খুঁজুন
                               
শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৫, ৮ কার্তিক, ১৪৩২

৬২ বিষয়ে একমত হলো রাজনৈতিক দলগুলো

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০২৫, ৯:০৯ পূর্বাহ্ণ
৬২ বিষয়ে একমত হলো রাজনৈতিক দলগুলো

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ২২তম দিনের সংলাপে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কারের বিষয়ে প্রথম পর্বের আলোচনায় ৬২ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো। বুধবার (৩০ জুলাই) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত এ সংক্রান্ত আলোচনায় বিভিন্ন দলের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে এসব বিষয়ে সম্মতি প্রকাশ করা হয়। এর মধ্যে ৩০টি দলের সম্মতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে একটি দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা থাকবে, যা নিম্নকক্ষ (জাতীয় সংসদ) ও উচ্চকক্ষ (সিনেট) নিয়ে গঠিত হবে। উচ্চকক্ষের সদস্যদের যোগ্যতা ও অযোগ্যতা নিম্নকক্ষের সদস্যদের অনুরূপ হবে। জাতীয় সংসদে নারী আসন ১০০-তে উন্নীত করার বিষয়েও নীতিগতভাবে একমত হয়েছে ১৯টি দল।
এ ছাড়া আইনসভার উভয় কক্ষে একজন করে ডেপুটি স্পিকার বিরোধী দল থেকে মনোনীত করার বিধান রাখা হবে। রাষ্ট্রপতির অভিশংসন প্রক্রিয়া নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে সম্পন্ন করার প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ভাষার ক্ষেত্রে প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রভাষা ‘বাংলা’ হওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশের নাগরিকদের মাতৃভাষা হিসেবে ব্যবহৃত সব ভাষাকে প্রচলিত ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে। সংবিধানে বিদ্যমান সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬(২) প্রতিস্থাপন করে বাংলাদেশের নাগরিকরা ‘বাংলাদেশি’ বলে পরিচিত হবেন, এই বিধান যুক্ত করা হবে, যেখানে ৩১টি দল একমত পোষণ করেছে।
সব সম্প্রদায়ের সহাবস্থান ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে সংবিধানকে ‘একটি বহুজাতি, বহুধর্মী, বহুভাষী ও বহু সংস্কৃতির দেশ’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে। মৌলিক অধিকারগুলোর তালিকা সম্প্রসারণের পাশাপাশি জাতীয় স্বার্থ বা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাকে প্রভাবিত করে, এমন আন্তর্জাতিক চুক্তি আইনসভার উভয় কক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের মাধ্যমে অনুমোদন করা হবে।
স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের সরাসরি তত্ত্বাবধান নিশ্চিত করা হবে এবং তাদের আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও কার্যাবলিতে সম্পূর্ণ কার্যকরী স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করা হবে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, যারা স্থানীয় সরকারের কাজে সরাসরি নিয়োজিত, তারা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জনপ্রতিনিধিদের অধীনস্থ হবেন।
নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কারের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের অধীনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯-এর আওতাভুক্ত করা হবে।
বিচার বিভাগ সংস্কারে আপিল বিভাগের বিচারক সংখ্যা বৃদ্ধি এবং প্রধান বিচারপতির চাহিদা মোতাবেক বিচারক নিয়োগের বিধান যুক্ত করা হবে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে একটি স্বাধীন বিচার বিভাগীয় নিয়োগ কমিশন (জেএসি) গঠন করা হবে। বিচার বিভাগকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া এবং বিচারকদের জন্য আচরণবিধি প্রণয়ন ও প্রকাশ করার বিষয়েও ঐকমত্য হয়েছে।
অধস্তন আদালতের বিচারকদের চাকরির নিয়ন্ত্রণ সম্পূর্ণভাবে সুপ্রিম কোর্টের ওপর ন্যস্ত করা হবে। নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে কার্যকরভাবে পৃথকীকরণের লক্ষ্যে সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে। এ ছাড়া একটি স্থায়ী সরকারি অ্যাটর্নি সার্ভিস ও স্বতন্ত্র ফৌজদারি তদন্ত সার্ভিস প্রতিষ্ঠার জন্য আইন প্রণয়ন করা হবে। বিচারকদের রাজনৈতিক আনুগত্য প্রদর্শনকে অসদাচরণ হিসেবে বিবেচনা করে ব্যবস্থা নেওয়ার বিধানও রাখা হবে।
জনপ্রশাসন সংস্কারের বিষয়ে জুলাই অভ্যুত্থানকালে গণহত্যা ও নিপীড়নের সঙ্গে জড়িত এবং ভোট জালিয়াতি ও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের চিহ্নিতকরণে স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠনের বিষয়ে ৩২টি দল একমত হয়েছে। একটি স্বাধীন ও স্থায়ী জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন গঠন এবং তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ ও অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯২৩ সংশোধন করার প্রস্তাবও রাখা হয়েছে। কুমিল্লা ও ফরিদপুর নামে দুটি নতুন প্রশাসনিক বিভাগ গঠন ও স্বতন্ত্র ভূমি আদালত স্থাপনের বিষয়েও ঐকমত্য হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংস্কারের ক্ষেত্রে সাংবিধানিক ও আইনগত ক্ষমতার অপব্যবহার রোধে সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। একটি দুর্নীতিবিরোধী জাতীয় কৌশলপত্র প্রণয়ন ও বৈধ উৎসবিহীন আয়কে বৈধতা দানের চর্চা চিরস্থায়ীভাবে বন্ধ করতে সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়ন করা হবে। উচ্চপর্যায়ের দুর্নীতি ও অর্থ পাচার রোধে আইন প্রণয়ন এবং নির্বাচনী অর্থায়নে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে।
দুদক কমিশনারের সংখ্যা তিনজন থেকে পাঁচজনে উন্নীত করা, তাদের মেয়াদ ৫ বছরের পরিবর্তে ৪ বছর নির্ধারণ এবং বাছাই কমিটির নাম ‘বাছাই ও পর্যালোচনা কমিটি’তে পরিবর্তন করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এই কমিটি সাত সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত হবে এবং কমিশনার নিয়োগের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করবে। দুদক আইন, ২০০৪-এর ধারা ৩২(ক) বিলুপ্ত করে জজ, ম্যাজিস্ট্রেট বা সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা করার ক্ষেত্রে সরকারের পূর্বানুমোদন নেওয়ার বিধান বাতিল করা হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ওপেন গভর্নমেন্ট পার্টনারশিপের (ওজিপি) পক্ষভুক্ত হবে।

উপদেষ্টাদের নিয়ে এত প্রশ্ন কেন?

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৫, ১:৪১ অপরাহ্ণ
উপদেষ্টাদের নিয়ে এত প্রশ্ন কেন?

বাংলাদেশে রাজনীতির মাঠ এখন উত্তপ্ত নয়, বলা ভালো, গরম চুল্লির ঢাকনা সবে নড়তে শুরু করেছে। কারণ একটাই, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে রয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুস। তিনি এবার শুধু অর্থনীতির সমীকরণ নয়, রাজনীতির সমীকরণও মেলাতে নেমেছেন। কিন্তু তার কাগজের খাতা যেন উলটেপালটে গেছে উপদেষ্টাদের নিয়েই।

গত ক’দিনে পরপর তিনটি দলের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা – বিএনপি, জামায়াতে ইসলামি ও জাতীয় নাগরিক পার্টি -এনসিপি। প্রতিটি বৈঠকই ছিল রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। আর প্রতিটি বৈঠকের পরই তিন দল এক সুরে বলেছে, উপদেষ্টাদের অনেকে নিরপেক্ষ নন, তারা দলীয় ভূমিকা পালন করছে।

একই কথা তিন দলের মুখে শুনে মনে হতে পারে, যেন পূর্বনির্ধারিত স্ক্রিপ্ট। কিন্তু স্ক্রিপ্ট লিখেছেন কে? তা নিয়ে এখনই জল্পনা তুঙ্গে।

উপদেষ্টাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় দুই নাম, তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এবং স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া। দু’জনই তরুণ, এক সময় ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। এখন সরকারের উপদেষ্টা। তাঁদের বর্তমান নিয়ে কথা হচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে যে, তাঁরা অন্তবর্তী নিরপেক্ষ সরকারের থেকে এনসিপির হয়ে কাজ করছেন।

