খুঁজুন
                               
শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫, ৬ বৈশাখ, ১৪৩২

গণতন্ত্র ও পুরুষতন্ত্র : বর্তমান প্রেক্ষাপট

উজ্জ্বল হোসাইন
প্রকাশিত: সোমবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২৫, ১২:১৩ পূর্বাহ্ণ
গণতন্ত্র ও পুরুষতন্ত্র : বর্তমান প্রেক্ষাপট

গণতন্ত্র হলো এমন এক শাসনব্যবস্থা, যেখানে জনগণ রাষ্ট্র পরিচালনার মূল উৎস। এই ব্যবস্থায় স্বাধীনতা, সমতা এবং ন্যায়বিচারকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। অন্যদিকে, পুরুষতন্ত্র (প্যাট্রিয়ার্কি) একটি সামাজিক কাঠামো, যেখানে পুরুষদের আধিপত্য সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে দৃশ্যমান। এ দুটি ধারণার মধ্যে মৌলিক পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ভেতরেও পুরুষতন্ত্র প্রভাব বিস্তার করে আসছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, যেখানে নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী তাদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে সংগ্রাম করছে। এই প্রবন্ধে গণতন্ত্রে পুরুষতন্ত্রের ভূমিকা, তার প্রভাব, এবং সমাধানের পথ নিয়ে আলোচনা করা হবে। গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি হলো জনগণের দ্বারা, জনগণের জন্য এবং জনগণের শাসন। এখানে প্রত্যেক নাগরিকের সমান অধিকার নিশ্চিত করার কথা বলা হয়। এই ব্যবস্থায় মুক্ত বাকস্বাধীনতা, ধর্মীয় সহিষ্ণুতা, আইনের শাসন এবং লিঙ্গসমতা একটি আদর্শ লক্ষ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।

তবে বাস্তবিক পরিস্থিতি ভিন্ন। লিঙ্গসমতা গণতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হওয়া সত্ত্বেও, পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি গণতন্ত্রের মূল আদর্শকে বিকৃত করেছে। প্রাতিষ্ঠানিক এবং সাংস্কৃতিকভাবে পুরুষতন্ত্রের আধিপত্য গণতন্ত্রের পরিপূর্ণ বাস্তবায়নে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

পুরুষতন্ত্র একটি সামাজিক কাঠামো, যেখানে পুরুষরা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করে। এটি কেবলমাত্র নারীদের নয়, বরং প্রান্তিক ও সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর অধিকারকে সীমিত করে। পুরুষতন্ত্রের কারণে সমাজে ক্ষমতার বণ্টন অসম হয়, যা গণতন্ত্রের মূলনীতির সঙ্গে সরাসরি সংঘাত সৃষ্টি করে।

পুরুষতন্ত্রের প্রভাব প্রধানত তিনটি ক্ষেত্রে দৃশ্যমান : গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নারীদের রাজনৈতিক অংশগ্রহণ সীমিত। সংসদ বা প্রশাসনিক পদে নারীদের প্রতিনিধিত্ব অত্যন্ত কম। উদাহরণস্বরূপ, অনেক দেশেই নারী সংসদ সদস্যের হার পুরুষদের তুলনায় নগণ্য। ফলে নারীদের ইস্যু যেমন মাতৃত্বকালীন সুরক্ষা, নারী শিক্ষার উন্নয়ন, এবং লিঙ্গবৈষম্য দূরীকরণ গুরুত্ব পায় না। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নারীদের অবদানের স্বীকৃতি পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার কারণে অবহেলিত। নারীরা সমান কাজের জন্য পুরুষদের তুলনায় কম মজুরি পায়। কর্পোরেট নেতৃত্বেও পুরুষদের আধিপত্য লক্ষণীয়। সামাজিক রীতিনীতি এবং সংস্কৃতিতে পুরুষতন্ত্র গভীরভাবে প্রোথিত। নারী-পুরুষের মধ্যে কাজের বিভাজন, নারীর প্রতি সহিংসতা, এবং নারীদের উপর সামাজিক চাপ এটির উদাহরণ। গণতান্ত্রিক সমাজে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ সীমিত। উদাহরণস্বরূপ, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে নারীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত হলেও, প্রার্থিতা এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বে তারা পিছিয়ে। বিশ্বব্যাপী গড়ে ২৫% এর কম সংসদীয় আসনে নারীরা প্রতিনিধিত্ব করে।

যদিও কিছু দেশ কোটা পদ্ধতি চালু করে নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে, তবুও এই উদ্যোগগুলির কার্যকারিতা সীমিত। অনেক ক্ষেত্রেই নারীদের নেতৃত্ব কেবল প্রতীকী মাত্রায় থাকে। ফলে পুরুষতান্ত্রিক রাজনৈতিক কাঠামো পরিবর্তন করা সম্ভব হয় না।গণতন্ত্রে ন্যায়বিচার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কিন্তু অনেক সময় বিচারব্যবস্থায় পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা নারী এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে কাজ করে। উদাহরণস্বরূপ, নারী নির্যাতন বা যৌন হয়রানির মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হয় না। পুরুষতন্ত্রের কারণে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোতে লিঙ্গবৈষম্য রয়ে গেছে। চাকরি, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবায় নারীদের অবদমিত রাখা হয়। অনেক ক্ষেত্রে নারীদের পছন্দ এবং চাহিদা গুরুত্ব পায় না।

গণতন্ত্রে মিডিয়া জনগণের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে বিবেচিত। কিন্তু অনেক সময় মিডিয়া পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গিকে আরও শক্তিশালী করে। নারীদের অবদানের পরিবর্তে তাদের চেহারা, পোশাক বা ব্যক্তিগত জীবনের উপর অতিরিক্ত মনোযোগ দেওয়া হয়। এটি নারীর ক্ষমতায়নকে বাধাগ্রস্ত করে। শিক্ষা হলো লিঙ্গবৈষম্য দূর করার প্রথম ধাপ। লিঙ্গসমতা নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য শিক্ষাব্যবস্থায় পরিবর্তন আনা জরুরি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নারীদের জন্য বিশেষ সুযোগ নিশ্চিত করা উচিত। রাজনীতিতে এবং প্রশাসনিক ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে কোটা পদ্ধতি কার্যকরভাবে প্রয়োগ করা প্রয়োজন। এটি নারীদের নেতৃত্বের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করবে।

নারী অধিকার সুরক্ষার জন্য বিদ্যমান আইনগুলোর কার্যকর প্রয়োগ এবং নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। যেমন সমান মজুরি আইন কার্যকর করা, মাতৃত্বকালীন সুবিধা নিশ্চিত করা।পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব পরিবর্তনে পরিবার এবং সমাজের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নারীদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে স্বাধীনতা প্রদান এবং তাদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়ার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে।

মিডিয়া এমন একটি শক্তিশালী মাধ্যম যা সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে পারে। নারীদের ইতিবাচক ভূমিকা তুলে ধরা এবং পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার সমালোচনা করার মাধ্যমে মিডিয়া একটি শক্তিশালী প্রভাব রাখতে পারে।গণতন্ত্রে পুরুষতন্ত্র ও বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়ে বিশদভাবে আলোচনা করতে গেলে আরও কিছু বিষয় সংযুক্ত করা প্রয়োজন, যা বিষয়টির গভীরতা ও বিস্তৃত দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরতে সাহায্য করবে।

গণতন্ত্রের আদর্শ হলো সবার জন্য সমান অধিকার ও সুযোগ নিশ্চিত করা। কিন্তু পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা এবং ক্ষমতার কাঠামো এই আদর্শকে বারবার চ্যালেঞ্জ করে। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় পুরুষতন্ত্রের উপস্থিতি শুধু নারীদেরই নয়, বরং সমাজের অন্যান্য প্রান্তিক গোষ্ঠীর জন্যও বৈষম্যের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

গণতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হলো নাগরিকের মৌলিক অধিকার। কিন্তু পুরুষতন্ত্র পরিবার, শিক্ষা, ধর্ম এবং সংস্কৃতিতে এতটাই শিকড় গেড়ে বসেছে যে অনেক সময় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ভেতর থেকেও এটি মানুষের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করে। পরিবারই শিশুর প্রথম সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া। এখানে ছেলে এবং মেয়েদের প্রতি ভিন্ন আচরণ এবং দায়িত্ব আরোপের মাধ্যমে পুরুষতন্ত্রের বীজ বোনা হয়। ছেলেদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে ক্ষমতা দেওয়া হয়, যেখানে মেয়েদের বাধ্য করা হয় অন্যের সিদ্ধান্ত মেনে চলতে। বেশিরভাগ ধর্মীয় কাঠামোতে পুরুষতন্ত্র প্রোথিত। নারীদের উপর ধর্মীয় বিধি-নিষেধ আরোপ করে তাদের স্বাধীনতা সীমিত করা হয়।

গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় অর্থনৈতিক স্বাধীনতা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গবৈষম্য পুরুষতন্ত্রের একটি অন্যতম চিহ্ন। নারীদের কাজের মূল্যায়ন কম করা, নেতৃত্বস্থানে নারীদের অগ্রাহ্য করা, এবং মাতৃত্বকালীন ছুটির জন্য কর্মক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হওয়া – এসবই পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার উদাহরণ।

গণতন্ত্র শিক্ষা ও ক্ষমতায়নের মাধ্যমে সকলের জন্য সমান সুযোগের কথা বলে। তবে অনেক দেশে মেয়েদের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করা হয়। গরিব ও গ্রামীণ অঞ্চলে নারীদের স্কুলছুট হার পুরুষদের তুলনায় বেশি। মেয়েদের জন্য নিরাপদ শিক্ষা পরিবেশ নিশ্চিত করতে ব্যর্থতা একটি বড় সমস্যা। অনেক ক্ষেত্রে হুমকি, যৌন হয়রানি, এবং প্রাতিষ্ঠানিক উদাসীনতার কারণে মেয়েরা শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়।নারীর প্রতি সহিংসতা শুধু পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার ফল নয়, এটি গণতন্ত্রের ব্যর্থতারও প্রতীক। নারীদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি, ধর্ষণ, পারিবারিক নির্যাতন ইত্যাদি সমস্যাগুলো আইন ও শাসনব্যবস্থার অকার্যকারিতা তুলে ধরে।অনেক দেশে ধর্ষণের মামলা প্রমাণ করা কঠিন। ভুক্তভোগীদের হয়রানি এবং সামাজিক লজ্জার শিকার হতে হয়।আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি নারী নিরাপত্তার পথে একটি বড় বাধা।

বর্তমান সময়ে নারীরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছেন। গণতন্ত্রে নারীর অংশগ্রহণ এবং অবদান সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করছে।বিভিন্ন দেশে নারী নেতৃত্ব গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করেছে। উদাহরণস্বরূপ, নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আর্ডার্নের নেতৃত্বে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় অসাধারণ সাফল্য এসেছে।নারীর অধিকার নিশ্চিত করার জন্য মী টু (MeToo) আন্দোলন এবং টাইমস আপ (TimesUp) আন্দোলন বিশ্বজুড়ে নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক চেতনা জাগিয়ে তুলেছে।

বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে পুরুষতন্ত্রের উপস্থিতি গণতন্ত্রের প্রকৃতি ও কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করে।দক্ষিণ এশিয়া, আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে পুরুষতন্ত্র গভীরভাবে প্রোথিত। এখানে নারীরা বাল্যবিবাহ, পণপ্রথা, এবং সামাজিক নিপীড়নের শিকার। শিক্ষা এবং কর্মসংস্থানে নারীদের সীমিত অংশগ্রহণ গণতন্ত্রের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। উন্নত দেশে নারীরা শিক্ষা ও কর্মসংস্থানে ভালো অবস্থানে থাকলেও, সেখানে “গ্লাস সিলিং” বা অদৃশ্য বাধার উপস্থিতি রয়েছে।যৌন হয়রানি এবং পারিশ্রমিকের বৈষম্য উন্নত দেশেও একটি বড় সমস্যা।

