খুঁজুন
                               
বুধবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২৫, ১৩ কার্তিক, ১৪৩২

নারী ও পুরুষ : একে অপরের শক্তি ও সহযোগী

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫, ৬:৩৭ অপরাহ্ণ
নারী ও পুরুষ : একে অপরের শক্তি ও সহযোগী

নারী ও পুরুষের সম্পর্ক মানব সভ্যতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও সূক্ষ্ম দিক। তারা একে অপরের পরিপূরক হিসেবে কাজ করে, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে একটি ভারসাম্য বজায় রাখে। সমাজ, সংস্কৃতি, ধর্ম ও বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে এই সম্পর্ক গভীরভাবে বিশ্লেষণ করা যায়। জীববিজ্ঞানের ভাষায়, নারী ও পুরুষ দুটি ভিন্ন লিঙ্গ হলেও তারা একে অপরের সাথে জীবনের মূল গঠন প্রক্রিয়ায় জড়িত। প্রজনন ব্যবস্থায় তাদের ভূমিকা ভিন্ন হলেও সমান গুরুত্বপূর্ণ। একটি শিশুর জন্মের জন্য যেমন পুরুষের শুক্রাণু প্রয়োজন, তেমনই নারীর ডিম্বাণু ও গর্ভাধারণের ভূমিকা অপরিহার্য। এভাবে তারা একে অপরকে পরিপূরক হিসেবে কাজ করে, যা মানবজাতির টিকে থাকার জন্য অপরিহার্য।

নারী-পুরুষের শারীরিক ও মানসিক বৈশিষ্ট্য ভিন্ন হলেও এই বৈচিত্র্য তাদের সম্পর্ককে আরও গভীর করে তোলে। পুরুষের শক্তি ও ধৈর্য সাধারণত শারীরিক কাজে কার্যকর, যেখানে নারীর সহানুভূতি ও পরিচর্যা সম্পর্কিত গুণাবলী পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।

নারী ও পুরুষ একসঙ্গে সমাজ গঠন করেছে। প্রাচীন যুগে পুরুষ প্রধানত শিকার ও নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করত, আর নারী পরিবারের যত্ন ও খাবার সংগ্রহে মনোনিবেশ করত। যদিও আধুনিক যুগে এই ভূমিকার অনেক পরিবর্তন ঘটেছে, তবুও এই ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট এখনও আমাদের আচরণ ও সামাজিক কাঠামোয় প্রভাব ফেলে। নারী ও পুরুষ উভয়েই সমাজে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করে থাকে। একজন পুরুষ যেমন পরিবারের অর্থনৈতিক দায়িত্ব নিতে পারে, তেমনি একজন নারীও কর্মজীবনে অংশগ্রহণ করতে পারে। বর্তমান সমাজে নারী ও পুরুষের সমান অংশগ্রহণের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে, কারণ এটি শুধু তাদের মধ্যে ভারসাম্য তৈরি করে না, বরং সমাজকে আরও উন্নত করে।

বিভিন্ন ধর্মে নারী ও পুরুষকে স্রষ্টার সৃষ্টির শ্রেষ্ঠত্ব হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। ইসলাম ধর্মে নারী ও পুরুষ একে অপরের “লিবাস” (পোশাক) হিসেবে বর্ণিত হয়েছে, যা পরস্পরের পূর্ণতা ও নিরাপত্তার প্রতীক। হিন্দুধর্মে স্ত্রী ও পুরুষকে “অর্ধনারীশ্বর” (শিব ও পার্বতীর মিলিত রূপ) বলে চিত্রিত করা হয়েছে, যা তাদের সমান গুরুত্ব বোঝায়। খ্রিস্টান ধর্মে ঈশ্বর আদম ও হাওয়াকে একে অপরের সহচর হিসেবে সৃষ্টি করেছেন বলে বলা হয়েছে। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে নারী ও পুরুষের সম্পর্ক কেবল শারীরিক বা মানসিক নয়, বরং এটি একটি আধ্যাত্মিক সংযোগ। একে অপরের সহায়তা ছাড়া তাদের পূর্ণতা লাভ সম্ভব নয়। আধুনিক সমাজে নারী ও পুরুষের ভূমিকা আরও বৈচিত্র্যময় হয়েছে। কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে, এবং পুরুষও ঘরোয়া কাজে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। এই পরিবর্তন সমতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তি তৈরি করছে। তবে, এই পরিবর্তনের ফলে নতুন চ্যালেঞ্জও তৈরি হয়েছে। যেমন, অনেক ক্ষেত্রে কর্মজীবন ও পারিবারিক জীবনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। তবুও, নারী ও পুরুষের মধ্যে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক এই সমস্যাগুলো সমাধান করতে সহায়তা করে। নারী ও পুরুষের মধ্যে মানসিক সংযোগ তাদের সম্পর্কের ভিত্তি। এটি কেবল ভালোবাসা বা রোমান্সের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং তাদের মধ্যে শ্রদ্ধা, বিশ্বাস ও সহযোগিতা সম্পর্ককে মজবুত করে। একটি পরিবার গঠন করার ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষ উভয়েরই ভূমিকা অপরিসীম। পুরুষের নেতৃত্ব ও সুরক্ষা এবং নারীর পরিচর্যা ও মানসিক সমর্থন একটি সুস্থ ও সুষ্ঠু পরিবারের জন্য অপরিহার্য।

