খুঁজুন
                               
শুক্রবার, ৬ জুন, ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

বয়সের আগুনে পুড়ছে অবশিষ্ট ভালোবাসা

উজ্জ্বল হোসাইন
প্রকাশিত: রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১১:২৪ পূর্বাহ্ণ
বয়সের আগুনে পুড়ছে অবশিষ্ট ভালোবাসা

ভালোবাসা মানুষের জীবনকে গঠন করে তাকে বাঁচার অনুপ্রেরণা দেয়। কখনো সুখের স্রোতে ভাসিয়ে নিয়ে যায়, আবার কখনো গভীর দুঃখের অতলে ডুবিয়ে দেয়। তবে সময়ের সঙ্গে ভালোবাসার রূপ বদলায়। কোনো সম্পর্কই একই রকম থাকে না। ভালোবাসা যেমন ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে, তেমনি কখনো কখনো তা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়, ধ্বংস হয়, আর তার অবশিষ্ট আগুন জ্বলতে জ্বলতে একসময় নিভে যায়। ভালোবাসা মানুষের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অনুভূতি, যা কখনো আনন্দ দেয়, কখনো কষ্টের গভীরে নিয়ে যায়। সম্পর্কের সূচনা যেমন আবেগময় হয়, তেমনি সময়ের সাথে সাথে তা পরিবর্তিত হয়, বিবর্ণ হতে থাকে, কখনো হারিয়ে যায়, কখনো বা অবশিষ্ট আগুনের মতো ধিকিধিকি জ্বলতে থাকে। আমাদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে সেই আগুন কখনো পুরোপুরি নিভে যায়, আবার কখনো তার ছাই থেকে নতুন অনুভূতির জন্ম হয়।
আমাদের জীবনেও হয়তো সেই অবশিষ্ট আগুন এখনও ধিকিধিকি জ্বলছে, পুরোনো সম্পর্কের স্মৃতিতে, ভুল বোঝাবুঝির যন্ত্রণায় বা অতীতের কোনো অনুভূতির ছায়ায়। কিছু ভালোবাসা কখনো শেষ হয় না, বরং তার রেশ থেকে যায় আমাদের মানসিকতার গভীরে, আচরণে, এবং পরবর্তী সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলে।
ভালোবাসা কখনোই একদিনে জন্ম নেয় না, এটি ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে, একটি মানুষের অন্তরের গভীরে স্থান করে নেয়। প্রথম প্রেম, প্রথম স্পর্শ, প্রথম অভিজ্ঞতা—সবই মনের গভীরে চিরস্থায়ী হয়ে থাকে। তবে সময়ের সাথে সাথে সম্পর্কের মাঝে ক্লান্তি আসে, ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়, বিশ্বাস ভেঙে পড়ে, এবং কখনো কখনো সম্পর্কের পরিণতি হয় বিচ্ছেদে। অনেক সময় সম্পর্ক শেষ হয়ে গেলেও তার রেশ থেকে যায়, হয়তো কোনো গানের লিরিকে, কোনো চেনা গলির মোড়ে, পুরোনো দিনের চিঠিতে বা কিছু ছবির ভাঁজে। সেই অনুভূতির অবশিষ্টাংশ আমাদের মনে বারবার ফিরে আসে, স্মৃতির মতো, কখনো আনন্দদায়ক, কখনো বেদনাদায়ক।
যখন কোনো সম্পর্ক ভেঙে যায়, তার মানে এই নয় যে ভালোবাসা একেবারে মুছে যায়। বরং সম্পর্কের শেষ মুহূর্তগুলোর স্মৃতি, যন্ত্রণা, হতাশা, এবং অভিমান আমাদের মধ্যে বাস করতে থাকে।
কিছু সম্পর্কের অবশিষ্ট আগুন সুখের স্মৃতি হিসেবে থাকে, যা মাঝে মাঝে মনে পড়ে আনন্দ এনে দেয়। আবার কিছু সম্পর্কের অবশিষ্ট আগুন জ্বলতে জ্বলতে কষ্টের এক বিশাল প্রাচীর তৈরি করে, যা আমাদের নতুন সম্পর্ক তৈরি করতে বাধা দেয়। আমরা হয়তো বারবার ফিরে যেতে চাই পুরোনো সেই মুহূর্তগুলোর কাছে, কিন্তু বাস্তবতা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে সে সময় আর ফিরে আসবে না।
