খুঁজুন
                               
শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২২ ভাদ্র, ১৪৩২

নেদারল্যান্ডসের ম্যাচে ফেরা নাকি বাংলাদেশের সিরিজ জয়

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১০:৩৮ পূর্বাহ্ণ
নেদারল্যান্ডসের ম্যাচে ফেরা নাকি বাংলাদেশের সিরিজ জয়

ইতোমধ্যে প্রথম ম্যাচ জিতে সিরিজে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ দল। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে আজ সোমবার মাঠে নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে টাইগাররা। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা ছয়টায় শুরু হবে ম্যাচটি। এই ম্যাচ জিতেলেই সিরিজ জিতে নেবে লিটন দাসের দল। যে কারণে ম্যাচটি টাইগারদের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে নেদারল্যান্ডসের জন্যও সমান গুরুত্বপূর্ণ। কেননা সিরিজে টিকে থাকতে হলে এই ম্যাচে জয়লাভের কোনো বিকল্প নেই। রায়ান কুকের দল সেটা নিশ্চিতভাবে চাইবে।
গতকাল সংবাদ সম্মেলনে নোয়া ক্রোস বলেছেন, ‘অবশ্যই ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ আছে। আমরা বিশ্বাস করি আমরা পরের দুই ম্যাচ ভালো করব এবং ২-১ এ সিরিজ জিতব।’ বাংলাদেশের পেসারদের নিয়ে ক্রোস বলেন, ‘আমার মনে হয় ওরা সত্যিই খুব উঁচু মানের বোলার। তাদের ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতা আছে। এই হাই কোয়ালিটি অ্যাটাকের বিরুদ্ধে আমরা আরও দুটি ম্যাচে মাঠে নামার সুযোগ পাচ্ছি।’
ক্রোস আরও জানান, ‘সর্বশেষ যে দুবার আমরা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে খেলেছি, ২০২২ ও ২০২৩ বিশ্বকাপে, কন্ডিশন ভিন্ন ছিল। এই কন্ডিশন আমাদের জন্য অচেনা। আমাদের এখানে খেলা নিয়ে কোনো অভিজ্ঞতাই নেই। এটা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ, একইসাথে সুযোগও। এটা আমাদের জন্য খুবই মূল্যবান সিরিজ। এই ধরনের উইকেট ও কন্ডিশনে খেলা অবশ্যই বিশ্বকাপের জন্য ভালো এক অভিজ্ঞতা।’
ক্রোস আরও বলেন, ‘অবশ্যই জয়ের বিশ্বাস আছে। পুরো দল জয়ের ব্যাপারে বিশ্বাস রাখছে। গতকাল আমাদের অনেক কিছু শেখার ছিল। বাংলাদেশের মতো পূর্ণ সদস্য দেশের বিপক্ষে নিজেদের সেরাটা খেলতে হবে। সেক্ষেত্রে সিরিজ জেতা কেন সম্ভব নয়?’