নারী ও পুরুষের সম্পর্ক যত গভীরই হোক, তাতে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। যেমন, সামাজিক সংস্কার, লিঙ্গবৈষম্য, এবং সমান সুযোগের অভাব। অনেক সমাজে পুরুষদের তুলনায় নারীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়। শিক্ষা, কর্মসংস্থান, বা সামাজিক স্বীকৃতিতে নারী পিছিয়ে থাকতে পারে। অনেক সমাজে প্রচলিত কুসংস্কার ও সংস্কার নারী ও পুরুষের সম্পর্কের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। অনেক সময় নারী ও পুরুষের মধ্যে সঠিক যোগাযোগের অভাব সম্পর্কের দূরত্ব তৈরি করে।

নারী ও পুরুষের মধ্যে একটি ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজন শিক্ষা, সচেতনতা, এবং সামাজিক ন্যায়বিচার। সমাজে লিঙ্গসমতা প্রতিষ্ঠার জন্য নারীর ক্ষমতায়ন ও পুরুষের মানসিকতার পরিবর্তন গুরুত্বপূর্ণ। নারী ও পুরুষ যদি একে অপরকে সমান সম্মান দেয় এবং সহযোগিতার মনোভাব বজায় রাখে, তবে সমাজ আরও প্রগতিশীল ও শক্তিশালী হবে। নারী ও পুরুষ একে অপরের পরিপূরক। তাদের সম্পর্ক কেবল শারীরিক বা মানসিক নয়, বরং তা সামাজিক, সাংস্কৃতিক, এবং আধ্যাত্মিক ক্ষেত্রেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সম্পর্কের মাধ্যমে মানবজাতি একদিকে যেমন টিকে আছে, তেমনি সমাজ, সংস্কৃতি, এবং সভ্যতার অগ্রগতিও নিশ্চিত হচ্ছে। তাদের পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহযোগিতার মাধ্যমেই একটি সুন্দর ও সমৃদ্ধিশালী সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব।

পুরুষের শারীরিক চাহিদা পূরণ হলেই তার মানসিক শান্তি ফিরে আসে। কিন্তু নারীদের ক্ষেত্রে বিষয়টি সম্পূর্ণ ভিন্ন। একজন নারী মানসিক শান্তি পেলে তবেই শারীরিক চাহিদার কথা ভাবে। নারী ও পুরুষের চাহিদার এই ভিন্নতার কারণেই তাদের সম্পর্ক আরও জটিল এবং গভীর। পুরুষের সমস্ত ডিপ্রেশন এবং ক্লান্তি দূর হয় সঙ্গীর সাথে শারীরিক সংযোগে। যদি আপনি আপনার পুরুষ সঙ্গীকে খুশি করতে চান, তবে তার সাথে অবশ্যই শারীরিক Attachment থাকা প্রয়োজন, এবং তা মন থেকে হতে হবে। নারীরা, বিপরীতে, মানসিক Attachment-এ বেশি গুরুত্ব দেয়। যদি তার মন ভালো থাকে, তাহলে সে স্বাভাবিকভাবেই শারীরিক সংযোগে আগ্রহী হয়। কিন্তু যদি তার মানসিক অবস্থা ভালো না থাকে, তাহলে সে কোনো কিছুতেই সাড়া দেয় না। নারীর মনই তার আসল শক্তি। একজন নারী চাইলে একজন পুরুষের জীবনকে নতুন করে সাজাতে পারে। আবার সেই নারী চাইলে একজন পুরুষের জীবনকে পুরোপুরি নষ্টও করে দিতে পারে। একজন নারী চাইলেই একজন পুরুষকে সম্মানের সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছে দিতে পারে। আবার চাইলে তাকে অসম্মানের তলানিতে নামিয়ে আনতে পারে।

