খুঁজুন
                               
শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২৯ ভাদ্র, ১৪৩২

জেন্ডার সংবেদনশীল সাংবাদিকতায় আমাদের করণীয়

উজ্জ্বল হোসাইন
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৫ মে, ২০২৫, ১২:৩৫ অপরাহ্ণ
জেন্ডার সংবেদনশীল সাংবাদিকতায় আমাদের করণীয়

গণমাধ্যম সমাজের দর্পণ। এটি যেমন জনমত গঠনে ভূমিকা রাখে, তেমনি সমাজের প্রচলিত ধ্যান-ধারণা, মূল্যবোধ ও সংস্কৃতিকেও প্রভাবিত করে। আধুনিক গণতান্ত্রিক সমাজে সাংবাদিকতার একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হলো বৈচিত্র্য, সাম্য ও মানবাধিকারের প্রশ্নে সত্যনিষ্ঠ, নিরপেক্ষ ও সংবেদনশীল প্রতিবেদন প্রকাশ করা। জেন্ডার সংবেদনশীল সাংবাদিকতা এই বৃহত্তর নৈতিক ও পেশাগত দায়িত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। বর্তমানে নারী, তৃতীয় লিঙ্গ এবং অন্যান্য লিঙ্গ বৈচিত্র্যের মানুষ সমাজে নানা ধরনের বৈষম্য, নির্যাতন ও বঞ্চনার শিকার হন। সাংবাদিকতা যখন এই বৈষম্যগুলোকে তুলে ধরার পরিবর্তে তা আরও তীব্র করে তোলে, তখন সেটি সমস্যার অংশ হয়ে দাঁড়ায়। অন্যদিকে, সাংবাদিকতা যদি জেন্ডার সংবেদনশীল হয়, তবে সেটি সমাজ পরিবর্তনের শক্তিশালী হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে।
জেন্ডার সংবেদনশীল সাংবাদিকতা হলো এমন একটি পদ্ধতিগত দৃষ্টিভঙ্গি, যেখানে সংবাদ সংগ্রহ, লেখা, উপস্থাপন এবং বিশ্লেষণের প্রতিটি পর্যায়ে লিঙ্গ বৈচিত্র্য, সমতা ও মর্যাদার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়। এটি কেবল পুরুষ-নারী বিভাজনের গণ্ডিতেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং সকল লিঙ্গ পরিচয় ও অভিজ্ঞতাকে অন্তর্ভুক্ত করে। এই ধরনের সাংবাদিকতা সমাজে প্রচলিত লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য, সহিংসতা ও বিদ্বেষের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখতে চায়। জেন্ডার সংবেদনশীল সাংবাদিকতা তথ্য উপস্থাপন করে এমনভাবে, যা কাউকে অপমান করে না, লিঙ্গ পরিচয়কে হাস্যরসের বিষয় করে তোলে না, এবং যা নারীর কিংবা অন্যান্য লিঙ্গ পরিচয়ের ব্যক্তির প্রতি অবমাননাকর ভাষা বা দৃষ্টিভঙ্গি ব্যবহার করে না।
বাংলাদেশসহ অনেক দেশে গণমাধ্যমে জেন্ডার সংবেদনশীলতা এখনো পুরোপুরি গৃহীত হয়নি। সংবাদপত্র, টেলিভিশন, অনলাইন পোর্টাল এমনকি সোশ্যাল মিডিয়াতেও আমরা প্রায়ই দেখি। ভিকটিম-ব্লেমিং-ধর্ষণ বা যৌন সহিংসতার ঘটনার বর্ণনায় অনেক সময় ভুক্তভোগীকেই দোষারোপ করা হয়। তার পোশাক, চলাফেরা বা নিয়ম না মানার বিষয় তুলে ধরা হয়। ক্লিকবেইট শিরোনাম ও যৌন উত্তেজক উপস্থাপনা। নারীর শরীর বা যৌনতা নিয়ে চটকদার শিরোনাম, ছবি বা ভিডিও ব্যবহার করা হয় যা মূল বিষয় থেকে পাঠক/দর্শককে অন্যদিকে আকর্ষণ করে। তৃতীয় লিঙ্গ/হিজড়া জনগোষ্ঠীর প্রতি অবমাননাকর শব্দ ব্যবহার করা হয়। এখনও অনেক সংবাদমাধ্যমে উভলিঙ্গ, হিজড়া সমস্যা বা পুরুষ-না-নারী-না ধরনের শব্দ ব্যবহার করা হয় যা গভীরভাবে অসম্মানজনক। নারীর সফলতাকে পারিবারিক অবদানের মাধ্যমে খাটো করা হচ্ছে। একজন নারী যখন কোনো ক্ষেত্রে সফল হন তখন সেটিকে তাঁর স্বামী বা পরিবারের সহযোগিতার ফল হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়।
তাই জেন্ডার সংবেদনশীল সাংবাদিকতা বাস্তবায়নে আমাদের বহুমাত্রিক পদক্ষেপ নিতে হবে। সাংবাদিকদের জন্য প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। সংবাদ কর্মীদের জেন্ডার বিষয়ে মৌলিক জ্ঞান থাকা আবশ্যক। কীভাবে লিঙ্গ বৈষম্য ঘটে কোন শব্দগুলো অবমাননাকর বা স্টেরিওটাইপ তৈরি করে এসব বিষয়ে নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও কর্মশালা দরকার। জেন্ডার-বিষয়ক নীতিমালা মেনে চলার জন্য নিউজরুমে একটি সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন থাকা উচিত। আমাদের ভাষা ও উপস্থাপনা সচেতন হতে হবে। সংবাদে কোন শব্দ ব্যবহারে নারীর প্রতি অবমাননা হবে সেটি ত্যাগ করতে হবে। সংবাদ পরিবেশনে লিঙ্গ-নিরপেক্ষ ভাষা ব্যবহার করা উচিত। যেমন-অভিযুক্ত ব্যক্তি বলা যেতে পারে ধর্ষক, ধর্ষিতার ছবি প্রকাশ না করা যেতে পারে। আমরা প্রায়ই সময় দেখি দোষী প্রমাণিত না হওয়ার আগেই ধর্ষক, হত্যাকারী, মাদক ব্যবসায়ী, পতিতা, চোর, ডাকাত ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করা হয়। এসব শব্দ দোষী প্রমাণ সাপেক্ষে উপস্থাপন করা যেতে পারে।
আবার অন্য দিকে নারী চিকিৎসক বা মহিলা ইঞ্জিনিয়ার বলার পরিবর্তে শুধু চিকিৎসক বা ইঞ্জিনিয়ার বলে সংবাদে উপস্থাপন করলে উহা শ্রুতিমধুর ও যথার্থতা প্রকাশ প্রায়। লিঙ্গ বৈচিত্র্যের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে। সংবাদমাধ্যমে নারী, তৃতীয় লিঙ্গ, লিঙ্গ-বিচারভিত্তিক সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে। টক শো, সাক্ষাৎকার, প্যানেল আলোচনায় শুধু পুরুষদের না এনে নারী ও অন্যান্য লিঙ্গ পরিচয়ের মানুষদেরও সমান সুযোগ দিতে হবে। প্রসঙ্গভিত্তিক গভীরতর বিশ্লেষণ ও অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরি করে লিঙ্গ বৈষম্য দূর করতে হবে। ধর্ষণ, যৌন হয়রানি বা বৈষম্যের ঘটনাগুলো কেবল ঘটনাভিত্তিক না করে তার সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও আইনি প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করে পরিবেশন করতে হবে। নারী ও লিঙ্গ সংখ্যালঘুদের সাফল্য, সংগ্রাম ও অবদান নিয়েও নিয়মিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরি করতে হবে। যে কোনো মিডিয়ায় সম্পাদকীয় দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হবে।
অনেক সময় সাংবাদিক সঠিক রিপোর্ট তৈরি করলেও সম্পাদকীয় পর্যায়ে সেটি পরিবর্তিত হয়ে যায়। তাই সম্পাদকদেরও এই বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও সংবেদনশীল হতে হবে। সাংবাদিকদের লেখা রিপোর্টে কেউ যদি জেন্ডারবিরোধী উপাদান টেনে আনেন, সেটি যেন সম্পাদনা করে অপসারণ করা হয়। নৈতিকতা ও মানবাধিকারের প্রতিশ্রুতি নিয়ে সংবাদ মাধ্যমকে কাজ করতে হবে। সাংবাদিকদের উচিত ‘ডু নো হার্ম’ নীতিতে বিশ্বাস রাখা। কোনো সংবাদের ফলে যেন ভুক্তভোগীর দ্বিতীয়বার ক্ষতি না হয়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। সবার মর্যাদা ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখার জন্য সাংবাদিকদের প্রতিটি শব্দ, ছবি ও ব্যাখ্যার প্রতি সংবেদনশীল হতে হবে।

যে কোনো ঘটনা বিশ্লেষনে ইতিবাচক হতে হবে। তবে আশার আলো হলো-বাংলাদেশের কিছু সংবাদমাধ্যম ইতোমধ্যে জেন্ডার সংবেদনশীল সাংবাদিকতার দিকে ধাবিত হয়েছে। যেমন : প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্র (ইঘঔঈ) জেন্ডার সচেতনতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। কিছু অনলাইন পোর্টাল নারী নেতৃত্ব, কর্মজীবী নারীর সংগ্রাম উদ্যোক্তাদের জীবন-জীবিকা ও তৃতীয় লিঙ্গের অধিকার নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। তৃতীয় লিঙ্গ শব্দ না লিখে হিজড়া, মহিলা শব্দ না লিখে নারী শব্দে বদলে ফেলা হয়েছে অনেক পত্রিকায়।
একজন সাংবাদিক কেবল তথ্য পরিবেশনের কাজ করেন না; তিনি সমাজ গঠনেরও অংশ। একজন সত্যনিষ্ঠ ও সংবেদনশীল সাংবাদিক সমাজে ইতিবাচক আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারেন। নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে, বৈষম্যের বিরুদ্ধে জনমত গঠনে এবং নীতিনির্ধারণে সাংবাদিকতার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
জেন্ডার সংবেদনশীল সাংবাদিকতা কেবল একটি নৈতিক দাবি নয়, এটি মানবিকতার এবং পেশাগত দায়িত্বের অংশ। সাংবাদিকদের উচিত লিঙ্গ বৈচিত্র্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা, সংবেদনশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা। এর মাধ্যমে গণমাধ্যম সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারবে এবং একটি অধিকতর ন্যায়ভিত্তিক ও সমতাভিত্তিক সমাজ গঠনে অবদান রাখতে পারবে।
লেখক পরিচিতি : উজ্জ্বল হোসাইন, গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতায় মাস্টার্স (ব্যাচ-২০২১), প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ।

জয় দিয়ে এশিয়া কাপ শুরু বাংলাদেশের

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১২:২৭ অপরাহ্ণ
জয় দিয়ে এশিয়া কাপ শুরু বাংলাদেশের

জয়ে এশিয়া কাপ শুরু করল বাংলাদেশ। নিজেদের প্রথম ম্যাচে হংকংকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে টাইগাররা। হংকংয়ের ১৪৩ রানের জবাবে ১৭ ওভার ৪ বলে ৩ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।
রানতাড়ায় নেমে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটিতে আসে ২৪ রান। তৃতীয় ওভারের শেষ বলে পারভেজ হোসেন ইমন ১৪ বল ১৯ রান করে ফিরে গেলে জুটি ভাঙে। ৫.৪ ওভারে ৪৭ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তানজিদ তামিম ফেরেন ১৮ বলে ১৪ রান করে।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে লিটন ও হৃদয় মিলে ৭০ বলে ৯৫ রান যোগ করেন। জয় থেকে ২ রান দূরে থাকতে লিটন বোল্ড হয়ে ফিরে যান। ৬ চার ও এক ছক্কায় ৩৯ বলে ৫৯ রান করেন। পরে জাকের আলি অনিককে নিয়ে জয় নিশ্চিত করেন হৃদয়। ১ চারে ৩৬ বলে ৩৫ রান করেন হৃদয়। রানের খাতা খোলার সুযোগ পাননি জাকের।
এর আগে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪৩ রান সংগ্রহ করেছে হংকং। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪২ রানের ইনিংস খেলেছেন নিজাকাত খান। টাইগারদের পক্ষে সবচেয়ে সফল তানজিম হাসান সাকিব ২১ রান খরচায় ২ উইকেট শিকার করেছেন। এ ম্যাচে জয় তুলে নিতে ওভারপ্রতি ৭.২০ রান করতে হবে টাইগারদের।
এদিন টস জিতে ফিল্ডিং করতে নেমে শুরু থেকে হংকংকে চাপে রেখেছিল টাইগার বোলাররা। দলের খাতায় ৩০ রান যোগ করতে ২ উইকেট হারায় তারা। বাংলাদেশকে প্রথম উইকেটটি এনে দেন তাসকিন আহমেদ। ৫ বলে ৪ রান করে টাইগার পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের লেংথ বলে কট বিহাইন্ড হন আনশুমান রাথ। আম্পায়ার যদিও শুরুতে সাড়া দেননি, রিভিউ নিয়ে উইকেটটি আদায় করে নেয় বাংলাদেশ। এরপর দারুণ এক ডেলিভারিতে ১২ বলে ১৪ রান করা বাবর হায়াতকে বোল্ড করেন পেসার তানজিম হাসান সাকিব।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করে হংকং। জিশান আলী ও নিজাকাত খানের ৪১ রানের জুটি শেষমেশ ভাঙেন তানজিম সাকিব। তার বাউন্সার জায়গা নিয়ে তুলে মারতে গিয়ে মিডউইকেটে মোস্তাফিজুর রহমানের হাতে তুলে দেন ওপেনার জিশান। ৩৪ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৩০ রানে থামে তার ইনিংস। চতুর্থ উইকেটে নিজাকাত ও ইয়াসিম মুর্তজা হতাশায় ভোগান টাইগার বোলারদের।
অনেক চেষ্টা করেও উইকেটের দেখা মিলছিল না। শেষমেশ ১৮তম ওভারে গিয়ে ভুল বোঝাবুঝিতে ভাঙে হংকংয়ের চতুর্থ জুটি। ১৯ বলে ২ ছক্কা ও ২ চারের মারে ২৮ রান করে রান আউট হন মুর্তজা। ততক্ষণে তারা দলের সংগ্রহ শতরান পার করে দেন। অন্যদিকে ৪০ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ৪২ রান করে ১৯তম ওভারের পঞ্চম বলে রিশাদ হোসেনের শিকার হন নিজাকাত। পরের বলেই ক্রিজে নেমে টাইগার রিস্ট স্পিনারের বলে এলবিডব্লিউ হন কিঞ্চিৎ শাহ।
শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪৩ রানে থামে হংকংয়ের ইনিংস। বাংলাদেশের হয়ে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন তাসকিন, তানজিম সাকিব ও রিশাদ।

স্থূলতা তরুণদের কতটা ক্ষতি করছে?

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১২:২০ অপরাহ্ণ
স্থূলতা তরুণদের কতটা ক্ষতি করছে?

বর্তমান সময়ের জীবনযাত্রা বিগত এক দশকের থেকে অনেকটাই আলাদা। এখন সবাই নিজের কাজ নিয়ে দারুণ ব্যস্ত। আর এই ব্যস্ততার প্রভাব দেখা যায় আমাদের স্বাস্থ্যেও বিশেষ করে তরুণদের মাঝে। প্রসেসড খাবার, ডিজিটাল জীবনযাপন ও শারীরিক সক্রিয়তার ঘাটতি মিলিয়ে তরুণদের মধ্যে অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে স্থূলতা। আর এই স্থূলতা কেবল বাহ্যিক সৌন্দর্য বা ওজনের বিষয় নয়, বরং ডেকে আনছে গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি।
হিন্দুস্তান টাইমস নয়াদিল্লির স্যার গঙ্গা রাম হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. পিয়ুষ রঞ্জন জানান, স্থূল কিশোররা ভবিষ্যতে মারাত্মক লিভার রোগের ঝুঁকিতে পড়তে পারে। তার মতে, ভারতে কিশোর–কিশোরীদের মধ্যে ফ্যাটি লিভার রোগের হার প্রায় ৩৮ শতাংশ। এদের অনেকেই পরবর্তীতে সিরোসিস কিংবা লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত হতে পারে।
স্থূলতার ঝুঁকি: ডা. রঞ্জনের মতে, চিকিৎসাবিহীন স্থূলতা ডায়াবেটিস, হৃদ্‌রোগ, স্ট্রোক, কিডনি রোগ এবং বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। এর মধ্যে রয়েছে—কোলন, অগ্ন্যাশয়, খাদ্যনালী, স্তন ও ডিম্বাশয়ের ক্যানসার। তিনি আরও বলেন, স্বাভাবিক ওজনের তুলনায় স্থূল মানুষের লিভার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। বিভিন্ন গবেষণায় ঝুঁকির মাত্রা ভিন্ন হলেও, স্থূলতা ও লিভার জটিলতার সম্পর্ক স্পষ্টভাবে প্রমাণিত।
প্রতিরোধের উপায়: তরুণ প্রজন্মকে এই ঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে ডা. রঞ্জন কয়েকটি প্রতিরোধমূলক পরামর্শ দিয়েছেন—
> সুস্থ জীবনধারা গড়ে তোলা।
> তেল–চর্বিযুক্ত ও উচ্চ-ক্যালরির খাবার এড়িয়ে চলা।
> অতিরিক্ত ক্যালরিযুক্ত কার্বোহাইড্রেট কম খাওয়া।
> নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করা, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে এবং স্থূলতার ঝুঁকি কমাবে।
তরুণদের মধ্যে স্থূলতার হার উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে, যা শুধু আজকের নয়, ভবিষ্যতেরও ভয়ানক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে। ডা. পিয়ুষ রঞ্জনের পরামর্শ স্পষ্ট সুস্থ জীবনধারা ও খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলার বিকল্প নেই। এখনই সচেতন হলে কেবল ডায়াবেটিস, ক্যানসার বা লিভারের রোগই নয়, অসংখ্য জটিলতা থেকে নিজেদের বাঁচানো সম্ভব।

ডিজিটাল প্রতারণায় কয়েক কোটি টাকা খোয়ালেন ভারতীয় নারী

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১২:১১ অপরাহ্ণ
ডিজিটাল প্রতারণায় কয়েক কোটি টাকা খোয়ালেন ভারতীয় নারী

অঞ্জলির (ছদ্মনাম) এই দুঃস্বপ্নের শুরুটা হয়েছিল একটা ফোন কলের মাধ্যমে। যার জন্য শেষপর্যন্ত তাকে পাঁচ কোটি পঁচাশি লাখ টাকা খোয়াতে হয়। ওই ফোন কলের সময় অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তি নিজেকে একটা কুরিয়ার সংস্থার কর্মচারী বলে পরিচয় দিয়ে দাবি করেছিলেন, মুম্বাই কাস্টমস বেইজিংয়ে পাঠানোর সময় অঞ্জলির একটা পার্সেল বাজেয়াপ্ত করেছে। ওই পার্সেলে মাদক পাওয়া গেছে।
গুরুগ্রামের বাসিন্দা অঞ্জলি বাস্তবে ডিজিটাল অ্যারেস্ট নামে সাইবার প্রতারণার শিকার হয়েছিলেন। এতে অভিযুক্তরা ভিডিও কল করে নিজেদের ভারতের আর্থিক তদারকি প্রতিষ্ঠান এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডির কর্মকর্তা বলে দাবি ফাঁদে ফেলে।
এর জন্য প্রতারকরা সাধারণত ভুক্তভুগীদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ তুলে তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়ার বা পরিবারের বাকি সদস্যদের ক্ষতি করার হুমকি দেয়। এভাবে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে অঞ্জলিকে টানা পাঁচ দিন ধরে ডিজিটাল অ্যারেস্ট করে রাখা হয়েছিল। স্কাইপ কলের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা নজরদারি রেখে তাকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল; যাতে তিনি টাকা ট্রান্সফার করতে বাধ্য হন।
অঞ্জলির কথায়, এরপর আমার মাথা কাজ করা বন্ধ দেয়। অসাড় হয়ে গিয়েছিলাম। যতক্ষণে ওই ফোনকল বন্ধ হয়, ততদিনে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছেন অঞ্জলি, নিজের সমস্ত সম্পত্তিও খুইয়েছেন।