খুঁজুন
                               
শুক্রবার, ২৫ জুলাই, ২০২৫, ১০ শ্রাবণ, ১৪৩২

সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়নে নাগরিক ও আমজনতা

উজ্জ্বল হোসাইন
প্রকাশিত: রবিবার, ৫ জানুয়ারি, ২০২৫, ১১:৫০ অপরাহ্ণ
সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়নে নাগরিক ও আমজনতা

সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়নে মানুষের ভূমিকা চিরকালই গুরুত্বপূর্ণ। মানুষ সমাজে দুই ধরনের পরিচয়ে নিজেদের উপস্থাপন করে—নাগরিক এবং আমজনতা। এ দুটো পরিচয়ের মধ্যে রয়েছে দায়িত্ব, অধিকার, ভূমিকা ও মনোভাবের ভিন্নতা। নাগরিক একটি রাজনৈতিক পরিচয় বহন করে এবং রাষ্ট্রের অধিকারভুক্ত সদস্য হিসেবে চিহ্নিত হয়। অন্যদিকে, আমজনতা বলতে সাধারণ জনগোষ্ঠীকে বোঝানো হয়, যারা সচেতন বা অসচেতনভাবে সমাজ ও রাষ্ট্রের অংশ হিসেবে জীবন যাপন করে। এ প্রবন্ধে নাগরিক ও আমজনতার সংজ্ঞা, তাদের ভূমিকা, পার্থক্য এবং পারস্পরিক সম্পর্ক বিশ্লেষণ করা হবে।

নাগরিকের সংজ্ঞা ও বৈশিষ্ট্য

নাগরিক বলতে সাধারণত একটি রাষ্ট্র বা দেশের অধিবাসীকে বোঝানো হয়, যে ব্যক্তি আইনত সেই রাষ্ট্রের সদস্য এবং নাগরিক অধিকার ভোগ করে। নাগরিকের বৈশিষ্ট্যগুলো হলো : নাগরিক আইনগতভাবে রাষ্ট্রের স্বীকৃত সদস্য। অধিকার ও কর্তব্য: নাগরিকের কিছু মৌলিক অধিকার রয়েছে যেমন শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, এবং বাকস্বাধীনতা। পাশাপাশি নাগরিকের দায়িত্ব রয়েছে যেমন কর প্রদান, আইন মেনে চলা, এবং ভোট প্রদান। নাগরিক সাধারণত রাষ্ট্রের বিভিন্ন নীতি ও কার্যক্রম সম্পর্কে সচেতন। একজন নাগরিক সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কাজে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।

আমজনতা বলতে বোঝানো হয় সাধারণ জনগণ বা জনসাধারণ, যারা প্রতিদিনের জীবনে রাষ্ট্র ও সমাজের অংশ হিসেবে থাকে কিন্তু প্রায়শই রাজনৈতিক সচেতনতা বা সক্রিয় অংশগ্রহণ থেকে দূরে থাকে।

আমজনতার বৈশিষ্ট্যগুলো হলো : আমজনতা কোনো বিশেষ আইনগত পরিচয়ের চেয়ে বৃহৎ জনগোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত।অনেক সময় তারা তাদের অধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কে পুরোপুরি সচেতন নয়। অনেক সময় রাজনৈতিক বা সামাজিক প্রক্রিয়ায় তাদের অংশগ্রহণ সীমিত থাকে। আমজনতা প্রায়ই ভোগবাদী চিন্তাভাবনার দিকে ঝুঁকে থাকে এবং তাৎক্ষণিক প্রয়োজন মেটানোতেই বেশি আগ্রহী। নাগরিক ও আমজনতার মধ্যে বিভিন্ন দিক থেকে পার্থক্য রয়েছে। সেগুলো বিশ্লেষণ করা হলো– সচেতন এবং তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে অবগত। অনেক সময় নিজেদের দায়িত্ব ও অধিকার সম্পর্কে অসচেতন। ভোট প্রদান, রাজনৈতিক আলোচনায় অংশগ্রহণ এবং সরকারের কার্যক্রমের সমালোচনা করে। ভোট প্রদান করলেও রাজনৈতিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে উদাসীন থাকতে পারে। অধিকার ও সুবিধা ভোগের ধরণ। অধিকার সম্পর্কে সচেতন এবং তা দাবি করে। অধিকারের ব্যবহার সম্পর্কে অজ্ঞ থাকায় অনেক সুবিধা ভোগ করতে পারে না। সামাজিক পরিবর্তনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।প্রায়শই সমাজের পরিবর্তনের প্রক্রিয়ায় নিষ্ক্রিয়। নাগরিকত্ব শুধুমাত্র একটি আইনি ধারণা নয়, এটি সমাজের উন্নয়ন এবং স্থিতিশীলতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।  সক্রিয় নাগরিক অংশগ্রহণ গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে। নাগরিকদের অধিকার রক্ষার জন্য নাগরিকত্ব প্রয়োজন। নাগরিক সচেতন হলে সমাজের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সহজ হয়। যদিও আমজনতা অনেক সময় রাষ্ট্রের কাঠামোয় নিষ্ক্রিয় থাকে, তাদের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। আমজনতার মতামত রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলে। অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি হলো আমজনতা।সমাজের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে ধারণ করে রাখে।

নাগরিকত্ব ও আমজনতার মধ্যে সম্পর্ক : নাগরিক ও আমজনতার মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। নাগরিক এবং আমজনতা উভয়েই সমাজ গঠনে ভূমিকা পালন করে।সচেতনতা বৃদ্ধি: নাগরিকদের সচেতনতা আমজনতাকে সচেতন হতে উৎসাহিত করে। সম্প্রীতির উন্নয়ন: উভয়ের সহযোগিতা সামাজিক সম্প্রীতি বাড়ায়।

চ্যালেঞ্জসমূহ : অনেক আমজনতা তাদের অধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন নয়। দায়িত্ববোধের অভাব: নাগরিকদের অনেক সময় দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে উদাসীনতা দেখা যায়। রাজনৈতিক দুর্ব্যবস্থা: রাজনৈতিক অস্থিরতা নাগরিক ও আমজনতার মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে পারে। নাগরিক ও আমজনতার মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য শিক্ষা ও প্রচার কার্যক্রম প্রয়োজন।স্কুল এবং কলেজ পর্যায়ে নাগরিকত্বের গুরুত্ব শেখানো উচিত। রাজনৈতিক এবং সামাজিক প্রক্রিয়ায় সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা দরকার।

নাগরিক ও আমজনতা একটি রাষ্ট্র ও সমাজের দুটি অপরিহার্য অংশ। সমাজের উন্নয়নের জন্য উভয়ের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। নাগরিকের দায়িত্ব হলো সমাজকে সঠিক পথে পরিচালিত করা এবং আমজনতার চেতনা জাগ্রত করা। অন্যদিকে, আমজনতাকে নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। রাষ্ট্রের দায়িত্ব নাগরিক ও আমজনতার মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে একটি সুষ্ঠু, সমৃদ্ধ এবং সম্প্রীতিময় সমাজ প্রতিষ্ঠা করা।

লেখক : উজ্জ্বল হোসাইন, সংগঠক ও প্রাবন্ধিক, চাঁদপুর। মোবাইল : 01675127483, ই-মেইল : rtrujjal@gmail.com

শতাব্দীর দীর্ঘ সূর্যগ্রহণ, অন্ধকারে থাকবে পৃথিবীর একাংশ!

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই, ২০২৫, ৯:৩৭ পূর্বাহ্ণ
শতাব্দীর দীর্ঘ সূর্যগ্রহণ, অন্ধকারে থাকবে পৃথিবীর একাংশ!