নারী চাইলে একজন পুরুষকে আর্থিকভাবে সমৃদ্ধ করতে পারে। আবার চাইলে তাকে নিঃস্ব করে দিতে পারে।
নারী চাইলে একটি সুন্দর পরিবার এবং সুখী সংসার গড়ে তুলতে পারে। আবার চাইলে সেই সংসারকে ধ্বংস করে দিতে পারে। নারী একজন পুরুষকে পরিবার, সমাজ, এবং নিজের প্রতি আবদ্ধ রাখতে পারে। আবার চাইলে সে পুরুষকে একা করে, পরিবারহীন করে ছুঁড়ে ফেলে দিতে পারে।
নারী তার শিক্ষা, শক্তি, মায়া, ভালোবাসা এবং মমতার মাধ্যমে পুরো পৃথিবীকে বদলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে।
নারী চাইলে একজন পুরুষকে শত খারাপ অভ্যাস থেকে মুক্ত করে ভালো মানুষে পরিণত করতে পারে। আবার ভালো মানুষকে নষ্ট করতেও সক্ষম। নারী, তোমার প্রতি আমার অগাধ বিশ্বাস। তুমি তোমার সৌন্দর্য, শিক্ষা, এবং ভালোবাসার শক্তি দিয়ে তোমার সংসার, পরিবার এবং সমাজকে সুন্দর করে তুলবে।

তোমার প্রেম হোক তোমার সংসার,
তোমার ভালোবাসা হোক তোমার স্বামী,
আর তোমার মায়ার বাঁধন হোক তোমার সন্তান।

নারী, তুমি চাইলেই অনেক কিছু করতে পারো। তুমি পারো, পুরো পৃথিবী বদলে দিতে। জীবনের পরিপূরক দুই অঙ্গ। নারী ও পুরুষ মানবজীবনের দুটি অপরিহার্য উপাদান। এদের মধ্যে সম্পর্ক শুধু শারীরিক বা মানসিক নয়, বরং সামাজিক, সাংস্কৃতিক, এবং আধ্যাত্মিক ক্ষেত্রেও গভীর প্রভাব বিস্তার করে। তারা একে অপরকে পরিপূরক হিসেবে সহযোগিতা করে মানবসভ্যতার ভিত্তি স্থাপন করেছে। নারী ও পুরুষ একে অপরের উপর নির্ভরশীল। জীববিজ্ঞানের দৃষ্টিতে তারা প্রজনন প্রক্রিয়ায় সমান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পুরুষের শক্তি ও উদ্যম এবং নারীর পরিচর্যা ও সহানুভূতি মানবজাতির টিকে থাকার জন্য অপরিহার্য।

প্রাচীনকাল থেকে সমাজে নারী ও পুরুষ ভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছে। পুরুষ প্রধানত বাহ্যিক কাজ এবং নিরাপত্তা প্রদান করত, আর নারী পরিবার ও সমাজের অন্তর্গত কাজগুলোর ভার বহন করত। আধুনিক যুগে এই দায়িত্ব পালনের ধরন পরিবর্তিত হয়েছে। এখন নারীরা কর্মক্ষেত্রে পুরুষের সমান অবদান রাখছে, আর পুরুষরা পারিবারিক দায়িত্ব ভাগ করে নিচ্ছে।

প্রত্যেক ধর্ম নারী ও পুরুষের সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছে। ইসলাম ধর্মে বলা হয়েছে, নারী ও পুরুষ একে অপরের পোশাকস্বরূপ, যা তাদের পারস্পরিক সুরক্ষা ও সম্মানের প্রতীক। অন্যদিকে, হিন্দু ধর্মে স্ত্রী ও পুরুষকে “অর্ধনারীশ্বর” রূপে চিত্রিত করা হয়েছে, যা তাদের সমানতা ও একতার প্রতীক। সমাজে এখনও নারী ও পুরুষের মধ্যে সমতা অর্জন একটি চ্যালেঞ্জ। লিঙ্গবৈষম্য, কর্মক্ষেত্রে নারীর সুযোগের অভাব, এবং সামাজিক কুসংস্কার এই সমতা প্রতিষ্ঠায় বাধা সৃষ্টি করে। তবে শিক্ষা ও সচেতনতার মাধ্যমে এই সমস্যাগুলো কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। নারী ও পুরুষ একে অপরের পরিপূরক। তাদের সম্পর্কের মধ্যে সমতা, সম্মান, এবং সহযোগিতা থাকলে একটি সমাজ উন্নত ও স্থিতিশীল হয়। তাই তাদের পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে মানবজীবনের সব দিককে আরও সমৃদ্ধ করা সম্ভব।

