খুঁজুন
                               
বুধবার, ৯ জুলাই, ২০২৫, ২৫ আষাঢ়, ১৪৩২

যে কারণে স্টারলিংক বাংলাদেশে গেম চেঞ্জার হতে যাচ্ছে

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৫, ৯:১৪ পূর্বাহ্ণ
যে কারণে স্টারলিংক বাংলাদেশে গেম চেঞ্জার হতে যাচ্ছে

হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে পরিবর্তন এসেছে দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে। যার ছোঁয়া লেগেছে ইন্টারনেট পরিসেবার ক্ষেত্রেও। সম্প্রতি দ্রুতগতির ইন্টারনেট–সেবাদাতা স্টারলিংককে বাংলাদেশে আনার চেষ্টা করছে সরকার। এ উপলক্ষে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস স্টারলিংকের প্রতিষ্ঠাতা বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের সঙ্গে ফোনে কথাও বলেছেন।
এখন প্রশ্ন হলো, স্টারলিংকের মাধ্যমে বাংলাদেশ কি সুফল পেতে পারে? প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্টারলিংক বাংলাদেশে এলে দুর্গম এলাকায় খুব সহজে উচ্চগতির ইন্টারনেট-সেবা পাওয়া যাবে। ফলে ইন্টারনেট-সেবার ক্ষেত্রে গ্রাম ও শহরের পার্থক্য ঘুচে যাবে। গ্রামে বসেই উচ্চগতির ইন্টারনেট ব্যবহার করে ফ্রিল্যান্সিংসহ ইন্টারনেটভিত্তিক কাজ করতে পারবেন তরুণেরা। দুর্যোগের পর দ্রুত যোগাযোগ প্রতিস্থাপনে বড়ো ভূমিকা রাখতে পারে স্টারলিংক।
তাছাড়া আরেকটি বড়ো সুবিধা হলো, গোপনীয়তা রক্ষা করে যোগাযোগ রক্ষা করা। স্টারলিংক যদি গোপনীয়তা রক্ষা করে বাংলাদেশে সেবা দেয়, তাহলে অনেকেই প্রতিষ্ঠানটির ইন্টারনেট ব্যবহারে আগ্রহী হয়ে উঠতে পারেন। অবশ্য স্টারলিংকের ইন্টারনেট ব্যয়বহুল। সাধারণ মানুষের পক্ষে তা ব্যবহার করা কঠিন।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক বি এম মইনুল হোসেন বলেন, স্টারলিংক স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট-সেবা দেয়। তার দিয়ে তা সংযুক্ত করতে হয় না। তাই স্টারলিংকের মাধ্যমে দুর্গম অঞ্চল ইন্টারনেটের আওতায় আনা যাবে। তিনি বলেন, দেশে বিদ্যমান ইন্টারনেট-সেবার মান নিয়ে সমস্যা রয়েছে। স্যাটেলাইট-সেবা এলে যারা মানসম্পন্ন ইন্টারনেট চান, তাদের জন্যে বিকল্প সুযোগ তৈরি হবে।
১. স্টারলিংক কী
বাংলাদেশে এখন যে ইন্টারনেট-সেবা দেওয়া হয়, তা সাবমেরিন কেবলনির্ভর। অর্থাৎ সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে তারের মাধ্যমে ব্যান্ডউইডথ এনে মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর ও ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডাররা (আইএসপি) মানুষকে ইন্টারনেট-সেবা দেয়।
স্টারলিংক ইন্টারনেট-সেবা দেয় স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে। স্টারলিংকের মূল প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্সের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তাদের ইন্টারনেট-সেবা জিওস্টেশনারি (ভূস্থির উপগ্রহ) থেকে আসে, যা ৩৫ হাজার ৭৮৬ কিলোমিটার ওপর থেকে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে। পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে স্থাপিত হাজার হাজার স্যাটেলাইটের একটি সমষ্টি হচ্ছে স্টারলিংক, যা পুরো বিশ্বকেই উচ্চগতির ইন্টারনেট-সেবা দিতে পারে।
চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত হিসাবে, স্টারলিংকের ৬ হাজার ৯৯৪টি স্যাটেলাইট স্থাপিত হয়েছে। এসব স্যাটেলাইট পৃথিবী থেকে প্রায় ৩৪২ মাইল (৫৫০ কিলোমিটার) ওপরে কক্ষপথে ঘুরছে।
স্পেসএক্সের স্টারলিংক প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৫ সালে এবং ২০১৯ সালে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। বিশ্বের প্রায় ১০০টির বেশি দেশে তাদের কার্যক্রম রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় ভুটানে প্রথম স্টারলিংকের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
২. কীভাবে কাজ করে স্টারলিংক?
