খুঁজুন
                               
রবিবার, ৮ জুন, ২০২৫, ২৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ

প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ দু’বারের বেশি নয়

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫, ৯:৫৯ অপরাহ্ণ
প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ দু’বারের বেশি নয়

বাংলাদেশের যেকোনো নাগরিক দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না— এমন প্রস্তাব করেছে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন। সেই সঙ্গে সংসদের উভয় কক্ষের সদস্য এবং স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচিত প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত বৃহত্তর নির্বাচকমণ্ডলীর ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রস্তাব করা হয়েছে। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার কাছে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন পুরো নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের নয় পৃষ্ঠার সুপারিশ জমা দেয়। এতে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে এমন সুপারিশ করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী—

বিজ্ঞাপন

(ক) সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে সীমিত করা।

(খ) সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে দুইবার নির্বাচত প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনের অযোগ্য করা।

(গ) একই ব্যক্তি একই সঙ্গে যেন দলীয় প্রধান, প্রধানমন্ত্রী এবং সংসদ নেতা হতে না পারেন তার বিধান করা এবং দ্বৈত প্রতিনিধিত্বের সুযোগ বন্ধ করা।

রাষ্ট্রপতি নির্বাচন—

(ক) দলনিরপেক্ষ, সৎ, যোগ্য ও সুনামসম্পন্ন ব্যক্তির রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার বিধান করা।

(খ) জাতীয় সংসদের উভয় কক্ষের সদস্য এবং স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচিত প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত বৃহত্তর নির্বাচকমণ্ডলীর ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ার বিধান করা। কার্যকর সংসদের জন্য নির্ধারিত পদ্ধতিতে সংসদ সদস্যদের প্রত্যাহারের বিধান করা।

সংসদ সদস্যদের সুযোগ-সুবিধা—

(ক) সংসদ সদস্যদের শুল্কমুক্ত গাড়ি, আবাসিক প্লট, সব ধরনের প্রটোকল ও ভাতা পর্যালোচনা ও সংশোধন করা।

(খ) একটি ‘সংসদ সদস্য আচরণ আইন’ প্রণয়নের মাধ্যমে সংসদ সদস্যদের বাৎসরিকভাবে সম্পদের হিসাব প্রদান এবং স্বার্থের দ্বন্দ্বের বিষয়সমূহ ঘোষণা করা।

(গ) সংবিধান লঙ্ঘন করে সংসদ সদস্যদের স্থানীয় উন্নয়নে জড়িত থাকার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের আনোয়ার হোসেন বনাম বাংলাদেশ মামলার রায় কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা এবং ভবিষ্যতে সংসদ সদস্যদেরকে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের উপদেষ্টার পদ থেকে অপসারণ করা।

(ঘ) সংসদ সদস্যদের জন্য বিশেষ প্রটোকলের অবসান করা।

নির্বাচন পর্যবেক্ষণ/গণমাধ্যম—

(ক) নিশ্চল পর্যবেক্ষণের অনুমতি দেওয়া, যাতে পর্যবেক্ষকরা সারাদিন কেন্দ্রে থাকতে পারে, কিন্তু ভোটকক্ষে সার্বক্ষণিকভাবে নয়।

(খ) নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থাকে প্রাক্-নির্বাচনকালীন পর্যবেক্ষণের অফিসিয়াল অনুমতি প্রদান করা।

(গ) পক্ষপাতদুষ্ট ভুয়া পর্যবেক্ষক নিয়োগ বন্ধ করা।

(ঘ) ব্যক্তি পর্যায়ে পর্যবেক্ষক নিয়োগের বিধান চালু করা ।

(ঙ) পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন ভবিষ্যতে নির্বাচন ভালো করার জন্য কাজে লাগানোর বিধান করা।

(চ) আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নিয়োগের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ধাপগুলো সংশ্লিষ্ট পর্যবেক্ষক সংস্থার জন্য সুস্পষ্ট করা। সরকারের পরিবর্তে কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেওয়া।

(ছ) নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রদত্ত বৈধ কার্ডধারী সাংবাদিকদের সরাসরি ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ, দিনে মোটর সাইকেল ব্যবহার করার অনুমতি প্রদান করা।

নির্বাচনী আচরণবিধি—

(ক) ব্যানার, তোরণ ও পোস্টারের পরিবর্তে লিফলেট, ভোটার-প্রার্থী মুখোমুখি অনুষ্ঠান, পত্র-পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ও সরকারি গণমাধ্যমে প্রচারের সম-সুযোগ প্রদানের বিধান করা।

(খ) সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৪ মেনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণার বিধান করা।

(গ) ১৯৯০ সালের তিনজোটের রূপরেখার মতো রাজনৈতিক দলের জন্য আচরণবিধি প্রণয়ন করা।

কমিশনের সুপারিশগুলো দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার পর সংস্কার কার্যক্রম শুরু করবে অন্তবর্তী সরকার।

বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে

চাঁদপুরে “হুইলস অব পিস”-এর বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৬ জুন, ২০২৫, ১২:৪৩ অপরাহ্ণ
চাঁদপুরে “হুইলস অব পিস”-এর বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি

মিশন গ্রিন বাংলাদেশ-এর সহায়তায়, এসডিজি ভিত্তিক পিস প্রজেক্টের পরিবেশবান্ধব পদক্ষেপ । বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৫ উপলক্ষে চাঁদপুর সদর উপজেলার চাঁদপুর জেলা স্কাউটস ভবনের সামনের প্রাঙ্গণে আয়োজিত হলো এক ব্যতিক্রমধর্মী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি। আয়োজনটি করেছে “প্রজেক্ট হুইলস অব পিস”, যা একটি এসডিজি (SDG) ভিত্তিক স্কাউট পিস প্রজেক্ট।

এই উদ্যোগে সহায়তা করে মিশন গ্রিন বাংলাদেশ, এবং সহযোগিতা করে মেঘনাপাড় ওপেন স্কাউট গ্রুপ। সারাদেশে ৬৪ জেলায় ৫ জুন একসাথে বৃক্ষরোপণের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে ৪০ জন তরুণ স্বেচ্ছাসেবক সক্রিয়ভাবে অংশ নেন, যারা শুধু গাছ লাগিয়ে দায়িত্ব শেষ করেননি, বরং পরিবেশ সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে মাঠে-ময়দানে কাজ করেছেন।

পরিবেশ দূষণ ও প্লাস্টিকের অপব্যবহার প্রতিরোধে আয়োজনস্থল এবং আশেপাশের এলাকায় সচেতনতামূলক পোস্টার লাগানো হয়। এছাড়াও স্থানীয় বাজার ও জনবহুল স্থানে লিফলেট বিতরণ করে সাধারণ মানুষের মাঝে বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়—”সবুজ পৃথিবী, নিরাপদ ভবিষ্যৎ”।

বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমে ফলজ গাছ যেমন আম, কাঁঠাল, পেয়ারা, জামসহ স্থানীয় প্রজাতির চারা রোপণ করা হয়। এসব গাছ একদিকে পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা করবে, অন্যদিকে স্থানীয় মানুষের উপকারে আসবে।

উক্ত কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন প্রজেক্ট হুইলস অব পিস এর প্রতিষ্ঠাতা ওমর তামীম সাফি। তিনি বলেন:
**”পরিবেশ রক্ষা আমাদের দায়িত্ব নয়, বরং এটা আমাদের অস্তিত্বের প্রশ্ন। একটি গাছ মানে শুধু ছায়া বা ফল নয়—এটি জীবনের ধারক। আজকের এই বিশ্ব পরিবেশ দিবসে আমরা শপথ করছি, সবুজের জন্য কাজ করব—শুধু শহরে নয়, প্রত্যন্ত অঞ্চলেও সচেতনতার আলো ছড়িয়ে দেব।

এই কর্মসূচি সফল করতে যারা পাশে ছিলেন, বিশেষ করে মিশন গ্রিন বাংলাদেশ, মেঘনাপাড় মুক্ত স্কাউট গ্রুপ এর সদস্যবৃন্দ। আমরা বিশ্বাস করি, সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে, এ ধরনের পরিবেশবান্ধব কর্মকাণ্ড আরও সংগঠিতভাবে, বৃহৎ পরিসরে এবং টেকসইভাবে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব। আমাদের সবার সম্মিলিত প্রয়াসেই একটি পরিচ্ছন্ন, সবুজ ও বাসযোগ্য বাংলাদেশ গড়ে তোলা যাবে।”**

প্রজেক্ট হুইলস অব পিস, জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDG)-এর বিভিন্ন দিক যেমন পরিবেশ সুরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, যুবসম্প্রদায়ের ক্ষমতায়ন এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এই ইনিসিয়েটিভ এর মাধ্যমে স্কাউট এবং নন স্কাউট দের সাথে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে । ১৭ টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ৮ টি লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করে চলেছে প্রজেক্ট হুইলস অব পিস । প্রকৃতি, পরিবেশ সংরক্ষণ, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক, ছেলে ও মেয়েদের বয়:সন্ধিকালের শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন, এলাকা ভিত্তিক ভাবে পরিবেশ দূষণরোধে সচেতনতা সৃষ্টি এছাড়া প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে, প্লাস্টিকের পুন:ব্যবহার বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মসূচী পরিচালনা করে যাচ্ছে । কর্মসূচীতে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রজেক্ট হুইলস অব পিসের সদস্য রুমাইয়া বিনতে রহিম, সাব্বির আহমেদ, নূর মোহাম্মদ, তাসফিয়া সুলতানা সহ আরোও অনেক সদস্যবৃন্দ।

এই কর্মসূচি তাদের চলমান সবুজ উদ্যোগেরই একটি অংশ। আয়োজকরা জানান, ভবিষ্যতে দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও তারা একই রকম কার্যক্রম ছড়িয়ে দিতে চান।

বাজেট প্রতিক্রিয়া : শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে এডিপি বরাদ্দ কমানো উদ্বেগজনক: সিপিডি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫, ২:৩৮ অপরাহ্ণ
বাজেট প্রতিক্রিয়া : শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে এডিপি বরাদ্দ কমানো উদ্বেগজনক: সিপিডি

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির বরাদ্দ কমানো উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। আজ সোমবার সিপিডি কার্যালয়ে আয়োজিত তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘বাজেটের যে কাঠামো উপস্থাপন করা হয়েছে, সেখানে বাজেটের আকার সামান্য ছোট করা হয়েছে। পাশাপাশি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি, সেখানেও কিছুটা কাটছাঁট করা হয়েছে। বাজেটের আকার নিয়ে অনেকদিন ধরে আলোচনা হয়েছে, সেটার অন্যতম কারণ হচ্ছে, আমাদের যে চলমান অর্থনৈতিক সংকট, অর্থাৎ উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগ স্থবিরতা, কর্মসংস্থানে সমস্যা এবং রাজস্ব আহরণের সমস্যা বিবেচনায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা বাজেট প্রস্তাব করেছে বলে আমাদের মনে হয়েছে।’

ড. ফাহমিদা বলেন, ‘বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির দিকে তাকালে দেখা যাবে, চলতি অর্থবছরের তুলনায় ১৩ দশমিক ২ শতাংশ কমানো হয়েছে এবং ১৫টি খাতের মধ্যে ১৪টি খাতেই কমানো হয়েছে। এখানে উল্লেখযোগ্য এবং চিন্তার বিষয় হচ্ছে, তিনটি খাত—শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষিতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে টাকার অংকে বরাদ্দ কমানো হয়েছে। সেটা আমাদের কাছে উদ্বেগজনক মনে হয়, কারণ শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে আমরা সব সময় বরাদ্দ বাড়ানোর কথা বলে আসছি এবং কৃষি খাতে, বিশেষত খাদ্য নিরাপত্তার দিকে এখানে বরাদ্দ অনেক গুরুত্বপূর্ণ।’ তিনি বলেন, ‘ভৌত অবকাঠামো, বিশেষ করে পরিবহন ও বিদ্যুৎ-জ্বালানি বরাবরের মতো উপরের দিকে আছে যুক্তিযুক্তভাবে।’

এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, কর কাঠামোর মধ্যে করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ দশমিক ৫ লাখ, অর্থাৎ সাড়ে ৩ লাখ টাকা থেকে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করা হয়েছে, এটা একটা ভালো পদক্ষেপ। কিন্তু প্রায় ৩ বছরের মতো সময় ধরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের উপরে রয়েছে, ১০-১১ শতাংশে উঠে গেছে। সেদিক থেকে যে খুব একটা উল্লম্ফন হয়েছে সেটা না। তবে এটাকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, যারা জুলাই যোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত, তাদের জন্য করমুক্ত আয়সীমা ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা করা হয়েছে, সেটাও আমরা ভালো পদক্ষেপ মনে করি।’

‘করের বিভিন্ন স্ল্যাবগুলোতে পরিবর্তন করা হয়েছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে যারা নিম্ন মধ্যআয়ের যারা পড়েছেন, কর দেওয়ার ক্ষেত্রে হারটা তাদের মধ্যেই বেশি পড়বে। আবার যারা আয়ের উচ্চ পর্যায়ে রয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রে অনেক কম পড়বে। এখানে বৈষম্যের চিত্র দেখা যাচ্ছে। অঞ্চলভিত্তিক ন্যূনতম কর ধরা হয়েছে ৫ হাজার টাকা, এখানে আমরা মনে করছি বৈষম্য রয়েছে। কারণ রাজধানী ঢাকা কিংবা অন্য আরেকটি জেলার সবাইকে এক করে দেখানো; সরকারি সেবা সব জায়গায় সবাই কিন্তু সমানভাবে নেয় না। এখানে পুনর্বিবেচনার সুযোগ রয়েছে বলে আমরা মনে করি,’ যোগ করেন তিনি।

ফাহমিদা বলেন, ‘শুল্ক যৌক্তিকরণ হয়েছে এবং আমদানি শিল্প যৌক্তিকিকরণ করতে গিয়ে হয়তো কিছু কিছু শিল্প চাপে পড়তে পারে। বিশেষ করে যখন মূল্যস্ফীতি বেশি, কস্ট অব ডুইং বিজনেস বেশি। এটাকে শুল্কের যৌক্তিকিকরণ করতেই হবে, কারণ বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বেরিয়ে যাবে। আস্তে আস্তে ট্যারিফ কমানোর দিকে নজর দিতে হবে। যে প্রতিঘাত আসবে, সেটা মোকাবিলা করার জন্য কস্ট অব ডুইং বিজনেসের ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ-জ্বালানি সাশ্রয়ী মূল্যে কিংবা সহজ শর্তে ঋণ কিংবা আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমিয়ে কস্ট অব ডুইং বিজনেস কমানোর উদ্যোগ নিতে হবে।’

প্রস্তাবিত বাজেটে কিছু ভালো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ই-কমার্সের সুযোগ-সুবিধা এবং ই-কমার্সকে ফরমাল সেক্টরে আনা; এখানে করের আওতায় আনা এবং পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের অধীনে যে ৫ হাজার ৪০ কোটি টাকার ফান্ড গঠন হয়েছে। আমরা মনে করি, আগেও পিপিপি মডেলের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, সেগুলো কিন্তু খুব একটা এগোয় নাই।

নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ১ হাজার কোটি টাকার ফান্ড গঠনকে স্বাগত জানিয়েছে সিপিডি।

কালো টাকা সাদা করার সুযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কালো টাকা সাদার করার সুযোগটা রয়ে গেছে। যদিও এখানে রেট বাড়ানো হয়েছে কিন্তু আমরা আগেও বলেছি, কালো টাকার ব্যাপারে আমাদের অবস্থান হচ্ছে, এই সুযোগ দিয়ে যারা নৈতিকভাবে প্রতি বছর স্বচ্ছ আয় করে, স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতার সঙ্গে কর দিয়ে থাকেন, তাদের প্রতি নৈতিক আঘাত। কারণ তাদের আদর্শিকভাবে নিরুৎসাহিত করা হয়। দুটি জিনিস সমান্তরালভাবে চলতে পারে না!’

ফাহমিদা আরও বলেন, ‘আগে করের হারটাও কম রাখা হতো, এখন করের হার বেশি রাখা হয়েছে। তারপরও এটা থেকে খুব একটা আদায় হয় না। যদি এখান থেকে সত্যি আদায় করার ইচ্ছা থাকে, তাহলে কিন্তু সক্রিয় পদক্ষেপ নিতে হবে। এছাড়া দুএকবার সুযোগ দিয়ে চিরতরে বন্ধ করে দেওয়া উচিত।’ উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময় কর রেয়াত কিংবা বিভিন্ন জায়গা থেকে কমানো এবং পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা ও পরিমাণ বাড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি।

‘সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির অধীনে ১৪০টির মতো কার্যক্রম একসঙ্গে চলতো, সেগুলো কমিয়ে ৯৫টি করা হয়েছে এবং সেখানে অর্থ বরাদ্দ কম করা হয়েছে। খুব কম না কিন্তু বাজেটের তুলনায় ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ এবং মোট বাজেটের ১ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকার মতো।’ ‘আমরা বারবার বলেছি, এখানে কতগুলো উপাদান যুক্ত করা হয়, যেগুলো সামাজিক নিরাপত্তা বা সামাজিক সুরক্ষার অধীনে দেওয়া যুক্তিযুক্ত নয়। কারণ এটা একেবারেই অতি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য। সরকারি কর্মচারীদের পেনশন, সেখানে আছে ৩৫ হাজার ২৮২ কোটি টাকা। কৃষি ভর্তুকি আছে ১৭ হাজার কোটি টাকা। এই দুটি মিলিয়ে ৫২ হাজার কোটি টাকার বেশি হয়, সেটা বাদ দিয়ে রয়ে যায় ৬৪ হাজার কোটি টাকার মতো। সেটা অনেকখানি কমে আসে। এগুলো বাদ দিয়ে যে নেট সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, সেটাকে দেখাতে হবে। সেটা দেখে তুলনা করা যেতে পারে যে আসলেই দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য কী করা হলো,’ যোগ করেন তিনি।

ফাহমিদা বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে বলতে চাই, কিছু কিছু পদক্ষেপ ভালো নেওয়া হয়েছে বিচ্ছিন্নভাবে। কিন্তু সামগ্রিক কাঠামোগত পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে যে একই কাঠামোর মধ্যে এখানে একটু বেশি, ওখানে একটু কম—এ রকম করে নেওয়া হয়েছে। বাজেটের যে দর্শন, এখানে বৈষম্যহীন সমাজের কথা বলা হয়েছে, সেই উদ্দেশ্যের সঙ্গে যে বাস্তব পদক্ষেপগুলো নেওয়া হয়েছে, সব ক্ষেত্রে সেটা সাযুজ্যপূর্ণ হয়নি।’

ফেব্রুয়ারি অথবা এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছি: জামায়াতের আমির

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫, ২:৩৬ অপরাহ্ণ
ফেব্রুয়ারি অথবা এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছি: জামায়াতের আমির

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি বা এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন দলটির আমির শফিকুর রহমান।

মঙ্গলবার (৩ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে জামায়াতের নিবন্ধন ফিরে পাওয়া উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

শফিকুর রহমান বলেন, ‘ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি অথবা এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচনের দাবি আমরা জানিয়েছি। রোজার আগে অথবা যদি কোনো কারণে সম্ভব না হয়, তাহলে যেন এপ্রিলের মধ্যেই নির্বাচন দেওয়া হয়। কারণ আবহাওয়ার কারণে মে মাসের পর নির্বাচন করা সম্ভব নয়।’

এ সময় তিনি বলেন, ‘আজকেও যদি সমতল মাঠ তৈরি হয়, ফেয়ার ইলেকশন যদি সম্ভব হয়, তাহলেও আমরা প্রস্তুত রয়েছি। কিন্তু ফেয়ার ইলেকশনের মাঠ তৈরি না হলে এপ্রিলে নির্বাচন হলেও তো কোনো লাভ নেই।’

প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোট দেওয়ার বিষয়ে জামায়াতের আমির বলেন, ‘প্রবাসীদের অবশ্যই ভোটের ব্যবস্থা করতে হবে, এ বিষয়ে আমরা ছাড় দিতে রাজি নই।’

তিনি বলেন, ‘প্রবাসীরা তাদের নাগরিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারেন না। আমরা ইসির কাছে দাবি জানিয়েছি, প্রবাসীরা যেন ভোট দিতে পারেন, তার ব্যবস্থা করার জন্য। এটা কোনো কঠিন বিষয় নয়। কিন্তু ইসির পক্ষ থেকে আমরা কোনো অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি না।’

এর আগে গতকাল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহেরও বলেন, বৈঠকে তারা বলেছেন, জুলাইয়ের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে। আর নির্বাচন হতে পারে ডিসেম্বর থেকে এপ্রিলের মধ্যে।

তাহের বলেন, ‘আমরা বলেছি জুলাইয়ের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে। বেশিরভাগ বিষয়ে সবাই একমত হয়েছে। সামান্য কিছু বিষয়ে মতানৈক্য রয়েছে। জুলাইয়ের মধ্যে সংস্কার শেষ হবে। এরপর একটি জুলাই সনদ হবে। সেখানে আমরা সব দল স্বাক্ষর করব।’