খুঁজুন
                               
রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৫, ১০ কার্তিক, ১৪৩২

ভোটের হাওয়ায় দেশ

মন্ত্রণালয় ও মাঠ প্রশাসনে আসছে ব্যাপক পরিবর্তন

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৫, ৯:২৮ পূর্বাহ্ণ
মন্ত্রণালয় ও মাঠ প্রশাসনে আসছে ব্যাপক পরিবর্তন

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে খোদ মন্ত্রণালয় থেকে মাঠ প্রশাসনে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে সরকার। সচিবের সব শূন্য পদ পূরণ করা হবে। জেলায় ডিসি, এডিসি, ইউএনও পরিবর্তন করা হবে। একই সঙ্গে পুলিশ সুপার ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পর্যায়েও পরিবর্তন হবে বলে জানা গেছে। আগামী মাসের মধ্যে এই পরিবর্তন আসবে বলে প্রশাসনের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে। ইতোমধ্যেই প্রশাসনে ধীরে ধীরে রদবদল হচ্ছে।
প্রশাসনের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, গত নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করেছেন এমন কাউকে এই নির্বাচনে রাখতে চাচ্ছে না সরকার। সেভাবেই প্রস্তুতি চলছে। খালি থাকা কয়েকটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের নতুন সচিব নিয়োগ দেওয়া হবে। এ ছাড়া রদবদলও হতে পারে। মাঠ প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ পদ জেলা প্রশাসক (ডিসি) পদেও ব্যাপক রদবদল করা হবে। ইতোমধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে নতুন সচিব যোগ দিয়েছেন। সূত্র মতে, জনপ্রশাসনের নিয়োগ, পদোন্নতি ও প্রেষণ অনুবিভাগে (এপিডি) নিয়োগ পেলে রদবদল আরও দ্রুত গতিতে কাজ এগোবে বলে জানা গেছে। জানা গেছে, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই মাঠ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে কর্মকর্তাদের রদবদল করা হবে। নির্বাচন কমিশন চাইলে তফসিল ঘোষণার পরও রদবদল হবে। প্রশাসনে ২৪, ২৫ ও ২৭ ব্যাচের কর্মকর্তারা ডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ইতোমধ্যেই ২৪ ব্যাচের কর্মকর্তারা যুগ্ম সচিব হয়েছেন তাদের মাঠ থেকে তুলে আনার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নির্বাচনের আগে নতুন ডিসি দেওয়া হবে। পর্যায়ক্রমে ২৪ ব্যাচের ডিসিদের তুলে আনার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। সেক্ষেত্রে কয়েকজন ২৮তম বিসিএসের কর্মকর্তাকে মাঠে পাঠানো হবে। নির্বাচনের সময় ডিসিরা রিটার্নিং অফিসার এবং ইউএনও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হন। বর্তমানে ৩৪, ৩৫ এবং ৩৬ ব্যাচের কর্মকর্তারা ইউএনও হিসেবে আছেন। অনেক জেলায় ৩৪ এবং ৩৫ ব্যাচের কর্মকর্তারা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের দায়িত্বেও আছেন। সূত্র জানায়, খুব দ্রুতই মাঠ থেকে ৩৪ ব্যাচের সব ইউএনওদের তুলে আনা হবে। সেখানে ৩৫ ও ৩৬ ব্যাচের কর্মকর্তা পাঠানো হবে। একই সঙ্গে নির্বাচনের আগে ৩৭ ব্যাচ থেকেও ইউএনও মাঠে পাঠানো হবে। অনেক ইউএনওর উপজেলা বদল করা হবে। ইতোমধ্যেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে ইউএনওদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ১১ নভেম্বর পর্যন্ত এই প্রশিক্ষণ ব্যাচভিত্তিক হওয়ার কথা রয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনের আগে পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়েও বড় রদবদল আসবে। বর্তমানে ২৪, ২৫ এবং ২৭ ব্যাচের কর্মকর্তারা মাঠে এসপি হিসেবে আছেন। এর মধ্যে ২৪ ব্যাচের কর্মকর্তাদের তুলে আনা হবে। সূত্র জানায়, নির্বাচনের আগে ২৮ ব্যাচের দু-চারজনকে এসপি হিসেবে মাঠে পাঠানো হবে। এ ছাড়া মাঠে থাকা কর্মকর্তাদের জেলা বদল করা হতে পারে। কয়েকটি বড় জেলার এসপি পরিবর্তন করা হবে বলেও জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রটি। এর আগে এক উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, নির্বাচনের আগে এসপি ও ওসিদের লটারির মাধ্যমে পদায়ন করা হবে। জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ফিরোজ মিয়া এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে সব সরকারই মাঠ প্রশাসনকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেয়। সময় কম, দ্রুতই এই কাজটি করতে হবে। যাকে দায়িত্ব দেবে সরকার তারও ওই এলাকা চিনতে হবে।
এলাকা বিষয়ে পরিকল্পনা সাজাতে হবে। রদবদলের ক্ষেত্রে দক্ষ, অভিজ্ঞ ও সাহসী কর্মকর্তাদের মাঠ প্রশাসনে নিয়োগ দিতে হবে। কোনো ব্যক্তি বা দলের তদবির শুনলে হবে না।
সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য