প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়েই সরকার প্রধানের কার্যালয় থেকে এই দুই উপদেষ্টাকে নাকি পদত্যাগের ‘পরামর্শ’ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা তা শোনেননি। এখন শোনা যাচ্ছে, মাহফুজ আলমের পরিবারের একজন আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থী হতে চলেছেন। আর আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া কুমিল্লার মুরাদনগরে বিএনপির স্থানীয় প্রার্থীর সঙ্গে প্রকাশ্য নির্বাচন পূর্ব দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন।

এই প্রেক্ষাপটে বিএনপির বক্তব্য স্পষ্ট ‘নির্বাচনের আগে বিতর্কিত উপদেষ্টাদের যেতে হবে’। বিএনপির দাবি, যেহেতু তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর নেই,অন্তর্বর্তী সরকারকেই সেই ভূমিকা নিতে হবে। তাই অন্তত নিরপেক্ষতার আবরণটুকু বজায় থাকুক।
কিন্তু ‘নিরপেক্ষতা’ কথাটাই এখন বাংলাদেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে বিতর্কিত মুদ্রা। যেদিকেই উলটে ধরো, কারও না কারও মুখ সেখানে ফুটে ওঠে।
বিএনপি একা নয়। জামায়াতে ইসলামি ও এনসিপিও অভিযোগ তুলেছে – সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন সরাসরি রাজনৈতিক দলের ঘনিষ্ঠ। কেউ কেউ তো অতীতে নির্বাচনে প্রার্থীও ছিলেন। আবার জাতীয় পার্টির একাংশ ও গণ অধিকার পরিষদও বলেছে, উপদেষ্টাদের মধ্যে নিরপেক্ষতার অভাব রয়েছে।
এমনটা যদি অবস্থা হয় তাহলে অধ্যাপক ইউনুস কি আসন্ন নির্বাচনে এমন এক উপদেষ্টা পরিষদ নিয়ে আছেন, যাঁদের মধ্যে অর্ধেকই রাজনৈতিকভাবে চিহ্নিত?
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের সুনাম আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে। কিন্তু দেশের ভেতরে তাঁর প্রশাসনিক দক্ষতা নিয়ে সমালোচনা বাড়ছে। অনেকেই বলছেন, ইউনুস সাহেব হয়তো বিশেষজ্ঞদের দিয়ে সরকার গঠন করতে চেয়েছিলেন,কিন্তু রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠতে পারছেন না উপদেষ্টাই।
অধ্যাপক ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার শুরু থেকেই বলছে, তাদের মূল লক্ষ্য সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর অভিযোগ, এই সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা নিজেরাই রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট।
বাংলাদেশে ‘নির্দলীয়’ শব্দটির এক বিশেষ রাজনৈতিক ইতিহাস আছে। ১৯৯৬ সালে বিএনপি সরকারের পতনের পর গঠিত হয়েছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা- সেই ব্যবস্থার মূল ভিত্তিই ছিল নির্বাচনের আগে একটি নিরপেক্ষ প্রশাসন। ২০১১ সালে সেই ব্যবস্থা বাতিল হওয়ার পর থেকেই প্রশ্ন ঘুরেফিরে এক জায়গায় – এখন নির্বাচন দেখবে কে?
অধ্যাপক ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার সেই প্রশ্নের উত্তর হতে পারত। কিন্তু উপদেষ্টাদের নিরপেক্ষতার মানদণ্ডই প্রশ্নবিদ্ধ হয়, তাহলে সেই সমীকরণ কতটা বিশ্বাসযোগ্য থাকে?
ঢাকার রাজনৈতিক চৌহদ্দি ছাড়িয়ে এখন নাগরিক সমাজও প্রশ্ন তুলছে – ‘নিরপেক্ষ’ সরকারের উপদেষ্টারা আসলে কতটা নিরপেক্ষ? কেউ ব্যাংকের পরিচালক,কেউ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ট্রাস্টি,কেউ আবার সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। এদের মধ্যে কারও না কারও রাজনৈতিক যোগাযোগ থাকা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু নির্বাচনকালীন সরকারে বসে সেই যোগাযোগ কতটা প্রভাব ফেলতে পারে, সেটা নিয়েই বড় আলোচনা।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘বিশ্বাস’ নামের জিনিসটা বহুদিন আগেই অনুপস্থিত। এক পক্ষ অন্য পক্ষকে বিশ্বাস করে না, প্রশাসনকে বিশ্বাস করে না, এমনকি গণমাধ্যমকেও করে না। এখন যদি অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতাও প্রশ্নের মুখে পড়ে,তাহলে সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করবে কাকে?
অধ্যাপক ইউনুস এখন যে পরিস্থিতিতে আছেন, তাতে তাকে একাধারে অর্থনীতিবিদ, রাজনীতিক ও মনস্তাত্ত্বিক— তিন ভূমিকাতেই অভিনয় করতে হচ্ছে। অর্থনীতি তিনি বোঝেন, রাজনীতি বুঝতে শুরু করেছেন, কিন্তু মনস্তত্ত্ব? সেটাই সবচেয়ে জটিল। কারণ,তাঁর প্রতিটি সিদ্ধান্ত এখন ব্যাখ্যা করা হচ্ছে রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে। কাকে উপদেষ্টা করা হলো, কোন দলের অনুরোধে করা হলো, কে কী ভূমিকা রাখছেন – সব কিছু নিয়েই চলছে ব্যাখ্যা ও প্রতিব্যাখ্যা।
তাঁর সামনে এখন দুটি পথ – হয় বিতর্কিত উপদেষ্টাদের সরিয়ে একদম পরিষ্কার বার্তা দেওয়া, নয়তো রাজনৈতিক ঝড়ের মধ্যে নাবিকের মতো দাঁড়িয়ে থাকা। কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতিতে ঝড়ের গতি এমন যে,তাতে অভিজ্ঞ নাবিকও দিক হারিয়ে ফেলেন।
এখন নাগরিক সমাজের কৌতূহল একটাই – এই উপদেষ্টাদের নিয়েই কি অধ্যাপক ইউনুস নির্বাচনের পথে হাঁটবেন? যদি তাই হয়, তাহলে সেই নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিয়ে আগেই যে সন্দেহ তৈরি হচ্ছে, তা কি আর মুছবে?
বাংলাদেশে নির্বাচন মানেই রাজনৈতিক রণক্ষেত্র। সেই মাঠে যদি রেফারির পক্ষপাত নিয়ে আগেই প্রশ্ন ওঠে,তাহলে খেলা শুরু হওয়ার আগেই ফলাফল নিয়ে বিতর্ক তৈরি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। প্রধান উপদেষ্টার দফতর নিশ্চয়ই তা জানে। এখন দেখা যাক, অধ্যাপক ইউনুস এই ঝড়ের মধ্যে কীভাবে নিজের নৌকো চালান – অর্থনীতির সূত্রে,নাকি রাজনীতির কৌশলে।

নির্বাচিত সরকার ছাড়া কিস্তি ছাড় করতে রাজি নয় আইএমএফ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৫, ১:৩০ অপরাহ্ণ
নির্বাচিত সরকার ছাড়া কিস্তি ছাড় করতে রাজি নয় আইএমএফ

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের ৬ষ্ঠ কিস্তি ছাড় করার কথা আগামী ডিসেম্বরের শেষে বা জানুয়ারির প্রথমার্ধে। কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর যে রাজনৈতিক সরকার আসবে, তারা আইএমএফ এর ঋণের শর্ত মানবে কি-না, সেই নিশ্চয়তা না পেয়ে কিস্তির অর্থ ছাড় করতে রাজি নয় সংস্থাটি। ওয়াশিংটনে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সম্মেলনে বাংলাদেশকে এমন বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন সম্মেলনে অংশ নেওয়া অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। ডলার সংকটের মধ্যে আওয়ামী লীগ সরকার আইএমএফ-এর কাছ থেকে ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর করে। বর্তমান অন্তবর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর সংস্থাটি থেকে আরও ৮০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ চুক্তি সই করে। ফলে মোট ৫.৫ বিলিয়ন ডলার ঋণের মধ্যে ৫তম কিস্তি পর্যন্ত প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। আগামী ডিসেম্বরে ৬ষ্ঠ কিস্তি ও আগামী জুনে ৭ম কিস্তি পাওয়ার কথা। সাধারণত প্রতি কিস্তি ছাড়ের আগে আইএমএফ এর দেওয়া শর্তগুলোর কতটুকু বাস্তবায়ন করেছে সরকার, তা যাচাই করতে সংস্থাটির একটি মিশন দুই সপ্তাহ করে বাংলাদেশে এসে রিভিউ করে থাকে। ৬ষ্ঠ কিস্তি ছাড় করার আগে পূর্ব নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী আগামী ২৯ অক্টোবরে এই মিশন আসছে বাংলাদেশে। ৬ষ্ঠ কিস্তি ছাড়ের পূর্বশর্ত হিসেবে আইএমএফ যেসব শর্ত দিয়েছিল, তার মধ্যে শুধু রাজস্ব আহরণের শর্ত পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ। বাকি সবগুলো পূরণ করেছে বলে জানিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের জানান, ‘আমরা সব শর্ত পূরণ করলেও সময়মতো কিস্তির অর্থ নাও পেতে পারি। ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের পর রাজনৈতিক সরকার ঋণের শর্তগুলো মানবে কি-না, সেটি নিশ্চিত হওয়ার পর তারা ৬ষ্ঠ কিস্তির অর্থ ছাড় করবে।’ অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ঋণের আগামী কিস্তির অর্থ ডিসেম্বরের বদলে মার্চ-এপ্রিলে ছাড় করবে আইএমএফ।

