খুঁজুন
                               
বুধবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২৫, ১৩ কার্তিক, ১৪৩২

‘আমি চিৎকার করে দৌড়াচ্ছি, স্যার আমাকে বলছেন, আল্লাহকে ডাকেন’

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২২ জুলাই, ২০২৫, ১১:৩৬ পূর্বাহ্ণ
‘আমি চিৎকার করে দৌড়াচ্ছি, স্যার আমাকে বলছেন, আল্লাহকে ডাকেন’

রাজধানীর উত্তরায় গতকাল সোমবার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক‍্যাম্পাসে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের ঘটনার একটি বিবরণ দিয়েছেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির একজন শিক্ষক। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক তাসলিমা আকতারের নিজের সন্তানও আটকা পড়েছিল দুর্ঘটনাস্থলে। তখন তিনিও ক্যাম্পাসে ছিলেন। বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমানটি স্কুল চত্বরের একটি দোতলা ভবনে বিধ্বস্ত হয়। যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পরপরই আগুন ধরে যায় স্কুল ভবনে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৭ জনের নিহত হওয়ার তথ্য জানা গেছে। আহত দেড় শতাধিক। হতাহতের ঘটনায় আজ রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হচ্ছে। ‘ভয়াবহ একুশে জুলাই ২০২৫’ শিরোনামে সেই ঘটনার বিবরণ গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে তাসলিমা আকতার তাঁর ফেসবুকে লিখেছেন। তাঁর অনুমতি নিয়ে সেই বিবরণ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো: প্রতিদিনের নিয়ম অনুযায়ী ছুটি হয় দুপুর ১টায়। আজকে আমার পরীক্ষার ডিউটি ছিল চার নং ভবনের ৮০৪ নম্বর রুমে। বেলা একটায় পরীক্ষা ডিউটি শেষ করে ছেলের ভবনের সামনে যাব, হঠাৎ মনে হলো রেস্ট নিই। ও নিজেই চলে আসবে আমার টিচার্স রুমে প্রতিদিনের মতো। আমি টিচার্স রুমে রেস্ট নিচ্ছি। তখন দুপুর ১টা ১১ মিনিটে, আমার ছেলের ফরম মাস্টার বাবুল স্যার আমাকে ফোন দিয়ে বললেন, ম্যাডাম আজকের সিনানের ছুটি হবে ১টা ৪০ মিনিটে। আমি বললাম, ক্লাস শেষ হলে ৭নং ভবনের দোতলায় পাঠিয়ে দেবেন টিচার্স রুমে। আমি ওকে স্যার বলেই ফোনটা কেটে দিলাম। সাথে সাথে বোম ব্রাস্ট হওয়ার মত একটা সাউন্ড হইল—আমি মাঠের পাশে টিচার্স রুম থেকে দেখতে পেলাম, আমার ছেলের ভবনের সামনে আগুন।

আমার টিচার্স রুমে আমার সামনে আমার একজন সিনিয়র সহকর্মী জনাব এজাজ মাসুদ স্যার বসা ছিলেন। আমি এক চিৎকারে বললাম, স্যার আমার ছেলের ভবনে তো আগুন লাগছে। উনার ছেলে ওই ভবনেই পড়ে, কোনো কারণে সে আজকে আসে নাই। আমি চিৎকার করে দৌড়াচ্ছি, স্যার আমাকে বলছেন, দোয়া করেন আল্লাহকে ডাকেন। ৪০ সেকেন্ডের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাই।
দৌড়াতে দৌড়াতে আমার হাজব্যান্ডকে ফোন দিয়ে বলেছি, আমার ছেলের ভবনে আগুন লাগছে। যেখানে আগুন লাগছে, সেখানে গিয়ে দেখি, তিনটা গলিত লাশ। শুধু আইডি কার্ডটা পড়ে আছে। একটা বাচ্চার গায়ে কাপড় নাই, পুরো শরীর ঝলসে গেছে। সামনে গিয়ে দেখি, যে ভবনে আমার ছেলে ক্লাস করে, যেই রুমে আমার ছেলে ক্লাস করে, সেই রুমের চারদিকে ধোঁয়া। ছেলের ক্লাসরুমে আগুন, আমি বাইরে থেকে কী বুঝব, তাই ক্লাসে ঢুকতে চাইলাম। সেনাবাহিনীর দুইজন আর আমার কলেজের বিএনসিসি ছাত্ররা আমাকে ঢুকতে দিলো না…। আমি বারবার ঢুকতে চাইলাম, জোর করে ঢুকতে চাইলাম, আমাকে বাধা দিল দুজন, আমাকে জোর করে একপাশে নিয়ে গেল। আমি ডান পাশে ঘুরেই দেখি, আমার ছেলের ফরম মাস্টার বাবুল স্যার।
জিজ্ঞেস করলাম, স্যার আপনি এখানে, আমার ছেলে কই???
শুধু হাতটা ধরে বলল, ওরা ওপরে দুই তালায়। বিশ্বাস করলাম না। তারপর আমার একজন ছাত্র এসে বলল, ম্যাডাম কিছু হয় নাই, এই পাশে আসেন। ক্যানটিনের পাশে ওপরে ৭ থেকে আটজন মেয়ে বাচ্চাকে দেখা যাচ্ছিল। আমি আল্লাহর কাছে কী দোয়া পড়ছিলাম, আমার কিছুই মনে নাই। আমার বিভাগের আমার একজন সহকর্মী মুকুল স্যারের ভাগ্নিও ওই ভবনে আটকা পড়ছেন। সে পাশ থেকে ওপারে দৌড়াচ্ছেন আর চিৎকার করতেছেন। আমাকে দুইজন সেনাবাহিনী বসায় দিয়ে ধরে রাখলেন একপাশ থেকে। যেন আমি সামনে না যাই।
তারপর দোতলার সামনে গাছ ছিল, আম গাছ কেটে ফেলা হলো। গ্রিলের তালা ভাঙ্গা হলো, একপাশ ভেঙে ফেলা হলো। আমি শুধু দেখতে পাচ্ছি, কিছু ছাত্রী গ্রিলের নিচ দিয়ে দিয়ে বের হয়ে আসছে। ৮ থেকে ১০ জন ছাত্রী এবং একজন ম্যাডাম বের হওয়ার পর হঠাৎ আমার ছেলের চেহারা ভেসে উঠলো।
ওই মুহূর্তটা একজন মায়ের জন্য কী মুহূর্ত, সেটা বলে বোঝানো যাবে না, লিখেও শেষ করা যাবে না।
মুকুল স্যার যদি পারতো, তাকে দোতলা থেকেই টেনে বের করত। আমার ছেলেকে দেখার সাথে সাথে সে দৌড়ে গিয়ে জড়ায় ধরছে, বাবারে তুই তাড়াতাড়ি আয়। আমার মানিককে, আমার সন্তানকে আমি জড়াইয়া ধরলাম। যারা আমার ছেলের ক্লাসে আটকে ছিল, তারা কেউ বেঁচে ফিরে নাই। সবাই পুরে কয়লা হয়ে গেছে।
একজন মা বলতেছিল, বাবারে তুই আজকে আমার হাতের শেষ খাওয়াটা খাইয়া গেলি বাবা—আমি তো তোরে শেষ দেখা দেখতে পারলাম না।
মূলত বিমান ক্রাশ হয়ে ক্লাসরুমের ভিতরে ঢুকে গেছে। বিমান ক্রাশ হওয়ার সাথে সাথেই ১৫ মিনিটের মধ্যেই যা ধ্বংস হওয়ার, যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গেছে।
যাতে শরীর পুড়ে গেছে, তাদের বাঁচানো খুবই অসম্ভব, খুব খারাপভাবে শরীর পুড়ে গেছে।
এত কাছ থেকে কখনো দেখিনি। এত ভয়ঙ্কর!!
আমি রাত আটটা দশ মিনিটে সেই দুর্ঘটনাস্থলে আবার যাই। আমার ফরমের দুইটা মেয়ে অসুস্থ, তাদেরকে দেখার জন্য।
সেই ভবনের সামনে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়েছিলাম। রাত ৮টা ১৫ মিনিটের সময় বিজিবির একজন সদস্য নাম মাসুদ, তিনি ফোনে কাউকে বলছিলেন, আরও একটি লাশ পাওয়া গেছে, কিন্তু কয়েকটি পুড়ে যাওয়া খন্ড বিখন্ড অংশ।
হে রাব্বুল আলামিন, রাহমানুর রাহিম, তুমি উত্তম পরিকল্পনাকারী—শিশুদের এমন মৃত্যু তুমি দিয়েছো, বাবা-মা তাঁদের গলে যাওয়া লাশের শেষ চিহ্নটুকু দেখতে পাবে না।

তাসলিমা আকতার
প্রভাষক, ব্যবস্থাপনা বিভাগ, মাইলস্টোন কলেজ, ২১/০৭/২০২৫, সোমবার

সূত্র : প্রথম আলো।

উত্তাল সাগর, শক্তি সঞ্চয় করছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২৫, ১০:০৬ পূর্বাহ্ণ
উত্তাল সাগর, শক্তি সঞ্চয় করছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’

পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’ আরও উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে শক্তি সঞ্চয় করছে। এটি ঘনীভূত হয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। সোমবার (২৭ অক্টোবর) রাতে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ৮ নম্বর বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, সোমবার মধ্যরাতে ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১১৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১১৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি আরও উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এটি মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যা অথবা রাত নাগাদ ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ২ নম্বর (পুন.) ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করার জন্য কঠোরভাবে বারণ করা হয়েছে।

হাঁটা বন্ধ করবেন না, কেনো হাঁটবেন

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২৫, ৯:৫৯ পূর্বাহ্ণ
হাঁটা বন্ধ করবেন না, কেনো হাঁটবেন

হাঁটা বন্ধ করবেন না যেন, মস্তিষ্ক নয়, ডিমেনশিয়া শুরু হয় আপনার পা থেকে! বিশ্বজুড়ে বয়স্ক মানুষের অক্ষমতা ও নির্ভরশীলতার প্রধান কারণ হিসেবে ডিমেনশিয়া এখন এক ভয়াবহ বাস্তবতা। ২০২১ সালের হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বে প্রায় ৫ কোটি ৭০ লাখ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত ছিলেন, এবং প্রতিবছর নতুন করে আরও প্রায় ১ কোটি মানুষ এতে ভোগেন। অধিকাংশ মানুষই মনে করেন, মস্তিষ্ক সচল রাখাই ডিমেনশিয়া প্রতিরোধের মূল চাবিকাঠি। কিন্তু ভারতের অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস (এইমস) প্রশিক্ষিত স্নায়ুশল্য বিশেষজ্ঞ ডা. অরুণ এল. নাইক জানালেন চমকপ্রদ তথ্য—ডিমেনশিয়ার সূত্রপাত নাকি মস্তিষ্কে নয়, পা থেকেই!
ডিমেনশিয়া কী?
ডিমেনশিয়া কোনো একক রোগ নয়; এটি স্মৃতি, চিন্তাশক্তি ও দৈনন্দিন কাজের সক্ষমতাকে ধীরে ধীরে ক্ষয় করে এমন একাধিক স্নায়ুরোগের সামষ্টিক নাম। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি আরও জটিল হয়ে ওঠে এবং জীবনের মান নষ্ট করে দেয়। তবে সময়মতো নির্ণয়, যত্নশীল পরিচর্যা, জীবনযাপনে পরিবর্তন ও চিকিৎসার মাধ্যমে রোগীর অবস্থা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
ডিমেনশিয়া শুরু হয় পা থেকে
ডা. নাইক এক ভিডিও বার্তায় বলেন, “আপনি কি জানেন, ডিমেনশিয়া আসলে শুরু হয় আপনার পা থেকে? শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা পায়ের পেশিকে দুর্বল করে, যার ফলে স্যারকোপেনিয়া বা পেশি ক্ষয়ের ঝুঁকি বাড়ে। এখানেই শুরু হয় বিপদ। গবেষণায় দেখা গেছে, দুর্বল পায়ের কারণে জ্ঞানগত ক্ষমতা দ্রুত হ্রাস পায় এবং ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।”
তিনি ব্যাখ্যা করেন, শরীরের সক্রিয় পেশি এমন রাসায়নিক উৎপাদন করে যা মস্তিষ্ককে সচল রাখে। এই রাসায়নিকগুলোর নাম ব্রেইন-ডিরাইভড নিউরোট্রফিক ফ্যাক্টর (BDNF), যা মস্তিষ্কের স্মৃতিনির্ভর অংশ হিপোক্যাম্পাসে সংযোগ বৃদ্ধি করে। শক্তিশালী পা শুধু ভারসাম্য বজায় রাখে না, বয়স বাড়লেও পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা কমায়। “৬৫ বছরের পর পড়ে যাওয়াই সবচেয়ে বিপজ্জনক,” বলেন ডা. নাইক।
তিনি ২০২০ সালের Neurology সাময়িকীতে প্রকাশিত এক গবেষণার উদাহরণ দেন, যেখানে দেখা গেছে, যাদের হাঁটার গতি কম, তাদের মস্তিষ্কের আকারও ছোট এবং জ্ঞানীয় ক্ষমতা হ্রাসের ঝুঁকি বেশি। “হাঁটা শুধু শরীরচর্চা নয়, এটি পুরো মস্তিষ্কের এক অনুশীলন,” যোগ করেন তিনি।
কীভাবে হাঁটা মস্তিষ্ককে সুরক্ষিত রাখে
হাঁটা এমন এক সহজ ব্যায়াম যা শরীর ও মস্তিষ্ক দুটিকেই সক্রিয় রাখে। ডা. নাইক বলেন, “প্রতিটি পদক্ষেপের সঙ্গে যুক্ত থাকে মস্তিষ্কের ফ্রন্টাল লোব, সেরিবেলাম, স্পাইনাল কর্ড ও স্নায়ু প্রতিক্রিয়ার সমন্বয়।” হাঁটা রক্তসঞ্চালন বাড়ায়, যা মস্তিষ্কে অক্সিজেন ও গ্লুকোজ সরবরাহ করে এবং টক্সিন দূর করে। তিনি আরও বলেন, “হাঁটার ধরনে বা ভারসাম্যে পরিবর্তন দেখা গেলে সেটি মস্তিষ্কের আগাম সতর্ক সংকেত। এটি প্রায়ই স্মৃতি সমস্যার বছরখানেক আগেই দেখা দেয়।” হাঁটা নিউরোপ্লাস্টিসিটির এক জীবন্ত উদাহরণও বটে। “হাঁটার সময় শরীরে BDNF সক্রিয় হয়, যা নিউরনগুলোর সংযোগ শক্তিশালী করে,” বলেন ডা. নাইক।
কীভাবে ডিমেনশিয়া প্রতিরোধ করবেন ডা. নাইক কয়েকটি সহজ অভ্যাসের পরামর্শ দিয়েছেন, যা নিয়মিত চর্চা করলে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বজায় থাকে এবং ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি অনেক কমে যায়।
প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট দ্রুত হাঁটুন। ভারসাম্য রক্ষার ব্যায়াম যেমন এক পায়ে দাঁড়ানো বা সরলরেখায় হাঁটার অভ্যাস করুন। হাঁটার সময় কথা বলা বা হালকা মানসিক কাজ করুন—এটি মস্তিষ্কের সমন্বয় ক্ষমতা বাড়ায়। নিয়মিত পায়ের পেশির ব্যায়াম করুন, এটি মস্তিষ্কের জন্য একপ্রকার ‘বিমা’।
দীর্ঘ সময় বসে থাকা পরিহার করুন; প্রতি ঘণ্টায় কিছুটা নড়াচড়া করুন। তিনি বলেন, “যখন আপনার পা ধীরে ধীরে কাজ হারায়, তখন মস্তিষ্কও তার পথ অনুসরণ করে। আপনার হাঁটার গতি বজায় রাখুন, তাহলেই সুরক্ষিত থাকবে মস্তিষ্ক।”
ডা. নাইক আরও পরামর্শ দেন, পেশির গঠন রক্ষায় প্রোটিনসমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করা জরুরি। তার মতে, কখনোই দেরি হয়ে যায় না। “গবেষণায় দেখা গেছে, ষাট বছর বয়সেও হাঁটা ও ব্যায়াম শুরু করলে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি অনেক কমে যায়। মনে রাখবেন, শক্ত পা মানেই তীক্ষ্ণ মস্তিষ্ক। স্যারকোপেনিয়া মাথা পর্যন্ত পৌঁছানোর আগেই সচেতন হোন—চল্লিশের কোঠা থেকেই শুরু করুন।”
সর্বোপরি, সক্রিয় থাকা শুধু চলাফেরার বিষয় নয়; এটি মস্তিষ্ককে তরুণ রাখার সবচেয়ে কার্যকর উপায়। নিয়মিত হাঁটা, ব্যায়াম ও সুষম খাদ্য—এই তিন অভ্যাসই হতে পারে বার্ধক্যের ডিমেনশিয়ার বিরুদ্ধে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিরোধ।

বন্ধ হচ্ছে সরকারি অর্থে বিদেশ ভ্রমণ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২৫, ৯:৫৫ পূর্বাহ্ণ
বন্ধ হচ্ছে সরকারি অর্থে বিদেশ ভ্রমণ

চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের কাজ শুরু করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। সোমবার (২৭ অক্টোবর) এ-সংক্রান্ত এক পরিপত্র জারি করে অর্থ বিভাগ। পরিপত্রে বলা হয়েছে, কোনো মন্ত্রণালয় ও বিভাগ অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ চাইতে পারবে না। একই সঙ্গে বলা হয়েছে, চলমান সংকোচনমূলক নীতির প্রেক্ষাপটে গত কয়েক বছরের মতো সংশোধিত বাজেটেও ব্যয় সাশ্রয় বা কৃচ্ছ্রসাধন নীতি অব্যাহত রাখতে হবে। এর আওতায় বিদেশ ভ্রমণ, গাড়ি কেনাসহ বেশ কিছু ব্যয় বন্ধ থাকবে। এ নীতি অনুসরণ করে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে তাদের সংশোধিত বাজেটের প্রাক্কলন আগামী ৯ নভেম্বরের মধ্যে অর্থ বিভাগে পাঠাতে বলা হয়েছে।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, সংশোধিত বাজেট প্রাক্কলন অবশ্যই মূল বাজেটে বরাদ্দের মধ্যেই থাকতে হবে। কোনোভাবেই অতিরিক্ত বরাদ্দ দাবি করা যাবে না। তবে সরকারের অগ্রাধিকার কার্যক্রম বাস্তবায়নের প্রয়োজনে মূল বাজেটে বরাদ্দের ব্যয়সীমার মধ্যে থেকে একই ধরনের বিভিন্ন কাজে বরাদ্দ কমানো বা বাড়ানো যাবে। কিন্তু উন্নয়ন ব্যয়ের অর্থ অব্যয়িত থাকবে বলে অনুমিত হলে ওই অর্থ কোনোক্রমেই পরিচালন বাজেটে স্থানান্তর করা যাবে না।
এতে আরও বলা হয়, সংশোধীত বাজেটেও ব্যয় সাশ্রয় বা কৃচ্ছ্রসাধন নীতির আওতায় সরকারি খরচে সব ধরনের বৈদেশিক ওয়ার্কশপ ও সেমিনারে অংশগ্রহণ বন্ধ থাকবে। তবে অত্যাবশ্যকীয় বিবেচনায় সীমিত আকারে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে বিদেশ ভ্রমণ করা হবে। তা ছাড়া কেনা যাবে না গাড়ি, জাহাজ ও বিমান। তবে অর্থ বিভাগের অনুমোদন নিয়ে পরিচালন বাজেটের আওতায় ১০ বছরের পুরোনো গাড়ির প্রতিস্থাপন হিসেবে নতুন গাড়ি কেনা যাবে। এমনকি পরিচালন বাজেটে আওতায় ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ খরচও বন্ধ রাখতে হবে। তবে উন্নয়ন বাজেটের আওতায় শর্তসাপেক্ষে ব্যয় করা যাবে। আরও কিছু ক্ষেত্রে ব্যয় স্থগিত রাখা হয়েছে আবার গুরুত্ব বিবেচনায় এসব ক্ষেত্রে ব্যয়ে কিছুটা ছাড়ও দেওয়া হয়েছে।
এদিকে সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) প্রণয়নে প্রকল্পের সংখ্যা সীমিত রাখাসহ ১৩ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, ইতোমধ্যে বিভিন্নভাবে সরকারি ব্যয় বেড়ে গেছে। তাই কোনো খাতে ব্যয় সাশ্রয়ের সুযোগ রয়েছে কি না, তা পর্যালোচনা করা হচ্ছে। আগামী ডিসেম্বরে সংশোধিত বাজেটে এর প্রতিফলন দেখা যাবে। সাধারণত অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধে বিশেষ করে মার্চে সরকার জাতীয় বাজেট সংশোধন করে। তবে এবার ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন থাকায় আগেভাগে বাজেট সংশোধন করা হচ্ছে।