খুঁজুন
                               
রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫, ৭ বৈশাখ, ১৪৩২

নির্বাচন নিয়ে সরকারকে সহনীয় চাপে রাখবে বিএনপি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শনিবার, ৪ জানুয়ারি, ২০২৫, ১২:৩৫ অপরাহ্ণ
নির্বাচন নিয়ে সরকারকে সহনীয় চাপে রাখবে বিএনপি

অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কোনো প্রকার দ্বন্দ্বে না জড়িয়ে দ্রুততম সময়ে নির্বাচনে জন্য সহনীয় চাপ প্রয়োগ করাই হচ্ছে নতুন বছর অর্থাৎ ২০২৫ সাল বিএনপির প্রধান লক্ষ্য। পাশাপাশি দল ও অঙ্গ-সংগঠনকে সুসংগঠিত করা এবং রাষ্ট্র সংস্কারে ঘোষিত ৩১ দফা ব্র্যান্ডিংয়ে মনোযোগ দেবে দলটি।

বিএনপির নেতারা বলছেন, ২০২৫ সাল বিএনপির বেশি কিছু করা নেই। অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম ও তাদের নীতি কি হয় সেটা পর্যবেক্ষণ রাখা। এক্ষেত্রে সরকার যদি নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করে, সেটার সঙ্গে যুক্ত হবে বিএনপির। আর সরকার যদি নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা না করে, তাহলে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখে দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে সহনীয় চাপ প্রয়োগ করা হবে। তবে, সেক্ষেত্রে সরকার সঙ্গে কোনো দ্বন্দ্বে জড়াবে না দলটি। অর্থাৎ বক্তব্য, বিবৃতি এবং মাঠ পর্যায়ে সভা-সমাবেশ করে বারবার ২০২৫ সালের মধ্যে নির্বাচনে দাবি জোরালোভাবে তুলে ধরা হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমাদের চাওয়ার কিছু নেই। বাংলাদেশের মানুষ ভোট দিতে চায়। তারা ভোট দিয়ে তাদের নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায়, যে সরকার তাদের (জনগণের) কাছে দায়বদ্ধ থাকবে, তাদের কাছে জবাবদিহি করবে।

এরআগে নির্বাচনের দাবিতে সরকারের ওপর চাপ তৈরিতে বিএনপির কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আমীর খসরু বলেছিলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উদার গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে যেতে চাই। অনেক সংঘর্ষ হয়েছে, দেশের মানুষ অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই সাংঘর্ষিক রাজনীতি বাংলাদেশে আর যেন ফিরে না আসে, সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি। সেটা সফল হবে, একমাত্র দ্রুত একটা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে।

দলটির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, জনগণের প্রত্যাশা হচ্ছে, সরকার নির্বাচন কেন্দ্রীয় প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে দ্রুততম সময়ে নির্বাচন দেবে। জনগণের রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির একই প্রত্যাশা।

তিনি বলেন, আমাদের সব সময় ৩০০ আসনে ভোটের প্রস্তুতি থাকে। বিগত নির্বাচনগুলোতে আমরা আমাদের জোট সঙ্গীদের কিছু আসনে সমঝোতা হয়েছিল, সেইসব আসনে আমরা প্রার্থী দেয়নি। এবার এখন পর্যন্ত আমরা ৩০০ আসনের ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছি। নির্বাচনের সময় যারা আমাদের সঙ্গে থাকবে তাদের বিষয়ে তখন সিদ্ধান্ত হবে।

রাষ্ট্র সংস্কারে বিএনপি ৩১ দফা দিয়েছে বলে উল্লেখ করে স্থায়ী কমিটির এই নেতা বলেন, সেটা তো আমাদের কর্মপরিকল্পনার থাকবেই। এছাড়া বেশ কিছুদিন ধরে আমাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম চলমান আছে। দলের যেসব জায়গার কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, সেইগুলো গঠন করা হচ্ছে। পাশাপাশি আমাদের যেসব অঙ্গসংগঠনের কমিটির শেষ হয়ে গেছে সেইগুলো করা হচ্ছে। সেটা নতুন বছরেও চলমান থাকবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলটির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‍‘২০২৫ সালে মধ্যে যদি সরকার নির্বাচনের তারিখ অর্থাৎ রোডম্যাপ ঘোষণা করে, তাহলে নির্বাচন প্রক্রিয়া যুক্ত হয়ে যাবে বিএনপি। পাশাপাশি সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। আর সরকার যদি নির্বাচন বিলম্বিত করতে চায়, সেই ক্ষেত্র আমরা নির্বাচনের জন্য বক্তব্য, বিবৃতি, সারাদেশে সভা-সমাবেশের মাধ্যমে সরকারের ওপর সহনীয় চাপ তৈরি করবো। এছাড়া সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা এবং বৈঠক হলে সেখানে বারবার নির্বাচনের তাগাদা দেওয়া হবে।’

