খুঁজুন
                               
শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫, ৬ বৈশাখ, ১৪৩২

আছিয়ার বড় বোন জানালো সেদিনের ঘটনা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ, ২০২৫, ৭:২১ অপরাহ্ণ
আছিয়ার বড় বোন জানালো সেদিনের ঘটনা

আছিয়ার মৃত্যুর সত্য ঘটনা উদঘাটন: আমি সবটা জানি। সেদিন রাত্রে কি ঘটেছিলো। শুধু সে রাত্রে নয়। প্রতি রাত্রে কি ঘটেছে তোমার শশুর বাড়িতে। সেসব কথা আমি বলবো নাকি তুমি নিজেই বলবে? এবার আফিয়া বসে পরে।অপরাজিতার পায়ে ধরে। আপা কিছু বলেন না। আমার ছোট বোনের জীবনতো শেষ হয়েছে। আমার জীবন নষ্ট হতে দিয়েন না। উৎসুক জনতা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ কি কথোপকথন হয়েছে যে, আফিয়া পল্টি খাইয়া গেলো?

তাঁর দিকটা একবার দেখে নিল অপরাজিতা। তাঁরপর আফিয়ার দুই কাঁধে হাত রেখে উঠি তাঁরপর বলে, দুর পাগলী। তোমার কিছুই হবে না. ধর্ষকরা তো ধরা পরেছে। তাছাড়া যারা অপরাধ করেছে তাদের দোষ, তুমি অকারণে ভয় পাচ্ছো কেনো? আমি, আমরা সবাই, পুরো দেশবাসি তোমার পাশে আছি, তোমার সাথে থাকবো। ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছড়বো না। এবার ওড়না দিয়ে মুখ লুকিয়ে রাখে আফিয়া। অপরাজিতা আফিয়ার মুখ থেকে ওড়না সরিয়ে দিয়ে বলে, তুমি চাও না আছিয়া সঠিক বিচার পাক? অপরাধীরা শাস্তি পাক? জী আপা চাই। তাহলে মুখ খোল। সত্যি কথা বলে দাও। সবাই জানুক সত্য ঘটনা।

আফিয়া এবার ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে থাকে। সাংবাদিকরা তারঁ দিকে তাকিয়ে আছে? আফিয়া আবার দুহাত দিয়ে মুখ ঢাকে। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠে। অপরাজিতা বলে, কাঁদো। কেঁদে কেঁদে হাল্কা হও।নিজের মাধ্যে সাহস ফিরে আনো। শক্ত হয়ে দাঁড়াও। মুষ্টিবদ্ধ হাত উপরে উঠাও। চিৎকার করে বলো, আমি মানুষ। আমারও আছে ভালোভাবে বাঁচার অধিকার। আফিয়া ওড়নার আঁচলে মুখ মুছে নেয়।তাঁরপর ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে শক্ত হয়ে দাঁড়ায়। সাংবাদিক ভাইদের বলে, শোনেন আমার ও আমার ছোট বোনের সাথে কি ঘটেছিলো সেই রাত্রে।

আফিয়া নির্ভয়ে বলে, আমি আফিয়া। বাবা মায়ের প্রথম কন্যা সন্তান। অভাবের সংসার আমাদের। তাই পড়া শোনা করা হয়নি।একটি ভালো সমন্ধ আসায় অল্প বয়সে মা বাবা আমাকে বিয়ে দেয়। আমি প্রথমে বিয়ে করতে রাজি হইনি। সবাই আমাকে বোঝায়, অভাবের সংসারে একজন খাওয়ার মানুষ কমলে ছোট ভাই বোনেরা ভালো খেতে পারবে। তাই আমি রাজি হয়েছি।

