খুঁজুন
                               
শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৫, ১৫ কার্তিক, ১৪৩২

রবীন্দ্রনাথ : ধর্ম প্রকৃতি প্রেম ও সাহিত্যের আধুনিকায়ন

সামীম আহমেদ খান
প্রকাশিত: বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫, ৮:৪৬ পূর্বাহ্ণ
রবীন্দ্রনাথ : ধর্ম প্রকৃতি প্রেম ও সাহিত্যের আধুনিকায়ন

প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী ‘রোমান্টিক’ শব্দটির আবির্ভাব হয়েছে ফরাসী শব্দ ‘রোমাঞ্চ’ থেকে। এর অর্থ হলো লাতিন শব্দের পরিবর্তে গ্রাম্য কথ্যভাষায় রচনা করা। ১৭৪৮ সালে রোমান্টিক শব্দটি একাডেমী কর্তৃক স্বীকৃত হয়। এক অর্থে স্প্যানিশ একটি ছন্দের নাম ‘রোমাঞ্চ’। রোমান্টিক শব্দের মধ্যেই নিহিত রয়েছে তার স্বরূপ। রোমান্টিক ভাষার মধ্যে প্রাণ-প্রাচুর্যের কল-কল্লোল ও কলরব শোনা যায়। অর্থাৎ ভাষা তার অলঙ্করণে সজ্জিত হয়ে আড়ষ্টতা থেকে মুক্তি পায়। প্রচলিত ছন্দের বন্ধন ভেঙ্গে ছন্দের নব নব সৃষ্টি ভাষাকে করে তোলে চঞ্চল, প্রবহমান ও গতিমুখর।
বাংলা সাহিত্যের রোমান্টিক গাঁথা কাব্যের অন্যতম প্রবর্তক অক্ষয়চন্দ্র চৌধুরী ছিলেন জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের বন্ধু ও দ্বিজন সভার মধ্যমণি। রবীন্দ্রনাথ ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দের কাছাকাছি অক্ষয় চৌধুরীর সান্নিধ্যে আসেন। তাঁরই প্রেরণায় রবীন্দ্রনাথ বালক বয়সে সেকালের ইংরেজি কবিতা বাংলায় অনুবাদ করেন। তিনি ছিলেন রবীন্দ্র প্রতিভার একজন সহৃদয় আলোচক ও অন্তরঙ্গ উৎসাহদাতা।

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের গীতিময় জীবনের বিশুদ্ধ সৌন্দর্যবাদী অভিজ্ঞান তাঁর চিত্ত-চেতনা ও সংস্কারে যে দূর সঞ্চারী প্রবর্তনা এনেছিলো তা আমাদের বাংলা সাহিত্যে এক গভীরতম প্রাণের উচ্ছ্বাস।

১৯১৩ সালে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যখন তাঁর সৃজনশীল সাহিত্য কর্মের জন্য নোবেল পুরস্কার পেলেন, তখন তিনি ছিলেন পাশ্চাত্যে প্রায় অপরিচিত। পাশ্চাত্যের সাহিত্যজগত তখনও কবি রবী ঠাকুরের সাহিত্য কর্মের সাথে পরিচিত হয় নি। এমনকি তাঁর নামটি বড় সংবাদপত্রগুলো ঠিক করে লিখতে পারেনি। কোনো কোনো বহুল প্রচারিত সংবাদপত্র ‘রবীন্দ্রনাথ’ নামের পরিবর্তে লিখেছিলো ‘বাবীন্দ্রনাথ’ এমনকি ‘হিন্দু কবি’ ‘অশ্বেতাঙ্গ’ এসব শব্দ ব্যবহার করে চমক সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছিলো। নোবেল পুরস্কার ঘোষণার পর পরই ‘The New York Times’ ১৯১৩ সালের ১৪ নভেম্বর ঠিক এভাবে লেখে : NOBEL PRIZE GIVEN TO A HINDU POET. This years literature award conferred on Babindranath Tagore of Bengal. Created a furore in Europe.

