খুঁজুন
                               
বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০২৫, ৯ মাঘ, ১৪৩১

কবি নজরুলের বিদ্রোহী চেতনা ও সাম্যবাদ

উজ্জ্বল হোসাইন
প্রকাশিত: বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫, ১০:৩১ অপরাহ্ণ
কবি নজরুলের বিদ্রোহী চেতনা ও সাম্যবাদ

নজরুল ইসলাম, বাংলার বিদ্রোহী কবি, সাহিত্যিক, এবং সংগীতজ্ঞ, বাংলা সাহিত্যে সাম্যের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার অন্যতম প্রধান প্রতীক। তাঁর জীবন ও সাহিত্যকর্মের প্রতিটি স্তরে স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে সাম্য, মানবতা এবং বিপ্লবের ধ্বনি। কাজী নজরুল ইসলামের কাব্য ও গানে সাম্যবাদের যে অনন্য প্রতিফলন দেখা যায়, তা তাঁকে সাম্যের কবি হিসেবে অভিহিত করেছে। ১৮৯৯ সালের ২৪ মে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন কাজী নজরুল ইসলাম। শৈশব থেকেই তিনি দারিদ্র্যের সাথে লড়াই করে বেড়ে ওঠেন। এই কঠিন জীবনের অভিজ্ঞতা তাঁকে মানুষের দুঃখ-দুর্দশার সঙ্গে গভীরভাবে সংযুক্ত করেছিল। তিনি মক্তবের শিক্ষালাভের পাশাপাশি মসজিদে মুয়াজ্জিনের কাজ করতেন এবং পরে লেটো গানে যোগ দিয়ে বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়াতেন।

নজরুলের সাহিত্যিক জীবনের শুরু থেকে বিদ্রোহ ও সাম্যের ধারণা প্রবলভাবে প্রকাশ পায়। তাঁর লেখনীতে বারবার উঠে এসেছে শোষিত, নিপীড়িত এবং বঞ্চিত মানুষের পক্ষে কণ্ঠস্বর। ১৯২২ সালে প্রকাশিত তাঁর কাব্যগ্রন্থ অগ্নিবীণা বিদ্রোহী কাব্যের এক চমৎকার নিদর্শন, যা তাঁকে বাংলা সাহিত্যের এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যায়। নজরুলের কাছে সাম্য মানে শুধু অর্থনৈতিক সাম্য নয়। এটি ছিল মানুষের ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, জাতি, এবং শ্রেণি ভেদে সম্পূর্ণ সমান অধিকারের কথা। তিনি বিশ্বাস করতেন, শোষণমুক্ত এক পৃথিবী গড়ার জন্য সাম্যের প্রতিষ্ঠা অপরিহার্য। এই বিশ্বাস থেকেই তাঁর কাব্যে, প্রবন্ধে এবং গানে সাম্যের চেতনা বারবার ফিরে আসে।

নজরুলের বিদ্রোহী কবিতায় তিনি ঘোষণা করেন,
আমি চির বিদ্রোহী বীর—
বিশ্ব ছাড়ায়ে উঠিয়াছি একা চির উন্নত শির!

এই কবিতায় তিনি শুধুমাত্র ব্যক্তিগত বিদ্রোহের কথা বলেননি, বরং সমাজে শোষণ ও অসাম্যের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর কণ্ঠস্বর ছিল শাসক শ্রেণির বিরুদ্ধে এবং নিপীড়িত মানুষের পক্ষে। নজরুলের কবিতাগুলোতে সাম্যের বাণী স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত। তাঁর কবিতা কখনো বিদ্রোহী, কখনো প্রেমময়, আবার কখনো করুণাভরা মানবিক অনুভূতির কথা বলে।

কাণ্ডারী হুঁশিয়ার কবিতায় তিনি জগৎ-সংসারের সকল অশান্তি, অশোভন ও অসাম্যের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। সেখানে তিনি আহ্বান জানান,
দুর্বল, ধ্বস্ত, ক্লান্ত, ক্ষান্ত, কাঁদিছে মানব-সন্তান,
হে কাণ্ডারী, জাগো এবার জাগো! অঘ্রানেরই চাঁদ!

নজরুল ইসলামের গানগুলোতে সাম্যের চেতনা একইভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। বিশেষত তাঁর ইসলামি সংগীত এবং শ্যামাসংগীতে ধর্ম-বর্ণের বিভাজনহীন একতার সুর শোনা যায়। তিনি লিখেছেন,
মসজিদেরই পাশে আমায় কবর দিও ভাই
যেন গোরের থেকে মুয়াজ্জিনের আযান শুনতে পাই।

এই পঙক্তিতে তিনি ধর্মের সীমানা অতিক্রম করে মানবতার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর ইসলামি গান যেমন মানুষের সাম্য ও একতার কথা বলে, তেমনি শ্যামাসংগীতও ভক্তি ও প্রেমের মাধ্যমে মানবিক মূল্যবোধের দীক্ষা দেয়। নজরুলের প্রবন্ধগুলোতেও সাম্যের ভাবনা গভীরভাবে নিহিত। তাঁর বিখ্যাত প্রবন্ধ ধর্ম ও মানবতা-তে তিনি ধর্মের নামে বিভেদের বিরোধিতা করেন এবং বলেন যে, ধর্মের আসল উদ্দেশ্য মানবকল্যাণ। তিনি স্পষ্টভাবে ঘোষণা করেন,
ধর্ম মানুষকে ভালোবাসতে শেখায়, ঘৃণা করতে নয়।

নজরুলের সাম্যবাদ ছিল গভীরভাবে মানবিক এবং সর্বজনীন। তিনি শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট সমাজ বা সম্প্রদায়ের জন্য সাম্যের কথা বলেননি, বরং সমগ্র মানবজাতির মুক্তি চেয়েছিলেন। তাঁর সাহিত্যকর্মে বারবার উঠে এসেছে নারীর অধিকারের কথা, যা সেই সময়ের প্রেক্ষাপটে খুবই ব্যতিক্রমী ছিল। তিনি লিখেছেন,
বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।

নজরুল এখানে নারী ও পুরুষের সমান অবদানের কথা বলেছেন, যা সমাজে লিঙ্গবৈষম্যের বিরুদ্ধে এক দৃঢ় অবস্থান। বাংলা সাহিত্যে কাজী নজরুল ইসলাম সাম্যের কবি হিসেবে অমর হয়ে আছেন। তাঁর সাহিত্যকর্ম মানুষকে দারিদ্র্য, শোষণ এবং অসাম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করতে উদ্বুদ্ধ করে। নজরুলের রচনা শুধুমাত্র সাহিত্য নয়, এটি একটি আন্দোলন, একটি বিপ্লব। তাঁর কাব্য, গান, প্রবন্ধে যে সাম্যের বাণী তিনি প্রচার করেছেন, তা আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক। নজরুল ইসলামের সাম্যবাদ কেবল রাজনৈতিক বা সামাজিক আন্দোলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, এটি ছিল একটি দার্শনিক দর্শন। তাঁর রচনাবলি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, মানবজাতির প্রকৃত মুক্তি কেবল সাম্যের মাধ্যমেই সম্ভব। কাজী নজরুল ইসলাম আজও আমাদের মাঝে এক চিরজাগ্রত সাম্যের প্রতীক হয়ে আছেন। নজরুলের সাহিত্যকর্মে সাম্য ও বিদ্রোহের চেতনা অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। তিনি শাসনব্যবস্থা, সামাজিক অবিচার এবং ধর্মের নামে বিভেদের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তাঁর লেখা বিদ্রোহী কবিতা বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি, যা বিদ্রোহ ও সাম্যের এক অমোঘ বার্তা বহন করে।

আমি চির উন্নত শির
শির নেহারি আমারি নত শির ওই শিখর হিমাদ্রির!

এই পঙক্তিতে তিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। নজরুলের মতে, মানুষের আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই সাম্যের ভিত্তি স্থাপন সম্ভব। তাঁর সাহিত্যে বারবার দেখা যায়, তিনি শাসকের দমননীতি এবং জাতি-ধর্মের বিভাজন নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। নজরুলের সাম্যবাদ ধর্মের ক্ষেত্রেও এক নতুন পথ দেখায়। তিনি ইসলামের গান যেমন রচনা করেছেন, তেমনি হিন্দু শ্যামাসংগীতেও ছিলেন পারদর্শী। তাঁর জীবনী ও সাহিত্যকর্মে ধর্মীয় সাম্যের এই চিত্র স্পষ্ট। তিনি লিখেছেন,

গাহি সাম্যের গান—
মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান।

এই বার্তা ধর্মীয় সাম্যের চূড়ান্ত প্রতীক। তাঁর রচনায় আমরা দেখতে পাই, তিনি হিন্দু-মুসলমান বিভেদ দূর করে এক মানবিক সমাজ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। ধর্মকে তিনি মানুষের হৃদয়ের পূজা হিসেবে কল্পনা করেছিলেন, যা ভেদাভেদ নয়, বরং ঐক্যের পথ দেখায়।

সকলের তরে সকলে আমরা,
প্রত্যেকে মোরা পরের তরে।

এই পঙক্তিতে নজরুল মানবজাতির সামগ্রিক কল্যাণের বার্তা দিয়েছেন। শোষণ ও শ্রেণি-বৈষম্যের বিরুদ্ধে নজরুল

নজরুলের কবিতা ও প্রবন্ধে শ্রেণি-সংগ্রামের চিত্র অত্যন্ত প্রাঞ্জল। তিনি ছিলেন দারিদ্র্য ও শোষণের বিরুদ্ধে একজন অকুতোভয় যোদ্ধা। তাঁর দুর্দিনের যাত্রী কাব্যগ্রন্থ এবং কাণ্ডারী হুঁশিয়ার কবিতা এর উজ্জ্বল উদাহরণ।

পড়ে না চোখের পর্দা, কান্না পড়ে না মন,
অশ্রুর ভেলা লইয়া চলো করিব বিশ্ব ভাসন!

এই আহ্বান নিপীড়িত মানুষের মুক্তির এক প্রতীক। নজরুল শ্রেণিবিভক্ত সমাজকে ধ্বংস করে একটি শোষণমুক্ত সমাজের স্বপ্ন দেখেছিলেন। নজরুলের সাম্যবাদ শুধু অর্থনৈতিক বা সামাজিক ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ ছিল না; তিনি নারীর অধিকার এবং মর্যাদার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছিলেন। এক সময় যখন নারীর সামাজিক অবস্থান অত্যন্ত নিচে ছিল, তখন নজরুল নারীকে সমান অধিকার দেওয়ার কথা বলেছিলেন।

গৃহিণী গৃহের শ্রী—
গৃহের আলো, জীবনের আশা।

এই পঙক্তিতে নজরুল নারীকে ঘরের শোভা এবং মানবসমাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে তুলে ধরেছেন।

নজরুল দারিদ্র্যের যন্ত্রণা নিজে অনুভব করেছিলেন এবং তাঁর সাহিত্যে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ দেখা যায়। তিনি লিখেছেন:

দেখিনু সেদিন রেলে—
কালো মুখ শীর্ণ তনু, ক্ষুধায় কঙ্কাল,
দেখিনু পথের ভিখারি।

এই পঙক্তি শুধু দারিদ্র্যের চিত্রায়ন নয়; এটি সমাজের দায়বদ্ধতাও স্মরণ করিয়ে দেয়। নজরুলের সাম্যবাদ আজও সমান প্রাসঙ্গিক। আধুনিক সমাজে যেখানে এখনও বৈষম্য, শোষণ, এবং বিভেদ রয়ে গেছে, সেখানে তাঁর রচনাগুলি আমাদের অনুপ্রেরণা জোগায়। তাঁর সাহিত্য শুধু বাংলার নয়, সমগ্র মানবজাতির জন্য এক মূল্যবান সম্পদ। নজরুল ইসলাম নিছক একজন কবি ছিলেন না; তিনি ছিলেন এক সাম্যবাদী বিপ্লবী, যিনি সাহিত্যের মাধ্যমে সমাজ পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখেছিলেন। তাঁর বিদ্রোহী সুর, প্রেমময় দৃষ্টিভঙ্গি এবং মানবিক বোধ আমাদের আজও আলোড়িত করে। কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর জীবনের মাধ্যমে এবং সাহিত্যে সাম্যের যে চেতনা জাগ্রত করেছেন, তা চিরকাল অম্লান থাকবে। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলা যায়, নজরুল কেবল বাংলার নয়, সারা বিশ্বের সাম্যের কবি।

লেখক পরিচিতি : উজ্জ্বল হোসাইন, লেখক ও সংগঠক, চাঁদপুর, 01710802899, rtrujjal@gmail.com

চাঁদপুরে পানির অভাবে শুকিয়ে গেছে মাঠ, নষ্ট হচ্ছে বীজ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫, ১০:৪১ অপরাহ্ণ
চাঁদপুরে পানির অভাবে শুকিয়ে গেছে মাঠ, নষ্ট হচ্ছে বীজ

চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার খালগুলো শুকিয়ে হাজারো কৃষকদের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পানির অভাবে অধিকাংশ মাঠ শুকিয়ে ফেটে গেছে, বীজ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন কৃষকরা। এ অবস্থায় স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে কৃষকরা দ্রুত পানির ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে খালে পানি না থাকার কারণে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এতে করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। সরকারিভাবে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হলে তাদের এই দুর্দশা অব্যাহত থাকবে। এই খাল খনন সঠিকভাবে হচ্ছে না বলেও দাবি করেন তারা।

কমলাপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল হান্নান খান বলেন, খালে পানি না থাকাতে আমরা ফসল চাষ করতে পারিনি। জলাবদ্ধতার কারণে আমাদের আমন ধান নষ্ট হয়ে গেছে। এখন বোরো ধান রোপণ করবো, কিন্তু পানি পাচ্ছি না। এখন আমরা খুবই কষ্টে আছি, সামনের দিনগুলোতে যে আমরা কি খাবো বা কীভাবে জীবন বাঁচাবো দিশেহারা হয়ে গিয়েছি। যদি আমাদেরকে দ্রুত পানি দেয় তাহলে আমরা বোরো ধান রোপণ করতে পারবো। আমাদের জীবন বাঁচাতে পারবো।

চাঁদপুর পওর শাখা-৩, হাইমচর উপসহকারী প্রকৌশলী মুহাম্মদ হাসান গাজী বলেন, হাইমচর উপজেলায় আমরা দুটি খাল খনন করছি। খালগুলো হচ্ছে বিফিফাইভ খালটি হচ্ছে কমলাপুর থেকে মহজমপুর ব্রিজ পর্যন্ত ৩ দশমিক ১৮৫ কিলোমিটার। অন্যটি ডব্লিউওয়াইসি খাল, এটি টেককান্দি থেকে জনতা বাজার পর্যন্ত ২ দশমিক ৫০ কিলোমিটার খাল খনন করা হবে। খাল দুটি হাইমচর উপজেলার প্রধান খাল। কাজ করতে গেলে কিছু প্রতিবন্ধকতা আসে, আমরা সেই প্রতিবন্ধকতা রেখে কাজ করে যাচ্ছি। আশা করি দু-চার দিনের মধ্যে খালের খনন কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্মকর্তা মো. শাকিল খন্দকার বলেন, বোরো মৌসুমে আমার কৃষক ভাইদের বোরো আবাদ করতে তাদের পানির প্রয়োজন হয়। আমাদের হাইমচরে যে দুটি খাল রয়েছে সেই খালগুলোতে দ্রুত পানি দেওয়ার জন্য আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে চিঠি দিয়েছি। সঠিক সময়ে যদি কৃষকরা পানি না পায় বোরো আবাদ বিঘ্নিত হবে। দ্রুত সময়ে যেন কৃষকরা পানি পায় সেজন্য আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দ্বিতীয়বার চিঠি প্রদান করেছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালমা নাজনীন তৃষা বলেন, আমরা বেশ কয়েকদিন যাবত অভিযোগ পেয়ে আসছি বিফিফাইভ খালটি খননে অনিয়ম হচ্ছে। তাই আজকে আমি সেখানে পরিদর্শনে গিয়েছি। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বলে দিয়েছি, যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে খাল খনন শেষ করেন এবং সঠিকভাবে খাল খনন করেন। আমি আশা করি, এই খাল খননের মাধ্যমে কৃষকদের দুঃখ-দুর্দশা দূর হবে এবং উপজেলার বিভিন্ন স্থানের জলাবদ্ধতা অনেকাংশেই কমে যাবে।

সারাদেশে বাড়বে দিনের তাপমাত্রা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫, ১২:৩৩ অপরাহ্ণ
সারাদেশে বাড়বে দিনের তাপমাত্রা

সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থটি। বুধবার (২২ জানুয়ারি) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. তরিফুল নেওয়াজ কবিরের দেওয়া পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। তবে শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে, তা কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। তবে শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে, তা কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া বন্ধ থাকতে পারে। তবে শেষ বাত থোকে সকাল পর্যন্ত মারাদেশে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সেই সঙ্গে সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া পাঁচদিনের প্রথম দিকে রাত ও দিনের তাপমাত্রা হ্রাস পেতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

হ্যাকিংয়ে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫, ১২:২৭ অপরাহ্ণ
হ্যাকিংয়ে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার

সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের অনুমোদিত খসড়া থেকে বিতর্কিত সাইবার বুলিংয়ের বিধান বাদ দেওয়া হয়েছে। নতুন করে কিছু বিষয়ও যুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে বেআইনি প্রবেশ বা হ্যাকিংয়ের ক্ষেত্রে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তারের বিধান রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। ‘সাইবার স্পেসকে সবার জন্য নিরাপদ করতে’ গত ২৪ ডিসেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৪-এর খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। এদিন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, এ সরকার সাইবার স্পেসকে সবার জন্য নিরাপদ করতে চায়। আপনারা জানেন যে সাইবার স্পেসে অনেক ধরনের ক্রাইম হয়। আমাদের মা-বোনরাসহ অনেকেই নানা ধরনের বুলিংয়ের শিকার হন। শিশুদের অনেক ধরনের বুলিংয়ের শিকার হতে হয়। সাইবার স্পেসকে নিরাপদ করা সরকারের দায়িত্ব।

খসড়ার ধারা ২৫-এ সাইবার বুলিংয়ের নামে একটি বিধান ছিল। এ বিধান নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এতে বাক স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হওয়ার সুযোগ তৈরি হবে বলে বিভিন্ন মহল থেকে দাবি করা হয়। ধারা ২৫-এ উল্লেখ করা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, বার্তা আদান-প্রদান প্ল্যাটফর্ম, ওয়েবসাইট বা সাইবার স্পেসে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে ভয়ভীতি প্রদর্শন, হুমকি প্রদান বা হয়রানি করা, মিথ্যা বা ক্ষতিকর তথ্য, অপমানজনক বার্তা, গালিগালাজ, গুজব বা মানহানিকর কনটেন্ট ছড়ানোর মাধ্যমে কোনো ব্যক্তির সুনাম বা মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত করা হলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

অবশেষে সমালোচনার মুখে খসড়া থেকে এটি বাদ দেওয়া হয়েছে। খসড়ায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) কনটেন্ট ব্লকের অনুরোধ করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তবে যেসব কনটেন্ট ব্লক হবে, সরকার তা জনস্বার্থে প্রকাশ করবে বলেও খসড়ায় উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া ধর্মীয় বিদ্বেষের সঙ্গে জাতিগত বিদ্বেষ ও ঘৃণার প্রসঙ্গও যুক্ত হয়েছে।