৫ বছরে কার্ডের লেনদেন বেড়েছে তিন গুণ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৫, ১১:০৭ পূর্বাহ্ণ
৫ বছরে কার্ডের লেনদেন বেড়েছে তিন গুণ

দেশে কার্ডভিত্তিক লেনদেন বাড়ছে। গত পাঁচ বছরে দেশে নতুন কার্ডের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় আড়াই গুণ। এ সময়ে কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন বেড়েছে তিন গুণের বেশি। কার্ডের ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ জুলাই মাসের প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে ক্রেডিট, ডেবিট ও প্রিপেইড কার্ডের ব্যবহার, লেনদেনের প্রবণতা ও বিভিন্ন খাতে ব্যয়ের ধরনের চিত্র তুলে ধরা হয়। বর্তমানে দেশের ৫৬টি ব্যাংক ও একটি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফসি) কার্ড সেবা দিয়ে থাকে। এর মধ্যে ৪৮টি ব্যাংক ক্রেডিট কার্ড, দ্বৈত মুদ্রার ডেবিট কার্ড ও প্রিপেইড কার্ড সেবা দেয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ সালের আগস্ট শেষে দেশে ডেবিট, ক্রেডিট ও প্রিপেইড কার্ডের সংখ্যা ছিল প্রায় ২ কোটি ২২ লাখ। ২০২৫ সালের জুলাই শেষে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫ কোটি ৬৯ লাখ। অর্থাৎ মাত্র পাঁচ বছরে কার্ডের সংখ্যা বেড়েছে ১৫৬ শতাংশ বা আড়াই গুণের বেশি। দেশে সর্বাধিক প্রচলিত তিন ধরনের কার্ডের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ডেবিট কার্ডের সংখ্যা।
পাঁচ বছরে ডেবিট কার্ডের সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি (১২০ শতাংশ) বেড়েছে। সেই তুলনায় ক্রেডিট কার্ডের বৃদ্ধি কম, ৯৪ শতাংশ। সর্বশেষ পাঁচ বছরে কার্ডের মাধ্যমে লেনদেনও ২৩২ শতাংশ বেড়েছে। ২০২০ সালের আগস্ট মোট কার্ডভিত্তিক লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১৪ হাজার ৩৮৪ কোটি টাকা, যা ২০২৫ সালের জুলাইয়ে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৭ হাজার ৮১৭ কোটি টাকা।
ব্যাংক খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মূলত বেতন ভাতা, নগদ উত্তোলন ও দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটাতে লেনদেনের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হলো ডেবিট কার্ড। ক্রেডিট কার্ডের সংখ্যা তুলনামূলক কম হলেও এখনো এটির ব্যবহার শহরকেন্দ্রিক। শহুরে মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত শ্রেণির মধ্যে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার দ্রুত বাড়ছে। অন্যদিকে প্রিপেইড কার্ডের ব্যবহারও উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুলাই মাসে বিদেশে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশিরা ৪৭৯ কোটি টাকা খরচ করেছেন। বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংকের ইস্যু করা ক্রেডিট কার্ড দিয়ে বিদেশে সবচেয়ে বেশি খরচ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে। এরপর রয়েছে যুক্তরাজ্য, থাইল্যান্ড, সিংগাপুর, মালয়েশিয়ার অবস্থান। একসময় ক্রেডিট কার্ডে সবচেয়ে বেশি খরচ হতো ভারতে, কিন্তু ভিসা জটিলতায় ভারতে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার কমে যাওয়ায় দেশটি এখন ৬ নম্বরে নেমে এসেছে। আর ব্যাংকগুলোর ইস্যু করা ডেবিট কার্ড বিদেশে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে যুক্তরাজ্যে। এরপর ব্যবহার হয় যুক্তরাষ্ট্র, আয়ারল্যান্ড, চীন ও ভারতে। প্রিপেইড কার্ডও সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয় যুক্তরাজ্যে।
গত জুলাই মাসে দেশের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংকের ইস্যু করা ক্রেডিট কার্ড দিয়ে ৩ হাজার ৮৪ কোটি টাকা খরচ করেছেন গ্রাহকেরা। এর মধ্যে বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টাল স্টোরেই লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৫০৮ কোটি টাকা। এছাড়া খুচরা বিক্রয়কেন্দ্র; বিদ্যুৎ, গ্যাসের মতো বিভিন্ন পরিষেবা বিল; ওষুধ ও ফার্মেসি, নগদ উত্তোলন, পরিবহন ও তহবিল স্থানান্তর হিসেবে ক্রেডিট কার্ড থেকে অর্থ লেনদেন হয়েছে।