তবে সরকারের সঙ্গে বিএনপি কোনো প্রকার দ্বন্দ্বে জড়াবে না বলে জানান বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, আমরাই বলে আসছি আমাদের আন্দোলনের ফসল বর্তমান সরকার। ফলে, আমরা যদি এখনি নির্বাচনের দাবিতে মাঠে নামি সেটা গ্রহণযোগ্য হবে না। তাছাড়া একটা মহল এখনি বিএনপির বিরুদ্ধে একটা অভিযোগ প্রতিষ্ঠাতা করতে চাচ্ছে, আমরা সংস্কার চাই না, নির্বাচন চাই।

বিএনপির আরেকটি সূত্র বলেছেন, একটা বিষয় এখন পরিষ্কার নয় যে সরকার আগে জাতীয় নির্বাচন নাকি স্থানীয় সরকার নির্বাচন দেবে। দেশের একটা পক্ষ চাচ্ছে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন। যদিও নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন তাদের ভাবনায় নেই। তাই নির্বাচন কেন্দ্রিক সরকারের নীতির অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে বিএনপিকে। সেটার ওপর নির্ভর কবরে বিএনপির আগামী দিনের পরিকল্পনা কী হবে।

২০২৫ সালে বিএনপির প্রত্যাশা হচ্ছে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনা বলে উল্লেখ করে বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘জনগণের দল হিসেবে বিএনপির করণীয় হচ্ছে মানুষের তার ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়া। জনগণ যাতে তাদের ভোট দিয়ে তাদের সরকার নির্বাচিত করতে পারে।’

বিএনপি-জামায়াত দ্বন্দ্ব, উভয় চাপে রাখার কৌশল কী?

৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই নানা ইস্যুতে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছে দীর্ঘদিনের দুই মিত্র দল বিএনপি ও জামায়াত। বক্তব্য-বিবৃতিতে একে-অপরের আক্রমণে লক্ষ্য বস্তুতে পরিণত হয়েছে। মাঝখানে কিছুদিন বিএনপি ও জামায়াতের কথার বাহাস বন্ধ থাকলে, এখন আবার শরু হয়েছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতের ভূমিকা কি ছিল, সেটাও স্মরণ করিয়ে দিয়ে তারা কোন সেক্টরে যুদ্ধ করেছিল তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিরোধিতাকারী জামায়াত কীভাবে দেশপ্রেমিক হলো সেটা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিএনপির নেতারা।

বিএনপির নেতারা বলছেন, ৫ আগস্টের পরে জামায়াত প্রথমে বিএনপিকে আক্রমণ করে বক্তব্য দেওয়া শুরু করেছিল। তাদের আক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি শুধু সেই সব কথার জবাব দিয়ে আসছে।

বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, এখানে পরিকল্পনা করে কিছু হচ্ছে না। কথার প্রসঙ্গে কথা আসছে। জামায়াতের পক্ষ থেকে যেসব বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে তার পরিপ্রেক্ষিতে শুধু জবাব দেওয়া হচ্ছে। এখানে কথার প্রসঙ্গে কথা আসছে।

তিনি আরও বলেন, এখন আগামী নির্বাচনের বিষয়টি পরিষ্কার নয়, যখন নির্বাচনের বিষয়টি পরিষ্কার হবে, তখন বোঝা যাবে কারা আগামী দিনে বিএনপির নির্বাচনী জোটসঙ্গী হবে। জামায়াত ও সমমনা দলগুলো দীর্ঘদিন আমাদের সঙ্গে আছে, একসঙ্গে অনেক আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। সুতরাং এখনি বিষয়টি বলা সম্ভব নয়, আগামী নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গে জামায়াত থাকবে কিনা।

তবে, বিএনপির এক নেতা বলেন, বিএনপি ও জামায়াতের দ্বন্দ্বের বিষয়টি এখনি সিরিয়াসলি দেখার মতো সময় হয়নি। আপাতত আমার কাছে মনে হচ্ছে, উভয় পক্ষই একে-অপরকে চাপে রেখে কে কতটা সুবিধা আদায় করে নিতে পারে সেই চেষ্টা করছে। সূত্র : ঢাকা পোস্ট।

ঈদে নতুন জামা : স্বপ্ন আর ভালোবাসা জড়ানো

উজ্জ্বল হোসাইন
প্রকাশিত: শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫, ১২:২২ পূর্বাহ্ণ
ঈদে নতুন জামা : স্বপ্ন আর ভালোবাসা জড়ানো

ঈদ মানেই আনন্দ, উৎসব, মিলন এবং নতুন করে বাঁচার প্রেরণা। এই দিনে সবাই চায় নিজেকে সাজিয়ে নিতে, নতুন কাপড় পরে প্রিয়জনের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নিতে। কিন্তু এমন অনেকের মধ্যেও থাকে এমন কেউ, যার জন্য একটি নতুন জামা শুধু পোশাক নয়, বরং স্বপ্ন, গর্ব, আত্মমর্যাদা এবং একটি আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। এই প্রবন্ধে আমরা এমন এক নতুন জামার কথা বলব, যে জামার শুধু দামী কাপড় বা ডিজাইনের গর্ব নেই, বরং রয়েছে আত্মার গভীরে জমে থাকা এক মানুষের স্বপ্নের গল্প।

শহরের এক কোণায় বাস করে ছোট্ট ছেলেটি রিয়াদ। বয়স প্রায় দশ। তার বাবা একজন দিনমজুর, মা গৃহিণী। সংসারে অভাব-অনটনের মধ্যে কোনোভাবে দিন কাটে তাদের। বছরের প্রতিটি দিন কাটে সংগ্রামের মাঝে, কিন্তু ঈদ আসে স্বপ্নের আলো নিয়ে। ঈদে নতুন জামা পাবে, এই আশায় রিয়াদ এক মাস রোজা রাখে, নিজের মনকে শক্ত করে।

তবে এই জামা আসবে কি না, তা নিয়ে কোনো নিশ্চয়তা নেই। কারণ, বাবার মুখে ভাঁজ আর চিন্তার ছাপ স্পষ্ট। মা বারবার বলেন, “এবার হয়তো পুরনো জামাতেই ঈদ করতে হবে।” কিন্তু রিয়াদ বিশ্বাস করে—আল্লাহ যদি রোজা কবুল করেন, তাহলে একটা নতুন জামা হয়তো আসবেই।

এই জামার অপেক্ষা শুধু রিয়াদের নয়, এটি যেন তার মন-প্রাণের আকুতি। এই জামা তার জন্য স্বপ্নপূরণ, আত্মমর্যাদা, শ্রেষ্ঠত্বের অনুভব।

আমরা অনেক সময় বুঝি না, একটি নতুন জামা একজন শিশুর জন্য কতটা অর্থবহ হতে পারে। ধনী পরিবারের শিশুর কাছে এটি হয়তো একটি চমকপ্রদ পোশাক, কিন্তু রিয়াদের কাছে এটি স্বপ্ন পূরণের মতো। সে ভাবে, ঈদের দিন সবার মতো তাকেও যদি নতুন জামায় দেখা যায়, তাহলে সে আর অবহেলিত হবে না, তার বন্ধুরা তাকে হাসবে না। তারও মুখে হাসি ফুটবে, তারও ছবি উঠবে মোবাইল ক্যামেরায়।

এই জামা তার আত্মবিশ্বাস, যেটা সে স্কুলে পড়ার সময় খুঁজে বেড়ায়, যখন ক্লাসের অন্য ছেলেরা নতুন জামা পরে আসে আর সে পড়ে থাকে একঘেয়ে মলিন কাপড়।