সংবাদ : সাংবাদিকতার অর্থনীতি, রাজনৈতিক চাপ ও নৈতিক দ্বন্দ্ব

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২৫, ১:৪৮ অপরাহ্ণ
সংবাদ : সাংবাদিকতার অর্থনীতি, রাজনৈতিক চাপ ও নৈতিক দ্বন্দ্ব

বর্তমান বিশ্বে সাংবাদিকতা এক কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি। গণমাধ্যম এখন আর শুধু তথ্য প্রচারের মাধ্যম নয়, বরং অর্থনৈতিক চাপ, রাজনৈতিক প্রভাব এবং নৈতিক সংকটের জটিল সমীকরণের ভেতরে বন্দী।
অর্থনৈতিক দিক থেকে বেশিরভাগ সংবাদমাধ্যম বিজ্ঞাপননির্ভর হওয়ায় তাদের স্বাধীনতা ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে। সরকারি ও কর্পোরেট বিজ্ঞাপনই অনেক প্রতিষ্ঠানের আয়ের মূল উৎস। ফলে এসব প্রতিষ্ঠানের স্বার্থের বিপরীতে প্রতিবেদন প্রকাশে সাংবাদিকরা প্রায়ই বাধার সম্মুখীন হন। ডিজিটাল যুগে ইউটিউব ও ফেসবুকের মতো প্ল্যাটফর্ম বিজ্ঞাপন আয়ের বড় অংশ নিয়ে নেওয়ায় সংবাদমাধ্যমগুলো আরও দুর্বল হয়ে পড়ছে।
রাজনৈতিক চাপও সাংবাদিকতার অন্যতম বড় বাধা। সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো অনেক সময় সংবাদ নিয়ন্ত্রণে প্রভাব বিস্তার করে, সমালোচনামূলক প্রতিবেদন প্রকাশে বাধা দেয়। মাঠপর্যায়ের সাংবাদিকরা প্রায়ই হয়রানি, মামলা ও হামলার শিকার হন। এতে সংবাদমাধ্যমের নিরপেক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
এছাড়া নৈতিক দ্বন্দ্বও আজ সাংবাদিকতার মূল সমস্যা। ভিউ বা ক্লিক বাড়ানোর প্রতিযোগিতায় অনেক সময় সত্যের চেয়ে আকর্ষণীয় শিরোনামকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এতে পেশাগত সততা ও জনআস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
সত্য ও মানবতার পক্ষে সাংবাদিকতার নৈতিক ভিত্তি পুনর্গঠন এখন সময়ের দাবি। অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, রাজনৈতিক সহনশীলতা এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা গেলে সাংবাদিকতা আবারও হতে পারে সমাজের আয়না ও রাষ্ট্রের প্রকৃত চতুর্থ স্তম্ভ।
সাংবাদিকতা একটি জাতির বিবেক, সমাজের দর্পণ এবং রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। কিন্তু বর্তমান বিশ্বে সাংবাদিকতা আর কেবল তথ্য প্রচারের মাধ্যম নয়; এটি আজ অর্থনীতি, রাজনীতি এবং নৈতিকতার জটিল সম্পর্কের ভেতর আটকে পড়া একটি প্রতিষ্ঠান। সাংবাদিকতার স্বাধীনতা যেখানে গণতন্ত্রের মূল শর্ত, সেখানে অর্থনৈতিক স্বার্থ, রাজনৈতিক চাপ এবং নৈতিক দ্বন্দ্ব এই স্বাধীনতাকে প্রতিনিয়ত সংকুচিত করে চলেছে।
বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের সংবাদপত্র ও গণমাধ্যম এখন টিকে থাকার লড়াইয়ে ব্যস্ত। বিজ্ঞাপনের ওপর নির্ভরশীল এই শিল্প অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছে, অন্যদিকে রাজনৈতিক ও কর্পোরেট চাপ সাংবাদিকদের নিরপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। ফলে সাংবাদিকতার মূল লক্ষ্য—সত্য প্রকাশ—প্রায়ই বিভিন্ন স্বার্থগোষ্ঠীর কাছে বন্দী হয়ে পড়ছে।
সাংবাদিকতার অর্থনীতি ও স্বাধীনতার শর্ত :
একটি সংবাদমাধ্যম পরিচালনা করতে যেমন সাংবাদিকতার আদর্শ প্রয়োজন, তেমনি প্রয়োজন অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা। সাংবাদিকতার অর্থনীতি মূলত তিনটি স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে আছে—বিজ্ঞাপন, পাঠক বা দর্শক নির্ভর আয়, এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ।
১. বিজ্ঞাপন নির্ভরতা ও তার প্রভাব : বেশিরভাগ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রধান আয় আসে বিজ্ঞাপন থেকে। সরকারি ও কর্পোরেট বিজ্ঞাপনই অনেক পত্রিকার বেঁচে থাকার একমাত্র ভরসা। ফলে সংবাদপত্রগুলো প্রায়ই বিজ্ঞাপনদাতাদের স্বার্থের বিপরীতে যেতে পারে না।
একটি বড় কোম্পানির অনৈতিক কার্যক্রম বা পরিবেশ দূষণ নিয়ে অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদন অনেক সময় চাপের মুখে বাতিল হয়ে যায়, কারণ সেই কোম্পানি পত্রিকাটির অন্যতম বিজ্ঞাপনদাতা।
২. ডিজিটাল যুগের অর্থনৈতিক রূপান্তর : অনলাইন সাংবাদিকতার যুগে বিজ্ঞাপন আয় আরও বিভক্ত হয়েছে। ইউটিউব, ফেসবুক, গুগলের মতো টেক জায়ান্টরা এখন বিজ্ঞাপন আয়ের বড় অংশ নিজেদের দখলে রেখেছে। ফলে সংবাদমাধ্যমগুলো ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে, যেখানে অ্যালগরিদম নির্ধারণ করে কোন সংবাদ বেশি প্রচার পাবে। এর ফলে গঠনমূলক সাংবাদিকতার চেয়ে ‘ক্লিকবেট’ সংবাদ, উত্তেজক শিরোনাম ও ভিউ নির্ভর কনটেন্ট বাড়ছে।
৩. সাংবাদিকদের অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা : অর্থনৈতিক দুরবস্থার ফলে অনেক সংবাদকর্মী ন্যায্য বেতন পান না, কিংবা নিয়মিত বেতন পেতেও সমস্যার সম্মুখীন হন। চাকরির অনিশ্চয়তা, প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার আতঙ্ক, এবং প্রাতিষ্ঠানিক সুরক্ষার অভাব সাংবাদিকদের মানসিকভাবে দুর্বল করে তোলে। ফলস্বরূপ তারা পেশাগত স্বাধীনতা হারিয়ে ফেলেন, এবং কখনও কখনও আত্মরক্ষার তাগিদে আপোষে বাধ্য হন।
রাজনৈতিক চাপ ও স্বাধীন সাংবাদিকতার শত্রু : বাংলাদেশসহ বহু দেশে রাজনৈতিক প্রভাব সাংবাদিকতার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে। গণমাধ্যমের কাজ হলো ক্ষমতার জবাবদিহি নিশ্চিত করা, কিন্তু রাজনৈতিক দল ও শাসকগোষ্ঠী সেই স্বাধীনতাকে নিজের সুবিধামতো নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে।
১. সরকারি প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণ : সরকার প্রায়ই বিজ্ঞাপন, নিবন্ধন, ফ্রিকোয়েন্সি বা লাইসেন্স ইস্যুর মাধ্যমে গণমাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে। যেসব পত্রিকা বা টেলিভিশন সরকারবিরোধী সংবাদ প্রকাশ করে, তাদের ওপর বিভিন্ন প্রশাসনিক বা আর্থিক চাপ সৃষ্টি করা হয়। কখনও কখনও ‘রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড’ বা ‘ভুয়া তথ্য প্রচার’-এর অভিযোগ তুলে মামলা করা হয়, যা সাংবাদিকদের ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়।
২. রাজনৈতিক দলীয় বিভাজন : রাজনৈতিক বিভাজন সাংবাদিকতার ভেতরও ছড়িয়ে পড়েছে। অনেক সংবাদমাধ্যম সরাসরি কোনো রাজনৈতিক দলের অনুগত হয়ে কাজ করছে। এতে সংবাদপত্রের নিরপেক্ষতা নষ্ট হচ্ছে, আর পাঠকের আস্থা কমছে। ‘একপক্ষীয় সাংবাদিকতা’ সাধারণ মানুষের চোখে মিডিয়াকে পক্ষপাতদুষ্ট ও অবিশ্বাস্য করে তুলছে।
৩. মাঠপর্যায়ে রাজনৈতিক সহিংসতা : জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কর্মরত সাংবাদিকরা প্রায়ই রাজনৈতিক নেতাদের হুমকি ও হামলার শিকার হন। তাদের ওপর মামলা, লাঞ্ছনা, কিংবা পেশাগত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে তারা স্থানীয় প্রভাবশালীদের ‘কথা না শোনার’ কারণে সামাজিকভাবে একঘরে হয়ে পড়েন।
নৈতিক দ্বন্দ্ব ও সাংবাদিকতার আত্মার পরীক্ষা : সাংবাদিকতা কেবল পেশা নয়, এটি একধরনের নৈতিক দায়িত্ব। সত্য অনুসন্ধান ও সমাজের কল্যাণের জন্য সাংবাদিকের মননে থাকা চাই সততা, মানবিকতা ও সাহস। কিন্তু বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক যুগে এই নৈতিক মানদণ্ডকে রক্ষা করা ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে।
১. সত্য বনাম জনপ্রিয়তা : ডিজিটাল যুগে ক্লিক, ভিউ ও লাইকই হয়ে উঠেছে সংবাদমূল্যের মাপকাঠি। ফলে অনেক সাংবাদিক সত্যের চেয়ে ‘ট্রেন্ডিং’ বিষয়কে প্রাধান্য দেন। সংবাদে অতিরঞ্জন, ভুয়া তথ্য, এমনকি গোপন ক্যামেরা ব্যবহার করে ‘সেন্সেশন’ তৈরি করা এখন স্বাভাবিক হয়ে গেছে। এটি সাংবাদিকতার নৈতিক ভিত্তিকে ক্ষয় করছে।
২. গোপন স্বার্থ ও প্রলোভন : কখনও রাজনৈতিক সুবিধা, কখনও আর্থিক প্রলোভন সাংবাদিকদের নৈতিকতা থেকে বিচ্যুত করে। কোনো কোনো সাংবাদিক নির্দিষ্ট ব্যক্তির বা প্রতিষ্ঠানের প্রচারণায় জড়িয়ে পড়েন। এর ফলে পেশাদার ন্যায়বোধ দুর্বল হয়, সংবাদপত্রের বিশ্বাসযোগ্যতা হারায়।
৩. ব্যক্তিগত ঝুঁকি ও ভয় : সত্য প্রকাশের জন্য সাংবাদিকদের অনেক সময় ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়তে হয়। অনেক সাংবাদিক হুমকি, অপহরণ কিংবা হত্যার শিকার হয়েছেন। এই ভয় অনেককে আত্মনিয়ন্ত্রণে বাধ্য করে যা নৈতিক দ্বন্দ্বকে আরও গভীর করে তোলে।
সামাজিক মাধ্যমে নতুন যুগের নতুন চ্যালেঞ্জ : সামাজিক মাধ্যম আজ সংবাদ প্রচারের নতুন প্ল্যাটফর্ম, কিন্তু এটি সাংবাদিকতার নীতি ও পেশাদারিত্বের জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জও বটে। যেকোনো ব্যক্তি এখন সংবাদ প্রচার করতে পারে, কিন্তু যাচাই-বাছাই ছাড়া তথ্য ছড়ানো সহজ হয়ে যাওয়ায় মিথ্যা সংবাদ ও বিভ্রান্তি বাড়ছে।
‘সিটিজেন জার্নালিজম’-এর ইতিবাচক দিক যেমন রয়েছে—ঘটনার দ্রুত প্রচার, তেমনি এর অপব্যবহারও ব্যাপক। অনেক ক্ষেত্রেই ফেসবুক বা ইউটিউবে ভাইরাল হওয়া সংবাদই পরে ভুয়া প্রমাণিত হয়, কিন্তু ততক্ষণে সেটি জনমত প্রভাবিত করে ফেলে। পেশাদার সাংবাদিকদের জন্য এটি এক কঠিন প্রতিযোগিতা—যেখানে গতি ও জনপ্রিয়তা সত্য ও দায়িত্বের চেয়ে বেশি মূল্য পায়।

