খুঁজুন
                               
শুক্রবার, ৬ জুন, ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

রাষ্ট্র রূপান্তরের ভূমিকায় সাংবাদিকতা

উজ্জ্বল হোসাইন
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২৫, ৬:১৫ অপরাহ্ণ
রাষ্ট্র রূপান্তরের ভূমিকায় সাংবাদিকতা

রাষ্ট্র রূপান্তরের প্রক্রিয়ায় সাংবাদিকতা একটি অপরিহার্য এবং প্রভাবশালী মাধ্যম। এটি সমাজ ও রাষ্ট্রের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে এবং তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করার মাধ্যমে রাষ্ট্রের কাঠামো ও নীতির পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সাংবাদিকতা শুধুমাত্র তথ্য সরবরাহের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এটি জনমত গঠন, নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধি, সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ এবং গণতান্ত্রিক চর্চাকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

রাষ্ট্রের রূপান্তর প্রক্রিয়ায় জনমত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাংবাদিকতা তথ্য ও বিশ্লেষণ উপস্থাপনের মাধ্যমে জনগণের দৃষ্টিভঙ্গি ও মতামত প্রভাবিত করে। গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে আসা সমস্যাগুলি জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি সমাধানের পথও নির্দেশ করে। উদাহরণস্বরূপ, দুর্নীতি, মানবাধিকার লঙ্ঘন বা সামাজিক বৈষম্যের মতো বিষয়গুলিকে সামনে তুলে ধরে সাংবাদিকতা নাগরিকদের সচেতন করে এবং তাদের মতামত গঠন করে। সাংবাদিকতা রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থার জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার অন্যতম প্রধান মাধ্যম। এটি সরকারের কর্মকাণ্ড ও নীতির ওপর নজরদারি করে এবং সেগুলির স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে সহায়তা করে। দুর্নীতির মতো অপকর্ম উন্মোচনের মাধ্যমে সাংবাদিকতা সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা বাড়াতে সাহায্য করে। উদাহরণস্বরূপ, ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারির ঘটনা সাংবাদিকতার মাধ্যমে উন্মোচিত হওয়ার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন ঘটে। সাংবাদিকতা রাষ্ট্র ও জনগণের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। এটি নীতিনির্ধারকদের কাছে জনগণের দাবিদাওয়া পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি রাষ্ট্রের পরিকল্পনা ও কর্মসূচি সম্পর্কে জনগণকে অবগত রাখে। উদাহরণস্বরূপ, উন্নয়ন প্রকল্পগুলির তথ্য জনগণের কাছে তুলে ধরলে তারা সেগুলিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করতে পারে। রাষ্ট্র রূপান্তরের ক্ষেত্রে সামাজিক সচেতনতা একটি অপরিহার্য উপাদান। সাংবাদিকতা সমাজে বিদ্যমান সমস্যাগুলি তুলে ধরে এবং জনগণকে সচেতন করে। এটি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারী অধিকার, পরিবেশ সংরক্ষণ এবং দারিদ্র্য বিমোচনের মতো বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সামাজিক পরিবর্তনে সহায়তা করে।

গণতন্ত্রের চর্চা সাংবাদিকতার ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। এটি মুক্ত মত প্রকাশের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে এবং জনগণকে তাদের মতামত প্রকাশের সুযোগ দেয়। নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সময় সাংবাদিকতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি জনগণের সামনে প্রার্থীদের যোগ্যতা ও নীতিগুলি তুলে ধরে, যা জনগণকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে। সংকটকালীন সময়ে সাংবাদিকতা রাষ্ট্রের নীতিগত পরিবর্তনে ত্বরান্বিত ভূমিকা পালন করে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারি, অর্থনৈতিক সংকট বা রাজনৈতিক অস্থিরতার সময়, সাংবাদিকতা তথ্য সরবরাহ এবং সমস্যার প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরে। উদাহরণস্বরূপ, COVID-19 মহামারির সময় সাংবাদিকতা সঠিক তথ্য সরবরাহ করে এবং সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ সম্পর্কে জনগণকে অবগত রাখে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা প্রকাশ করার মাধ্যমে সাংবাদিকতা রাষ্ট্রকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে সাহায্য করে। এটি নিপীড়িত জনগণের পক্ষে কথা বলে এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য সমাজ ও রাষ্ট্রের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। যেমন, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে সাংবাদিকতার প্রতিবেদন আন্তর্জাতিক মহলে সচেতনতা সৃষ্টি করে এবং সমাধানের প্রচেষ্টা জোরদার করে। বৈশ্বিক পরিসরে সাংবাদিকতা রাষ্ট্র রূপান্তরের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি তুলে ধরে এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চুক্তি ও সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়তা করে। ডিজিটাল যুগে সাংবাদিকতা রাষ্ট্র রূপান্তরে আরও কার্যকর হয়ে উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং অনলাইন সংবাদমাধ্যম তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়াকে সহজ ও গতিশীল করেছে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে রাষ্ট্রের বিভিন্ন পরিবর্তন ও উদ্যোগ সহজে পৌঁছে যাচ্ছে।

সাংবাদিকতার ভূমিকাকে কার্যকর করার পথে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেমন: অনেক দেশে সাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন না। তাদের ওপর সরকারের বা কর্পোরেট সংস্থার চাপ থাকে। প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে ভুয়া খবর ও তথ্য বিকৃতির সমস্যা বেড়েছে, যা রাষ্ট্র রূপান্তরের প্রক্রিয়ায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।অনেক সাংবাদিক তাদের কাজ করতে গিয়ে জীবনঝুঁকিতে পড়েন। রাষ্ট্র রূপান্তরের প্রক্রিয়ায় সাংবাদিকতার ভূমিকা আরও গভীরভাবে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এটি শুধুমাত্র তথ্য প্রদান বা সমস্যার দিক নির্দেশনায় সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং নৈতিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে কার্যকর শক্তি হিসেবে কাজ করে।

সাংবাদিকতা রাজনৈতিক সংস্কারের প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি রাজনৈতিক অনিয়ম, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং দুর্নীতির তথ্য উন্মোচন করে। পাশাপাশি সাংবাদিকতা জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ায়, যাতে তারা সঠিক নেতৃত্ব নির্বাচন করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১১ সালে আরব বসন্তে সাংবাদিকতার ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য। গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিভিন্ন দেশের শাসনব্যবস্থার পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সমস্যা ও দাবি-দাওয়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরার ক্ষেত্রে সাংবাদিকতা এক কার্যকর মাধ্যম। অনেক সময় রাষ্ট্রের মূলধারার কাঠামোর বাইরে থাকা গোষ্ঠীগুলোর সমস্যা উপেক্ষিত হয়। সাংবাদিকতা এই শোষিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর পক্ষে কথা বলে এবং তাদের দাবিকে রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের কাছে পৌঁছে দেয়। উদাহরণস্বরূপ, পরিবেশ রক্ষার আন্দোলন বা আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভূমির অধিকারের লড়াইয়ে সাংবাদিকতার ভূমিকা অপরিসীম। রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক রূপান্তরেও সাংবাদিকতা বিশাল ভূমিকা রাখে। এটি ব্যবসা, শিল্প এবং অর্থনৈতিক নীতির সঠিক বিশ্লেষণ উপস্থাপন করে। এটি অর্থনৈতিক দুর্নীতি উন্মোচন করে এবং নীতিগত সমস্যাগুলি চিহ্নিত করে। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশে রানা প্লাজার দুর্ঘটনার পর সাংবাদিকতা বৈশ্বিক শ্রম অধিকার এবং স্থানীয় শিল্পখাতের সংস্কারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। রাষ্ট্রের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে সাংবাদিকতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি শিক্ষাক্ষেত্রের সমস্যাগুলি চিহ্নিত করে এবং সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় আলোচনার পথ তৈরি করে। সাংবাদিকতা উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য জনমত তৈরি করতে সাহায্য করে। জলবায়ু পরিবর্তন রাষ্ট্র রূপান্তরের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। সাংবাদিকতা এই বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করে এবং নীতিনির্ধারকদের পরিবেশবান্ধব সিদ্ধান্ত নিতে উৎসাহিত করে। এটি জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়গুলোর সমস্যাগুলি তুলে ধরে এবং পরিবেশ রক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে জনসাধারণকে অবহিত করে। বর্তমান বিশ্বে প্রযুক্তির দ্রুত উন্নয়ন রাষ্ট্রের রূপান্তরের ক্ষেত্রে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। সাংবাদিকতা ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে তথ্য আরও দ্রুত এবং সঠিকভাবে ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে। বিশেষ করে ডেটা সাংবাদিকতা এবং অনুসন্ধানমূলক সাংবাদিকতা রাষ্ট্রের বিভিন্ন স্তরে পরিবর্তন আনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সাংবাদিকতা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি বিভাজনের অবসান ঘটিয়ে সংলাপ এবং বোঝাপড়ার পথ তৈরি করে। যুদ্ধ বা সশস্ত্র সংঘাতের সময় সাংবাদিকতা প্রকৃত পরিস্থিতি তুলে ধরে, যা সমাধানের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। উদাহরণস্বরূপ, রুয়ান্ডার গণহত্যার সময় সাংবাদিকতা বিশ্ববাসীকে সঠিক তথ্য দিতে পারলে আরও দ্রুত হস্তক্ষেপ সম্ভব হতো। সাংবাদিকতা সমাজের নৈতিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তনেও ভূমিকা পালন করে। এটি সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে উদযাপন এবং প্রচার করে। এছাড়া সমাজের মধ্যে নৈতিকতা, মূল্যবোধ এবং সহিষ্ণুতার ধারণা জাগিয়ে তোলে।