এখানে জামার একটি কল্পিত স্বর ও ভাষা কল্পনা করা যাক—যেখানে জামাটি যেন নিজের মনে নিজের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করছে: “আমি কোনো বিলাসী দোকানের শেলফে ঝুলে থাকা দামি জামা নই। আমি সেই জামা, যাকে এক দরিদ্র বাবার কষ্টের টাকায় কিনে আনা হবে তার ছেলের মুখে এক চিলতে হাসি ফোটাতে।
আমি হয়তো রঙিন নই, হয়তো আমার ডিজাইনে জাঁকজমক নেই, কিন্তু আমি গর্বিত। কারণ আমি হব একটি শিশুর ঈদের স্বপ্ন পূরণের বাহক। আমি হব আত্মমর্যাদার প্রতীক, আমি হব ঈদের প্রাপ্তির প্রতিচ্ছবি।”

এই ভাবনার মধ্যেই ফুটে ওঠে জামার স্বপ্ন—সে চায়, তাকে কেউ ভালোবাসুক, পরিধান করুক, আর আনন্দ পাক।

রিয়াদের মা হয়তো নিজের জন্য কোনো কাপড় কিনবেন না, বাবা হয়তো একজোড়া চপ্পল না কিনে সেই টাকায় ছেলের জামা কিনে দেবেন। কারণ, সন্তানের হাসির চেয়ে বড় কিছু তাদের কাছে নেই। একটি নতুন জামার পেছনে লুকিয়ে থাকে একটি পরিবারের নীরব ত্যাগ, ভালোবাসা আর গোপন কান্না।

ঈদের নতুন জামা এই পরিবারগুলোর কাছে শুধু পোশাক নয়—এটা এক সম্মান, ভালোবাসা এবং আত্মতৃপ্তির চিহ্ন। অনেক সময় বাবা-মায়েরা নিজেদের প্রয়োজন বিসর্জন দিয়ে সন্তানের মুখে হাসি দেখতে চান। নতুন জামা যেন সেই আত্মত্যাগের স্বাক্ষর হয়ে উঠে।

ঈদের দিন আমরা যখন দেখি কেউ চকচকে কাপড় পরে বেরিয়েছে, আর কেউ পুরনো জামা পরে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে, তখন সামাজিক বৈষম্যের চিত্র স্পষ্ট হয়ে ওঠে। নতুন জামার গুরুত্ব সেখানে দ্বিগুণ। এটি একধরনের সামাজিক মর্যাদা।

রিয়াদ হয়তো তার বন্ধুর পাশে দাঁড়িয়ে ভাবে—আমারও যদি এমন একটা জামা থাকত! শুধু ঈদের দিনটা নয়, পুরো জীবনজুড়ে সেই হাহাকার থেকে যায়। এই এক টুকরো জামাই তার স্বপ্নকে উঁচুতে নিয়ে যেতে পারে, আর না থাকলে আত্মবিশ্বাসে ভাটা পড়ে।

দরিদ্র শিশুদের জন্য ঈদে জামার প্রাপ্তি মানে কী? সমান মর্যাদা – অন্যদের মতো তাকেও দেখা হয় একজন ‘পূর্ণ’ শিশুর মতো।  আত্মবিশ্বাস – নতুন জামা পরে সে খুশি মনে বন্ধুদের সঙ্গে মিশে যেতে পারে। পরিবারের প্রতি ভালোবাসা বৃদ্ধি – সে উপলব্ধি করে, তার মা-বাবা তাকে কত ভালোবাসে।

৪. ভবিষ্যতের স্বপ্ন – একজন শিশু জানে, সে যদি চেষ্টার মধ্যে থাকে, তার স্বপ্ন একদিন পূরণ হবেই।

ঈদের সকালে রিয়াদের ঘুম ভাঙে ভোরবেলা। মা হাসিমুখে এসে বলে—
“এই দেখ, তোমার নতুন জামা।”
রিয়াদ প্রথমে বিশ্বাস করতে পারে না। হাত বাড়িয়ে জামাটা নেয়, চোখে জল চলে আসে। “আমার?”
মা মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়, “হ্যাঁ বাবা, তোমার।”
রিয়াদ তার ছোট জামাটিকে বুকের সঙ্গে জড়িয়ে ধরে, যেন এটিই তার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।

