খুঁজুন
                               
বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই, ২০২৫, ৯ শ্রাবণ, ১৪৩২

শীতকালে মায়ের হাতে পিঠা-পুলি ঐতিহ্যের মিষ্টি স্মৃতি

উজ্জ্বল হোসাইন
প্রকাশিত: রবিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২৫, ১২:০৭ পূর্বাহ্ণ
শীতকালে মায়ের হাতে পিঠা-পুলি ঐতিহ্যের মিষ্টি স্মৃতি

শীতকাল বাঙালির জীবনে এক অনন্য ঋতু। এই ঋতু শুধু ঠাণ্ডা আবহাওয়া নয়, বরং গ্রামবাংলার ঐতিহ্য, কৃষ্টিকলা এবং সুখময় পারিবারিক মুহূর্তের এক অপূর্ব মেলবন্ধন। শীতকাল এলেই বাঙালির ঘরে ঘরে এক অনন্য উষ্ণতার সৃষ্টি হয়, যার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে পিঠা-পুলির ঐতিহ্য। মায়ের হাতে তৈরি পিঠার গন্ধ যেন শৈশবের মিষ্টি স্মৃতি জাগিয়ে তোলে।  পিঠা-পুলি বাঙালির সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। শীতের সকালের শিশিরভেজা প্রকৃতির সাথে একবাটি ধোঁয়া ওঠা পিঠার স্বাদ যেন সবার হৃদয় জয় করে। মায়ের হাতে তৈরি পিঠার প্রতি ভালোবাসা আর আন্তরিকতা বাঙালি পরিবারে এক নতুন আনন্দের সঞ্চার করে। বাঙালি সংস্কৃতিতে পিঠার ইতিহাস বহু প্রাচীন। প্রাচীনকাল থেকেই ধান ও চালের উপর ভিত্তি করে গ্রামীণ জীবনযাত্রার সূচনা হয়। ধান কেটে ফসল ঘরে তোলার পর এই শস্যকে কেন্দ্র করেই পিঠা তৈরির প্রথা চালু হয়। পিঠা শুধু খাদ্য নয়; এটি বাঙালির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক।

গ্রামবাংলার মায়েরা শীতকালে নতুন ধানের চালে নানা ধরনের পিঠা তৈরি করেন। এই পিঠাগুলি তৈরি হয় খুব যত্ন এবং ভালোবাসার সঙ্গে। বিভিন্ন অঞ্চলের পিঠার ধরণ ও বৈচিত্র্য বিভিন্ন। চিতই, ভাপা, পাটিসাপটা, দুধপুলি, নারিকেলের পুলি, মালপোয়া, কিংবা ক্ষীরপিঠার মতো পিঠাগুলি আমাদের ঐতিহ্যেরই অংশ।
মায়ের হাতে তৈরি পিঠার স্বাদ অন্য কোনো কিছুর সঙ্গে তুলনীয় নয়। শীতের সকালে মা যখন উঠে পিঠা বানান, সেই সময়টুকু যেন সবার জন্য একটি উৎসবের মতো। মায়ের পিঠা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ যেমন নতুন চালের গুঁড়ো, খেজুরের গুড়, নারিকেল—সবকিছুই গ্রামের প্রকৃতির সঙ্গে জড়িত। মায়ের পিঠা তৈরির সময় পুরো বাড়ি ভরে ওঠে গুড় আর নারিকেলের মনোরম গন্ধে। ছোটরা উঁকিঝুঁকি দিয়ে দেখার চেষ্টা করে কখন পিঠা তৈরি হবে। আবার কেউ কেউ চুলার পাশে বসে গরম পিঠার স্বাদ নেয়ার জন্য অপেক্ষা করে। পিঠা তৈরির প্রতিটি ধাপে মায়ের মমতা আর যত্ন মিশে থাকে, যা পরিবারের সবার জন্য এক অনন্য অনুভূতি সৃষ্টি করে।
বাঙালির পিঠার তালিকা অত্যন্ত বিস্তৃত। অঞ্চলভেদে পিঠার ধরণ বদলে যায়। কিছু পিঠা ভাপা করে তৈরি হয়, কিছু আবার ভাজা হয়। শীতের সকালে ভাপা পিঠা খুবই জনপ্রিয়। চালের গুঁড়ো আর খেজুরের গুড় দিয়ে তৈরি ভাপা পিঠা একদিকে নরম আর অন্যদিকে স্বাদের দিক থেকে অপূর্ব। পাটিসাপটা পিঠা হল আরেকটি জনপ্রিয় পিঠা, যা তৈরি হয় নারিকেলের পুর দিয়ে। দুধপুলি পিঠা নারিকেল, দুধ আর খেজুর গুড়ের মিশ্রণে তৈরি হয়। এটি সবার কাছে খুবই প্রিয়। চিতই পিঠা সাধারণত গরম দুধ কিংবা গুড় দিয়ে খাওয়া হয়। মালপোয়া পিঠা বানানো হয় ময়দা আর গুড় দিয়ে, যা মিষ্টির মতো সবার মন ভরিয়ে দেয়। শীতকালের পিঠা-পুলি বাঙালির সামাজিক জীবনের একটি বড় অংশ। পিঠা তৈরির সময় একসঙ্গে পরিবার-পরিজন জড়ো হয়, যা পারিবারিক বন্ধন আরও দৃঢ় করে। গ্রামে পিঠা উৎসব বা নবান্ন উৎসবের সময় পিঠা-পুলির প্রাধান্য দেখা যায়। এই উৎসবে সবাই একত্রে পিঠা খায় এবং আনন্দ ভাগ করে নেয়।

শহুরে জীবনে অনেকেই এই ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টা করেন। যদিও আধুনিক জীবনের ব্যস্ততার কারণে মায়ের হাতে তৈরি পিঠার স্বাদ অনেকেই উপভোগ করতে পারেন না, তবুও শীতকাল এলেই এই স্মৃতিগুলি সবার মনে জাগ্রত হয়। প্রবাসী বাঙালিদের জন্য মায়ের পিঠার স্মৃতি বিশেষভাবে আবেগময়। শীতকালের ঠাণ্ডায় তারা দেশে ফিরে মায়ের হাতে তৈরি পিঠার স্বাদ নিতে চায়। মায়ের পিঠা যেন তাদের শৈশবের দিনগুলির স্মৃতি ফিরিয়ে আনে। প্রবাসে থেকেও অনেকে নিজ হাতে পিঠা তৈরির চেষ্টা করেন, তবে মায়ের পিঠার সেই স্বাদ আর ভালোবাসার অনুরূপ কিছুই হয় না। পিঠা-পুলির সঙ্গে বাঙালির সাংস্কৃতিক জীবনের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। এটি কেবল খাদ্য নয়, বরং একটি ঐতিহ্যের ধারক। পিঠার উৎপত্তি মূলত কৃষিজীবী সমাজ থেকে। ফসল কাটার পর নতুন ধানের চাল দিয়ে পিঠা তৈরি করা একটি প্রাচীন প্রথা। এ কারণে নবান্ন উৎসবের সঙ্গে পিঠার অঙ্গাঙ্গী সম্পর্ক।

শীতের আগমনে বাঙালির গ্রামীণ জীবনে এক ধরনের উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। পিঠার বৈচিত্র্য এবং তার উপাদানের সহজলভ্যতা এই সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। খেজুরের গুড়, নারিকেল, দুধ—সব উপাদান প্রাকৃতিক এবং মৌসুমী। বর্তমান সময়ে পিঠা উৎসব একটি জনপ্রিয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়ে দাঁড়িয়েছে। গ্রাম থেকে শহরে, এমনকি বিভিন্ন দেশে বাঙালিরা পিঠা উৎসবের আয়োজন করে নিজেদের ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টা করছে। পিঠা উৎসবে বিভিন্ন ধরনের পিঠার প্রদর্শনী হয়, যা নতুন প্রজন্মের কাছে এই ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে সাহায্য করে।