শতাব্দীর দীর্ঘ সূর্যগ্রহণ দেখতে যাচ্ছে বিশ্ববাসী। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এটি প্রায় ৬ মিনিট ২৩ সেকেন্ড স্থায়ী হবে। এটি হতে যাচ্ছে শতাব্দীর একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। সোমবার (২২ জুলাই) সংবাদমাধ্যম মেট্রো এবং টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৭ সালের ২ আগস্ট এক বিরল পূর্ণ সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে। এটি ইউরোপ, উত্তর আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন অঞ্চলের বাসিন্দারা দেখতে পাবেন। এই মহাজাগতিক ঘটনা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। কেননা এটি প্রায় ৬ মিনিট ২৩ সেকেন্ড স্থায়ী হবে। এছাড়া এটি শতকের অন্যতম দীর্ঘতম পূর্ণ সূর্যগ্রহণ হবে।
এই সূর্যগ্রহণে চাঁদ পুরোপুরি সূর্যকে আচ্ছাদিত করবে। এটিকে বিজ্ঞানের ভাষায় পূর্ণতা (Totality) বলা হয়। এ সময় দিনের আকাশ রাতের মতো অন্ধকার হয়ে যাবে। পূর্ণতার রেখা পৃথিবীর উপর দিয়ে ধীরে ধীরে অগ্রসর হবে, যা দক্ষিণ ইউরোপ ও উত্তর আফ্রিকার এক বিশাল অংশকে ঢেকে দেবে। প্রায় ৮৯ মিলিয়ন মানুষ এই অন্ধকার দর্শনের সুযোগ পাবে।
সূর্যগ্রহণটি মরক্কো, আলজেরিয়া, তিউনিসিয়া, লিবিয়া, মিসর, সুদান, সৌদি আরব, ইয়েমেন এবং সোমালিয়াসহ একাধিক দেশে দেখা যাবে।
দীর্ঘতম গ্রহণের রহস্য
রয়্যাল মিউজিয়ামস গ্রিনউইচের সিনিয়র জ্যোতির্বিজ্ঞানী গ্রেগ ব্রাউনের মতে, এই গ্রহণটি প্রায় ছয় মিনিট স্থায়ী হবে, যা এ ধরনের মহাজাগতিক ঘটনার জন্য অসাধারণভাবে দীর্ঘ।
তিনি বলেন, এটি মাত্র কয়েক সেকেন্ড থেকে সর্বোচ্চ ৭ দশমিক ৫ মিনিট পর্যন্ত পরিবর্তিত হয়। এই তারতম্য চাঁদ এবং সূর্যের দৃশ্যমান আকারের পার্থক্যের কারণে ঘটে, যা চাঁদের পৃথিবীর কক্ষপথে এবং পৃথিবীর সূর্যের কক্ষপথে তাদের দূরত্বের সামান্য পরিবর্তনের ফলে হয়।
সূর্যগ্রহণ কীভাবে ঘটে?
সূর্যগ্রহণ ঘটে যখন চাঁদ পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখানে এসে পড়ে এবং সূর্যের আলো আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে ঢেকে দেয়। এটি শুধু অমাবস্যা তিথিতে ঘটতে পারে। এ সময় চাঁদ ঠিক সূর্য ও পৃথিবীর মাঝে অবস্থান করে। চাঁদের কক্ষপথ কিছুটা কাত হওয়ায়, বেশিরভাগ সময় এটি সূর্যের কিছুটা উপর বা নিচ দিয়ে চলে যায়, ফলে সূর্যগ্রহণ সবসময় হয় না।

জলবায়ু পরিবর্তন : এক দেশ আরেক দেশের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবে

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই, ২০২৫, ৯:৩৩ পূর্বাহ্ণ
জলবায়ু পরিবর্তন : এক দেশ আরেক দেশের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবে

এখন থেকে এক দেশ আরেক দেশের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতির কারণে বলে যুগান্তকারী এক রায়ে জানিয়েছে জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত।এমনকি অতীতে কারা কত পরিমাণ গ্রিনহাউস গ্যাস ছেড়েছে, সেটাও বিবেচনায় আসতে পারে বলেও রায়ে জানানো হয়েছে। বুধবার (২৩ জুলাই) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে অবস্থিত আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) বুধবার এই রায় দেয়। যদিও এই রায় বাধ্যতামূলক নয়, তবে বিশেষজ্ঞদের মতে এর বৈশ্বিক প্রভাব গভীর হতে পারে।
বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ছোট ছোট দ্বীপরাষ্ট্রগুলোর জন্য এটা একটি বড় জয়। তারা বহু বছর ধরে আন্তর্জাতিক মহলের নিষ্ক্রিয়তায় হতাশ হয়ে এই মামলার পথ বেছে নিতে পারে।
বিবিসি বলছে, ২০১৯ সালে একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগের মাধ্যমে এই মামলার সূচনা হয়েছিল। প্যাসিফিক দ্বীপপুঞ্জের কিছু তরুণ আইনের ছাত্র এই ধারণাটি প্রথম সামনে আনেন। তাদেরই একজন ছিলেন টোঙ্গার সিওসিউয়া ভেইকুনে এবং বুধবার হেগে তিনি আদালতের রায় শোনেন।
তিনি বলেন, “এই জয় আমাদের সমাজের জন্য গর্বের বিষয়। আমরা যে কষ্ট সহ্য করেছি, সেই বাস্তবতা আদালত স্বীকার করেছে”। অন্যদিকে ভানুয়াতুর জলবায়ু কর্মী ফ্লোরা ভানো বলেন, “এই জয় শুধু আমাদের নয়, সারা বিশ্বের সেইসব ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের, যাদের কথা এতদিন ধরে শোনা হচ্ছিল না।”
যুগান্তকারী এই রায়ে বিচারপতি ইওয়াসাওয়া ইউজি বলেন, যদি কোনো দেশ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় যথাসম্ভব উচ্চাকাঙ্ক্ষী পরিকল্পনা না নেয়, তাহলে সেটা প্যারিস চুক্তির লঙ্ঘন হবে। এমনকি যারা প্যারিস চুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি বা সেখান থেকে বেরিয়ে যেতে চায় (যেমন— যুক্তরাষ্ট্র), তাদেরও আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী পরিবেশ রক্ষা করতে হবে।
আদালত বলেছে, উন্নয়নশীল দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হওয়া ক্ষয়ক্ষতির জন্য ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারবে। কোনো নির্দিষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতির জন্য যদি প্রমাণ করা যায় যে তা জলবায়ুর কারণে হয়েছে, তাহলে সে ক্ষেত্রেও ক্ষতিপূরণ চাওয়া যাবে।
এমনকি যদি কোনো দেশ তাদের কোম্পানিকে তেল ও গ্যাস খাতে নতুন লাইসেন্স দেয় বা জীবাশ্ম জ্বালানি খাতকে ভর্তুকি দেয়, তবে তা তার আইনি দায়বদ্ধতার পরিপন্থি হতে পারে।
আইসিজের এই মতামতের ভিত্তিতে যেকোনো দেশ চাইলে জাতিসংঘ আদালত বা নিজস্ব কোনো জাতীয় আদালতেও মামলা করতে পারবে। তবে আইসিজে-তে সরাসরি মামলা করতে হলে সংশ্লিষ্ট দেশকে অবশ্যই আদালতের এখতিয়ার স্বীকার করতে হবে। যেটি যুক্তরাজ্য করলেও যুক্তরাষ্ট্র ও চীন করেনি।
তবে আইনজীবী জোই চৌধুরী বলেন: “জাতীয় বা আন্তর্জাতিক যেকোনো আদালতে আইসিজের মতামত উদ্ধৃত করে মামলা করা যাবে। তাই কোনো দেশ চাইলে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কোর্টেও মামলা করতে পারে।”

নারী কর্মীদের ছোট দৈর্ঘ্যের পোশাক পরিহার করতে বললো বাংলাদেশ ব্যাংক

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই, ২০২৫, ৯:২৯ পূর্বাহ্ণ
নারী কর্মীদের ছোট দৈর্ঘ্যের পোশাক পরিহার করতে বললো বাংলাদেশ ব্যাংক

বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের সব স্তরের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের জন্য নতুন পোশাকবিধি জারি করেছে। গত ২১ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগ-২ থেকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যার লক্ষ্য একটি পেশাদার ও মার্জিত কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা। নির্দেশনায় পুরুষ ও নারী কর্মীদের জন্য নির্দিষ্ট পোশাক পরিধানের কথা বলা হয়েছে এবং কিছু পোশাক পরিহার করতে বলা হয়েছে। নির্দেশনা না মানলে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ আনা হবে।
পুরুষ কর্মীদের জন্য পোশাকবিধি
পুরুষ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য ফরমাল (আনুষ্ঠানিক) শার্ট (লম্বা হাতা বা হাফ হাতা) এবং ফরমাল প্যান্ট পরতে বলা হয়েছে। এর সঙ্গে ফরমাল স্যান্ডেল বা জুতা পরতে হবে। এই নির্দেশিকায় জিনস ও গ্যাবার্ডিন প্যান্ট পরিহার করার কথা বলা হয়েছে।
নারী কর্মীদের জন্য পোশাকবিধি
নারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য শাড়ি, সালোয়ার–কামিজ ও ওড়না অথবা অন্যান্য পেশাদার শালীন পোশাক পরার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এসব পোশাক অবশ্যই সাদামাটা এবং পেশাদার রঙের হতে হবে। এর সঙ্গে ফরমাল স্যান্ডেল বা জুতা, সাদামাটা হেডস্কার্ফ বা হিজাব পরতে বলা হয়েছে। নির্দেশিকায় শর্ট স্লিভ ও লেংথের ড্রেস (ছোট হাতা ও ছোট দৈর্ঘ্যের পোশাক) এবং লেগিংস পরিহার করার কথা বলা হয়েছে।
পোশাকবিধির ১১ ক্রমিক নম্বরে আরও তিনটি নির্দেশনা রয়েছে। ১১ (ক) নম্বরে নারী কর্মীদের প্রতি আচরণের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক স্টাফ রেগুলেশন ২০০৩–এর ৩৯ ধারায় বর্ণিত নির্দেশনা মেনে চলতে বলা হয়েছে। যৌন হয়রানিসংক্রান্ত অভিযোগগুলো ঘটনা ঘটার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে মানবসম্পদ বিভাগ ১–এর নির্দিষ্ট পরিপত্রের মাধ্যমে গঠিত কমিটির কাছে পাঠাতে বলা হয়েছে।
১১ (খ) নম্বরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের বিষয়ে মানবসম্পদ বিভাগ ২–এর অফিস নির্দেশ যথাযথভাবে অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।
১১ (গ) নম্বরে ইতিবাচক কর্মপরিবেশ তৈরি করার জন্য দাপ্তরিক শিষ্টাচার ও আচরণবিধি তথা সততা, নৈতিকতা, সময়ানুবর্তিতা, শৃঙ্খলাবোধ, অর্পিত দায়িত্ব–কর্তব্য পালনে নিষ্ঠা ইত্যাদি, সহকর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আচরণ ও আন্তরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক (পারস্পরিক সম্মান, সৌজন্যবোধ, সহযোগিতামূলক মনোভাব ইত্যাদি) মেনে চলতে বলা হয়েছে।
গৃহীত সিদ্ধান্তের ১২ নম্বরে বলা হয়েছে, ১১ নম্বর ক্রমিকে দেওয়া নির্দেশনা পরিপালনের জন্য অফিস, বিভাগ, প্রকল্প, সেল, ইউনিটভিত্তিক পর্যবেক্ষণের জন্য একজন কর্মকর্তাকে মনোনয়ন দিতে হবে। ওই নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে তদারকি করবেন মনোনীত কর্মকর্তা। এর ব্যত্যয় হলে বিভাগীয় প্রধানকে অবহিত করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা–কর্মচারীর বিরুদ্ধে নির্দেশনা ও শৃঙ্খলাভঙ্গের বিষয়ে অভিযোগ পাঠাবেন।