনা করত, যার বেশ কিছু আলামত এখন ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে।’
এই কূটনীতিকের মতে, ভবিষ্যতে রাজনৈতিক সরকার ফিরে এলে বাহিনীর পুরনো রূপে ফেরার সম্ভাবনা থেকেই যায়। কারণ অতীতে ক্ষমতাসীন যে দলই হোক, র‍্যাবকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা হয়েছে। কাজেই র‍্যাব বিলুপ্ত না করে সংবিধান ও মানবাধিকার অনুযায়ী সংস্কার করাই হতে পারে সবচেয়ে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ।

উপদেষ্টাদের নিয়ে এত প্রশ্ন কেন?

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৫, ১:৪১ অপরাহ্ণ
উপদেষ্টাদের নিয়ে এত প্রশ্ন কেন?

বাংলাদেশে রাজনীতির মাঠ এখন উত্তপ্ত নয়, বলা ভালো, গরম চুল্লির ঢাকনা সবে নড়তে শুরু করেছে। কারণ একটাই, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে রয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুস। তিনি এবার শুধু অর্থনীতির সমীকরণ নয়, রাজনীতির সমীকরণও মেলাতে নেমেছেন। কিন্তু তার কাগজের খাতা যেন উলটেপালটে গেছে উপদেষ্টাদের নিয়েই।

গত ক’দিনে পরপর তিনটি দলের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা – বিএনপি, জামায়াতে ইসলামি ও জাতীয় নাগরিক পার্টি -এনসিপি। প্রতিটি বৈঠকই ছিল রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। আর প্রতিটি বৈঠকের পরই তিন দল এক সুরে বলেছে, উপদেষ্টাদের অনেকে নিরপেক্ষ নন, তারা দলীয় ভূমিকা পালন করছে।

একই কথা তিন দলের মুখে শুনে মনে হতে পারে, যেন পূর্বনির্ধারিত স্ক্রিপ্ট। কিন্তু স্ক্রিপ্ট লিখেছেন কে? তা নিয়ে এখনই জল্পনা তুঙ্গে।

উপদেষ্টাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় দুই নাম, তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এবং স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া। দু’জনই তরুণ, এক সময় ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। এখন সরকারের উপদেষ্টা। তাঁদের বর্তমান নিয়ে কথা হচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে যে, তাঁরা অন্তবর্তী নিরপেক্ষ সরকারের থেকে এনসিপির হয়ে কাজ করছেন।

প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়েই সরকার প্রধানের কার্যালয় থেকে এই দুই উপদেষ্টাকে নাকি পদত্যাগের ‘পরামর্শ’ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা তা শোনেননি। এখন শোনা যাচ্ছে, মাহফুজ আলমের পরিবারের একজন আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থী হতে চলেছেন। আর আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া কুমিল্লার মুরাদনগরে বিএনপির স্থানীয় প্রার্থীর সঙ্গে প্রকাশ্য নির্বাচন পূর্ব দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন।

এই প্রেক্ষাপটে বিএনপির বক্তব্য স্পষ্ট ‘নির্বাচনের আগে বিতর্কিত উপদেষ্টাদের যেতে হবে’। বিএনপির দাবি, যেহেতু তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর নেই,অন্তর্বর্তী সরকারকেই সেই ভূমিকা নিতে হবে। তাই অন্তত নিরপেক্ষতার আবরণটুকু বজায় থাকুক।
কিন্তু ‘নিরপেক্ষতা’ কথাটাই এখন বাংলাদেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে বিতর্কিত মুদ্রা। যেদিকেই উলটে ধরো, কারও না কারও মুখ সেখানে ফুটে ওঠে।
বিএনপি একা নয়। জামায়াতে ইসলামি ও এনসিপিও অভিযোগ তুলেছে – সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন সরাসরি রাজনৈতিক দলের ঘনিষ্ঠ। কেউ কেউ তো অতীতে নির্বাচনে প্রার্থীও ছিলেন। আবার জাতীয় পার্টির একাংশ ও গণ অধিকার পরিষদও বলেছে, উপদেষ্টাদের মধ্যে নিরপেক্ষতার অভাব রয়েছে।
এমনটা যদি অবস্থা হয় তাহলে অধ্যাপক ইউনুস কি আসন্ন নির্বাচনে এমন এক উপদেষ্টা পরিষদ নিয়ে আছেন, যাঁদের মধ্যে অর্ধেকই রাজনৈতিকভাবে চিহ্নিত?
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের সুনাম আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে। কিন্তু দেশের ভেতরে তাঁর প্রশাসনিক দক্ষতা নিয়ে সমালোচনা বাড়ছে। অনেকেই বলছেন, ইউনুস সাহেব হয়তো বিশেষজ্ঞদের দিয়ে সরকার গঠন করতে চেয়েছিলেন,কিন্তু রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠতে পারছেন না উপদেষ্টাই।
অধ্যাপক ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার শুরু থেকেই বলছে, তাদের মূল লক্ষ্য সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর অভিযোগ, এই সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা নিজেরাই রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট।
বাংলাদেশে ‘নির্দলীয়’ শব্দটির এক বিশেষ রাজনৈতিক ইতিহাস আছে। ১৯৯৬ সালে বিএনপি সরকারের পতনের পর গঠিত হয়েছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা- সেই ব্যবস্থার মূল ভিত্তিই ছিল নির্বাচনের আগে একটি নিরপেক্ষ প্রশাসন। ২০১১ সালে সেই ব্যবস্থা বাতিল হওয়ার পর থেকেই প্রশ্ন ঘুরেফিরে এক জায়গায় – এখন নির্বাচন দেখবে কে?
অধ্যাপক ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার সেই প্রশ্নের উত্তর হতে পারত। কিন্তু উপদেষ্টাদের নিরপেক্ষতার মানদণ্ডই প্রশ্নবিদ্ধ হয়, তাহলে সেই সমীকরণ কতটা বিশ্বাসযোগ্য থাকে?
ঢাকার রাজনৈতিক চৌহদ্দি ছাড়িয়ে এখন নাগরিক সমাজও প্রশ্ন তুলছে – ‘নিরপেক্ষ’ সরকারের উপদেষ্টারা আসলে কতটা নিরপেক্ষ? কেউ ব্যাংকের পরিচালক,কেউ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ট্রাস্টি,কেউ আবার সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। এদের মধ্যে কারও না কারও রাজনৈতিক যোগাযোগ থাকা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু নির্বাচনকালীন সরকারে বসে সেই যোগাযোগ কতটা প্রভাব ফেলতে পারে, সেটা নিয়েই বড় আলোচনা।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘বিশ্বাস’ নামের জিনিসটা বহুদিন আগেই অনুপস্থিত। এক পক্ষ অন্য পক্ষকে বিশ্বাস করে না, প্রশাসনকে বিশ্বাস করে না, এমনকি গণমাধ্যমকেও করে না। এখন যদি অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতাও প্রশ্নের মুখে পড়ে,তাহলে সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করবে কাকে?
অধ্যাপক ইউনুস এখন যে পরিস্থিতিতে আছেন, তাতে তাকে একাধারে অর্থনীতিবিদ, রাজনীতিক ও মনস্তাত্ত্বিক— তিন ভূমিকাতেই অভিনয় করতে হচ্ছে। অর্থনীতি তিনি বোঝেন, রাজনীতি বুঝতে শুরু করেছেন, কিন্তু মনস্তত্ত্ব? সেটাই সবচেয়ে জটিল। কারণ,তাঁর প্রতিটি সিদ্ধান্ত এখন ব্যাখ্যা করা হচ্ছে রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে। কাকে উপদেষ্টা করা হলো, কোন দলের অনুরোধে করা হলো, কে কী ভূমিকা রাখছেন – সব কিছু নিয়েই চলছে ব্যাখ্যা ও প্রতিব্যাখ্যা।
তাঁর সামনে এখন দুটি পথ – হয় বিতর্কিত উপদেষ্টাদের সরিয়ে একদম পরিষ্কার বার্তা দেওয়া, নয়তো রাজনৈতিক ঝড়ের মধ্যে নাবিকের মতো দাঁড়িয়ে থাকা। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতিতে ঝড়ের গতি এমন যে,তাতে অভিজ্ঞ নাবিকও দিক হারিয়ে ফেলেন।
এখন নাগরিক সমাজের কৌতূহল একটাই – এই উপদেষ্টাদের নিয়েই কি অধ্যাপক ইউনুস নির্বাচনের পথে হাঁটবেন? যদি তাই হয়, তাহলে সেই নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিয়ে আগেই যে সন্দেহ তৈরি হচ্ছে, তা কি আর মুছবে?
বাংলাদেশে নির্বাচন মানেই রাজনৈতিক রণক্ষেত্র। সেই মাঠে যদি রেফারির পক্ষপাত নিয়ে আগেই প্রশ্ন ওঠে,তাহলে খেলা শুরু হওয়ার আগেই ফলাফল নিয়ে বিতর্ক তৈরি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। প্রধান উপদেষ্টার দফতর নিশ্চয়ই তা জানে। এখন দেখা যাক, অধ্যাপক ইউনুস এই ঝড়ের মধ্যে কীভাবে নিজের নৌকো চালান – অর্থনীতির সূত্রে,নাকি রাজনীতির কৌশলে।

নির্বাচিত সরকার ছাড়া কিস্তি ছাড় করতে রাজি নয় আইএমএফ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৫, ১:৩০ অপরাহ্ণ
নির্বাচিত সরকার ছাড়া কিস্তি ছাড় করতে রাজি নয় আইএমএফ

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের ৬ষ্ঠ কিস্তি ছাড় করার কথা আগামী ডিসেম্বরের শেষে বা জানুয়ারির প্রথমার্ধে। কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর যে রাজনৈতিক সরকার আসবে, তারা আইএমএফ এর ঋণের শর্ত মানবে কি-না, সেই নিশ্চয়তা না পেয়ে কিস্তির অর্থ ছাড় করতে রাজি নয় সংস্থাটি। ওয়াশিংটনে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সম্মেলনে বাংলাদেশকে এমন বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন সম্মেলনে অংশ নেওয়া অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। ডলার সংকটের মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকার আইএমএফ-এর কাছ থেকে ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর করে। বর্তমান অন্তবর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর সংস্থাটি থেকে আরও ৮০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ চুক্তি সই করে। ফলে মোট ৫.৫ বিলিয়ন ডলার ঋণের মধ্যে ৫তম কিস্তি পর্যন্ত প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। আগামী ডিসেম্বরে ৬ষ্ঠ কিস্তি ও আগামী জুনে ৭ম কিস্তি পাওয়ার কথা। সাধারণত প্রতি কিস্তি ছাড়ের আগে আইএমএফ এর দেওয়া শর্তগুলোর কতটুকু বাস্তবায়ন করেছে সরকার, তা যাচাই করতে সংস্থাটির একটি মিশন দুই সপ্তাহ করে বাংলাদেশে এসে রিভিউ করে থাকে। ৬ষ্ঠ কিস্তি ছাড় করার আগে পূর্ব নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী আগামী ২৯ অক্টোবরে এই মিশন আসছে বাংলাদেশে। ৬ষ্ঠ কিস্তি ছাড়ের পূর্বশর্ত হিসেবে আইএমএফ যেসব শর্ত দিয়েছিল, তার মধ্যে শুধু রাজস্ব আহরণের শর্ত পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ। বাকি সবগুলো পূরণ করেছে বলে জানিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের জানান, ‘আমরা সব শর্ত পূরণ করলেও সময়মতো কিস্তির অর্থ নাও পেতে পারি। ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের পর রাজনৈতিক সরকার ঋণের শর্তগুলো মানবে কি-না, সেটি নিশ্চিত হওয়ার পর তারা ৬ষ্ঠ কিস্তির অর্থ ছাড় করবে।’ অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ঋণের আগামী কিস্তির অর্থ ডিসেম্বরের বদলে মার্চ-এপ্রিলে ছাড় করবে আইএমএফ।

‘আমার পুরো শরীর নাকি প্লাস্টিক সার্জারি করা’

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৫, ১:২৪ অপরাহ্ণ
‘আমার পুরো শরীর নাকি প্লাস্টিক সার্জারি করা’

বলিউড কিংবা হলিউডের অনেক তারকাই প্লাস্টিক সার্জারি করিয়েছেন। মার্কিন পপ তারকা কার্ডি বি থেকে বলিউড তারকা শিল্পা শেঠি, আনুশকা শর্মা—অনেকেই প্লাস্টিক সার্জারি করার কথা স্বীকারও করেছেন। যদিও ঢাকার তারকাদের মধ্যেও অনেকের প্লাস্টিক সার্জারি করানোর বিষয়টি নিয়ে গুঞ্জন থাকলেও তা নিয়ে তাদের খুব একটা কথা বলতে দেখা যায় না। তবে সম্প্রতি এক পডকাস্ট শোতে হাজির হয়ে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান।
সেখানে জয়া আহসান বলেন, ‘মানুষ বলে, আমার পুরো শরীর নাকি প্লাস্টিক সার্জারি করা। এটা কিন্তু আমি শুনেছি।আমার নাকি হেড টু টো (মাথা থেকে পা পর্যন্ত) প্লাস্টিক সার্জারি করা।’ এরপর তিনি বলেন, ‘বোটক্স, এটা-সেটা (ব্যবহার করি)—এগুলো বলে মানুষ। মানুষ মনে করে, এগুলো (মন্তব্য) আমি দেখি না। আমি দেখি মাঝেমধ্যে। আমাদের কমেন্ট বক্স দেখলে আমাদের দেশের পুরুষদের স্টেট অব মাইন্ডটা (মানসিক অবস্থা) বোঝা যায়।’ তবে প্লাস্টিক সার্জারি করেছেন, নাকি করেননি—তা স্পষ্ট করেননি এই অভিনেত্রী। এ সময় ট্রল প্রসঙ্গেও কথা বলেন তিনি। ২০১৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী ২’ ছবিতে তাঁর বলা ‘মারোওও’ সংলাপটি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক ট্রল হয়।
এই প্রসঙ্গে জয়া বলেন, এটা খুব দরকার ছিল, ভালো হয়েছে তো, পচানি খাইছি না। সব সময় সবকিছুতে সফল হব? ভুল করেছি, সেটাই ঠিক আছে। আমার জীবনে কোনো কিছু ভুল না। ওই ভুলগুলো নিয়েই আজকের জয়া আমি। ২০২৫ সাল জয়া আহসানের জন্য বেশ সফল একটি বছর। বাংলাদেশ ও ভারতে তার অভিনীত ‘তাণ্ডব’, ‘উৎসব’, ‘ডিয়ার মা’ ও ‘পুতুল নাচের ইতিকথা’ ছবিগুলো মুক্তি পেয়েছে। সর্বশেষ ১৯ সেপ্টেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় তার নতুন ছবি ‘ফেরেশতে’। পাশাপাশি ওটিটিতে মুক্তি পেয়েছে ‘জয়া আর শারমিন’ ও ‘নকশীকাঁথার জমিন’।