গণতান্ত্রিক সরকারগুলোর উচিত নারীবান্ধব নীতিমালা প্রণয়ন করা। যেমন: কর্মক্ষেত্রে সমান বেতন নিশ্চিত করা।নারীদের জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ তৈরি করা।মাতৃত্বকালীন এবং পিতৃত্বকালীন ছুটি নিশ্চিত করা।

সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে লিঙ্গবৈষম্য দূর করার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার প্রয়োজন। নারীদের নেতৃত্বে আসার জন্য প্রশিক্ষণ ও সুযোগ দিতে হবে।পুরুষতান্ত্রিক সংস্কৃতির পরিবর্তন আনার জন্য সামাজিক সচেতনতা জরুরি। মিডিয়া, শিক্ষা, এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পুরুষতন্ত্র বিরোধী বার্তা প্রচার করতে হবে। নারীদের প্রতি সহিংসতা রোধে আইনের কঠোর প্রয়োগ এবং অপরাধীদের দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এটি নারীদের নিরাপত্তা ও অধিকার সুরক্ষায় সাহায্য করবে।

গণতন্ত্রকে একটি পূর্ণাঙ্গ এবং কার্যকর শাসনব্যবস্থা হিসেবে গড়ে তুলতে হলে পুরুষতন্ত্রের প্রভাব দূর করতে হবে। এটি শুধু নারীদের জন্য নয়, বরং সমাজের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য জরুরি। লিঙ্গসমতা নিশ্চিত করা একটি গণতান্ত্রিক সমাজের মৌলিক শর্ত। শিক্ষার প্রসার, সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি, এবং আইনের কার্যকর প্রয়োগের মাধ্যমে পুরুষতন্ত্রমুক্ত গণতন্ত্র গড়ে তোলা সম্ভব। আমাদের দায়িত্ব হলো এমন একটি সমাজ তৈরি করা যেখানে প্রতিটি নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ, নিরাপত্তা এবং সম্মান নিশ্চিত করা যায়। গণতন্ত্রের আসল শক্তি তার অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রকৃতিতে নিহিত। তাই পুরুষতন্ত্রের বাধা অতিক্রম করেই একটি সমতাপূর্ণ ও ন্যায়সঙ্গত সমাজ প্রতিষ্ঠা সম্ভব।

গণতন্ত্র এবং পুরুষতন্ত্র একে অপরের বিপরীত ধারণা হলেও বর্তমান বিশ্বে এদের সহাবস্থান দেখা যায়। পুরুষতন্ত্র গণতন্ত্রের মৌলিক নীতিকে বাধাগ্রস্ত করছে, যা একটি সমতাপূর্ণ সমাজ গঠনের পথে প্রধান অন্তরায়। তবে শিক্ষা, আইন, এবং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। নারীর ক্ষমতায়ন এবং লিঙ্গসমতা নিশ্চিত করাই গণতন্ত্রের প্রকৃত আদর্শ প্রতিষ্ঠার একমাত্র উপায়।

লেখক পরিচিতি : উজ্জ্বল হোসাইন, লেখক ও সাংবাদিক, চাঁদপুর।

ঈদে নতুন জামা : স্বপ্ন আর ভালোবাসা জড়ানো

উজ্জ্বল হোসাইন
প্রকাশিত: শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫, ১২:২২ পূর্বাহ্ণ
ঈদে নতুন জামা : স্বপ্ন আর ভালোবাসা জড়ানো

ঈদ মানেই আনন্দ, উৎসব, মিলন এবং নতুন করে বাঁচার প্রেরণা। এই দিনে সবাই চায় নিজেকে সাজিয়ে নিতে, নতুন কাপড় পরে প্রিয়জনের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নিতে। কিন্তু এমন অনেকের মধ্যেও থাকে এমন কেউ, যার জন্য একটি নতুন জামা শুধু পোশাক নয়, বরং স্বপ্ন, গর্ব, আত্মমর্যাদা এবং একটি আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। এই প্রবন্ধে আমরা এমন এক নতুন জামার কথা বলব, যে জামার শুধু দামী কাপড় বা ডিজাইনের গর্ব নেই, বরং রয়েছে আত্মার গভীরে জমে থাকা এক মানুষের স্বপ্নের গল্প।

শহরের এক কোণায় বাস করে ছোট্ট ছেলেটি রিয়াদ। বয়স প্রায় দশ। তার বাবা একজন দিনমজুর, মা গৃহিণী। সংসারে অভাব-অনটনের মধ্যে কোনোভাবে দিন কাটে তাদের। বছরের প্রতিটি দিন কাটে সংগ্রামের মাঝে, কিন্তু ঈদ আসে স্বপ্নের আলো নিয়ে। ঈদে নতুন জামা পাবে, এই আশায় রিয়াদ এক মাস রোজা রাখে, নিজের মনকে শক্ত করে।

তবে এই জামা আসবে কি না, তা নিয়ে কোনো নিশ্চয়তা নেই। কারণ, বাবার মুখে ভাঁজ আর চিন্তার ছাপ স্পষ্ট। মা বারবার বলেন, “এবার হয়তো পুরনো জামাতেই ঈদ করতে হবে।” কিন্তু রিয়াদ বিশ্বাস করে—আল্লাহ যদি রোজা কবুল করেন, তাহলে একটা নতুন জামা হয়তো আসবেই।

এই জামার অপেক্ষা শুধু রিয়াদের নয়, এটি যেন তার মন-প্রাণের আকুতি। এই জামা তার জন্য স্বপ্নপূরণ, আত্মমর্যাদা, শ্রেষ্ঠত্বের অনুভব।

আমরা অনেক সময় বুঝি না, একটি নতুন জামা একজন শিশুর জন্য কতটা অর্থবহ হতে পারে। ধনী পরিবারের শিশুর কাছে এটি হয়তো একটি চমকপ্রদ পোশাক, কিন্তু রিয়াদের কাছে এটি স্বপ্ন পূরণের মতো। সে ভাবে, ঈদের দিন সবার মতো তাকেও যদি নতুন জামায় দেখা যায়, তাহলে সে আর অবহেলিত হবে না, তার বন্ধুরা তাকে হাসবে না। তারও মুখে হাসি ফুটবে, তারও ছবি উঠবে মোবাইল ক্যামেরায়।

এই জামা তার আত্মবিশ্বাস, যেটা সে স্কুলে পড়ার সময় খুঁজে বেড়ায়, যখন ক্লাসের অন্য ছেলেরা নতুন জামা পরে আসে আর সে পড়ে থাকে একঘেয়ে মলিন কাপড়।

এখানে জামার একটি কল্পিত স্বর ও ভাষা কল্পনা করা যাক—যেখানে জামাটি যেন নিজের মনে নিজের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করছে: “আমি কোনো বিলাসী দোকানের শেলফে ঝুলে থাকা দামি জামা নই। আমি সেই জামা, যাকে এক দরিদ্র বাবার কষ্টের টাকায় কিনে আনা হবে তার ছেলের মুখে এক চিলতে হাসি ফোটাতে।
আমি হয়তো রঙিন নই, হয়তো আমার ডিজাইনে জাঁকজমক নেই, কিন্তু আমি গর্বিত। কারণ আমি হব একটি শিশুর ঈদের স্বপ্ন পূরণের বাহক। আমি হব আত্মমর্যাদার প্রতীক, আমি হব ঈদের প্রাপ্তির প্রতিচ্ছবি।”

এই ভাবনার মধ্যেই ফুটে ওঠে জামার স্বপ্ন—সে চায়, তাকে কেউ ভালোবাসুক, পরিধান করুক, আর আনন্দ পাক।

রিয়াদের মা হয়তো নিজের জন্য কোনো কাপড় কিনবেন না, বাবা হয়তো একজোড়া চপ্পল না কিনে সেই টাকায় ছেলের জামা কিনে দেবেন। কারণ, সন্তানের হাসির চেয়ে বড় কিছু তাদের কাছে নেই। একটি নতুন জামার পেছনে লুকিয়ে থাকে একটি পরিবারের নীরব ত্যাগ, ভালোবাসা আর গোপন কান্না।

ঈদের নতুন জামা এই পরিবারগুলোর কাছে শুধু পোশাক নয়—এটা এক সম্মান, ভালোবাসা এবং আত্মতৃপ্তির চিহ্ন। অনেক সময় বাবা-মায়েরা নিজেদের প্রয়োজন বিসর্জন দিয়ে সন্তানের মুখে হাসি দেখতে চান। নতুন জামা যেন সেই আত্মত্যাগের স্বাক্ষর হয়ে উঠে।

ঈদের দিন আমরা যখন দেখি কেউ চকচকে কাপড় পরে বেরিয়েছে, আর কেউ পুরনো জামা পরে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে, তখন সামাজিক বৈষম্যের চিত্র স্পষ্ট হয়ে ওঠে। নতুন জামার গুরুত্ব সেখানে দ্বিগুণ। এটি একধরনের সামাজিক মর্যাদা।

রিয়াদ হয়তো তার বন্ধুর পাশে দাঁড়িয়ে ভাবে—আমারও যদি এমন একটা জামা থাকত! শুধু ঈদের দিনটা নয়, পুরো জীবনজুড়ে সেই হাহাকার থেকে যায়। এই এক টুকরো জামাই তার স্বপ্নকে উঁচুতে নিয়ে যেতে পারে, আর না থাকলে আত্মবিশ্বাসে ভাটা পড়ে।

দরিদ্র শিশুদের জন্য ঈদে জামার প্রাপ্তি মানে কী? সমান মর্যাদা – অন্যদের মতো তাকেও দেখা হয় একজন ‘পূর্ণ’ শিশুর মতো।  আত্মবিশ্বাস – নতুন জামা পরে সে খুশি মনে বন্ধুদের সঙ্গে মিশে যেতে পারে। পরিবারের প্রতি ভালোবাসা বৃদ্ধি – সে উপলব্ধি করে, তার মা-বাবা তাকে কত ভালোবাসে।

৪. ভবিষ্যতের স্বপ্ন – একজন শিশু জানে, সে যদি চেষ্টার মধ্যে থাকে, তার স্বপ্ন একদিন পূরণ হবেই।

ঈদের সকালে রিয়াদের ঘুম ভাঙে ভোরবেলা। মা হাসিমুখে এসে বলে—
“এই দেখ, তোমার নতুন জামা।”
রিয়াদ প্রথমে বিশ্বাস করতে পারে না। হাত বাড়িয়ে জামাটা নেয়, চোখে জল চলে আসে। “আমার?”
মা মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়, “হ্যাঁ বাবা, তোমার।”
রিয়াদ তার ছোট জামাটিকে বুকের সঙ্গে জড়িয়ে ধরে, যেন এটিই তার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।

সেই জামা তখন আর শুধু সুতা ও রঙের মিশ্রণ নয়, সেটি তখন একটি ‘স্বপ্ন’। একটি সন্তুষ্টির প্রতীক, একটি ছোট শিশুর গর্বের নিশান।

আমরা যারা সমাজের ভাগ্যবান অংশ, তাদের উচিত এই বৈষম্য দূর করতে সচেষ্ট হওয়া। প্রতিবছর ঈদের আগে আমরা অনেকেই প্রচুর জামা কিনি, কিন্তু ভাবি না পাশের দরিদ্র শিশুটার কথা। যদি আমরা একটি নতুন জামা কাউকে দিতে পারি, তাহলে তার ঈদটা হয়ে উঠতে পারে জীবনের সেরা দিন।সামাজিক সংগঠন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পরিবার—সবাই যদি চায়, তাহলে প্রত্যেক শিশুর ঈদে একটি নতুন জামা নিশ্চিত করা সম্ভব। এটি দান নয়, এটি মানুষের স্বপ্ন পূরণে সহযোগিতা।

“ঈদে একটি নতুন জামা যার স্বপ্ন” এই বাক্যটি শুধুমাত্র কোনো এক জামা বা একটি শিশুর গল্প নয়, এটি হাজারো রিয়াদের গল্প। এটি আমাদের সমাজে লুকিয়ে থাকা অসংখ্য মানুষের জীবনবোধের চিত্র। একটি নতুন জামা কেবল দেহ ঢাকার উপকরণ নয়, এটি মানুষের সম্মান, আত্মবিশ্বাস এবং ভালোবাসার প্রতীক। আমরা যদি এই একটুকরো জামার ভেতর মানুষের আবেগ, স্বপ্ন ও আত্মত্যাগ দেখতে পারি, তাহলে সমাজে সত্যিকার পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে। আসুন, এই ঈদে আমরা কেবল নিজেদের জন্য না, অন্যের মুখে হাসি ফোটানোর জন্যও একটি নতুন জামার স্বপ্ন বুনি।

লেখক পরিচিতি : উজ্জ্বল হোসাইন, সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক, চাঁদপুর।

চাঁদপুর জেলা সমবায় ইউনিয়নের সভাপতি ইকবাল আজম সম্পাদক দুলাল চন্দ্র দাস

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৫, ৯:৩৮ অপরাহ্ণ
চাঁদপুর জেলা সমবায় ইউনিয়নের সভাপতি ইকবাল আজম সম্পাদক দুলাল চন্দ্র দাস

চাঁদপুর জেলা সমবায় ইউনিয়নের নির্বাচনী বিশেষ সাধারণ সভা (১৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ২০২৫) নির্বাচিত ব্যবস্থাপনা কমিটি (২০২৫-২০২৮) ঘোষণা করা হয়েছে। সমবায় সমিতি আইন ২০০১ (সর্বশেষ সংশোধন ২০১৩) ও সমবায় সমিতি বিধিমালা ২০০৪ (সর্বশেষ সংশোধন ২০২০) অনুযায়ী নির্বাচন কমিটির সভাপতি মোঃ আলমগীর হোসেন (পরিদর্শক, জেলা সমবায় কার্যালয়, চাঁদপুর) কোন পদে একাধিক প্রার্থী না থাকায়, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছয় সদস্য বিশিষ্ট ব্যবস্থাপনা কমিটি ঘোষণা করেন। নবনির্বাচিত ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি- মোঃ ইকবাল আজম (প্রতিনিধি, দি চাঁদপুর মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিঃ), সহ-সভাপতি- মোঃ আফজাল হোসেন খান (প্রতিনিধি, মিলেনিয়াম বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ), সম্পাদক- দুলাল চন্দ্র দাস (প্রতিনিধি, বাগড়া শিক্ষিত বেকার সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিঃ), সদস্য- মোঃ আক্কাস ফরাজী (প্রতিনিধি, রূপসী পল্লী বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ), সদস্য- খন্দকার ফখরুল আলম (প্রতিনিধি, আশার আলো মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিঃ), সদস্য- মোঃ খোরশেদ আলম (প্রতিনিধি, খাজুরিয়া বাজার সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিঃ)।
জেলার বিভিন্ন সমবায় সমিতির প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে ও নির্বাচন কমিটির সভাপতি মোঃ আলমগীর হোসেন এর সভাপতিত্বে নির্বাচনী বিশেষ সাধারণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুরের কৃতি সন্তান, জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত সমবায়ী ও বাংলাদেশ জাতীয় সমবায় ইউনিয়ন এর সাধারণ সম্পাদক মো. জসিম উদ্দিন শেখ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন জেলা সমবায় ইউনিয়ন, জেলার সমবায় সমিতি ও সমবায়ীদের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করার দায়িত্ব থাকলেও চাঁদপুর জেলা সমবায় ইউনিয়নে দীর্ঘদিন নির্বাচিত কমিটি ছিল না, যার কারণে এটি অকার্যকর হয়ে পড়ে। আমরা বাংলাদেশ জাতীয় সমবায় ইউনিয়ন থেকে চাঁদপুর জেলা সমবায় ইউনিয়নকে কার্যকর করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করি। সমবায় বিভাগ এতে অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থাপনা কমিটির গঠন করে, যার ফলশ্রুতিতে আজকে আমরা একটি নির্বাচিত ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করতে পেরেছি। এজন্য তিনি সমবায় বিভাগের সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান পাশাপাশি নবনির্বাচিত কমিটিকে অভিনন্দন জানান। সভায় তিনি বাংলাদেশ জাতীয় সমবায় ইউনিয়নের বিভিন্ন উদ্যোগ ও পরিকল্পনা সকলের সামনে উপস্থাপন করেন। সকলের সহযোগিতায় তা বাস্তবায়নের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। সভায় অন্যন্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাংকের সভাপতি মুরাদ হোসেন খান, জুন হাউজিং কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিঃ এর প্রতিনিধি এ ওয়াই এম জাকারিয়া, ওয়ারলেস বাজার বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ এর প্রতিনিধি মোঃ জিয়াউদ্দিন, ইসলামীয়া সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিঃ এর প্রতিনিধি নাজমুল হুদা প্রমূখ।
উল্লেখ্য প্রতি ৩ বছর পর পর নির্বাচনের মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনের বিধান থাকলেও ২০১২ সালের পর, দীর্ঘ ১৩ বছর পর এই ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠিত হলো।

আসছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫, ১০:৫১ পূর্বাহ্ণ
আসছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট

২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট দেওয়ার পরিকল্পনা করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আগামী ২ জুন নতুন অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

সম্প্রতি কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিল ও বাজেট ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

জানা গেছে, সংসদ না থাকায় এবার সংসদে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে না। অর্থ উপদেষ্টা টেলিভিশনে নতুন অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করবেন। ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হওয়ার আগেই বাজেট দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ কারণে ২ জুন বাজেট ঘোষণার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সাধারণত আগের অর্থবছরগুলোতে বৃহস্পতিবার বাজেট দেওয়া হতো, এবার সোমবার ঘোষণা করা হবে। বাজেট ঘোষণার পর আগের রীতি অনুযায়ী অর্থ উপদেষ্টা বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন।

সূত্রটি জানিয়েছে, সাধারণত প্রতি অর্থবছরে বাজেটের আকার আগের অর্থবছরের তুলনায় বড় রাখা হয়। তবে এবার বাজেট ঘাটতি কমিয়ে বাজেট ছোট কারার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। নতুন অর্থবছরের বাজেটে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে।

বাজেটের আকার কমানো হলেও সমাজে বৈষম্য কমানোর পাশাপাশি মূল্যস্ফীতির চাপে নিম্ন আয়ের মানুষদের স্বস্তি দিতে সামাজিকীকরণ সুরক্ষা কর্মসূচিতে উপকারভোগী ও কিছু ক্ষেত্রে ভাতার পরিমাণ বাড়ানোর উদ্যোগ থাকছে নতুন অর্থবছরের বাজেটে। একই সঙ্গে কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।

আগামী অর্থবছরের জন্য সরকার জিডিপির প্রবৃদ্ধি সাড়ে ৫ শতাংশ ধরতে পারে। চলতি অর্থবছরে যা ছিল ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আগামী অর্থবছর শেষে মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনতে চায় সরকার। চলতি অর্থবছরেও একই লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। যদিও গত মার্চ মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ।