খুঁজুন
                               
বুধবার, ৩০ জুলাই, ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ, ১৪৩২

জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে দেওয়ান সামির

মেঘনা ট্র্যাপের নেপথ্যে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা?

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫, ৮:৫৬ পূর্বাহ্ণ
মেঘনা ট্র্যাপের নেপথ্যে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা?

সুন্দরী নারী দিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বাংলাদেশে নিযুক্ত সউদী আরবের রাষ্ট্রদূত ইসা বিন ইউসেফ আলদুহাইনের কাছ থেকে পাঁচ মিলিয়ন ডলার আদায়ের চেষ্টায় গ্রেফতারকৃত মডেল মেঘনা আলমের সহযোগি দেওয়ান সমির রিমান্ডে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র দাবি করেছে, দেওয়ান সামির এই চক্রের বেশ কয়েকজনের নাম বলেছে। একই সাথে কোন কোন রাষ্ট্রদূতকে সুন্দরী নারী দিয়ে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে তাদেরও কয়েকজনের নাম বলেছে। যে তালিকায় কয়েকজন রাষ্ট্রদূতের নাম রয়েছে। এ ছাড়া এই চক্রটি ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ দ্বারা পরিচালিত বলে ইতোমধ্যে কয়েকটি অনলাইন মিডিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এসেছে। তাতে দাবি করা হয়েছে, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এর এজেন্ট হিসাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তা এবং কয়েকজন সাংবাদিক মেঘনার মতো পতিতাদের দিয়ে হানিট্র্যাপ বানিয়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টায় লিপ্ত। তাদের টার্গেট বিদেশে বাংলাদেশের শ্রমবাজারে ধ্বস নামানো। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে বিলিয়ন বিলিয়ন রেমিট্যান্স আসছে। যা দেশের অর্থনীতিকে ক্রমে চাঙ্গা করছে।

সূত্র জানায়, মডেল মেঘনাকে ব্যবহার করে সউদীর বিদায়ী রাষ্ট্রদূতের কাছে পাঁচ মিলিয়ন ডলার দাবি করা হলে তিনি অনানুষ্ঠিকভাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করার পর থলের বেড়াল বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার ‘র’ এর এজেন্টদের চিহ্নিত করা না গেলে আগামীতে দু’একজন উপদেষ্টা এবং কয়েকজন রাষ্ট্রদূতও এমনিভাবে ফেঁসে যেতে পারেন বলে অনলাইন মিডিয়ায় আভাস দেয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রিমান্ডে মেঘনা আলমের সহযোগি দেওয়ান সামির গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। প্রাথমিক জ্ঞিাসাবাদেরই সে সুন্দরী মেয়েদের দিয়ে ফাঁদে ফেলে প্রতারণার কথা স্বীকার করেছে। সূত্র জানায়, ইতোমধ্যে রিমান্ডে জ্ঞিাসাবাদে দেওয়ান সামির এ সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্য দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বিদায়ী সউদী রাষ্ট্রদূতের কাছে ৫ মিলিয়ন ডলার দাবি করা হয় কয়েকজনের বুদ্ধিতে। তাদের ধারনা ছিল, নিজের মান বাঁচাতে রাষ্টদুত শেষ মুহূর্তে পাঁচ মিলিয়ন ডলার দিতে রাজি হবেন। কিন্তু ১ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার দিতে রাজি হন তিনি। প্রতারকচক্র পাঁচের নিচে নামতে রাজি হয় নি। বরং বার বার রাষ্ট্রদূতকে ফাঁসানোর জন্য ভয়ভীতি দেখাতে থাকে। চক্রের হোতাদের বুদ্ধিতে এ কাজটি করে দেওয়ান সামির নিজেই। চক্রের হোতা কারা এ প্রশ্নের জবাবে সামির কয়েকজনের নাম বলেছে। যে তালিকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা এবং কয়েকজন সাংবাদিকের নাম পুলিশ জানতে পেরেছে। পুলিশ এও জেনেছে এই হানিট্র্যাপে কয়েকজন বিদেশি রাষ্ট্রদূত পা দিয়ে ইতোমধ্যে বিপদের মধ্যে আছেন। তারা কারা সে বিষয়ে সূত্র কিছু জানাতে চায় নি।

অন্যদিকে, মডেল মেঘনা আলমকে দিয়ে হানিট্র্যাপ সাজানোর নেপথ্যে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ জড়িত বলে অনলাইন মিডিয়ায় চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা মেঘনাকে প্রথমে সউদী রাষ্ট্রদূতের সাথে প্রথম পরিচয় করিয়ে দেন। এর আগে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন অফিসেও মেঘনাকে নিয়ে গিয়েছিলেন ওই কর্মকর্তা। মেঘনা বেশ কিছুদিন ধরেই ভারতীয় দূতাবাসের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখে চলেছেন। কয়েকবার ভারত সফরও করেছেন। ভারতের স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানেও তাকে হাইকমিশনের কর্মকর্তাদের সাথে দেখা গেছে। এসব কারণেই অনলাইন মিডিয়ায় জানানো হয়েছে, বিদেশে বাংলাদেশের শ্রমবাজার ধ্বংস করতেই ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা মেঘনাকে টোপ হিসাবে ব্যবহার করেছে। শুধু মেঘনা আলম নয়, তারা মেঘনার মতো সুন্দিরী নারীদের দিয়ে এই ট্র্যাপ অব্যাহত রেখেছে। যে ট্যাপে সরকারের দুজন উপদেষ্টা এবং বেশ কয়েকজন রাষ্ট্রদূত ইতোমধ্যে পা দিয়ে ফেলেছেন। যে কোনো মুহূর্তে তারাও ফেঁসে যেতে পারেন। অনলাইন মিডিয়ায় সতর্ক করা হয়েছে, বাংলাদেশের গোয়েন্দারা যেন যতদ্রুত সম্ভব ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্টদের চিহ্নিত করে। তা না হলে তারা দেশের শ্রমবাজার ধ্বংসহ বিদেশে ইউনূস সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করতে পারে।

মেঘনা আলমকে আটকাদেশ দেয়ার পর কথিত মানবাধিকার সংগঠনগুলো যেভাবে মেঘলার পক্ষে বিবৃতি দিচ্ছে তাতে অনেকেরই সন্দেহ এটি ছিল আন্ত:রাষ্ট্রীয় যড়যন্ত্রের অংশ। ইউনূস সরকারকে বেকায়দায় ফেলার চক্রান্ত। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে শুধুমাত্র সউদী আরবে জনশক্তি রফতানি অব্যাহত আছে। বন্ধ আছে ব্রুনাই, দুবাই, কাতার, বাহরাইন, মালয়েশিয়াসহ সবগুলো দেশে জনশক্তি রফতানি। সউদী আরবের বিরুদ্ধে কুৎসা রটিয়ে যড়যন্ত্রকারীরা প্রায় ৩০ লাখ সউদী প্রবাসীর ভবিষ্যত অনিশ্চয়তায় ফেলার পাশাপাশি রেমিট্যান্সের প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। মেঘনার পক্ষ নেয়ায় তাই কথিত মানবাধিকার সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ সরব দেখা গেছে প্রবাসীসহ নেটিজেনদের। অনেকেই কমেন্ট করে তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। একজন লিখেছেন, এটা নিশ্চিত ভারতপন্থী তথা আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের যড়যন্ত্র ছিল। তারা যে কোনো উপায়ে ইউনূস সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে মেঘনার পক্ষে বিবৃতি দিচ্ছে। অরেকজন লিখেছেন, মেঘনাকে যখন পুলিশ গ্রেফতার করতে যায় তখন সে যে পোশাকে ফেসবুক লাইভে এসেছিল, তাতে বোঝাই যায় সে প্রথম শ্রেণির পতিতা। মানবাধিকার সংগঠনগুলো পতিতার পক্ষ নিয়ে তাদের গ্রহনযোগ্যতা হারিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রফেসরের পোস্টের জবাবে আরেকজন লিখেছেন, হাসিনা যখন হাজার হাজার মানুষের উপর গুলি চালিয়েছিল তখন কোথায় ছিলেন আপনারা? তখন আপানাদের মানবতা জাগ্রত হলো না কেন? আরেকজন লিখেছেন, গাজায় হাজার হাজার নিরীহ মানুষকে খুন করছে ইসরাইলি বাহিনী। অথচ মানবাধিকার সংস্থাগুলো সেগুলো চোখে দেখে না। মেঘনার মতো প্রথম শ্রেণির পতিতাদের জন্য এদের মায়াকান্না দেখে অবাক হই। কেউ কেউ মেঘনার অন্ধকার জগতের কাহিনী বর্ণনা করে লিখেছেন, ঢাকার কূটনৈতিক পাড়ায় এসব পতিতাদের আনাগোনা বন্ধ না করলে এরকম যড়যন্ত্র চলতেই থাকবে।

এদিকে, কারাগারে আটক মেঘনার বাবা দাবি করেছেন, তার মেয়ে জানতো না যে রাষ্ট্রদূত বিবাহিত। এই যুক্তিকে অনেকেই অবান্তর বলে উল্লেখ করে বলেছেন, একজন রাষ্ট্রদূত যখন কোনো দেশে নিয়োগপ্রাপ্ত হন, তখনই তার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পত্রিকা তথা সংশ্লিষ্ট দেশের কূটনৈতিক মিশনসহ ঢাকাস্থ মিশনে বিস্তারিত তথ্য দেয়া থাকে। সউদী রাষ্ট্রদূতেরও তথ্য দেয়া ছিল। আর অবিবাহিত হলেই কারো সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়াতে হবে কেন? পতিতাবৃত্তিরও একটা সীমা থাকা উচিত।

প্রচলিত আইনেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে: বিশেষ সহকারী
অন্যদিকে, প্রচলিত আইনেই মডেল মেঘনা আলমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা কমিটি সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

সম্প্রতি মডেল মেঘনা আলমকে বিশেষ আইনে গ্রেফতার করা হয়েছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী বলেন, এ আইনটা ব্যবহার হচ্ছে, একটা ক্ষেত্রে ব্যবহার হচ্ছে বিষয়টা কিন্তু তা না। এটা বেআইনি কাজতো না। এখন আপনি যদি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে কেন কি হয়েছে, একটা ঘটনা ঘটেছে, অভিযোগ আসছে, কাজ হচ্ছে, হাইকোর্টে গেছে। হাইকোর্টে গেলেইতো বিচারাধীন ইস্যু। এ বিষয়েতো কথা বলা ঠিক হবে না। আমরা দেখি ওখান থেকে কি আসে। তিনি বলেন, তবে একটা বিষয়ে নিশ্চিত যে, প্রচলিত আইনেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কারো প্রতি বেআইনি কোনো আচরণ করা হয়নি। আপনারা সব তথ্য পাবেন। অগ্রিম তথ্য নিয়েতো আলোচনা করা ঠিক না।

মেঘনার বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগে বলা হয়, ১০ এপ্রিল রাজধানীর ভাটারা এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্র সুন্দরী মেয়েদের মাধ্যমে বিভিন্ন বিদেশি রাষ্ট্রদূত এবং ধনাঢ্য ব্যক্তিদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আদায়ের চেষ্টা করে। ওইদিন রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে মেঘনাকে আটক করা হয়। সহযোগি দেওয়ান সমিরকেও সেখানে পাওয়া যায়। মেঘনা আলমকে গ্রেফতার করে প্রথমে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু তিনি কোনো তথ্য না দেয়ায় তাকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে গ্রেফতার দিখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত বাদী ও বিবাদীপক্ষের বক্তব্য শুনে মেঘনা আলমকে ৩০ দিনের আটকাদেশ দিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। অন্যদিকে, মেঘনার সহযোগি দেওয়ান সামিরকে গ্রেফতার করে গত শনিবার আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাটারা থানার এসআই আরিফুল ইসলাম। আসামিপক্ষে আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত তার পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

আরও ৮০ ফিলিস্তিনি গাজায় নিহত, অনাহারে মৃত্যু ১৪ জনের

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই, ২০২৫, ৯:৪৩ পূর্বাহ্ণ
আরও ৮০ ফিলিস্তিনি গাজায় নিহত, অনাহারে মৃত্যু ১৪ জনের

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় একদিনে কমপক্ষে আরও ৮০ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া ইসরায়েলের অবরোধের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে অনাহারে নতুন করে আরও ১৪ ফিলিস্তিনি মারা গেছেন বলে জানিয়েছে সেখানকার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। অনাহারে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন শিশু। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় আরও অন্তত ৮০ জন নিহত হয়েছেন। একইসঙ্গে ক্রমবর্ধমান দুর্ভিক্ষে আরও ১৪ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে দুটি শিশুও রয়েছে বলে সোমবার জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধ শুরু করার পর অপুষ্টিজনিত কারণে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪৭ জনে, যাদের মধ্যে ৮৮ জনই শিশু।
সম্প্রতি গাজায় খাদ্য সংকট আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। চলতি বছরের মার্চ মাসে ইসরায়েল পুরোপুরি অবরোধ আরোপ করে, যা মে মাসে আংশিক তুলে নেওয়া হলেও এখনও সীমিত পরিমাণে ত্রাণ ঢুকছে। জাতিসংঘ ও ত্রাণ সংস্থাগুলোর সতর্কতা সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় সাহায্য ঢুকতে পারছে না।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তাকারী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ–এর প্রধান ফিলিপ ল্যাজারিনি জানান, গাজায় অবস্থানরত তার সহকর্মীরা মানুষজনকে এমন অবস্থায় দেখছেন যেন তারা “না বেঁচে আছে, না মরেছে – যেন হাঁটতে থাকা লাশ”।
জাতিসংঘের একটি সম্মেলনে তিনি বলেন, “শুধু ক্ষোভ বা নিন্দা জানানো যথেষ্ট নয়। অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে হবে, দুর্ভিক্ষ রোধ করতে হবে এবং বন্দিদের মুক্ত করতে হবে।”এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্কটল্যান্ড সফরে সাংবাদিকদের বলেন, গাজায় প্রকৃত অর্থেই দুর্ভিক্ষ চলছে এবং ইসরায়েল এ অবস্থার জন্য “বড় ধরনের দায়” বহন করে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু আগের দিন বলেন, “গাজায় কোনো দুর্ভিক্ষ নেই”। তবে সোমবার এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনিও স্বীকার করেন, গাজার পরিস্থিতি “কঠিন” এবং মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে ইসরায়েল কাজ করছে।
ট্রাম্প জানান, গাজায় খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিতে “বাউন্ডারিবিহীন খাদ্য কেন্দ্র” স্থাপনের পরিকল্পনা আছে, যাতে সবার সহজে প্রবেশ নিশ্চিত হয়। এ কাজে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশগুলোর সঙ্গেও কাজ করবে বলে জানান তিনি।
ইসরায়েল ঘোষণা দিয়েছে, তারা গাজার কিছু অংশে হামলা স্থগিত রাখবে এবং নতুন করিডোর খুলবে যাতে ত্রাণ প্রবেশ বাড়ানো যায়। জাতিসংঘ এই উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও সংস্থাটির মানবিক প্রধান বলেন, সাহায্যের পরিমাণ আরও বাড়াতে হবে।
আল জাজিরার সাংবাদিক তারেক আবু আজজুম জানান, ইসরায়েল যেসব ‘মানবিক বিরতি’র কথা বলছে, সেগুলো আসলে খুবই সীমিত এবং কয়েক ঘণ্টার জন্য হয়, যা নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় কার্যকর থাকে এবং এতে আন্তর্জাতিক কোনো তদারকি থাকে না।
এদিকে গাজায় শিশু খাদ্যের ঘাটতিও মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। গাজা সিটি’র আল-শিফা হাসপাতালে এক চিকিৎসক আল জাজিরাকে জানান, অপুষ্টিজনিত কারণে শিশু মোহাম্মদ ইব্রাহিম আদাস মারা গেছে, কারণ তার জন্য প্রয়োজনীয় ফর্মুলা দুধ পাওয়া যায়নি।
গাজা সরকারের গণমাধ্যম অফিস জানায়, এ ধরনের পরিস্থিতিতে ৪০ হাজারের বেশি শিশু ধীরে ধীরে মৃত্যুর মুখে পড়ছে। কারণ গত ১৫০ দিনে ইসরায়েল শিশু খাদ্য ঢুকতে দেয়নি গাজায়।
সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা সব সীমান্ত ক্রসিং অবিলম্বে এবং শর্তহীনভাবে খুলে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি, যাতে শিশু খাদ্য ও জরুরি মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে পারে।”

চাঁদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতালে জুলাই পুনর্জাগরণে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প

উজ্জ্বল হোসাইন
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই, ২০২৫, ৯:৩২ পূর্বাহ্ণ
চাঁদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতালে জুলাই পুনর্জাগরণে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প

‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে চাঁদপুরে স্বাস্থ্যসেবা এবং মানবিক কার্যক্রমের আওতায় অনুষ্ঠিত হলো রক্তদান কর্মসূচি ও ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প। সোমবার (২৮ জুলাই ২০২৫) জেলা প্রশাসন ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের যৌথ আয়োজনে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চাঁদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতালে এই স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
এতে সার্বিক সহযোগিতা করে চাঁদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন, সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ নুর আলম দীন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. এরশাদ উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আব্দুল হান্নান রনি, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রফিকুল হাসান ফয়সাল, চাঁদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতালের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. মোহাম্মদ খবির উদ্দিন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ইকবাল আজম, আইটি কর্মকর্তা উজ্জ্বল হোসাইন, চিকিৎসক-কর্মকর্তাবৃন্দ। স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্পে বিনামূল্যে কোভিড-১৯ ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাক্সিন, বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় ও ডেঙ্গু পরীক্ষা, সাধারণ রোগীদের জন্যে স্বাস্থ্য সেবা, স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি, চক্ষু পরীক্ষা, বিনামূল্যে চশমা ও ওষুধ বিতরণ করা হয়।
এই কার্যক্রমে চাঁদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতাল, চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা সার্বিক সহযোগিতা করেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, জুলাই পুনর্জাগরণ শুধু একটি সামাজিক কর্মসূচি নয়, এটি আমাদের নৈতিক ও মানবিক চেতনার বহিঃপ্রকাশ। স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য। তিনি আরও বলেন, আমরা চাই শুধু একদিন নয়, বছরের বিভিন্ন সময়েও জনগণের মাঝে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে যাক। এক্ষেত্রে প্রশাসন, চিকিৎসক এবং জনগণের সম্মিলিত অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।

কালি ও কলম পুরস্কার পেলেন মুহাম্মদ ফরিদ হাসানসহ পাঁচ তরুণ লেখক

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫, ৮:৫৩ পূর্বাহ্ণ
কালি ও কলম পুরস্কার পেলেন মুহাম্মদ ফরিদ হাসানসহ পাঁচ তরুণ লেখক

দেশের নবীন কবি ও লেখকদের সাহিত্যচর্চাকে অনুপ্রাণিত ও গতিশীল করার লক্ষ্যে মাসিক সাহিত্যপত্র কালি ও কলম ২০০৮ সাল থেকে প্রবর্তন করে কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার। সেই স্রোতধারায় শনিবার প্রদান করা হলো সিটি ব্যাংক নিবেদিত ২০২৪ সালের কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার। কবিতা, কথাসাহিত্য, প্রবন্ধ ও গবেষণা, মুক্তিযুদ্ধ ও বিপ্লব এবং শিশু-কিশোর সাহিত্য অবদানের জন্যে পাঁচ তরুণ কথাশিল্পী পেয়েছেন এই পুরস্কার। এরমধ্যে চাঁদপুরের লেখক মুহাম্মদ ফরিদ হাসান প্রবন্ধ ও গবেষণা শাখায় ‘শতবর্ষে চা শ্রমিক আন্দোলন : ডেডলাইন ২০ মে ১৯২১’ গ্রন্থের জন্যে পুরস্কার পেয়েছেন।
‘সতীতালয়’ কাব্যগ্রন্থের কবিতা শাখায় পুরস্কার জয় করেছেন অস্ট্রিক ঋষি। ‘নির্বাচিত দেবদূত’ গ্রন্থের জন্য কথাসাহিত্যে পুরস্কার পেয়েছেন সাজিদ উল হক আবির। মুক্তিযুদ্ধ ও বিপ্লব শাখায় ‘একাত্তরে অবরুদ্ধ দিনের দুঃসাহস : সাগাই ফোর্ট এস্কেপ’ গ্রন্থের জন্যে স্বরলিপি এবং শিশু সাহিত্যে তিলকুমারের যাত্রা গ্রন্থের জন্যে পুরস্কার পেয়েছেন নিয়াজ মাহমুদ।
ধানমন্ডির বেঙ্গল শিল্পালয়ে এই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কালি ও কলমের সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি এমেরিটাস অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও প্রাবন্ধিক এমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাসরুর আরেফিন এবং কালি ও কলমের প্রকাশক আবুল খায়ের। পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করে গানের দল ও কৃষ্ণকলি।
প্রসঙ্গত, কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার তরুণদের জন্যে প্রবর্তিত সর্বোচ্চ সম্মানজনক পুরস্কার।পুরস্কারটির অর্থমূল্য দুই লাখ টাকা। এ বছরের জানুয়ারি মাসে পুরস্কারের জন্যে বই আহ্বান করা হয়। কবিতা, কথাসাহিত্য, প্রবন্ধ ও গবেষণা, মুক্তিযুদ্ধ ও বিপ্লব এবং শিশু-কিশোর সাহিত্য এই পাঁচটি বিষয়ে বই জমা নেয়া হয়েছে। বই জমা দেওয়ার পর বিজ্ঞ বিচারকমণ্ডলীর পর্যবেক্ষণ-পর্যালোচনার ভিত্তিতে শ্রেষ্ঠ গ্রন্থসমূহ নির্বাচন করা হয়।