সেই জামা তখন আর শুধু সুতা ও রঙের মিশ্রণ নয়, সেটি তখন একটি ‘স্বপ্ন’। একটি সন্তুষ্টির প্রতীক, একটি ছোট শিশুর গর্বের নিশান।

আমরা যারা সমাজের ভাগ্যবান অংশ, তাদের উচিত এই বৈষম্য দূর করতে সচেষ্ট হওয়া। প্রতিবছর ঈদের আগে আমরা অনেকেই প্রচুর জামা কিনি, কিন্তু ভাবি না পাশের দরিদ্র শিশুটার কথা। যদি আমরা একটি নতুন জামা কাউকে দিতে পারি, তাহলে তার ঈদটা হয়ে উঠতে পারে জীবনের সেরা দিন।সামাজিক সংগঠন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পরিবার—সবাই যদি চায়, তাহলে প্রত্যেক শিশুর ঈদে একটি নতুন জামা নিশ্চিত করা সম্ভব। এটি দান নয়, এটি মানুষের স্বপ্ন পূরণে সহযোগিতা।

“ঈদে একটি নতুন জামা যার স্বপ্ন” এই বাক্যটি শুধুমাত্র কোনো এক জামা বা একটি শিশুর গল্প নয়, এটি হাজারো রিয়াদের গল্প। এটি আমাদের সমাজে লুকিয়ে থাকা অসংখ্য মানুষের জীবনবোধের চিত্র। একটি নতুন জামা কেবল দেহ ঢাকার উপকরণ নয়, এটি মানুষের সম্মান, আত্মবিশ্বাস এবং ভালোবাসার প্রতীক। আমরা যদি এই একটুকরো জামার ভেতর মানুষের আবেগ, স্বপ্ন ও আত্মত্যাগ দেখতে পারি, তাহলে সমাজে সত্যিকার পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে। আসুন, এই ঈদে আমরা কেবল নিজেদের জন্য না, অন্যের মুখে হাসি ফোটানোর জন্যও একটি নতুন জামার স্বপ্ন বুনি।

লেখক পরিচিতি : উজ্জ্বল হোসাইন, সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক, চাঁদপুর।

চাঁদপুর জেলা সমবায় ইউনিয়নের সভাপতি ইকবাল আজম সম্পাদক দুলাল চন্দ্র দাস

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৫, ৯:৩৮ অপরাহ্ণ
চাঁদপুর জেলা সমবায় ইউনিয়নের সভাপতি ইকবাল আজম সম্পাদক দুলাল চন্দ্র দাস