সাংবাদিকতা যেমন রাষ্ট্র রূপান্তরে অবদান রাখে, তেমনি এটি বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়। রাজনৈতিক চাপ : অনেক সময় সাংবাদিকতা রাজনৈতিক চাপের মুখে পড়ে, যা তাদের স্বাধীনতা সীমিত করে।প্রতিযোগিতা ও বাজার কেন্দ্রিকতা: বর্তমান বিশ্বে বাণিজ্যিক লাভের জন্য কিছু সংবাদমাধ্যম সত্যতার বদলে দর্শক টানার জন্য বিভ্রান্তিকর খবর পরিবেশন করে। সাংবাদিকদের নিরাপত্তা: অনেক দেশে সাংবাদিকরা কাজের জন্য হুমকি, নির্যাতন এবং হত্যার শিকার হন।

ডিজিটাল প্রযুক্তির ক্রমবিকাশ সাংবাদিকতার নতুন পথ উন্মুক্ত করছে। বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদন তৈরির জন্য ডেটার ব্যবহার বাড়ছে। তথ্য দ্রুত ছড়ানোর মাধ্যম হিসেবে সোশ্যাল মিডিয়া কার্যকর ভূমিকা রাখছে। সংবাদ সংগ্রহ, বিশ্লেষণ এবং উপস্থাপনার ক্ষেত্রে এআই-এর ব্যবহার সাংবাদিকতাকে আরও কার্যকর করে তুলেছে।

রাষ্ট্র রূপান্তরের ক্ষেত্রে সাংবাদিকতা একটি অপরিহার্য মাধ্যম। এটি কেবলমাত্র তথ্য সরবরাহকারী নয়, বরং সমাজ ও রাষ্ট্রের কাঠামো পরিবর্তনের জন্য শক্তিশালী হাতিয়ার। সঠিক দিকনির্দেশনার মাধ্যমে সাংবাদিকতা রাষ্ট্রকে আরও জবাবদিহিমূলক, স্বচ্ছ এবং মানবিক করে তুলতে পারে। তবে এর জন্য সাংবাদিকতার স্বাধীনতা, নিরাপত্তা এবং নৈতিক দায়িত্ব পালন নিশ্চিত করতে হবে। সাংবাদিকতার এই ভূমিকা রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ রূপান্তরের জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে সক্ষম। রাষ্ট্র রূপান্তরের ভূমিকায় সাংবাদিকতার অবদান অস্বীকার করা যায় না। এটি শুধুমাত্র তথ্যের যোগানদাতা নয়, বরং একটি সক্রিয় পরিবর্তন সৃষ্টিকারী মাধ্যম। তবে সাংবাদিকতা তার ভূমিকা সফলভাবে পালন করতে পারবে তখনই, যখন এটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ এবং নৈতিক মানদণ্ড অনুসরণ করবে। সাংবাদিকতার উন্নয়নের মাধ্যমে রাষ্ট্রের সার্বিক অগ্রগতি ও গণতান্ত্রিক কাঠামোর শক্তিশালীকরণ সম্ভব।

লেখক পরিচিতি : উজ্জ্বল হোসাইন, গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতায় মাস্টার্স (ব্যাচ ২০২১), পিআইবি।

বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে

চাঁদপুরে “হুইলস অব পিস”-এর বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৬ জুন, ২০২৫, ১২:৪৩ অপরাহ্ণ
চাঁদপুরে “হুইলস অব পিস”-এর বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি

মিশন গ্রিন বাংলাদেশ-এর সহায়তায়, এসডিজি ভিত্তিক পিস প্রজেক্টের পরিবেশবান্ধব পদক্ষেপ । বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৫ উপলক্ষে চাঁদপুর সদর উপজেলার চাঁদপুর জেলা স্কাউটস ভবনের সামনের প্রাঙ্গণে আয়োজিত হলো এক ব্যতিক্রমধর্মী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি। আয়োজনটি করেছে “প্রজেক্ট হুইলস অব পিস”, যা একটি এসডিজি (SDG) ভিত্তিক স্কাউট পিস প্রজেক্ট।

এই উদ্যোগে সহায়তা করে মিশন গ্রিন বাংলাদেশ, এবং সহযোগিতা করে মেঘনাপাড় ওপেন স্কাউট গ্রুপ। সারাদেশে ৬৪ জেলায় ৫ জুন একসাথে বৃক্ষরোপণের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে ৪০ জন তরুণ স্বেচ্ছাসেবক সক্রিয়ভাবে অংশ নেন, যারা শুধু গাছ লাগিয়ে দায়িত্ব শেষ করেননি, বরং পরিবেশ সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে মাঠে-ময়দানে কাজ করেছেন।

পরিবেশ দূষণ ও প্লাস্টিকের অপব্যবহার প্রতিরোধে আয়োজনস্থল এবং আশেপাশের এলাকায় সচেতনতামূলক পোস্টার লাগানো হয়। এছাড়াও স্থানীয় বাজার ও জনবহুল স্থানে লিফলেট বিতরণ করে সাধারণ মানুষের মাঝে বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়—”সবুজ পৃথিবী, নিরাপদ ভবিষ্যৎ”।

বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমে ফলজ গাছ যেমন আম, কাঁঠাল, পেয়ারা, জামসহ স্থানীয় প্রজাতির চারা রোপণ করা হয়। এসব গাছ একদিকে পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা করবে, অন্যদিকে স্থানীয় মানুষের উপকারে আসবে।

উক্ত কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন প্রজেক্ট হুইলস অব পিস এর প্রতিষ্ঠাতা ওমর তামীম সাফি। তিনি বলেন:
**”পরিবেশ রক্ষা আমাদের দায়িত্ব নয়, বরং এটা আমাদের অস্তিত্বের প্রশ্ন। একটি গাছ মানে শুধু ছায়া বা ফল নয়—এটি জীবনের ধারক। আজকের এই বিশ্ব পরিবেশ দিবসে আমরা শপথ করছি, সবুজের জন্য কাজ করব—শুধু শহরে নয়, প্রত্যন্ত অঞ্চলেও সচেতনতার আলো ছড়িয়ে দেব।

এই কর্মসূচি সফল করতে যারা পাশে ছিলেন, বিশেষ করে মিশন গ্রিন বাংলাদেশ, মেঘনাপাড় মুক্ত স্কাউট গ্রুপ এর সদস্যবৃন্দ। আমরা বিশ্বাস করি, সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে, এ ধরনের পরিবেশবান্ধব কর্মকাণ্ড আরও সংগঠিতভাবে, বৃহৎ পরিসরে এবং টেকসইভাবে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব। আমাদের সবার সম্মিলিত প্রয়াসেই একটি পরিচ্ছন্ন, সবুজ ও বাসযোগ্য বাংলাদেশ গড়ে তোলা যাবে।”**

প্রজেক্ট হুইলস অব পিস, জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDG)-এর বিভিন্ন দিক যেমন পরিবেশ সুরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, যুবসম্প্রদায়ের ক্ষমতায়ন এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এই ইনিসিয়েটিভ এর মাধ্যমে স্কাউট এবং নন স্কাউট দের সাথে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে । ১৭ টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ৮ টি লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করে চলেছে প্রজেক্ট হুইলস অব পিস । প্রকৃতি, পরিবেশ সংরক্ষণ, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক, ছেলে ও মেয়েদের বয়:সন্ধিকালের শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন, এলাকা ভিত্তিক ভাবে পরিবেশ দূষণরোধে সচেতনতা সৃষ্টি এছাড়া প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে, প্লাস্টিকের পুন:ব্যবহার বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মসূচী পরিচালনা করে যাচ্ছে । কর্মসূচীতে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রজেক্ট হুইলস অব পিসের সদস্য রুমাইয়া বিনতে রহিম, সাব্বির আহমেদ, নূর মোহাম্মদ, তাসফিয়া সুলতানা সহ আরোও অনেক সদস্যবৃন্দ।

এই কর্মসূচি তাদের চলমান সবুজ উদ্যোগেরই একটি অংশ। আয়োজকরা জানান, ভবিষ্যতে দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও তারা একই রকম কার্যক্রম ছড়িয়ে দিতে চান।

বাজেট প্রতিক্রিয়া : শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে এডিপি বরাদ্দ কমানো উদ্বেগজনক: সিপিডি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫, ২:৩৮ অপরাহ্ণ
বাজেট প্রতিক্রিয়া : শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে এডিপি বরাদ্দ কমানো উদ্বেগজনক: সিপিডি

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির বরাদ্দ কমানো উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। আজ সোমবার সিপিডি কার্যালয়ে আয়োজিত তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘বাজেটের যে কাঠামো উপস্থাপন করা হয়েছে, সেখানে বাজেটের আকার সামান্য ছোট করা হয়েছে। পাশাপাশি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি, সেখানেও কিছুটা কাটছাঁট করা হয়েছে। বাজেটের আকার নিয়ে অনেকদিন ধরে আলোচনা হয়েছে, সেটার অন্যতম কারণ হচ্ছে, আমাদের যে চলমান অর্থনৈতিক সংকট, অর্থাৎ উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগ স্থবিরতা, কর্মসংস্থানে সমস্যা এবং রাজস্ব আহরণের সমস্যা বিবেচনায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা বাজেট প্রস্তাব করেছে বলে আমাদের মনে হয়েছে।’

ড. ফাহমিদা বলেন, ‘বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির দিকে তাকালে দেখা যাবে, চলতি অর্থবছরের তুলনায় ১৩ দশমিক ২ শতাংশ কমানো হয়েছে এবং ১৫টি খাতের মধ্যে ১৪টি খাতেই কমানো হয়েছে। এখানে উল্লেখযোগ্য এবং চিন্তার বিষয় হচ্ছে, তিনটি খাত—শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষিতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে টাকার অংকে বরাদ্দ কমানো হয়েছে। সেটা আমাদের কাছে উদ্বেগজনক মনে হয়, কারণ শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে আমরা সব সময় বরাদ্দ বাড়ানোর কথা বলে আসছি এবং কৃষি খাতে, বিশেষত খাদ্য নিরাপত্তার দিকে এখানে বরাদ্দ অনেক গুরুত্বপূর্ণ।’ তিনি বলেন, ‘ভৌত অবকাঠামো, বিশেষ করে পরিবহন ও বিদ্যুৎ-জ্বালানি বরাবরের মতো উপরের দিকে আছে যুক্তিযুক্তভাবে।’

এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, কর কাঠামোর মধ্যে করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ দশমিক ৫ লাখ, অর্থাৎ সাড়ে ৩ লাখ টাকা থেকে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করা হয়েছে, এটা একটা ভালো পদক্ষেপ। কিন্তু প্রায় ৩ বছরের মতো সময় ধরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের উপরে রয়েছে, ১০-১১ শতাংশে উঠে গেছে। সেদিক থেকে যে খুব একটা উল্লম্ফন হয়েছে সেটা না। তবে এটাকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, যারা জুলাই যোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত, তাদের জন্য করমুক্ত আয়সীমা ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা করা হয়েছে, সেটাও আমরা ভালো পদক্ষেপ মনে করি।’

‘করের বিভিন্ন স্ল্যাবগুলোতে পরিবর্তন করা হয়েছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে যারা নিম্ন মধ্যআয়ের যারা পড়েছেন, কর দেওয়ার ক্ষেত্রে হারটা তাদের মধ্যেই বেশি পড়বে। আবার যারা আয়ের উচ্চ পর্যায়ে রয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রে অনেক কম পড়বে। এখানে বৈষম্যের চিত্র দেখা যাচ্ছে। অঞ্চলভিত্তিক ন্যূনতম কর ধরা হয়েছে ৫ হাজার টাকা, এখানে আমরা মনে করছি বৈষম্য রয়েছে। কারণ রাজধানী ঢাকা কিংবা অন্য আরেকটি জেলার সবাইকে এক করে দেখানো; সরকারি সেবা সব জায়গায় সবাই কিন্তু সমানভাবে নেয় না। এখানে পুনর্বিবেচনার সুযোগ রয়েছে বলে আমরা মনে করি,’ যোগ করেন তিনি।

ফাহমিদা বলেন, ‘শুল্ক যৌক্তিকরণ হয়েছে এবং আমদানি শিল্প যৌক্তিকিকরণ করতে গিয়ে হয়তো কিছু কিছু শিল্প চাপে পড়তে পারে। বিশেষ করে যখন মূল্যস্ফীতি বেশি, কস্ট অব ডুইং বিজনেস বেশি। এটাকে শুল্কের যৌক্তিকিকরণ করতেই হবে, কারণ বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বেরিয়ে যাবে। আস্তে আস্তে ট্যারিফ কমানোর দিকে নজর দিতে হবে। যে প্রতিঘাত আসবে, সেটা মোকাবিলা করার জন্য কস্ট অব ডুইং বিজনেসের ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ-জ্বালানি সাশ্রয়ী মূল্যে কিংবা সহজ শর্তে ঋণ কিংবা আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমিয়ে কস্ট অব ডুইং বিজনেস কমানোর উদ্যোগ নিতে হবে।’

প্রস্তাবিত বাজেটে কিছু ভালো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ই-কমার্সের সুযোগ-সুবিধা এবং ই-কমার্সকে ফরমাল সেক্টরে আনা; এখানে করের আওতায় আনা এবং পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের অধীনে যে ৫ হাজার ৪০ কোটি টাকার ফান্ড গঠন হয়েছে। আমরা মনে করি, আগেও পিপিপি মডেলের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, সেগুলো কিন্তু খুব একটা এগোয় নাই।

নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ১ হাজার কোটি টাকার ফান্ড গঠনকে স্বাগত জানিয়েছে সিপিডি।

কালো টাকা সাদা করার সুযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কালো টাকা সাদার করার সুযোগটা রয়ে গেছে। যদিও এখানে রেট বাড়ানো হয়েছে কিন্তু আমরা আগেও বলেছি, কালো টাকার ব্যাপারে আমাদের অবস্থান হচ্ছে, এই সুযোগ দিয়ে যারা নৈতিকভাবে প্রতি বছর স্বচ্ছ আয় করে, স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতার সঙ্গে কর দিয়ে থাকেন, তাদের প্রতি নৈতিক আঘাত। কারণ তাদের আদর্শিকভাবে নিরুৎসাহিত করা হয়। দুটি জিনিস সমান্তরালভাবে চলতে পারে না!’

ফাহমিদা আরও বলেন, ‘আগে করের হারটাও কম রাখা হতো, এখন করের হার বেশি রাখা হয়েছে। তারপরও এটা থেকে খুব একটা আদায় হয় না। যদি এখান থেকে সত্যি আদায় করার ইচ্ছা থাকে, তাহলে কিন্তু সক্রিয় পদক্ষেপ নিতে হবে। এছাড়া দুএকবার সুযোগ দিয়ে চিরতরে বন্ধ করে দেওয়া উচিত।’ উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময় কর রেয়াত কিংবা বিভিন্ন জায়গা থেকে কমানো এবং পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা ও পরিমাণ বাড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি।

‘সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির অধীনে ১৪০টির মতো কার্যক্রম একসঙ্গে চলতো, সেগুলো কমিয়ে ৯৫টি করা হয়েছে এবং সেখানে অর্থ বরাদ্দ কম করা হয়েছে। খুব কম না কিন্তু বাজেটের তুলনায় ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ এবং মোট বাজেটের ১ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকার মতো।’ ‘আমরা বারবার বলেছি, এখানে কতগুলো উপাদান যুক্ত করা হয়, যেগুলো সামাজিক নিরাপত্তা বা সামাজিক সুরক্ষার অধীনে দেওয়া যুক্তিযুক্ত নয়। কারণ এটা একেবারেই অতি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য। সরকারি কর্মচারীদের পেনশন, সেখানে আছে ৩৫ হাজার ২৮২ কোটি টাকা। কৃষি ভর্তুকি আছে ১৭ হাজার কোটি টাকা। এই দুটি মিলিয়ে ৫২ হাজার কোটি টাকার বেশি হয়, সেটা বাদ দিয়ে রয়ে যায় ৬৪ হাজার কোটি টাকার মতো। সেটা অনেকখানি কমে আসে। এগুলো বাদ দিয়ে যে নেট সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, সেটাকে দেখাতে হবে। সেটা দেখে তুলনা করা যেতে পারে যে আসলেই দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য কী করা হলো,’ যোগ করেন তিনি।

ফাহমিদা বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে বলতে চাই, কিছু কিছু পদক্ষেপ ভালো নেওয়া হয়েছে বিচ্ছিন্নভাবে। কিন্তু সামগ্রিক কাঠামোগত পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে যে একই কাঠামোর মধ্যে এখানে একটু বেশি, ওখানে একটু কম—এ রকম করে নেওয়া হয়েছে। বাজেটের যে দর্শন, এখানে বৈষম্যহীন সমাজের কথা বলা হয়েছে, সেই উদ্দেশ্যের সঙ্গে যে বাস্তব পদক্ষেপগুলো নেওয়া হয়েছে, সব ক্ষেত্রে সেটা সাযুজ্যপূর্ণ হয়নি।’

ফেব্রুয়ারি অথবা এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছি: জামায়াতের আমির

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫, ২:৩৬ অপরাহ্ণ
ফেব্রুয়ারি অথবা এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছি: জামায়াতের আমির

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি বা এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন দলটির আমির শফিকুর রহমান।

মঙ্গলবার (৩ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে জামায়াতের নিবন্ধন ফিরে পাওয়া উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

শফিকুর রহমান বলেন, ‘ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি অথবা এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচনের দাবি আমরা জানিয়েছি। রোজার আগে অথবা যদি কোনো কারণে সম্ভব না হয়, তাহলে যেন এপ্রিলের মধ্যেই নির্বাচন দেওয়া হয়। কারণ আবহাওয়ার কারণে মে মাসের পর নির্বাচন করা সম্ভব নয়।’

এ সময় তিনি বলেন, ‘আজকেও যদি সমতল মাঠ তৈরি হয়, ফেয়ার ইলেকশন যদি সম্ভব হয়, তাহলেও আমরা প্রস্তুত রয়েছি। কিন্তু ফেয়ার ইলেকশনের মাঠ তৈরি না হলে এপ্রিলে নির্বাচন হলেও তো কোনো লাভ নেই।’

প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোট দেওয়ার বিষয়ে জামায়াতের আমির বলেন, ‘প্রবাসীদের অবশ্যই ভোটের ব্যবস্থা করতে হবে, এ বিষয়ে আমরা ছাড় দিতে রাজি নই।’

তিনি বলেন, ‘প্রবাসীরা তাদের নাগরিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারেন না। আমরা ইসির কাছে দাবি জানিয়েছি, প্রবাসীরা যেন ভোট দিতে পারেন, তার ব্যবস্থা করার জন্য। এটা কোনো কঠিন বিষয় নয়। কিন্তু ইসির পক্ষ থেকে আমরা কোনো অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি না।’

এর আগে গতকাল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহেরও বলেন, বৈঠকে তারা বলেছেন, জুলাইয়ের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে। আর নির্বাচন হতে পারে ডিসেম্বর থেকে এপ্রিলের মধ্যে।

তাহের বলেন, ‘আমরা বলেছি জুলাইয়ের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে। বেশিরভাগ বিষয়ে সবাই একমত হয়েছে। সামান্য কিছু বিষয়ে মতানৈক্য রয়েছে। জুলাইয়ের মধ্যে সংস্কার শেষ হবে। এরপর একটি জুলাই সনদ হবে। সেখানে আমরা সব দল স্বাক্ষর করব।’