খুঁজুন
                               
মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই, ২০২৫, ১৪ শ্রাবণ, ১৪৩২

‘অপ্রতুল’ কৈশোরবান্ধব সেবা, যৌন-প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে অজ্ঞ বড় অংশ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১:৫৭ অপরাহ্ণ
‘অপ্রতুল’ কৈশোরবান্ধব সেবা, যৌন-প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে অজ্ঞ বড় অংশ

দেশের মোট কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে প্রায় ৬৫ শতাংশ সরকারের কৈশোরবান্ধব স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র সম্পর্কে ধারণা রাখলেও বাকি ৩৫ শতাংশের মতো কিশোর-কিশোরী এখনো এই সেবা সম্পর্কে কিছুই জানে না। এমনকি যারা এই সেবা সম্পর্কে জানে, তাদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি কিশোর-কিশোরী সেবা কেন্দ্রে এসে এই সেবা নিতে আগ্রহ প্রকাশ করে না। ফলে দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠীর বড় অংশই তাদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং অধিকার সম্পর্কে একেবারেই অজ্ঞ।

রোববার (১৫ ডিসেম্বর) বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে রিপ্রোডাক্টিভ হেলথ সার্ভিস ট্রেনিং অ্যান্ড এডুকেশন প্রোগ্রাম (আরএইচস্টেপ) আয়োজিত এক সেমিনারে উপস্থাপিত এক গবেষণা প্রবন্ধে এসব তথ্য জানান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান।

২০২২ সালের জরিপ অনুসারে দেশে কিশোর-কিশোরী, বয়সভিত্তিক জনসংখ্যার মধ্যে যারা ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সী তাদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। দেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জনের মধ্যে ১ কোটি ৭১ লাখ ৬০ হাজার ১৭৫ জনই ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সী, শতাংশের হিসাবে যা ১০.১০। এর পরই আছে ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী, যাদের সংখ্যা ১ কোটি ৬৮ লাখ ৪২ হাজার ৬৮২ জন। শতাংশের হিসাবে ৯.৯২। এজন্য বাংলাদেশে স্বাস্থ্য এবং পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর বিশেষভাবে নজর দিচ্ছে কিশোর-কিশোরী ও যুববান্ধব স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ ব্যবস্থায়।

মোস্তাফিজুর রহমান জানান, দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২০ দশমিক ৫ শতাংশ কিশোর-কিশোরী। তাদের জন্য দেশে বর্তমানে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের কৈশোরবান্ধব স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র রয়েছে ১২৫৩টি। তবে এত সংখ্যক সেবা কেন্দ্র থাকলেও ৩৫ শতাংশের মতো কিশোর-কিশোরী এখনো এই সেবা সম্পর্কে কিছুই জানেন না। যে ৬৫ শতাংশের মতো জানে, তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ ২৭ থেকে ২৮ শতাংশ কিশোর-কিশোরী স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে সেবা নিতে আসে, বাকি অর্ধেকেরও বেশি কিশোর-কিশোরী এই সেবা নিতে আগ্রহ দেখায় না।

গবেষণায় দেখা গেছে, কৈশোরবান্ধব স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের সম্পর্কে জেনেও যারা সেবা নিতে যায় না তাদের মধ্যে ১০ শতাংশ এই কার্যক্রম নিয়ে উৎসাহবোধ করেন না। এ ছাড়া প্রায় সাড়ে ৭ শতাংশের মতো কিশোর-কিশোরী সোশ্যাল স্টিগমার কারণে যায় না। আর সাড়ে ৩ শতাংশের মতো কিশোর-কিশোরী বলছে এই কার্যক্রমে যেতে তাদের পরিবারের বাধা-নিষেধ রয়েছে।

