খুঁজুন
                               
শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২৯ ভাদ্র, ১৪৩২

সাহিত্য ও সমাজ : একে অপরের পরিপূরক

উজ্জ্বল হোসাইন
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১০:৫৮ অপরাহ্ণ
সাহিত্য ও সমাজ : একে অপরের পরিপূরক

সাহিত্য ও সমাজের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর এবং আন্তঃসংযুক্ত। সাহিত্য সমাজের প্রতিফলন ঘটায়, আবার সাহিত্য সমাজের পরিবর্তনেও ভূমিকা রাখে। ইতিহাসের প্রতিটি পর্যায়ে সমাজের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তন সাহিত্যকে প্রভাবিত করেছে, আবার সাহিত্যও সমাজকে নতুন ভাবনার আলোয় আলোকিত করেছে। সাহিত্যের মাধ্যমে মানুষের আবেগ, চিন্তা, কল্পনা ও অভিজ্ঞতা ফুটে ওঠে, যা সমাজকে নতুন দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখতে শেখায়। সাহিত্য কেবল একটি শিল্প নয়, এটি মানুষের অনুভূতি, চিন্তা, সমাজ ও সংস্কৃতির বহিঃপ্রকাশ। সাহিত্য বিভিন্ন রূপে প্রকাশিত হতে পারে—কবিতা, উপন্যাস, নাটক, ছোটগল্প, প্রবন্ধ, আত্মজীবনী ইত্যাদি। সাহিত্য সমাজের ভাষা, রীতি-নীতি, সংস্কৃতি, জীবনধারা এবং সময়ের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরে।

সমাজ হলো মানুষের একটি সংগঠিত কাঠামো, যেখানে ভাষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, ধর্ম, রাজনীতি, অর্থনীতি ও জীবনযাত্রা একসাথে মিশে থাকে। সমাজের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের চিন্তা ও অভ্যাস পরিবর্তিত হয়, যা সাহিত্যে প্রতিফলিত হয়।

সাহিত্য সমাজের একটি শক্তিশালী মাধ্যম, যা মানুষের চিন্তা, নৈতিকতা ও সংস্কৃতিকে গঠনে ভূমিকা রাখে। এটি বিভিন্নভাবে সমাজকে প্রভাবিত করে—সাহিত্য সমাজের অসঙ্গতি, বৈষম্য ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানায়। উদাহরণস্বরূপ, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের শ্রীকান্তদেবদাস উপন্যাসে সমাজের কুসংস্কার ও সামাজিক অবিচারের চিত্র ফুটে উঠেছে।

সাহিত্য জাতীয়তাবাদ ও সামাজিক সচেতনতার বিকাশ ঘটাতে পারে। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের আনন্দমঠ উপন্যাস ভারতীয় জাতীয়তাবাদের বীজ বপন করেছিল। সাহিত্যের মাধ্যমে সমাজে সংস্কার আনা সম্ভব। ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের লেখনী নারী শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে, যা সমাজে পরিবর্তন এনেছে। সাহিত্য মানুষকে নৈতিক শিক্ষা দেয় এবং তাদের মধ্যে মানবিক মূল্যবোধ গড়ে তোলে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্যকর্ম ভালো-মন্দের পার্থক্য ও মানবিক গুণাবলির গুরুত্ব বোঝা। যুগে যুগে সমাজের পরিবর্তন সাহিত্যে প্রতিফলিত হয়েছে। সমাজ ও সাহিত্যের সম্পর্ক বোঝার জন্য বিভিন্ন যুগের সাহিত্য বিশ্লেষণ করা যেতে পারে—প্রাচীন বাংলা সাহিত্যে ধর্মীয় ও পৌরাণিক বিষয়বস্তু দেখা যায়। চর্যাপদ বাংলার আদি সাহিত্য, যেখানে তৎকালীন সমাজের ধর্মীয় ও দার্শনিক চিন্তাধারা প্রতিফলিত হয়েছে। মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্য ছিল ধর্ম ও ভক্তিবাদের উপর ভিত্তি করে। বৈষ্ণব পদাবলী, মঙ্গলকাব্য এবং কাহিনি কাব্য তৎকালীন সমাজের সংস্কৃতিকে প্রতিফলিত করেছে। এই সময় সাহিত্যে সমাজ সংস্কার, জাতীয়তাবাদ ও পশ্চিমা শিক্ষার প্রভাব দেখা যায়। বঙ্কিমচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, শরৎচন্দ্র প্রমুখ লেখকের সাহিত্য তৎকালীন সমাজের বাস্তবতা তুলে ধরেছে। বর্তমান যুগের সাহিত্য ব্যক্তিকেন্দ্রিকতা, প্রযুক্তির প্রভাব, বিশ্বায়ন, রাজনৈতিক বাস্তবতা, সামাজিক অবক্ষয় ইত্যাদির চিত্র তুলে ধরে।

সাহিত্যের মাধ্যমে মানুষ সমাজের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে সচেতন হয়। এটি অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তোলে।সাহিত্য মানুষের মধ্যে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও চিন্তার বিকাশ ঘটায়, যা সমাজের পরিবর্তনে সহায়ক হয়। সাহিত্যের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে সাংস্কৃতিক ঐক্য তৈরি হয় এবং একে অপরের প্রতি সহানুভূতি বৃদ্ধি পায়। সাহিত্য সমাজের ইতিহাসকে সংরক্ষণ করে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অতীতের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে।

সাহিত্য ও সমাজ একে অপরের পরিপূরক। সাহিত্য সমাজের প্রতিচ্ছবি, আবার সমাজও সাহিত্যকে গঠন ও প্রভাবিত করে। মানুষের জীবনযাপন, সংস্কৃতি, ইতিহাস, এবং সামাজিক বাস্তবতা সাহিত্যকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে, ঠিক যেমন সাহিত্যও মানুষের চিন্তাধারা, নৈতিকতা, এবং মূল্যবোধ গঠনে ভূমিকা রাখে। সমাজ পরিবর্তনের সাথে সাথে সাহিত্যও পরিবর্তিত হয় এবং নতুন নতুন দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করে। এই প্রবন্ধে সাহিত্য ও সমাজের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বিশ্লেষণ করা হবে। সাহিত্য কেবল কল্পনাপ্রসূত রচনা নয়, বরং এটি মানুষের জীবন ও অভিজ্ঞতার গভীর বিশ্লেষণ। কবিতা, উপন্যাস, নাটক, ছোটগল্প, প্রবন্ধ—এসব সাহিত্যকর্ম সমাজের বিভিন্ন স্তরের চিত্র তুলে ধরে। অন্যদিকে, সমাজ হল মানুষের জীবনযাত্রার সমষ্টি, যা সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, অর্থনৈতিক অবস্থা এবং অন্যান্য উপাদানের দ্বারা গঠিত।

সাহিত্য সমাজকে কীভাবে প্রভাবিত করে, তা বোঝার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। সহিত্য সমাজের অসংগতি, অন্যায়, বৈষম্য, ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে কথা বলে। বাংলা সাহিত্যে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাস শ্রীকান্তদেবদাস তৎকালীন সামাজিক বাস্তবতার প্রতিচিত্র। সাহিত্য সমাজের ভাষা, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ধারক। ফোকলোর, লোককাহিনি, এবং মহাকাব্য (যেমন—রামায়ণ, মহাভারত, মৈমনসিংহ গীতিকা) প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে সংস্কৃতির সংরক্ষণে ভূমিকা রাখে। সাহিত্য সমাজের পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্য ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে বাঙালির চেতনাকে জাগিয়ে তুলেছিল। সাহিত্য সমাজের বাস্তবতা প্রতিফলিত করে। বিভিন্ন সময়ের সাহিত্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, প্রতিটি সাহিত্যকর্মে তৎকালীন সমাজের চিত্র ফুটে ওঠে। মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্য (যেমন—মঙ্গলকাব্য, বৈষ্ণব পদাবলী) ধর্মীয় ও পৌরাণিক কাহিনির প্রভাব বহন করে। ঊনবিংশ শতকে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ও মাইকেল মধুসূদন দত্তের সাহিত্য সামাজিক সংস্কার ও জাতীয়তাবাদী চেতনাকে উদ্বুদ্ধ করেছিল। আজকের সাহিত্য ব্যক্তি ও সমাজের জটিল মনস্তত্ত্ব এবং প্রযুক্তির প্রভাবের মতো বিষয় নিয়েও আলোচনা  করে।

সাহিত্য ও সমাজ একে অপরের সাথে গভীরভাবে জড়িত। সমাজ সাহিত্যকে গঠন করে, আবার সাহিত্য সমাজের বিকাশে ভূমিকা রাখে। সমাজের পরিবর্তনের সাথে সাথে সাহিত্যও পরিবর্তিত হয় এবং নতুন দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করে। ফলে সাহিত্য ও সমাজের এই সম্পর্ক চিরন্তন ও অপরিহার্য। সাহিত্য ও সমাজের সম্পর্ক একে অপরের পরিপূরক। সাহিত্য সমাজকে প্রতিফলিত করে, আবার সাহিত্য সমাজের বিকাশেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সাহিত্য মানুষের চিন্তা-চেতনার বিকাশ ঘটায়, ন্যায়-অন্যায়ের পার্থক্য শেখায়, এবং সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করে। সমাজের পরিবর্তনের সাথে সাথে সাহিত্যও পরিবর্তিত হয় এবং নতুন নতুন দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করে। তাই বলা যায়, সাহিত্য ও সমাজের এই সম্পর্ক চিরন্তন, যা যুগে যুগে মানুষের জীবন ও সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করে আসছে।

লেখক পরিচিতি  : উজ্জ্বল হোসাইন, লেখক ও প্রাবন্ধিক, চাঁদপুর।

জয় দিয়ে এশিয়া কাপ শুরু বাংলাদেশের

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১২:২৭ অপরাহ্ণ
জয় দিয়ে এশিয়া কাপ শুরু বাংলাদেশের

জয়ে এশিয়া কাপ শুরু করল বাংলাদেশ। নিজেদের প্রথম ম্যাচে হংকংকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে টাইগাররা। হংকংয়ের ১৪৩ রানের জবাবে ১৭ ওভার ৪ বলে ৩ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।
রানতাড়ায় নেমে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটিতে আসে ২৪ রান। তৃতীয় ওভারের শেষ বলে পারভেজ হোসেন ইমন ১৪ বল ১৯ রান করে ফিরে গেলে জুটি ভাঙে। ৫.৪ ওভারে ৪৭ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তানজিদ তামিম ফেরেন ১৮ বলে ১৪ রান করে।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে লিটন ও হৃদয় মিলে ৭০ বলে ৯৫ রান যোগ করেন। জয় থেকে ২ রান দূরে থাকতে লিটন বোল্ড হয়ে ফিরে যান। ৬ চার ও এক ছক্কায় ৩৯ বলে ৫৯ রান করেন। পরে জাকের আলি অনিককে নিয়ে জয় নিশ্চিত করেন হৃদয়। ১ চারে ৩৬ বলে ৩৫ রান করেন হৃদয়। রানের খাতা খোলার সুযোগ পাননি জাকের।
এর আগে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪৩ রান সংগ্রহ করেছে হংকং। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪২ রানের ইনিংস খেলেছেন নিজাকাত খান। টাইগারদের পক্ষে সবচেয়ে সফল তানজিম হাসান সাকিব ২১ রান খরচায় ২ উইকেট শিকার করেছেন। এ ম্যাচে জয় তুলে নিতে ওভারপ্রতি ৭.২০ রান করতে হবে টাইগারদের।
এদিন টস জিতে ফিল্ডিং করতে নেমে শুরু থেকে হংকংকে চাপে রেখেছিল টাইগার বোলাররা। দলের খাতায় ৩০ রান যোগ করতে ২ উইকেট হারায় তারা। বাংলাদেশকে প্রথম উইকেটটি এনে দেন তাসকিন আহমেদ। ৫ বলে ৪ রান করে টাইগার পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের লেংথ বলে কট বিহাইন্ড হন আনশুমান রাথ। আম্পায়ার যদিও শুরুতে সাড়া দেননি, রিভিউ নিয়ে উইকেটটি আদায় করে নেয় বাংলাদেশ। এরপর দারুণ এক ডেলিভারিতে ১২ বলে ১৪ রান করা বাবর হায়াতকে বোল্ড করেন পেসার তানজিম হাসান সাকিব।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করে হংকং। জিশান আলী ও নিজাকাত খানের ৪১ রানের জুটি শেষমেশ ভাঙেন তানজিম সাকিব। তার বাউন্সার জায়গা নিয়ে তুলে মারতে গিয়ে মিডউইকেটে মোস্তাফিজুর রহমানের হাতে তুলে দেন ওপেনার জিশান। ৩৪ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৩০ রানে থামে তার ইনিংস। চতুর্থ উইকেটে নিজাকাত ও ইয়াসিম মুর্তজা হতাশায় ভোগান টাইগার বোলারদের।
অনেক চেষ্টা করেও উইকেটের দেখা মিলছিল না। শেষমেশ ১৮তম ওভারে গিয়ে ভুল বোঝাবুঝিতে ভাঙে হংকংয়ের চতুর্থ জুটি। ১৯ বলে ২ ছক্কা ও ২ চারের মারে ২৮ রান করে রান আউট হন মুর্তজা। ততক্ষণে তারা দলের সংগ্রহ শতরান পার করে দেন। অন্যদিকে ৪০ বলে ২ চার ও ১ ছক্কায় ৪২ রান করে ১৯তম ওভারের পঞ্চম বলে রিশাদ হোসেনের শিকার হন নিজাকাত। পরের বলেই ক্রিজে নেমে টাইগার রিস্ট স্পিনারের বলে এলবিডব্লিউ হন কিঞ্চিৎ শাহ।
শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪৩ রানে থামে হংকংয়ের ইনিংস। বাংলাদেশের হয়ে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন তাসকিন, তানজিম সাকিব ও রিশাদ।

স্থূলতা তরুণদের কতটা ক্ষতি করছে?

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১২:২০ অপরাহ্ণ
স্থূলতা তরুণদের কতটা ক্ষতি করছে?

বর্তমান সময়ের জীবনযাত্রা বিগত এক দশকের থেকে অনেকটাই আলাদা। এখন সবাই নিজের কাজ নিয়ে দারুণ ব্যস্ত। আর এই ব্যস্ততার প্রভাব দেখা যায় আমাদের স্বাস্থ্যেও বিশেষ করে তরুণদের মাঝে। প্রসেসড খাবার, ডিজিটাল জীবনযাপন ও শারীরিক সক্রিয়তার ঘাটতি মিলিয়ে তরুণদের মধ্যে অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে স্থূলতা। আর এই স্থূলতা কেবল বাহ্যিক সৌন্দর্য বা ওজনের বিষয় নয়, বরং ডেকে আনছে গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি।
হিন্দুস্তান টাইমস নয়াদিল্লির স্যার গঙ্গা রাম হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. পিয়ুষ রঞ্জন জানান, স্থূল কিশোররা ভবিষ্যতে মারাত্মক লিভার রোগের ঝুঁকিতে পড়তে পারে। তার মতে, ভারতে কিশোর–কিশোরীদের মধ্যে ফ্যাটি লিভার রোগের হার প্রায় ৩৮ শতাংশ। এদের অনেকেই পরবর্তীতে সিরোসিস কিংবা লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত হতে পারে।
স্থূলতার ঝুঁকি: ডা. রঞ্জনের মতে, চিকিৎসাবিহীন স্থূলতা ডায়াবেটিস, হৃদ্‌রোগ, স্ট্রোক, কিডনি রোগ এবং বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। এর মধ্যে রয়েছে—কোলন, অগ্ন্যাশয়, খাদ্যনালী, স্তন ও ডিম্বাশয়ের ক্যানসার। তিনি আরও বলেন, স্বাভাবিক ওজনের তুলনায় স্থূল মানুষের লিভার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। বিভিন্ন গবেষণায় ঝুঁকির মাত্রা ভিন্ন হলেও, স্থূলতা ও লিভার জটিলতার সম্পর্ক স্পষ্টভাবে প্রমাণিত।
প্রতিরোধের উপায়: তরুণ প্রজন্মকে এই ঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে ডা. রঞ্জন কয়েকটি প্রতিরোধমূলক পরামর্শ দিয়েছেন—
> সুস্থ জীবনধারা গড়ে তোলা।
> তেল–চর্বিযুক্ত ও উচ্চ-ক্যালরির খাবার এড়িয়ে চলা।
> অতিরিক্ত ক্যালরিযুক্ত কার্বোহাইড্রেট কম খাওয়া।
> নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করা, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে এবং স্থূলতার ঝুঁকি কমাবে।
তরুণদের মধ্যে স্থূলতার হার উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে, যা শুধু আজকের নয়, ভবিষ্যতেরও ভয়ানক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে। ডা. পিয়ুষ রঞ্জনের পরামর্শ স্পষ্ট সুস্থ জীবনধারা ও খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলার বিকল্প নেই। এখনই সচেতন হলে কেবল ডায়াবেটিস, ক্যানসার বা লিভারের রোগই নয়, অসংখ্য জটিলতা থেকে নিজেদের বাঁচানো সম্ভব।

ডিজিটাল প্রতারণায় কয়েক কোটি টাকা খোয়ালেন ভারতীয় নারী

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১২:১১ অপরাহ্ণ
ডিজিটাল প্রতারণায় কয়েক কোটি টাকা খোয়ালেন ভারতীয় নারী

অঞ্জলির (ছদ্মনাম) এই দুঃস্বপ্নের শুরুটা হয়েছিল একটা ফোন কলের মাধ্যমে। যার জন্য শেষপর্যন্ত তাকে পাঁচ কোটি পঁচাশি লাখ টাকা খোয়াতে হয়। ওই ফোন কলের সময় অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তি নিজেকে একটা কুরিয়ার সংস্থার কর্মচারী বলে পরিচয় দিয়ে দাবি করেছিলেন, মুম্বাই কাস্টমস বেইজিংয়ে পাঠানোর সময় অঞ্জলির একটা পার্সেল বাজেয়াপ্ত করেছে। ওই পার্সেলে মাদক পাওয়া গেছে।
গুরুগ্রামের বাসিন্দা অঞ্জলি বাস্তবে ডিজিটাল অ্যারেস্ট নামে সাইবার প্রতারণার শিকার হয়েছিলেন। এতে অভিযুক্তরা ভিডিও কল করে নিজেদের ভারতের আর্থিক তদারকি প্রতিষ্ঠান এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডির কর্মকর্তা বলে দাবি ফাঁদে ফেলে।
এর জন্য প্রতারকরা সাধারণত ভুক্তভুগীদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ তুলে তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়ার বা পরিবারের বাকি সদস্যদের ক্ষতি করার হুমকি দেয়। এভাবে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে অঞ্জলিকে টানা পাঁচ দিন ধরে ডিজিটাল অ্যারেস্ট করে রাখা হয়েছিল। স্কাইপ কলের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা নজরদারি রেখে তাকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল; যাতে তিনি টাকা ট্রান্সফার করতে বাধ্য হন।
অঞ্জলির কথায়, এরপর আমার মাথা কাজ করা বন্ধ দেয়। অসাড় হয়ে গিয়েছিলাম। যতক্ষণে ওই ফোনকল বন্ধ হয়, ততদিনে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছেন অঞ্জলি, নিজের সমস্ত সম্পত্তিও খুইয়েছেন।