এটি বিস্ময়কর হলেও সত্য যে, সমগ্র ইউরোপ ও আমেরিকায় কবি রবীন্দ্রনাথ অপরিচিত থাকলেও সুইডিশ সোসাইটিতে তিনি অপরিচিত ছিলেন না। ১৯১১ সালের শুরু থেকেই সুইডিশ সোসাইটি তাঁর সাহিত্য বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে। আবার দুঃখজনক হলেও সত্যি, ১৯৬৪ সালের পর থেকে রবীন্দ্রনাথের কোনো সাহিত্যকর্ম আর সুইডিশ ভাষায় প্রকাশিত হয়নি। বিশিষ্ট কোনো সুইডিশ লেখক বা সুইডেনে বসবাসরত বাঙালিরাও এরকম কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। কিন্তু আমাদের বাংলা সাহিত্যে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের সংবেদনশীলতা, কল্পনাবৃত্তির নিগূঢ়তা, উদ্ভাবন ক্ষমতা ও অনুভূতির অন্তর্মুখিতা রোমান্টিক জীবন দৃষ্টিসম্পন্ন।

১৯ শতকের ইংরেজি সাহিত্যের রোমান্টিক সৌরজগতের অন্যতম কবি শেলী। মসৃণ ছিলো না তাঁর জীবনের গতিপথ। দুস্তর প্রস্তরময় সমাজের কঠিন মৃত্তিকার ওপর দিয়ে তিনি জীবনের যাত্রা শুরু করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের আবির্ভাবও ঊনিশ শতকের নবজাগরণের শিল্পগৌরবে দীপ্তালোকে উদ্ভাসিত। যখন ইংরেজি সাহিত্যের রোমান্টিকতার প্লাবন বয়ে যাচ্ছে, ঊনবিংশ শতাব্দীর বাংলার নবজাগরণের কর্মীপুরুষ রামমোহন রায়ের বিশুদ্ধ ব্রাহ্মধর্ম সম্পর্কে শিষ্যত্ব বরণ করেন দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি হিন্দু ধর্মের বাহ্য আচার-আচরণ আর প্রাণহীন প্রথার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন। হিন্দু ধর্মের নিষ্প্রাণ হৃদয়হীন আচারের নির্দয়-নিষ্ঠুরতাকে উপেক্ষা করে তিনি প্রাচ্যের বিশ্বমানব প্রেম ধর্মকে পাথেয় করেছিলেন। তাই রবী ঠাকুর বলেছেন, ‘আমার পরিবার আমার জন্মের পূর্বেই সমাজের নোঙর তুলে দূরে বাঁধা ঘাটের বাহিরে এসে ভিড়েছিলো। আচার-অনুশাসন, ক্রিয়া-কর্ম সেখানে সমস্তই বিরল।’

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের ধ্যান সৃষ্টির জীবন চেতনায় দেবেন্দ্রনাথ ছিলেন অগ্রণী ভূমিকায়। শান্তম, শিবম, সুন্দরম সাধনায় রবীন্দ্রনাথের সিদ্ধিলাভ হয়েছিলো মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথের নির্দেশে। তাই রবীন্দ্রনাথের যৌবনধর্মে কোথাও অসংযত ভাবাবেগের প্রকাশ নেই।

কিন্তু শেলী সমাজের অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন। নতুন সৃষ্টির অদম্য নেশায় পুরাতনকে অস্বীকার করেছেন। ধর্মতন্ত্রের সামাজিক বিধি-নিষেদের প্রতি তাঁর ছিলো তীব্র অনীহা এবং এক পর্যায়ে তিনি বিদ্রোহ করেছেন। আঘাত করেছেন ইউরোপীয় সমাজের অচলায়তনকে। অস্বীকার করেছেন ঈশ্বরের স্বীকৃতিকে। কিন্তু ইংরেজ সমাজ শেলীকে ক্ষমা করেনি। ‘নাস্তিক’ আখ্যায় ভূষিত করে শেলীকে ইংল্যান্ডের মাটি থেকে বিতাড়িত করে নির্বাসন দিয়েছিলো তৎকালীন সঙ্কীর্ণ বুদ্ধির পরিচায়ক ইংরেজ সমাজ। কবি রবীন্দ্রনাথ শেলীর মতো চিরায়ত প্রথার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হতে পারেননি। কেননা আধ্যাত্মিক সাধনায় কবিকে দুঃসাহসিকতার পরিবর্তে চিন্তাশীল হতে বাধ্য করেছে। দুর্জয়ের জয়মাল্য কবির জ্ঞানলোকের পরিধিকে যতই পুষ্পার্ঘ্যে পূর্ণ করুক না কেনো তবু রুদ্র সন্ন্যাসী শ্মশানের বৈরাগ্যবিলাসী। তাই রবীন্দ্রনাথ হিন্দুধর্মের তথাকথিত প্রাণহীন আচার অনুষ্ঠানকে আঘাত হেনেছেন, কিন্তু ধর্ম বা ধর্মতন্ত্রের বিরুদ্ধে নয়।

রবীন্দ্রনাথের প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য, সসীম ও অসীম, খণ্ড ও অখণ্ড, বিশেষ ও নির্বিশেষ, স্থায়িত্ব ও অস্থায়িত্ব, অহং ও আত্মা, স্বাতন্ত্র্য ও মিলন, সংসার-অনুরাগ ও সংসার বিরাগ এবং প্রাপ্তি ও ত্যাগ তথা সামাজিক ও আধ্যাত্মিক সকল বিষয়ে যে অন্তরঙ্গ মিল খুঁজে পাওয়া যায় তা রবীন্দ্র বোধের চালিকাশক্তি এবং আমাদের প্রকাশরীতির আলাদা আলাদা ক্ষেত্র।

ঊনবিংশ শতাব্দীর ইংরেজি সাহিত্যের রোমান্টিক যুগের মধ্যাহ্নক্ষণে সে যুগের সর্বকনিষ্ঠ কবি জন কীটস-এর আবির্ভাব। ১৭৯৫ খ্রিস্টাব্দে ২৯ অক্টোবর এক দরিদ্র পরিবারে কীটসের জন্ম। জন্মের পর থেকেই তার চারদিক ঘিরে দুঃখের জমাট আঁধার। কীটস আত্মশক্তির অন্তর্গত প্রেরণাকে সৌন্দর্য সৃষ্টির মূলমন্ত্র মনে করেন। ফরাসী বিপ্লবের কোনো প্রভাব কীটসের মধ্যে পরিলক্ষিত হয়নি। তিনি নবজাগরণের বৈপ্লবিক পরিবর্তন সৃষ্টি করেছেন আত্মশক্তির মহিমায়। কিন্তু সমাজ সংস্কারে তাঁর তেমন প্রভাব নেই। তিনি কোনো দর্শনকে কাব্যের মধ্যে প্রচারমুখী করতেন না। অপরদিকে রবীন্দ্রনাথ সামাজিক গতি চেতনায় উদ্যমশীলতা, আত্মবিশ্বাস, নব্য সাংস্কৃতিক রুচিবোধ, বাঙালি মানসের জ্ঞান, কর্ম ও বিশুদ্ধ বুদ্ধিস্রোতে হৃদয়বৃত্তি তথা ভাবসম্পদকে সৌন্দর্য সৃষ্টির মূলমন্ত্র মনে করেন। রবীন্দ্রনাথ একটি শতাব্দীর জীবনের কাল-মহাকাল দেখেছেন। তাই তাঁর চেতনালোকে অভিজ্ঞতার পরিধি অসীম ও ব্যাপক এবং তাঁর সৃষ্টিও গভীর ও সীমাহীন।

কীটসের জীবন রবীন্দ্রনাথের মতো দীর্ঘ নয়। বাংলার ক্ষণজন্মা কবি সুকান্তের মতোই কীটস মাত্র ২৫ বছরের আয়ুষ্কালে জীবনের এক নিখুঁত সত্যকে আবিষ্কার করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথ কীটসের মতো প্রেম ও রোমান্টিকতার অন্ধ আবেগে নিজেকে সঁপে দেননি। কবিগুরু বলেছেন, ‘এরা সুখের লাগি চাহে প্রেম, প্রেম মেলে না, শুধু সুখ চলে যায়, এমনি মায়ার ছলনা।’ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের মধ্যে অত্যন্ত প্রগাঢ় যে সত্যটুকু বিরাজমান তা হলো তিনি বর্তমানের কবি এবং তিনি সচেতনতার কবি। বর্তমানকে তিনি মর্যাদা দিয়েছেন। ফলে অস্পষ্ট অতীত তার ক্ষণকালের ছায়া ফেলেছে মাত্র তাঁর অন্তর্লোকের সীমানায়। তিনি পরিপূর্ণ অতীত হতে পারেননি বা হননি। কবি বলেছেন :