নৈতিক সাংবাদিকতার প্রয়োজনীয়তা : সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য সাংবাদিকতার একটি স্পষ্ট নৈতিক কাঠামো থাকা জরুরি। বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের আচরণবিধি, আন্তর্জাতিক সাংবাদিক সংগঠনগুলোর কোড অব কন্ডাক্ট—এসব কেবল কাগজে নয়, বাস্তবে প্রয়োগ করাই প্রধান চ্যালেঞ্জ।
সাংবাদিকদের উচিত :  তথ্য যাচাই না করে কিছুই প্রকাশ না করা। ব্যক্তিগত বা দলীয় পক্ষপাত এড়িয়ে নিরপেক্ষ থাকা। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির মতামত অন্তর্ভুক্ত করা। সমাজে শান্তি ও মানবিক মূল্যবোধ রক্ষা করা। একই সঙ্গে সংবাদ প্রতিষ্ঠানগুলোরও প্রয়োজন পেশাদার প্রশিক্ষণ, ন্যায্য বেতন এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ : সাংবাদিকতার টিকে থাকার জন্য দরকার মুক্ত চিন্তা, নিরাপদ পরিবেশ ও অর্থনৈতিক স্থায়িত্ব। সরকারকে বুঝতে হবে—স্বাধীন সাংবাদিকতা কোনো রাষ্ট্রবিরোধী কাজ নয়, বরং তা রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে।
সত্যের পক্ষে কলমই এখন সবচেয়ে বড় শক্তি। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন বা সাইবার আইনের মতো বিধান সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ করতে নয়, বরং ভুয়া সংবাদ ও ঘৃণা প্রচার রোধে ব্যবহার করা উচিত। একই সঙ্গে গণমাধ্যমকে নিজস্ব ‘অভ্যন্তরীণ সেন্সরশিপ’ সংস্কৃতি থেকেও বেরিয়ে আসতে হবে।
সাংবাদিকতার প্রকৃত উদ্দেশ্য হলো সমাজে সত্য, ন্যায় ও মানবতার আলো ছড়ানো। কিন্তু এই পথে রয়েছে অর্থনৈতিক টানাপোড়েন, রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ এবং নৈতিক দ্বন্দ্বের পাহাড়। তবুও সাহসী ও নৈতিক সাংবাদিকরাই সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন—যারা আপোষহীনভাবে সত্যের পক্ষে দাঁড়ান। আজকের সাংবাদিকতার সামনে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন—সে কি টিকে থাকবে স্বাধীন ও সৎভাবে, নাকি অর্থ ও ক্ষমতার দাসত্বে পরিণত হবে? এই প্রশ্নের উত্তর নির্ভর করছে সাংবাদিকদের সততা, সমাজের সচেতনতা, এবং রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক মনোভাবের ওপর। সত্য প্রকাশের এই কঠিন যাত্রায় সাংবাদিকদের হাতে এখনো সেই কলম রয়েছে—যা বন্দুকের চেয়েও শক্তিশালী। এই শক্তিকে বাঁচিয়ে রাখাই আমাদের সকলের দায়িত্ব।
সাংবাদিকতার অর্থনৈতিক সংকট, রাজনৈতিক প্রভাব এবং নৈতিক দুরবস্থা—এই তিনটি চ্যালেঞ্জ একসঙ্গে সাংবাদিকতার অস্তিত্বকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী—যে জাতির কলম বেঁচে থাকে, তার বিবেক কখনো মরে না। আজও অনেক সাংবাদিক অন্ধকার ভেদ করে সত্যের আলো জ্বালাচ্ছেন। তাদের সংগ্রামই প্রমাণ করে, সাংবাদিকতা কেবল একটি পেশা নয়—এটি এক মহৎ প্রতিশ্রুতি, মানবতার প্রতি অঙ্গীকার।

লেখক : উজ্জ্বল হোসাইন, সাংবাদিক ও লেখক, চাঁদপুর।
সত্যের পক্ষে সেই কলমকে বাঁচিয়ে রাখাই আমাদের সকলের দায়িত্ব, কারণ সত্য প্রকাশের শক্তি সব সময়ই বন্দুকের চেয়ে বড়।

সালমান শাহ হত্যা মামলা : আগাম জামিন চাইবেন সামিরা, হাইকোর্টে বর্তমান স্বামী

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২৫, ১২:০১ অপরাহ্ণ
সালমান শাহ হত্যা মামলা : আগাম জামিন চাইবেন সামিরা, হাইকোর্টে বর্তমান স্বামী

চিত্রনায়ক সালমান শাহকে হত্যা মামলার প্রধান আসামি সামিরা হক আজ হাইকোর্টে আগাম জামিন চাইবেন। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) তার বর্তমান স্বামী হাইকোর্টে আসেন জামিন শুনানির জন্য আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলতে। এদিন সকাল ৯ টায় সামিরার বর্তমান স্বামী  ইশতিয়াক আহমেদকে আপিল বিভাগে বসে থাকতে দেখা যায়। এসময় বেশ কয়েকজন সিনিয়র আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এর আগে সালমান শাহ এর সাবেক স্ত্রী এবং খলনায়ক আশরাফুল হক ডনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের শুনানিতে গতকাল সোমবার (২৭ অক্টোবর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট  সাইফুজ্জামান এ আদেশ দেন।
গত ২০ অক্টোবর মধ্যরাতে সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরীর পক্ষে তার ভাই মোহাম্মদ আলমগীর কুমকুম মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন- সালমান শাহর স্ত্রী সামিরা হক, শাশুড়ি লতিফা হক লুছি, বিতর্কিত ব্যবসায়ী অলিম্পিক ইন্ড্রাস্ট্রিজের মালিক আজিজ মোহাম্মদ ভাই, বাংলা চলচ্চিত্রের খলনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল হক ওরফে ডন। ডেভিড, জাভেদ ও ফারুক নামের তিন জনকে আসামি করা হয়েছে, যাদের ঠিকানা দেওয়া হয়েছে রাজধানীর বিএফডিসি। এছাড়া আরও চারজনকে আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন- ফরিদপুরের রেজভী আহমেদ ওরফে ফরহাদ, রুবী, আ. ছাত্তার ও সাজু। মামলা পরিচালনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানান, গত ১৩ অক্টোবর আদালতে শুনানির সময় এ প্রথম উপস্থিত ছিলেন সালমান শাহর স্ত্রী সামিরা হক। এর এক সপ্তাহ পরই আদালতের নির্দেশে রাজধানীর রমনা থানায় হত্যা মামলাটি করা হয়। এর পরেই তিনি গা ঢাকা দেন বলে জানা যায়। তবে আজ তার বর্তমান স্বামী আদালতে উপস্থিত হয়েছেন তার জামিন বিষয়ে কথা বলতে।

মেট্রোরেল দুর্ঘটনা : বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে ৩০ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেয়ার নির্দেশ হাইকোর্টের

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বুধবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২৫, ১১:৫৭ পূর্বাহ্ণ
মেট্রোরেল দুর্ঘটনা : বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে ৩০ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেয়ার নির্দেশ হাইকোর্টের

মেট্রোরেলের সার্বিক নিরাপত্তা ও দুর্ঘটনার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে ৩০ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বুধবার (২৯ অক্টোবর) মেট্টোরেল ও সব ফ্লাইওভারের বিয়ারিং প্যাডের গুণগত মান নির্ণয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে করা রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
গত সোমবার মেট্রোরেল ও সব ফ্লাইওভারের বিয়ারিং প্যাডের গুণগত মান নির্ণয়ে কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন। রিটে মেট্রোরেল ও সব ফ্লাইওভারে ব্যবহার করা বিয়ারিং প্যাডের গুণগত মান ঠিক আছে কি না, তা যাচাই করতে একটি কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে। এর আগে গত রোববার (২৬ অক্টোবর) ফার্মগেট মেট্রোরেলের নিচ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় ওপর থেকে বিয়ারিং প্যাড খুলে নিচে পড়ে আবুল কালাম আজাদ নামে এক পথচারীর মাথায় আঘাত হানে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। ঘটনাস্থলেই প্রচুর রক্তপাত হলে স্থানীয় লোকজন দ্রুত তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।