বিয়ের প্রথম দিন থেকেই আমার শশুরের কুনজর বুঝতে পারছি। রাত্রে বিছানায় স্বামী ব্যাবহারের পর আমাকে পোশাক পরতে না দিয়ে রুমের বাহিরে যায়। তারপর অন্ধকারে আমার শরীরের উপর কারো উপস্থিতি বুঝতে পারছি। এটাও খেয়াল করি এখন যে আছে সে আমার স্বামী না। অন্য পুরুষ। কিন্তু কে তা বুঝতে পারছি না। আমার ছোট শরীর। স্বামীকে সহ্য করাই অসম্ভব। তাঁরপর আরেক জন। আমি ব্যাথায় কুকরে উঠি। চিৎকার করার চেষ্টা করি। কিন্তু আমার মুখ চেপে ধরে। ফিসফিস করে আমাকে চুপ করতে বলে। মে-রে ফেলার হুমকি দেয়। আমি এবার কন্ঠ চিনতে পারি। এ কন্ঠ আমার শশুরের কন্ঠ। তাঁরপর সে ছেড়ে চলে গেলে আবার আরেক জন আসে। একেও চিনতে পারি। সে হচ্ছে আমার দেবর। এরপর আমার স্বামী ভিতরে আসে। তাঁকে বিষয়টি জানালে, সে রেগে যায়। বলে সে ছাড়া ঘরে আর কেউ আসেনি।

পরের দিন শাশুড়ীকে জানালে বলে, আমি স্বপ্ন দেখেছি। এভাবে প্রতি রাত্রেই আমার স্বামী, শশুর ও দেবর আমাকে ধ-র্ষ-ণ করে। আমি স্বামীকে বললে মা-রধর করে। আর শাশুড়ীকে বললে বলে ভুতের আছর আছে। ভুত প্রতি রাত্রে আসে আমার কাছে। তাঁরপর বাড়িতে আসলে মাকে জানাই বিষয়টি। মা বিষয়টি বিশ্বাস করেনি। ভেবেছে মেয়ের বয়স কম তাই স্বামীর কাছে যেতে ভয় পায়। তাই স্বান্তনা দেয়। সময় হলে সব ঠিক হবে। আছিয়ার বড় বোন শশুর বাড়িতে যেতে চাচ্ছে না দেখে ছোট বোন আছিয়াকে সাথে পাঠায়। সে আবার বলে, আছিয়াকে আমার শাশুড়ী সাথে রাখতে চায়। কিন্তু আমি দেইনি।

আছিয়া পাশে থাকা অবস্থায় ওই ঘটনার আগের রাত্রে একই ভাবে আমার স্বামী দরজা খুলে বাথরুমে যায়। তাঁরপর আমার শশুর ঘরে আসে। স্বামীকে দেখাতে হবে এটা ভুত না, তাঁর বাপ। এটা ভেবেই আমি আছিয়াকে পা দিয়ে ধাক্কা দেই। কয়েকবার ধাক্কা দেওয়ার পর আছিয়া জেগে যায়। প্রথমে বুঝতে না পারলেও পরে বুঝতে পারে। সে বিছানা থেকে নেমে গিয়ে রুমের লাইট জালিয়ে দেয়। তখুনি আমার শশুরকে উ*লঙ্গ অবস্থায় দেখতে পায়। আছিয়া সাথে সাথে বলে, তালোই আপনি এঘরে কেনো? আর এ অবস্থায় কেনো? তখন শশুর ঘর থেকে বেরিয়ে যায়। আমার স্বামী ঘরে আসে। তখন আমাদের মাঝে ঝগড়া হয়। আমার স্বামী আমাকে মারধর করে। আমাকে মারে আর নিষেধ করে, একথা যেন কাউকে না বলি। কিন্তু আছিয়া বলে সে আব্বা মার কাছে সব বলে দিবে। এদিকে মারামারির শব্দ শুনতে পেয়ে লোকজন চলে আসে। তখন আছিয়াকে এক ঘরে আটকে রাখে হাত পা ও মুখ বেঁধে রেখে। কাউকে বুঝতে দেয়না আছিয়াার কথা। আর আমার কথা বলে ভুতে ধরেছে তাই স্বামীকে সন্দেহ করে। লোকজনও তাই বিশ্বাস করে। ততক্ষণে সকাল হয়েছে।

এদিকে আফিয়ার শশুর বুঝতে পারে, যে আছিয়া বাড়িতে ফিরে সব বলে দিবে। আছিয়াকে বলতে দেওয়া যাবে। তাই তাকে আটকে রাখে। রাত্রের অপেক্ষা করে। সন্ধ্যার পর লোকজন ঘুমিয়ে পরলে, গভীর রাত্রে আছিয়াকে ধর্ষণ করতে যায়। আছিয়াকে কতটা নির্মমভাবে ধ-র্ষ-ণ করা হযেছিলো আজকে সেটার বর্ণনা দিয়েছে ডাক্তাররা। চিকিৎসারত ডাক্তার বলেছে – আছিয়া যেহেতু বাচ্চা মেয়ে তাই তার পো*পনা-ঙ্গের ডেপথ খুবই ছোট।

সে জন্যে ধ-র্ষ-করা কিছুটা ধা*রালো ব্লেড/ কাঠি দিয়ে গোপনা-ঙ্গে ছিদ্র করার চেষ্টা করেছিলো। সে ছিদ্রটা ছিলো আনুমানিক ৫ সেঃমিঃ গভীর। তারপর গোপ-নাঙ্গের একদম ভিতরের দিকে অনেক গুলো স্ক্রেচ করা হয় এবং সেটা করা হয় একদম সূক্ষ্ম ভাবে, অনেকটা সময় নিয়ে। একাজ করার সময় তার নাক-মুখ চেপে ধরা হয়েছিল যাতে কোনরকম চিৎকার করতে না পারে। তারপর মানুষ চলে আসার আওয়াজ পেয়ে আরেকজন গ*লা চেপে ধরেছিল মে- রে ফেলার জন্যে। আর এজন্যেই অক্সিজেনের অভাবে অজ্ঞান হয়ে পড়ে মেয়েটা। মুখ দিয়ে ফেনা বের হচ্ছিলো তখন। এ নির্মম বর্ণনা দিতে গিয়ে বারবার কণ্ঠস্বর কাঁপছিল ডাক্তারের। তিনি বলছিলেন- ‘এরকম কন্ডিশনে ভিক্টিম স্পটেই মা-রা যায়। এ মেয়েটা যে এখনও বেঁচে তাতেই অবাক হচ্ছি আমি’।

তাহলে এবার বুঝুন কতটা অমানবিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছিল বাচ্চা মেয়েটাকে। একে একে শশুর, স্বামী ও দেবর তিনজনেই পালাক্রমে ধ-র্ষ-ণ করে আছিয়াকে। আর পর জিজ্ঞেস করে কাউকে বলবি? আছিয়া ক্ষীণ কন্ঠে বলে, আপনারা খারাপ। আমি বলবোই। এবার সিদ্ধান্ত নেয় আছিয়াকে মে- রে ফেলার। আছিয়া প্রাণপনে চিৎকার করে আর বলে আপনারা খারাপ। আছিয়ার চিৎকার বন্ধ করার জন্য গলা চেপে ধরে। আছিয়া অতিরিক্ত রক্ত ক্ষরণের কারনে আর ব্যাথায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। ওরা ভেবেছে আছিয়া মরে গেছে। এবার তারা আফিয়ার নিকট আসে। প্রতি রাত্রের মতো তিনজনই আফিয়া ধ-র্ষ-ণ করে। এবার তারা বলে তুই একথা কাউকে বললে তোরও অবস্থা তোর বোনের মতো হবে। আফিয়া সাক্ষাৎ মৃত্যু দেখে ভয়ে কাঁপছে। আর লজ্জায় তাঁর ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ হওয়ার ভয়ে সে উল্টো পাল্টা কথা বলেছে। এ ব্যাপারে তাঁকে ইন্ধন দিচ্ছে তাঁর ও আছিয়ার দাদী।

সত্য ঘটনা হচ্ছে এই, শুধু আছিয়া ধ-র্ষ-ণের স্বীকার হয়নি তাঁর চাইতেও ভয়ংকর রকমের নির্যাতনের স্বীকার হয়েছে আছিয়ার বড় বোন। আছিয়া মরে হয়তো বেঁচে গেছে কিন্তু আছিয়ার বড় বোন বেঁচেও মরার মতো বেঁচে আছে।