২০০ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত বিএনপির প্রচারণায় পাবে নতুনত্ব লন্ডন যাওয়ার হিড়িক

একটি ফোন কলের অপেক্ষা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৫, ৯:২৬ পূর্বাহ্ণ
একটি ফোন কলের অপেক্ষা

ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে একক প্রার্থী চূড়ান্ত করে চলেছে বিএনপি। ইতোমধ্যে ২০০ আসনের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। বাকি ১০০ আসনের মধ্যে অর্ধশত আসন যুগপৎ আন্দোলনের শরিকদের ছাড় দেওয়া হবে। বাকি ৫০টি আসনে একাধিক প্রার্থী থাকায় যাচাইবাছাই চলছে। এসব আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে প্রতিদিন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বৈঠক করে চলেছেন। এদিকে মনোনয়নপ্রত্যাশীরা দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য থেকে শুরু করে অনেকে তারেক রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করে চলেছেন। অনেকে তারেক রহমানের সাক্ষাৎ লাভের জন্য লন্ডন যাচ্ছেন। তবে তিনি কাউকে সাক্ষাৎ দিচ্ছেন না। তারেক রহমান নিজেই ফোন করে প্রার্থী মনোনয়নের সংকেত দিচ্ছেন। এ অবস্থায় যাঁরা এখনো সবুজসংকেত পাননি তাঁরা তারেক রহমানের ফোনের অপেক্ষায় রয়েছেন।
২০০ আসনের প্রার্থী চূড়ান্ত : জাতীয় নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই মাঠে সক্রিয় হচ্ছে বিএনপি। ইতোমধ্যে দুই শতাধিক আসনে একক প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজেই সম্ভাব্য প্রার্থীদের ফোন করে নির্বাচনি প্রস্তুতির নির্দেশ দিচ্ছেন। দলটির গুলশান কার্যালয়ে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে ধারাবাহিক বৈঠক। সেসব বৈঠকে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়েছেন তারেক রহমান। জেলাভিত্তিক এই বৈঠকগুলোর ফলাফল অনুযায়ী এখন একেকটি আসনে একজন করে প্রার্থীকে বাছাই করা হচ্ছে। মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার ও দলীয় মূল্যায়নের পর নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ নাগাদ ৩০০ আসনের প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। তবে জোটগত সমঝোতার কারণে অন্তত ৫০টি আসনে পরিবর্তন আনা হতে পারে। মাঠ থেকে শুরু করে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের নেতাদের মতামত নিয়ে প্রার্থী তালিকা তৈরি করছেন তারেক রহমান। চলতি মাসের মধ্যে ২০০ প্রার্থীকেই মৌখিকভাবে সবুজসংকেত দেওয়া হবে। মিত্র বা সমমনা রাজনৈতিক দল এবং নিজের দলের জটিল কিছু আসনের প্রার্থিতা নিষ্পত্তির জন্য ১০০ আসন বাদ রেখে সবুজসংকেত প্রদানের জন্য এই তালিকা করছেন।