পিঠা উৎসব কেবলমাত্র খাদ্যের প্রদর্শনী নয়, এটি একটি মেলবন্ধনের অনুষ্ঠান। এই উৎসবে অংশগ্রহণকারী সবাই বাঙালির ঐতিহ্যের অংশীদার হয়ে ওঠে। পিঠা উৎসব আমাদের ঐতিহ্যের গভীর শিকড়কে নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা। গ্রামের বাড়িতে শীতকালে পিঠার আনন্দ আলাদা। মা-ঠাকুমারা মিলে পিঠা বানানোর সময় পুরো পরিবার একত্রিত হয়। বড়রা পিঠা বানানোর কাজে সাহায্য করেন, আর ছোটরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে পিঠা খাওয়ার জন্য। এই পারিবারিক সময়গুলো সম্পর্কের বন্ধন আরও মজবুত করে। গ্রামীণ মেয়েরা নিজেদের গৃহস্থালীর দক্ষতা প্রদর্শনের জন্য পিঠা বানানোর বিশেষ পদ্ধতি রপ্ত করে। তাদের হাতে তৈরি পিঠায় নান্দনিকতা এবং শৈল্পিক দক্ষতা দেখা যায়। এক একটি পিঠার নকশা যেন বাংলার গ্রামীণ জীবনের প্রতীক।শহুরে জীবনে মাটির চুলা বা খেজুর গুড় সহজলভ্য না হলেও মায়েরা পিঠার ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টা করেন। আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে যেমন রাইস কুকার বা মাইক্রোওয়েভ ব্যবহার করে পিঠা তৈরি করা যায়, তেমনি এই পিঠার প্রতি আবেগও অব্যাহত থাকে।

শীতকালে অনেক পরিবার একত্রিত হয়ে পিঠা তৈরি করে। শহুরে পরিবেশে এটি একটি মজার পারিবারিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয়। অনেক মানুষ এখনো মায়ের হাতের সেই ঐতিহ্যবাহী পিঠার স্বাদে ফিরে যেতে চায় এবং নিজেদের শৈশবের মুহূর্তগুলোকে স্মরণ করে।বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের পিঠা প্রচলিত। অঞ্চলভেদে পিঠার ধরন, স্বাদ এবং তৈরির পদ্ধতিতে ভিন্নতা দেখা যায়।

পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের রাজশাহী অঞ্চলে : ক্ষীরপুলি এবং দুধপিঠা খুবই জনপ্রিয়।
চট্টগ্রামে : মিষ্টি পিঠার পাশাপাশি তেলে ভাজা “মিষ্টি চিতই” বা “মালপোয়া” পিঠা বেশি প্রচলিত।
সিলেট অঞ্চলে : মাংসপিঠা বা “খোলাপিঠা” অন্যতম বৈচিত্র্যপূর্ণ।
ঢাকা ও ময়মনসিংহে : পাটিসাপটা ও নারিকেলের পুলি বিশেষভাবে জনপ্রিয়।

প্রতিটি অঞ্চলের পিঠার বৈচিত্র্য আমাদের ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করে এবং স্থানীয় সংস্কৃতির পরিচয় বহন করে। প্রবাসে থাকা বাঙালিদের জন্য শীতকালের পিঠা শুধু একটি খাবার নয়; এটি শৈশবের স্মৃতি এবং মায়ের ভালোবাসার প্রতীক। প্রবাসীরা যখন নিজ হাতে পিঠা তৈরি করেন, তখন তারা নিজেদের সংস্কৃতির সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করেন। অনেকে প্রবাসে পিঠা উৎসবের আয়োজন করেন, যা তাদের সাংস্কৃতিক পরিচয়কে জাগ্রত রাখতে সাহায্য করে।

মায়ের হাতে বানানো পিঠার স্বাদ প্রবাসে পাওয়া না গেলেও, তার স্মৃতি প্রবাসীদের মন জুড়ে থাকে। এ কারণেই পিঠা বাঙালির জীবনে এক শক্তিশালী আবেগের। শীতকালে মায়ের পিঠা-পুলি বাঙালির জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি শুধু খাবার নয়, বরং মায়ের স্নেহ, পরিবারের বন্ধন এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মিশ্রণ। পিঠার প্রতিটি কামড় যেন এক টুকরো আনন্দের স্মৃতি। আজকের আধুনিক জীবনে, এই ঐতিহ্য ধরে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পিঠা শুধু শীতের খাদ্য নয়; এটি আমাদের সংস্কৃতির মর্মবাণী এবং আমাদের শিকড়ের সঙ্গে সংযোগ। মায়ের পিঠার স্বাদে আমরা পাই শৈশবের সুমধুর দিনগুলোর স্মৃতি এবং পরিবারের নিঃস্বার্থ ভালোবাসা। সুতরাং, শীত এলেই মায়ের পিঠা-পুলির ঐতিহ্য আমাদের জীবনে নতুন করে প্রাণের সঞ্চার করে। শীতকালে মায়ের পিঠা-পুলি শুধু একটি খাদ্য নয়; এটি বাঙালি সংস্কৃতির গর্ব এবং মায়ের ভালোবাসার প্রতীক। এই ঐতিহ্য প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে চলে আসছে এবং ভবিষ্যতেও চলতে থাকবে। পিঠার মিষ্টি গন্ধ, মায়ের যত্ন আর শীতের আনন্দ—সবকিছু মিলিয়ে এটি বাঙালির জীবনে এক অনন্য অভিজ্ঞতা। মায়ের হাতে তৈরি পিঠা আমাদের মনে ভালোবাসা, ঐতিহ্য এবং পারিবারিক বন্ধনের মূল্য মনে করিয়ে দেয়।

লেখক পরিচিতি : উজ্জ্বল হোসাইন, লেখক ও সংগঠক, চাঁদপুর, 01710802899, rtrujjal@gmail.com

এআই নীতিমালা নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে: আইসিটি সচিব

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ২৩ জুলাই, ২০২৫, ৯:৪১ অপরাহ্ণ
এআই নীতিমালা নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে: আইসিটি সচিব

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নীতিমালা প্রণয়নে অন্তর্বর্তী সরকার কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী।

বুধবার (২৩ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে আয়োজিত ‘টেলিকম অ্যান্ড ইনোভেশন ফেয়ার ২০২৫’-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমনটা জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিটিআরসি স্পেকট্রাম বিভাগের কমিশনার মাহবুব আলম। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদুল বারী, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব (রুটিন দায়িত্ব) জহিরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে বিটিআরসির কর্মকর্তা ও টেলিকমিউনিকেশন এবং ডিজিটাল খাতের উদ্যোক্তারা উপস্থিত ছিলেন

আইসিটি সচিব বলেন, আমরা এআই পলিসি নিয়ে কাজ শুরু করেছি, ইনফেক্ট আজকে শুরু হয়েছে এটা। আমরা সাইবার সিকিউরিটি অর্ডিন্যান্স করেছি। অন্তর্বর্তী সরকার উদ্যোক্তাদের সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। আমরা একটি ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনের মধ্যে আছি। আমরা এখন ব্যক্তিগত তথ্য-উপাত্ত সুরক্ষা আইন নিয়ে কাজ করছি। ডিজিটাল খাতে সরকার বিভিন্ন প্রজেক্ট করবে, ফাইন্যান্স করবে- এটাকে কমার্শিয়ালাইজ করবে ইন্ডাস্ট্রি।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব (রুটিন দায়িত্ব) জহিরুল ইসলাম বলেন, আমরা একটি ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আগামী দিনের যে সমাজ সেখানে আমাদের কাজ করতে হবে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে। তরুণরা পরিবেশের উপর টেলিকম ইন্সটলেশনগুলোর ক্ষতিকর প্রভাব কমিয়ে আনতে দারুণ আইডিয়া নিয়ে এসেছে। এগুলোকে আরও কীভাবে গ্রিন করা যায় তা নিয়ে ভাবছে। প্রতি বছর গ্র্যাজুয়েটদের একটি বড় অংশ আনএমপ্লয়েড থেকে যায়, এদের মধ্যে যদি উদ্যোক্তা মনোভাব তৈরি করতে পারি তাহলে একটি স্থিতিশীল সমাজ তৈরি করতে পারব।

বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদুল বারী বলেন, আমাদের টেলিকম সেক্টরে গত দুই দশকে যে ডেভলপমেন্ট হয়েছে সেটা হয়েছে কানেক্টিভিটির জন্য। ইন্টারনেট পেনিট্রেশন ১৩ কোটির মতো হলেও হেড কাউন্টে সেটা ৭ থেকে ৮ কোটির মতো, যা ৪৫ শতাংশ হবে। তথ্য বিপ্লবের দুটি বড় উপাদান হলো কানেক্টিভিটি এবং অপরটি ডেটা। প্রথম যখন ইন্টারনেট এলো তখন ব্যবসা বলতে কানেক্টিভিটি বুঝাত, বর্তমানে ডিজিটাল ব্যবসা হচ্ছে ডেটা, আগের মতো ভয়েস বলতে আমরা টিপিক্যাল ভয়েস বুঝি না, হোয়াটসঅ্যাপের ভয়েসও একটা ডেটা।

তিনি বলেন, বিজ্ঞান যখন কোনো কিছু আবিষ্কার করে সেটাকে ছড়িয়ে দেয় বিজনেস ও কমার্স। এগুলো হয় ইনোভেশনের মাধ্যমে। আমাদের উদ্যোক্তাদের ইনোভেটিভ হতে হবে। আমাদের অনেক রকম ইনোভেশন দরকার। আমাদের কানেক্টিভিটি এবং ইউজেস গ্যাপের সঙ্গে সঙ্গে ইউজফুলনেস গ্যাপ রয়েছে। অনেক জায়গায় কানেক্টিভিটি থাকলেও ইউজফুল কানেক্টিভিটি হচ্ছে না। কনজ্যুমার সার্ভিস বাড়ানোর টার্গেট থাকলে টেলকো সেক্টর ফ্লারিশ করবে। টেলকো খাতে ইমিডিয়েট, মিড টার্ম ও লং টার্ম টার্গেট থাকা উচিত।

বিটিআরসি কমিশনার মাহবুব আলম তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, আমরা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ৭৬টি আইডিয়া পেয়েছি, যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে ৩২টি আইডিয়া আগামী দিনের টেলিকমিউনিকেশনে যুগান্তকারী অবদান রাখবে। এর মধ্যে ৫টি আইডিয়াকে সম্মাননা দেওয়া হবে। তারা পাবে বিটিআরসি থেকে মেন্টরশিপ ও অন্যান্য সহযোগিতা।

একজন উদ্ভাবক যেমন নিজেই কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে তেমনি ভূমিকা রাখেন দেশের অর্থনীতিতে। বিশ্ববিদ্যালয় ও আইসিটি বিভাগকে সমন্বয় করে আমরা সামনে একটি একাডেমিয়া গঠন করতে চাই, যাতে ভবিষ্যতের গবেষণা শুধু কাগজে আটকে না থাকে।

অনুষ্ঠানে প্রত্যন্ত অঞ্চলে তাৎক্ষণিক পাওয়ার রিস্টোর করার উদ্ভাবনী আইডিয়ার জন্য ৫ম স্থান অর্জন করেছে ইডটকো বাংলাদেশ। প্রতিষ্ঠানটিকে প্রাইজমানি দেওয়া হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। স্বল্প সময়ে ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরির উদ্ভাবনী আইডিয়ার জন্য ৪র্থ স্থান অর্জন করেছে ইবিতানস লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটিকে প্রাইজমানি দেওয়া হয়েছে ৭০ হাজার টাকা। দেশের বিভিন্ন স্থানে উদ্যোক্তাতাদের ডিজিটালি কানেক্ট করার উদ্ভাবনী আইডিয়ার জন্য ৩য় স্থান অর্জন করেছে গ্রামীণফোন। তাদের প্রাইজমানি দেওয়া হয়েছে এক লাখ টাকা।

এবারে ফেয়ারে ইকো ফ্রেন্ডলি টাওয়ার স্থাপনের উদ্ভাবনী আইডিয়ার জন্য ২য় স্থান অর্জন করেছে ইডটকো বাংলাদেশ। প্রতিষ্ঠানটিকে প্রাইজমানি দেওয়া হয়েছে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। কৃত্রিম অঙ্গ প্রতিস্থাপনের উদ্ভাবনী আইডিয়ার জন্য ১ম স্থান অর্জন করেছে রোবোলাইফ টেকনোলজিস। তাদের প্রাইজমানি দেওয়া হয়েছে তিনি লাখ টাকা।

ইসরায়েলকে কঠোর বার্তা দিলো ইউরোপীয় ইউনিয়ন

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ২৩ জুলাই, ২০২৫, ৯:২৪ অপরাহ্ণ
ইসরায়েলকে কঠোর বার্তা দিলো ইউরোপীয় ইউনিয়ন

গাজা ইস্যুতে ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় ইসরায়েলকে কঠোর বার্তা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইউ)। ইইউর শীর্ষ কূটনীতিক জানিয়েছেন, ইসরায়েল যদি গাজায় মানবিক পরিস্থিতি উন্নতিতে প্রতিশ্রুতি পূরণ না করে তবে সকল বিকল্প টেবিলে রয়েছে। অর্থাৎ ইসরায়েলকে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার মতো হুমকি দেয়া হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) ইইউর পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কাজা ক্যালাস এই সতর্কীকরণ বার্তা দিয়েছেন। তার এই বার্তা এমন সময় আসলো যখন যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত এই সপ্তাহে গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্য ইউরোপ ভ্রমণ করবেন। খবর আল জাজিরার
এক্স পোস্টে ক্যালাস বলেন, ‘অবরুদ্ধ গাজায় মানবিক সহায়তা বৃদ্ধির জন্য ইসরায়েল যদি প্রতিশ্রুতি পূরণ না করে তবে সকল বিকল্প টেবিলে রয়েছে। গাজায় ত্রাণপ্রার্থী বেসামরিক নাগরিকদের উপর ইসরায়েলের হত্যাকাণ্ড অমার্জনীয়।’

ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিয়ন সারের সঙ্গে কথা বলেছেন বলেও জানান তিনি। গিডিয়নকে তিনি বলেছেন, সহায়তার বিষয় তাকে স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্পষ্ট করে বলেছেন, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীকে অবশ্যই বিতরণ পয়েন্টে মানুষ হত্যা বন্ধ করতে হবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন গাজায় ক্রমবর্ধমান দুর্ভিক্ষ সংকটের বিষয়ে ইসরায়েলকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এমন সময়ে সতর্ক করেছে, যখন অনাহারে মারা যাওয়া ফিলিস্তিনির সংখ্যা কমপক্ষে ১০১ জনে দাঁড়িয়েছে।
এই মাসের শুরুতে গাজায় যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান সমালোচনার কারণে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক পর্যালোচনা করার জন্য ইইউর একটি বৈঠকের পর ক্যালাস বলেছিলেন, ইসরায়েল ছিটমহলে মানবিক পরিস্থিতির উন্নতি করতে সম্মত হয়েছে।
এর মধ্যে ত্রাণ ট্রাকের সংখ্যা, ক্রসিং পয়েন্ট এবং বিতরণ পয়েন্টে যাওয়ার রুট বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিন্তু সাহায্য কর্মকর্তারা বলছেন, চুক্তি সত্ত্বেও গাজায় মানবিক সহায়তার প্রবাহ বৃদ্ধি পায়নি।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, ট্রাম্পের দূত স্টিভ উইটকফ যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্য একটি ইউরোপীয় দেশে ভ্রমণ করবেন। একইসঙ্গে গাজার জন্য একটি সাহায্য করিডোর চূড়ান্ত করার বিষয়ে আলোচনা করবেন। মিডিয়া রিপোর্ট বলছে, তিনি আরও আলোচনার জন্য মধ্যপ্রাচ্যেও যেতে পারেন।

বাংলাদেশে হতাহতের সংখ্যা গোপন করা অসম্ভব : প্রেস সচিব

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ২৩ জুলাই, ২০২৫, ৯:১৭ অপরাহ্ণ
বাংলাদেশে হতাহতের সংখ্যা গোপন করা অসম্ভব : প্রেস সচিব

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, বড় বড় দুর্যোগ নিয়ে রিপোর্ট করা এমন একজন হিসেবে আমি বলে দিতে পারি যে, বাংলাদেশে হতাহতের সংখ্যা গোপন করা কার্যত অসম্ভব।
আজ (বুধবার) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে একথা জানান তিনি।
পোস্টে প্রেস সচিব উল্লেখ করেন, ২০০২ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে অসংখ্য বড় বড় দুর্যোগ নিয়ে রিপোর্ট করা এমন একজন হিসেবে আমি বলে দিতে পারি যে, বাংলাদেশে হতাহতের সংখ্যা গোপন করা কার্যত অসম্ভব। প্রাথমিকভাবে, পরিবারগুলো তাদের প্রিয়জনদের নিখোঁজ হিসেবে রিপোর্ট করে, তবে হাসপাতাল এবং কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তথ্য পাওয়া গেলে তারা সাধারণত তাদের আত্মীয়দের শনাক্ত করতে পারে। এক্ষেত্রে মাইলস্টোন কলেজ প্রতিদিনের উপস্থিতির রেকর্ড ক্রস-রেফারেন্স করে হিসাব বহির্ভূতদের শনাক্ত করতে পারে।
পোস্টে তিনি জানান, গতকাল স্কুল পরিদর্শনের সময় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দুজন উপদেষ্টা স্কুল ক্যাম্পাসে একটি কন্ট্রোল রুম স্থাপনের নির্দেশ দেন। এই সুবিধাটি আহত এবং মৃতদের সংখ্যা সম্পর্কে নিয়মিত আপডেট সরবরাহ করবে, স্কুলের রেজিস্ট্রারের সঙ্গে পরিসংখ্যান মিলাবে। গুরুত্বপূর্ণভাবে, উপদেষ্টারা কন্ট্রোল রুমের কার্যক্রমে বর্তমান শিক্ষার্থী এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছিলেন। আমরা আশা করছি আজ এটি পুরোপুরি কার্যকর হবে।
তিনি আরও জানান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ও বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণকারীদের অবস্থা সম্পর্কে নিয়মিত আপডেট সরবরাহ করছে এবং সেনাবাহিনী এই প্রচেষ্টায় অবদান রাখছে। আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে পারি যে হতাহতের পরিসংখ্যানকে খাটো করে দেখার কোনও কারণ সরকারের নেই।
তিনি উল্লেখ করেন, গতকাল আমরা ৯ ঘণ্টা স্কুলে ছিলাম। যদিও আমরা আরও আগে চলে আসতে পারতাম, উপদেষ্টারা শক্তি প্রয়োগ ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে পরিস্থিতি সমাধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলেন। তারা যতদিন প্রয়োজন ততদিন থাকার জন্য প্রস্তুত ছিল এবং যখন উপযুক্ত সময় হতো তখনই আমরা রওনা হতাম। প্রাণ হারানো শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের জন্য আমাদের সমবেদনা। এটি একটি জাতীয় ট্র্যাজেডি এবং তারা সবাই শহীদ। আসুন, আমরা ভবিষ্যতের ট্র্যাজেডি রোধে আমাদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করতে একসঙ্গে কাজ করি। সরকার জাতীয় নিরাপত্তা উন্নত করতে এবং বিমান সম্পর্কিত বিপর্যয় রোধ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।