এদিকে শামীম পাটোয়ারী বাংলাদেশের একাদশে নিয়মিত সদস্যই বলা চলে। একাদশ নিয়ে সুস্থ প্রতিযোগিতার প্রসঙ্গে সালাউদ্দিন বলেছেন, ‘দলের যে অবস্থা এখানে স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা আরও বাড়তে পারে। আমাদের নিজস্ব চিন্তাভাবনা, অনেক সময় আমরা হয়ত মনে মনে চাই যে আরেকজন যেন পারফর্ম না করতে পারে। আমরা চাচ্ছি এমন চিন্তাভাবনা থেকে বেরিয়ে আসতে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটা আমরা করতে পারছি যার ফলে দলে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি হবে। ছেলেরা নিজেদের ভেতর প্রতিযোগিতা করলে তাদের মধ্যে স্ট্যান্ডার্ড লেভেল বাড়বে। আগে হয়ত টিকে থাকতে খেলত, এখন পারফর্ম করতে চাইবে। তাহলে আমাদের কাজ অনেক কমে যাবে। পারফর্ম করে যেন টিকে থাকে এমন যেন না হয় যে অন্য কেউ খারাপ করেছে তাই ঢুকে গেছে। পারফর্ম করলে দলের জন্য লাভ।’
সাইফের মতই লম্বা সময় পর জাতীয় দলে ফিরেছেন নুরুল হাসান সোহান। দ্বিতীয় ম্যাচের একাদশে কি দেখা যাবে সোহানকে? জবাবে সিনিয়র সহকারী কোচ বলেছেন, ‘টিমের কথা তো আমি আপনাদেরকে বলতে পারব না। কেউ পারফর্ম করলে দলে স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা নিয়ে আসে। দলের ভালো ফর্ম নিয়ে আসে। সাইড বেঞ্চের সবাই পারফর্মার যত হবে তত দলের জন্য ভালো। শামীম অসুস্থ, সাইফ সুযোগ পেয়েছে। সাইফ আগে ভালো করেনি এবার ভালো করেছে। দলের জন্য ভালো তার জন্যও ভালো। এখন সে যেন ধারাবাহিক হতে পারে তাহলে দলের জন্য আরও ভালো।’
প্রথম ম্যাচে আগে বোলিং নিয়ে ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে কি আগে ব্যাট করে পরে ডিফেন্ড করার চ্যালেঞ্জটা নেবে টাইগাররা? সালাউদ্দিন বলেছেন, ‘এটা আসলে এক্সপেরিমেন্ট করার জায়গা না। এটা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। জেতার জন্য যে সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার আমরা সেটাই নেওয়ার চেষ্টা করব।’

মহাকাশ : এ সপ্তাহে দেখা যাবে কর্ন মুন, সঙ্গে শনি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১০:৪৩ পূর্বাহ্ণ
মহাকাশ : এ সপ্তাহে দেখা যাবে কর্ন মুন, সঙ্গে শনি

চলতি সপ্তাহের শেষ দিকে দারুণ এক মহাজাগতিক দৃশ্যের সাক্ষী হতে যাচ্ছে মানুষ। এই সপ্তাহের শেষ দিকে আকাশের পূর্ব দিগন্তে উদিত হবে বিরাট চাঁদ ‘কর্ন মুন’। ধীরে ধীরে যা পরিণত হবে ‘ব্লাড মুন’ বা রক্তাভ চাঁদে। চাঁদের সঙ্গেই নজর কাড়বে ছোট স্থির আলোর মতো দেখতে শনিগ্রহ।
আগে ইতিহাসে প্রতিটি পূর্ণিমাকে সেই মাসের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বা প্রকৃতির বড় পরিবর্তনের প্রতীক হিসেবে ধরত মানুষ। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে প্রতিটি পূর্ণিমাকে এক বা একাধিক বিশেষ নামে ডাকা হয়েছে। সে হিসেবে সেপ্টেম্বরকে শস্যের মাস ধরে এ সময় হওয়া পূর্ণিমাকে বলা হয় ‘কর্ন মুন’।
বিবিসির স্কাই অ্যাট নাইট ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, আগামী ৭ সেপ্টেম্বর কর্ন মুন দেখা যাবে পূর্ব আকাশে। অবস্থানভেদে রক্তাভ চাঁদের গ্রহণও দেখা যেতে পারে। চাঁদের সঙ্গেই দেখা যাবে শনি গ্রহ। এতে রাতের আকাশে তৈরি হবে এক অপূর্ব দৃশ্য।