যৌবনের ভালোবাসা আবেগে ভরা থাকে, সেখানে যুক্তির চেয়ে অনুভূতি বড় হয়ে ওঠে। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে, অভিজ্ঞতা বাড়ার সাথে, আমাদের ভালোবাসার ধরনও বদলে যায়। যে আবেগ একসময় বন্য ঝড়ের মতো ছিল, তা ধীরে ধীরে শান্ত নদীর মতো হয়ে যায়। বয়স বাড়ার সাথে আমরা বুঝতে পারি, ভালোবাসা মানে শুধু আবেগের জয়গান নয়; বরং এটি দায়িত্ব, বিশ্বাস, এবং বোঝাপড়ার সমষ্টি। যখন কোনো সম্পর্কের মধ্যে এই উপাদানগুলো হারিয়ে যেতে থাকে, তখন ভালোবাসার অবশিষ্ট আগুন ধীরে ধীরে নিভে যায়।
আধুনিক যুগে ভালোবাসার সংজ্ঞা এবং এর প্রকৃতি পরিবর্তিত হয়েছে। একসময় ভালোবাসা মানে ছিল সারাজীবন একসঙ্গে থাকার প্রতিশ্রুতি, ভালোবাসার জন্য লড়াই করা, সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করা। কিন্তু বর্তমান সমাজে ভালোবাসার স্থায়ীত্ব কমে যাচ্ছে, সম্পর্কগুলো দ্রুত গড়ে ওঠে এবং দ্রুত ভেঙে যায়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, প্রযুক্তির উন্নতি, এবং ব্যক্তি স্বাধীনতার ওপর বেশি গুরুত্বারোপ করার ফলে ভালোবাসার রূপান্তর হচ্ছে। আমাদের সম্পর্কগুলো এখন অনেকটাই তাৎক্ষণিক, যেখানে গভীরতা কম কিন্তু অভিজ্ঞতা বেশি। ফলে ভালোবাসার অবশিষ্ট আগুন আমাদের জীবন থেকে দ্রুত নিভে যায়, স্মৃতিগুলো মুছে যায়, এবং নতুন বাস্তবতা আমাদের সামনে উপস্থিত হয়।
যে আগুন একসময় আমাদের পুড়িয়েছিল, তা হয়তো আমাদের আরও পরিপক্ক করেছে। একবার ভালোবাসায় পোড়ার পর মানুষ আরও সতর্ক হয়ে যায়, সম্পর্কের ক্ষেত্রে বেশি সচেতন হয়ে ওঠে। কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে ভালোবাসা আর আসবে না। বরং, পুরোনো আগুনের ছাই থেকে নতুন ভালোবাসার ফুল ফোটে। কেউ কেউ পুরোনো ক্ষত থেকে শিখে নতুন করে জীবন শুরু করে, আবার কেউ হয়তো সেই স্মৃতির আগুনেই সারাজীবন পুড়ে যেতে থাকে।
ভালোবাসা প্রথমে নির্দিষ্ট কিছু মুহূর্তের সাথে যুক্ত হয়—প্রথম দেখা, প্রথম কথা, প্রথম ছোঁয়া, প্রথম অনুভূতি। এটি আমাদের হৃদয়ে গভীরভাবে দাগ কাটে, একধরনের স্বপ্ন তৈরি করে, যেখানে একসঙ্গে থাকার প্রতিশ্রুতি, ভালোবাসার আবেগ এবং একে অপরকে ধরে রাখার ইচ্ছে কাজ করে।
কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সম্পর্কের ধরন বদলায়। জীবনের বাস্তবতা, পারস্পরিক দূরত্ব, মানসিক পরিবর্তন এবং পরিস্থিতির চাপে সম্পর্কের গভীরতা কমতে থাকে। যখন সম্পর্কের উত্তাপ কমে আসে, তখন ভালোবাসার অবশিষ্ট অংশটুকু টিকে থাকে স্মৃতির আকারে। সেই স্মৃতির আগুন হয়তো আমাদের মনে কষ্ট দেয়, কিন্তু সেটাই আমাদের ব্যক্তিত্ব ও ভবিষ্যতের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করে। কিছু কিছু সম্পর্ক আমাদের জীবন থেকে চলে গেলেও তার ছাপ মুছে