চাঁদপুর জেলা সমবায় ইউনিয়নের নির্বাচনী বিশেষ সাধারণ সভা (১৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ২০২৫) নির্বাচিত ব্যবস্থাপনা কমিটি (২০২৫-২০২৮) ঘোষণা করা হয়েছে। সমবায় সমিতি আইন ২০০১ (সর্বশেষ সংশোধন ২০১৩) ও সমবায় সমিতি বিধিমালা ২০০৪ (সর্বশেষ সংশোধন ২০২০) অনুযায়ী নির্বাচন কমিটির সভাপতি মোঃ আলমগীর হোসেন (পরিদর্শক, জেলা সমবায় কার্যালয়, চাঁদপুর) কোন পদে একাধিক প্রার্থী না থাকায়, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছয় সদস্য বিশিষ্ট ব্যবস্থাপনা কমিটি ঘোষণা করেন। নবনির্বাচিত ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি- মোঃ ইকবাল আজম (প্রতিনিধি, দি চাঁদপুর মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিঃ), সহ-সভাপতি- মোঃ আফজাল হোসেন খান (প্রতিনিধি, মিলেনিয়াম বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ), সম্পাদক- দুলাল চন্দ্র দাস (প্রতিনিধি, বাগড়া শিক্ষিত বেকার সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিঃ), সদস্য- মোঃ আক্কাস ফরাজী (প্রতিনিধি, রূপসী পল্লী বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ), সদস্য- খন্দকার ফখরুল আলম (প্রতিনিধি, আশার আলো মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিঃ), সদস্য- মোঃ খোরশেদ আলম (প্রতিনিধি, খাজুরিয়া বাজার সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিঃ)।
জেলার বিভিন্ন সমবায় সমিতির প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে ও নির্বাচন কমিটির সভাপতি মোঃ আলমগীর হোসেন এর সভাপতিত্বে নির্বাচনী বিশেষ সাধারণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুরের কৃতি সন্তান, জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত সমবায়ী ও বাংলাদেশ জাতীয় সমবায় ইউনিয়ন এর সাধারণ সম্পাদক মো. জসিম উদ্দিন শেখ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন জেলা সমবায় ইউনিয়ন, জেলার সমবায় সমিতি ও সমবায়ীদের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করার দায়িত্ব থাকলেও চাঁদপুর জেলা সমবায় ইউনিয়নে দীর্ঘদিন নির্বাচিত কমিটি ছিল না, যার কারণে এটি অকার্যকর হয়ে পড়ে। আমরা বাংলাদেশ জাতীয় সমবায় ইউনিয়ন থেকে চাঁদপুর জেলা সমবায় ইউনিয়নকে কার্যকর করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করি। সমবায় বিভাগ এতে অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থাপনা কমিটির গঠন করে, যার ফলশ্রুতিতে আজকে আমরা একটি নির্বাচিত ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করতে পেরেছি। এজন্য তিনি সমবায় বিভাগের সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান পাশাপাশি নবনির্বাচিত কমিটিকে অভিনন্দন জানান। সভায় তিনি বাংলাদেশ জাতীয় সমবায় ইউনিয়নের বিভিন্ন উদ্যোগ ও পরিকল্পনা সকলের সামনে উপস্থাপন করেন। সকলের সহযোগিতায় তা বাস্তবায়নের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। সভায় অন্যন্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাংকের সভাপতি মুরাদ হোসেন খান, জুন হাউজিং কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিঃ এর প্রতিনিধি এ ওয়াই এম জাকারিয়া, ওয়ারলেস বাজার বহুমুখী সমবায় সমিতি লিঃ এর প্রতিনিধি মোঃ জিয়াউদ্দিন, ইসলামীয়া সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিঃ এর প্রতিনিধি নাজমুল হুদা প্রমূখ।
উল্লেখ্য প্রতি ৩ বছর পর পর নির্বাচনের মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনের বিধান থাকলেও ২০১২ সালের পর, দীর্ঘ ১৩ বছর পর এই ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠিত হলো।

আসছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫, ১০:৫১ পূর্বাহ্ণ
আসছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট

২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট দেওয়ার পরিকল্পনা করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আগামী ২ জুন নতুন অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

সম্প্রতি কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিল ও বাজেট ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

জানা গেছে, সংসদ না থাকায় এবার সংসদে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে না। অর্থ উপদেষ্টা টেলিভিশনে নতুন অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করবেন। ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হওয়ার আগেই বাজেট দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এ কারণে ২ জুন বাজেট ঘোষণার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সাধারণত আগের অর্থবছরগুলোতে বৃহস্পতিবার বাজেট দেওয়া হতো, এবার সোমবার ঘোষণা করা হবে। বাজেট ঘোষণার পর আগের রীতি অনুযায়ী অর্থ উপদেষ্টা বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন।

সূত্রটি জানিয়েছে, সাধারণত প্রতি অর্থবছরে বাজেটের আকার আগের অর্থবছরের তুলনায় বড় রাখা হয়। তবে এবার বাজেট ঘাটতি কমিয়ে বাজেট ছোট কারার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। নতুন অর্থবছরের বাজেটে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হবে।

বাজেটের আকার কমানো হলেও সমাজে বৈষম্য কমানোর পাশাপাশি মূল্যস্ফীতির চাপে নিম্ন আয়ের মানুষদের স্বস্তি দিতে সামাজিকীকরণ সুরক্ষা কর্মসূচিতে উপকারভোগী ও কিছু ক্ষেত্রে ভাতার পরিমাণ বাড়ানোর উদ্যোগ থাকছে নতুন অর্থবছরের বাজেটে। একই সঙ্গে কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।

আগামী অর্থবছরের জন্য সরকার জিডিপির প্রবৃদ্ধি সাড়ে ৫ শতাংশ ধরতে পারে। চলতি অর্থবছরে যা ছিল ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আগামী অর্থবছর শেষে মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনতে চায় সরকার। চলতি অর্থবছরেও একই লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। যদিও গত মার্চ মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশ।