খুঁজুন
                               
শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২৯ ভাদ্র, ১৪৩২

আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির বিকাশ ও চ্যালেঞ্জ

উজ্জ্বল হোসাইন
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২৫, ৮:২৩ অপরাহ্ণ
আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির বিকাশ ও চ্যালেঞ্জ

বর্তমান বিশ্ব প্রযুক্তির অভূতপূর্ব বিকাশের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। প্রযুক্তি মানবজীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই গভীরভাবে প্রভাব ফেলেছে। শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসেবা, ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ ব্যবস্থা, এমনকি দৈনন্দিন জীবনের সাধারণ কাজগুলোতেও প্রযুক্তির উপস্থিতি স্পষ্ট। তবে প্রযুক্তির এই অগ্রগতির সঙ্গে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও তৈরি হয়েছে। এই প্রবন্ধে সমসাময়িক প্রযুক্তির বিকাশ এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জগুলো বিশ্লেষণ করা হবে। সমসাময়িক প্রযুক্তির অগ্রগতির ধারা এতটাই দ্রুত যে এটি মানবজীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলেছে। এই পরিবর্তন ইতিবাচক হলেও, এর সঙ্গে নানাবিধ সামাজিক, অর্থনৈতিক, এবং পরিবেশগত চ্যালেঞ্জও তৈরি হয়েছে। প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব। তবে ভবিষ্যতে উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন, দায়িত্বশীল ব্যবহার এবং নীতিগত কাঠামো তৈরির প্রয়োজনীয়তা আরও বেড়ে যাচ্ছে।

প্রযুক্তির বিকাশ
১. কৃত্রিম বুদ্ধিমত্ত (AI) : কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির সবচেয়ে প্রভাবশালী উদ্ভাবনগুলোর মধ্যে একটি। মেশিন লার্নিং ও ডীপ লার্নিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি বিশাল সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। উদাহরণস্বরূপ, চ্যাটবট, অটোনোমাস গাড়ি, রোগ নির্ণয় সিস্টেম, এবং ভাষা অনুবাদ সফটওয়্যার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাফল্যকে স্পষ্ট করে তোলে।
২. ইন্টারনেট অব থিংস (IoT) : IoT এমন একটি প্রযুক্তি যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের ডিভাইসগুলোকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে সংযুক্ত করে। ঘরের নিরাপত্তা ক্যামেরা, স্মার্ট হোম ডিভাইস, এবং শিল্পখাতে প্রোডাকশন মনিটরিং সিস্টেম IoT-র উদাহরণ। এটি মানুষের জীবনকে আরও সহজ ও কার্যকর করেছে।
৩. ৫জি প্রযুক্তি : গত এক দশকে ৫জি প্রযুক্তি যোগাযোগ খাতে বিপ্লব ঘটিয়েছে। উচ্চ গতির ইন্টারনেট এবং কম ল্যাটেন্সি সংযোগের মাধ্যমে ভিডিও স্ট্রিমিং, গেমিং, এবং ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মতো প্রযুক্তিগুলো আরও উন্নত হয়েছে।
৪. ব্লকচেইন প্রযুক্তি : ব্লকচেইন প্রযুক্তি শুধু ক্রিপ্টোকারেন্সি নয়, বরং ডেটা নিরাপত্তা, সরবরাহ চেইন ম্যানেজমেন্ট, এবং চুক্তি ব্যবস্থাপনায়ও ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি নিরাপদ এবং স্বচ্ছ ডেটা পরিচালনার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।
৫. জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি : জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজির উন্নতি চিকিৎসা খাতে বিপ্লব ঘটিয়েছে। রোগ নিরাময়ের জন্য উন্নত ওষুধ আবিষ্কার এবং জিন এডিটিংয়ের মাধ্যমে জটিল রোগের সমাধান করা হচ্ছে।
প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবিধা
১. উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা : প্রযুক্তির উন্নতির ফলে সারা বিশ্ব আজ একটি “গ্লোবাল ভিলেজ”-এ পরিণত হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ই-মেইল, এবং ভিডিও কলের মাধ্যমে দূরত্বের বাধা দূর হয়েছে।
২. দক্ষ উৎপাদন ব্যবস্থা : রোবোটিক্স এবং অটোমেশনের মাধ্যমে উৎপাদন খাতে দক্ষতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে উৎপাদনের খরচ কমেছে এবং পণ্যের গুণগত মান বৃদ্ধি পেয়েছে।
৩. স্বাস্থ্যখাতে উন্নয়ন : কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, টেলিমেডিসিন, এবং আধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম চিকিৎসা ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে। দ্রুত রোগ নির্ণয় এবং সঠিক চিকিৎসা প্রদান সম্ভব হচ্ছে।
৪. শিক্ষার প্রসার : ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম, ভার্চুয়াল ক্লাসরুম এবং বিভিন্ন অনলাইন কোর্স প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিশ্বব্যাপী শিক্ষার বিস্তার ঘটিয়েছে।
প্রযুক্তি নিয়ে চ্যালেঞ্জ
১. সাইবার নিরাপত্তা : প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে ব্যক্তিগত তথ্য ও ডেটা হ্যাকিং, ফিশিং, এবং সাইবার আক্রমণের ঝুঁকি বেড়েছে। এই ঝুঁকি ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এবং সরকারের জন্য উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
২. গোপনীয়তার সমস্যা : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ব্যক্তিগত তথ্যের ব্যবহার ও শেয়ারিং গোপনীয়তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে। তথ্য চুরির ঘটনাও ক্রমবর্ধমান।
৩. প্রযুক্তির অপব্যবহার : ডিপফেক ভিডিও, ভুয়া খবর, এবং ম্যালওয়্যার তৈরি প্রযুক্তির অপব্যবহারের অন্যতম দৃষ্টান্ত। এটি সমাজে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতায় প্রভাব ফেলছে।
৪. পরিবেশগত প্রভাব : প্রযুক্তি উৎপাদনের ফলে ইলেকট্রনিক বর্জ্য এবং কার্বন নিঃসরণ পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। ই-ওয়েস্টের সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাব পরিবেশগত সমস্যা বাড়িয়ে তুলছে।
৫. বেকারত্বের ঝুঁকি : অটোমেশন এবং রোবোটিক্সের ব্যবহারের ফলে অনেক ক্ষেত্রে মানুষের শ্রমের প্রয়োজনীয়তা কমেছে। এতে বেকারত্বের হার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
৬. ডিজিটাল বৈষম্য : প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে একটি বড় পার্থক্য রয়েছে। অনেক উন্নয়নশীল দেশ এখনও আধুনিক প্রযুক্তির সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি ও সম্ভাবনা : প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা অত্যন্ত উজ্জ্বল। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, এবং রিনিউএবল এনার্জির উন্নয়ন বিশ্বকে নতুন দিগন্তে নিয়ে যেতে পারে। তবে এর সঙ্গে চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে হবে।
১. নীতিমালা তৈরি : প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কঠোর নীতিমালা তৈরি করা প্রয়োজন।
২. প্রযুক্তির ন্যায়সঙ্গত বন্টন : প্রযুক্তিগত সুবিধা বিশ্বের সকল মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে।
৩. পরিবেশ-বান্ধব প্রযুক্তি :প্রযুক্তি ব্যবহারে পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব কমাতে পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তি এবং টেকসই উৎপাদন পদ্ধতির উন্নয়ন জরুরি।
৪. দক্ষ মানবসম্পদ গঠন : বেকারত্বের ঝুঁকি এড়াতে প্রযুক্তির সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর জন্য দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

প্রযুক্তির বিভিন্ন ক্ষেত্রের উন্নতি : বিশ্বব্যাপী যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নতি দ্রুততর হয়েছে। ইন্টারনেট ও মোবাইল প্রযুক্তি মানবসমাজকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। ৫জি প্রযুক্তি উচ্চ গতির ইন্টারনেট এবং নির্ভুল সংযোগ প্রদান করছে, যা স্মার্ট শহর নির্মাণে সহায়ক। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার এবং মেটাভার্সের মতো প্ল্যাটফর্ম মানুষকে নতুন উপায়ে একত্রিত করছে।ই-লার্নিং এবং ভার্চুয়াল ক্লাসরুম শিক্ষার ধরন বদলে দিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ-অনলাইন কোর্সের মাধ্যমে যে কেউ বিশ্বের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্ঞান অর্জন করতে পারে। শিক্ষার্থীদের জন্য কাস্টমাইজড লার্নিং প্ল্যাটফর্ম তৈরি করছে।স্বাস্থ্যখাতে প্রযুক্তির উদ্ভাবন রোগ নির্ণয় থেকে শুরু করে চিকিৎসা প্রদান পর্যন্ত সবক্ষেত্রে উন্নতি করেছে। টেলিমেডিসিন-দূরবর্তী স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া সম্ভব হচ্ছে। জিন এডিটিং প্রযুক্তি (CRISPR)-জিনগত সমস্যাগুলো সমাধান করতে সহায়ক। রোবোটিক্স এবং স্বয়ংক্রিয়তা-অটোমেশন এখন শিল্প ও কৃষিখাতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। স্বয়ংক্রিয় মেশিন উৎপাদন ও পরিচালনা আরও দ্রুত ও নির্ভুল করেছে। উদাহরণ: কৃষিতে ড্রোন: ফসলের অবস্থা পর্যবেক্ষণ এবং কীটনাশক ছিটানোর জন্য ব্যবহৃত। স্বয়ংচালিত যানবাহন: উবার এবং টেসলা স্বয়ংচালিত গাড়ির উদাহরণ। পরিবেশ সুরক্ষা প্রযুক্তি : পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি: সৌরবিদ্যুৎ, বায়ু শক্তি এবং জিওথার্মাল শক্তি ব্যবহার করে পরিবেশবান্ধব শক্তির বিকাশ।
কার্বন ক্যাপচার প্রযুক্তি: বায়ুমণ্ডলে কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনার উদ্যোগ।

প্রযুক্তির অপব্যবহার ও এর চ্যালেঞ্জ : প্রযুক্তির মাধ্যমে ভুয়া খবর ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। এটি সামাজিক অস্থিরতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া কখনো কখনো মতভেদ ও বিভক্তি বাড়িয়ে দেয়। এছাড়া আসক্তি এবং মানসিক সমস্যার জন্যও এটি দায়ী। স্বয়ংক্রিয়তা অনেক কাজকে অপ্রয়োজনীয় করে তুলেছে, যার ফলে শ্রমশক্তির চাহিদা কমছে। বিশেষত উৎপাদন এবং পরিষেবা খাতে এই চ্যালেঞ্জ প্রবল। প্রযুক্তির উন্নয়ন বিশ্বজুড়ে সমানভাবে ছড়িয়ে পড়েনি। ধনী ও উন্নত দেশগুলো প্রযুক্তির সুবিধা ভোগ করছে, কিন্তু দরিদ্র দেশগুলো এখনও অনেক পিছিয়ে। ডিজিটাল যুগে হ্যাকিং, পরিচয় চুরি, এবং অর্থনৈতিক প্রতারণার ঝুঁকি বেড়েছে।

টেকসই ভবিষ্যতের জন্য প্রযুক্তি ব্যবস্থাপনা : প্রযুক্তির সম্ভাবনাকে পূর্ণমাত্রায় কাজে লাগাতে গেলে কিছু পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি।প্রযুক্তির উদ্ভাবন এমনভাবে করতে হবে যাতে এটি মানুষের কল্যাণে ব্যবহৃত হয়। পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং ইলেকট্রনিক বর্জ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডিজিটাল যুগের চাহিদা অনুযায়ী কর্মীদের প্রশিক্ষণ এবং পুনঃস্কিলিং করা প্রয়োজন। সাইবার নিরাপত্তা এবং তথ্যের গোপনীয়তা নিশ্চিত করতে সুনির্দিষ্ট আইনি কাঠামো প্রয়োজন। প্রযুক্তির সমতাভিত্তিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সহযোগিতার ভিত্তি আরও মজবুত করতে হবে।
সমসাময়িক প্রযুক্তি মানবসভ্যতার সামনে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। তবে এর সঙ্গে নানাবিধ চ্যালেঞ্জও জড়িত। প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার, দায়িত্বশীল উদ্ভাবন, এবং ন্যায্য বন্টনের মাধ্যমে আমরা একটি টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারি। ভবিষ্যতের জন্য প্রযুক্তির ইতিবাচক দিকগুলোকে কাজে লাগিয়ে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার দায়িত্ব মানবজাতির। সমসাময়িক প্রযুক্তির বিকাশ মানবজীবনে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। যদিও এর সঙ্গে অনেক চ্যালেঞ্জ জড়িত, সঠিক পরিকল্পনা এবং দায়িত্বশীল ব্যবহারের মাধ্যমে এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করা সম্ভব। প্রযুক্তির অগ্রগতিকে ইতিবাচকভাবে কাজে লাগিয়ে একটি উন্নত, টেকসই এবং সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের সবার।

লেখক : উজ্জ্বল হোসাইন, বিএসসি, এলএলবি, এমসিএস, গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতায় মাস্টার্স; আইটি কর্মকর্তা, চাঁদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতাল, চাঁদপুর।

জয় দিয়ে এশিয়া কাপ শুরু বাংলাদেশের

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১২:২৭ অপরাহ্ণ
জয় দিয়ে এশিয়া কাপ শুরু বাংলাদেশের

জয়ে এশিয়া কাপ শুরু করল বাংলাদেশ। নিজেদের প্রথম ম্যাচে হংকংকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে টাইগাররা। হংকংয়ের ১৪৩ রানের জবাবে ১৭ ওভার ৪ বলে ৩ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।
রানতাড়ায় নেমে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটিতে আসে ২৪ রান। তৃতীয় ওভারের শেষ বলে পারভেজ হোসেন ইমন ১৪ বল ১৯ রান করে ফিরে গেলে জুটি ভাঙে। ৫.৪ ওভারে ৪৭ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তানজিদ তামিম ফেরেন ১৮ বলে ১৪ রান করে।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে লিটন ও হৃদয় মিলে ৭০ বলে ৯৫ রান যোগ করেন। জয় থেকে ২ রান দূরে থাকতে লিটন বোল্ড হয়ে ফিরে যান। ৬ চার ও এক ছক্কায় ৩৯ বলে ৫৯ রান করেন। পরে জাকের আলি অনিককে নিয়ে জয় নিশ্চিত করেন হৃদয়। ১ চারে ৩৬ বলে ৩৫ রান করেন হৃদয়। রানের খাতা খোলার সুযোগ পাননি জাকের।
এর আগে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪৩ রান সংগ্রহ করেছে হংকং। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪২ রানের ইনিংস খেলেছেন নিজাকাত খান। টাইগারদের পক্ষে সবচেয়ে সফল তানজিম হাসান সাকিব ২১ রান খরচায় ২ উইকেট শিকার করেছেন। এ ম্যাচে জয় তুলে নিতে ওভারপ্রতি ৭.২০ রান করতে হবে টাইগারদের।
এদিন টস জিতে ফিল্ডিং করতে নেমে শুরু থেকে হংকংকে চাপে রেখেছিল টাইগার বোলাররা। দলের খাতায় ৩০ রান যোগ করতে ২ উইকেট হারায় তারা। বাংলাদেশকে প্রথম উইকেটটি এনে দেন তাসকিন আহমেদ। ৫ বলে ৪ রান করে টাইগার পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের লেংথ বলে কট বিহাইন্ড হন আনশুমান রাথ। আম্পায়ার যদিও শুরুতে সাড়া দেননি, রিভিউ নিয়ে উইকেটটি আদায় করে নেয় বাংলাদেশ। এরপর দারুণ এক ডেলিভারিতে ১২ বলে ১৪ রান করা বাবর হায়াতকে বোল্ড করেন পেসার তানজিম হাসান সাকিব।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করে হংকং। জিশান আলী ও নিজাকাত খানের ৪১ রানের জুটি শেষমেশ ভাঙেন তানজিম সাকিব। তার বাউন্সার জায়গা নিয়ে তুলে মারতে গিয়ে মিডউইকেটে মোস্তাফিজুর রহমানের হাতে তুলে দেন ওপেনার জিশান। ৩৪ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৩০ রানে থামে তার ইনিংস। চতুর্থ উইকেটে নিজাকাত ও ইয়াসিম মুর্তজা হতাশায় ভোগান টাইগার বোলারদের।
অনেক চেষ্টা করেও উইকেটের দেখা মিলছিল না। শেষমেশ ১৮তম ওভারে গিয়ে ভুল বোঝাবুঝিতে ভাঙে হংকংয়ের চতুর্থ জুটি। ১৯ বলে ২ ছক্কা ও ২ চারের মারে ২৮ রান করে রান আউট হন মুর্তজা। ততক্ষণে তারা দলের সংগ্রহ শতরান পার করে দেন। অন্যদিকে ৪০ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ৪২ রান করে ১৯তম ওভারের পঞ্চম বলে রিশাদ হোসেনের শিকার হন নিজাকাত। পরের বলেই ক্রিজে নেমে টাইগার রিস্ট স্পিনারের বলে এলবিডব্লিউ হন কিঞ্চিৎ শাহ।
শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪৩ রানে থামে হংকংয়ের ইনিংস। বাংলাদেশের হয়ে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন তাসকিন, তানজিম সাকিব ও রিশাদ।

স্থূলতা তরুণদের কতটা ক্ষতি করছে?

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১২:২০ অপরাহ্ণ
স্থূলতা তরুণদের কতটা ক্ষতি করছে?

বর্তমান সময়ের জীবনযাত্রা বিগত এক দশকের থেকে অনেকটাই আলাদা। এখন সবাই নিজের কাজ নিয়ে দারুণ ব্যস্ত। আর এই ব্যস্ততার প্রভাব দেখা যায় আমাদের স্বাস্থ্যেও বিশেষ করে তরুণদের মাঝে। প্রসেসড খাবার, ডিজিটাল জীবনযাপন ও শারীরিক সক্রিয়তার ঘাটতি মিলিয়ে তরুণদের মধ্যে অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে স্থূলতা। আর এই স্থূলতা কেবল বাহ্যিক সৌন্দর্য বা ওজনের বিষয় নয়, বরং ডেকে আনছে গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি।
হিন্দুস্তান টাইমস নয়াদিল্লির স্যার গঙ্গা রাম হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. পিয়ুষ রঞ্জন জানান, স্থূল কিশোররা ভবিষ্যতে মারাত্মক লিভার রোগের ঝুঁকিতে পড়তে পারে। তার মতে, ভারতে কিশোর–কিশোরীদের মধ্যে ফ্যাটি লিভার রোগের হার প্রায় ৩৮ শতাংশ। এদের অনেকেই পরবর্তীতে সিরোসিস কিংবা লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত হতে পারে।
স্থূলতার ঝুঁকি: ডা. রঞ্জনের মতে, চিকিৎসাবিহীন স্থূলতা ডায়াবেটিস, হৃদ্‌রোগ, স্ট্রোক, কিডনি রোগ এবং বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। এর মধ্যে রয়েছে—কোলন, অগ্ন্যাশয়, খাদ্যনালী, স্তন ও ডিম্বাশয়ের ক্যানসার। তিনি আরও বলেন, স্বাভাবিক ওজনের তুলনায় স্থূল মানুষের লিভার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। বিভিন্ন গবেষণায় ঝুঁকির মাত্রা ভিন্ন হলেও, স্থূলতা ও লিভার জটিলতার সম্পর্ক স্পষ্টভাবে প্রমাণিত।
প্রতিরোধের উপায়: তরুণ প্রজন্মকে এই ঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে ডা. রঞ্জন কয়েকটি প্রতিরোধমূলক পরামর্শ দিয়েছেন—
> সুস্থ জীবনধারা গড়ে তোলা।
> তেল–চর্বিযুক্ত ও উচ্চ-ক্যালরির খাবার এড়িয়ে চলা।
> অতিরিক্ত ক্যালরিযুক্ত কার্বোহাইড্রেট কম খাওয়া।
> নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করা, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে এবং স্থূলতার ঝুঁকি কমাবে।
তরুণদের মধ্যে স্থূলতার হার উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে, যা শুধু আজকের নয়, ভবিষ্যতেরও ভয়ানক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে। ডা. পিয়ুষ রঞ্জনের পরামর্শ স্পষ্ট সুস্থ জীবনধারা ও খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলার বিকল্প নেই। এখনই সচেতন হলে কেবল ডায়াবেটিস, ক্যানসার বা লিভারের রোগই নয়, অসংখ্য জটিলতা থেকে নিজেদের বাঁচানো সম্ভব।

ডিজিটাল প্রতারণায় কয়েক কোটি টাকা খোয়ালেন ভারতীয় নারী

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১২:১১ অপরাহ্ণ
ডিজিটাল প্রতারণায় কয়েক কোটি টাকা খোয়ালেন ভারতীয় নারী

অঞ্জলির (ছদ্মনাম) এই দুঃস্বপ্নের শুরুটা হয়েছিল একটা ফোন কলের মাধ্যমে। যার জন্য শেষপর্যন্ত তাকে পাঁচ কোটি পঁচাশি লাখ টাকা খোয়াতে হয়। ওই ফোন কলের সময় অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তি নিজেকে একটা কুরিয়ার সংস্থার কর্মচারী বলে পরিচয় দিয়ে দাবি করেছিলেন, মুম্বাই কাস্টমস বেইজিংয়ে পাঠানোর সময় অঞ্জলির একটা পার্সেল বাজেয়াপ্ত করেছে। ওই পার্সেলে মাদক পাওয়া গেছে।
গুরুগ্রামের বাসিন্দা অঞ্জলি বাস্তবে ডিজিটাল অ্যারেস্ট নামে সাইবার প্রতারণার শিকার হয়েছিলেন। এতে অভিযুক্তরা ভিডিও কল করে নিজেদের ভারতের আর্থিক তদারকি প্রতিষ্ঠান এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডির কর্মকর্তা বলে দাবি ফাঁদে ফেলে।
এর জন্য প্রতারকরা সাধারণত ভুক্তভুগীদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ তুলে তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়ার বা পরিবারের বাকি সদস্যদের ক্ষতি করার হুমকি দেয়। এভাবে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে অঞ্জলিকে টানা পাঁচ দিন ধরে ডিজিটাল অ্যারেস্ট করে রাখা হয়েছিল। স্কাইপ কলের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা নজরদারি রেখে তাকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল; যাতে তিনি টাকা ট্রান্সফার করতে বাধ্য হন।
অঞ্জলির কথায়, এরপর আমার মাথা কাজ করা বন্ধ দেয়। অসাড় হয়ে গিয়েছিলাম। যতক্ষণে ওই ফোনকল বন্ধ হয়, ততদিনে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছেন অঞ্জলি, নিজের সমস্ত সম্পত্তিও খুইয়েছেন।