ঈদে নতুন জামা : স্বপ্ন আর ভালোবাসা জড়ানো

উজ্জ্বল হোসাইন
প্রকাশিত: শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫, ১২:২২ পূর্বাহ্ণ
ঈদে নতুন জামা : স্বপ্ন আর ভালোবাসা জড়ানো

ঈদ মানেই আনন্দ, উৎসব, মিলন এবং নতুন করে বাঁচার প্রেরণা। এই দিনে সবাই চায় নিজেকে সাজিয়ে নিতে, নতুন কাপড় পরে প্রিয়জনের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নিতে। কিন্তু এমন অনেকের মধ্যেও থাকে এমন কেউ, যার জন্য একটি নতুন জামা শুধু পোশাক নয়, বরং স্বপ্ন, গর্ব, আত্মমর্যাদা এবং একটি আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। এই প্রবন্ধে আমরা এমন এক নতুন জামার কথা বলব, যে জামার শুধু দামী কাপড় বা ডিজাইনের গর্ব নেই, বরং রয়েছে আত্মার গভীরে জমে থাকা এক মানুষের স্বপ্নের গল্প।

শহরের এক কোণায় বাস করে ছোট্ট ছেলেটি রিয়াদ। বয়স প্রায় দশ। তার বাবা একজন দিনমজুর, মা গৃহিণী। সংসারে অভাব-অনটনের মধ্যে কোনোভাবে দিন কাটে তাদের। বছরের প্রতিটি দিন কাটে সংগ্রামের মাঝে, কিন্তু ঈদ আসে স্বপ্নের আলো নিয়ে। ঈদে নতুন জামা পাবে, এই আশায় রিয়াদ এক মাস রোজা রাখে, নিজের মনকে শক্ত করে।

তবে এই জামা আসবে কি না, তা নিয়ে কোনো নিশ্চয়তা নেই। কারণ, বাবার মুখে ভাঁজ আর চিন্তার ছাপ স্পষ্ট। মা বারবার বলেন, “এবার হয়তো পুরনো জামাতেই ঈদ করতে হবে।” কিন্তু রিয়াদ বিশ্বাস করে—আল্লাহ যদি রোজা কবুল করেন, তাহলে একটা নতুন জামা হয়তো আসবেই।

এই জামার অপেক্ষা শুধু রিয়াদের নয়, এটি যেন তার মন-প্রাণের আকুতি। এই জামা তার জন্য স্বপ্নপূরণ, আত্মমর্যাদা, শ্রেষ্ঠত্বের অনুভব।

আমরা অনেক সময় বুঝি না, একটি নতুন জামা একজন শিশুর জন্য কতটা অর্থবহ হতে পারে। ধনী পরিবারের শিশুর কাছে এটি হয়তো একটি চমকপ্রদ পোশাক, কিন্তু রিয়াদের কাছে এটি স্বপ্ন পূরণের মতো। সে ভাবে, ঈদের দিন সবার মতো তাকেও যদি নতুন জামায় দেখা যায়, তাহলে সে আর অবহেলিত হবে না, তার বন্ধুরা তাকে হাসবে না। তারও মুখে হাসি ফুটবে, তারও ছবি উঠবে মোবাইল ক্যামেরায়।

এই জামা তার আত্মবিশ্বাস, যেটা সে স্কুলে পড়ার সময় খুঁজে বেড়ায়, যখন ক্লাসের অন্য ছেলেরা নতুন জামা পরে আসে আর সে পড়ে থাকে একঘেয়ে মলিন কাপড়।

এখানে জামার একটি কল্পিত স্বর ও ভাষা কল্পনা করা যাক—যেখানে জামাটি যেন নিজের মনে নিজের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করছে: “আমি কোনো বিলাসী দোকানের শেলফে ঝুলে থাকা দামি জামা নই। আমি সেই জামা, যাকে এক দরিদ্র বাবার কষ্টের টাকায় কিনে আনা হবে তার ছেলের মুখে এক চিলতে হাসি ফোটাতে।
আমি হয়তো রঙিন নই, হয়তো আমার ডিজাইনে জাঁকজমক নেই, কিন্তু আমি গর্বিত। কারণ আমি হব একটি শিশুর ঈদের স্বপ্ন পূরণের বাহক। আমি হব আত্মমর্যাদার প্রতীক, আমি হব ঈদের প্রাপ্তির প্রতিচ্ছবি।”

এই ভাবনার মধ্যেই ফুটে ওঠে জামার স্বপ্ন—সে চায়, তাকে কেউ ভালোবাসুক, পরিধান করুক, আর আনন্দ পাক।

রিয়াদের মা হয়তো নিজের জন্য কোনো কাপড় কিনবেন না, বাবা হয়তো একজোড়া চপ্পল না কিনে সেই টাকায় ছেলের জামা কিনে দেবেন। কারণ, সন্তানের হাসির চেয়ে বড় কিছু তাদের কাছে নেই। একটি নতুন জামার পেছনে লুকিয়ে থাকে একটি পরিবারের নীরব ত্যাগ, ভালোবাসা আর গোপন কান্না।

ঈদের নতুন জামা এই পরিবারগুলোর কাছে শুধু পোশাক নয়—এটা এক সম্মান, ভালোবাসা এবং আত্মতৃপ্তির চিহ্ন। অনেক সময় বাবা-মায়েরা নিজেদের প্রয়োজন বিসর্জন দিয়ে সন্তানের মুখে হাসি দেখতে চান। নতুন জামা যেন সেই আত্মত্যাগের স্বাক্ষর হয়ে উঠে।

ঈদের দিন আমরা যখন দেখি কেউ চকচকে কাপড় পরে বেরিয়েছে, আর কেউ পুরনো জামা পরে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে, তখন সামাজিক বৈষম্যের চিত্র স্পষ্ট হয়ে ওঠে। নতুন জামার গুরুত্ব সেখানে দ্বিগুণ। এটি একধরনের সামাজিক মর্যাদা।

রিয়াদ হয়তো তার বন্ধুর পাশে দাঁড়িয়ে ভাবে—আমারও যদি এমন একটা জামা থাকত! শুধু ঈদের দিনটা নয়, পুরো জীবনজুড়ে সেই হাহাকার থেকে যায়। এই এক টুকরো জামাই তার স্বপ্নকে উঁচুতে নিয়ে যেতে পারে, আর না থাকলে আত্মবিশ্বাসে ভাটা পড়ে।

দরিদ্র শিশুদের জন্য ঈদে জামার প্রাপ্তি মানে কী? সমান মর্যাদা – অন্যদের মতো তাকেও দেখা হয় একজন ‘পূর্ণ’ শিশুর মতো।  আত্মবিশ্বাস – নতুন জামা পরে সে খুশি মনে বন্ধুদের সঙ্গে মিশে যেতে পারে। পরিবারের প্রতি ভালোবাসা বৃদ্ধি – সে উপলব্ধি করে, তার মা-বাবা তাকে কত ভালোবাসে।

৪. ভবিষ্যতের স্বপ্ন – একজন শিশু জানে, সে যদি চেষ্টার মধ্যে থাকে, তার স্বপ্ন একদিন পূরণ হবেই।

ঈদের সকালে রিয়াদের ঘুম ভাঙে ভোরবেলা। মা হাসিমুখে এসে বলে—
“এই দেখ, তোমার নতুন জামা।”
রিয়াদ প্রথমে বিশ্বাস করতে পারে না। হাত বাড়িয়ে জামাটা নেয়, চোখে জল চলে আসে। “আমার?”
মা মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়, “হ্যাঁ বাবা, তোমার।”
রিয়াদ তার ছোট জামাটিকে বুকের সঙ্গে জড়িয়ে ধরে, যেন এটিই তার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।

সেই জামা তখন আর শুধু সুতা ও রঙের মিশ্রণ নয়, সেটি তখন একটি ‘স্বপ্ন’। একটি সন্তুষ্টির প্রতীক, একটি ছোট শিশুর গর্বের নিশান।