আকাশে পূর্ণ চাঁদ আর তার উজ্জ্বল জ্যোৎস্না সবসময়ই মানুষকে মুগ্ধ করেছে। কৃত্রিম আলোর আবির্ভাবের অনেক আগে এটি সত্যিকারের মহাজাগতিক দর্শনীয় বস্তু ছিল। এই চাঁদ বছরের প্রতিটি মাসে একবার (বা তার বেশি) সন্ধ্যা আকাশের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হয়ে চরাচর আলোকিত করত। একইভাবে প্রতি মাসে রাতের আকাশে পূর্ণ চাঁদের উপস্থিতি ঐতিহ্যগতভাবে সেই মাসে প্রকৃতির বড় ঘটনা বা পরিবর্তনকে প্রতীকীভাবে তুলে ধরত মানুষের কাছে। সেপ্টেম্বরের পূর্ণ চাঁদকে উত্তর আমেরিকার মানুষ নাম দিয়েছে ‘কর্ন মুন’। কারণ এটি এমন সময় দেখা যায়, যখন উত্তর আমেরিকায় ঐতিহ্যগতভাবে ভুট্টা কাটা হতো।
সেপ্টেম্বরের পূর্ণ চাঁদকে কখনও কখনও ‘হারভেস্ট মুন’ নামেও ডাকা হয়। এর কারণ হলো, হারভেস্ট মুন হলো সেপ্টেম্বরের বিষুবরেখার সবচেয়ে কাছের পূর্ণ চাঁদ। জ্যোতির্বিদরা বলছেন, চলতি বছর ৬ অক্টোবর আকাশে ‘হারভেস্ট মুন’ দেখা যেতে পারে। যার অর্থ এই বছরের ‘কর্ন মুন’ ‘হারভেস্ট মুন’ নয়।
জানা গেছে, ৭ সেপ্টেম্বর ইউরোপ, আফ্রিকা, এশিয়া এবং অস্ট্রেলিয়ার কিছু অংশ থেকে পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণও দেখা যেতে পারে। চন্দ্রগ্রহণ তখনই ঘটে, যখন পৃথিবী সূর্য এবং চাঁদের মাঝখানে থাকে। সূর্যের আলো পৃথিবীর ঘন বায়ুমণ্ডল দ্বারা প্রতিসরিত এবং বিক্ষিপ্ত হয়। যখন এ আলো চাঁদের পৃষ্ঠে আঘাত করে, তখন উপগ্রহটিকে লালচে দেখায়।
বিবিসি আরও জানায়, ৭ সেপ্টেম্বরের রাত শুধু পূর্ণিমা বা ব্লাড মুনের জন্যই বিশেষ নয়, এ দিন চাঁদ ও শনি গ্রহকেও আকাশে খুব কাছাকাছি দেখা যাবে। খালি চোখে শনিকে চাঁদের খুব কাছে দেখা যাবে উজ্জ্বল বিন্দুর মতো। তবে কেউ টেলিস্কোপে দেখলে শনির বলয়ও দেখতে পারেন। এ ঘটনা খুবই বিরল না হলেও একসঙ্গে পূর্ণিমা, পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ ও শনি গ্রহ দেখা জ্যোতির্বিজ্ঞানপ্রেমীদের কাছে বিশেষ মুহূর্তই বলা চলে।
জানা গেছে, ৬ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় চাঁদ ও শনি গ্রহ আকাশের একই অংশে দেখা যাবে। এতে করে খালি চোখেই একসঙ্গে কর্ন মুন ও শনি গ্রহের দারুণ সুন্দর যুগলবন্দির দেখা মিলবে আকাশে।

প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়

প্রকল্পের সঙ্গে জলে গেছে ২৭ কোটি, ফের বরাদ্দ ৫০ কোটি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১০:৪০ পূর্বাহ্ণ
প্রকল্পের সঙ্গে জলে গেছে ২৭ কোটি, ফের বরাদ্দ ৫০ কোটি

রাজধানীর গুলশানের উত্তর বারিধারার আট বিঘা জমিতে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পের নামে চলছে বিপুল অর্থের অপচয়। প্রথমে প্রবাসীদের জন্য কিডনি হাসপাতাল ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান নির্মাণের পরিকল্পনা চলে। পরে হাউজিং প্রকল্প নির্মাণের উদ্যোগে কেটেছে দুই দশকের বেশি সময়। সেখান থেকে সরে মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড আবারও ৩০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ডরমিটরি এবং একটি কমার্শিয়াল ভবন নির্মাণের মহাপরিকল্পনা নেয়। আড়াই দশকে এসব কর্মকাণ্ডে সাড়ে ২৭ কোটি টাকা খরচ হলেও কোনো প্রকল্পই আলোর মুখ দেখেনি।
প্রকল্পের জন্য গুলশানের প্রায় ৬০০ কোটি টাকার জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। অথচ অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েই তড়িঘড়ি করে পিপিআরের আইন ভেঙে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে মাত্র ২০ শয্যার হাসপাতাল তৈরি করছে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়। গত জুলাই থেকে আগামী ২০২৭ সালের জুন পর্যন্ত এর মেয়াদ। এই হাসপাতাল পরিচালনায় বোর্ডের আইন ভঙ্গ করেই বোর্ড সভা এবং মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না নিয়েই গঠন করা হচ্ছে কোম্পানি। এতেই কল্যাণ বোর্ডের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তাদের দাবি, অপরিকল্পিতভাবে প্রবাসীদের বিনিয়োগে হাসপাতাল নির্মাণে তাদের কোনো উপকারে আসবে না। এ ছাড়া সেবাধর্মী সরকারি প্রতিষ্ঠানে কোম্পানি গঠনে জটিলতা তৈরি হবে।
ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ২০০১ সালে তৎকালীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে গুলশান-ভাটারার (উত্তর বারিধারা) প্রকল্পের মাধ্যমে প্রবাসীদের কল্যাণে কিডনি হাসপাতাল এবং তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার জন্য ১৫১ দশমিক ৫৪ কাঠা জমি ক্রয় করা হয়। পরবর্তী সময়ে বোর্ড সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে এখানে প্রবাসীদের জন্য ৫০০ ফ্ল্যাট নির্মাণ করতে চাইলে আরও ১৫ দশমিক ৭৪ কাঠা জমি ক্রয় করা হয়। বর্তমানে এই জমির মূল্য ৬০০ কোটি টাকারও বেশি।
হাউজিং প্রকল্পে ছয়টি ভবন নির্মাণের লক্ষ্যে কল্যাণ বোর্ড ২০০৪ সালে দুই হাউজিং কোম্পানিকে কার্যাদেশ প্রদান করে। ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠান দুটি বেজমেন্টসহ একটি ভবনের লেভেল-২ পর্যন্ত,  অন্য একটি ভবনের লেভেল-৪ পর্যন্ত ফ্রেম স্ট্রাকচারের নির্মাণকাজ এবং পুরো জমিতে পাঁচটি ভবনের পাইলিং করার পর নির্মাণ মূল্য বৃদ্ধির জন্য আবেদন করে। এই জটিলতায় ২৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয় করে কাজ অসমাপ্ত করে ২০২০ সালে প্রকল্প বন্ধ করে সরকার।
এর মধ্যে গত ১৭ এপ্রিল প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল প্রবাসীদের পরিবারের এক অনুষ্ঠানে বারিধারার জায়গাটিতে নতুন করে হাসপাতাল নির্মাণের ঘোষণা দেন। নতুন এই প্রকল্পে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের ৫১ শতাংশ শেয়ার থাকবে এবং ৪৯ শতাংশ শেয়ার হবে প্রবাসীদের। এর পরিপ্রেক্ষিতে কল্যাণ বোর্ড উপদেষ্টার ঘোষণা বাস্তবায়নে তড়িঘড়ি করে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই আট বিঘা জমিতে নিজস্ব অর্থায়নে ৪৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) নির্মাণ করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
গত ২৬ আগস্ট ৩৩৪তম বোর্ড সভায় মন্ত্রণালয়ের এসব কোনো মতামত গ্রহণ না করেই প্রকল্পটি অনুমোদন এবং ৩১ আগস্ট প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব আর্থিক অনুমোদনও দেন। তবে প্রকল্প প্রণয়নে কোনো ধরনের সমীক্ষা এবং নতুন করে মাস্টারপ্ল্যানও করা হয়নি। কারিগরি ও বিশেষজ্ঞ কমিটি ছাড়াই প্রকল্পের ডিপিপি প্রস্তুত করেছেন কল্যাণ বোর্ডের অর্থ, বাজেট ও কল্যাণ পরিচালক ড. এটিএম মাহবুব-উল করিম, ভূসম্পত্তি ব্যবস্থাপনার সহকারী পরিচালক হাফিজুর রহমান, প্রশাসন ও সেবা সহকারী পরিচালক নাজমুল হক এবং বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী আবু শাহাদাত মো. শরীফ।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, প্রবাসীকল্যাণ হাসপাতাল পরিচালনার জন্য এর মধ্যেই বোর্ড এবং মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়াই প্রবাসীকল্যাণ সার্ভিস পিএলসি নামে একটি কোম্পানির ছাড়পত্র গ্রহণ করেছে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড, যা বোর্ড আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
এ বিষয়ে ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের প্রধান শরিফুল হাসান সমকালকে বলেন, বারিধারার জায়গাটি অবস্থানগত কারণে অনেক মূল্যবান। সেখানে মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী ৩০০ শয্যার হাসপাতাল না করে মাত্র ২০ শয্যার হাসপাতাল করাটা কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত না।
প্রবাসীকল্যাণ হাসপাতাল নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক এবং ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের অর্থ ও বাজেট এবং কল্যাণ পরিচালক ড. এটিএম মাহবুব-উল করিম বলেন, উপদেষ্টা প্রবাসীদের জন্য একটি হাসপাতাল দ্রুত নির্মাণের নির্দেশনা ছিল। সেখানে বোর্ডের সঙ্গে প্রবাসীরাও শেয়ারের মাধ্যমে বিনিয়োগ করবেন। এই নির্দেশনা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্যই প্রথম পর্যায়ে মন্ত্রণালয় ও বোর্ডের সবাই মিলে প্রকল্পটি সাজানো হয়েছে। আগের মাস্টারপ্ল্যানের ৩০০ শয্যা হাসপাতাল নির্মাণের ফিজিবিলিটি স্টাডি এবং মাস্টারপ্ল্যান কিছুটা অনুসরণ করা হবে, তবে সম্পূর্ণটা না।
ডিপিপি প্রস্তুতে ভূসম্পত্তি ব্যবস্থাপনার সহকারী পরিচালক হাফিজুর রহমান, প্রশাসন ও সেবা সহকারী পরিচালক নাজমুল হক এবং বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী আবু শাহাদাত মো. শরীফ জানান, এ ধরনের প্রকল্পের ডিপিপি প্রণয়নে আমাদের অভিজ্ঞতা নেই। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় আমরা ডিপিপির কাঠামো দেখে এ প্রকল্পের ডিপিপি প্রস্তুত করেছি। ওয়েজ আনার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক ব্যারিস্টার গোলাম সারোয়ার ভূঁইয়া বলেন, আপাতত ৫০ কোটি টাকার প্রকল্প শুরু হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে প্রকল্পটি দুই হাজার কোটিতে দাঁড়াবে।
এ বিষয়ে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্লাহ ভূঁইয়া বলেন, এ সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা নেই। ২০ শয্যার হাসপাতাল তৈরি করা হচ্ছে কিনা, জানি না। এটি বোর্ডের চেয়ারম্যান ভালো বলতে পারবেন।
প্রকল্প সম্পর্কে জানতে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলকে একাধিকবার কল ও মেসেজ দিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি। এমনকি বুধবার দপ্তরে গিয়েও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য ৬০ গাড়ি কেনা হচ্ছে

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১০:৩৬ পূর্বাহ্ণ
আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য ৬০ গাড়ি কেনা হচ্ছে

আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য ৬০টি গাড়ি কেনার প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। মিতসুবিশি পাজেরো কিউএক্স-২৪২৭ সিসি মডেলের প্রতিটি গাড়ির দাম এক কোটি ৬৯ লাখ টাকা। এসব গাড়ি কিনতে ব্যয় হবে ১০১ কোটি ৬১ লাখ টাকা। একই সঙ্গে আগামী নির্বাচনে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করবেন এমন কর্মকর্তাদের জন্য কেনা হচ্ছে ১৯৫টি পাজেরোসহ মোট ২২০টি গাড়ি। সব মিলিয়ে ২৮০টি গাড়ি কিনতে সরকারের ব্যয় হবে প্রায় ৪৪৫ কোটি টাকা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
চলতি অর্থবছরে যানবাহন কেনার ক্ষেত্রে ব্যয় সংকোচনের পদক্ষেপ নিতে একটি পরিপত্র জারি করেছিল অন্তর্বর্তী সরকার। এই পদক্ষেপে তা উপেক্ষিত হলো। গত ৮ জুলাই জারি করা পরিপত্রে বলা হয়, পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের আওতায় সব ধরনের নতুন যানবাহন কেনা বন্ধ থাকবে। তবে পরিচালন বাজেটের আওতায় প্রাধিকারভুক্ত কোনো সরকারি কর্মকর্তার ব্যবহৃত গাড়ি ১০ বছরের বেশি পুরোনো হওয়ায় ব্যবহারের অযোগ্য হলে অর্থ বিভাগের অনুমোদন নিয়ে গাড়ি কেনা যেতে পারে। সরকারের পরিবহন পুলের হিসাবমতে, গত সরকারের মন্ত্রীদের জন্য কেনা যে গাড়িগুলো রয়েছে সেগুলো ৯ বছরের পুরোনো। এ ক্ষেত্রেও পরিপত্রের শর্ত লঙ্ঘিত হয়েছে।
মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের জন্য ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ক্যামরি ও ল্যান্সার গাড়ি কেনা হয়। এর মধ্যে মন্ত্রীরা ব্যবহার করতেন ক্যামরি গাড়ি। প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা ব্যবহার করতেন ল্যান্সার। বর্তমান উপদেষ্টারা মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের ওই গাড়িগুলো ঢাকায় ব্যবহার করছেন। ঢাকার বাইরে গেলে বিভিন্ন দপ্তরের জিপ গাড়ি ব্যবহার করছেন তারা। টয়োটা ক্যামরি হাইব্রিড মডেলের ২৫০০ সিসির গাড়ি ২০১৫-১৬ অর্থবছরে কেনা হয় প্রতিটি ৮৫ লাখ থেকে ৯০ লাখ টাকায়। মিতসুবিশি ল্যান্সার ইএক্স মডেলের ১৬০০ সিসির গাড়ির দাম ছিল ২০ লাখ থেকে ২৫ লাখ টাকা। এখন সবার জন্য কেনা হচ্ছে পাজেরো কিউএক্স-২৪২৭ সিসির গাড়ি। প্রতিটি জিপের দাম এক কোটি ৬৯ লাখ টাকা।
সরকারের এই পদক্ষেপ নিয়ে আরও একটি প্রশ্ন সামনে এসেছে। আগামী মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা ৬০ হবে– কীভাবে জানল সরকার। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান সমকালকে বলেন, পরবর্তী সরকার বা মন্ত্রীরা কী গাড়ি ব্যবহার করবেন, কী গাড়ি কিনবেন; তার সিদ্ধান্ত বর্তমান সরকার কেন নিচ্ছে? এটা অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নয়।
এর মাধ্যমে ব্যয়সাশ্রয়ী পদক্ষেপের পরিপত্র উপেক্ষা করা তো বটেই, একই সঙ্গে প্রশ্ন আসবে, পরবর্তী সরকারের জন্য গাড়ি কেনার দায়িত্বটা অন্তর্বর্তী সরকারকে কে দিয়েছে?  ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বর্তমান সরকারের ‘ম্যান্ডেট’ এটা নয়। এ দায় তারা কেন নিচ্ছেন, বুঝে আসছে না। অনতিবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত বাতিল করা উচিত।’
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গত ২১ আগস্ট নির্বাচনী কর্মকর্তা এবং আগামী নির্বাচিত সরকারের মন্ত্রীদের জন্য ২৮০টি গাড়ি কেনার প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগে পাঠায়। এর মধ্যে আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে জয়ী সরকারের মন্ত্রী, মন্ত্রী পদমর্যাদার উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের জন্য ৬০টি গাড়ি কেনার কথা বলা হয় প্রস্তাবে। প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড থেকে সরাসরি ক্রয় প্রক্রিয়ায় এসব গাড়ি কিনবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান সরকারি যানবাহন অধিদপ্তর।
প্রস্তাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানায়, পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের উপদেষ্টা, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী বা সমপদমর্যাদার ব্যক্তিদের ব্যবহারের জন্য সরকারি পরিবহন ‍পুলে যথাযথ মানের গাড়ি নেই। বর্তমানে উপদেষ্টারা যেসব গাড়ি ব্যবহার করছেন, সেগুলো ২০১৫-১৬ অর্থবছরে কেনা। এগুলো প্রায়শ মেরামত করতে হয়, যা ব্যয়বহুল ও সময়সাপেক্ষ।
বিদ্যমান গাড়িগুলো দিয়ে ভবিষ্যতে দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রীদের পক্ষে নির্বাচনী এলাকা সফর, উন্নয়ন প্রকল্প পরিদর্শনসহ অন্যান্য জরুরি কাজ করা কষ্টসাধ্য হবে বলে প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এ প্রস্তাবে সম্প্রতি সম্মতি দিয়েছে অর্থ বিভাগ। এরপর সরকারি যানবাহন অধিদপ্তর প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ এবং সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে এসব গাড়ি কেনা হবে।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ রাষ্ট্রীয় সফরে দেশের বাইরে থাকায় বিষয়টি নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। যোগাযোগ করা হলে বিষয়টি নিয়ে অর্থ সচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদারেরও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, গত ৬ আগস্ট জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় আগামী মন্ত্রিসভার সদস্যদের জন্য গাড়ি কেনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। ওই সভায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোখলেস উর রহমান সমকালকে বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নিয়ম অনুযায়ী, মন্ত্রীদের গাড়িগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ। এ জন্য নতুন গাড়ি কেনার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এর আগে গত মে মাসে উপদেষ্টা বা মন্ত্রী ও সমমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের ব্যবহারের জন্য ২৫টি গাড়ি কেনার প্রস্তাব প্রস্তুত করে অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তবে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে গঠিত কমিটি তা অনুমোদন না করে ফেরত দেয়।
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতিসহ ভিভিআইপি ও বিদেশি ডেলিগেটদের জন্য মার্সিডিজ বেঞ্জের ২০টি কার কেনার প্রস্তাব করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। প্রতিটির দাম ধরা হয়েছিল প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা। আর মন্ত্রিসভার সদস্যদের জন্য ৫০টি টয়োটা ক্যামরি হাইব্রিড সেডান কার কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, যার প্রতিটির দাম ধরা হয় প্রায় এক কোটি পাঁচ হাজার টাকা। এসব গাড়ি কেনার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে বরাদ্দ চেয়েছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকট ও সরকারের কৃচ্ছ্রসাধন নীতির কারণে এ প্রস্তাব তখন নাকচ করে দিয়েছিল অর্থ মন্ত্রণালয়।
৮ সালের মে মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) সদস্য দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ৪৫তম সম্মেলন উপলক্ষে আগত বিভিন্ন দেশের অতিথির যাতায়াতের জন্য ৩০টি মার্সিডিজ ও বিএমডব্লিউ কেনে সরকার। সম্মেলনে ব্যবহারের পর এর মধ্যে কয়েকটি বিএমডব্লিউ তৎকালীন মন্ত্রিসভার সিনিয়র সদস্যদের ব্যবহারের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। পাঁচটি গাড়ি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ দিয়ে বাকিগুলো রাষ্ট্রীয় প্রটোকল ও সরকারি প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য সরকারি পরিবহন পুলে হস্তান্তর করা হয়।
জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ফিরোজ মিয়া সমকালকে বলেন, সরকারি কোনো গাড়ি যদি মেরামত অযোগ্য ও অলাভজনক বলে বিআরটিএর মোটরযান পরিদর্শক প্রতিবেদন দেন, তাহলে সেটি অকেজো ঘোষণা করা হয়। এরপর ওই গাড়ির বদলে নতুন গাড়ি প্রতিস্থাপন করা যায়। তিনি বলেন, মন্ত্রীদের গাড়ি কেনার ক্ষেত্রেও এ নীতিমালা কার্যকর হবে।
আইন সংশোধন না করে কেনা হচ্ছে জিপ
১৯৭৩ সালের ‘দি মিনিস্টারস, মিনিস্টারস অব স্টেট অ্যান্ড ডেপুটি মিনিস্টারস (রেমিউনারেশন অ্যান্ড প্রিভিলেজেস)’ অ্যাক্টে বলা হয়েছে, মন্ত্রী (বর্তমান উপদেষ্টারা মন্ত্রী মর্যাদার), প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা সার্বক্ষণিক ব্যবহারের জন্য সরকারি একটি কার (গাড়ি) পাবেন। যার রক্ষণাবেক্ষণ খরচ জোগাবে সরকার। পরে সংশোধিত আইনে বলা হয়, জরুরি দাপ্তরিক কাজের জন্য কিংবা ঢাকার বাইরে নির্ধারিত কোনো সফরে গেলে অতিরিক্ত একটি জিপগাড়ি ব্যবহার করতে পারবেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, বর্তমান নিয়ম অনুযায় মন্ত্রীদের জন্য শুধু কার কেনা যাবে। অন্য কোনো গাড়ি কিনতে হলে আইন সংশোধন করতে হবে।
নির্বাচনের জন্য কেনা হচ্ছে ২২০টি গাড়ি
আগামী নির্বাচনে সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালনের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) জন্য প্রতিস্থাপক হিসেবে ১৯৫টি মিতসুবিশি পাজেরো কিউএক্স-২৪২৭ সিসি মডেলের জিপ এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের জন্য ২৫টি মাইক্রোবাস কেনায় সম্মতি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এ ক্ষেত্রেও প্রতিটি জিপের দাম ধরা হয়েছে এক কোটি ৬৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। প্রতিটি মাইক্রোবাসের দাম পড়ছে ৫২ লাখ টাকা। এ ধরনের ২২০টি গাড়ি কিনতে সরকারকে খরচ করতে হবে ৩৪৩ কোটি ২৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা।
চলতি অর্থবছরের বাজেটে যানবাহন অধিদপ্তরের অনুকূলে মোটরযান ক্রয় খাতে ৩২৮ কোটি ৩৩ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ রয়েছে। তবে এই ২৮০টি গাড়ি কিনতে ব্যয় হবে ৪৪৪ কোটি ৮৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা। বাড়তি ৯৬ কোটি ৫১ লাখ ৫ হাজার টাকা অন্য খাতের অর্থ ব্যয়েরও অনুমোদন দিয়েছে অর্থ বিভাগ।
তবে গাড়ি কেনার সম্মতিপত্রে বেশ কিছু শর্ত জুড়ে দিয়েছে অর্থ বিভাগ। শর্তগুলো হলো– নতুন কেনা জিপগুলো প্রাধিকারভুক্ত হবে। একই সঙ্গে প্রতিস্থাপক হিসেবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের জন্য কেনা জিপ ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের জন্য প্রতিস্থাপক হিসেবে মাইক্রোবাসগুলো অকেজো ঘোষণা-সংক্রান্ত বিআরটিএর পরিদর্শক দলের অনুমোদন গ্রহণ করে তার অনুলিপি অর্থ বিভাগে পাঠাতে হবে। গাড়ি ক্রয়ের ক্ষেত্রে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন-২০০৬ ও পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা-২০০৮ অনুসরণ করতে হবে।
এদিকে নির্বাচিত সরকারের মন্ত্রিসভার আকার বেঁধে দিয়েছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। সর্বোচ্চ ২৩ মন্ত্রী এবং ১২ প্রতিমন্ত্রী দিয়ে মন্ত্রিসভা গঠন করতে বলা হয়েছে। এতে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর মোট সংখ্যা হবে ৩৫। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার ৬০টি গাড়ি কেনার উদ্যোগ নিয়েছে। এ ছাড়া বিদ্যমান ৪৩ মন্ত্রণালয় ও ৬১ বিভাগকে ২৫ মন্ত্রণালয় ও ৪০ বিভাগে নামিয়ে আনার সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর হাতে কোন কোন মন্ত্রণালয় থাকবে, তাও নির্দিষ্ট করা হয়েছে কমিশনের প্রস্তাবে।