স্টারলিংকের ইন্টারনেট-সেবা পেতে গ্রাহককে টেলিভিশনের অ্যানটেনার মতো একটি ডিভাইস (যন্ত্র) বসাতে হবে, যা পৃথিবীর কক্ষপথে ঘুরতে থাকা স্যাটেলাইটের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে। গ্রাহক এই অ্যানটেনার সঙ্গে একটি স্টারলিংকের রাউটার স্থাপন করে ইন্টারনেট-সেবা পান।
স্টারলিংকের ইন্টারনেটে ডাউনলোড গতি ২৫ থেকে ২২০ এমবিপিএস (মেগাবাইট পার সেকেন্ড)। তবে বেশির ভাগ ব্যবহারকারী ১০০ এমবিপিএসের বেশি গতি পান। স্টারলিংকে আপলোড গতি সাধারণত ৫ থেকে ২০ এমবিপিএসের মধ্যে থাকে।
ইন্টারনেটের গতি পরীক্ষা ও বিশ্লেষণকারী প্রতিষ্ঠান ‘ওকলা’র গত জানুয়ারির হিসাবে, বাংলাদেশে মোবাইল ইন্টারনেটের গড় ডাউনলোড গতি ৪০ এমবিপিএসের কিছু কম। আপলোডের গতি ১৩ এমবিপিএসের মতো। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ডাউনলোড গতি প্রায় ৫১ এমবিপিএস। আপলোডের ক্ষেত্রে তা প্রায় ৪৯ এমবিপিএস। অবশ্য বাসাবাড়িতে সাধারণ গ্রাহকেরা গতি পান আরও কম। গ্রামে অনেক জায়গায় ইন্টারনেট সংযুক্ত হওয়াই কঠিন হয়ে পড়ে।
৩. কতোটা ব্যয়বহুল স্টারলিংক?
স্টারলিংকের ওয়েবসাইটে বলা আছে, বাসাবাড়িতে তাদের সেবা নিতে কিছু সরঞ্জাম কিনতে হবে। সেখানে থাকে একটি রিসিভার বা অ্যানটেনা, কিকস্ট্যান্ড, রাউটার, তার ও বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা বা পাওয়ার সাপ্লাই। এটাকে স্টারলিংক কিট বলা হয়, যার মূল্য ৩৪৯ থেকে ৫৯৯ ডলার পর্যন্ত (৪৩ থেকে ৭৪ হাজার টাকা)।
আবাসিক গ্রাহকদের জন্য স্টারলিংকের মাসিক সর্বনিম্ন ফি ১২০ ডলার (প্রায় ১৫ হাজার টাকা)। তবে করপোরেট গ্রাহকদের জন্যে স্টারলিংক কিটের দাম ও মাসিক ফি দ্বিগুণের বেশি। তবে দেশভেদে দামে ভিন্নতা রয়েছে।
৪. বাংলাদেশে স্টারলিংক সংযুক্তির সম্ভাবনা কতোটুকু?
তিন বছর ধরে বাংলাদেশে ব্যবসা করার আগ্রহ দেখাচ্ছে স্টারলিংক। তাদের ওয়েবসাইটে কোন্ দেশে তাদের সেবা রয়েছে, তা উল্লেখ করে একটি মানচিত্র পাওয়া যায়। তাতে বলা আছে, চলতি বছর বাংলাদেশে এর যাত্রা শুরু হওয়ার কথা।
২০২৩ সালের জুলাইয়ে বাংলাদেশে স্টারলিংকের প্রযুক্তি এনে পরীক্ষা করা হয়। সে সময় তৎকালীন মন্ত্রীদের সঙ্গে স্টারলিংকের বৈঠকও হয়েছিল।
২০২৪ সালের অক্টোবরে স্টারলিংকের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় এসে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) অক্টোবরে একটি নির্দেশিকার খসড়াও তৈরি করেছে।
৫. বাংলাদেশে স্টারলিংকের সম্ভাব্য নাম কী হতে পারে?
বিটিআরসির প্রস্তাবিত নির্দেশিকার নাম, ‘নন-জিওস্টেশনারি অরবিট (এনজিএসও) স্যাটেলাইট সার্ভিসেস অপারেটর’। এটা মূলত স্টারলিংকের কথা মাথায় রেখেই তৈরি হয়েছে। খসড়াটি এখনো অনুমোদন পায়নি।
জানতে চাইলে বিটিআরসির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. এমদাদ উল বারী শনিবার বলেন, খসড়ার বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়েছে। সে অনুযায়ী কাজ করে বিটিআরসি খসড়াটি এ সপ্তাহেই মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেবে।
দেড় বছর আগে স্টারলিংকের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে এসে যখন তৎকালীন মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করে, তখন এর প্রযুক্তিগত পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছিল। তখন জানানো হয়েছিল, পরীক্ষার ফল ইতিবাচক ছিল।
৬. স্টারলিংকে আড়িপাতার সুযোগ থাকবে কিনা?
বড়ো প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছিল টেলিযোগাযোগ খাতে সরকারের বিধিসম্মত প্রবেশাধিকারের (লফুল ইন্টারসেপশন) বা আড়িপাতার সুযোগ থাকবে কি না। বিগত সরকার স্টারলিংকের সঙ্গে বৈঠকে জানিয়ে দিয়েছিল, আড়িপাতার সুযোগ দিতে হবে।
বিটিআরসি স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট-সেবার নির্দেশিকার যে খসড়া প্রকাশ করেছে, তাতেও আড়িপাতার সুযোগ রাখার শর্ত রয়েছে। যদিও স্টারলিংক সাধারণত আড়িপাতার সুযোগ দিতে চায় না।
নতুন সরকার কি আড়িপাতার ক্ষেত্রে ছাড় দেবে, নাকি স্টারলিংক শর্ত মেনে বাংলাদেশে আসবে, তা স্পষ্ট নয়।
এদিকে যে কোনো মূল্যে বাংলাদেশে ইলন মাস্কের স্টার লিংক ইন্টারনেট- সেবা নিয়ে আসা হবে জানিয়ে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সতর্ক করে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্যে প্রস্তুতি নিতে বলেছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
গত রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে ‘দ্রুতগতির মানসম্পন্ন ও সহজলভ্য ইন্টারনেট প্রাপ্তিতে করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমন কথা ব্যক্ত করেন তিনি।
এ সময় তিনি বলেন, আমরা যে কোনো মূল্যে স্টার লিংক বাংলাদেশে নিয়ে আসবো। এটা আমাদের পলিটিক্যাল প্রমিস। এ প্রমিসের মাধ্যমে আমরা বিশ্বকে দেখাতে চাইবো যে, বাংলাদেশ বিনিয়োগ বান্ধব দেশ। এফডিআইকে ব্র্যান্ডিং করার জন্যে আমরা এ কাজটি করবো।
দেশীয় ইন্টারনেট সেবাদাতাগুলোর চ্যালেঞ্জ নিয়ে বিশেষ সহকারী বলেন, স্টার লিংক যখন আসবে তখন আরবান এবং রুরালের যে প্রিমিয়ার কাস্টমার সে স্টার লিংকে চলে যাবে। আপনি বলতে পারেন তার প্রাইস অনেক বেশি হবে। তার প্রাইস পাঁচ হাজার টাকা হবে, আমি ৫০০ টাকায় দিচ্ছি। আপনার সেই আত্মতুষ্টির কী উত্তর? আমার সোসাইটিতে কনজিউমার আছে, এমন কনজিউমার যারা ফ্রিল্যান্সার, যারা ক্ষুদ্রঋণের ব্যবসা করে এনজিও, এন্ট্রাপ্রেনিউর, এসএমই বিজনেসম্যান আরবান এবং রুরাল; তারা কিন্তু বেটার সার্ভিসের জন্যে স্টার লিংকে চলে যাবে। সেটা আপনার প্রিমিয়ার কাস্টমার লেভেলকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে ডেফিনেটলি। এটা মোবাইল এমএনওদেরও ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তাহলে তার বিরুদ্ধে আপনি কীভাবে প্রিপারেশন নেবেন, আমি মনে করি আপনারা কোয়ালিটি অব সার্ভিস ইনশিওর করবেন। সুতরাং স্টার লিংক আসার বিপরীতে আমি যদি দেশীয় ব্যবসাকে সুরক্ষা দিতে চাই তাহলে সবার আগে আমি যে সার্ভিসটা দিচ্ছি এই সার্ভিসটা স্ট্যান্ডার্ড করতে হবে।
এ সময় ফয়েজ আহমদ আরও বলেন, একটা সময় ছিলো, মোবাইল ইন্টারনেট ডমিনেটিং ছিলো প্রায় ৯৬-৯৭ শতাংশ। এই চার বছর আগে। এ সময়ের মধ্যে আইএসপি সার্ভিস গ্রো করেছে, কিন্তু আইএসপির সার্ভিস কোয়ালিটি বেটার না হওয়ায় আবার মোবাইলের দিকে টার্ন করেছে। আমরা একটা ট্রানজিশনে আছি, সেই ট্রানজিশনে নতুন করে প্রিমিয়ার কাস্টমার স্টার লিংকের দিকে চলে যাবে। সে ক্ষেত্রে আপনাদের সতর্ক হতে হবে। সুতরাং আপনারা বুঝতে পারছেন যে, আপনারা কনসাসলি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি পড়তে যাচ্ছেন। পলিসি এই চ্যালেঞ্জগুলোকে কনসাসলি ইন্টারটেন করবে। তার বিপরীতে আপনাদের ডিফেন্স সিস্টেম তৈরি করতে হবে।
দাম কমানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা বিটিআরসির মাধ্যমে ভি-স্যাটগুলোর কানেকশনের দাম যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনবো। তাহলে ভি-স্যাটের ব্যবসাটা কিছুটা হলেও ফ্লাই করবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির বিশেষ সহকারী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞ মাহতাব উদ্দিন, আইআইজিএবির সভাপতি আমিনুল হাকিম, বিডি জবসের সিইও ও বেসিসের সাবেক সভাপতি ফাহিম মাশরুর, আইএসপিএবির সভাপতি ইমদাদুল হক, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম সিদ্দিক, গ্রামীণফোন লিমিটেডের সিনিয়র ডাইরেক্টর কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স হোসেন সাদাত, বাংলালিংকের চিফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান, রবির রেগুলেশনের ডিরেক্টর শাহ মো. ফজলে খোদা।
বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিকম বিশেষজ্ঞ মোস্তফা হুসাইন

উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে সংক্রমণ প্রতিরোধে একটি মানসম্মত বাস্তবায়ন পদ্ধতির সফল প্রয়োগ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ৯ জুলাই, ২০২৫, ৯:৪৯ অপরাহ্ণ
উপজেলা পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে সংক্রমণ প্রতিরোধে একটি মানসম্মত বাস্তবায়ন পদ্ধতির সফল প্রয়োগ

উপজেলা পর্যায়ে সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির মানসম্মত বাস্তবায়ন কার্য্ক্রম মূ্ল্যায়ন করা হয়েছে। গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অপারেশনাল প্ল্যান উপজেলা হেলথ কেয়ার ও কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ারের সহযোগিতায়। অর্থায়ন করেছে Integrated Health Science Research and Development Fund, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
এই গবেষণার মূল উদ্দেশ্য ছিল – উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ইউনিয়ন সাব-সেন্টার এবং কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ, পানি, স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি এবং চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বর্তমান অবস্থা মূল্যায়ন করা। এছাড়াও একটি পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে ব্যবস্থাগুলোকে উন্নত করা।
গবেষণায় দেখা যায়, পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর্মীদের সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ প্রাপ্তির হার ১৮% থেকে বেড়ে ৬০% হয়েছে। জীবাণুমুক্ত যন্ত্রপাতির ব্যবহার এবং সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ২০% থেকে ৫০% পর্যন্ত উন্নতি পরিলক্ষিত হয়েছে। একই সঙ্গে রোগীদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে সন্তুষ্টির হার ৪৫% থেকে ৬৫%-এ পৌঁছেছে।
ডা. আবু হোসাইন মো.মইনুল আহসান, পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখা), স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সভায় উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন। গবেষণার প্রধান গবেষক ডা. ফারজানা তাহের মুনমুন। অধ্যাপক ডা. ফারিহা হাসিন, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় উক্ত গবেষণা কার্যক্রমের সাথে যুক্ত ছিলেন। ডা. ফাতেমা করিম, ডিপিএম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সভাটি সঞ্চালনা করেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালকবৃন্দ, পরিচালকবৃন্দ এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পরিচালকবৃন্দ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
গবেষণার প্রধান গবেষক ডা. মুনমুন বলেন, “এই গবেষণার ফলাফল স্বাস্থ্যখাতে সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে উপজেলাভিত্তিক পর্যায়ে আরও শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে। বিশেষ করে, নিয়মিত প্রশিক্ষণ, তদারকি ও স্থানীয় অংশীদারদের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করা হলে সংক্রমণ হ্রাসে সফলতা পাওয়া যাবে।” গবেষণায় কিছু চ্যালেঞ্জও চিহ্নিত হয়েছে, যেমন লজিস্টিকসের পর্যাপ্ত ব্যবহার না হওয়া, প্রশিক্ষণের ঘাটতি, তদারকির দুর্বলতা এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে স্বদিচ্ছার অভাব।
এই গবেষণার সুপারিশ অনুযায়ী, উপজেলা পর্যায়ে একটি মানসম্মত সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন, নিয়মিত প্রশিক্ষণ, সক্রিয় কমিটি এবং জাতীয়-স্থানীয় পর্যায়ে জোরালো তদারকি নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে। গবেষণা কার্যক্রম বাস্তবায়নে সহযোগিতা করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভিন্ন শাখা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফ, আইসিডিডিআরবিসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আরিফুল হোসেন মন্তব্য করেন উক্ত গবেষণা কার্যক্রমের ফলাফল শুধুমাত্র উপজেলা নয়, জেলা ও জাতীয় পর্যায়ের স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানেও কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে এবং এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের পৃথক বিভাগ চালু করা উচিত। হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতাকর্মী বৃদ্ধিকরণের বিষয়ে নীতি নির্ধারকদের দৃষ্টিপাত করার বিষয়ে মন্তব্য করেন ডা. জয়নাল আবেদিন টিটু, লাইন ডাইরেক্টর হাসপাতাল সার্ভিস ম্যানেজমেন্ট, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ঢাকা।
ব্রিগে. জেনারেল আবু নোমান মোঃ মোসলেহ উদ্দিন, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় উক্ত গবেষণা কার্যক্রমের সাথে যুক্ত সকলকে ধন্যবাদ জানান এবং বিশেসায়িত হাসপাতালে সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম ও তা বাস্তবায়ণের জন্য মনিটরিং এর গুরুত্ব তুলে ধরেন।
ব্রিগে. জেনারেল সাইদুর রহমান, পরিচালক কুর্মিটোলা বলেন হাসপাতাল বিদ্যামান যন্ত্রপাতি ও সামগ্রীর ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের দলগত প্রচেষ্টা প্রতিষ্ঠানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং ডা. মুরাদ সুলতান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রতিনিধি এই গবেষণায় প্রস্তুতকৃত স্বাস্থ্য শিক্ষা উপকরণের বিষয়ে ইতিবাচক মন্তব্য করেন। ডা.রিজওয়ানুর রহমান, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) গবেষণা কার্যক্রমের প্রাপ্ত ফলাফল অন্যান্য সেবা প্রতিষ্ঠানে প্র্রয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।

আরও তথ্যের জন্য যোগাযোগ করুন:
ডা. ফারজানা তাহের মুনমুন
ওএসডি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
বর্তমানে KOICA ফেলোশিপ প্রোগ্রামে Yonsei University তে অধ্যায়নরত
ইমেইল: munmun854@gmail.com
হোয়াটসঅ্যাপ: +৮৮০১৭১১৪৬৩১৯২

নিরাপত্তা খাত সংস্কারে র‍্যাব বিলুপ্তি বিবেচনা করতে হবে: ডব্লিউজিইআইডি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ৯ জুলাই, ২০২৫, ১:৩১ অপরাহ্ণ
নিরাপত্তা খাত সংস্কারে র‍্যাব বিলুপ্তি বিবেচনা করতে হবে: ডব্লিউজিইআইডি

নিরাপত্তা খাতের সংস্কারের অংশ হিসেবে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) বিলুপ্ত করার বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারকে গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা উচিত—এমন সুপারিশ করেছে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের আওতাধীন জোরপূর্বক গুমসংক্রান্ত ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এনফোর্সড অর ইনভলান্টারি ডিজঅ্যাপিয়ারেন্সেস (ডব্লিউজিইআইডি)। একই সঙ্গে তারা বলেছে, যারা গুমের মতো গুরুতর অপরাধে জড়িত নন, র‍্যাবের সেই সদস্যদের নিজ নিজ বাহিনীতে ফেরত পাঠাতে হবে।
ডব্লিউজিইআইডির প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআইকে কেবলমাত্র সামরিক গোয়েন্দা কার্যক্রমে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। সংস্থাটির দায়িত্ব, কর্তৃত্ব এবং বাজেট কাঠামো স্পষ্ট ও সীমিত করার প্রস্তাবও উঠে এসেছে প্রতিবেদনে।
প্রসঙ্গত, গত জুনে বাংলাদেশ সফর করে ডব্লিউজিইআইডির কারিগরি প্রতিনিধি দল। সফরকালে তারা সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা, সেনাবাহিনী প্রধান, পুলিশ, গুম কমিশন এবং গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। সফর শেষে ২৫ জুন তারা প্রতিবেদনটি সরকারকে পাঠায়।
এর আগে র‍্যাবের মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে বাহিনীটি বিলুপ্তির সুপারিশ করেছিল গঠিত গুম কমিশন, জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের তথ্যানুসন্ধানী দল এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।
ডব্লিউজিইআইডি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাংলাদেশে সংঘটিত অধিকাংশ গুমের ঘটনায় র‍্যাব প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত ছিল। ডিজিএফআইও কিছু ক্ষেত্রে সম্পৃক্ত ছিল বলে উল্লেখ করা হয়। তারা বলেছে, এসব বাহিনীর সদস্যদের একটি বড় অংশ এখনও নিজ নিজ পদে বহাল রয়েছেন, যা বিচারপ্রক্রিয়ার ওপর জনগণের আস্থা ক্ষুণ্ণ করছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর মধ্যে জবাবদিহির অভাব এবং দায়মুক্তির সংস্কৃতি গুমের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে প্রধান প্রতিবন্ধক। ডব্লিউজিইআইডি মনে করে, সংস্থাগুলোর প্রতি জনগণের আস্থা পুনঃস্থাপন করতে হলে, প্রকৃত অর্থে নিরপেক্ষ তদন্তে সহযোগিতা এবং অপরাধীদের অপসারণ নিশ্চিত করতে হবে।
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী বলেন, জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর র‍্যাবের অভ্যন্তরে সংস্কার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, ‘র‍্যাব একটি সরকারি আদেশে গঠিত বাহিনী, কাজেই সরকার চাইলে সদস্যরা নিজ নিজ বাহিনীতে ফিরে যাবে।’ তবে বাহিনীর অনেক ইতিবাচক ভূমিকা রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। তার মতে, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতের মাধ্যমে র‍্যাবকে কার্যকর রাখা সম্ভব।
জুলাই-পরবর্তী মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ‘আফটার দ্য মনসুন রেভল্যুশন: এ রোডম্যাপ টু লাস্টিং সিকিউরিটি সেক্টর রিফর্ম ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এ প্রতিবেদনটি ইউরোপ ও আমেরিকার কূটনীতিকদের কাছেও পৌঁছে দেওয়া হয়।
প্রতিবেদন প্রকাশের সময় কয়েকটি ইউরোপীয় রাষ্ট্রের কূটনীতিক র‍্যাব বিলুপ্তি নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করেন। গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন পশ্চিমা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘র‍্যাব গঠনের সময় মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু একইসঙ্গে তারা জঙ্গিবাদ ও গুরুতর অপরাধ দমনেও কার্যকর ভূমিকা রেখেছে। এখন বাহিনীটি বিলুপ্ত হলে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সমস্যা তৈরি হতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘র‍্যাব গঠনের পেছনে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের ভূমিকা ছিল। সে সময় বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় এ বাহিনীর প্রয়োজনীয়তা ছিল। তবে র‍্যাব পরবর্তীতে ভাড়াটে বাহিনীর মতোও ব্যবহৃত হয়েছে, যা দুঃখজনক।’
একই আলোচনায় অংশ নেওয়া আরেক কূটনীতিক মনে করেন, বাহিনীটি রাজনৈতিকভাবে ব্যবহারের কারণে জবাবদিহিহীন হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার চেষ্টা করলেও র‍্যাবকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করে পুনর্গঠনের কাজ কঠিন হবে। বাহিনীটি অতীতে ‘আয়নাঘর’ নামে পরিচিত নির্যাতনকেন্দ্র পরিচালনা করত, যার বেশ কিছু আলামত এখন ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে।’
এই কূটনীতিকের মতে, ভবিষ্যতে রাজনৈতিক সরকার ফিরে এলে বাহিনীর পুরনো রূপে ফেরার সম্ভাবনা থেকেই যায়। কারণ অতীতে ক্ষমতাসীন যে দলই হোক, র‍্যাবকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা হয়েছে। কাজেই র‍্যাব বিলুপ্ত না করে সংবিধান ও মানবাধিকার অনুযায়ী সংস্কার করাই হতে পারে সবচেয়ে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ।

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ডিজিএম জাহিদ হোসেন জাতীয়তাবাদী আদর্শের আস্থার প্রতীক

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ৯ জুলাই, ২০২৫, ১:০৩ অপরাহ্ণ
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ডিজিএম জাহিদ হোসেন জাতীয়তাবাদী আদর্শের আস্থার প্রতীক

বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়ীজ ইউনিয়ন বি-৯৮৫ সিবিএ, আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে গড়ে উঠা একটি শ্রমিক সংগঠন। গত ১৭ বছর এ সংগঠনের অনেক নেতা-কর্মী সমর্থকরা হত্যা, নির্যাতন, নিপিড়ন, চাকুরীচ্যুত, সাসপেন্ডের শিকার হয়েছেন। অনেকে অপমান অপদস্থ হয়ে চাকুরী ছেড়ে চলে গেছেন। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে কিছু সংখ্যক উর্ধ্বর্তন কর্মকর্তা ও কর্মচারী টিকে গেছে। জাহিদ হোসেন কঠিন দুঃসময়ে জাতীয়তাবাদী আদর্শের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ঐক্যবদ্ধ রাখতে কাজ করেছেন।
গোপনে তিনি সংগঠনের কর্মী ও নিগৃহিত সমর্থকদের খোজ-খবর রাখতেন এবং সহযোগিতা করতেন। যে সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক যে সকল ব্যবস্থা নেওয়া হতো তিনি গোপনে সেগুলো নিয়ে কাজ করতেন এবং পজিটিভ কর্মীদের রক্ষা করার চেষ্টা করতেন। ‘জুলাই’ আন্দোলনে জাহিদ হোসেন কর্মকর্তাদের এবং সংগঠনের নেতা-কর্মীদের নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে মাঠে ছিলেন। ৫ আগস্টের পর জাহিদ হোসেনের নেতৃত্বেই ব্যাংকের সকল জাতীয়তাবাদী মন্য কর্মকর্তারা ঐক্যবদ্ধ হোন এবং এমপ্লয়ীজ ইউনিয়ন বি-৯৮৫ সিবিএ এর সাথে যৌথ ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
সংস্কার কার্যক্রম : সাম্প্রতিক সময়ে, বিশেষ করে গত ৫ আগস্টের পর যখন ব্যাংকের শীর্ষ প্রশাসনিক পদে শূন্যতা ছিলো। তখন তিনি ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ সংকট মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তার নেতৃত্বে কর্মীবান্ধব এবং দক্ষতা-ভিত্তিক সংস্কার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পদোন্নতি ও সুবিধাদি : তার নেতৃত্বে সুপারভাইজার ও অফিসার পর্যায়ে বিগত সময়ের চেয়ে সর্বোচ্চ সংখ্যক পদোন্নতি প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও, কর্মপরিবেশের উন্নতি, গৃহঋণ কর্তনহার সহনীয় পর্যায়ে আনা, এবং আহার ও ক্লোজিং ভাতা বৃদ্ধির মতো নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
অর্গানোগ্রাম সংশোধন : ব্যাংকের অর্গানোগ্রাম সংশোধনের মাধ্যমে নতুন পদ সৃষ্টির প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে, যা তার নেতৃত্বেই সম্পন্ন হয়েছে।
“জাতীয়তাবাদ ফোরাম”: তিনি “জাতীয়তাবাদ ফোরাম” নামে একটি প্ল্যাটফর্মের প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করছেন। এটি জাতীয়তাবাদী চিন্তা ও আদর্শে বিশ্বাসী একদল কর্মকর্তা-কর্মচারীর একটি সংগঠন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অংশগ্রহণ : প্রশাসনিক কাজের বাইরেও তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সক্রিয়। তিনি বাংলাদেশ ব্রিজ দলের একজন সদস্য এবং বিশ্ব ব্রিজ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন।
২৪ সালে এমপ্লয়ীজ ইউনিয়নের সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নোয়াখালী সেনবাগ, লক্ষীপুর ও ফেনী, শেরপুরের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের ১৪ লক্ষ টাকার ত্রাণ বিতরন কার্যক্রম করেন। প্রতিটি জাতীয় দিবস ঐক্যবদ্ধভাবে পালন করেন। গত ৩০ মে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এর শাহাদাৎবার্ষিকি অনুষ্ঠান তিন দিনব্যাপী উৎযাপন করেন। তাই জাহিদ হোসেন জাতীয়তাবাদী আদর্শের আস্থার প্রতীক।