খুঁজুন
                               
শুক্রবার, ২৫ জুলাই, ২০২৫, ১০ শ্রাবণ, ১৪৩২

স্বপ্নপুরীর রাজা ও কাল্পনিক প্রেমের গল্প

উজ্জ্বল হোসাইন
প্রকাশিত: সোমবার, ৬ জানুয়ারি, ২০২৫, ১২:৩৩ অপরাহ্ণ
স্বপ্নপুরীর রাজা ও কাল্পনিক প্রেমের গল্প

পনেরো বছরের কিশোর রোহান ছিল গ্রামাঞ্চলের একজন সাধারণ ছেলে। প্রতিদিনের মতো সেদিনও বিকেলে সে তার প্রিয় বাঁশি নিয়ে গ্রামের পাশের বনের ধারে গিয়ে বসেছিল। আকাশ লালচে হয়ে গিয়েছিল, পাখিরা ফিরছিল তাদের নীড়ে। হঠাৎ করেই তার চোখে পড়ল এক বর্ণিল আলো। গাছপালার ফাঁক দিয়ে আলোটা ঠিক যেন কোনো সোনার বাক্স থেকে বেরিয়ে আসছিল। রোহান কৌতূহলী হয়ে এগিয়ে গেল।
অবাক হয়ে সে দেখল, বনের মাটিতে একটা ছোট, চকচকে বাক্স পড়ে আছে। বাক্সটা খুলতেই ঝলমলে আলো চারদিকে ছড়িয়ে পড়ল। তার ভেতর থেকে বেরিয়ে এলো এক ছোট্ট, মায়াবী প্রাণী। প্রাণীটি বলল, “আমি স্বপ্নপুরীর দূত। তুমিই আমাদের রাজ্যকে রক্ষা করতে পারবে।”
রোহান কিছু বুঝে ওঠার আগেই প্রাণীটি তাকে হাত ধরে টেনে এক ঝলমলে গুহার দিকে নিয়ে গেল। গুহার ভেতর ঢুকতেই চারপাশ বদলে গেল। রোহান নিজেকে আবিষ্কার করল এক অদ্ভুত জায়গায়—স্বপ্নপুরী। এটি ছিল এক রঙিন রাজ্য যেখানে সবকিছুই স্বপ্নের মতো সুন্দর। কিন্তু এখানকার বাসিন্দাদের মুখে ছিল গভীর দুশ্চিন্তার ছাপ।
প্রাণীটি জানাল, স্বপ্নপুরীর রাজা কোনো অজ্ঞাত শক্তির কারণে ঘুমিয়ে পড়েছেন। যদি তিনি জাগ্রত না হন, তবে স্বপ্নপুরী ধ্বংস হয়ে যাবে। আমাদের একমাত্র ভরসা তুমি।
রোহান প্রথমে দ্বিধাগ্রস্ত ছিল। সে তো একজন সাধারণ ছেলে, রাজাকে জাগানোর মতো কাজ কীভাবে করবে? কিন্তু প্রাণীটির অনুরোধে এবং স্বপ্নপুরীর বাসিন্দাদের দুঃখ দেখে সে সাহস সঞ্চয় করল। তাকে বলা হলো, রাজাকে জাগানোর জন্য “জীবনের ফুল” আনতে হবে। ফুলটি স্বপ্নপুরীর পূর্ব প্রান্তে থাকা কালের গুহাতে রয়েছে।
প্রাণীটি তাকে একটি যাদুর মানচিত্র দিল, যা তাকে সঠিক পথে নিয়ে যাবে। রোহান যাত্রা শুরু করল। পথে তার সঙ্গে যুক্ত হলো আরও কিছু সাহসী বাসিন্দা—টুকু, একজন কথা বলা কাক; মিষ্টি, এক ছোট্ট মেয়ে, যার হাসি মানুষকে শক্তি দেয়।
যাত্রার পথে তাদের প্রথম বাধা আসে এক ধোঁয়াশার জঙ্গলে। জঙ্গলটি ছিল প্রহরীদের দ্বারা সুরক্ষিত, যারা কেবল ধাঁধার উত্তর দিতে পারলেই পথ ছাড়ত। রোহান এবং তার সঙ্গীরা মিলে ধাঁধাগুলোর উত্তর দিল।
প্রহরী একবার জিজ্ঞাসা করল : যে জিনিসটি যত বেশি নেওয়া হয়, তত কমে যায়। সেটি কী?
রোহান উত্তর দিল, শ্বাস।
প্রহরীরা তাদের পথ ছেড়ে দিল।
এরপর তারা পৌঁছাল এক ভাঙা সেতুর কাছে। সেতু পার হতে হলে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। রোহান সবার সঙ্গে সমন্বয় করে সেতু মেরামত করল। এই কাজ করতে গিয়ে তারা বুঝল, দলবদ্ধভাবে কাজ করলে বড়ো বড়ো বাধাও অতিক্রম করা যায়।
অবশেষে তারা কালের গুহার প্রবেশদ্বারে পৌঁছাল। কিন্তু সেখানে অপেক্ষা করছিল এক বিশাল দৈত্য। দৈত্যটি বলল, যদি আমার তিনটি প্রশ্নের উত্তর দিতে পারো, তবে আমি তোমাক রাজ্য দান করবো।…..

অরণী ও আদ্রিত—দুজনের জীবন একদম ভিন্ন জগৎ থেকে শুরু। অরণী শহরের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্রী, আর আদ্রিত পেশায় একজন চিত্রশিল্পী। অরণীর বইয়ের প্রতি ভালোবাসা, আর আদ্রিতের রঙের প্রতি নেশা তাদের দুজনকে ভিন্ন ভিন্ন পথে নিয়ে চলেছে।
তবে এক বিকেলে, বৃষ্টির পর আকাশে যখন রোদ মেখে উঠেছিল, ঠিক তখনই তাদের প্রথম দেখা। অরণী ক্যাম্পাসের পাশের পুরোনো বইয়ের দোকানে একটা কবিতার বই খুঁজছিল। বইয়ের পাতা ওল্টাতে ওল্টাতে হঠাৎ তার হাত গিয়ে ছুঁল আরেকটি হাতে। “সরি!” বলে মুখ তুলে তাকাতেই অরণী দেখতে পেল আদ্রিতের মায়াময় চোখ।
আদ্রিত তখন একটু হাসল। “আপনি কি হিউগো-র কবিতা পড়তে চান?”
অরণী হেসে বলল, “হ্যাঁ, তবে এই কপিটা হয়তো আপনার আগে আমি ধরেছি।”
সেই ছোট্ট হাসির বিনিময়েই শুরু হয়েছিল তাদের গল্প।
আদ্রিত আর অরণীর মধ্যে একটা অদ্ভুত সংযোগ তৈরি হয়েছিল। ফোন বা মেসেজ নয়, তারা চিঠি লিখত একে অপরকে। পুরোনো দিনের কাগজে কালির গন্ধে ভরা চিঠি। অরণী লিখত নিজের অনুভূতি, পড়া কবিতা, আর দিনযাপনের কথা। আদ্রিত তার জবাবে আঁকত কিছু স্কেচ, কিছু কবিতা, আর নিজের চিত্রশিল্পের ভাবনা।
চিঠিগুলো হয়ে উঠেছিল তাদের হৃদয়ের আয়না। প্রতিটি বাক্যে ছিল নতুন অনুভূতির স্পর্শ।
তাদের জীবনে সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল, কিন্তু হঠাৎ করেই একদিন আদ্রিত জানাল, তাকে অন্য শহরে যেতে হবে একটা বড় আর্ট এক্সিবিশনে। “এটা আমার স্বপ্ন পূরণের সুযোগ, অরণী। কিন্তু আমি জানি, এই দূরত্ব আমাদের গল্পকে কঠিন করে তুলবে।”
অরণী মুচকি হেসে বলল, “তোমার স্বপ্ন আমারও স্বপ্ন, আদ্রিত। চিঠিগুলোই তো আমাদের কাছে থাকছে। দূরত্ব কিছুই নয়।”
তবে বাস্তবতা সবসময় গল্পের মতো সুন্দর নয়। দূরত্ব বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের চিঠির সংখ্যা কমে এলো। আদ্রিত কাজের চাপে ডুবে গেল, আর অরণীর মন কিছুটা ভারী হয়ে উঠল।
একদিন, কয়েক মাস পরে, অরণী একটি চিঠি পেল। খামের উপর আদ্রিতের হাতের লেখা। ভিতরে শুধু একটি বাক্য:
“যদি সময়ের সঙ্গে সব বদলে যায়, তবে কি ভালোবাসাও বদলে যায়?”
অরণীর হাত কাঁপছিল। চিঠির সঙ্গে ছিল একটি ছোট্ট পেইন্টিং—একটি মেয়ে, যার চোখে অশ্রু। অরণী বুঝতে পারল, আদ্রিত হয়তো এই গল্পের ইতি টানতে চাইছে।
কয়েক মাস কেটে গেল। অরণী নিজেকে কাজ আর পড়াশোনায় ডুবিয়ে রাখল। তবে একদিন হঠাৎ ক্যাম্পাসে একটি আর্ট গ্যালারির পোস্টার দেখতে পেল। “আদ্রিতের একক প্রদর্শনী।”
অরণী দ্বিধা নিয়েই প্রদর্শনীতে গেল। দেয়ালে ঝুলানো প্রতিটি ছবির মাঝে নিজের আর আদ্রিতের গল্পের প্রতিচ্ছবি খুঁজে পেল। একটি ছবির সামনে থেমে গেল সে—ছবিতে ছিল তার মুখ। নিচে লেখা ছিল : আমার চিঠির শেষ বাক্য।
পেছন থেকে একটি কণ্ঠ ভেসে এলো, “তুমি কি জানো, শেষ বাক্যটা তখনো অসম্পূর্ণ ছিল।
অরণী ঘুরে দেখল, আদ্রিত দাঁড়িয়ে আছে। তাদের চোখে চোখ পড়ল, আর বুঝতে পারল, কিছু গল্পের সত্যি কোনো শেষ হয় না।
তাদের গল্প আবার নতুন করে শুরু হলো। ভালোবাসা সময়ের সঙ্গে বদলায় না, বরং সময় তার গভীরতা বাড়ায়। চিঠির শেষ বাক্যও নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে পারে।
নিশ্চয়ই! গল্পটি আরও বিস্তারিতভাবে প্রসারিত করছি। নিচের অংশে তাদের জীবনের নানা নতুন মোড়, সম্পর্কের গভীরতা, এবং কাহিনির উত্তেজনা যোগ করছি।
আদ্রিত আর অরণী দেখা করার পর তাদের কথোপকথন শুরু হলো এক অদ্ভুত জড়তা নিয়ে।
“তুমি কীভাবে এতদিন আমার খোঁজ নাওনি?” অরণী প্রশ্ন করল।
আদ্রিত দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, “আমি চেয়েছিলাম তোমার জন্য কিছু হয়ে উঠতে, অরণী। কিন্তু যতই নিজের স্বপ্নের পেছনে ছুটেছি, ততই তোমার কাছ থেকে দূরে সরে গিয়েছি। অরণীর চোখে পানি চলে এল। তুমি ভাবলে, দূরে সরে গিয়ে আমাকে সুখী করতে পারবে? ভালোবাসা তো একসঙ্গে লড়াই করার জিনিস। দূরত্ব তৈরি করার নয়।
তাদের কথোপকথন চলতে থাকল। গ্যালারি থেকে বের হয়ে তারা বৃষ্টির মধ্যে হাঁটতে লাগল। পুরোনো স্মৃতি ভেসে উঠল দুজনের মনে।
সেদিনের পর তারা নতুন করে কথা বলা শুরু করল। তবে এবার তাদের সম্পর্কের ভিত আরও গভীর ছিল। আগের মতো চিঠি লিখতে শুরু করল তারা। চিঠির ভাষা আরেকটু পরিণত হলো। এখন শুধু অনুভূতির কথা নয়, ভবিষ্যৎ নিয়েও কথা হতে লাগল।
আদ্রিত বলল, আমাদের এই গল্পটা যেন কোনো দিন অসমাপ্ত না হয়। আমি আর তোমাকে হারাতে চাই না।
অরণী মুচকি হেসে বলল, তাহলে একটা প্রতিজ্ঞা কর। আমাদের গল্পটাকে এবার থেকে একসঙ্গে লিখব।
তাদের সম্পর্ক যখন ভালোই চলছিল, তখন এক নতুন সমস্যা দেখা দিল। আদ্রিতের আর্ট গ্যালারির জন্য একটি বিদেশি প্রতিষ্ঠান তার কাজ নিয়ে আগ্রহ দেখাল। তবে শর্ত ছিল, তাকে অন্তত দুই বছরের জন্য বিদেশে থাকতে হবে।
আদ্রিত বিষয়টি অরণীকে জানাল। তুমি কি মনে কর, আমি এই সুযোগ গ্রহণ করলে আমাদের গল্পে আবার দূরত্ব আসবে?
অরণী কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল, দূরত্ব গল্প বদলে দিতে পারে, কিন্তু ভালোবাসার গভীরতা থাকলে গল্পটা কখনো শেষ হয় না। তুমি যাও। আমি অপেক্ষা করব।
বিদেশে থাকা অবস্থায় আদ্রিত প্রতিদিন ভিডিও কল করত, চিঠি লিখত। কিন্তু দূরত্বের কারণে মাঝে মাঝে তাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হতো।
একদিন, আদ্রিত বলল, তুমি জানো, তোমার না থাকাটা আমাকে কীভাবে একা করে দেয়?
অরণী মৃদু হেসে বলল, তুমি হয়তো দূরে আছ, কিন্তু তোমার প্রতিটি চিঠি আর প্রতিটি কথা আমাকে বলছে, তুমি এখনো আমারই সঙ্গে আছ।
এই ধৈর্য আর ভালোবাসার সঙ্গে তারা দুই বছর পার করে ফেলল।
দুই বছর পর, এক বিকেলে অরণী একটি চিঠি পেল। চিঠির সঙ্গে একটি বিমানের টিকিট আর একটি নোট ছিল :
তোমার কাছে আর ফিরে আসছি না। এবার তোমাকে আমার কাছে আনতে চাই। এই টিকিটটা তোমার জন্য।
অরণী বিমানে চড়ে আদ্রিতের কাছে গেল। তাকে দেখে আদ্রিত বলল, “আমি হয়তো দূরে থেকে অনেক ভুল করেছি, কিন্তু এবার আর তোমাকে কোনো দিন একা রাখব না।”
তাদের গল্প এবার সত্যিই পূর্ণতা পেল। চিঠির শেষ বাক্যটি আর কোনো প্রশ্নে শেষ হলো না, বরং তা হয়ে উঠল একটি প্রতিজ্ঞার প্রতীক।
ভালোবাসা কখনো শেষ হয় না, তা শুধু রঙ, শব্দ আর অনুভূতির ভিন্নতায় ধরা দেয়।
এভাবেই রোহান আর অরণীর গল্প সময়ের পরীক্ষায় টিকে গেল, আর তাদের ভালোবাসা হয়ে রইল এক অনন্ত অধ্যায়।

লেখক : উজ্জ্বল হোসাইন, প্রাবন্ধিক ও গল্পকার, মোবাইল : 01675127483, ই-মেইল : rtrujjal@gmail.com

শতাব্দীর দীর্ঘ সূর্যগ্রহণ, অন্ধকারে থাকবে পৃথিবীর একাংশ!

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই, ২০২৫, ৯:৩৭ পূর্বাহ্ণ
শতাব্দীর দীর্ঘ সূর্যগ্রহণ, অন্ধকারে থাকবে পৃথিবীর একাংশ!

শতাব্দীর দীর্ঘ সূর্যগ্রহণ দেখতে যাচ্ছে বিশ্ববাসী। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এটি প্রায় ৬ মিনিট ২৩ সেকেন্ড স্থায়ী হবে। এটি হতে যাচ্ছে শতাব্দীর একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। সোমবার (২২ জুলাই) সংবাদমাধ্যম মেট্রো এবং টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৭ সালের ২ আগস্ট এক বিরল পূর্ণ সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে। এটি ইউরোপ, উত্তর আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন অঞ্চলের বাসিন্দারা দেখতে পাবেন। এই মহাজাগতিক ঘটনা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। কেননা এটি প্রায় ৬ মিনিট ২৩ সেকেন্ড স্থায়ী হবে। এছাড়া এটি শতকের অন্যতম দীর্ঘতম পূর্ণ সূর্যগ্রহণ হবে।
এই সূর্যগ্রহণে চাঁদ পুরোপুরি সূর্যকে আচ্ছাদিত করবে। এটিকে বিজ্ঞানের ভাষায় পূর্ণতা (Totality) বলা হয়। এ সময় দিনের আকাশ রাতের মতো অন্ধকার হয়ে যাবে। পূর্ণতার রেখা পৃথিবীর উপর দিয়ে ধীরে ধীরে অগ্রসর হবে, যা দক্ষিণ ইউরোপ ও উত্তর আফ্রিকার এক বিশাল অংশকে ঢেকে দেবে। প্রায় ৮৯ মিলিয়ন মানুষ এই অন্ধকার দর্শনের সুযোগ পাবে।
সূর্যগ্রহণটি মরক্কো, আলজেরিয়া, তিউনিসিয়া, লিবিয়া, মিসর, সুদান, সৌদি আরব, ইয়েমেন এবং সোমালিয়াসহ একাধিক দেশে দেখা যাবে।
দীর্ঘতম গ্রহণের রহস্য
রয়্যাল মিউজিয়ামস গ্রিনউইচের সিনিয়র জ্যোতির্বিজ্ঞানী গ্রেগ ব্রাউনের মতে, এই গ্রহণটি প্রায় ছয় মিনিট স্থায়ী হবে, যা এ ধরনের মহাজাগতিক ঘটনার জন্য অসাধারণভাবে দীর্ঘ।
তিনি বলেন, এটি মাত্র কয়েক সেকেন্ড থেকে সর্বোচ্চ ৭ দশমিক ৫ মিনিট পর্যন্ত পরিবর্তিত হয়। এই তারতম্য চাঁদ এবং সূর্যের দৃশ্যমান আকারের পার্থক্যের কারণে ঘটে, যা চাঁদের পৃথিবীর কক্ষপথে এবং পৃথিবীর সূর্যের কক্ষপথে তাদের দূরত্বের সামান্য পরিবর্তনের ফলে হয়।
সূর্যগ্রহণ কীভাবে ঘটে?
সূর্যগ্রহণ ঘটে যখন চাঁদ পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখানে এসে পড়ে এবং সূর্যের আলো আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে ঢেকে দেয়। এটি শুধু অমাবস্যা তিথিতে ঘটতে পারে। এ সময় চাঁদ ঠিক সূর্য ও পৃথিবীর মাঝে অবস্থান করে। চাঁদের কক্ষপথ কিছুটা কাত হওয়ায়, বেশিরভাগ সময় এটি সূর্যের কিছুটা উপর বা নিচ দিয়ে চলে যায়, ফলে সূর্যগ্রহণ সবসময় হয় না।

জলবায়ু পরিবর্তন : এক দেশ আরেক দেশের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবে

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই, ২০২৫, ৯:৩৩ পূর্বাহ্ণ
জলবায়ু পরিবর্তন : এক দেশ আরেক দেশের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবে

এখন থেকে এক দেশ আরেক দেশের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতির কারণে বলে যুগান্তকারী এক রায়ে জানিয়েছে জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত।এমনকি অতীতে কারা কত পরিমাণ গ্রিনহাউস গ্যাস ছেড়েছে, সেটাও বিবেচনায় আসতে পারে বলেও রায়ে জানানো হয়েছে। বুধবার (২৩ জুলাই) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে অবস্থিত আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) বুধবার এই রায় দেয়। যদিও এই রায় বাধ্যতামূলক নয়, তবে বিশেষজ্ঞদের মতে এর বৈশ্বিক প্রভাব গভীর হতে পারে।
বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ছোট ছোট দ্বীপরাষ্ট্রগুলোর জন্য এটা একটি বড় জয়। তারা বহু বছর ধরে আন্তর্জাতিক মহলের নিষ্ক্রিয়তায় হতাশ হয়ে এই মামলার পথ বেছে নিতে পারে।
বিবিসি বলছে, ২০১৯ সালে একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগের মাধ্যমে এই মামলার সূচনা হয়েছিল। প্যাসিফিক দ্বীপপুঞ্জের কিছু তরুণ আইনের ছাত্র এই ধারণাটি প্রথম সামনে আনেন। তাদেরই একজন ছিলেন টোঙ্গার সিওসিউয়া ভেইকুনে এবং বুধবার হেগে তিনি আদালতের রায় শোনেন।
তিনি বলেন, “এই জয় আমাদের সমাজের জন্য গর্বের বিষয়। আমরা যে কষ্ট সহ্য করেছি, সেই বাস্তবতা আদালত স্বীকার করেছে”। অন্যদিকে ভানুয়াতুর জলবায়ু কর্মী ফ্লোরা ভানো বলেন, “এই জয় শুধু আমাদের নয়, সারা বিশ্বের সেইসব ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের, যাদের কথা এতদিন ধরে শোনা হচ্ছিল না।”
যুগান্তকারী এই রায়ে বিচারপতি ইওয়াসাওয়া ইউজি বলেন, যদি কোনো দেশ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় যথাসম্ভব উচ্চাকাঙ্ক্ষী পরিকল্পনা না নেয়, তাহলে সেটা প্যারিস চুক্তির লঙ্ঘন হবে। এমনকি যারা প্যারিস চুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি বা সেখান থেকে বেরিয়ে যেতে চায় (যেমন— যুক্তরাষ্ট্র), তাদেরও আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী পরিবেশ রক্ষা করতে হবে।
আদালত বলেছে, উন্নয়নশীল দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হওয়া ক্ষয়ক্ষতির জন্য ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারবে। কোনো নির্দিষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতির জন্য যদি প্রমাণ করা যায় যে তা জলবায়ুর কারণে হয়েছে, তাহলে সে ক্ষেত্রেও ক্ষতিপূরণ চাওয়া যাবে।
এমনকি যদি কোনো দেশ তাদের কোম্পানিকে তেল ও গ্যাস খাতে নতুন লাইসেন্স দেয় বা জীবাশ্ম জ্বালানি খাতকে ভর্তুকি দেয়, তবে তা তার আইনি দায়বদ্ধতার পরিপন্থি হতে পারে।
আইসিজের এই মতামতের ভিত্তিতে যেকোনো দেশ চাইলে জাতিসংঘ আদালত বা নিজস্ব কোনো জাতীয় আদালতেও মামলা করতে পারবে। তবে আইসিজে-তে সরাসরি মামলা করতে হলে সংশ্লিষ্ট দেশকে অবশ্যই আদালতের এখতিয়ার স্বীকার করতে হবে। যেটি যুক্তরাজ্য করলেও যুক্তরাষ্ট্র ও চীন করেনি।
তবে আইনজীবী জোই চৌধুরী বলেন: “জাতীয় বা আন্তর্জাতিক যেকোনো আদালতে আইসিজের মতামত উদ্ধৃত করে মামলা করা যাবে। তাই কোনো দেশ চাইলে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কোর্টেও মামলা করতে পারে।”

নারী কর্মীদের ছোট দৈর্ঘ্যের পোশাক পরিহার করতে বললো বাংলাদেশ ব্যাংক

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই, ২০২৫, ৯:২৯ পূর্বাহ্ণ
নারী কর্মীদের ছোট দৈর্ঘ্যের পোশাক পরিহার করতে বললো বাংলাদেশ ব্যাংক

বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের সব স্তরের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের জন্য নতুন পোশাকবিধি জারি করেছে। গত ২১ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগ-২ থেকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যার লক্ষ্য একটি পেশাদার ও মার্জিত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা। নির্দেশনায় পুরুষ ও নারী কর্মীদের জন্য নির্দিষ্ট পোশাক পরিধানের কথা বলা হয়েছে এবং কিছু পোশাক পরিহার করতে বলা হয়েছে। নির্দেশনা না মানলে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ আনা হবে।
পুরুষ কর্মীদের জন্য পোশাকবিধি
পুরুষ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য ফরমাল (আনুষ্ঠানিক) শার্ট (লম্বা হাতা বা হাফ হাতা) এবং ফরমাল প্যান্ট পরতে বলা হয়েছে। এর সঙ্গে ফরমাল স্যান্ডেল বা জুতা পরতে হবে। এই নির্দেশিকায় জিনস ও গ্যাবার্ডিন প্যান্ট পরিহার করার কথা বলা হয়েছে।
নারী কর্মীদের জন্য পোশাকবিধি
নারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য শাড়ি, সালোয়ার–কামিজ ও ওড়না অথবা অন্যান্য পেশাদার শালীন পোশাক পরার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এসব পোশাক অবশ্যই সাদামাটা এবং পেশাদার রঙের হতে হবে। এর সঙ্গে ফরমাল স্যান্ডেল বা জুতা, সাদামাটা হেডস্কার্ফ বা হিজাব পরতে বলা হয়েছে। নির্দেশিকায় শর্ট স্লিভ ও লেংথের ড্রেস (ছোট হাতা ও ছোট দৈর্ঘ্যের পোশাক) এবং লেগিংস পরিহার করার কথা বলা হয়েছে।
পোশাকবিধির ১১ ক্রমিক নম্বরে আরও তিনটি নির্দেশনা রয়েছে। ১১ (ক) নম্বরে নারী কর্মীদের প্রতি আচরণের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক স্টাফ রেগুলেশন ২০০৩–এর ৩৯ ধারায় বর্ণিত নির্দেশনা মেনে চলতে বলা হয়েছে। যৌন হয়রানিসংক্রান্ত অভিযোগগুলো ঘটনা ঘটার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে মানবসম্পদ বিভাগ ১–এর নির্দিষ্ট পরিপত্রের মাধ্যমে গঠিত কমিটির কাছে পাঠাতে বলা হয়েছে।
১১ (খ) নম্বরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের বিষয়ে মানবসম্পদ বিভাগ ২–এর অফিস নির্দেশ যথাযথভাবে অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।
১১ (গ) নম্বরে ইতিবাচক কর্মপরিবেশ তৈরি করার জন্য দাপ্তরিক শিষ্টাচার ও আচরণবিধি তথা সততা, নৈতিকতা, সময়ানুবর্তিতা, শৃঙ্খলাবোধ, অর্পিত দায়িত্ব–কর্তব্য পালনে নিষ্ঠা ইত্যাদি, সহকর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আচরণ ও আন্তরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক (পারস্পরিক সম্মান, সৌজন্যবোধ, সহযোগিতামূলক মনোভাব ইত্যাদি) মেনে চলতে বলা হয়েছে।
গৃহীত সিদ্ধান্তের ১২ নম্বরে বলা হয়েছে, ১১ নম্বর ক্রমিকে দেওয়া নির্দেশনা পরিপালনের জন্য অফিস, বিভাগ, প্রকল্প, সেল, ইউনিটভিত্তিক পর্যবেক্ষণের জন্য একজন কর্মকর্তাকে মনোনয়ন দিতে হবে। ওই নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে তদারকি করবেন মনোনীত কর্মকর্তা। এর ব্যত্যয় হলে বিভাগীয় প্রধানকে অবহিত করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা–কর্মচারীর বিরুদ্ধে নির্দেশনা ও শৃঙ্খলাভঙ্গের বিষয়ে অভিযোগ পাঠাবেন।