আমরা যারা সমাজের ভাগ্যবান অংশ, তাদের উচিত এই বৈষম্য দূর করতে সচেষ্ট হওয়া। প্রতিবছর ঈদের আগে আমরা অনেকেই প্রচুর জামা কিনি, কিন্তু ভাবি না পাশের দরিদ্র শিশুটার কথা। যদি আমরা একটি নতুন জামা কাউকে দিতে পারি, তাহলে তার ঈদটা হয়ে উঠতে পারে জীবনের সেরা দিন।সামাজিক সংগঠন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পরিবার—সবাই যদি চায়, তাহলে প্রত্যেক শিশুর ঈদে একটি নতুন জামা নিশ্চিত করা সম্ভব। এটি দান নয়, এটি মানুষের স্বপ্ন পূরণে সহযোগিতা।

“ঈদে একটি নতুন জামা যার স্বপ্ন” এই বাক্যটি শুধুমাত্র কোনো এক জামা বা একটি শিশুর গল্প নয়, এটি হাজারো রিয়াদের গল্প। এটি আমাদের সমাজে লুকিয়ে থাকা অসংখ্য মানুষের জীবনবোধের চিত্র। একটি নতুন জামা কেবল দেহ ঢাকার উপকরণ নয়, এটি মানুষের সম্মান, আত্মবিশ্বাস এবং ভালোবাসার প্রতীক। আমরা যদি এই একটুকরো জামার ভেতর মানুষের আবেগ, স্বপ্ন ও আত্মত্যাগ দেখতে পারি, তাহলে সমাজে সত্যিকার পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে। আসুন, এই ঈদে আমরা কেবল নিজেদের জন্য না, অন্যের মুখে হাসি ফোটানোর জন্যও একটি নতুন জামার স্বপ্ন বুনি।

লেখক পরিচিতি : উজ্জ্বল হোসাইন, সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক, চাঁদপুর।

চাঁদপুর জেলা সমবায় ইউনিয়নের সভাপতি ইকবাল আজম সম্পাদক দুলাল চন্দ্র দাস

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৫, ৯:৩৮ অপরাহ্ণ
চাঁদপুর জেলা সমবায় ইউনিয়নের সভাপতি ইকবাল আজম সম্পাদক দুলাল চন্দ্র দাস

চাঁদপুর জেলা সমবায় ইউনিয়নের নির্বাচনী বিশেষ সাধারণ সভা (১৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ২০২৫) নির্বাচিত ব্যবস্থাপনা কমিটি (২০২৫-২০২৮) ঘোষণা করা হয়েছে। সমবায় সমিতি আইন ২০০১ (সর্বশেষ সংশোধন ২০১৩) ও সমবায় সমিতি বিধিমালা ২০০৪ (সর্বশেষ সংশোধন ২০২০) অনুযায়ী নির্বাচন কমিটির সভাপতি মোঃ আলমগীর হোসেন (পরিদর্শক, জেলা সমবায় কার্যালয়, চাঁদপুর) কোন পদে একাধিক প্রার্থী না থাকায়, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছয় সদস্য বিশিষ্ট ব্যবস্থাপনা কমিটি ঘোষণা করেন। নবনির্বাচিত ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি- মোঃ ইকবাল আজম (প্রতিনিধি, দি চাঁদপুর মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিঃ), সহ-সভাপতি- মোঃ আফজাল হোসেন খান (প্রতিনিধি, মিলেনিয়াম বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ), সম্পাদক- দুলাল চন্দ্র দাস (প্রতিনিধি, বাগড়া শিক্ষিত বেকার সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিঃ), সদস্য- মোঃ আক্কাস ফরাজী (প্রতিনিধি, রূপসী পল্লী বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ), সদস্য- খন্দকার ফখরুল আলম (প্রতিনিধি, আশার আলো মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিঃ), সদস্য- মোঃ খোরশেদ আলম (প্রতিনিধি, খাজুরিয়া বাজার সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিঃ)।
জেলার বিভিন্ন সমবায় সমিতির প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে ও নির্বাচন কমিটির সভাপতি মোঃ আলমগীর হোসেন এর সভাপতিত্বে নির্বাচনী বিশেষ সাধারণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুরের কৃতি সন্তান, জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত সমবায়ী ও বাংলাদেশ জাতীয় সমবায় ইউনিয়ন এর সাধারণ সম্পাদক মো. জসিম উদ্দিন শেখ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন জেলা সমবায় ইউনিয়ন, জেলার সমবায় সমিতি ও সমবায়ীদের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করার দায়িত্ব থাকলেও চাঁদপুর জেলা সমবায় ইউনিয়নে দীর্ঘদিন নির্বাচিত কমিটি ছিল না, যার কারণে এটি অকার্যকর হয়ে পড়ে। আমরা বাংলাদেশ জাতীয় সমবায় ইউনিয়ন থেকে চাঁদপুর জেলা সমবায় ইউনিয়নকে কার্যকর করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করি। সমবায় বিভাগ এতে অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থাপনা কমিটির গঠন করে, যার ফলশ্রুতিতে আজকে আমরা একটি নির্বাচিত ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করতে পেরেছি। এজন্য তিনি সমবায় বিভাগের সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান পাশাপাশি নবনির্বাচিত কমিটিকে অভিনন্দন জানান। সভায় তিনি বাংলাদেশ জাতীয় সমবায় ইউনিয়নের বিভিন্ন উদ্যোগ ও পরিকল্পনা সকলের সামনে উপস্থাপন করেন। সকলের সহযোগিতায় তা বাস্তবায়নের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। সভায় অন্যন্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাংকের সভাপতি মুরাদ হোসেন খান, জুন হাউজিং কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিঃ এর প্রতিনিধি এ ওয়াই এম জাকারিয়া, ওয়ারলেস বাজার বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ এর প্রতিনিধি মোঃ জিয়াউদ্দিন, ইসলামীয়া সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিঃ এর প্রতিনিধি নাজমুল হুদা প্রমূখ।
উল্লেখ্য প্রতি ৩ বছর পর পর নির্বাচনের মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনের বিধান থাকলেও ২০১২ সালের পর, দীর্ঘ ১৩ বছর পর এই ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠিত হলো।

আসছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫, ১০:৫১ পূর্বাহ্ণ
আসছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট

২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট দেওয়ার পরিকল্পনা করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আগামী ২ জুন নতুন অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

সম্প্রতি কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিল ও বাজেট ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

জানা গেছে, সংসদ না থাকায় এবার সংসদে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে না। অর্থ উপদেষ্টা টেলিভিশনে নতুন অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করবেন। ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হওয়ার আগেই বাজেট দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ কারণে ২ জুন বাজেট ঘোষণার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সাধারণত আগের অর্থবছরগুলোতে বৃহস্পতিবার বাজেট দেওয়া হতো, এবার সোমবার ঘোষণা করা হবে। বাজেট ঘোষণার পর আগের রীতি অনুযায়ী অর্থ উপদেষ্টা বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন।

সূত্রটি জানিয়েছে, সাধারণত প্রতি অর্থবছরে বাজেটের আকার আগের অর্থবছরের তুলনায় বড় রাখা হয়। তবে এবার বাজেট ঘাটতি কমিয়ে বাজেট ছোট কারার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। নতুন অর্থবছরের বাজেটে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে।

বাজেটের আকার কমানো হলেও সমাজে বৈষম্য কমানোর পাশাপাশি মূল্যস্ফীতির চাপে নিম্ন আয়ের মানুষদের স্বস্তি দিতে সামাজিকীকরণ সুরক্ষা কর্মসূচিতে উপকারভোগী ও কিছু ক্ষেত্রে ভাতার পরিমাণ বাড়ানোর উদ্যোগ থাকছে নতুন অর্থবছরের বাজেটে। একই সঙ্গে কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।

আগামী অর্থবছরের জন্য সরকার জিডিপির প্রবৃদ্ধি সাড়ে ৫ শতাংশ ধরতে পারে। চলতি অর্থবছরে যা ছিল ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আগামী অর্থবছর শেষে মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনতে চায় সরকার। চলতি অর্থবছরেও একই লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। যদিও গত মার্চ মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ।