খুঁজুন
                               
শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২৯ ভাদ্র, ১৪৩২

শীতকালে মায়ের হাতে পিঠা-পুলি ঐতিহ্যের মিষ্টি স্মৃতি

উজ্জ্বল হোসাইন
প্রকাশিত: রবিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২৫, ১২:০৭ পূর্বাহ্ণ
শীতকালে মায়ের হাতে পিঠা-পুলি ঐতিহ্যের মিষ্টি স্মৃতি

শীতকাল বাঙালির জীবনে এক অনন্য ঋতু। এই ঋতু শুধু ঠাণ্ডা আবহাওয়া নয়, বরং গ্রামবাংলার ঐতিহ্য, কৃষ্টিকলা এবং সুখময় পারিবারিক মুহূর্তের এক অপূর্ব মেলবন্ধন। শীতকাল এলেই বাঙালির ঘরে ঘরে এক অনন্য উষ্ণতার সৃষ্টি হয়, যার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে পিঠা-পুলির ঐতিহ্য। মায়ের হাতে তৈরি পিঠার গন্ধ যেন শৈশবের মিষ্টি স্মৃতি জাগিয়ে তোলে।  পিঠা-পুলি বাঙালির সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। শীতের সকালের শিশিরভেজা প্রকৃতির সাথে একবাটি ধোঁয়া ওঠা পিঠার স্বাদ যেন সবার হৃদয় জয় করে। মায়ের হাতে তৈরি পিঠার প্রতি ভালোবাসা আর আন্তরিকতা বাঙালি পরিবারে এক নতুন আনন্দের সঞ্চার করে। বাঙালি সংস্কৃতিতে পিঠার ইতিহাস বহু প্রাচীন। প্রাচীনকাল থেকেই ধান ও চালের উপর ভিত্তি করে গ্রামীণ জীবনযাত্রার সূচনা হয়। ধান কেটে ফসল ঘরে তোলার পর এই শস্যকে কেন্দ্র করেই পিঠা তৈরির প্রথা চালু হয়। পিঠা শুধু খাদ্য নয়; এটি বাঙালির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক।

গ্রামবাংলার মায়েরা শীতকালে নতুন ধানের চালে নানা ধরনের পিঠা তৈরি করেন। এই পিঠাগুলি তৈরি হয় খুব যত্ন এবং ভালোবাসার সঙ্গে। বিভিন্ন অঞ্চলের পিঠার ধরণ ও বৈচিত্র্য বিভিন্ন। চিতই, ভাপা, পাটিসাপটা, দুধপুলি, নারিকেলের পুলি, মালপোয়া, কিংবা ক্ষীরপিঠার মতো পিঠাগুলি আমাদের ঐতিহ্যেরই অংশ।
মায়ের হাতে তৈরি পিঠার স্বাদ অন্য কোনো কিছুর সঙ্গে তুলনীয় নয়। শীতের সকালে মা যখন উঠে পিঠা বানান, সেই সময়টুকু যেন সবার জন্য একটি উৎসবের মতো। মায়ের পিঠা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ যেমন নতুন চালের গুঁড়ো, খেজুরের গুড়, নারিকেল—সবকিছুই গ্রামের প্রকৃতির সঙ্গে জড়িত। মায়ের পিঠা তৈরির সময় পুরো বাড়ি ভরে ওঠে গুড় আর নারিকেলের মনোরম গন্ধে। ছোটরা উঁকিঝুঁকি দিয়ে দেখার চেষ্টা করে কখন পিঠা তৈরি হবে। আবার কেউ কেউ চুলার পাশে বসে গরম পিঠার স্বাদ নেয়ার জন্য অপেক্ষা করে। পিঠা তৈরির প্রতিটি ধাপে মায়ের মমতা আর যত্ন মিশে থাকে, যা পরিবারের সবার জন্য এক অনন্য অনুভূতি সৃষ্টি করে।
বাঙালির পিঠার তালিকা অত্যন্ত বিস্তৃত। অঞ্চলভেদে পিঠার ধরণ বদলে যায়। কিছু পিঠা ভাপা করে তৈরি হয়, কিছু আবার ভাজা হয়। শীতের সকালে ভাপা পিঠা খুবই জনপ্রিয়। চালের গুঁড়ো আর খেজুরের গুড় দিয়ে তৈরি ভাপা পিঠা একদিকে নরম আর অন্যদিকে স্বাদের দিক থেকে অপূর্ব। পাটিসাপটা পিঠা হল আরেকটি জনপ্রিয় পিঠা, যা তৈরি হয় নারিকেলের পুর দিয়ে। দুধপুলি পিঠা নারিকেল, দুধ আর খেজুর গুড়ের মিশ্রণে তৈরি হয়। এটি সবার কাছে খুবই প্রিয়। চিতই পিঠা সাধারণত গরম দুধ কিংবা গুড় দিয়ে খাওয়া হয়। মালপোয়া পিঠা বানানো হয় ময়দা আর গুড় দিয়ে, যা মিষ্টির মতো সবার মন ভরিয়ে দেয়। শীতকালের পিঠা-পুলি বাঙালির সামাজিক জীবনের একটি বড় অংশ। পিঠা তৈরির সময় একসঙ্গে পরিবার-পরিজন জড়ো হয়, যা পারিবারিক বন্ধন আরও দৃঢ় করে। গ্রামে পিঠা উৎসব বা নবান্ন উৎসবের সময় পিঠা-পুলির প্রাধান্য দেখা যায়। এই উৎসবে সবাই একত্রে পিঠা খায় এবং আনন্দ ভাগ করে নেয়।

শহুরে জীবনে অনেকেই এই ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টা করেন। যদিও আধুনিক জীবনের ব্যস্ততার কারণে মায়ের হাতে তৈরি পিঠার স্বাদ অনেকেই উপভোগ করতে পারেন না, তবুও শীতকাল এলেই এই স্মৃতিগুলি সবার মনে জাগ্রত হয়। প্রবাসী বাঙালিদের জন্য মায়ের পিঠার স্মৃতি বিশেষভাবে আবেগময়। শীতকালের ঠাণ্ডায় তারা দেশে ফিরে মায়ের হাতে তৈরি পিঠার স্বাদ নিতে চায়। মায়ের পিঠা যেন তাদের শৈশবের দিনগুলির স্মৃতি ফিরিয়ে আনে। প্রবাসে থেকেও অনেকে নিজ হাতে পিঠা তৈরির চেষ্টা করেন, তবে মায়ের পিঠার সেই স্বাদ আর ভালোবাসার অনুরূপ কিছুই হয় না। পিঠা-পুলির সঙ্গে বাঙালির সাংস্কৃতিক জীবনের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। এটি কেবল খাদ্য নয়, বরং একটি ঐতিহ্যের ধারক। পিঠার উৎপত্তি মূলত কৃষিজীবী সমাজ থেকে। ফসল কাটার পর নতুন ধানের চাল দিয়ে পিঠা তৈরি করা একটি প্রাচীন প্রথা। এ কারণে নবান্ন উৎসবের সঙ্গে পিঠার অঙ্গাঙ্গী সম্পর্ক।

শীতের আগমনে বাঙালির গ্রামীণ জীবনে এক ধরনের উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। পিঠার বৈচিত্র্য এবং তার উপাদানের সহজলভ্যতা এই সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। খেজুরের গুড়, নারিকেল, দুধ—সব উপাদান প্রাকৃতিক এবং মৌসুমী। বর্তমান সময়ে পিঠা উৎসব একটি জনপ্রিয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়ে দাঁড়িয়েছে। গ্রাম থেকে শহরে, এমনকি বিভিন্ন দেশে বাঙালিরা পিঠা উৎসবের আয়োজন করে নিজেদের ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টা করছে। পিঠা উৎসবে বিভিন্ন ধরনের পিঠার প্রদর্শনী হয়, যা নতুন প্রজন্মের কাছে এই ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে সাহায্য করে।

পিঠা উৎসব কেবলমাত্র খাদ্যের প্রদর্শনী নয়, এটি একটি মেলবন্ধনের অনুষ্ঠান। এই উৎসবে অংশগ্রহণকারী সবাই বাঙালির ঐতিহ্যের অংশীদার হয়ে ওঠে। পিঠা উৎসব আমাদের ঐতিহ্যের গভীর শিকড়কে নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা। গ্রামের বাড়িতে শীতকালে পিঠার আনন্দ আলাদা। মা-ঠাকুমারা মিলে পিঠা বানানোর সময় পুরো পরিবার একত্রিত হয়। বড়রা পিঠা বানানোর কাজে সাহায্য করেন, আর ছোটরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে পিঠা খাওয়ার জন্য। এই পারিবারিক সময়গুলো সম্পর্কের বন্ধন আরও মজবুত করে। গ্রামীণ মেয়েরা নিজেদের গৃহস্থালীর দক্ষতা প্রদর্শনের জন্য পিঠা বানানোর বিশেষ পদ্ধতি রপ্ত করে। তাদের হাতে তৈরি পিঠায় নান্দনিকতা এবং শৈল্পিক দক্ষতা দেখা যায়। এক একটি পিঠার নকশা যেন বাংলার গ্রামীণ জীবনের প্রতীক।শহুরে জীবনে মাটির চুলা বা খেজুর গুড় সহজলভ্য না হলেও মায়েরা পিঠার ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টা করেন। আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে যেমন রাইস কুকার বা মাইক্রোওয়েভ ব্যবহার করে পিঠা তৈরি করা যায়, তেমনি এই পিঠার প্রতি আবেগও অব্যাহত থাকে।

শীতকালে অনেক পরিবার একত্রিত হয়ে পিঠা তৈরি করে। শহুরে পরিবেশে এটি একটি মজার পারিবারিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয়। অনেক মানুষ এখনো মায়ের হাতের সেই ঐতিহ্যবাহী পিঠার স্বাদে ফিরে যেতে চায় এবং নিজেদের শৈশবের মুহূর্তগুলোকে স্মরণ করে।বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের পিঠা প্রচলিত। অঞ্চলভেদে পিঠার ধরন, স্বাদ এবং তৈরির পদ্ধতিতে ভিন্নতা দেখা যায়।

পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের রাজশাহী অঞ্চলে : ক্ষীরপুলি এবং দুধপিঠা খুবই জনপ্রিয়।
চট্টগ্রামে : মিষ্টি পিঠার পাশাপাশি তেলে ভাজা “মিষ্টি চিতই” বা “মালপোয়া” পিঠা বেশি প্রচলিত।
সিলেট অঞ্চলে : মাংসপিঠা বা “খোলাপিঠা” অন্যতম বৈচিত্র্যপূর্ণ।
ঢাকা ও ময়মনসিংহে : পাটিসাপটা ও নারিকেলের পুলি বিশেষভাবে জনপ্রিয়।

প্রতিটি অঞ্চলের পিঠার বৈচিত্র্য আমাদের ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করে এবং স্থানীয় সংস্কৃতির পরিচয় বহন করে। প্রবাসে থাকা বাঙালিদের জন্য শীতকালের পিঠা শুধু একটি খাবার নয়; এটি শৈশবের স্মৃতি এবং মায়ের ভালোবাসার প্রতীক। প্রবাসীরা যখন নিজ হাতে পিঠা তৈরি করেন, তখন তারা নিজেদের সংস্কৃতির সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করেন। অনেকে প্রবাসে পিঠা উৎসবের আয়োজন করেন, যা তাদের সাংস্কৃতিক পরিচয়কে জাগ্রত রাখতে সাহায্য করে।

মায়ের হাতে বানানো পিঠার স্বাদ প্রবাসে পাওয়া না গেলেও, তার স্মৃতি প্রবাসীদের মন জুড়ে থাকে। এ কারণেই পিঠা বাঙালির জীবনে এক শক্তিশালী আবেগের। শীতকালে মায়ের পিঠা-পুলি বাঙালির জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি শুধু খাবার নয়, বরং মায়ের স্নেহ, পরিবারের বন্ধন এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মিশ্রণ। পিঠার প্রতিটি কামড় যেন এক টুকরো আনন্দের স্মৃতি। আজকের আধুনিক জীবনে, এই ঐতিহ্য ধরে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পিঠা শুধু শীতের খাদ্য নয়; এটি আমাদের সংস্কৃতির মর্মবাণী এবং আমাদের শিকড়ের সঙ্গে সংযোগ। মায়ের পিঠার স্বাদে আমরা পাই শৈশবের সুমধুর দিনগুলোর স্মৃতি এবং পরিবারের নিঃস্বার্থ ভালোবাসা। সুতরাং, শীত এলেই মায়ের পিঠা-পুলির ঐতিহ্য আমাদের জীবনে নতুন করে প্রাণের সঞ্চার করে। শীতকালে মায়ের পিঠা-পুলি শুধু একটি খাদ্য নয়; এটি বাঙালি সংস্কৃতির গর্ব এবং মায়ের ভালোবাসার প্রতীক। এই ঐতিহ্য প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে চলে আসছে এবং ভবিষ্যতেও চলতে থাকবে। পিঠার মিষ্টি গন্ধ, মায়ের যত্ন আর শীতের আনন্দ—সবকিছু মিলিয়ে এটি বাঙালির জীবনে এক অনন্য অভিজ্ঞতা। মায়ের হাতে তৈরি পিঠা আমাদের মনে ভালোবাসা, ঐতিহ্য এবং পারিবারিক বন্ধনের মূল্য মনে করিয়ে দেয়।

লেখক পরিচিতি : উজ্জ্বল হোসাইন, লেখক ও সংগঠক, চাঁদপুর, 01710802899, rtrujjal@gmail.com

জাকসুর ভিপি স্বতন্ত্র প্যানেলের জিতু, জিএস ছাত্রশিবিরের মাজহারুল

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১০:১৪ অপরাহ্ণ
জাকসুর ভিপি স্বতন্ত্র প্যানেলের জিতু, জিএস ছাত্রশিবিরের মাজহারুল

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে স্বতন্ত্র প্যানেলের আব্দুর রশিদ জিতু ও সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের মাজহারুল ইসলাম নির্বাচিত হয়েছেন। এজিএস (পুরুষ) পদে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের ফেরদৌস আল হাসান ও এজিএস (নারী) পদে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের আয়েশা সিদ্দিকা মেঘলা নির্বাচিত হয়েছেন।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে ফলাফল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

ভিপি পদে আব্দুর রশিদ জিতু ৩৩৩৪ ভোট, জিএস পদে মাজহারুল ইসলাম ৩৯৩০ ভোট, এজিএস (পুরুষ) পদে ফেরদৌস আল হাসান ২৩৫৮ ভোট এবং এজিএস (নারী) পদে আয়েশা সিদ্দিকা মেঘলা ৩৪০২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
অন্যান্য পদে জয়ীরা হলেন- পরিবহন ও যোগাযোগ সম্পাদক তানভীর রহমান, খাদ্যনিরাপত্তা সম্পাদক হুসনি মোবারক, সহ-সমাজসেবা সম্পাদক তৌহিদ হাসান, সমাজসেবা সম্পাদক আহসান লাবিব, তথ্য-প্রযুক্তি ও গ্রন্থাগার সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম, সহ-ক্রীড়া সম্পাদক (পুরুষ) মাহাদী হাসান, সহ-ক্রীড়া সম্পাদক (নারী) ফারহানা আকতার, সহ-সমাজসেবা সম্পাদক (নারী) নিগার সুলতানা, সহ-সাংস্কৃতিক সম্পাদক রায়হান উদ্দীন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক মহিবুল্লাহ শেখ, সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম। কার্যকরী সদস্য (নারী) পদে জয়ী তিনজন হলেন- নুসরাত জাহান, নাবিলা বিনতে হারুন ও ফাবলিহা জাহান।
কার্যকরী সদস্য (পুরুষ) পদে জয়ীরা হলেন- মোহাম্মদ আলী চিশতী, আবু তালহা ও তরিকুল ইসলাম।
ঘোষিত ফলাফলে দেখা গেছে, স্বতন্ত্র প্যানেলের আব্দুর রশিদ জিতু ৩৩৩৪ ভোট পেয়ে ভিপি পদে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শিবির সমর্থিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোটের আরিফ উল্লাহ পেয়েছেন ২৩৯২ ভোট। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ সমর্থিত শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরামের আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল পেয়েছেন ১২১১ ভোট। আর ছাত্রদলের মো. শেখ সাদি হাসান পেয়েছেন ৬৪৮ ভোট।
সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ছাত্রশিবির সমর্থিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থী মো. মাজহারুল ইসলাম ৩৯৩০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ সমর্থিত শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরামের আবু তৌহিদ মো. সিয়াম পেয়েছেন ১২৩৮ ভোট। ছাত্রদলের তানজিলা হোসাইন বৈশাখী পেয়েছেন ৯৪১ ভোট।
ফলাফল ঘোষণা অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মো. মনিরুজ্জামান, সদস্য সচিব অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম, সদস্য লুৎফুল এলাহীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, আব্দুর রশিদ জিতু জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন’ প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক। কোটা সংস্কার আন্দোলনের আগে তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত থাকলেও আন্দোলনের সময় সর্বপ্রথম ছাত্রলীগের হাতে মার খেয়ে আহত হন। পরবর্তীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ৫ আগস্ট পর্যন্ত জাহাঙ্গীরনগরের আন্দোলন পরিচালনা করেন তিনি। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পদ থেকে পদত্যাগ করে ‘গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন’ নামে প্ল্যাটফর্মের সূচনা করেন এবং এই প্ল্যাটফর্ম থেকে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন।
ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের মাজহারুল ইসলাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের অফিস ও প্রচার সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ৪৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী।
গত বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি আবাসিক হলে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ভোটগ্রহণ শেষে হল কেন্দ্রগুলো থেকে ব্যালট বাক্স সিনেট ভবনে আনা হয় এবং ওইদিন রাত ১০টার কিছু পর থেকে ভোট গণনা শুরু হয়। প্রায় ৪৮ ঘণ্টা পর ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
এবারের জাকসু নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ১১ হাজার ৭৪৩ জন। এর মধ্যে ছাত্রী ভোটার ৫ হাজার ৭২৮ জন এবং ছাত্র ভোটার ছিলেন ৬ হাজার ১৫ জন। ভোট পড়েছে প্রায় ৬৮ শতাংশ।

সংসদ নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে : উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১০:১১ অপরাহ্ণ
সংসদ নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে : উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত

নৌ-পরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘোষিত সময় অনুযায়ী আগামী ফেব্রুয়ারিতেই অনুষ্ঠিত হবে। এত প্রাণের বিনিময়ে যে নির্বাচন হতে যাচ্ছে, তার মধ্য দিয়ে গঠিত গণতান্ত্রিক সরকার হবে জবাবদিহিমূলক। এটি আর অতীতের সরকারের মতো হবে না।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বরিশালে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ পরিদর্শনে এসে দুপুরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
ডাকসু নির্বাচনের প্রসঙ্গে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ডাকসু নির্বাচন অন্তর্বর্তী সরকারের বিষয় নয়। অনেকেই বলেছিল, এই নির্বাচন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাবে। কিন্তু আমরা দেখেছি, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অক্ষুণ্ন  রেখেই নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। যেসব অভিযোগ রয়েছে সেগুলো দেখার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, আমরা যতদিন থাকছি, ততদিন সম্ভবপর নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছি। তবে নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থাকবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে। তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে বলে আমরা আশাবাদী।
এ সময় উপদেষ্টা বরিশালের নদীবন্দর, জেলখাল, পোর্ট রোড ও স্টিমার ঘাট পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, নদী ভাঙন প্রতিরোধে ইতোমধ্যেই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া বরিশালে বিপিএল (বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ) খেলা অনুষ্ঠিত হবে এবং আগামী অক্টোবর মাসের মধ্যে নৌরুটে প্যাডেলচালিত জাহাজ চলাচল শুরু হবে।
পরিদর্শনকালে বরিশাল বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার রায়হান কাওছার, জেলা প্রশাসক দেলোয়ার হোসেনসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জয় দিয়ে এশিয়া কাপ শুরু বাংলাদেশের

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১২:২৭ অপরাহ্ণ
জয় দিয়ে এশিয়া কাপ শুরু বাংলাদেশের

জয়ে এশিয়া কাপ শুরু করল বাংলাদেশ। নিজেদের প্রথম ম্যাচে হংকংকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে টাইগাররা। হংকংয়ের ১৪৩ রানের জবাবে ১৭ ওভার ৪ বলে ৩ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।
রানতাড়ায় নেমে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটিতে আসে ২৪ রান। তৃতীয় ওভারের শেষ বলে পারভেজ হোসেন ইমন ১৪ বল ১৯ রান করে ফিরে গেলে জুটি ভাঙে। ৫.৪ ওভারে ৪৭ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তানজিদ তামিম ফেরেন ১৮ বলে ১৪ রান করে।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে লিটন ও হৃদয় মিলে ৭০ বলে ৯৫ রান যোগ করেন। জয় থেকে ২ রান দূরে থাকতে লিটন বোল্ড হয়ে ফিরে যান। ৬ চার ও এক ছক্কায় ৩৯ বলে ৫৯ রান করেন। পরে জাকের আলি অনিককে নিয়ে জয় নিশ্চিত করেন হৃদয়। ১ চারে ৩৬ বলে ৩৫ রান করেন হৃদয়। রানের খাতা খোলার সুযোগ পাননি জাকের।
এর আগে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪৩ রান সংগ্রহ করেছে হংকং। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪২ রানের ইনিংস খেলেছেন নিজাকাত খান। টাইগারদের পক্ষে সবচেয়ে সফল তানজিম হাসান সাকিব ২১ রান খরচায় ২ উইকেট শিকার করেছেন। এ ম্যাচে জয় তুলে নিতে ওভারপ্রতি ৭.২০ রান করতে হবে টাইগারদের।
এদিন টস জিতে ফিল্ডিং করতে নেমে শুরু থেকে হংকংকে চাপে রেখেছিল টাইগার বোলাররা। দলের খাতায় ৩০ রান যোগ করতে ২ উইকেট হারায় তারা। বাংলাদেশকে প্রথম উইকেটটি এনে দেন তাসকিন আহমেদ। ৫ বলে ৪ রান করে টাইগার পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের লেংথ বলে কট বিহাইন্ড হন আনশুমান রাথ। আম্পায়ার যদিও শুরুতে সাড়া দেননি, রিভিউ নিয়ে উইকেটটি আদায় করে নেয় বাংলাদেশ। এরপর দারুণ এক ডেলিভারিতে ১২ বলে ১৪ রান করা বাবর হায়াতকে বোল্ড করেন পেসার তানজিম হাসান সাকিব।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করে হংকং। জিশান আলী ও নিজাকাত খানের ৪১ রানের জুটি শেষমেশ ভাঙেন তানজিম সাকিব। তার বাউন্সার জায়গা নিয়ে তুলে মারতে গিয়ে মিডউইকেটে মোস্তাফিজুর রহমানের হাতে তুলে দেন ওপেনার জিশান। ৩৪ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৩০ রানে থামে তার ইনিংস। চতুর্থ উইকেটে নিজাকাত ও ইয়াসিম মুর্তজা হতাশায় ভোগান টাইগার বোলারদের।
অনেক চেষ্টা করেও উইকেটের দেখা মিলছিল না। শেষমেশ ১৮তম ওভারে গিয়ে ভুল বোঝাবুঝিতে ভাঙে হংকংয়ের চতুর্থ জুটি। ১৯ বলে ২ ছক্কা ও ২ চারের মারে ২৮ রান করে রান আউট হন মুর্তজা। ততক্ষণে তারা দলের সংগ্রহ শতরান পার করে দেন। অন্যদিকে ৪০ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ৪২ রান করে ১৯তম ওভারের পঞ্চম বলে রিশাদ হোসেনের শিকার হন নিজাকাত। পরের বলেই ক্রিজে নেমে টাইগার রিস্ট স্পিনারের বলে এলবিডব্লিউ হন কিঞ্চিৎ শাহ।
শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪৩ রানে থামে হংকংয়ের ইনিংস। বাংলাদেশের হয়ে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন তাসকিন, তানজিম সাকিব ও রিশাদ।