গবেষণা প্রসঙ্গে ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা চারটি উপজেলায় (সাভার, নড়াইল, গাইবান্ধা, সিলেট) ৩০০ জন কিশোর-কিশোরীর উপর এই জরিপটি পরিচালনা করেছি। কৈশোরবান্ধব স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমে যেসব সেবা থাকার কথা, অধিকাংশতেই সেগুলো পুরোপুরি উপস্থিতি নেই। এমনকি অসংখ্য কিশোর-কিশোরী জানেই না যে, এই সেবা কেন্দ্রে কী ধরনের সেবা পাওয়া যায়। এমনকি কার্যক্রমে শিক্ষক এবং গার্ডিয়ানদের উপস্থিতি কম পাওয়া গেছে। আমরা মনে করি, কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্যগত বিষয়গুলোতে তাদের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে আমাদের শিক্ষা কারিকুলামে যৌনতা সংক্রান্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে যা আছে, এগুলো সম্পর্কে আমাদের শিক্ষকেরা ঠিকমতো ডেলিভারি দিতে পারছেন না। এমনকি সেক্সচুয়াল বিষয়গুলোর সামনে এলে সেগুলোর বিষয়ে শিক্ষার্থীদের ধারণা না দিয়ে তারা ভিন্ন টপিকে চলে যাচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, গবেষণা করতে গিয়ে আরেকটি বিষয়ে আমরা দুর্বলতা পেয়েছি, তা হলো এই ধরনের বিষয়গুলো কিশোর-কিশোরীরা শুধু বিভিন্ন প্রজেক্টের মাধ্যমেই পাচ্ছে। কিন্তু আমাদের বর্তমান যুগে দেখছি যে বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলো যেখানে বিভিন্ন বিষয়ে বড় ভূমিকা রাখছে, সেই জায়গাতে কৈশোরবান্ধব স্বাস্থ্য সেবা পিছিয়ে আছে। এ বিষয়গুলো নিয়ে সরকারের কাজ করার সুযোগ রয়েছে। আমরা মনে করি বিভিন্ন অনলাইন অ্যাক্টিভিজম কিংবা বিভিন্ন গ্রুপ তৈরি করে সেগুলোর মাধ্যমে যৌন প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে ধারণা দিতে পারি, তাহলে কিশোর-কিশোরীরা সামাজিক স্টিগমা বা ট্যাবুটা অনুভব করবে না।

এ সময় সরকারের পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের প্রোগ্রাম ম্যানেজার (এঅ্যান্ডআরএইচ) ডা. মো. মনজুর হোসেন বলেন, কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে আমরা যে উদ্যোগগুলো নিয়েছি, সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি কিছু উন্নয়ন সহযোগী আমাদের সঙ্গে কাজ করছে। আমাদের যে ৩ কোটি ২৮ লাখ কিশোর-কিশোরী রয়েছে, তাদের পুষ্টি, প্রজনন স্বাস্থ্য, সহিংসতা প্রতিরোধ এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে আমরা যৌথভাবে কাজ করে যাচ্ছি। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কিশোর-কিশোরীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে আমরা জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কৈশোরবান্ধব স্বাস্থ্যসেবা কর্নার প্রতিষ্ঠা করেছি।

তিনি আরও বলেন, আমাদের কৈশোরবান্ধব স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে কিশোর-কিশোরীরা সেবা নিচ্ছে কি না, বা নিয়ে থাকলে তারা আমাদের সেবায় সন্তুষ্ট কি না, এমনকি কিশোরদের তুলনায় কিশোরীদের উপস্থিতি সেখানে কেন বেশি, এগুলো নিয়ে আমাদের পর্যবেক্ষণ হলো, ওই সেবাকেন্দ্রে যদি তিনজন কিশোরী আমাদের কেন্দ্র থেকে সেবা নেয়, তাহলে কিশোর সেবা নেয় একজন। এখন প্রশ্ন হলো, কেন কিশোরীরা বেশি নিচ্ছে আর কিশোররা কেন নিচ্ছে না? এর মূল বিষয়বস্তুগুলো আমরা লিঙ্গভেদে চিন্তা করি, তাহলে দেখব মেয়েদের এবং ছেলেদের স্বাস্থ্যসেবায় বেশ ভিন্নতা রয়েছে। কারণ মেয়েদের মাসিক ব্যবস্থাপনা সেবার প্রয়োজন হয়, যা কিশোরদের প্রয়োজন হয় না। আবার কিশোরীদের রক্তস্বল্পতার হার বেশি, যা কিশোরদের মধ্যে নেই। মেয়েদের গুণগত মাসিক ব্যবস্থাপনাগুলো নিশ্চিতে আমরা মেয়েদের স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণ করি, যে ছেলেদের প্রয়োজন হয় না। বিশেষ করে মেয়েলি রোগগুলো শুধু কিশোরীদেরই হয়, কিন্তু কিশোরদের হয় না।

মনজুর হোসেন বলেন, দেশে অন্তত ৫০ শতাংশ মেয়েরই বিয়ে হয়ে যায় ১৮ বছরের আগে, তারাও তো কিশোরী। তাদের ফ্যামিলি প্ল্যানিং, গর্ভকালীন সেবা, প্রসব সেবা এবং প্রসব পরবর্তী সেবা সবগুলোই কিশোরীদের প্রয়োজন হয়, এ বিষয়গুলো কিশোরদের প্রয়োজন হয় না বলেই তারা আমাদের কাছে আসে না। এসব কারণেই কিশোরীদের সেবা গ্রহণের হার আমাদের সেবা কেন্দ্রগুলোতে কিশোরদের তুলনায় বেশি।

তিনি আরও বলেন, কৈশোরবান্ধব স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে আমরা যে সেবাগুলো দিচ্ছি, সেগুলোতে ডিমান্ড এবং সাপ্লাই _দুটো পক্ষেরই অংশগ্রহণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আপনি আপনার প্রয়োজনটা যখন অনুভব করবেন, তখনই আমাদের কাছে আসবেন এবং আমরা সে অনুযায়ী সেবা দেব। সেক্ষেত্রে আমাদের কিশোর-কিশোরীদের হেলথ চেকিং বিহেভিয়ার এটা কেন কম, এটা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে।

পরিবার পরিকল্পনার এই কর্মকর্তা বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে বাড়ি থেকে শুরু করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পর্যন্ত কিশোর-কিশোরীদের যতটা বার্তা দেওয়া দরকার, আমরা সেটি শতভাগ দিতে পারছি না। সেটা বাড়ি থেকেও সে পাচ্ছে না, স্কুল থেকেও পর্যাপ্ত দিচ্ছে না, এমনকি যারা স্কুলে যায় না তারা তো আরও কম পাচ্ছে। এই যে বড় একটা গ্যাপ তৈরি হয়েছে, এই জায়গাগুলো নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। আমরা আমাদের জায়গা থেকে এগুলো নিয়ে আরও কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে চেষ্টা করবো এবং আমাদের পরবর্তী কার্যক্রমে সেগুলো যুক্ত করা যায় কি না এসব বিষয়ে পর্যালোচনা করব।

আরএইচস্টেপ’র আয়োজনে ‘অধিকার এখানে এখনই-২’ প্রকল্পের উদ্যোগে গবেষণার ফলাফল প্রকাশের এই আয়োজনে আরও বক্তব্য দেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (এমসিএইচ সার্ভিসেস ইউনিট) ডা. আনম মোস্তফা কামাল মজুমদার, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রোগ্রাম ম্যানেজার (এডোলোসেন্ট অ্যান্ড স্কুল হেলথ প্রোগ্রাম) ডা. মো. শামসুল হক, ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. মধুছন্দা হাজরা মৌ। এ ছাড়া সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এবং আরএইচস্টেপ’র কর্মকর্তারা। অনুষ্ঠানটিতে শুভেচ্ছা ও সমাপনী বক্তব্য দেন আরএইচস্টেপ’র নির্বাহী পরিচালক কাজী সুরাইয়া সুলতানা।

আরও ৮০ ফিলিস্তিনি গাজায় নিহত, অনাহারে মৃত্যু ১৪ জনের

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই, ২০২৫, ৯:৪৩ পূর্বাহ্ণ
আরও ৮০ ফিলিস্তিনি গাজায় নিহত, অনাহারে মৃত্যু ১৪ জনের

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় একদিনে কমপক্ষে আরও ৮০ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া ইসরায়েলের অবরোধের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে অনাহারে নতুন করে আরও ১৪ ফিলিস্তিনি মারা গেছেন বলে জানিয়েছে সেখানকার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। অনাহারে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন শিশু। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় আরও অন্তত ৮০ জন নিহত হয়েছেন। একইসঙ্গে ক্রমবর্ধমান দুর্ভিক্ষে আরও ১৪ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে দুটি শিশুও রয়েছে বলে সোমবার জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধ শুরু করার পর অপুষ্টিজনিত কারণে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪৭ জনে, যাদের মধ্যে ৮৮ জনই শিশু।
সম্প্রতি গাজায় খাদ্য সংকট আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। চলতি বছরের মার্চ মাসে ইসরায়েল পুরোপুরি অবরোধ আরোপ করে, যা মে মাসে আংশিক তুলে নেওয়া হলেও এখনও সীমিত পরিমাণে ত্রাণ ঢুকছে। জাতিসংঘ ও ত্রাণ সংস্থাগুলোর সতর্কতা সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় সাহায্য ঢুকতে পারছে না।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের সহায়তাকারী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ–এর প্রধান ফিলিপ ল্যাজারিনি জানান, গাজায় অবস্থানরত তার সহকর্মীরা মানুষজনকে এমন অবস্থায় দেখছেন যেন তারা “না বেঁচে আছে, না মরেছে – যেন হাঁটতে থাকা লাশ”।
জাতিসংঘের একটি সম্মেলনে তিনি বলেন, “শুধু ক্ষোভ বা নিন্দা জানানো যথেষ্ট নয়। অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে হবে, দুর্ভিক্ষ রোধ করতে হবে এবং বন্দিদের মুক্ত করতে হবে।”এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্কটল্যান্ড সফরে সাংবাদিকদের বলেন, গাজায় প্রকৃত অর্থেই দুর্ভিক্ষ চলছে এবং ইসরায়েল এ অবস্থার জন্য “বড় ধরনের দায়” বহন করে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু আগের দিন বলেন, “গাজায় কোনো দুর্ভিক্ষ নেই”। তবে সোমবার এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনিও স্বীকার করেন, গাজার পরিস্থিতি “কঠিন” এবং মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে ইসরায়েল কাজ করছে।
ট্রাম্প জানান, গাজায় খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিতে “বাউন্ডারিবিহীন খাদ্য কেন্দ্র” স্থাপনের পরিকল্পনা আছে, যাতে সবার সহজে প্রবেশ নিশ্চিত হয়। এ কাজে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশগুলোর সঙ্গেও কাজ করবে বলে জানান তিনি।
ইসরায়েল ঘোষণা দিয়েছে, তারা গাজার কিছু অংশে হামলা স্থগিত রাখবে এবং নতুন করিডোর খুলবে যাতে ত্রাণ প্রবেশ বাড়ানো যায়। জাতিসংঘ এই উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও সংস্থাটির মানবিক প্রধান বলেন, সাহায্যের পরিমাণ আরও বাড়াতে হবে।
আল জাজিরার সাংবাদিক তারেক আবু আজজুম জানান, ইসরায়েল যেসব ‘মানবিক বিরতি’র কথা বলছে, সেগুলো আসলে খুবই সীমিত এবং কয়েক ঘণ্টার জন্য হয়, যা নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় কার্যকর থাকে এবং এতে আন্তর্জাতিক কোনো তদারকি থাকে না।
এদিকে গাজায় শিশু খাদ্যের ঘাটতিও মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। গাজা সিটি’র আল-শিফা হাসপাতালে এক চিকিৎসক আল জাজিরাকে জানান, অপুষ্টিজনিত কারণে শিশু মোহাম্মদ ইব্রাহিম আদাস মারা গেছে, কারণ তার জন্য প্রয়োজনীয় ফর্মুলা দুধ পাওয়া যায়নি।
গাজা সরকারের গণমাধ্যম অফিস জানায়, এ ধরনের পরিস্থিতিতে ৪০ হাজারের বেশি শিশু ধীরে ধীরে মৃত্যুর মুখে পড়ছে। কারণ গত ১৫০ দিনে ইসরায়েল শিশু খাদ্য ঢুকতে দেয়নি গাজায়।
সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা সব সীমান্ত ক্রসিং অবিলম্বে এবং শর্তহীনভাবে খুলে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি, যাতে শিশু খাদ্য ও জরুরি মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে পারে।”

চাঁদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতালে জুলাই পুনর্জাগরণে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প

উজ্জ্বল হোসাইন
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই, ২০২৫, ৯:৩২ পূর্বাহ্ণ
চাঁদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতালে জুলাই পুনর্জাগরণে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্প

‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে চাঁদপুরে স্বাস্থ্যসেবা এবং মানবিক কার্যক্রমের আওতায় অনুষ্ঠিত হলো রক্তদান কর্মসূচি ও ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প। সোমবার (২৮ জুলাই ২০২৫) জেলা প্রশাসন ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের যৌথ আয়োজনে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চাঁদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতালে এই স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
এতে সার্বিক সহযোগিতা করে চাঁদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন, সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ নুর আলম দীন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. এরশাদ উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আব্দুল হান্নান রনি, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রফিকুল হাসান ফয়সাল, চাঁদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতালের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা. মোহাম্মদ খবির উদ্দিন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ইকবাল আজম, আইটি কর্মকর্তা উজ্জ্বল হোসাইন, চিকিৎসক-কর্মকর্তাবৃন্দ। স্বাস্থ্যসেবা ক্যাম্পে বিনামূল্যে কোভিড-১৯ ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাক্সিন, বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় ও ডেঙ্গু পরীক্ষা, সাধারণ রোগীদের জন্যে স্বাস্থ্য সেবা, স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি, চক্ষু পরীক্ষা, বিনামূল্যে চশমা ও ওষুধ বিতরণ করা হয়।
এই কার্যক্রমে চাঁদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতাল, চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা সার্বিক সহযোগিতা করেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, জুলাই পুনর্জাগরণ শুধু একটি সামাজিক কর্মসূচি নয়, এটি আমাদের নৈতিক ও মানবিক চেতনার বহিঃপ্রকাশ। স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য। তিনি আরও বলেন, আমরা চাই শুধু একদিন নয়, বছরের বিভিন্ন সময়েও জনগণের মাঝে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে যাক। এক্ষেত্রে প্রশাসন, চিকিৎসক এবং জনগণের সম্মিলিত অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরি।

কালি ও কলম পুরস্কার পেলেন মুহাম্মদ ফরিদ হাসানসহ পাঁচ তরুণ লেখক

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫, ৮:৫৩ পূর্বাহ্ণ
কালি ও কলম পুরস্কার পেলেন মুহাম্মদ ফরিদ হাসানসহ পাঁচ তরুণ লেখক

দেশের নবীন কবি ও লেখকদের সাহিত্যচর্চাকে অনুপ্রাণিত ও গতিশীল করার লক্ষ্যে মাসিক সাহিত্যপত্র কালি ও কলম ২০০৮ সাল থেকে প্রবর্তন করে কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার। সেই স্রোতধারায় শনিবার প্রদান করা হলো সিটি ব্যাংক নিবেদিত ২০২৪ সালের কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার। কবিতা, কথাসাহিত্য, প্রবন্ধ ও গবেষণা, মুক্তিযুদ্ধ ও বিপ্লব এবং শিশু-কিশোর সাহিত্য অবদানের জন্যে পাঁচ তরুণ কথাশিল্পী পেয়েছেন এই পুরস্কার। এরমধ্যে চাঁদপুরের লেখক মুহাম্মদ ফরিদ হাসান প্রবন্ধ ও গবেষণা শাখায় ‘শতবর্ষে চা শ্রমিক আন্দোলন : ডেডলাইন ২০ মে ১৯২১’ গ্রন্থের জন্যে পুরস্কার পেয়েছেন।
‘সতীতালয়’ কাব্যগ্রন্থের কবিতা শাখায় পুরস্কার জয় করেছেন অস্ট্রিক ঋষি। ‘নির্বাচিত দেবদূত’ গ্রন্থের জন্য কথাসাহিত্যে পুরস্কার পেয়েছেন সাজিদ উল হক আবির। মুক্তিযুদ্ধ ও বিপ্লব শাখায় ‘একাত্তরে অবরুদ্ধ দিনের দুঃসাহস : সাগাই ফোর্ট এস্কেপ’ গ্রন্থের জন্যে স্বরলিপি এবং শিশু সাহিত্যে তিলকুমারের যাত্রা গ্রন্থের জন্যে পুরস্কার পেয়েছেন নিয়াজ মাহমুদ।
ধানমন্ডির বেঙ্গল শিল্পালয়ে এই পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কালি ও কলমের সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি এমেরিটাস অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও প্রাবন্ধিক এমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাসরুর আরেফিন এবং কালি ও কলমের প্রকাশক আবুল খায়ের। পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করে গানের দল ও কৃষ্ণকলি।
প্রসঙ্গত, কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার তরুণদের জন্যে প্রবর্তিত সর্বোচ্চ সম্মানজনক পুরস্কার।পুরস্কারটির অর্থমূল্য দুই লাখ টাকা। এ বছরের জানুয়ারি মাসে পুরস্কারের জন্যে বই আহ্বান করা হয়। কবিতা, কথাসাহিত্য, প্রবন্ধ ও গবেষণা, মুক্তিযুদ্ধ ও বিপ্লব এবং শিশু-কিশোর সাহিত্য এই পাঁচটি বিষয়ে বই জমা নেয়া হয়েছে। বই জমা দেওয়ার পর বিজ্ঞ বিচারকমণ্ডলীর পর্যবেক্ষণ-পর্যালোচনার ভিত্তিতে শ্রেষ্ঠ গ্রন্থসমূহ নির্বাচন করা হয়।