‘আমার পুরো শরীর নাকি প্লাস্টিক সার্জারি করা’

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২৫, ১:২৪ অপরাহ্ণ
‘আমার পুরো শরীর নাকি প্লাস্টিক সার্জারি করা’

বলিউড কিংবা হলিউডের অনেক তারকাই প্লাস্টিক সার্জারি করিয়েছেন। মার্কিন পপ তারকা কার্ডি বি থেকে বলিউড তারকা শিল্পা শেঠি, আনুশকা শর্মা—অনেকেই প্লাস্টিক সার্জারি করার কথা স্বীকারও করেছেন। যদিও ঢাকার তারকাদের মধ্যেও অনেকের প্লাস্টিক সার্জারি করানোর বিষয়টি নিয়ে গুঞ্জন থাকলেও তা নিয়ে তাদের খুব একটা কথা বলতে দেখা যায় না। তবে সম্প্রতি এক পডকাস্ট শোতে হাজির হয়ে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান।
সেখানে জয়া আহসান বলেন, ‘মানুষ বলে, আমার পুরো শরীর নাকি প্লাস্টিক সার্জারি করা। এটা কিন্তু আমি শুনেছি।আমার নাকি হেড টু টো (মাথা থেকে পা পর্যন্ত) প্লাস্টিক সার্জারি করা।’ এরপর তিনি বলেন, ‘বোটক্স, এটা-সেটা (ব্যবহার করি)—এগুলো বলে মানুষ। মানুষ মনে করে, এগুলো (মন্তব্য) আমি দেখি না। আমি দেখি মাঝেমধ্যে। আমাদের কমেন্ট বক্স দেখলে আমাদের দেশের পুরুষদের স্টেট অব মাইন্ডটা (মানসিক অবস্থা) বোঝা যায়।’ তবে প্লাস্টিক সার্জারি করেছেন, নাকি করেননি—তা স্পষ্ট করেননি এই অভিনেত্রী। এ সময় ট্রল প্রসঙ্গেও কথা বলেন তিনি। ২০১৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী ২’ ছবিতে তাঁর বলা ‘মারোওও’ সংলাপটি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক ট্রল হয়।
এই প্রসঙ্গে জয়া বলেন, এটা খুব দরকার ছিল, ভালো হয়েছে তো, পচানি খাইছি না। সব সময় সবকিছুতে সফল হব? ভুল করেছি, সেটাই ঠিক আছে। আমার জীবনে কোনো কিছু ভুল না। ওই ভুলগুলো নিয়েই আজকের জয়া আমি। ২০২৫ সাল জয়া আহসানের জন্য বেশ সফল একটি বছর। বাংলাদেশ ও ভারতে তার অভিনীত ‘তাণ্ডব’, ‘উৎসব’, ‘ডিয়ার মা’ ও ‘পুতুল নাচের ইতিকথা’ ছবিগুলো মুক্তি পেয়েছে। সর্বশেষ ১৯ সেপ্টেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় তার নতুন ছবি ‘ফেরেশতে’। পাশাপাশি ওটিটিতে মুক্তি পেয়েছে ‘জয়া আর শারমিন’ ও ‘নকশীকাঁথার জমিন’।