সূত্র জানায়, ঢাকা মহানগরের ১৫টি আসনের মধ্যে কয়েকটি আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা-৪ আসনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব তানভীর আহমেদ রবীন, ঢাকা-৫ আসনে মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও ঢাকা-৫ আসনের প্রধান সমন্বয়ক নবীউল্লাহ নবী, ঢাকা-৮ আসনে মির্জা আব্বাস, ঢাকা-১৩ আসনে সমমনা দল এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, ঢাকা-১৬ আসনে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক, ঢাকা-১৭ আসনে সমমনা দল বিজেপি চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থকে চূড়ান্ত বার্তা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বগুড়া-১ আসনে কাজী রফিকুল ইসলাম, বগুড়া-৩ জেলা বিএনপির সহসভাপতি আবদুল মুহিত তালুকদার, বগুড়া-৪ জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন এবং বগুড়া-৫ আসনে সাবেক এমপি গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ। সূত্র জানিয়েছে, কুমিল্লা-১ ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ঠাকুরগাঁও-১ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, নরসিংদী-২ ড. আবদুল মঈন খান, সিরাজগঞ্জ-২ ইকবাল হাসান মাহমুদ, কক্সবাজার-১ সালাহউদ্দিন আহমদ, ভোলা-৩ মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ, নোয়াখালী-৩ বরকতউল্লা বুলু, নোয়াখালী-৪ মো. শাহজাহান, লক্ষ্মীপুর-৩ শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, লালমনিরহাট-৩ আসাদুল হাবিব দুলু, জামালপুর-১ রশিদুজ্জামান মিল্লাত, খুলনা-৩ রকিবুল ইসলাম বকুল, নেত্রকোনা-১ ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, চুয়াডাঙ্গা-২ মাহমুদ হাসান খান, গাজীপুর-৫ ফজলুল হক মিলন, সিরাজগঞ্জ-৫ আমিরুল ইসলাম খান, নেত্রকোনা-৪ লুৎফুজ্জামান বাবরসহ অনেকেই পার্টির পক্ষ থেকে সবুজসংকেত পেয়ে নির্বাচনি মাঠে কাজ করে চলেছেন। জানতে চাইলে যুগপৎ আন্দোলনের শরিক জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, ‘নড়াইল-২ আসনে ২০১৮ সালে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়েছিলাম। এবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জানিয়েছেন এই আসন থেকে আমাকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে কাজ করার কথাও জানিয়েছেন।’ ড. ফরহাদ বলেন, ‘এজন্য পুরোদমে নির্বাচনি এলাকায় কাজ করে যাচ্ছি।’ আরেক শরিক দল বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান জানান, তিনি শতভাগ আশাবাদী ঝালকাঠি-১ আসনে বিএনপি তাকে মূল্যায়ন করবে।
প্রচারে আসছে নতুন মাত্রা : আগামী নির্বাচন সামনে রেখে প্রচারে নতুন মাত্রা যোগ করতে যাচ্ছে বিএনপি। দলটি এবার মাঠের পাশাপাশি ডিজিটাল দুনিয়াতেও সমানভাবে সক্রিয় হতে চায়। সে লক্ষ্যেই গঠন করা হচ্ছে নতুন একটি অনলাইন ও তৃণমূলভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ গ্রাসরুটস নেটওয়ার্ক-বিজিএন।
এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বিএনপি তাদের তৃণমূলের শক্তিকে সুসংগঠিত করবে এবং অনলাইন প্রচারকে আরও জোরদার করবে। একই সঙ্গে অপপ্রচার মোকাবিলায় কার্যকর প্রতিরোধ গড়ে তোলাই এর অন্যতম উদ্দেশ্য। বিজিএন গঠনের প্রস্তাব এরই মধ্যে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনার পর অনুমোদিত হয়েছে। দলটির পরিকল্পনা অনুযায়ী, শিগগিরই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই প্ল্যাটফর্মের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ড. জিয়াউদ্দিন হায়দার ১৫ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃত্ব দেবেন। প্রত্যেক কেন্দ্রীয় নেতা ২০টি আসনের সমন্বয় করবেন। বিজিএন-এর অধীনে দেশের ৩০০টি সংসদীয় আসনে দুজন করে ৬০০ জন স্নাতক পাস অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট নিয়োগ দেওয়া হবে। এই অ্যাক্টিভিস্টরা সরাসরি তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করবেন এবং নিয়মিত কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে যুক্ত থাকবেন। বিজিএন স্থায়ী কমিটিতে নিয়মিত রিপোর্ট জমা দেবে, যা দলের নীতিনির্ধারণী আলোচনায় ব্যবহৃত হবে। এরই মধ্যে সম্ভাব্য অ্যাক্টিভিস্টদের সংক্ষিপ্ত আত্মজীবনী জমা পড়েছে এবং সেখান থেকে যাচাইবাছাইয়ের মাধ্যমে চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে।
লন্ডন যাওয়ার হিড়িক : গত কয়েক মাসে মনোনয়ন লবিং-তদবিরের অংশ হিসেবে বিএনপির দলীয় এবং যুগপৎ আন্দোলনের নেতারা তারেক রহমানের সাক্ষাৎ লাভের জন্য যুক্তরাজ্যের লন্ডন সফর করেছেন। তবে বেশির ভাগই সাক্ষাৎ পাননি। দলীয় নেতা থেকে শুরু করে সমমনা দল ও জোটের নেতা, বুদ্ধিজীবী সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবী নেতাও ভিড় করছেন সেখানে। দলের হাইকমান্ড তথা প্রিয় নেতা তারেক রহমানের সঙ্গে অন্তত কয়েক মুহূর্তের জন্য হলেও সাক্ষাতের একটা আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন তাঁরা। তবে অনেককে বিফল মনোরথে লন্ডন থেকে ফিরে আসতে হয়েছে। তবে অনেক চেষ্টার পর শেষ পর্যন্ত যেসব সৌভাগ্যবান ব্যক্তি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সাক্ষাৎ পাচ্ছেন তাঁরা উৎফুল্ল মনে ঢাকায় ফিরছেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে তোলা ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্টও করছেন কেউ কেউ।
আজ ইসিতে চিঠি দেবে বিএনপি : আজ রবিবার নির্বাচন কমিশনে চিঠি দেবে বিএনপি। ‘জোটবদ্ধ হলেও নিজেদের দলীয় প্রতীকেই নির্বাচন করতে হবে’- নির্বাচন সংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনীর এ অংশের পরিবর্তন চেয়ে ইসিতে এ চিঠি পাঠাবে দলটি। দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য গত রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আরপিওর ২১ ধারায় কোনো নিবন্ধিত দল জোটভুক্ত হলে জোটের যে কোনো দলের প্রতীকে নির্বাচন করার স্বাধীনতা ছিল।

সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন

সালমান শাহ হত্যার রোমহষর্ক বর্ণনা দিলেন আসামী হত্যাকারী

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫, ৮:২২ পূর্বাহ্ণ
সালমান শাহ হত্যার রোমহষর্ক বর্ণনা দিলেন আসামী হত্যাকারী

জবানবন্দিতে রেজভী বলেন, ‘ডন সালমান শাহর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল। সালমানের স্ত্রী সামিরার সঙ্গে ডনের গোপন সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং দৈহিক সম্পর্কও ছিল। অন্যদিকে সামিরার মায়ের সঙ্গে চিত্র প্রযোজক আসামি আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের গোপন ও দৈহিক সম্পর্ক ছিল। তাই সালমান ডনকে এড়িয়ে চলতেন।’হত্যার পরিকল্পনার বিষয়ে রেজভী বলেন, ‘সালমান শাহকে হত্যার আগের দিন ১৯৯৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর গুলিস্তানের একটি বারে পরিকল্পনা করা হয়। ওইদিন রাত ৮টায় ডন, ডেভিড, ফারুক, জাভেদ ও আমি বারে যাই। সেখানে আরও ২ জন ছেলে ছাত্তার ও সাজু আসে। এরপর ফারুক ২ লাখ টাকা বের করে বলে, সামিরার মা ওই টাকা দিয়েছে। কথা ছিল সালমানকে শেষ করার জন্য মোট ১২ লাখ টাকা দেবে। কাজের আগে ৬ লাখ ও কাজের পরে ৬ লাখ। কিন্তু ২ লাখ টাকা পেয়ে ডনের সঙ্গে ফারুকের কথাকাটাকাটি হয়। পরে ফারুক রাগ করে বাইরে যায়। ২০ থেকে ২৫ মিনিট পরে আরও ৪ লাখ টাকা নিয়ে আসে। তখন ওখানেই ডন প্লাস্টিকের একটি দড়ি নিজের মাজায় বেঁধে উপরে কালো জ্যাকেট গায়ে দেয়। বাকি অর্ধেক রশি ফারুকের কাছে দেয়। এরপর তারা টাকা, সিরিঞ্জ, রিভলবার ইত্যাদি গুছিয়ে নেয়। সামিরার মা এবং আজিজ মোহাম্মদ ভাই দুজনে মিলেই সালমানকে শেষ করার ব্যাপারে ডন ও ফারুকের সঙ্গে কনটাক্ট হয়।’

