খুঁজুন
                               
শুক্রবার, ৬ জুন, ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গঠনে সাংবাদিকদের ভূমিকা

উজ্জ্বল হোসাইন
প্রকাশিত: রবিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২৫, ৫:৩৭ অপরাহ্ণ
বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গঠনে সাংবাদিকদের ভূমিকা

বৈষম্যহীন সমাজ গঠন একটি রাষ্ট্রের অন্যতম মৌলিক ও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য। এটি কেবল অর্থনৈতিক উন্নয়ন বা সামাজিক স্থিতিশীলতার প্রশ্ন নয়; এটি ন্যায়বিচার, মানবাধিকার, ও সামাজিক ঐক্যের প্রতীক। বাংলাদেশ, একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে, বৈষম্যের নানা রূপের সঙ্গে লড়াই করছে—যেমন অর্থনৈতিক বৈষম্য, লিঙ্গ বৈষম্য, ধর্মীয় বৈষম্য এবং শহর-গ্রামের উন্নয়ন বৈষম্য। এই প্রেক্ষাপটে সাংবাদিকরা সমাজের দর্পণ হিসেবে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাদের কার্যক্রম কেবল তথ্য সরবরাহের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; তারা সমাজ পরিবর্তনের জন্য একটি শক্তিশালী মাধ্যমও।

সাংবাদিকতার মাধ্যমে বৈষম্যের উৎস চিহ্নিত করা, জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা এবং নীতি-নির্ধারকদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা সম্ভব। নিচে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গঠনে সাংবাদিকদের ভূমিকা বিশদভাবে আলোচনা করা হলো:

বাংলাদেশের সমাজে বৈষম্যের বিভিন্ন রূপ বিদ্যমান। অর্থনৈতিক বৈষম্য, লিঙ্গ বৈষম্য, শিক্ষার অপ্রতুলতা, স্বাস্থ্যসেবার অসমতা, এবং ধর্মীয় ও জাতিগত বৈষম্য—এসব বিষয় নিয়ে সাংবাদিকরা যদি তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে প্রতিবেদন করেন, তাহলে সমাজ ও রাষ্ট্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করা সম্ভব। উদাহরণস্বরূপ ধনী-গরিবের মধ্যে সম্পদের ফারাক প্রতিনিয়ত বাড়ছে। সংবাদপত্র বা টেলিভিশন চ্যানেলগুলো যদি এই বৈষম্যের মূল কারণ এবং এর প্রভাব তুলে ধরে, তাহলে নীতিনির্ধারকরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে। নারী ও পুরুষের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে সুযোগের অপ্রতুলতা, বেতন বৈষম্য এবং নারীর প্রতি সহিংসতা—এসব ইস্যুতে সাংবাদিকরা বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারেন। এ বিষয়ে নিয়মিত প্রতিবেদন ও বিশ্লেষণ জনগণের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে সাহায্য করবে। শহরাঞ্চলে যেখানে আধুনিক শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবা সহজলভ্য, সেখানে গ্রামীণ অঞ্চলে এর অভাব প্রকট। সাংবাদিকরা এ বিষয়গুলো তুলে ধরে যদি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন, তাহলে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হবে।

সাংবাদিকরা জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের জন্য জনগণের মধ্যে মানবাধিকার, সমতা এবং সাম্যবাদের ধারণা প্রচার করা অপরিহার্য। উদাহরণস্বরূপ  টকশো, ডকুমেন্টারি, ফিচার আর্টিকেল, এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মাধ্যমে সাংবাদিকরা সাধারণ মানুষের মধ্যে বৈষম্য সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে পারেন। সমাজে এমন অনেক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান আছে যারা বৈষম্য দূর করতে কাজ করছে। সাংবাদিকরা তাদের কাজ তুলে ধরে জনগণকে উৎসাহিত করতে পারেন। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর ভূমিকা, নীতিমালা, এবং প্রকল্পগুলোর কার্যকারিতা পর্যবেক্ষণ করা সাংবাদিকদের দায়িত্ব। তারা অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের মাধ্যমে বৈষম্য দূরীকরণের প্রক্রিয়ার ত্রুটি-বিচ্যুতি তুলে ধরতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ সরকারি বাজেট বা প্রকল্পের বরাদ্দ যদি কোনো বিশেষ অঞ্চল বা জনগোষ্ঠীর পক্ষে থাকে, তবে সাংবাদিকরা এটি প্রকাশ করে সকলের মধ্যে ন্যায়বিচারের দাবি জানাতে পারেন। বৈষম্যের অন্যতম প্রধান কারণ হলো দুর্নীতি। সাংবাদিকরা যদি এই দুর্নীতিগ্রস্ত প্রকল্প বা কর্মকর্তাদের উন্মোচন করেন, তাহলে রাষ্ট্রের জবাবদিহিতা বাড়বে। বাংলাদেশে অনেক প্রান্তিক জনগোষ্ঠী রয়েছে, যেমন- হরিজন, আদিবাসী, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ, এবং সুবিধাবঞ্চিত গ্রামীণ জনগোষ্ঠী। তাদের সমস্যা, চাহিদা, এবং অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করতে সাংবাদিকদের ভূমিকা অপরিসীম। এই জনগোষ্ঠীগুলোর প্রতি যে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়, তা যদি সাংবাদিকরা তুলে ধরেন, তবে তাদের প্রতি সহানুভূতি ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব। তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে সাংবাদিকরা বিশেষ প্রতিবেদনের মাধ্যমে জনমত গঠন করতে পারেন। কর্মজীবী নারীদের অধিকার সংরক্ষণেও সাংবাদিকদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

সাংবাদিকদের কেবল সমস্যা প্রকাশ করলেই চলবে না; পাশাপাশি তারা নীতিগত সুপারিশ প্রদান করতে পারেন। যেমন- অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের মাধ্যমে সমস্যা চিহ্নিত করার পাশাপাশি সমাধানের দিকনির্দেশনা দেওয়া। বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের জন্য সাফল্যের গল্প তুলে ধরা, যাতে অন্যরা তা থেকে অনুপ্রাণিত হয়।

বর্তমানে সাংবাদিকরা ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে বৈষম্যবিরোধী প্রচারণা চালাতে পারেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, অনলাইন সংবাদমাধ্যম, এবং পডকাস্টের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানো সহজ হয়েছে।বৈষম্যের শিকার মানুষের গল্প যদি সাংবাদিকরা তথ্যপূর্ণ ও আবেগময় উপস্থাপনার মাধ্যমে তুলে ধরেন, তবে তা দ্রুত ভাইরাল হয়ে সমাজে প্রভাব ফেলতে পারে। বিভিন্ন বৈষম্যের পরিসংখ্যান উপস্থাপন করে সমস্যার গভীরতা বোঝানো যায়, যা নীতিনির্ধারকদের প্রভাবিত করতে পারে।

সাংবাদিকদের কাজ শুধুমাত্র তথ্য প্রচার নয়; তাদের উচিত মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সমাজের দুর্বল ও বৈষম্যের শিকার মানুষদের পক্ষে দাঁড়ানো। যেমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা সংকটকালীন সময়ে ত্রাণসামগ্রী বণ্টনে বৈষম্য নিয়ে প্রতিবেদন করা। ধর্ম, জাতি, বা গোষ্ঠীর কারণে বৈষম্যের শিকার মানুষদের কাহিনী তুলে ধরা।

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাংবাদিকরা বৈষম্য মোকাবিলার সফল উদাহরণগুলো তুলে ধরতে এবং বাংলাদেশের সঙ্গে তুলনামূলক বিশ্লেষণ করতে পারে। অন্য দেশে কীভাবে বৈষম্য দূর করার জন্য কাজ করা হচ্ছে, তা তুলে ধরে বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকদের অনুপ্রাণিত করা। রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটের মতো আন্তর্জাতিক ইস্যুতে সাংবাদিকদের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বৈষম্যের নতুন দিক উন্মোচনে সহায়ক হতে পারে।

বাংলাদেশের শিক্ষাখাতে বৈষম্য এখনো প্রকট। শহরাঞ্চলে যেখানে আধুনিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সহজলভ্য, গ্রামীণ এবং দরিদ্র অঞ্চলে শিক্ষার মান অত্যন্ত নিম্ন। সাংবাদিকরা এ বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেন। সরকারি স্কুলের মান ও বেসরকারি স্কুলের উচ্চতর শিক্ষার সুযোগের মধ্যে বিশাল ফারাক রয়েছে। সাংবাদিকরা যদি এই বৈষম্যের কারণগুলো প্রকাশ করেন এবং সমাধানের প্রস্তাব দেন, তবে তা নীতিনির্ধারকদের চাপ সৃষ্টি করবে। বাংলাদেশের অনেক অঞ্চলে এখনো মেয়েদের শিক্ষার প্রতি উদাসীনতা দেখা যায়। সাংবাদিকরা এই ইস্যুতে সচেতনতা তৈরি করতে বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারেন। বাংলাদেশের শ্রমজীবী ও দরিদ্র জনগোষ্ঠী নানা বৈষম্যের শিকার। তাদের অধিকার নিয়ে কথা বলা প্রায়ই উপেক্ষিত হয়। সাংবাদিকরা তাদের সমস্যা তুলে ধরে সমাধানের রাস্তা খুঁজে বের করতে পারেন। গার্মেন্টস শ্রমিক, কৃষি শ্রমিক এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকরা প্রায়ই বেতন বৈষম্য ও কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তাহীনতার শিকার হন। সাংবাদিকরা এই বিষয়গুলো নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করলে তা শ্রমিকদের অধিকার রক্ষার লড়াইকে ত্বরান্বিত করতে পারে। গ্রামীণ ও শহুরে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রা নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্টিং বৈষম্য দূরীকরণে সরকারের পদক্ষেপকে জোরদার করতে পারে।

বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে প্রকৃত গণতন্ত্র অপরিহার্য। সাংবাদিকরা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রচার করে এবং সুশাসন নিশ্চিত করতে কাজ করতে পারেন। নির্বাচনী অনিয়ম, দুর্নীতি, ও ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করলে সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পরিবেশ সৃষ্টি হয়। সমাজে বৈষম্যের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা প্রায়ই কঠিন হয়। সাংবাদিকরা নির্ভীকভাবে সত্য কথা তুলে ধরে জনগণের কণ্ঠস্বর হতে পারেন।

বাংলাদেশে পরিবেশগত বৈষম্যও গুরুত্বপূর্ণ একটি ইস্যু। শহরের উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে গ্রামীণ পরিবেশ প্রায়ই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নদী দূষণ, বন উজাড়, এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর দুঃখ-দুর্দশা নিয়ে কাজ করতে পারেন সাংবাদিকরা। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে অনেক মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাস্তুচ্যুত হচ্ছেন। তাদের জীবনযাত্রার বাস্তবতা তুলে ধরলে বৈষম্যের চিত্র পরিষ্কার হবে। শিল্প কারখানার কারণে নদী দূষণ এবং প্রাকৃতিক সম্পদের অপব্যবহার নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করলে সরকার ও জনগণ সচেতন হবে। বাংলাদেশের বিভিন্ন সময়ে ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটে, যা বৈষম্য সৃষ্টি করে। সাংবাদিকরা এই ধরনের ইস্যুতে নিরপেক্ষ ও সাহসী ভূমিকা পালন করতে পারেন। সাংবাদিকরা যদি বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতি বাড়ানোর উদ্যোগে কাজ করেন, তবে সমাজে সহিংসতার আশঙ্কা কমবে। সাংবাদিকরা অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের মাধ্যমে সহিংসতার আসল কারণ বের করে জনসচেতনতা বাড়াতে পারেন। বাংলাদেশের অনেক মানুষ আইন সম্পর্কে সচেতন নয়। ফলে তারা বৈষম্যের শিকার হলেও আইনি সহায়তা নিতে পারে না। সাংবাদিকরা আইন ও অধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে সহায়ক হতে পারেন। বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনগুলো জনগণের সামনে তুলে ধরা। প্রান্তিক জনগোষ্ঠী কীভাবে সহজে আইনি সহায়তা নিতে পারে, তা নিয়ে সচেতনতা তৈরি করা।

বৈষম্য নিয়ে কাজ করতে হলে সাংবাদিকদেরও প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা অর্জন করতে হবে। সাংবাদিকদের উচিত নির্ভুল তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করার দক্ষতা অর্জন করা। সংবাদ পরিবেশনের সময় নিরপেক্ষতা ও নৈতিকতা বজায় রাখা জরুরি, যাতে সাংবাদিকতার মূল উদ্দেশ্য সফল হয়।

বাংলাদেশে বৈষম্য দূরীকরণে সাংবাদিকদের ভূমিকা সীমাহীন। তারা সমাজের অসাম্য ও অবিচারের বিরুদ্ধে একটি নির্ভীক কণ্ঠস্বর। সাংবাদিকতার মাধ্যমে বৈষম্য চিহ্নিত করা, জনগণকে সচেতন করা এবং নীতিনির্ধারকদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা সম্ভব। তবে এটি করতে হলে সাংবাদিকদের অবশ্যই তথ্যভিত্তিক, নৈতিক এবং মানবিক হতে হবে। এভাবে সাংবাদিকরা বৈষম্যহীন, সাম্য ও ন্যায়ভিত্তিক একটি বাংলাদেশ গড়ার পথে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারেন। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গঠন একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া, যেখানে সাংবাদিকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাদের নিরপেক্ষ, নৈতিক এবং দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি করে, বৈষম্যের মূল কারণ চিহ্নিত করে, এবং সরকারের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে। একই সঙ্গে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার সুরক্ষায় সাংবাদিকদের অবদান বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের পথকে সুগম করে। একজন দক্ষ সাংবাদিকের কাজের মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন সম্ভব, যা একটি সমতা ও ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশের ভিত্তি গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।

লেখক পরিচিতি: উজ্জ্বল হোসাইন, লেখক ও সাংবাদিক, চাঁদপুর।

বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে

চাঁদপুরে “হুইলস অব পিস”-এর বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৬ জুন, ২০২৫, ১২:৪৩ অপরাহ্ণ
চাঁদপুরে “হুইলস অব পিস”-এর বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি

মিশন গ্রিন বাংলাদেশ-এর সহায়তায়, এসডিজি ভিত্তিক পিস প্রজেক্টের পরিবেশবান্ধব পদক্ষেপ । বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৫ উপলক্ষে চাঁদপুর সদর উপজেলার চাঁদপুর জেলা স্কাউটস ভবনের সামনের প্রাঙ্গণে আয়োজিত হলো এক ব্যতিক্রমধর্মী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি। আয়োজনটি করেছে “প্রজেক্ট হুইলস অব পিস”, যা একটি এসডিজি (SDG) ভিত্তিক স্কাউট পিস প্রজেক্ট।

এই উদ্যোগে সহায়তা করে মিশন গ্রিন বাংলাদেশ, এবং সহযোগিতা করে মেঘনাপাড় ওপেন স্কাউট গ্রুপ। সারাদেশে ৬৪ জেলায় ৫ জুন একসাথে বৃক্ষরোপণের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে ৪০ জন তরুণ স্বেচ্ছাসেবক সক্রিয়ভাবে অংশ নেন, যারা শুধু গাছ লাগিয়ে দায়িত্ব শেষ করেননি, বরং পরিবেশ সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে মাঠে-ময়দানে কাজ করেছেন।

পরিবেশ দূষণ ও প্লাস্টিকের অপব্যবহার প্রতিরোধে আয়োজনস্থল এবং আশেপাশের এলাকায় সচেতনতামূলক পোস্টার লাগানো হয়। এছাড়াও স্থানীয় বাজার ও জনবহুল স্থানে লিফলেট বিতরণ করে সাধারণ মানুষের মাঝে বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়—”সবুজ পৃথিবী, নিরাপদ ভবিষ্যৎ”।

বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমে ফলজ গাছ যেমন আম, কাঁঠাল, পেয়ারা, জামসহ স্থানীয় প্রজাতির চারা রোপণ করা হয়। এসব গাছ একদিকে পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা করবে, অন্যদিকে স্থানীয় মানুষের উপকারে আসবে।

উক্ত কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন প্রজেক্ট হুইলস অব পিস এর প্রতিষ্ঠাতা ওমর তামীম সাফি। তিনি বলেন:
**”পরিবেশ রক্ষা আমাদের দায়িত্ব নয়, বরং এটা আমাদের অস্তিত্বের প্রশ্ন। একটি গাছ মানে শুধু ছায়া বা ফল নয়—এটি জীবনের ধারক। আজকের এই বিশ্ব পরিবেশ দিবসে আমরা শপথ করছি, সবুজের জন্য কাজ করব—শুধু শহরে নয়, প্রত্যন্ত অঞ্চলেও সচেতনতার আলো ছড়িয়ে দেব।

এই কর্মসূচি সফল করতে যারা পাশে ছিলেন, বিশেষ করে মিশন গ্রিন বাংলাদেশ, মেঘনাপাড় মুক্ত স্কাউট গ্রুপ এর সদস্যবৃন্দ। আমরা বিশ্বাস করি, সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে, এ ধরনের পরিবেশবান্ধব কর্মকাণ্ড আরও সংগঠিতভাবে, বৃহৎ পরিসরে এবং টেকসইভাবে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব। আমাদের সবার সম্মিলিত প্রয়াসেই একটি পরিচ্ছন্ন, সবুজ ও বাসযোগ্য বাংলাদেশ গড়ে তোলা যাবে।”**

প্রজেক্ট হুইলস অব পিস, জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDG)-এর বিভিন্ন দিক যেমন পরিবেশ সুরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, যুবসম্প্রদায়ের ক্ষমতায়ন এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এই ইনিসিয়েটিভ এর মাধ্যমে স্কাউট এবং নন স্কাউট দের সাথে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে । ১৭ টি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ৮ টি লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করে চলেছে প্রজেক্ট হুইলস অব পিস । প্রকৃতি, পরিবেশ সংরক্ষণ, জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক, ছেলে ও মেয়েদের বয়:সন্ধিকালের শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন, এলাকা ভিত্তিক ভাবে পরিবেশ দূষণরোধে সচেতনতা সৃষ্টি এছাড়া প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে, প্লাস্টিকের পুন:ব্যবহার বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মসূচী পরিচালনা করে যাচ্ছে । কর্মসূচীতে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রজেক্ট হুইলস অব পিসের সদস্য রুমাইয়া বিনতে রহিম, সাব্বির আহমেদ, নূর মোহাম্মদ, তাসফিয়া সুলতানা সহ আরোও অনেক সদস্যবৃন্দ।

এই কর্মসূচি তাদের চলমান সবুজ উদ্যোগেরই একটি অংশ। আয়োজকরা জানান, ভবিষ্যতে দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও তারা একই রকম কার্যক্রম ছড়িয়ে দিতে চান।

বাজেট প্রতিক্রিয়া : শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে এডিপি বরাদ্দ কমানো উদ্বেগজনক: সিপিডি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫, ২:৩৮ অপরাহ্ণ
বাজেট প্রতিক্রিয়া : শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে এডিপি বরাদ্দ কমানো উদ্বেগজনক: সিপিডি

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি খাতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির বরাদ্দ কমানো উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। আজ সোমবার সিপিডি কার্যালয়ে আয়োজিত তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘বাজেটের যে কাঠামো উপস্থাপন করা হয়েছে, সেখানে বাজেটের আকার সামান্য ছোট করা হয়েছে। পাশাপাশি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি, সেখানেও কিছুটা কাটছাঁট করা হয়েছে। বাজেটের আকার নিয়ে অনেকদিন ধরে আলোচনা হয়েছে, সেটার অন্যতম কারণ হচ্ছে, আমাদের যে চলমান অর্থনৈতিক সংকট, অর্থাৎ উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বিনিয়োগ স্থবিরতা, কর্মসংস্থানে সমস্যা এবং রাজস্ব আহরণের সমস্যা বিবেচনায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা বাজেট প্রস্তাব করেছে বলে আমাদের মনে হয়েছে।’

ড. ফাহমিদা বলেন, ‘বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির দিকে তাকালে দেখা যাবে, চলতি অর্থবছরের তুলনায় ১৩ দশমিক ২ শতাংশ কমানো হয়েছে এবং ১৫টি খাতের মধ্যে ১৪টি খাতেই কমানো হয়েছে। এখানে উল্লেখযোগ্য এবং চিন্তার বিষয় হচ্ছে, তিনটি খাত—শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষিতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে টাকার অংকে বরাদ্দ কমানো হয়েছে। সেটা আমাদের কাছে উদ্বেগজনক মনে হয়, কারণ শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে আমরা সব সময় বরাদ্দ বাড়ানোর কথা বলে আসছি এবং কৃষি খাতে, বিশেষত খাদ্য নিরাপত্তার দিকে এখানে বরাদ্দ অনেক গুরুত্বপূর্ণ।’ তিনি বলেন, ‘ভৌত অবকাঠামো, বিশেষ করে পরিবহন ও বিদ্যুৎ-জ্বালানি বরাবরের মতো উপরের দিকে আছে যুক্তিযুক্তভাবে।’

এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, কর কাঠামোর মধ্যে করমুক্ত আয়ের সীমা ৩ দশমিক ৫ লাখ, অর্থাৎ সাড়ে ৩ লাখ টাকা থেকে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করা হয়েছে, এটা একটা ভালো পদক্ষেপ। কিন্তু প্রায় ৩ বছরের মতো সময় ধরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের উপরে রয়েছে, ১০-১১ শতাংশে উঠে গেছে। সেদিক থেকে যে খুব একটা উল্লম্ফন হয়েছে সেটা না। তবে এটাকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, যারা জুলাই যোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত, তাদের জন্য করমুক্ত আয়সীমা ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা করা হয়েছে, সেটাও আমরা ভালো পদক্ষেপ মনে করি।’

‘করের বিভিন্ন স্ল্যাবগুলোতে পরিবর্তন করা হয়েছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে যারা নিম্ন মধ্যআয়ের যারা পড়েছেন, কর দেওয়ার ক্ষেত্রে হারটা তাদের মধ্যেই বেশি পড়বে। আবার যারা আয়ের উচ্চ পর্যায়ে রয়েছেন, তাদের ক্ষেত্রে অনেক কম পড়বে। এখানে বৈষম্যের চিত্র দেখা যাচ্ছে। অঞ্চলভিত্তিক ন্যূনতম কর ধরা হয়েছে ৫ হাজার টাকা, এখানে আমরা মনে করছি বৈষম্য রয়েছে। কারণ রাজধানী ঢাকা কিংবা অন্য আরেকটি জেলার সবাইকে এক করে দেখানো; সরকারি সেবা সব জায়গায় সবাই কিন্তু সমানভাবে নেয় না। এখানে পুনর্বিবেচনার সুযোগ রয়েছে বলে আমরা মনে করি,’ যোগ করেন তিনি।

ফাহমিদা বলেন, ‘শুল্ক যৌক্তিকরণ হয়েছে এবং আমদানি শিল্প যৌক্তিকিকরণ করতে গিয়ে হয়তো কিছু কিছু শিল্প চাপে পড়তে পারে। বিশেষ করে যখন মূল্যস্ফীতি বেশি, কস্ট অব ডুইং বিজনেস বেশি। এটাকে শুল্কের যৌক্তিকিকরণ করতেই হবে, কারণ বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বেরিয়ে যাবে। আস্তে আস্তে ট্যারিফ কমানোর দিকে নজর দিতে হবে। যে প্রতিঘাত আসবে, সেটা মোকাবিলা করার জন্য কস্ট অব ডুইং বিজনেসের ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ-জ্বালানি সাশ্রয়ী মূল্যে কিংবা সহজ শর্তে ঋণ কিংবা আমলাতান্ত্রিক জটিলতা কমিয়ে কস্ট অব ডুইং বিজনেস কমানোর উদ্যোগ নিতে হবে।’

প্রস্তাবিত বাজেটে কিছু ভালো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ই-কমার্সের সুযোগ-সুবিধা এবং ই-কমার্সকে ফরমাল সেক্টরে আনা; এখানে করের আওতায় আনা এবং পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের অধীনে যে ৫ হাজার ৪০ কোটি টাকার ফান্ড গঠন হয়েছে। আমরা মনে করি, আগেও পিপিপি মডেলের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, সেগুলো কিন্তু খুব একটা এগোয় নাই।

নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ১ হাজার কোটি টাকার ফান্ড গঠনকে স্বাগত জানিয়েছে সিপিডি।

কালো টাকা সাদা করার সুযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কালো টাকা সাদার করার সুযোগটা রয়ে গেছে। যদিও এখানে রেট বাড়ানো হয়েছে কিন্তু আমরা আগেও বলেছি, কালো টাকার ব্যাপারে আমাদের অবস্থান হচ্ছে, এই সুযোগ দিয়ে যারা নৈতিকভাবে প্রতি বছর স্বচ্ছ আয় করে, স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতার সঙ্গে কর দিয়ে থাকেন, তাদের প্রতি নৈতিক আঘাত। কারণ তাদের আদর্শিকভাবে নিরুৎসাহিত করা হয়। দুটি জিনিস সমান্তরালভাবে চলতে পারে না!’

ফাহমিদা আরও বলেন, ‘আগে করের হারটাও কম রাখা হতো, এখন করের হার বেশি রাখা হয়েছে। তারপরও এটা থেকে খুব একটা আদায় হয় না। যদি এখান থেকে সত্যি আদায় করার ইচ্ছা থাকে, তাহলে কিন্তু সক্রিয় পদক্ষেপ নিতে হবে। এছাড়া দুএকবার সুযোগ দিয়ে চিরতরে বন্ধ করে দেওয়া উচিত।’ উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময় কর রেয়াত কিংবা বিভিন্ন জায়গা থেকে কমানো এবং পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা ও পরিমাণ বাড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি।

‘সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির অধীনে ১৪০টির মতো কার্যক্রম একসঙ্গে চলতো, সেগুলো কমিয়ে ৯৫টি করা হয়েছে এবং সেখানে অর্থ বরাদ্দ কম করা হয়েছে। খুব কম না কিন্তু বাজেটের তুলনায় ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ এবং মোট বাজেটের ১ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকার মতো।’ ‘আমরা বারবার বলেছি, এখানে কতগুলো উপাদান যুক্ত করা হয়, যেগুলো সামাজিক নিরাপত্তা বা সামাজিক সুরক্ষার অধীনে দেওয়া যুক্তিযুক্ত নয়। কারণ এটা একেবারেই অতি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য। সরকারি কর্মচারীদের পেনশন, সেখানে আছে ৩৫ হাজার ২৮২ কোটি টাকা। কৃষি ভর্তুকি আছে ১৭ হাজার কোটি টাকা। এই দুটি মিলিয়ে ৫২ হাজার কোটি টাকার বেশি হয়, সেটা বাদ দিয়ে রয়ে যায় ৬৪ হাজার কোটি টাকার মতো। সেটা অনেকখানি কমে আসে। এগুলো বাদ দিয়ে যে নেট সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি, সেটাকে দেখাতে হবে। সেটা দেখে তুলনা করা যেতে পারে যে আসলেই দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য কী করা হলো,’ যোগ করেন তিনি।

ফাহমিদা বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে বলতে চাই, কিছু কিছু পদক্ষেপ ভালো নেওয়া হয়েছে বিচ্ছিন্নভাবে। কিন্তু সামগ্রিক কাঠামোগত পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে যে একই কাঠামোর মধ্যে এখানে একটু বেশি, ওখানে একটু কম—এ রকম করে নেওয়া হয়েছে। বাজেটের যে দর্শন, এখানে বৈষম্যহীন সমাজের কথা বলা হয়েছে, সেই উদ্দেশ্যের সঙ্গে যে বাস্তব পদক্ষেপগুলো নেওয়া হয়েছে, সব ক্ষেত্রে সেটা সাযুজ্যপূর্ণ হয়নি।’

ফেব্রুয়ারি অথবা এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছি: জামায়াতের আমির

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫, ২:৩৬ অপরাহ্ণ
ফেব্রুয়ারি অথবা এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছি: জামায়াতের আমির

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি বা এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন দলটির আমির শফিকুর রহমান।

মঙ্গলবার (৩ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে জামায়াতের নিবন্ধন ফিরে পাওয়া উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

শফিকুর রহমান বলেন, ‘ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি অথবা এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচনের দাবি আমরা জানিয়েছি। রোজার আগে অথবা যদি কোনো কারণে সম্ভব না হয়, তাহলে যেন এপ্রিলের মধ্যেই নির্বাচন দেওয়া হয়। কারণ আবহাওয়ার কারণে মে মাসের পর নির্বাচন করা সম্ভব নয়।’

এ সময় তিনি বলেন, ‘আজকেও যদি সমতল মাঠ তৈরি হয়, ফেয়ার ইলেকশন যদি সম্ভব হয়, তাহলেও আমরা প্রস্তুত রয়েছি। কিন্তু ফেয়ার ইলেকশনের মাঠ তৈরি না হলে এপ্রিলে নির্বাচন হলেও তো কোনো লাভ নেই।’

প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোট দেওয়ার বিষয়ে জামায়াতের আমির বলেন, ‘প্রবাসীদের অবশ্যই ভোটের ব্যবস্থা করতে হবে, এ বিষয়ে আমরা ছাড় দিতে রাজি নই।’

তিনি বলেন, ‘প্রবাসীরা তাদের নাগরিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারেন না। আমরা ইসির কাছে দাবি জানিয়েছি, প্রবাসীরা যেন ভোট দিতে পারেন, তার ব্যবস্থা করার জন্য। এটা কোনো কঠিন বিষয় নয়। কিন্তু ইসির পক্ষ থেকে আমরা কোনো অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি না।’

এর আগে গতকাল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহেরও বলেন, বৈঠকে তারা বলেছেন, জুলাইয়ের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে। আর নির্বাচন হতে পারে ডিসেম্বর থেকে এপ্রিলের মধ্যে।

তাহের বলেন, ‘আমরা বলেছি জুলাইয়ের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে। বেশিরভাগ বিষয়ে সবাই একমত হয়েছে। সামান্য কিছু বিষয়ে মতানৈক্য রয়েছে। জুলাইয়ের মধ্যে সংস্কার শেষ হবে। এরপর একটি জুলাই সনদ হবে। সেখানে আমরা সব দল স্বাক্ষর করব।’