মেঘনা-ধনাগোদা বেড়িবাঁধ সড়ক যেনো মরণ ফাঁদ
                                                                    
মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের ৬৪ কি. মি. বেড়িবাঁধ। এ বেড়িবাঁধ সড়কের বিভিন্ন স্থান  ধসে গিয়ে  ছোট-বড় শতাধিক বিপজ্জনক গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। গর্তগুলো যেনো মরণ ফাঁদ। প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে পথচারী ও যানবাহন। এলাকাবাসীর আশঙ্কা, যে কোনো মুহূর্তে ঘটতে পারে বড়ো ধরনের দুর্ঘটনা। মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের বেড়িবাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)-এর হলেও পাকা সড়কটি সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের  ব্যবস্থাপনায় নির্মিত । এ সড়কটি ব্যবহার করে মতলব উত্তর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা, ঢাকা থেকে চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলা, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালীসহ দক্ষিণ অঞ্চলের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় চলাচল করা যায়।
এ এলাকার বাসিন্দারা জানান, বৃষ্টির কারণে এই রাস্তার দু পাশে অনেক গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এ রাস্তা দিয়ে সবসময় গাড়ি  চলাচল করে। রাস্তার গর্তগুলো পূরণের ব্যবস্থা না করলে যে কোনো মুহূর্তে প্রাণহানির মতো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কথা হলো, দুর্ঘটনা ঘটলে দায় হবে কার? স্থানীয়দের অভিযোগ, বিষয়টি জানার পরও সওজ বিভাগ এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।
অটোবাইক চালক ওমর আলী জানান, রাস্তা নির্মাণের ২/৩ বছর যেতে না যেতেই রাস্তার দুপাশে ছোট-বড় বহু গর্ত হয়েছে। যার কারণে সব সময় সতর্ক হয়ে গাড়ি চালাতে হয়। যাতে করে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে। মোটরসাইকেল চালক রুবেল জানান, ‘দিনে কোনোভাবে চলাচল করা গেলেও রাতে অতিরিক্ত ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয়।’ পিকাপের ড্রাইভার আলী হোসেন জানান, রাস্তাটা তৈরির  কয়েক বছর না যেতেই  সড়কে বিভিন্ন জায়গায়  বড়ো গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু মেরামত করা হচ্ছে না। দূর থেকে এ গর্তগুলো অনেক সময় দেখা যায় না। রাতে সমস্যা আরো ভয়াবহ। এতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে আমাদের।
ষাটনল ইউপি চেয়ারম্যান ফেরদৌস আলম জানান, বেড়িবাঁধ সড়কে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। গর্তগুলো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। দ্রুত মেরামত করা না হলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি আরো বাড়বে। সাংবাদিক গোলাম নবী খোকন জানান, এ সড়কে অনেক  মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ গর্ত রয়েছে। এগুলো দুর্ঘটনা প্রবণ। মেরামত না হলে যে কোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। সংশ্লিষ্ট বিভাগকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। চাঁদপুর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান জানান, অতিবৃষ্টিতে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা মেরামতের ব্যবস্থা নিয়েছি ও নেবো।
চাঁদপুর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন জানান, এ সড়কটির গর্তগুলো   মেরামতের জন্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মতলব ব্রীজ থেকে বেড়িবাঁধের পূর্ব অংশে সংস্কার কাজের জন্যে টেন্ডার দেয়া হয়েছে। পশ্চিম এলাকার মেরামতের কাজ এখনও ঠিকাদারের আওতায় আছে। আমরা তাদেরকে চিঠি দিয়েছি এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যে।
মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী (চ. দা.) সেলিম শাহেদ জানান, মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের হলো বেড়িবাঁধটি। যান চলাচলের জন্যে বেড়িবাঁধের ওপরে পাকা সড়ক নির্মাণ করেছে চাঁদপুর সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। বেড়িবাঁধের দুপাশে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হলে আমরা মেরামতের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করি। পাকা সড়ক সংস্কারের দায়িত্ব হলো সওজ বিভাগের।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, বেড়িবাঁধের বিভিন্ন জায়গায় গর্ত দেখা গেছে। এগুলো সড়ক দুর্ঘটনার কারণ হতে পাড়ে। আমি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলবো, এ বিষয়ে যাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ব্যবস্থা নিচ্ছি, নেবো, ঠিকাদারকে বলেছি, এ কথাগুলো শুনতে  শুনতেই অভ্যস্ত হয়ে গেছেন বলে জানালেন সচেতন মহল। কিন্তু কাজটা সঠিক সময়ে হচ্ছে না। যদি সড়কের এ গর্তে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে করো প্রাণ যায়, তাহলে এর দায় কে নেবে? তারা মনে করছেন, দুর্ঘটনা এড়াতে দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা নিতে হবে।

                
                
                                
                                
                                                
                                            
                                            
                                            
                                            
                                            
                                    
                                            
                                            
                                            
                                            
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
আপনার মতামত লিখুন