যায় না। কিছু মুহূর্ত আমাদের মনে থেকে যায়, কোনো গানের সুরে, পুরোনো এক খামে লুকানো চিঠিতে, অথবা কোনো বিশেষ স্থানে দাঁড়িয়ে থাকার সময়। এই স্মৃতিগুলো আমাদের মনে একধরনের অদৃশ্য অনুভূতি তৈরি করে, যা সুখ বা দুঃখের রূপ নিতে পারে। অন্যদিকে, বাস্তবতা আমাদের শেখায় যে অতীতকে ধরে রাখা সম্ভব নয়। আমরা যতই পুরোনো অনুভূতিতে বেঁচে থাকতে চাই, জীবন আমাদেরকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য বাধ্য করে। ফলে ভালোবাসার অবশিষ্ট আগুন ক্রমশ নিভে আসে, কিন্তু তার তাপ আমাদের মনে দীর্ঘস্থায়ীভাবে থেকে যায়। যৌবনের ভালোবাসা আবেগপ্রবণ ও বেপরোয়া হতে পারে, কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমরা বুঝতে পারি ভালোবাসা কেবল আবেগের উপর নির্ভরশীল নয়। এটি দায়িত্ব, আত্মত্যাগ, বোঝাপড়া এবং পারস্পরিক সম্মানের ওপর ভিত্তি করে টিকে থাকে।
যখন আমরা তরুণ থাকি, তখন ভালোবাসাকে শুধুমাত্র আবেগ ও রোমাঞ্চের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখি। কিন্তু সময়ের সাথে বাস্তবতা আমাদের শেখায় যে শুধুমাত্র আবেগ টিকিয়ে রাখা যথেষ্ট নয়, সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন বোঝাপড়া, ধৈর্য এবং আত্মনিয়ন্ত্রণ। অনেক সম্পর্ক শুধু আবেগের কারণে টেকে না, বরং পারস্পরিক বিশ্বাস ও মানসিক পরিপক্বতার কারণে দীর্ঘস্থায়ী হয়। কিছু সম্পর্ক একসময় শেষ হয়ে যায়, এবং তখন ভালোবাসার অবশিষ্ট অংশটুকু আমাদের মনকে দ্বিধায় ফেলে। আমরা কি সেই পুরোনো মুহূর্তগুলোকে আঁকড়ে ধরে থাকব, নাকি নতুন জীবনের দিকে এগিয়ে যাব?
অনেকে ভালোবাসার অতীত স্মৃতিকে মনে ধরে রাখে, কারণ তারা বিশ্বাস করে সেই অনুভূতির আর কোনো বিকল্প নেই। আবার কেউ কেউ মনে করে, পুরোনো অনুভূতিকে স্মৃতির পাতায় রেখে সামনে এগিয়ে যাওয়াই শ্রেয়।
এই দ্বন্দ্ব মানুষের ব্যক্তিত্বের ওপর নির্ভর করে। কেউ হয়তো আগের সম্পর্কের স্মৃতিকে সম্পূর্ণরূপে মুছে ফেলতে চায়, আবার কেউ সেই স্মৃতিকে সঙ্গী করেই বাকি জীবন কাটিয়ে দেয়। যে আগুন একসময় আমাদের পুড়িয়েছে, সেটাই হয়তো আমাদের নতুনভাবে বাঁচতে শিখিয়েছে। ভালোবাসার অভিজ্ঞতা, কষ্ট, এবং বিচ্ছেদ আমাদের আরও শক্তিশালী করে তোলে, আমাদের আরও সংবেদনশীল করে তোলে।
বিচ্ছেদের পর মানুষ দুটি পথে হাঁটে- কেউ পুরোনো অনুভূতিতে আটকে থাকে, নতুন ভালোবাসার পথে আর পা বাড়ায় না। কেউ পুরোনো স্মৃতিকে জীবনের অভিজ্ঞতা হিসেবে গ্রহণ করে, এবং নতুন করে জীবন শুরু করে।
কিছু মানুষ একা থাকার সিদ্ধান্ত নেয়, আবার কেউ নতুন সম্পর্ক তৈরি করে, যেখানে তারা অতীত থেকে শেখা জ্ঞান কাজে লাগিয়ে সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করে।
আজকের ডিজিটাল যুগে ভালোবাসার সংজ্ঞা ও প্রকাশভঙ্গি আগের চেয়ে অনেক বদলেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, দ্রুতগতির জীবনযাত্রা, এবং সম্পর্কের প্রতি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ভালোবাসাকে আরও ক্ষণস্থায়ী করে তুলেছে।
আগের দিনে সম্পর্কগুলো ধৈর্য, ত্যাগ এবং পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে গড়ে উঠত, কিন্তু বর্তমান সময়ে সম্পর্ক দ্রুত গড়ে ওঠে এবং দ্রুত ভেঙেও যায়। ফলে ভালোবাসার অবশিষ্ট আগুন জ্বলে ওঠার সুযোগই পায় না; বরং মানুষ নতুন সম্পর্কে ঢুকে পড়ে পুরোনো ক্ষতকে ভুলে থাকার জন্য। কিন্তু এর ফলে অনেক মানুষই একাকীত্ব অনুভব করে, কারণ তারা সত্যিকারের ভালোবাসার গভীরতা থেকে বঞ্চিত হয়।
আমরা যদি ভালোবাসার অবশিষ্ট অংশটুকুকে কেবল যন্ত্রণা হিসেবে দেখি, তাহলে সেটি আমাদের মনকে আরও ভারাক্রান্ত করবে। কিন্তু যদি এটিকে জীবন শিক্ষার অংশ হিসেবে গ্রহণ করি, তাহলে আমরা ব্যক্তিগতভাবে আরও পরিণত হতে পারব। আমরা ভালোবাসতে পেরেছিলাম, সেটাই এক বড় ব্যাপার। ভালোবাসার অনুভূতি হারিয়ে গেলেও, সেটি আমাদের জীবনকে রঙিন করেছিল। নতুন সম্পর্কের পথে হাঁটার আগে পুরোনো সম্পর্কের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নেওয়া জরুরি।
অতএব, ভালোবাসার অবশিষ্ট আগুন শুধুমাত্র কষ্টের প্রতীক নয়, এটি আমাদের জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা, যা আমাদের আরও গভীরভাবে উপলব্ধি করতে সাহায্য করে।
ভালোবাসার অবশিষ্ট আগুন কখনো পুরোপুরি নিভে যায় না, বরং এটি সময়ের সাথে ধিকিধিকি জ্বলতে থাকে। আমাদের জীবন, সম্পর্ক, এবং সমাজের পরিবর্তনের সাথে সাথে এই আগুন কখনো জ্বলে ওঠে, কখনো নিভে যায়।
যদি আমরা পুরোনো ভালোবাসার ছায়ায় আটকে থাকি, তাহলে নতুন ভালোবাসা আসার পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। কিন্তু যদি আমরা সেই অবশিষ্ট আগুনকে অভিজ্ঞতা হিসেবে গ্রহণ করি, তাহলে তা আমাদের ভবিষ্যৎকে আরও উজ্জ্বল করতে পারে। ভালোবাসা শেষ হতে পারে, কিন্তু তার শিক্ষা, তার স্মৃতি আমাদের জীবনকে নতুনভাবে গড়তে সাহায্য করে। শেষ পর্যন্ত, আমাদের জীবন ভালোবাসারই গল্প—কখনো তা আনন্দে ভরা, কখনো বেদনার আগুনে পোড়া। কিন্তু সেই আগুন থেকেই আমরা নতুন আলো খুঁজি, নতুন জীবনের পথে এগিয়ে যাই।
ভালোবাসার অবশিষ্ট আগুন কখনো পুরোপুরি নিভে যায় না, বরং এটি আমাদের হৃদয়ে এক ধরনের আলো হয়ে থাকে। কিছু স্মৃতি আমাদের কষ্ট দেয়, কিছু আমাদের হাসায়, কিছু আমাদের নতুন করে জীবন শুরু করতে অনুপ্রাণিত করে।
যদি আমরা পুরোনো ক্ষত নিয়ে বাঁচতে চাই, তাহলে সেই আগুন আমাদের জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ফেলবে। কিন্তু যদি আমরা সেই আগুনকে অভিজ্ঞতার আলো হিসেবে দেখি, তাহলে তা আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি দেবে।
ভালোবাসা শেষ হতে পারে, সম্পর্কের পরিণতি যা-ই হোক, কিন্তু ভালোবাসার চিহ্ন থেকে যায়—আমাদের অনুভূতিতে, স্মৃতিতে, এবং জীবনের সিদ্ধান্তে। তাই ভালোবাসার অবশিষ্ট আগুন শুধু পোড়ায় না, কখনো কখনো এটি আমাদের নতুন আলোও দেখায়।
লেখক পরিচিতি : উজ্জ্বল হোসাইন, সাংবাদিক প্রাবন্ধিক, চাঁদপুর।

বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে

চাঁদপুরে “হুইলস অব পিস”-এর বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৬ জুন, ২০২৫, ১২:৪৩ অপরাহ্ণ
চাঁদপুরে “হুইলস অব পিস”-এর বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি

মিশন গ্রিন বাংলাদেশ-এর সহায়তায়, এসডিজি ভিত্তিক পিস প্রজেক্টের পরিবেশবান্ধব পদক্ষেপ । বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৫ উপলক্ষে চাঁদপুর সদর উপজেলার চাঁদপুর জেলা স্কাউটস ভবনের সামনের প্রাঙ্গণে আয়োজিত হলো এক ব্যতিক্রমধর্মী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি। আয়োজনটি করেছে “প্রজেক্ট হুইলস অব পিস”, যা একটি এসডিজি (SDG) ভিত্তিক স্কাউট পিস প্রজেক্ট।

এই উদ্যোগে সহায়তা করে মিশন গ্রিন বাংলাদেশ, এবং সহযোগিতা করে মেঘনাপাড় ওপেন স্কাউট গ্রুপ। সারাদেশে ৬৪ জেলায় ৫ জুন একসাথে বৃক্ষরোপণের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে ৪০ জন তরুণ স্বেচ্ছাসেবক সক্রিয়ভাবে অংশ নেন, যারা শুধু গাছ লাগিয়ে দায়িত্ব শেষ করেননি, বরং পরিবেশ সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে মাঠে-ময়দানে কাজ করেছেন।

পরিবেশ দূষণ ও প্লাস্টিকের অপব্যবহার প্রতিরোধে আয়োজনস্থল এবং আশেপাশের এলাকায় সচেতনতামূলক পোস্টার লাগানো হয়। এছাড়াও স্থানীয় বাজার ও জনবহুল স্থানে লিফলেট বিতরণ করে সাধারণ মানুষের মাঝে বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়—”সবুজ পৃথিবী, নিরাপদ ভবিষ্যৎ”।

বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমে ফলজ গাছ যেমন আম, কাঁঠাল, পেয়ারা, জামসহ স্থানীয় প্রজাতির চারা রোপণ করা হয়। এসব গাছ একদিকে পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা করবে, অন্যদিকে স্থানীয় মানুষের উপকারে আসবে।

উক্ত কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন প্রজেক্ট হুইলস অব পিস এর প্রতিষ্ঠাতা ওমর তামীম সাফি। তিনি বলেন:
**”পরিবেশ রক্ষা আমাদের দায়িত্ব নয়, বরং এটা আমাদের অস্তিত্বের প্রশ্ন। একটি গাছ মানে শুধু ছায়া বা ফল নয়—এটি জীবনের ধারক। আজকের এই বিশ্ব পরিবেশ দিবসে আমরা শপথ করছি, সবুজের জন্য কাজ করব—শুধু শহরে নয়, প্রত্যন্ত অঞ্চলেও সচেতনতার আলো ছড়িয়ে দেব।

এই কর্মসূচি সফল করতে যারা পাশে ছিলেন, বিশেষ করে মিশন গ্রিন বাংলাদেশ, মেঘনাপাড় মুক্ত স্কাউট গ্রুপ এর সদস্যবৃন্দ। আমরা বিশ্বাস করি, সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে, এ ধরনের পরিবেশবান্ধব কর্মকাণ্ড আরও সংগঠিতভাবে, বৃহৎ পরিসরে এবং টেকসইভাবে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব। আমাদের সবার সম্মিলিত প্রয়াসেই একটি পরিচ্ছন্ন, সবুজ ও বাসযোগ্য বাংলাদেশ গড়ে তোলা যাবে।”**

প্রজেক্ট হুইলস অব পিস, জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDG)-এর বিভিন্ন দিক যেমন পরিবেশ সুরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, যুবসম্প্রদায়ের ক্ষমতায়ন এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এই ইনিসিয়েটিভ এর মাধ্যমে স্কাউট এবং নন স্কাউট দের সাথে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে । ১৭ টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ৮ টি লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করে চলেছে প্রজেক্ট হুইলস অব পিস । প্রকৃতি, পরিবেশ সংরক্ষণ, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক, ছেলে ও মেয়েদের বয়:সন্ধিকালের শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন, এলাকা ভিত্তিক ভাবে পরিবেশ দূষণরোধে সচেতনতা সৃষ্টি এছাড়া প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে, প্লাস্টিকের পুন:ব্যবহার বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মসূচী পরিচালনা করে যাচ্ছে । কর্মসূচীতে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রজেক্ট হুইলস অব পিসের সদস্য রুমাইয়া বিনতে রহিম, সাব্বির আহমেদ, নূর মোহাম্মদ, তাসফিয়া সুলতানা সহ আরোও অনেক সদস্যবৃন্দ।

এই কর্মসূচি তাদের চলমান সবুজ উদ্যোগেরই একটি অংশ। আয়োজকরা জানান, ভবিষ্যতে দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও তারা একই রকম কার্যক্রম ছড়িয়ে দিতে চান।

বাজেট প্রতিক্রিয়া : শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে এডিপি বরাদ্দ কমানো উদ্বেগজনক: সিপিডি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫, ২:৩৮ অপরাহ্ণ
বাজেট প্রতিক্রিয়া : শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে এডিপি বরাদ্দ কমানো উদ্বেগজনক: সিপিডি

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির বরাদ্দ কমানো উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। আজ সোমবার সিপিডি কার্যালয়ে আয়োজিত তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘বাজেটের যে কাঠামো উপস্থাপন করা হয়েছে, সেখানে বাজেটের আকার সামান্য ছোট করা হয়েছে। পাশাপাশি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি, সেখানেও কিছুটা কাটছাঁট করা হয়েছে। বাজেটের আকার নিয়ে অনেকদিন ধরে আলোচনা হয়েছে, সেটার অন্যতম কারণ হচ্ছে, আমাদের যে চলমান অর্থনৈতিক সংকট, অর্থাৎ উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগ স্থবিরতা, কর্মসংস্থানে সমস্যা এবং রাজস্ব আহরণের সমস্যা বিবেচনায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা বাজেট প্রস্তাব করেছে বলে আমাদের মনে হয়েছে।’

ড. ফাহমিদা বলেন, ‘বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির দিকে তাকালে দেখা যাবে, চলতি অর্থবছরের তুলনায় ১৩ দশমিক ২ শতাংশ কমানো হয়েছে এবং ১৫টি খাতের মধ্যে ১৪টি খাতেই কমানো হয়েছে। এখানে উল্লেখযোগ্য এবং চিন্তার বিষয় হচ্ছে, তিনটি খাত—শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষিতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে টাকার অংকে বরাদ্দ কমানো হয়েছে। সেটা আমাদের কাছে উদ্বেগজনক মনে হয়, কারণ শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে আমরা সব সময় বরাদ্দ বাড়ানোর কথা বলে আসছি এবং কৃষি খাতে, বিশেষত খাদ্য নিরাপত্তার দিকে এখানে বরাদ্দ অনেক গুরুত্বপূর্ণ।’ তিনি বলেন, ‘ভৌত অবকাঠামো, বিশেষ করে পরিবহন ও বিদ্যুৎ-জ্বালানি বরাবরের মতো উপরের দিকে আছে যুক্তিযুক্তভাবে।’

এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, কর কাঠামোর মধ্যে করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ দশমিক ৫ লাখ, অর্থাৎ সাড়ে ৩ লাখ টাকা থেকে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করা হয়েছে, এটা একটা ভালো পদক্ষেপ। কিন্তু প্রায় ৩ বছরের মতো সময় ধরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের উপরে রয়েছে, ১০-১১ শতাংশে উঠে গেছে। সেদিক থেকে যে খুব একটা উল্লম্ফন হয়েছে সেটা না। তবে এটাকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, যারা জুলাই যোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত, তাদের জন্য করমুক্ত আয়সীমা ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা করা হয়েছে, সেটাও আমরা ভালো পদক্ষেপ মনে করি।’