রেজভী আরও বলেন, ‘এরপর ওই রাতে বার থেকে এফডিসি এসে শুটিং শেষে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী রাত আড়াইটার সময় আমাকে সালমান শাহর বাসায় নিয়ে যায় ডন। ওই বাসায় ডন, ডেভিড ও ফারুকের যাতায়াত ছিল বলে দারোয়ান কিছু বলেনি। সালমানের বাসায় লিফটে ওঠার আগেই ডান পাশে রুবী নামে এক মেয়ের রুমের দরজায় ডন নক করলে রুবী নাইটি পরা অবস্থায় দরজা খোলে। এরপর বলে, “ও তোমরা এসেছ।” তখন ডন রুবীকে বলে, ‘আজিজ ভাই কোথায়?’ বাথরুম থেকে আজিজ ভাই বের হয়ে আসে। এরপর আমরা উপরে উঠি। আজিজ ভাই চারতলায় নেমে যায়। আর আমরা ১১ তলায় নেমে সালমানের বাসায় যাই। দরজা আগে থেকেই চাপানো ছিল। দরজা খুলেই দেখা যায় সালমান বেডরুমে শুয়ে আছে। পাশে সামিরা নাই। তখন ডন, ডেভিড, জাভেদ, ফারুকরা মিলে সালমানের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এ সময় ফারুক তার পকেট থেকে ক্লোলোফর্মের সিসি বের করে সামিরাকে দেয়। সামিরা তা দিয়ে সালমানের নাকের ওপর চেপে ধরে। ডন সালমানের বুকের ওপর গিয়ে বসে। আর ফারুককে বলে, আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে ডাক। ফারুক তখন বাইরে গিয়ে আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে নিয়ে আসে। এরই মধ্যে সামিরার মা ড্রেসিংরুম থেকে বের হয়ে আসে। তখন ধস্তাধস্তি হচ্ছিল। সালমানের খুব শক্তি ছিল। ইনজেকশন দেওয়া যাচ্ছিল না। তখন সবাই মিলে সালমানকে ড্রেসিং রুমে নিয়ে ডেভিড সালমানের পা বাঁধে। আজিজ ভাই ডনকে ইনজেকশন দিতে বলে। পরে সামিরা পুশ করে, তার মা সামিরাকে পুশ করতে সাহায্য করে। পরে সালমান নিস্তেজ হয়ে পড়ে। ইনজেকশন পুশ করার আগে আজিজ মোহাম্মদ ভাই ফ্যানটা সালমান শাহর ঘাড়ের ওপর ছুড়ে মেরেছিল। ড্রেসিং রুমে একটা মই ছিল। আজিজ মোহাম্মদ ভাই আমাকে মইটা আনতে বলে। আমি এনে দিই। এরপর তিনি দড়ি চান। তখন ডন নিজের কোমরের দড়িটা খুলে আজিজ ভাইয়ের হাতে দেয়। আজিজ মোহাম্মদ ভাই নিজেই সিঁড়ি দিয়ে উঠে দড়িটি সিলিং ফ্যানের সঙ্গে বাঁধে। তাতে আমি, সামিরা, সামিরার মা সাহায্য করি। পরে সালমানের পায়ে বাঁধা রশিটা খুলে বুকের ওপর উঠে গলায় চাপ দিয়ে রাখে এবং পরীক্ষা করে দেখে যে নিঃশ্বাস নেই। উপরের রশিটা খানিকটা ঝুলিয়ে রাখা হয়, যাতে দেখানো যায় যে, লাশটাকে ঝোলানো থেকে খোলা হয়েছে। পরে সালমান সুইসাইড করেছে এটা দেখানোর জন্য তাকে তেল মালিশ করা হয়, কাপড় ভিজিয়ে শরীরে রাখা হয়। এরপর যে যার মতো চলে যাই। আমিও ফরিদপুর চলে যাই। এরপর কারও সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি। কিছুদিন পর ডনের সঙ্গে ঢাকায় দেখা হলে আমাকে জানায় দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নাই। আজিজ মোহাম্মদ ভাই সব ঠান্ডা করে দিয়েছে। পরে আমি আবার বাড়িতে গেলে ১৯৯৭ সালের ৪ঠা জুলাই ডন ও ডেভিড আমাদের বাড়িতে আসে। ডন আমাকে বলে, কেইসটা আবার নাড়া দিয়ে উঠেছে। যেহেতু আমাদের সঙ্গে ছিলে। এখন আমাদের সাহায্য করতে হবে। আমাকে তারা প্রয়াত চিত্রপরিচালক আলমগীর কবিরের ছেলে লেনিন সেজে সালমানের বাবা-মার বাসায় যেতে বলে। এরপর গভীর রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় সালমানের ছোট ভাই বিল্টুকে অপহরণ করে সালমান হত্যা মামলা প্রত্যাহার করা হবে বলে পরিকল্পনা হয়। তবে ওই বাসায় লেলিন সেজে গেলে আমি ধরা পড়ি। সালমান শাহ আত্মহত্যা করেনি। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।’

শুধু আসামি রেজভীই নয়, আসামি রুবীও স্বীকার করেন এটি একটি হত্যাকাণ্ড।