‘আপাতত এই আনন্দে গর্বে বেড়াই নেচে কালিদাসতো নামেই আছেন আমি আছি বেঁচে।’

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ মানবপ্রেমের চারণ কবি। প্রকৃতিকে এক অন্তর্নিহিত নির্যাসশক্তি সৃষ্টিকর্তা দান করেন, যা পার্থক্য স্পষ্ট করে জড় বস্তু থেকে। জড় বস্তুর প্রকৃতি আদি-অনাদি একইরূপে প্রকাশিত। প্রকৃতির সৃষ্টিশীল ক্ষমতা নেই। মানুষ তার সৃষ্টিতে অমর। কবি বলেছেন :

‘পাখিরে দিয়েছো গান, গান সেই গান,

তার বেশি করে না সে দান

আমারে দিয়েছো স্বর, আমি তার বেশি

করি দান

আমি গাহি গান।’

বাংলার ঋতু পরিক্রমায় রবীঠাকুরের রোমান্টিকতার ইঙ্গিত পাওয়া যায়। প্রকৃতির সবকিছু খুঁটে খুঁটে নিবিড় আত্মীয়তা সৃষ্টি করা মানুষের পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠে না, তবুও কবি জন্ম রোমান্টিক। দখিনা বাতাস, ফাগুনের আগুনমম, কোকিলের কুজন, পিয়ালের ছায়ায় পূর্ণিমা তিথি কবির অন্তরের গভীর দুয়ার যে রঙে রাঙিয়ে দিয়েছে তারই লালিমা স্মরণে কবি গাইলেন :

‘তব আমি জন্ম রোমান্টিক

আমি যেই পথের পথিক

যে পথ দেখায়ে চলে দখিনা বাতাসে

পাখির ইশারা যায় যে পথের অলক্ষ্য

আকাশে’।

লেখক : সামীম আহমেদ খান, সভাপতি, জাতীয় কবিতা পরিষদ, চাঁদপুর জেলা শাখা।

৩১ সংস্থা প্রধানদের সঙ্গে বিকেলে ইসির বৈঠক

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৫, ১২:৫১ অপরাহ্ণ
৩১ সংস্থা প্রধানদের সঙ্গে বিকেলে ইসির বৈঠক

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে। এবার সংসদ নির্বাচনের ঠিক দুই মাস আগে তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে আগেই জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সে হিসেবে আসছে ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে সংসদ ভোটের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে বলেই জানিয়েছে ইসি। তফসিল ঘোষণার আগে এবার সব মন্ত্রণালয়, বিভাগের সচিব ও বিভিন্ন দপ্তর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে যাচ্ছে নাসির উদ্দিন কমিশন। বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিকেল ৩টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সম্মেলন কক্ষে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। সরকারের ৩১টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সাথে বৈঠকে ২২টি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে জোর দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ইসি।
যে ৩১ মন্ত্রণালয় ও সংস্থা থাকবে বৈঠকে
মন্ত্রিপরিষদ সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন, নৌপরিবহন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, সমন্বয় ও সংস্কার দপ্তর সচিব, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব, অর্থ বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব।
আরও থাকবেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, সচিব (রুটিন দায়িত্ব), সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের মহাপরিচালক, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ বেতারের চেয়ারম্যান, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ঢাকার প্রধান প্রকৌশলী, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সচিব, কারা মহাপরিদর্শক।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রান্সফর্মার বিস্ফোরণে ৮ শিক্ষার্থী দগ্ধ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৫, ১২:৪৭ অপরাহ্ণ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রান্সফর্মার বিস্ফোরণে ৮ শিক্ষার্থী দগ্ধ