‘করের বিভিন্ন স্ল্যাবগুলোতে পরিবর্তন করা হয়েছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে যারা নিম্ন মধ্যআয়ের যারা পড়েছেন, কর দেওয়ার ক্ষেত্রে হারটা তাদের মধ্যেই বেশি পড়বে। আবার যারা আয়ের উচ্চ পর্যায়ে রয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রে অনেক কম পড়বে। এখানে বৈষম্যের চিত্র দেখা যাচ্ছে। অঞ্চলভিত্তিক ন্যূনতম কর ধরা হয়েছে ৫ হাজার টাকা, এখানে আমরা মনে করছি বৈষম্য রয়েছে। কারণ রাজধানী ঢাকা কিংবা অন্য আরেকটি জেলার সবাইকে এক করে দেখানো; সরকারি সেবা সব জায়গায় সবাই কিন্তু সমানভাবে নেয় না। এখানে পুনর্বিবেচনার সুযোগ রয়েছে বলে আমরা মনে করি,’ যোগ করেন তিনি।

ফাহমিদা বলেন, ‘শুল্ক যৌক্তিকরণ হয়েছে এবং আমদানি শিল্প যৌক্তিকিকরণ করতে গিয়ে হয়তো কিছু কিছু শিল্প চাপে পড়তে পারে। বিশেষ করে যখন মূল্যস্ফীতি বেশি, কস্ট অব ডুইং বিজনেস বেশি। এটাকে শুল্কের যৌক্তিকিকরণ করতেই হবে, কারণ বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বেরিয়ে যাবে। আস্তে আস্তে ট্যারিফ কমানোর দিকে নজর দিতে হবে। যে প্রতিঘাত আসবে, সেটা মোকাবিলা করার জন্য কস্ট অব ডুইং বিজনেসের ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ-জ্বালানি সাশ্রয়ী মূল্যে কিংবা সহজ শর্তে ঋণ কিংবা আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমিয়ে কস্ট অব ডুইং বিজনেস কমানোর উদ্যোগ নিতে হবে।’

প্রস্তাবিত বাজেটে কিছু ভালো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ই-কমার্সের সুযোগ-সুবিধা এবং ই-কমার্সকে ফরমাল সেক্টরে আনা; এখানে করের আওতায় আনা এবং পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের অধীনে যে ৫ হাজার ৪০ কোটি টাকার ফান্ড গঠন হয়েছে। আমরা মনে করি, আগেও পিপিপি মডেলের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, সেগুলো কিন্তু খুব একটা এগোয় নাই।

নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ১ হাজার কোটি টাকার ফান্ড গঠনকে স্বাগত জানিয়েছে সিপিডি।

কালো টাকা সাদা করার সুযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কালো টাকা সাদার করার সুযোগটা রয়ে গেছে। যদিও এখানে রেট বাড়ানো হয়েছে কিন্তু আমরা আগেও বলেছি, কালো টাকার ব্যাপারে আমাদের অবস্থান হচ্ছে, এই সুযোগ দিয়ে যারা নৈতিকভাবে প্রতি বছর স্বচ্ছ আয় করে, স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতার সঙ্গে কর দিয়ে থাকেন, তাদের প্রতি নৈতিক আঘাত। কারণ তাদের আদর্শিকভাবে নিরুৎসাহিত করা হয়। দুটি জিনিস সমান্তরালভাবে চলতে পারে না!’

ফাহমিদা আরও বলেন, ‘আগে করের হারটাও কম রাখা হতো, এখন করের হার বেশি রাখা হয়েছে। তারপরও এটা থেকে খুব একটা আদায় হয় না। যদি এখান থেকে সত্যি আদায় করার ইচ্ছা থাকে, তাহলে কিন্তু সক্রিয় পদক্ষেপ নিতে হবে। এছাড়া দুএকবার সুযোগ দিয়ে চিরতরে বন্ধ করে দেওয়া উচিত।’ উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময় কর রেয়াত কিংবা বিভিন্ন জায়গা থেকে কমানো এবং পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা ও পরিমাণ বাড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি।

‘সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির অধীনে ১৪০টির মতো কার্যক্রম একসঙ্গে চলতো, সেগুলো কমিয়ে ৯৫টি করা হয়েছে এবং সেখানে অর্থ বরাদ্দ কম করা হয়েছে। খুব কম না কিন্তু বাজেটের তুলনায় ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ এবং মোট বাজেটের ১ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকার মতো।’ ‘আমরা বারবার বলেছি, এখানে কতগুলো উপাদান যুক্ত করা হয়, যেগুলো সামাজিক নিরাপত্তা বা সামাজিক সুরক্ষার অধীনে দেওয়া যুক্তিযুক্ত নয়। কারণ এটা একেবারেই অতি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য। সরকারি কর্মচারীদের পেনশন, সেখানে আছে ৩৫ হাজার ২৮২ কোটি টাকা। কৃষি ভর্তুকি আছে ১৭ হাজার কোটি টাকা। এই দুটি মিলিয়ে ৫২ হাজার কোটি টাকার বেশি হয়, সেটা বাদ দিয়ে রয়ে যায় ৬৪ হাজার কোটি টাকার মতো। সেটা অনেকখানি কমে আসে। এগুলো বাদ দিয়ে যে নেট সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, সেটাকে দেখাতে হবে। সেটা দেখে তুলনা করা যেতে পারে যে আসলেই দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য কী করা হলো,’ যোগ করেন তিনি।

ফাহমিদা বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে বলতে চাই, কিছু কিছু পদক্ষেপ ভালো নেওয়া হয়েছে বিচ্ছিন্নভাবে। কিন্তু সামগ্রিক কাঠামোগত পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে যে একই কাঠামোর মধ্যে এখানে একটু বেশি, ওখানে একটু কম—এ রকম করে নেওয়া হয়েছে। বাজেটের যে দর্শন, এখানে বৈষম্যহীন সমাজের কথা বলা হয়েছে, সেই উদ্দেশ্যের সঙ্গে যে বাস্তব পদক্ষেপগুলো নেওয়া হয়েছে, সব ক্ষেত্রে সেটা সাযুজ্যপূর্ণ হয়নি।’

ফেব্রুয়ারি অথবা এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছি: জামায়াতের আমির

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫, ২:৩৬ অপরাহ্ণ
ফেব্রুয়ারি অথবা এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছি: জামায়াতের আমির

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি বা এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন দলটির আমির শফিকুর রহমান।

মঙ্গলবার (৩ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে জামায়াতের নিবন্ধন ফিরে পাওয়া উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

শফিকুর রহমান বলেন, ‘ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি অথবা এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচনের দাবি আমরা জানিয়েছি। রোজার আগে অথবা যদি কোনো কারণে সম্ভব না হয়, তাহলে যেন এপ্রিলের মধ্যেই নির্বাচন দেওয়া হয়। কারণ আবহাওয়ার কারণে মে মাসের পর নির্বাচন করা সম্ভব নয়।’

এ সময় তিনি বলেন, ‘আজকেও যদি সমতল মাঠ তৈরি হয়, ফেয়ার ইলেকশন যদি সম্ভব হয়, তাহলেও আমরা প্রস্তুত রয়েছি। কিন্তু ফেয়ার ইলেকশনের মাঠ তৈরি না হলে এপ্রিলে নির্বাচন হলেও তো কোনো লাভ নেই।’

প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোট দেওয়ার বিষয়ে জামায়াতের আমির বলেন, ‘প্রবাসীদের অবশ্যই ভোটের ব্যবস্থা করতে হবে, এ বিষয়ে আমরা ছাড় দিতে রাজি নই।’

তিনি বলেন, ‘প্রবাসীরা তাদের নাগরিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারেন না। আমরা ইসির কাছে দাবি জানিয়েছি, প্রবাসীরা যেন ভোট দিতে পারেন, তার ব্যবস্থা করার জন্য। এটা কোনো কঠিন বিষয় নয়। কিন্তু ইসির পক্ষ থেকে আমরা কোনো অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি না।’

এর আগে গতকাল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহেরও বলেন, বৈঠকে তারা বলেছেন, জুলাইয়ের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে। আর নির্বাচন হতে পারে ডিসেম্বর থেকে এপ্রিলের মধ্যে।

তাহের বলেন, ‘আমরা বলেছি জুলাইয়ের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে। বেশিরভাগ বিষয়ে সবাই একমত হয়েছে। সামান্য কিছু বিষয়ে মতানৈক্য রয়েছে। জুলাইয়ের মধ্যে সংস্কার শেষ হবে। এরপর একটি জুলাই সনদ হবে। সেখানে আমরা সব দল স্বাক্ষর করব।’