ট্রান্সফর্মার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে বড় হুজুর বাড়ি দারুল নাজাত মহিলা মাদ্রাসায় ।এতে আট শিক্ষার্থী দগ্ধ হয়েছে। তাদের মধ্যে পাঁচজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তিনজনকে জরুরি বিভাগে অবজারভেশনে রাখা হয়েছে। বুধবার (২৯ অক্টোবর) বিকেল পৌনে চারটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে রাতে তাদের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। দগ্ধরা হলেন- সাদিয়া আক্তার (১২), রুবাইয়া (৯), আয়মান (৬), নুসরাত (১০), আলিয়া (৩০), তুইবা (৬), রওজা (১৩) ও আফরিন (১৩)।
দগ্ধ আফরিনের মামা মো. আনোয়ার জানান, আমরা জানতে পারি বুধবার বিকেলের দিকে হঠাৎ মাদ্রাসার পাশে বিদ্যুতের ট্রান্সফর্মার বিস্ফোরণ হয়। এ সময় ওই মাদ্রাসার চতুর্থ তলায় শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করছিল। আগুনের ফুলকি মাদ্রাসার ভেতর ঢুকে গেলে দগ্ধ হয় শিক্ষার্থীরা। পরে রাতেই তাদের দগ্ধ অবস্থায় দ্রুত উদ্ধার করে জাতীয় বার্নে নিয়ে আসা হয়।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক ডা. শাওন বিন রহমান জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ট্রান্সফর্মার বিস্ফোরণ হয়ে দগ্ধ ৮ মাদ্রাসা শিক্ষার্থী এসেছে। তাদের মধ্যে, সাদিয়ার ১৩ শতাংশ, রুবাইয়ার ৫ শতাংশ, আয়মানের ২ শতাংশ, নুসরাতের ৩ শতাংশ, তুইবার ৩ শতাংশ, রওজার ৩ শতাংশ, আলিয়ার ১৪ শতাংশ ও আফরিন ৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। পাঁচজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি তিনজনকে জরুরি বিভাগে অবজারভেশনে রাখা হয়েছে।

ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ পুরোপুরি উপেক্ষা করা হয়েছে

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৫, ১১:৩০ পূর্বাহ্ণ
ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ পুরোপুরি উপেক্ষা করা হয়েছে

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ পুরোপুরি উপেক্ষা করা হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জনগণের সঙ্গে এটা একটা প্রতারণা। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এটা প্রতারণা। এটা ঐক্য হতে পারে না। তাহলে এই কমিশন কেন করা হয়েছিল?
বুধবার (২৯ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক এহসান মাহমুদের ‘বিচার সংস্কার নির্বাচন : অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে বাংলাদেশ’ বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে গতকাল মঙ্গলবার সুপারিশ জমা দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব বলেন, যে বিষয়গুলোতে তারা একমত ছিলেন না, সেখানে তারা নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছিলেন। সেই নোট অব ডিসেন্ট সুপারিশে লিপিবদ্ধ করার একটা প্রতিশ্রুতি ছিল কমিশনের। কিন্তু অবাক হয়ে তারা লক্ষ্য করলেন, সুপারিশে সেই বিষয়গুলো নেই। নোট অব ডিসেন্টগুলো পুরোপুরি উপেক্ষা করা হয়েছে। ইগনোর করা হয়েছে। এটা তো ঐক্য হতে পারে না। তাহলে ঐকমত্য কমিশনটি করা হয়েছিল কেন?
মির্জা ফখরুল বলেন, এত বড় একটা অভ্যুত্থান, এত ত্যাগের বিনিময়ে, এত প্রাণের বিনিময়ে সেটাকে ঠিকভাবে জাতির কল্যাণে কাজে লাগানো যাচ্ছে না। দুর্ভাগ্যজনকভাবে দেখা যাচ্ছে, যতই দিন যাচ্ছে, ততই বিভক্ত বাড়ছে। বিভক্ত হয়ে পড়াটা, এটা কারা করছেন, কেন করছেন, এটাও উপলব্ধি করতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, আপনি কিন্তু এইবার জনগণের সামনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, ওয়াদাবদ্ধ। আপনি এখানে সত্যিকার অর্থেই যেটুকু সংস্কার দরকার, সেই সংস্কারগুলো করে আপনি জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য একটা নির্বাচন দেবেন। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যে পার্লামেন্ট আসবে, সেই পার্লামেন্ট এই দেশের সংকটগুলো সমাধান করবে।
প্রকাশনা উৎসবে আরও উপস্থিত ছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, চর্চা ডটকমের সম্পাদক সোহরাব হাসান, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক, লেখক ও সাংবাদিক শাহ্‌নাজ মুন্নী প্রমুখ।